#অব্যক্ত প্রেমাসুখ❤️🔥
#আদ্রিতা নিশি
।১৮।
অ্যালার্ট:[ গল্পে কিছু ভায়ো’লেন্স শব্দ ও কাহিনীর বর্ণনা করা হয়েছে।দুর্বলচিত্তরা এড়িয়ে চলুন।]❌
[কপি করা নিষিদ্ধ ❌]
“ এই মিডল ক্লাস মেয়ে বড়লোক ছোকরা পটাতে পারে আমার তা ধারণার বাইরে ছিলো। ফ্যামিলি যেমন নিম্নশ্রেণীর এই গ্রামের মেয়েও ঠিক ততোটাই নিম্ন।সুযোগ বুঝেই বড়লোক ছেলের গলায় ঝুলে পরেছে।”
ইফতির কথাগুলো পিনপিনে নিরবতার মধ্যে যেনো বজ্রপাতে পরিণত হলো। মীরাতের মুখে কথা নেই। সে জঘন্য শব্দের নীড়ে ঢুকে গেছে। তার চোখের কোণে অশ্রু জমেছে।কানে সেই কথাগুলো বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে। বক্ষে অবর্ণনীয় বিষণ্নতা তাকে গ্রাস করছে। ফাবিহা, মীরাতের পাশে এসে দাঁড়ায়। মীরাতকে পিছু টেনে নিয়ে যায়। সে নিজেও বাকরুদ্ধ, মস্তিষ্ক জুড়ে শুধুই বিরক্তবোধ। মীরাতের কাঁধে হাত রেখে ফাবিহা অনুভব করে নিঃশব্দ কান্নার ভাব। সে আর আহিয়াদকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস করলো না। পরিবেশ স্বাভাবিক হলে না হয় পুরো কাহিনী জেনে নিতে পারবে।
ইফতি সামনে তাকিয়ে আবারও তাচ্ছিল্যের স্বরে বলে উঠলো ;
“ এই যে মিস্টার এই মেয়েকে বিয়ে করে নিশ্চয়ই পস্তাচ্ছেনএখন!তাই তো ফ্যামিলিকেও এখনো জানাননি। এখন আর জানিয়ে লাভ নেই ডিভোর্স দিয়ে দিন। “
আহিয়াদ আর শান্ত থাকতে পারলো না। সে ফুঁসে উঠলো। র*ক্তচক্ষু চাহনিতে তাকালো ইফতির দিকে। রাগে কপালের রগগুলো স্পষ্ট দৃশ্যমান। সে চোয়াল শক্ত করে কাঠিন্যতা বজায় রেখে তড়িৎ বেগে এগিয়ে গেলো ইফতির দিকে। ইফতির হাসি মুখ আতংকের রুপ নিলো।সে ঘাবড়ে গেলো এহেন কান্ডে। তার মুখ ভয়ে সংকুচিত হয়ে গেলো মুহুর্তের মধ্যে ।ইফতি ভয়ে পিছাতে লাগলো। আহিয়াদ বিগড়ে যাওয়া মেজাজে ইফতির সামনে দাঁড়ালো। এক হাতে ইফতির শার্টের কলার ধরে অন্যহাতে সজোরে বেশ কয়েকটা ঘুষি মা*রলো নাক বরাবর। তার সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে গলা চে*পে ধরলো। ইফতির নাক দিয়ে ফিনকির ন্যায় র*ক্ত পরছে। গাল মুখে র*ক্তের ছিটে। সাদা শার্ট র*ক্তের ছোপ ছোপ দাগে ভরে গেলো। গলা চে*পে ধরার কারণে চোখ উল্টে আসছে তার। দম আঁটকে আসছে। ইফতি আহিয়াদের থেকে নিজেকে বাঁচা*নো চেষ্টা করছে। কিন্তু পেরে উঠছে না। হাত পা আছড়ে চলেছে। হঠাৎ আক্রমনে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা।
আহিয়াদের মায়া হলো না। গুরু গম্ভীর কণ্ঠে দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো ;
“ তোর মতো নর্দমার কীট কে আমি আমার বউয়ের সম্পর্কে কোনো কথা বলার অনুমতি দেয়নি। তোর সাহস দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি আমি। তোর মতো ক্যারেক্টারলেস আবার আমায় সাবধান করছিস। ”
ইফতি ব্যথায় কাতর কন্ঠে ধীরে বললো ;
“ আমায় ছেড়ে দে।”
“ উহু। তোর মুখ চিরদিনের জন্য বন্ধ করে তারপর একবারে মুক্তি দেবো।”
ইফতি আরো ভীষণ আতংকিত হয়ে পরলো।ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে। আহিয়াদ নামক মানুষটিকে ভয়া*নক লাগছে। তার নিঃশ্বাস আঁটকে আসছে। এখনি বোধ হয় ম*রে যাবে। দোকানের কর্মচারীরা পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুজন ছুটে এসে আহিয়াদের থেকে ইফতিকে ছাড়াতে লাগলো। আরেকজন দ্রুত পুলিশকে কল করলো। আহিয়াদ তখনি ইফতিকে সজোরে ধাক্কা দিলো মেঝেতে। ইফতি নিজেকে সামলাতে না পেরে ঠাস করে মেঝেতে পরে গেলো। তার কপাল সজোরে বারি খেলো মেঝেতে। কপাল কেটে গলগল করে র*ক্ত পরতে লাগলো। ফ্লোরে যেনো র*ক্তের বন্যা বইছে। সেখানে উপস্থিত সকলেই হতভম্ব হয়ে গেলো। কর্মচারী দুজন ভয়ে আহিয়াদকে ছেড়ে পিছু হটলো। কি নৃশংস দৃশ্য!
মীরাতের কান্নার অসীম দেনামোনায় ডুবে গেছে। আহিয়াদের হিংস্র রূপ দেখে তার মন জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তে সে সেই পরিচিত মানুষটিকে হারিয়ে ফেলেছে।সামনে দাঁড়িয়ে আছে ভিন্ন সত্তা। নৃশংস দৃশ্য দেখে মীরাতের গা গুলিয়ে উঠলো। সে মুখ চেপে ধরলো।ফাবিহার চোখগুলো বিস্ফোরিত। ভাইয়ের রূপের ভয়াবহতা তাকে অচেতন করে দিচ্ছে। আহিয়াদের ক্ষুব্ধ চেহারা দেখে সে কথা বলার সাহস হারিয়ে ফেলেছে।
ইফতি ব্য*থায় চিৎকার করছে। মেঝেতে শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছে। তার শরীরে শক্তি নেই। ফ্লোর র*ক্তে ভেসে যাচ্ছে।
আহিয়াদ এগিয়ে যায় ইফতির দিকে। পা বাড়িয়ে লাথি মা*রে ইফতির পেটে। ইফতি ব্য*থায় আর্তনাদ করে উঠে। গগনবিদারী শব্দে সকলে চমকে যায়।
আহিয়াদ ফিচেল হাসে। ক্রোধ মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠে;
“ এতোগুলো মা*রলাম কেনো জানিস? মেয়েদের সম্মান না করার জন্য। তোর বাড়িতেও মা বোন আছে তাদের সাথে কেউ এমন জঘন্য ব্যবহার করলে কেমন লাগতো? নিশ্চয়ই ভালো লাগতো না। আমারও ভালো লাগেনি। তুই ভুল মানুষকে কটু কথা শুনিয়েছিস ফলে তো ভোগ করতেই হবে। যদি বেঁচে থাকিস তাহলে তোর বাপকে জিজ্ঞেস করিস আহিয়াদ সীমান্ত কে?শ্লা কু*ত্তা বেস্ট অফ লাক ভবিষ্যৎ এর জন্যে। ”
কথা শেষ হতেই আরেকটি লাথি মার*লো ইফতির পেটে। ইফতি ব্যথা সহ্য করতে না পেরে চেতনা হারালো। আহিয়াদ অগ্নিচক্ষে তাকিয়ে আছে আহত ইফতির দিকে। মীরাত ভয়ে চোখ খিঁচে নিলো। আহিয়াদ ইফতিকে মে*রে ফেলবে তাহলে তো জেল হবে। ফাঁ*সি ও হতে পারে। এসব ভাবতেই অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো মীরাতের। আহিয়াদের এই হিংস্র রুপ দেখে ভয়ে ঢোক গিললো। ফাবিহা দিগবিদিক ভুলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তার মনে হলো আহিয়াদকে থামাতে পারবে একমাত্র সুরমা বেগম। সে তখনি ছুটলো মায়ের কাছে।
আহিয়াদের রাগ এখনো শান্ত হয়নি। সে পা বাড়িয়ে আরেকটা লাথি দিবে এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন জড়িয়ে ধরলো। আহিয়াদ থেমে গেলো। পরিচিত মেয়েলী সুবাস নাসিক্য রন্ধ্রে প্রবেশ করতেই থমকে গেলো। সে ঘাড় বাঁকিয়ে দেখলো মানুষটিকে। মীরাত তাকে আষ্টে পৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। অনুভব করলো পিঠে ভেজা ভেজা লাগছে। তারমানে মীরাত কাঁদছে। আহিয়াদের রাগ কিছুটা নিভে এলো। সে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালালো।
“ আপনি ইফতিকে মার*বেন না। ও ম*রে গেলে আপনি জেলে যাবেন। আপনার ফাসি হবে। তখন আমার কি হবে বলুন? আমি আপনাকে ছাড়া কীভাবে থাকবো। আমি তো সারাজীবনের জন্য একা হয়ে যাবো। আপনাকে ছাড়া ধুঁকে ধুঁকে মর বো। আপনাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না আহিয়াদ। ”
মীরাতের কন্দনরত কাতর কন্ঠ শুনে আহিয়াদ হঠাৎ শান্ত হয়ে গেলো। কিছুটা বিচলিত হলো তার মনসত্তা । মীরাতকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সে সামনে দাঁড় করালো। মীরাত নিচু মুখে এখনো কেঁদেই যাচ্ছে।
আহিয়াদ শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো ;
“ আমি না থাকলে বাকী সবাই তো থাকবে।”
আহিয়াদের শান্ত কন্ঠে বলা কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই মীরাত অভিমানমিশ্রিত চোখে তাকালো।
মলিন মুখে বলে উঠলো ;
“ বাকী পথটুকু চলার জন্য হলেও আমার আপনাকে চাই। আপনাকে হারাতে চাই না আমি। ”
আহিয়াদ কিছুক্ষণ অপলক দৃষ্টি মেলে রইল, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া নেই তার। তবে মীরাতের কথায় অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করলো নিজের মাঝে। কিছুক্ষণ পরে আশেপাশে তাকিয়ে সে কিছু খুঁজতে লাগলো। চোখে পড়লো পাশের টেবিলের ওপর একটি পানির বোতল।অতঃপর, পা বাড়িয়ে টেবিল থেকে বোতলটি তুলে নিয়ে আসলো আহিয়াদ। বোতলের ঢাকনা খুলে, সে মীরাতের সেই হাতের দিকে তাকালো, যেটি ইফতি স্পর্শ করেছিলো। সাবধানে হাতটি উঁচিয়ে ধরে, পানির দ্বারা স্পর্শ করা স্থানটি ধুয়ে দেয়।
মীরাত স্তম্ভিত হয়ে যায়। তার চোখে বিস্ময়ের ছাপ ফুটে উঠেছে । আহিয়াদের হঠাৎ এমন কান্ড তাকে বিস্মিত করছে। এই মুহূর্তে, তার মনে একটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে—এটি কি তার পরিচিত সেই আহিয়াদ, নাকি অন্য কেউ?
আহিয়াদ মীরাতের হাত ছেড়ে দিয়ে বোতলে থাকা অবশিষ্ট পানি ইফতির মুখে ঢেলে দিতে লাগলো। মীরাত দুই কদম পিছিয়ে গেলো। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে অবলোকন করে মীরাতকে উদ্দেশ্য করে অতি অস্বাভাবিক কণ্ঠে বলে উঠলো ;
“ তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার একমাত্র আমার
। আমি ব্যতিত যে তোমায় স্পর্শ করার দুঃসাহস দেখাবে তাকে আমি নিজ হাতে খু*ন করবো।
আহিয়াদের অপরিচিত আচরণে মীরাত হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়লো। অজানা ভয়ের আবরণে সে সিঁটিয়ে গেলো। তার হৃদয়ের ভিতর তীব্র শিহরণ জাগ্রত হলো। সে অবিশ্বাস্য চাহনিতে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সেই মানবটির দিকে তাকালো।
আহিয়াদের চেহারার মধ্যে ক্রোধ ও হতাশার ছাপ স্পষ্ট। তাকে আজ পরিচিত মনে হচ্ছে না। মীরাতের মনে হলো এ যেনো অচেনা দানব, যার অন্ধকার ছায়া তার জীবনের আলোকে গ্রাস করছে।মীরাতের চোখে অজানা দোলাচল।মনে হচ্ছে এটি ভয়াবহ স্বপ্ন। চোখ খুললেই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আহিয়াদ মীরাতের চাহনির গভীরতা বুঝতে পারলো, কিন্তু সে কোনো শব্দ উচ্চারণ করলো না। বিরক্ত আর ক্রোধের অদ্ভুত মিশ্রণ তার মনে দানা বেঁধেছে।বিগড়ে যাওয়া মেজাজে হাতে থাকা বোতলটি সে শক্ত হাতে তুলে নিয়ে ফ্লোরে ছুঁড়ে মা*রলো।
তিনজন কর্মচারী ভয়ে আরো সিঁটিয়ে গিয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে রইল।তাদের চোখে মুখে ভীতির ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠলো।। তারা এই মুহুর্তে কি করবে তা বুঝতে পারছে না। দোকানটি এখন প্রায় ক্রেতা শূন্য হয়ে গেছে । চারপাশে অবশ্যু হয়ে থাকা চাপা অশান্তি।যেখানে মীরাত এবং আহিয়াদকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা প্রবাহিত হচ্ছে।
আহিয়াদ ইফতির দিকে নজর দিলো। গাঢ় আলোয় ভাসমান ইফতির দেহটি ক্ষীণ আশা, অচেতনতার পর্দা ভেদ করে ধীরে ধীরে সচেতন হতে শুরু করছে। হাত-পা নাড়ানোর চেষ্টা করছে। মৃ ত্যুর সাথে লড়াই করে ফিরে আসছে জীবনদিগন্তে। ফ্লোরের অনেকটা র*ক্ত আর পানির সংমিশ্রণে জঘ*ন্য আর ভয়াবহ লাগছে। আহিয়াদের হৃদয়ে চাপা ক্রোধ ও উদ্বেগের লহর উঠলো। সে পকেট হতে কাউকে কল করলো। ফোনের পর্দায় আলো জ্বলে উঠলো।অপর প্রান্ত থেকে অপরিচিত কণ্ঠস্বর ভেসে এলো।
আহিয়াদ গম্ভীর কণ্ঠে মোবাইলের অপর পাশে থাকা ব্যক্তিকে প্রতিত্তোর করলো;
“ সান সাইন শপিং মলে ইমার্জেন্সি এম্বুলেন্স পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। থার্ড ফ্লোর ২২ নং দোকানে একজন গুরুতর আহত হয়েছে। দশ মিনিটের মধ্যে এম্বুলেন্স যেনো পৌঁছে যায়।”
অপর পাশের উত্তর আসার আগেই কল কাটলো আহিয়াদ।
★★
রাত দশটা বেজে পনেরো মিনিট। ফাবিহা তার রুমে স্থির হয়ে বসে আছে। আজকের ঘটনাবলী, বিয়ের কাহিনী—সবকিছু মিলে তার মাথায় বিশাল গণ্ডগোল হয়ে গেছে। বাসায় ফিরে মীরাতের কাছ থেকে প্রথমে যা শুনেছে, তাতে সব কিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। আহিয়াদের সাথে দেখা হওয়া থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সব কাহিনী মীরাত বলেছে।
ফাবিহার পাশে বিছানায় মীরাত অসহায় মুখ করে বসে আছে, ফাবিহার দিকে অনুগ্রহের চাহনিতে তাকিয়ে আছে । তার চোখে আতঙ্কের ছাপ সে নিজেকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করতে পারছে না।
ফাবিহার যে এতোটা শকড হওয়ার সম্ভাবনা আছে ভাবতেই পারেনি।
ফাবিহা নিরবতা ভেঙ্গে থমথমে গলায় বলে উঠলো ;
“ ভাই যাকে পিটিয়েছে তার সাথে তোমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো?”
মীরাত মুখ গোমড়া করে বললো;
“ হুমম।”
“আমার ভাই গ্রামে যেয়ে বিয়ে করে ভাবি নিয়ে আসলো আর আমি জানতেই পারলাম না। বিয়ে করেছে তাও কাউকে বলেনি। মনে হয় বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে বিয়ের কথাটা জানানোর প্ল্যান ছিলো।”
মীরাত একটু লজ্জা পেলো। ফাবিহা আবারও হতাশা নিয়ে বললো;
“ আরিশা আপু ও আমায় একবারও বললো না। বললে তো আমি বাবা মাকে বলতাম না। ”
“ বলার মতো অবস্থা ছিলো না। ”
“ হয়েছে হয়েছে। আজ যদি জানতে না পারতাম তাহলে ওই এক দুই বছর পর বাচ্চা কোলে করে নিয়ে এসে আমায় দেখিয়ে বলতে ওই যে ওই কিউট সুন্দরী মেয়েটা তোমার ফুপী হয়।”
“ তোমার ওই রগচটা ভাই তো বলেনি। ”
“ ওটা মেইন বজ্জাত। এখন ভাবছি মা বাবা জানলে কি হবে? আর জেনি আপু যদি জানে ভাই বিয়ে করেছে তবে নিশ্চিত তুলকালাম বাঁধিয়ে ছাড়বে। ”
“আমিও এটা নিয়ে টেনশনে আছি।”
ফাবিহা চোখ ছোট ছোট করে মীরাতের দিকে তাকিয়ে বললো;
“আগামীকাল ভাই কেনো পার্টি দিচ্ছে? সেখানে তো জেনি আপুর পরিবার সহ ভাইয়ের ফ্রেন্ড সার্কেল থাকবে। এই তোমরা কি বিয়ের রিসেপশন করছো? সত্যি বলবে।”
মীরাত থতমত খেয়ে উত্তর দিলো ;
“ আগামীকাল আমাদের বিয়ের কথা সকলকে জানাবেন উনি।”
ফাবিহা মাথায় হাত দিয়ে মৃদু চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো;
“ এটা তুমি কি বলছো? এবার ভাই শেষ। বাবা নিশ্চিত তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে। তখন কি হবে?”
মীরাত অসহায় মুখ করে বসে আছে। মনে মনে বললো;
“ এর থেকেও আমি বড় ভয়ে আছি ফাবিহা। তোমার ভাইয়ের আজকের আচরণে আমি শঙ্কিত। আজকে উনাকে উদভ্রান্তের মতো করতে দেখেছি। মানুষটাকে আজ বড্ড অচেনা মনে হয়েছে। ভাবতেই আরো বেশী অবাক হচ্ছি উনি আমার প্রতি এতোটা সিরিয়াস। ”
[আজকের পর্ব কেমন হয়েছে সকলে জানাবেন।নতুন রুপে আহিয়াদকে কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু।]
চলবে……