#অব্যক্ত প্রেমাসুখ❤️🔥
#আদ্রিতা নিশি
২৪.
[কপি করা নিষিদ্ধ ❌]
“ জীবনে এই প্রথম দেখলাম বিয়ে করেও সিঙ্গেল রয়ে গেছে মানুষ জন। ”
“একদম আমায় রাগানোর চেষ্টা করবি না। ”
“আহা! যে কান্ড দুজনে ঘটিয়েছ। বিয়ে করেছিস চুরি তো করিসনি। তাহলে এই বিয়ে নিয়ে লুকোচুরি কেন?”
“সব কিছু জেনেও আবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিস?”
মীরাত মুখ ভার করে বলল আরিশাকে। আরিশা এসে থেকেই মীরাতকে নানা প্রশ্ন করে জ্বালাচ্ছে। মীরাত রেগে রেগে উত্তর দিচ্ছে শুধু। ফাবিহা মিটিমিটি হাসছে আর চিপস খাচ্ছে। তার মন বলছে আরিশা একদম ঠিক কাজ করছে। এদের একটু শিক্ষা পাওয়া উচিত।
আরিশা মুখ বেঁকিয়ে বলল;
“আহিয়াদ ভাইয়ার থেকে এটা আশা করিনি আমি। ভেবেছিলাম বিয়ের কথা সবাইকে বলে দিয়েছে। এখন দেখছি একদিন আগে জেনেছে।”
মীরাত সরু চোখে তাকিয়ে বলল;
“ তোর ওই ভাই কীভাবে বলতো? জেনি আপুর সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পরও আমাকে বিয়ে করেছে। এতো বেশী কথা না বলে তোর ওই ভাইকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর কেন এতোদিন চুপ ছিল। আমার মাথা গরম করিস না। ”
আরিশার মাথায় বাজ পড়লো যেন। সে সন্দিহান দৃষ্টিতে মীরাত আর ফাবিহার দিকে তাকালো। ফাবিহা মাথা নাড়িয়ে ইশারায় বোঝালো মীরাত সত্যি কথা বলছে। তার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। চমকে উঠে বলল;
“ হোয়াট! জেনি আপুর সাথে বিয়ে মানে কীভাবে সম্ভব? আমরা তো এই বিষয়ে কিছুই জানতাম না। ”
মীরাত হাসার ভাণ করে বলল;
“আমিও জানতাম না। এই তো কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি।একদম সিনেম্যাটিক কাহিনী। ”
“বিয়ের কাহিনী শুনতে শুনতে মাথা পঁচে যাচ্ছে আমার। এক বিয়েতে এতো কাহিনী কী আর বলব। ঘুম ধরেছে আমার। ঘুমাবো এখন। কাল আবার তোর ক্লাস নিব। ”
“ঘুমাতে কী আমি নিষেধ করেছি? চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পর। ”
“ তুই রুম থেকে বের হো। তারপর ঘুমাবো। ”
মীরাত চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল;
“আমি কোথায় যাবো?”
আরিশা দাঁত কেলিয়ে বলল;
“বিবাহিত মেয়ে এই ঘরে নট এলাউড। যাও বাবু তুমি তোমার কলিজার কাছে যাও। ঠিক বলেছি না ফাবিহা বেবি। ”
ফাবিহা হু হা করে হেসে দিল। হাসতে হাসতে বলল ;
“একদম ঠিক বলেছো আরু আপি। ”
ফাবিহা খাওয়া শেষ করে বিছানায় তাড়াহুড়ো করে শুয়ে পড়ল। আরিশাও দ্রুত শুয়ে পড়ল ফাবিহার পাশে। দুজনে চোখ বন্ধ করে ম’রার মতো হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়েছে যেন মীরাত তাদের সাথে এক রুমে না থাকে। মীরাত ক্ষুব্ধ হয়ে দুজনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিন্তু সেই দুজন তো ঘুমের নাটক করতে ব্যস্ত।
মীরাত ক্ষুব্ধ হয়ে বলল;
“আমি এখানেই থাকবো। আরিশা আমায় শোয়ার জায়গা দে। ”
আরিশা চোখ মুখ কুঁচকে বলল;
“পারব না। যা আহিয়াদ ভাইয়ার রুমে যা ওখানে অনেক জায়গা আছে। আমাদের ডিস্টার্ব করিস না। রাত দুইটা বেজে গেছে কিন্তু।”
মীরাত রাগে গম গম করতে লাগল। এক মুহুর্ত আর সেখানে থাকল না। সে বিছানা থেকে উঠে ধপাধপ পা ফেলে রুমের বাহিরে চলে গেল। ফাবিহা আর আরিশা চোখ খুলে ধপ করে বসে পড়ল বিছানায়।দুজনে হঠাৎ হেসে উঠল একসাথে।
আরিশা হাসতে হাসতে বলল;
“প্ল্যান সাকসেসফুল বেব। ”
ফাবিহা ও হাসতে হাসতে বলল;
“ফাইনালি সাকসেসফুল। দুজনের যে বিয়ে হয়েছে কে বলবে। এখনও কেমন অচেনা মানুষের মতো থাকে। ”
“আগামীকাল সকালের প্ল্যান শুরু করতে হবে। ভাইয়া আর আহিয়াদ ভাইয়ার ফ্রেন্ডদের গ্রুপ কলে জয়েন হতে বল। ”
“ওকে আপি। এইতো কল দিচ্ছি। ”
ফাবিহা তার ফোন নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল করল। আরিশা দ্রুত গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে ফাবিহার কাছে এসে বসল। মূলত এই কারণেই মীরাতকে আহিয়াদের রুমে পাঠিয়েছে।
★★
মীরাত মুখ ভার করে আহিয়াদের রুমের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ভেতর থেকে তওহীদ সাহেব, মুন্সী সাহেব, সুরমা বেগম আর আফিয়া বেগমের কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে কোনো বিষয় নিয়ে জরুরী আলোচনা চলছে। তার খেয়াল হলো মুন্সি সাহেব আজ আহিয়াদের রুমে থাকবেন। তাহলে আহিয়াদ কি ছাদের ওই রুমে আছে? হয়ত। ফোন থাকলে সে কল করতে পারত। কিন্তু তার ফোন তো ফাবিহার রুমে। মীরাত আহিয়াদের রুম পেরিয়ে ছাদের দিকে রওনা হয়।
“এই যে মিস্টার দরজা খুলুন।”
মীরাত বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কিয়েও আহিয়াদের দেখা পেল না। সে খানিকটা বিরক্ত হয়ে পা বাড়াল ছাদের দিকে। মীরাত হেঁটে এসে রেলিঙ ঘেষে দাঁড়াল। দৃষ্টি তার ব্যস্ত নগরীর দিকে। রাত গভীর অথচ শহর এখনো জনমানবে পরিপূর্ণ। শহরের রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের গাড়ি। গাড়িতে পরিপূর্ণ রাস্তাঘাট। শহরের দোকানগুলো এখনও খোলা। আজ আকাশে চাঁদ উঠেছে। আবহাওয়াও শীতল। আজ পহেলা ডিসেম্বর। ডিসেম্বর মাসটা শীতের আনাগোনা থাকলেও এইবার শহরে তেমন শীত নেই। ভোর রাতে হালকা শীতের অনুভূতি হয়।তবে গ্রামে হাড় কাঁপানো শীতের আবির্ভাব ঘটেছে। মীরাতের মনে পড়ে গতবছরও এই সময় পিঠে, খেজুরের রস, গুড় খেয়েছে। পিকনিক করেছে ছোটদের সাথে। অথচ এইবছর সে ভিন্ন এক শহরে, ভিন্ন জীবন অতিবাহিত করছে। আগের সময় অনেক সুন্দর ছিল। কতো মধুর স্মৃতি সেই সময়ের। আজও মনে পড়ে।
“বিবি সাহেবা আপনি এখানে?”
আহিয়াদের অদ্ভুত সম্বোধনে মীরাত চমকে পাশে থাকায়। আহিয়াদ বুকে হাত গুঁজে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। মীরাত নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল;
“আপনার রুমে ঘুমাতে গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে আপনি ছিলেন না। তাই আপনার খোঁজে এখানে চলে এসেছি।”
আহিয়াদ ওষ্ঠ বাঁকিয়ে হাসল। বলল;
“আমায় ছাড়া ঘুম আসে না। আগে বললে রুমে বসেই তোমার ওয়েট করতাম। তারপর একসাথে এক বিছানায় দুজনে ঘুমাতাম। ”
মীরাত আমতা আমতা করে তড়িঘড়ি করে বলে উঠল ;
“ একদম বাজে কথা বলবেন না। ফাবিহা আর আরিশা আমায় ওদের রুমে ঘুমাতে দেয়নি। তাই আপনার রুমে ঘুমাবো বলে ভেবেছিলাম। আপনি তো ওই রুমে রাতে থাকেন না। ছাদের এই রুমে এসে ঘুমান। ”
“ এতো কথা ঘুরিয়ে লাভ নেই। বুঝেছি আজ কাল বর ছাড়া ঘুমাতে ভালোলাগে না। ”
“আপনি কিন্তু বেশী বাজে বকছেন। এমন করলে আর কথা বলব না বলে দিলাম। ”
মীরাত মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে রইল। আহিয়াদের ওষ্ঠ কোণে হাসি। মীরাতকে রাগাতে তার মন্দ লাগছে না। চাদের আলোয় আহিয়াদ মীরাতের গোমড়া মুখখানা খুব ভালোভাবেই দেখলো। সে বলল;
“ওকে আর কিছু বলব না। রিলাক্স হও। ”
মীরাত এবার নড়েচড়ে উঠল। ভাবমূর্তি এমন করল যেন সে আজ বেশ সিরিয়াস।সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আহিয়াদকে উদ্দেশ্য করে বলল;
“এতোকক্ষন ধরে নক করছিলাম অথচ আপনি কেন দরজা খুলেননি?”
আহিয়াদ স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিল;
“ইয়ারফোন লাগিয়ে কথা বলছিলাম একজনের সাথে। তাই খেয়াল করিনি। ”
মীরাত সন্দিহান কন্ঠে বলল;
“এই একজন টা কে?”
“তুমি চিনবে না।”
“আগে বলুন। চেনা না চেনা পরের ব্যাপার।”
“জেহফিলের সাথে কথা বলছিলাম। ”
“এই জেহফিল আবার কে?”
“আমার আর জেনির ফ্রেন্ড জেহফিল। ”
মীরাতের মুখ থমথমে হয়ে যায় জেনির নাম শুনে। আহিয়াদ তা খেয়াল করে বলল;
“জেহফিল জেনিকে লাইক করে।”
মীরাত উত্তর শুনে বেশ অবাক হয়ে বলল;
“জেহফিল ভাইয়া জেনিকে পছন্দ করে। জেনি আপু আপনাকে পছন্দ করে আর আপনি…”
আহিয়াদ শান্ত কন্ঠে বলে উঠল;
“আর আমি তোমাকে পছন্দ করি।”
মীরাত বিস্মিত হয়ে গেল। সে বেশ কয়েকবার চোখ ঝাপটালো। আজকাল আহিয়াদের এমন অদ্ভুত ব্যবহারে সে ভীষণ চমকে যায়। মানুষটাকে চেনা আবার অচেনা লাগে তার কাছে। একটু লজ্জা লাগছে তার। লজ্জা আড়াল করে বলল;
“জেনি আপুর কাহিনী মনে হয় না শেষ হবে। প্রতিটি কথায় জেনি আপুর নাম জড়িয়ে থাকে। আর হয়তো সামনের দিনগুলোতেও এমনটাই চলবে। ”
“তুমি হয়ত জেনিকে স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছো। এতোকিছুর পরেও জেনির জন্য কষ্ট পাচ্ছো। বাট আমার ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। মিথ্যা বলব না। জেনির জন্য আমার খারাপ লেগেছে। তবে জেনির কাজের জন্য ওর ওপর ভীষণ ডিসোপয়েন্টেড। ”
“কী কাজ?”
“আমরা জেনিকে যেমন দেখি সে তেমন নয়। জেনির আমাকে হঠাৎ বিয়ে করতে চাওয়া এটা মোটেও স্বাভাবিক ছিল না। বিয়েটা শুধু একটা মাধ্যম ছিল তাদের নিজেদের কার্যসিদ্ধির। জেনির টার্গেট আমি ছিলাম। তবে আমায় ছাড়া আরেকটা জিনিসের ওপর টার্গেট ছিল। কিন্তু মাঝখান থেকে তোমার সাথে বিয়ে হয়ে সব প্ল্যান ফ্লোপ হয়ে গেল ওর। তোমার সাথে বিয়ে না হলেও আমি কখনও জেনিকে বিয়ে করতাম না। এতোদিন শুধু চুপচাপ ছিলাম সকলের সামনে জেনির আসল চেহারা উন্মোচন করার জন্য। কিন্তু তার আগেই বাবা মা জেনিকে ডেকে আমার প্ল্যান ফ্লপ করে দিল।বাট টেনশন নট প্রমাণ অলরেডি আমার হাতে চলে এসেছে সাথে প্রমাণদাতাও । ”
মীরাত হতবুদ্ধির ন্যায় আহিয়াদের কথা শুনল শুধু। তার মাথার ওপর দিয়ে গেছে সব। এতোটুকু বুঝেছে জেনি নিশ্চয়ই কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে আহিয়াদকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। আহিয়াদ এতোকিছু জেনেও কেন চুপচাপ রইল। সবাইকে সবকিছু জানালে তো এতোকিছু হতো না।
মীরাত অবুঝের মতো বলল;
“আপনাকে মাঝে মাঝে অচেনা মনে হয়। জেনি আপুর মনে এতোকিছু চলে অথচ আপনি জেনেও না জানার অভিনয় করেন। আপনি আসলে কেমন আজও বুঝে উঠতে পারি না আমি।”
আহিয়াদ দুহাতে চুল ঠেলে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল;
“ডাবল ফেইসড মানুষ দেখেছো।আমি ঠিক তেমন। আসল আমিটা কেমন কেউ জানেনা।”
মীরাত কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। সে ভয়ে ঢোক গিললো। ভয়ার্ত ভঙ্গিতে বলল;
“এসব আপনি কি বলছেন?”
আহিয়াদ মীরাতের অগোচরে হাসে। মেয়েটা বুঝতেও পারেনি সে মজা করছে। কিন্তু মীরাত ভয়ে নাজেহাল হয়ে গেছে। আহিয়াদ একটু ঝুঁকে আসে মীরাতের দিকে। ফিসফিসিয়ে বলে ;
“ তুমি কি জানো! ভয়ে জর্জরিত মুখশ্রীতে তোমায় অস্বাভাবিক সুন্দর লাগে। ”
মীরাত বোকা বনে যায়।ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে সুধায় ;
“মানে।”
আহিয়াদ আরেকটু ঝুঁকে মীরাতের গালে হঠাৎ নিজের গাল ছুঁইয়ে দেয়। মীরাত আহিয়াদের এহেন কান্ডে থমকে যায়। চোখ বড় বড় করে তাকায় আহিয়াদের দিকে। ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সেখানটায়। শরীর হীম শীতল হয়ে আসছে। বুকের মাঝে ধকধক করছে।মীরাত নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে দম আঁটকে চুপচাপ আহিয়াদের কান্ড দেখতে থাকে। আহিয়াদ শান্ত ধীর কন্ঠে বলে উঠে;
“আমাকে কি তুমি মন থেকে মেনে নিতে পেরেছো? তোমার মনের কোথাও কি আহিয়াদ নামক মানুষটি রয়েছে মীরাত?
মীরাতের বুক পুনরায় ধক করে ওঠে। তার গলা শুকিয়ে আসছে। বুকের ভেতরে নীরব ঝড় বইছে। আহিয়াদ তার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে আরও বলে,
“তুমি আমার কাছে শুধু বউ নামক মানবী নও। তুমি আমার প্রশান্তি, আমার অস্থিরতার উত্তর।আমি শুধু আজ তোমার উত্তর জানাতে চেয়েছি— তোমার মনে আমি নামক মানুষটার জায়গা কতটুকু।”
মীরাত হাসফাস করতে লাগল। আহিয়াদের শান্ত ধীর কন্ঠ তার বক্ষপিঞ্জরে ভালোবাসার শিহরণ জাগিয়ে দিচ্ছে। অদ্ভুত শিহরণে তার মন শান্ত হয়ে গেল। সে পিছাতে শুরু করলে আহিয়াদ মীরাতের একহাত ধরে নিজের কাছে টেনে নেয়। মীরাত ঢোক গিলে।সে এখন কি উত্তর দিবে? ভেবেই চিন্তায় ডুবে যাচ্ছে।
মীরাত কম্পনরত কন্ঠে উত্তর দিল;
“আপনি শুধু আমার আহিয়াদ। আমার মনের গহীনে আপনি পুরোটা জুড়ে রয়েছেন এতোটুকু শুধু জেনে রাখুন।”
মীরাতের কথা সম্পূর্ণ হতেই আহিয়াদ তার ওষ্ঠদ্বয় মীরাতের নরম গালে ছুঁইয়ে দেয়।মীরাত চমকে ওঠে। মনের মাঝে অজানা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল। আহিয়াদ স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়িয়ে মীরাতের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকায়।মীরাত আহিয়াদের দৃষ্টি লক্ষ্য করেছে আগেই। সে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে মুখ ঘুড়িয়ে অন্য দিকে তাকায়। মীরাত কিছু একটা মনে পড়তেই তার একহাত স্পর্শ করালো সেই গালে। আহিয়াদের করা কান্ড তার মনে হতে থাকল। আর মনে মনে লজ্জামিশ্রিত হাসি হাসতে লাগল। আহিয়াদ বোধহয় মীরাতের মনে কী চলছে তা বুঝতে পেরেছে। সে মৃদু শব্দহীন হাসতে লাগল। এতটুকু বুঝেছে মীরাত ভীষণ লজ্জা পেয়েছে।
★★
রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে। মীরাত থম মে’রে ফাবিহার রুমে বসে আছে। মনের মাঝে নানা ভাবনার ঝড় বইছে।মন মেজাজ ভালো নেই। রাতে ঘুম হয়নি। রাত দুইটায় ছাদ থেকে এসে ডাইনিং রুমে বসে ছিল সে।আর আহিয়াদ ছাদের রুমে ছিল। মীরাতের মাথা কিছুটা ব্যথা করছে। ঘুম না হওয়ায় এমন বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। বাহিরে আরিশা, ফাবিহা আরও কয়েকজনের শোরগোল শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বাড়িতে কোনো উৎসব লেগেছে। হঠাৎ করেই এতো শোরগোল কেনো মীরাতের বোধগম্য হলো না। সে চুপচাপ আহিয়াদের গতরাতে আহিয়াদের বলা কথাগুলো ভাবতে লাগল। ভাবতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল সে। একহাতে স্পর্শ করল তার গাল।
“লজ্জায় লাল হয়ে লাভ নেই। তাড়াতাড়ি এই মেহেন্দির ড্রেস পড়ে সাজগোজ করে রেডি হয়ে নে। ”
আরিশা কয়েকটা শপিংব্যাগ হাতে তড়িঘড়ি করে ঢুকলো রুমে। মীরাত ভ্রুযুগল কুঁচকে জিজ্ঞেস করল;
“ মেহেন্দির ড্রেস পড়ে কি করব?”
আরিশা ধপ করে বসল বিছানায়। মীরাতের হাতে ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলল;
“মেহেন্দির অনুষ্ঠান হবে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। ”
মীরাত বিস্মিত কন্ঠে বলে উঠল ;
“ কার মেহেন্দি? কার বিয়ে?”
ফাবিহা রুমে ঢুকতে ঢুকতে প্রতিত্তোর করল ;
“ এসব পরেও জানতে পারবে। আমি অলরেডি রেডি হয়ে গেছি। তুমি আর আরিশা আপু বাকি আছো। সময় নষ্ট না করে দ্রুত রেডি হয়ে নাও দুজনে।”
মীরাত আশ্চর্যিত হয়ে ফাবিহার দিকে তাকায়। ফাবিহার পরণে মেহেন্দির ড্রেস।
[ অবশেষে দিয়ে দিলাম রোমান্টিক পার্ট। আজকের পর্ব কেমন হয়েছে সকলে মতামত জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ]
চলবে…….