অবুঝ_বউ,পর্ব-৫
(পড়ুন আর হাসুন ?)
সবার কাছে বিদায় নিয়ে রওনা দিলাম।কয়েক পা যেতেই তিথির ডাকে পিছন ফিরলাম।
বলো।।(আমি)
বলছিলাম কি আপনি তো চলে যাচ্ছেন তাহলে আমার যদি প্রেম করতে মন চায় তাহলে কিভাবে করবো ?(তিথি)
আমি আর কিছু বললাম না শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আকাশের দিকে এক বার তাকালাম, তারপর মাথা নিচু করে আবার রওনা দিলাম।।
কি হল বললেন না ? তাহলে কি অন্য কারও সাথে করবো ?(তিথি)
আমি আর পিছন দিকে না তাকিয়ে চলে এলাম।।
ওই আমার কাছে আয় , ওই মেয়ে তোর মাথায় কি কিছুই নেই ? থাকবেই কি করে সারাদিন বই আর গাছ নিয়ে পড়ে থাকলে বুদ্ধি কি করে হবে? (দাদী)
কেনো আমি আবার কি করলাম?(তিথি)
কি করেছিস জানিস না ? বুঝিস না কিছু। ওই তোর স্বামীর সাথে কোন কথা থাকলে তার কানে কানে না হলে কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বলবি , সবার সামনে যে এমন কথা বলিস সবাই তো তখন আমার নাতীটাকে নিয়ে হাসা-হাসি করে, এরকম আর কখনও করবিনা।। (দাদী)
ঠিক আছে নানী(তিথি)
কলকাতা আসার পর দিনকাল ভালই যাচ্ছিল , বিপত্তি ঘটল কিছু দিন পর , হঠাৎ একদিন রাতের বেলা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলো। রিসিভ করতেই ওপাস ‘থেকে মিষ্টি কন্ঠে ভেসে এলো ,
” ওগো কেমন আছেন আপনি, কি করছেন ? খেয়েছেন? আচ্ছা আমার কথা কি আপনার মনে পড়ে ? আচ্ছা রেখে দেই , বাই ”
আমি তো পুরো অবাক ? এ কি কথা বললো , না কে মেশিনগানে গুলি ছুঁড়লো ঠিক বুঝলাম না, ঘোর কাটতেই ফোন লাগালাম আমি।।
হ্যালো,(আমি)
জি বলুন।।(তিথি)
কে বলছো তিথি?(আমি)
হ্যাঁ(তিথি)
ওভাবে কথা বলে রেখে দিলে কেন? (আমি)
কিভাবে কথা বলেছি?(তিথি)
এই যে তুমি একাই কথা বলে ফোন রেখে দিলে (আমি)
ও মা নানী বললো আপনার সাথে কথা বলতে , আপানি কি করছেন খেয়েছেন কিনা , আমার কথা মনে পড়ে কিনা, জিগ্গেস করতে তাই করলাম ?(তিথি)
ও তা আমার কথা না শুনেই যে ফোন রেখে দিলে ?(আমি)
বারে রাখবো না ? নানী তো বলে নি যে আপনার কথা শুনতে হবে , আপনার কথা শুনলে পরে যদি রাগ করে তাই রেখে দিয়েছি ,(তিথি)
হ্যাঁ ভালো করেছো , কার ফোন এটা?(আমি)
আমার।।(তিথি)
তোমার! তুমি ফোন কোথায় পেলে ?(আমি)
মামা মানে বাবা কিনে দিছে আমাকে।।(তিথি)
জানেন এখানে না খুব সুন্দর সুন্দর গেম আছে, আমি এখন গাছে উঠি না, সারাদিন ফোনে গেম খেলি।(তিথি)
খুব ভালো , তা শুনবে না আমি কেমন আছি, খেয়েছি কিনা , কি করি , তোমার কথা মনে পড়ে কিনা ?(আমি)
নানী কিছু বলবেনা তো ? নানীর কাছ থেকে শুনে আসি?(তিথি)
না কিছু বলবে না।।(আমি)
যদি বলে? কাল আমাদের স্কুলের একটা ছেলে ফোন করেছিলো ওর সাথে কথা বলতে দেখে আমাকে অনেক বকেছে(তিথি)
কি? কার সাথে কথা বলেছো তুমি , ওর সাথে কথা বলতে গেলে কেন?(আমি)
বা রে আপনিই না বলে গেলেন যারা প্রেম করে তাদের সাথে মিশতে? সে জন্যই তো কথা বলি , ও বলেছে আমাকে নাকি প্রেম করা শিখাবে ,(তিথি)
ও কেন তোমাকে প্রেম করা শেখাবে ? তিথি আর কখনই কোন ছেলের সাথে কথা বলবা না , আমি
বলছিলাম তোমার বন্ধবী যারা প্রেম করে তাদের সাথে মিশতে , যেন তুমি প্রেম কি জিনিস ভালবাসা কি জিনিস সেটা বুঝতে পারো।। (আমি)
যাহ !!!!! আপনি কি সেটা বলেছেন ? আপনি তো বলেছিলেন যারা প্রেম করে তাদের সাথে মিশতে , আমার কিন্তু অনেক বুদ্ধি আপনার মত ভুলে যাই না হিহিহি , আর আপনি তো যাওয়ার আগে বলে গেলেন না যে কিভাবে শিখবো তাই ওর সাথে কথা বলেছি , আচ্ছা বললেন না আপনি কি করছেন , খেয়েছেন কিনা , আমার কথা মনে পড়ে কিনা?(তিথি)
আচ্ছা বলবো।। আগে বলো তুমি আর কোনো ছেলের সাথে কথা বলবে না।। আর তুমি আমার কাছে প্রেম করা শিখবে ।।।(আমি)
আচ্ছা ঠিক আছে, এবার বলুন।। (তিথি)
আমি ভালো আছি আর খাওয়া দাওয়াও হয়েছে , আর তোমাকে অনেক মনে পড়ে পাগলী , যখন রাতে ঘুমাতে যাই তখন আরও বেশি মনে পড়ে।।(আমি)
কেনো ??? (তিথি)
কারন তখন তো তুমি বুকে মাথা রাখো না তাই।।(আমি)
ও আচ্ছা জানেন বাবা যে এই মোবাইলটা কিনে দিয়েছে সেটাতে অনেক ভালো সাউন্ড।।।।আর অনেক জোরে হয়।।।।(তিথি)
তুমি কি করে জানলে ?(আমি)
বারে আমি তো লাউডস্পিকার দিয়ে কথা বলছি । আমাদের বিজ্ঞান স্যার বলেছে মোবাইরে কথা বলার সময় অতি উচ্চমানের তরঙ্গ আমাদের কানের ক্ষতি করতে পারে, তাই আমি কানে ধরিনা ।।। (তিথি)
নিন এবার বাবার সাথে কথা বলুন (তিথি)
বাবা কে কোথায় পেলে তুমি।।।(আমি)
বাবা তো এখানেই৷ (তিথি)
সাথে সাথেই ফোন টা কেটে দিলাম , ভগবান ই জানে এই মেয়ে কত দিন পর্যন্ত আমার ইজ্জত নিয়ে ফুটবল খেলবে।।
পরদিন রাত্রি বেলা আবার তিথির ফোন , ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম।।।
ফোন ধরেই (আমি) বাবা মা তোমরা সবাই কেমন আছো , তোমাদের শরীর টা ভাল ?
বাবা মা কে কোথায় পেলেন আপনি?(তিথি)
কেন বাবা মা নেই?(আমি)
না, আমি তো নানীর রুমে।।।। (তিথি)
ওওওও নানী কেমন আছো ?(আমি)
হিহিহি (তিথি)
হাসছো কেনো ?(আমি)
আমার নানী কে আপনি নানী বললেন , আপনার ত দাদী হয় , আর নানী তো আপনার কথা শুনতে পাবে না কারণ আমি তো কানে ধরে আছি , নানী বলেছে স্বামীর সাথে কথা বলার সময় নাকি কানে ধরে কথা বলতে হয়।(তিথি)
যাক এতদিনে তোমার নানী একটা কাজের মত কাজ করেছে।।।(আমি)
শুনুন না আপনাকে কিছু কথা বলি? (তিথি)
হ্যাঁ বলো।। (আমি)
আপনার জন্য না আমার কেমন কেমন করে , আপনাকে না আমার খুব মনে পড়ে , সারক্ষন মনটা চায় আপনার পাশে থাকি , আপনার বুকে মাথা রেখে ঘুমায় , আপনি যখন অনেক চিন্তায় থাকেন আপনার কপালে চুমু দিয়ে সব চিন্তা দুর করে দিই , আমার কোলে মাথা রেখে আপনাকে ঘুম পাড়াই।।।(তিথি)
তিথি সত্যি!!!! (আমি)
দাড়ান না শেষ হয়নি তো। সব সময় আপনার হাতটা ধরে থাকি , আপনাকে আমার আঁচল দিয়ে বেঁধে রাখি।।। আপনার সাথে এক থালায় খাই , আপনা…,(তিথি কে আমি থামিয়ে দিয়ে..)
তিথি সত্যি তোমার এমন মনে হয়(আমি)
ইসসস আপনি এমন কেনো ? দিলেন তো সব ভুলিয়ে ? নানী তার পর যেন কি বলতে বলছিলো , উনি ত সব ভুলিয়ে দিল (তিথি)।।।
তিথি ফোনটা রাখো , অনেক রাত হয়েছে , এখন ঘুমাও। (আমি)(মুড টাই নষ্ট করে দিল)
আচ্ছা পরে মনে হলে আবার ফোন করবো তাহলে।।(তিথি) ❤️❤️❤️
আর কোনো কথা না বলে ফোনটা রেখে দিলাম।।
রাত তিনটা , আবার তিথির ফোন , রিসিভ করতেই ঘুম গলায় বলছে….
” ওগো শুনুন না , আমার না এখন মনে পরছে বলি?”
মেজাজ টা ৪২০ করে দিল , দিলাম এক ধমক ঘুমা ফাজিল মেয়ে, এই রাত্রী বেলা ইয়ার্কি করছো ? থাপ্পড়ে দাঁত ফেলে দেবো বলেই ফোনটা রেখে দিলাম।
কিছুক্ষন পরেই বাবার ফোন।।
” আরে বাবা কেমন আছো ? ”
” হারামজাদা থাপ্পড়ে দাঁত ফেলে দেবো। তুই তিথিকে কি বলেছিস ? মেয়েটা এত রাতে কাঁদছে কেনো ?”(বাবা)
তোমায় কে বলল ও কাঁদছে ?(আমি)
” বলতে হবে কেন তিথিই তো কাঁদতে কাঁদতে আমায় ডেকেছিলো, ও নাকি তোকে কি বলতে চাইছিল তুই ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করলি কেনো ?? ওইটুকু তো একটা মেয়ে একটু বোঝানো যেতো না ।। “(বাবা)
” বাবা ওর বকর বকর শুনে কি করবো বলো , সকালে একটা মিটিং আছে আর এত রাতে ফোন দিয়েছে ” (আমি)
তারপর……(পরের এপিসোডে বলছি।। আর কেমন আপনাদের এই তিথি র চরিত্র টা জানাবেন প্লিজ ❤❤)
কেমন হলো জানাবেন প্লিজ সবাই পাশে থাকবেন ধন্যবাদ ❤️