#অব্যক্ত প্রেমাসুখ❤️🔥
#আদ্রিতা নিশি
।৭।
[কপি করা নিষিদ্ধ]
রৌদ্রস্নাত দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়েছে। লালাভ আভায় ছেয়ে গেছে আকাশ। ধূসর কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে পুরো আকাশ। গাছের পাতাগুলো নড়েচড়ে উঠছে একটু পুরো পর । প্রকৃতির এমন বদলে যাওয়া রুপ দেখে চিন্তিত হলো মীরাত। আজও কি তবে গতকালের মতো ঝড় উঠবে, বৃষ্টি হবে? হয়তো হবে। মীরাত ছাদের রেলিঙের কাছে চেয়ার টেনে অপলক ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। পেঁজা তুলোর ন্যায় মেঘগুলো কেমন ভেসে অন্যস্থ যাচ্ছে তা দেখতে ব্যস্ত। বিকেল বিলাস তার মন খারাপ থেকে নিস্তার লাভের একমাত্র ঔষধ।আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। একাই এই গোধূলির আকাশ দেখতে মগ্ন। তবুও কোথাও মন খারাপের দল বক্ষের এককোণে ঘাপটি মে’রে বসে আছে। মীরাত ভাবলো সে কি ইফতির মতো বেই’মানের জন্য উদাসীন হয়ে আছে? হয়তো। ওই পাষ’ন্ডকে তো ভালোবেসেছিলো সে। তবে এখন সেই ভালোবাসা ঘৃ’ণায় রুপ নিয়েছে। তার বিশ্বাস ইফতি কখনো সুখী হবে না। একজন মেয়েকে ঠকিয়ে কেউ কখনো সুখী থাকতে পারে না। মীরাতের চোখে অশ্রু জমা হয়েছে।সে সন্তর্পণে হাত দিয়ে মুছে নিলো। সে আর কখনো ওই বেই’মানের কথা ভাববে না। নিজেকে নতুন ভাবে তৈরী করবে। পড়াশোনা করবে, নিজের স্বপ্ন পূরণ করবে। নিজের মাকে নিয়ে ভালোভাবে দিনাতিপাত করবে।আর পিছু ফিরে তাকাবে না সে। কোনো বেইমান,পাষা’নের তার জীবনে কোনো জায়গা নেই। আবারও শেষ থেকে শুরু করবে সে।
দমকা শীতল হাওয়া মীরাতের শরীর ছুঁয়ে গেলো হঠাৎই।সে তখনি চক্ষুদ্বয় বন্ধ করে নিলো। মুক্ত পরিবেশে নির্মল বাতাসে শ্বাস নিলো সে।অদ্ভুত লাগছে। সব দুঃখ যেনো প্রকৃতির মাঝে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বদ্ধ চক্ষু পটে ভেসে উঠলো অচেনা এক মানবের প্রতিচ্ছবি। অচেনা নয় সে চেনা, অনেকটাই চেনা। গম্ভীর আদলে অপলক চেয়ে আছে তার পাণে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যেনো কিছু বলতে চায়। গভীর সেই চাহনি। মনে হচ্ছে বাদামী চোখের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাবে সে। মীরাত আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারলো না।সে দ্রুত চোখ খুলে ফেললো। জোরে জোরে শ্বাস টানতে লাগলো। এটা কি দেখলো সে। হঠাৎ কেনো অচেনা মানুষের চাহনি দেখলো। সে আর কাউকে নিয়ে ভাবতে চায় না। কাউকে আর জড়াতে চায় না।
– মা আমি আজই ঢাকায় ব্যাক করতে চাচ্ছি বাট ওয়েদার ভালো না হয়তো বৃষ্টি আসবে।আচ্ছা বুঝেছি বৃষ্টি হলে আজ রওনা দিবো না।এবার খুশি হয়েছো? আফিয়া আন্টি ভালো আছে। উনার মেয়েও ভালো আছে। আচ্ছা এখন রাখছি পরে কথা হবে। আল্লাহ হাফেজ মা।
আহিয়াদের কন্ঠস্বর শুনতে পেয়েই মীরাত পিছু ফিরে তাকালো। দেখলো আহিয়াদ কাউকে টেক্সট করতে ব্যস্ত। মীরাত কি নিচে যাবে কি যাবে না ভাবতে লাগলো। এখন যদি নিচে যায় তাহলে কি আহিয়াদ কিছু মনে করবে? দোটানায় পরে গেলো সে। অস্বস্তি হচ্ছে কি করবে সে?
আহিয়াদ ফোন স্ক্রিনে তাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে শুধালো – মুড অফ?
মীরাত চোখ ছোট ছোট করে বোকার মতো বললো– মানে?
আহিয়াদ ফোন তার পকেটে পুরে নিলো। দুই হাত বুকে গুজে তাকিয়ে গাম্ভীর্য ভাব নিয়ে বলে উঠলো – ওই বাস্টার্ডটার জন্য মুড অফ করে আছো?
মীরাত ভড়কে গেলো। সে তড়িঘড়ি করে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো। আহিয়াদ কীভাবে বুঝতে পারলো সে ইফতির জন্য মন খারাপ করে আছে।সে মানুষটির এমন কান্ডে অবাক হয়। মন খারাপ করে থাকলেও কেমন নিমেষেই বুঝে যায়।
মীরাত দ্রুততার সহিত মাথা দু পাশে নাড়িয়ে ওষ্ঠদ্বয় ভিজিয়ে বললো– নাহহ আমি ইফতির কথা ভাবছিলাম না।
আহিয়াদ তা শুনে ফিচেল হাসলো।হাসি বজায় রেখে বললো– তুমি দেখছি এখনো ঠিকঠাক মিথ্যা বলতে পারো না।
মীরাত অবাকতার রেষ নিয়ে বললো– আপনি কি করে বুঝলেন আমি মিথ্যে বলছি?
আহিয়াদ রেলিঙের দিকে এগিয়ে গেলো। অদূর আকাশে দৃষ্টি মেলে অতি শান্ত কন্ঠে বললো– চোখ কখনো মিথ্যে বলে না এটা নিশ্চয়ই জানো?
মীরাত স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল আহিয়াদের দিকে। মানুষটি তার চোখ দেখে এক নিমেষেই বুঝে গেলো।ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে তার। অচেনা একটা মানুষ তার চোখের ভাষা বুঝতে পারে অথচ ইফতি পারেনি। বুঝবে কি করে? ইফতি তো নিজের কথার ক্ষুধা মিটিয়েছে।
মীরাত কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলো – আপনি কি সাইকোলজিস্ট?
আহিয়াদ ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায়।সে রেলিঙে হেলান কপাল আঙ্গুল ঘষে বলে – হঠাৎ এটা মনে হওয়ার কারণ কি?
মীরাত আমতা আমতা করে বলে – এই যে আপনি কিছু না বললেও বুঝে যান।
আহিয়াদ তা শুনে ওষ্ঠ প্রসারিত করলো। তা বজায় রেখে বললো – আমি মানুষের ভাবভঙ্গি দেখে তার মনে কি চলছে তা অনেকটা বুঝতে পারি।
মীরাত চুপ রইল। এর প্রতিত্তোরে কি বলবে বুঝতে পারলো না সে। কিছু একটা মনে পরতেই সে উদগ্রীব হলো। প্রশ্নটা করবে কি করবে না ভাবতে লাগলো। আজই তো আহিয়াদ চলে যাবে আর কবে দেখা হবে তার জানা নেই।তাই প্রশ্নটা করাই তার কাছে ভালো মনে হলো।
– একটা প্রশ্ন করতে পারি?
– কি জানতে চাও বলো?
– গতকাল রাতে আপনি গান গাইছিলেন? না মানে নিহাল ভাইয়া আমার জানামতে গান গায় না।
– হুমম। মাঝে মাঝে গান গাই।
– বৃষ্টি কমে যাওয়া আপনার গাওয়া ❝ ক্লান্ত শরীর ❞ গানটি শোনা যাচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার গান গাচ্ছে। গানটা শুনে মন ভালো হয়ে গিয়েছিলো আমার । আমার মতে, আপনি একজন চমৎকার সিঙ্গার।
– অল্প স্বল্প গান গাইতে পারি।
– অল্প স্বল্প নয় আপনি অনেক সুন্দর গান গাইতে পারেন।
আহিয়াদ মীরাতের কথা শুনে মৃদু হাসে। মীরাত ও হেসে ফেলে।
আহিয়াদ হঠাৎই বলে উঠলো – এভাবেই সব সময় হাসি খুশি থাকবে। দেখবে লাইফটা ইজি হয়ে যাবে।
মীরাত উপদেশ স্বরুপ নিলো কথাটা। সে মাথা দুই দিকে নাড়িয়ে ঠিক আছে বললো। আহিয়াদকে প্রথমে সে মন্দ ছেলে ভেবেছিলো অথচ তেমনটা নয়। ভাবতেই লজ্জা লাগছে। মানুষটি সম্পুর্ণ আলাদা ধরনের। এই কয়েকদিনে খারাপ আচরণ তার চোখে পরেনি কিন্তু সুন্দর কথা গুলো তার মনে গেঁথে গেছে।
মীরাতের ফোন বাজছে। সে খেয়াল করলো যে চেয়ারটায় বসে ছিলো সেখানেই ফোনটা রেখেছে। আহিয়াদ ফোনের রিং বাজতেই কিছুটা দুরত্বে রাখা চেয়ারটির ওপর রাখা ফোনের ওপর দৃষ্টি পরে। ফোন ক্রিনে জ্বল জ্বল করে ভেসে উঠছে ❝ ইফতি❞ নামটি। তা দেখেই আহিয়াদের মুখ গম্ভীর হয়ে উঠলো চোখ ফিরিয়ে মীরাতের দিকে তাকালো সে। মূলত দেখতে চাচ্ছে মীরাতের প্রতিক্রিয়া কি? মীরাত দু কদম এগিয়ে ফোন হাতে নেয়। তখনি কল কেটে যায়। আবারও পূনরায় কল আসতেই ইফতির নামটি ফোন স্ক্রিনে দেখে বক্ষে ধক করে ওঠে তার। হাত কাঁপতে শুরু করে। মুখ মলিন হয়ে আসে। আবারও বক্ষস্থলে পুরনো আঘা’তের ক্ষ’ত জেগে উঠেছে। কল রিসিভ করবে কি করবে না ভাবতে লাগলো সে। এতো কিছু ঘটিয়ে আবারও কল করছে। ইফতি এখনো কেনো পিছু ছাড়ছে না তার?
আহিয়াদ মীরাতের দুর্বল মনের অবস্থা বুঝেও বললো – পিক আপ দ্যা ফোন মীরাত। নিজেকে সামলে নাও। পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করতে শেখো।দেখিয়ে দাও ওই বাস্টার্ডকে তুমি দুর্বল নও। তুমি স্ট্রং গার্ল।
মীরাত চোখ তুলে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় আহিয়াদের দিকে। আহিয়াদ চোখ দিয়ে ইশারা করে কল রিসিভ করার জন্য। মীরাত দীর্ঘ শ্বাস টেনে নিজেকে স্বাভাবিক করে। তারপর কল রিসিভ করে।
ফোনের অপর পাশ হতে ভেসে আসে পুরুষালী কন্ঠস্বর – কেমন আছো মীরাত? এতোক্ষণ পর কল রিসিভ করলে কেনো বলো তো?
মীরাত খিঁচে যাওয়া মেজাজ নিয়ে শক্ত গলায় বললো – আপনি আমায় কেনো কল করেছেন?
– আরে তুমি রে’গে যাচ্ছো কেনো? আমি তো তোমার খোঁজ খবর নিতে কল করেছি। ওই যে আগে যেমনটা করতাম।
– আপনি বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন আমাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক নই।
– বাহহ ভালোই তেজ হয়েছে দেখছি। কথাও ফুটেছে।
– আপনার মতো জানো.রের সাথে কথা বলতে চাই না।কল কাটলাম।
– আরে আরে কল কেটো না। একটা সংবাদ দেওয়ার জন্য কল করেছি।আমার মনে হলো তোমার জানা জরুরী তাই বলার জন্য কল দিয়েছিলাম।
মীরাত কল কাটতে গিয়েও কাটে না। সে ভাবলো কি সংবাদ হতে পারে।
– কি সংবাদ?
– আমার সামনে মাসে বিয়ে আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে।
– তো আমি কি করবো? আপনি ম’রুন বা বিয়ে করুন তাতে আমার কিছু যায় আসে না এখন।
– আরে রা’গছো কেনো? এবার বলো বিয়ে কবে করবে? নাকি বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছো। আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ড তো তোমার বিয়ে নিয়ে খুব এক্সাইটেড।
– আপনাকে বলতে বাধ্য নই আমি। আমার বিয়ে নিয়ে এতো এক্সাইটেড হতে হবে না আপনার।
– আমায় এখনো ভালোবাসো সুইটহার্ট। তোমার মনে যে আমার জন্য অনুভূতি আছে তা তোমার কথায় বোঝা যাচ্ছে। তুমি চাইলে আমি তোমায়…
মীরাতের গা রাগে রিরি করে উঠলো। মন চাচ্ছে ইফতিকে থা’প্পড় দিতে। মানুষ এতো জ’ঘন্য কিভাবে হতে পারে?
– ❝কোনো একদিন আমিও বউ সাজবো ।
কিন্তু আপনার মতো পাষ*ন্ড ব্যক্তির মতো কারো বউ নয়।বরং কোনো এক শুদ্ধ হৃদয়ের পুরুষের জন্য বউ সাজবো। যার জীবনে আমিই হবো প্রথম ও শেষ রমণী।❞
মীরাত কান হতে ফোন নামিয়ে কল কেটে দিলো। ইফতির কথা আর শুনতে ইচ্ছে হলো না।বক্ষ কাঁপছে তার। ওষ্ঠ জোড়া তিরতির করে কাঁপছে। নীরব ঝড় যেনো মনের মধ্যিখানে আছড়ে পরছে। ভাবতেই অবাক লাগছে প্রথম ভালোলাগার পুরুষটি অন্য মেয়েকে বিয়ে করছে। এটা তো হওয়ারই কথা ছিলো। তবুও কষ্ট হচ্ছে।এতোক্ষণ নিজেকে স্বাভাবিক রেখে কথা বললেও এখন সে ভেতর থেকে মুর্ছে পরছে। সবকিছু এলোমেলো লাগছে। গাল বেয়ে নোনা পানির বিন্দু গড়িয়ে পরছে। মীরাত ধপ করে বসে পরলো। ফোনটা ছিটকে পরলো কিছুটা দূরে।
আহিয়াদ মীরাতের এমন অবস্থা দেখে বিস্মিত হলো।সে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বিচলিত ভঙ্গিতে বললো – মীরাত ঠিক আছো?
মীরাত অতি ক’ষ্টে কাঁপা কাঁপা বিষন্ন কন্ঠে বললো – ইফতি বিয়ে করছে। ও আমায় ধোকা দিয়ে সংসার বাঁধার স্বপ্ন দেখছে। আর আমি অপমান লাঞ্চনা সহ্য করে ধুঁকে ধুঁকে মর’ছি।
আহিয়াদ বুঝলো মীরাত ইফতির বলা কথাগুলো সহ্য করতে পারেনি। নিজেকে কিছুটা অপ’রাধী মনে হলো।সে যদি না বলতো তাহলে হয়তো কল রিসিভ করতো না। সে হাটু গেঁড়ে বসে মীরাতের পাশে। শান্ত কন্ঠে বলে – একটু আগে ইফতিকে যে কথা বললে সেটা ভুলে গেলে?
মীরাত অশ্রুসিক্ত নয়নে কৌতুহল নিয়ে তাকায় আহিয়াদের পাণে। আহিয়াদ মীরাতের কৌতুহলী ভাব বুঝলো। সে বললো – তোমার জীবনেও শুদ্ধ পুরুষ আসবে মীরাত। যে তোমাকে ভালোবাসবে। তুমিই হবে তার রাজ্যের রাণী। কখনো ঠকাবে না সে।
মীরাত মলিন হাসে।আসলেই কি এমন কেউ আসবে জীবনে? আহিয়াদ সেই হাসিতে অসম লুকানো ব্য’থা, ক’ষ্ট দেখতে পায়। তার মন বিচলিত হয়ে উঠলো। সে মীরাতের কন্দনরত মুখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো।
★★
সন্ধ্যা ছয়টা বাজে আহিয়াদ ঢাকায় রওনা দেওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। জামা কাপড়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব গুছানো শেষ। সে খবর পেয়েছে জেনিও রেডি হয়ে গেছে। আহিয়াদ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো জেল দ্বারা সেট করে নিলো। একহাতে ঘড়ি পরে কালো শার্টের হাতা ফোল্ড করলো সে। তারপর পারফিউম ইউজ করে রেখে দিলো। আয়নায় নিজেকে পর্যবেক্ষণ করে বিছানার ওপর থেকে ফোন হাতে নিয়ে পকেটে রেখে দিলো। এরমাঝেই দরজায় নক করার শব্দ পেলো সে।
আহিয়াদ কিছুটা উচ্চস্বরে বলে উঠলো – কাম ইন।
মুন্সি সাহেব পারমিশন পেয়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন। ধীর পায়ে এগিয়ে আসলেন আহিয়াদের কাছে। তিনি এসে হালকা হেসে বললেন – নানুভাইকে আজ একটু বেশীই হ্যান্ডসাম লাগছে। মেয়েরা তো লাইন লাগবে তোমার পেছনে।
আহিয়াদ কথার ধরন শুনে হেসে বলে – তাই নাকি! দেখতে হবে না কার নাতী আমি। আমার নানাজানের নাতী আমি তার মতোই তো হ্যান্ডসাম হবো।
মুন্সি সাহেব হেসে উঠলেন।
আহিয়াদ গিটারটা ব্যাগে ঢুকাতে ঢুকাতে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বললো – কিছু বলবেন নানাজান।
মুন্সি সাহেব হাসি থামিয়ে মুখ গম্ভীর করলেন। কিছুটা চিন্তিত দেখালো তাকে। আহিয়াদ কাজ শেষ করে তাকাতেই দেখতে পেলো তার নানাজানের চিন্তিত মুখ। হয়তো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন।
আহিয়াদ কিছুটা সামনে এসে স্বাভাবিক ভাবে জানতে চাইলো – কি হয়েছে নানাজান? আপনাকে চিন্তিত দেখাচ্ছে।
মুন্সি সাহেব নাতীর দিকে তাকিয়ে বললেন – তোমার সাথে জরুরী কথা ছিলো নানুভাই। অনেক আশা নিয়ে এসেছি তুমি এই বৃদ্ধকে ফিরিয়ে দিয়োনা নানুভাই।
আহিয়াদ সরু চোখে তাকিয়ে বললো –নানাজান এই বয়সে চিন্তা করবেন না। আমাকে বলুন কি হয়েছে। আমি ট্রাই করবো সবটা ঠিক করার।
মুন্সি সাহেব দ্বিধা নিয়ে আহিয়াদের দিকে তাকালেন। কীভাবে বলবে কথাটা সে আহিয়াদকে?
[আজকের পর্বটা কেমন হয়েছে সকলে মতামত জানাবেন। ]
চলবে……