অবেলায়_তুমি Part:-05
#Writer_Aysha_Siddika(Tip)
সকাল থেকে টিপকে রুমে আটকে রেখেছে সাহিল।
,
—আপনি আমাকে বের হতে দিচ্ছেন না কেন, আমি বাহিরে যাবো রুমের মধ্যে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে (টিপ)।
,
—-কোথাও যাওয়া চলবে না, রুমের বাইরে এক পা দিলে ভেঙ্গে বসিয়ে রাখবো। (রেগে বললো সাহিল)
,
—-টিপ বসে বসে কান্না শুরু করে দিলো। এএএএএএএএ আম্মুউউ আমাকে আটকে রেখে খুন করতে চায় নিশ্চয় এই লোকটা এএএএএ।
,
—-ওই চুপপপপ কানের পোকা বের করে দিলে তো, এত চিল্লাও কেন তুমি?(ধমক দিয়ে)
,
—–এ্যাএএএএএএ
,
—-চুপ বলেই সাহিল টিপের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে টিপকে থামিয়ে দিলো।
,
টিপ ভয় পেয়ে চুপ হয়ে রইলো।
,
সাহিল টিপের খুব কাছে চলে আসলো, দুজনের নিশ্বাস দুজনের মুখের উপরে আছড়ে পরছে, গরম নিঃশ্বাসে টিপের হার্টবিট ফার্স্ট হয়ে গেছে, টিপ ভয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে আর সাহিল টিপকে আরো কাছে টানছে।
,
দুটি মানুষ দুজনের মাঝে ডুবে যাচ্ছে, চোখে চোখে লেনাদেনা, টিপের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে সাহিল।
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে পুরো শরীর বরফের মত ঠান্ডা হয়ে গেছে টিপের।
,
শিরদাড়া বেয়ে কিছু শিতল শিহরন বইয়ে যাচ্ছে।
,
সাহিল এখন নেশায় মত্ত টিপের নেশায়, মনে যা ই থাকুক, টিপের জন্য কোথাও যে জায়গা তৈরী হচ্ছে তা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে টিপ।
,
হয়তো বা প্রেজেন্ট করার ধরনটা ভিন্ন সবার থেকে।
একটু রাগ থেকে ভালোবাসার প্রকাশ, হলে ক্ষতি কি।
,
টিপের অদ্ভুত একটা ফিলিংস হচ্ছে, এই প্রথম সাহিল টিপের এত কাছে আসছে।
জীবনের এই সময়টা নিয়ে একসময় কত পরিকল্পনা স্বপ্ন দেখে মানুষ।
কিন্তু কেউ কেউ স্বপ্ন না দেখলেও হয়ে যায় এমন কিছু, ব্যস প্রকৃতির নিয়মে ঘটে।
,
হিমান্ত রুমের মধ্যে হাটছে আর অস্বস্তিতে ভুগছে, অনু ভাইএর কান্ড দেখে হাসছে।
,
সকাল থেকে মেয়েটাকে দেখছিনা, সালা আমার টিপকে আটকে রেখেছে, আবার দেখ কেমন লুচু, এই সাহিল খবরদার আমার টিপকে ছুঁবি না তুই, বলে যাচ্ছে আর সি সি ফুটেজ দেখে রেগে ফেটে পরছে।
,
—-হিমান্তদা সাহিলদার সম্পূরণ অধিকার আছে টিপের ওপরে।
টিপ তার বিয়ে করা বউ।
,
চলো না আমি তুমি আর মিম তিনজন সুখে থাকবো।
ভুলে যাও না টিপকে, তোমার তো উচিৎ ওদেরকে ওদের মত ছেড়ে দেয়া।
,
,
হিমান্ত রেগে হাতের কাছের ফুলদানি টা জোরে আছাড় মারে।
,
কেন ওর সাথেই এমন হয়, একজনকেই তো ভালোবেসেছিলো।
,
যে কোন মুল্যে হোক টিপকে আমার চাই বলেই হিমান্ত রেগেমেগে সমূদ্রের পাশে গিয়ে বসে পরে।
,
,
টিপের আরো একটু কাছে যেতেই টিপ ধাক্কা দিয়ে সরে আসে।
সাহিল টিপের ধাক্কা দেয়াতে রেগে যায়,
টিপের কাছে গিয়ে টিপের দুই বাহু শক্ত করে ধরে,
,
,
তুই কি ভাবছিস আমার পাখি অন্যের ডালে উরে বেড়াবি তা হবে না।
,
বলে টিপকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে, টিপ প্রচন্ড ব্যথা পায়, সাহিলের প্রতি যা একটু ভালোলাগা ছিলো তা ও শেষ হয়ে যায় মুহুর্তেই।
,
সাহিল একটা হিংস্র জানোয়ার, টিপ শক্ত হয়ে জোরে ধাক্কা দেয় সাহিলকে।
,
সাহিল টিপকে আবার ধরে, আর টিপের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে মায়া ভরা ছলছল চোখে, টিপ পাখিটা তুমি আমার তুমি জানোনা?
,
আজ থেকে আমি যা বলবো তার বাইরে এক পা ও চলবে না।
(রেগে + চিল্লিয়ে)
,
টিপ এবার জোরে চিল্লিয়ে ওঠে,
,
তুই একটা জানোয়ার, কেন আমাকে এভাবে টর্চার করছিস কি করছি আমি তোর বল।
,
—সাহিল জোর করে টিপের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দেয়, টিপ ছটফট করতে থাকে আর হাত দিয়ে সাহিলকে ইচ্ছে মত মারতে থাকে, বাট পেরে ওঠেনা সাহিলের শক্তির কাছে।
,
টিপের দম বন্ধ হয়ে আসছে, সাহিলের ভালোবাসা এক একটা কামরে রুপ নিচ্ছে, ঠোঁট কেটে গেছে রক্ত বের হচ্ছে।
,
সাহিল ছেড়ে দেয় টিপকে , এটা আমার ভালোবাসার চিহ্ন, মনে রাখবি সবসময়, আর অন্য কোন ছেলের দিকে তাকানো দূরের কথা ভাবতে গেলেও আগে আমার কথা মনে পরবে তোর।
,
বলে ওয়াশরুমে চলে যায়,
,
টিপ ওখানেই বসে পরে, আর কান্না করতে থাকে, এ কেমন ভালোবাসা বাবা তুমি আমায় এ কোথায় দিয়ে গেলে।
,
হিমান্ত রুমের সবকিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে, চোখের সামনে এটা দেখতে পারছে না সে।
কষ্টে বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে তার, কি করবে সে।
,
,
সাহিল ওয়াশরুমের আয়নায় তাকাতেই অবাক হয়ে যায়, ওর মুখে রক্ত লেগে আছে,
মুহুর্তেই সাহিল ছুটে আসে রুমে, টিপপপ কোথায় তুমি টিপ।
,
টিপ বারান্দায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে ভয় পেয়ে।
,
সাহিল টিপের কাছে গেলেই টিপ ঠেলে সরিয়ে দেয়।
,
দেখি ঠোঁট কতখানি কেটেছে, রক্ত পরছে ওঠ ঠিপ আমাকে আবার জোর করতে বাধ্য করো না।
,
—-টিপ উঠে অন্যপাশে যেতে নিলেই সাহিল একটানে টিপকে কোলে তুলে নেয়, তারপর রুমে এসে সোফায় বসিয়ে দেয়।
,
টিপ নিরবে কাঁদতে থাকে।
,
সাহিল অস্থির হয়ে পরে টিপের ঠোঁটে রক্ত দেখে, তারপর মেডিসিন লাগিয়ে দেয়, আর টিপকে শক্ত করে বুকে জরিয়ে নেয়, টিপ এখনও ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে আর সাহিল টিপকে জরিয়ে ধরে শান্ত করে।
,
—পাখিটা আর এমন করো না, যাতে আমার রাগ দেখাতে হয় তোমার সাথে।
তুমি সফল বিজনেসম্যান সাহিল মাহমুদ অর্নবের একমাত্র স্ত্রী, এখন থেকে তুমি আমার কথা ছাড়া কোথাও যাবে না।
,
তুমি জানোনা টিপ সাহিল তোমাকে ঠিক কতটা ভালোবাসে(মনে মনে ভাবে সাহিল, অবশেষে যখন তোমায় পেয়েছি কোনকিছুর বিনিময়ে হারাতে দেবো না আমি বলেই মুচকি আসে সাহিল।
এ হাসি যেই সেই হাসি না, রহস্যময় হাসি, কি লুকিয়ে আছে হাসির আড়ালে নাকি কোন নতুন গল্প, বুঝতে পারছেনা টিপ।
,
শুধু জানে ওর জীবনটা নদীর স্রোতের মত যেদিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সেদিকে যেতে হবে।
,
,
,
চলবে….
,
সম্পূর্ণ কাল্পনিকতায় লেখা গল্প, তবুও কিছু কিছু চরিত্র মন ছুঁয়ে যায় আবার কিছু কিছু কথায় হাসি আসে, চোখের কোনে জ্বল ও আসে, যদিও মানুষের জীবন গল্প নয় তবে জীবন থেকেই গল্পের সৃষ্টি।