অব্যক্ত প্রেমাসুখ❤️‍🔥 #আদ্রিতা নিশি ।৮।

0
134

#অব্যক্ত প্রেমাসুখ❤️‍🔥
#আদ্রিতা নিশি
।৮।

[কপি করা নিষিদ্ধ]

মুন্সি সাহেব আহিয়াদের রুমে বিছানায় বসে আছে। আহিয়াদ ও তার নানাজানের সামনে চিন্তিতগ্রস্থ হয়ে ডিভানে সম্মুখীনভঙ্গিতে বসে আছে। দুজনের মধ্যে পিনপিনে নিরবতা বিরাজ করছে কারো মুখে তেমন কথা নেই। আহিয়াদও জোরাজোরি করেনি তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা বলছে হয়তো জরুরী কিছু বলতে এসেছে মুন্সি সাহেব। তবে কি বলতে এসেছে তা অনুধাবন করতে পারছে না। হয়তো সিরিয়াস কিছু কথা।

মুন্সি সাহেবকে আজ ভীষণ দুশ্চিন্তাগ্রস্থ দেখাচ্ছে। তিনি আজ ভীষণ চিন্তিত। এই প্রথমবারের মতো কাউকে তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চাইছে। নিজের সিদ্ধান্ত অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায় কিন্তু এছাড়া আর উপায় নেই তার কাছে। এতেই সকলের মঙ্গল।

আহিয়াদ হাতে থাকা ঘড়িতে সময় দেখে নিলো।সাড়ে ছয়টা বাজে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা এখন নেই কিন্তু আকাশ ভীষণ মেঘাচ্ছন্ন। হয়তো রাতেই মুষলধারে বৃষ্টি নামবে। সে আর দেরী করতে চাইলো না এখনই বেরোতে হবে। নাহলে বৃষ্টিতে আঁটকে যাবে।

আহিয়াদ ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে উঠলো – নানাজান আমার এখনই বেরোতে হবে। আবহাওয়া ভালো নয়। হয়তো রাতে বৃষ্টি হবে।

মুন্সি সাহেব নিরবতা ভেঙ্গে নাতীর দিকে তাকিয়ে বললেন – আমার কথা শোনার সময় তো হবে তাই না নানুভাই?

আহিয়াদ অপ্রস্তুত হয়ে মৃদু হেসে বললো– আপনার কথা শোনার জন্য আমি সবসময় রেডি হ্যান্ডসাম। এবার দ্রুত বলে ফেলুন।

মুন্সি সাহেব খুশি হন। আহিয়াদের কাঁধে হাত দিয়ে বললেন– আমার বয়স শেষ হয়েছে। আর হয়তো কিছুদিন বাঁচবো। লাঠি আর চশমা ছাড়া আমি অচল। ম’রার আগে তোমার কাছে আমি একটা জিনিস চাই নানুভাই। শেষ বয়সে এটা আমার আবদার বলতে পারো। আমার আবদার রাখবে তো?

আহিয়াদের মুখ গম্ভীর হয়ে উঠলো। সে বললো – আজ হঠাৎ এসব কেনো বলছেন? এগুলো একদম যেনো আপনার মুখে আর কখনো না শুনি । আপনি যা চান আমায় একবার বলুন। যদি আবদার পূরণ করার সামর্থ্য থাকে অবশ্যই তা পূরণ করবো।

মুন্সি সাহেব এ কথায় সন্তুষ্ট হলেন। তিনি তো এমন উত্তরই শুনতে চেয়েছিলেন। তিনি বললেন – আমি চাই তুমি মীরাতকে বিয়ে বিয়ে করো।

আহিয়াদ বিস্ফোরিত নয়নে মুন্সি সাহেবের দিকে তাকালো। সে বসা থেকে তৎক্ষনাৎ উঠে দাঁড়ায়। স্তম্ভিত হয়ে আছে সে। নানাজান তাকে এটা কি বললো? মীরাতকে বিয়ে? এটা কিভাবে সম্ভব? এসব ভাবনা যেনো তার কাছে কল্পনাতীত। সে বুঝতে পারেনি মুন্সি সাহেব এমন একটা কথা বলবে। কিন্তু বিয়ে নামক শব্দ একজন মানুষকে পরিবর্তন করে। এটার জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হয়। সে এই দায়িত্বে জড়াতে একদম প্রস্তুত নয়।

মুন্সি সাহেব আহিয়াদের ভাবভঙ্গি দেখে বললেন – তুমি কি আমার আবদার রাখতে পারবে? সরাসরি উত্তর দাও।

আহিয়াদ নিজেকে সামলে। একটু ভেবে শান্ত কন্ঠে বলে – বিয়ে নামক বড় দায়িত্ব নিতে আমি প্রস্তুত নই নানাজান। মীরাতের সাথে আমার পরিচয় অল্পদিনের। তেমন কথাবার্তা হয়নি। সে আমার কাছে একজন অচেনা মেয়ে। তাকে কীভাবে আমি আমার লাইফের সাথে জড়াবো?আমার কথা না হয় বাদ দিলাম। আপনি দেখেছেন মীরাতের মেন্টাল কন্ডিশন। সে বিয়ের ওই ঘটনার জন্য স্বাভাবিক হতে পারছে না। এখনো ট্রমায় আছে। সে কীভাবে আবারও এতো দ্রুত বিয়ে নামক সম্পর্কে জড়াবে? এমন সময়ে বিয়ে নামক বেড়াজালে না জড়ানোই ভালো। মেয়েটা নিজেকে সামলে নিক। তারপর না হয় ওর পছন্দের কারো সাথে বিয়েটা দিতেন।

মুন্সি সাহেব গম্ভীর কণ্ঠে বললেন – এতোকিছু শুনতে চাই না আমি। আমার বয়স যথেষ্ট হয়েছে।আমি ভেবে চিন্তে তোমাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয়েছে মীরাতের জন্য তুমিই পারফেক্ট। তুমিই ওকে আগলে রাখতে পারবে। মেয়েটা যথেষ্ট নম্র,ভদ্র, ভালো মেয়ে। আমি চাই না মীরাত এই গ্রামে থাকুক। তুমি তো দেখেছো গ্রামে মীরাতকে নিয়ে নানা কথা রটাচ্ছে। মেয়েটাকে ওরা কেউ বাঁচতে দিবে না। গ্রাম থেকে দূরে পাঠানোর জন্য আমি বিয়ে নামক হালাল পথটা ভালো উপায় মনে হলো।

– কিন্ত নানাজা….

– প্রথম যখন মীরাতকে বাঁচিয়েছো তখন থেকে আজ অব্দি মেয়েটাকে নিজ চোখে দেখেছো। তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমান আহিয়াদ। নিশ্চয়ই চিনেছো মেয়েটা কেমন? মেয়েটিকে কি খারাপ মনে হয়েছে?

– আমি তেমনটা বলিনি।যথেষ্ট ভদ্র মেয়ে সে। কিন্তু পরিস্থিতি মীরাতের অনুকূলে নেই।

– মীরাত রুপে গুনে স্বয়ং সম্পূর্ণ। শুধু ওই যে বিয়ে থেকে পালিয়েছে এই কলঙ্ক লেপ্টে গেছে মেয়েটার জীবনে। এটাই তার কাল হয়েছে। তুমি কি আমার শেষ আবদার রাখবে কি রাখবে না? উত্তর দাও।

আহিয়াদকে বেশ চিন্তিত হলো। কপালের নীলাভ রগ দৃশ্যমান হয়ে উঠলো। তার চক্ষুপটে ভেসে উঠলো বি ধ্বস্ত বধূবেশী মীরাতের মুখ। কন্দনরত মলিন মুখশ্রী। যতবার মীরাতকে দেখেছে সে অনুভব করেছে মীরাতের ভেতরের গোপন দহন। সেও তো মেয়েটিকে স্বাভাবিক করার জন্য নানা কথা বলে বুঝানোর চেষ্টা করেছে। মীরাত যখন অচেতন অবস্থায় ঢলে পরলো তার বক্ষে তার মন বিচলিত হয়ে উঠেছো।মুখের ক্ষ’ত, গলদেশের আঘা’ত দেখে তার বক্ষ অশান্ত হয়ে উঠেছিলো। সারারাত জেগে ছিলো সে। একমুহূর্ত নেত্রপল্লব এক করতে পারেনি। মেয়েটা মোটেও খারাপ নয়। কিন্তু ললাট মন্দ।

আহিয়াদ কিয়ৎ নিরব রইল। বেশ কিছুক্ষণ পরে ভেবে গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দিলো – আমি বিয়ে করতে রাজি নানাজান।

মুন্সি সাহেব খুশি হয়ে বলে উঠলেন – আলহামদুলিল্লাহ।

আহিয়াদ দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। সে গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে বললো – বিয়ের আগে আমি মীরাতের মতামত জানতে চাই। আপনি তাকে বলুন সে আমাকে বিয়ে করতে রাজি কি না?

মুন্সি সাহেব আস্বস্ত করে বললেন– চিন্তা করো না মীরাতের সম্মতিতেই বিয়ে হবে।

মুন্সি সাহেব কথা শেষ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। আহিয়াদ ধপ করে বসে পরলো বিছানায়। দুহাতে চুল খামচে ধরলো। দৃষ্টি মেঝেতে নিবদ্ধ। বিয়ের ডিসিশন এতো দ্রুত নিতে হবে সে ভাবতেই পারেনি। নিজের সিদ্ধান্ত অনেকটা ভেবেই জানিয়েছে। কিন্তু মীরাত বিয়ের কথাটা কীভাবে নিবে এটা ভেবেই চিন্তিত সে। আহিয়াদ জানে মীরাত নিজেকে স্বাভাবিক দেখালেও ভেতরে ভেতরে উদাসীন, এলোমেলো। এখন মীরাতের সিদ্ধান্ত তাকে নিশ্চিন্ত করতে পারে। আহিয়াদ চোখ বন্ধ করলো। সে ভীষন টেনশনে আছে।একদিকে বিয়ে নামক বন্ধন অন্য দিকে জেনি। আর সহ্য হচ্ছে না। মস্তিষ্ক জুড়ে বিচরণ করছে বিয়ে নামক শব্দটি। সবকিছু মিলিয়ে অসহ্যের মাত্রা তড়তড় করে বাড়ছে।

জেনি সাদা টপস আর জিন্স পরেছে। গলায় স্কার্ফ ঝুলিয়ে রেখেছে। চুল ছেড়ে দেওয়া। মুখে হালকা সাজ। সে পরিপাটি হয়ে সুন্দর ভাবে রেডি হয়েছে। রুম থেকে বেরিয়ে আহিয়াদের রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো। নক না করেই ঢুকে পরলো রুমে। আহিয়াদকে বিছানায় নতুন মস্তকে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে গেলো সেদিকে।

জেনি আহিয়াদের কাঁধে হাত রেখে ধীর কন্ঠে বলে উঠলো – আহিদ? তুমি এখনো বসে আছো কেনো? সাতটা আলরেডি বেজে গেছে।

আহিয়াদ মাথা উঁচিয়ে তাকায় জেনির পাণে।দৃষ্টি অতিশয় তীক্ষ্ণ ও গাঢ়।চোখ লাল হয়ে আছে। জেনি তা ভ’য় পেয়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।

জেনি ভ’য়ে ঢোক গিলে বললো– আহিদ আর ইউ ওকে? তোমার চোখে কি হয়েছে?

আহিয়াদ চাপা শ্বাস ফেলে গম্ভীর কণ্ঠে বললো – আই এম ওকে জেনি।

জেনির ভ’য় কিছুটা কমলো। সে বললো – আমাদের এখনই বেরোতে হবে।

আহিয়াদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো – আমাদের ঢাকায় যাওয়া ক্যান্সেল জেনি।

জেনি কিঞ্চিৎ অবাক হলো। তবুও প্রকাশ করলো না। সে বরং খুশি হয়েছে। এই সুযোগ মুন্সি সাহেবকে তার এখানে আসার মূল কারণটা জানিয়ে দিতে পারবে সে। আজ রাতেই বলবে সে। জেনি আর কথা বাড়ায় না। মনে মনে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। রুমের বাহিরে গিয়ে আশেপাশে তাকালো সে। আপাতত কেউ নেই। সে হাতে থাকা ফোনের লক খুলে নির্দিষ্ট নাম্বারে কল দিলো। কিছুক্ষণ পরেই রিসিভ হলো কলটি।

জেনি উচ্ছসিত কন্ঠে বলে উঠলো – মম আজ আমরা ফিরছি না। আজকেই আমি আহিদের নানাজানকে কথাটি বলবো। শুধু ভাবো যদি একবার রাজি হয়ে যায় তাহলে আমি পুরোপুরি সফল হবো মম। এতোদিনে গ্রামে আসার প্ল্যান সফল হবে আমার।

– সুইটহার্ট শান্ত থাকো। আমি যা শিখিয়ে দিয়েছি সেভাবেই বলবে। একটা কথাও যেনো কম বেশী না হয়। আহিয়াদের আড়ালে কথাগুলো ওই মুন্সি শিকদারকে বলবে। বললেই তোমার রাস্তা ক্লিয়ার।

– মম ওই মীরাতকে আমার সহ্য হচ্ছে না। ওর জন্য আহিদ আমায় অপমান করেছে।

– সুইটহার্ট কুল। ওসব মেয়েকে নিয়ে না ভেবে যা করতে গিয়েছো তাতে ফোকাস করো।

– ওকে।

❝ ক্যাথেরিন, ক্যাথেরিন ❞ ফোনের ওপর পাশ হতে ভেসে আসছে পুরুষালী কন্ঠস্বর।

জেনি আনন্দিত হয়ে বলে উঠলো – মম ড্যাড এসেছে?

– হুমম। গতকাল এসেছে। তুমি কাজ শেষ করে দ্রুত ফিরে এসো।

– ওকে মম।

★★

আরিশার রুমে মুন্সি সাহেব এসেছেন। সেখানে আরিশা, মীরাত, আফিয়া বেগম আর লিমা বেগম উপস্থিত রয়েছেন। মীরাতের মুখশ্রী অস্বাভাবিক ভার হয়ে আছে। তাকে নিদারুণ নিরাগ্রহ লাগছে। অস্বস্তিতে আড়ষ্ট হয়ে আসছে। সে ভাবতেই পারছে না। আহিয়াদের সাথে দাদাজান বিয়ের কথা বলছে। সে কিভাবে বিয়েতে রাজি হবে। কিছুদিন আগেই তো বিয়ে নামক ছলনায় পরে জীবন পাল্টে গেলো। আবারও সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সে। সে নিজেকে এই মুহুর্তে বিয়ে নামক বন্ধনে জড়াতে চায় না। সে চায় না আহিয়াদের জীবনে পদার্পণ করতে। তার চেয়ে ভালো মেয়ে ডিজার্ভ করে আহিয়াদ। একটা বিবাহিত ছেলেকে সে কীভাবে বিয়ে করবে? সত্যি কি বিবাহিত? যদি বিবাহিত হয় তাহলে বিয়েতে রাজি কেনো হলো? উনার কি সম্মতি আছে? আজ নিজেকে অসহায় লাগছে। সব মিলিয়ে বিরক্ত লাগছে। আফিয়া বেগম সহ সকলে চুপচাপ আছে। এই মুহুর্তে কোনো কথা বলা অনুচিত। তবে সকলে মীরাতের সিদ্ধান্ত শোনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

মীরাত নিরবতা ভেঙ্গে থমথমে গলায় বলে উঠলো – দাদাজান আমি বিয়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত নই। আমি কি আপনাদের কাছে এতোটাই বোঝা হয়ে গেলাম যে বিয়ে দিয়ে দায় মুক্ত হতে চাচ্ছেন।

আফিয়া বেগমের চোখ ছলছল করে উঠলো। সে কান্না চেপে বললো – চাচা মীরাত যখন চায় না তখন আর কথা না বাড়ানোই ভালো। মেয়েটা এখনো স্বাভাবিক নয়।

মুন্সি সাহেব কথা শুনে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন – আমি তোমার আর তোমার মেয়ের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই গ্রামে থাকলে তোমার মেয়ে মানুষের কটু কথা শুনে বাঁচতে পারবে না। আমায় যদি সে শ্রদ্ধা করে, আপন ভাবে তাহলে বিয়েতে রাজি হতে বলো। মেয়েকে বোঝাও আফিয়া। এক ঘন্টা সময় দিলাম। মতামত জানাতে বলো। আজ যদি রাজি না হও তাহলে আমায় কখনো দাদাজান বলে ডেকো না মীরাত।

মীরাত বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। মুন্সি সাহেবের কথার শেষাংশ যেনো মীরাতকে থমকে দিয়েছে। এসব কি বলছে দাদাজান? সে থমকে যাওয়া চাহনিতে তাকায় বৃদ্ধা মানুষটির দিকে। আজ তার মানুষটিকে খুব অচেনা লাগছে।

মীরাতের কান্না উগ্রে আসতে চাইছে। সে কান্না রোধ করে ঝিমিয়ে আসা কন্ঠে বললো – দাদাজান আমি উনার জীবনটা ন’ষ্ট করতে চাই না। আমার মতো মেয়ে উনার সাথে মানায় না। আমার মন বলছে উনি বিয়েতে সম্মতি দিবেন না। এতোকিছুর পরেও আমি স্বার্থপর হতে পারবো না। আর একজন বিবাহিত পুরুষের সাথে কেনো……

– আহিয়াদের সম্মতি রয়েছে। সময় এক ঘন্টা। ভেবে মতামত জানাও।

মীরাত সম্পূর্ণ কথা বলার আগেই মুন্সি সাহেব উক্ত কথাটি গাম্ভীর্যতার সহিত বলে প্রস্থান করলেন। আফিয়া আর লিমা বেগম উনার পেছন পেছন গেলেন। আরিশা ভারাক্রান্ত মনে মীরাতের পাশে গিয়ে বসলো। সে কি বলবে বুঝতে পারছে না। সে ভাবতেও পারছে না তার দাদাজান এমন একটা সিদ্ধান্ত নিবে।

মীরাতের মস্তিষ্ক হ্যাং হয়ে গেছে। আহিয়াদ রাজি হয়েছে এটা কীভাবে সম্ভব। সে তো ভেবেছিলো রাজি হবে না। নিজের প্রতি করুণা হচ্ছে মীরাতের। ভাগ্য কেনো তার ওপর এতোটা নারাজ। সে উদাসীন ভঙ্গিতে বললো– “আমি এতো চাপ সহ্য করতে পারছি না আরু। দম বন্ধ হয়ে আসছে। সব সময় নিজেদের সিদ্ধান্ত আমার ওপর চাপিয়ে দেয় কেনো বলতো? ইফতির সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত ও আমার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আজও একরকম চাপিয়ে দেওয়াই হচ্ছে। আমি কি করবো?

আরিশা চুপচাপ শুনতে লাগলো। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।

মীরাত থেমে আবারও মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বললো – এসব থেকে কিভাবে নিস্তার পাবো? আমি এতোটাই বোঝা হয়ে গেলাম যে একজন বিবাহিত পুরুষের সাথে বিয়ে দিতে চাইছে। যার কিনা বর্তমান স্ত্রী এখানে উপস্থিত আছে।

আরিশার ভ্রু কুঁচকে গেলো।সে অবাক হয়ে বললো – এটা কি বললি আহিয়াদ ভাইয়া ম্যারিড? ভাইয়া তো এখনো বিয়েই করেনি। সে এখনো পিউর সিঙ্গেল। আর তুই তাকে মিঙ্গেল বানিয়ে দিলি।

মীরাত তড়িৎ বেগে আরিশার দিকে তাকায়।

[ আজকের পর্ব কেমন হয়েছে সকলে জানাবেন। ]

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here