অভিমানেই আছো তুমি?,part:06,07

0
1024

অভিমানেই আছো তুমি?,part:06,07
Writer:TanjiL Mim
part:06

?
“অন্ধকার রুমে লাগাতার ড্রিংক করে যাচ্ছে আদিত্য’!!চোখ পুরো লাল বর্ন ধারণ করেছে তার’!!নেশা হয়ে গেছে প্রচুর তারপরও আদিত্য ড্রিংক করা থামাচ্ছে না’!!কারন তার কষ্ট কমছে না’!!একের পর এক মদের বোতল খালি করছে সে’!!এক পর্যায়ে নিচে শুয়ে পড়ে আদিত্য……

||

“বিছানায় অগোছালো অবস্থায় শুয়ে আছি আমি’!!কোনোভাবেই ঘুম আসছে না’!!কষ্ট হচ্ছে খুব একদিকে আদিত্য অন্যদিকে পরিবার দুইদিকই কষ্ট দিচ্ছে আমায়’!!আচ্ছা আদিত্য তো বলছে আমায় ভালোবাসে তাহলে আমি কেন এখন মেনে নিতে পারছি না তাকে’!!উফ!ভালো লাগছে না কিছু’!!পুরো পরিবার কষ্ট পাচ্ছে শুধুমাএ আদিত্যের জন্য’!!এটাই হয়তো ওকে মেনে না নেওয়ার প্রথম কারন আমার’!!হুট করেই বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!ঘড়ি দিকে তাকাতেই দুটো বেজে দু মিনিট’!!রাত তো অনেক হয়েছে তাহলে ঘুম কেন আসছে আমার’!!হর্ঠাৎই কি মনে করে বিছানা থেকে উঠে দরজার কাছে চলে গেলাম আমি’!!আস্তে আস্তে দরজা খুলে ফেললাম আমি’!!অবাক দরজা খোলা ছিল নাকি’!!হুট করেই রুম থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!পুরো বাড়ি অন্ধকারে ডুবে আছে’!!কিন্তু হালকা মৃদু আলোতে সবই দেখা যাচ্ছে’!!চারপাশে ঘুরে ঘুরে তাকালাম’!!কিছু একটা খটকা লাগছে’!!বাড়িতে কেউ নেই নাকি!!হুট করেই আদিত্যের কথা মাথায় আসলো আমার’!!ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলাম আমি’!!আচমকা একটা রুম থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ পেতেই পুরো কেঁপে উঠলাম আমি’!!মনে হলো কাঁচ ভাঙলো’!!কাঁপা কাঁপা শরীর আর একরাশ ভয় নিয়ে একটা রুমের দিকে পা বাড়ালাম আমি’!!কেন জানি না কি হলো এইমাএ না দেখতে পারলে শান্তি পাবো না আমি’!!হাতের মোবাইলটার লাইট অন করে সেদিকে পা বাড়ালাম আমি’!!এতক্ষণ মনেই ছিলো না আমার হাতে ফোন আছে’!!

||

“স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম আমি রুমটার দরজার সামনে’!!কারন সামনে আদিত্যের হাত বেয়ে টপ টপ করে রক্ত পরছে’!!আদিত্যের এমন কাজ দেখে বুকের ভিতর দক করে উঠলো আমার’!!কোনোকিছু না ভেবেই দৌড়ে চলে গেলাম আমি আদিত্যের সামনে’!!তারপর আদিত্যকে ধরে বলে উঠলাম আমিঃ

———–“আদিত্য,এগুলো কি করেছেন আপনি,

“বিনিময়ে আদিত্য কিছু বললো না’!!ওহ হয়তো শুনতেই পায় নি আমার কথা’!!আদিত্যের জবাব না পেয়ে আবারো ডাকলাম আমি’!!এবারো উওর দিলো না আদিত্য’!!মনে মনে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আমার’!!হুট করেই আদিত্যের শার্টের কলার চেপে ধরে বলে উঠলাম আমিঃ

———“আদিত্য, এগুলো কি করেছেন আপনি হাত বেয়ে রক্ত পরছে তো…..

“মিনমিন চোখে তাকালো আদিত্য আমার দিকে’!!কিন্তু কিছু বললো না আদিত্য’!!শুধু তাকিয়ে রইল’!!

———-“কি হলো কথা বলছেন না কেন,এসব কি করছেন আপনি…..

“হুট করেই আদিত্য আমার হাত ধরে দিল টান’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি ঘাবড়ে গিয়ে পরলাম আদিত্যের বুকে’!!নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার’!!

———-“এসব কি করছেন আপনি ছাড়ুন আমায়……

————“তুমি খুব খারাপ…..

“আদিত্যের মুখে এমন কথা শুনে লাফালাফি বন্ধ করে দিলাম আমি’!!হুট করেই বলে উঠলাম আমিঃ

————“কি….

————“তুমি খুব খারাপ “জানু”!!খালি আমায় কষ্ট দেও’!!

————“আর আপনি যে আমায় কষ্ট দিছেন,এখনো কষ্ট দিয়ে যাচ্ছেন তার বেলা…….

———–“মানুষ মাএই তো ভুল হয়’!!আমিও ভুল করেছি,তোমায় বুঝতে ভুল করেছি, নিজেকে বুঝতে ভুল করেছি আমি’!!আমি জানি ওইভাবে বিয়ে করা উচিত হয় নি তোমায়’!!কিন্তু কি করতাম আমি’!!ওইভাবে বিয়ে না করলে সারাজীবনের জন্যই যে তোমায় হারিয়ে ফেলতাম আমি’!!আর তোমায় ছাড়া থাকা যে খুব কষ্টের’!!আমি আর নিতে পারছি না’!!বিশ্বাস কর সেই ছোট বেলা থেকে কষ্ট নিতে নিতে বড় হয়েছি আমি’!!সেই ছোট বেলায় বাবা মা মারা যায় আমার’!!সেই থেকে কষ্ট করতে করতে আজ আমি এমন হয়ে গেছি’!!এতোটা কঠোর এই হাত দিয়ে কম মানুষকে মারি নি আমি’!!তুমি যখন সাথে ছিলে তখন তো বুঝতে পারি নি’!!কখন তোমার ওইসব পাগলীগুলোকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি’!!যখন বুঝতে পারলাম তখন যে খুব দেরি হয়ে গেছে তাই তো ঔইভাবে’!!প্লিজ আর কষ্ট দিও না আমায়,আমার যে তোমার অবহেলাগুলো আর নিতে পারছি না’!!আমার ভিতরটা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে…. একসাথে কথাগুলো বলে কেঁদে উঠল আদিত্য’!!

“এদিকে আমি আদিত্যের মুখে এসব কথা শুনে কি বলবো বুঝতে পারছি না’!!আমারো তো কষ্ট হচ্ছে’!!হুট করেই আদিত্য শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আরুশিকে তারপর বলে উঠলঃ

———–“প্লিজ আমায় ছেড়ে যেও না,সবাই চলে গেছে আমায় একা করে দিয়ে আমার মা, আমার বাবা,সবাই প্লিজ তুমি যেও না,তুমি চলে গেলে আমি তো সত্যি সত্যি মরে যাবো….

“আদিত্যের কথা শুনে কলিজা কেঁপে উঠল আমার’!!কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না আমি’!!এতটা কষ্ট পাচ্ছে আদিত্য আমার জন্য…….

“কিছুক্ষন পর…..

“হর্ঠাৎই মনে পড়ে গেল আমার আদিত্যের হাত দিয়ে তো রক্ত পরছে’!!এখন কি করবো আদিত্য যেভাবে ধরে আছে আমার পক্ষে কি ওকে বাহিরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব’!!আবারো ডাকলাম আদিত্যকে….

———-“প্লিজ সবার আগে এখান থেকে চলুন আপনার হাত বেয়ে রক্ত পরছে তো……

“বিনিময়ে আদিত্য কোনো জবাব দিলো না’!!শেষমেশ কোনো উপায় না পেয়ে আদিত্য ধরে উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!তারপর আদিত্যের হাত আমার কাঁধে দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম’!!

“ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করলাম আমি’!!একহাতে মোবাইল’!!

“প্রচুর কষ্ট হচ্ছে’!!হর্ঠাৎই সামনে সোফার সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে গেলাম সোফার উপর আমরা’!!আমি নিচে নিচে আর উপরে আদিত্য’!!হায় রে এখন কি হবে…..এতবড় ছেলেকে আমার মতো এতো পুচকি একটা মেয়ে কখনো নিয়ে আসতে পারে নাকি’!!তারপর যে হারে ড্রিংক করছে সমস্ত ভার তো আমার উপরই দিয়ে দিয়েছে মনে হয়’!!আস্তে আস্তে আদিত্যকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে শুরু করলাম আমি’!!আমার পক্ষে একে উপরে নিয়ে যাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়’!!আদিত্যকে সোফায় রেখে আগে রুমটায় আলো জ্বালাতে হবে’!!তার জন্য সবার আগে লাইট অন কর আরুশি’!!ভাবতে ভাবতে পুরো রুমে তাকিয়ে সুইচ খুঁজতে লাগলাম কিছুক্ষণের মধ্যে পেয়েও গেলাম’!!সুইচে টিপ দিতেই পুরো রুম আলোকিত হয়ে গেল’!!তারপর দৌড়ে উপরে চলে গেলাম’!!ড্রয়ার থেকে স্যাভলন আর ব্যান্ডেজ নিয়ে আসলাম’!!আদিত্যের সামনে গিয়ে আদিত্যের হাত পরিষ্কার করে দিতে লাগলাম’ আমি’!!

__________________________________________

_______________________

“সূর্যের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো আদিত্যের’!!মাথাটা অসম্ভব ভাড় হয়ে আছে তার’!!ধীরে ধীরে উঠে বসতে নিলো সে’ আচমকা হাত আঁটকে যায় তার’!!সামনে ঘুরে তাকিয়ে আরুশিকে দেখে অবাক হয় সে’!!পরক্ষনেই আরুশির মায়াবী মুখ দেখে ঠোঁটে মুচকি হাসি ফুটে উঠে তার’!!আদিত্যের হাত ধরেই বসে বসে ঘুমিয়ে পড়ে সে’!!আনমনেই আদিত্যের হাত চলে যায় আরুশির কপালে থাকা চুলের দিকে’!!হাত দিয়ে সরিয়ে কানের পাশে গুছিয়ে রাখলো আদিত্য’!!আদিত্যের হাতের স্পর্শে হালকা নড়ে উঠলো আরুশি’!!আরুশিকে নড়তে দেখে আদিত্য চোখ বন্ধ করে আবার শুয়ে পরলো’!!

||

“হুট করেই ঘুম ভেঙে গেল আমার’!!চোখ মেলে দেখলাম এখনো আদিত্য ঘুমোচ্ছে’!!আনমনে উঠে দাঁড়ালাম আমি’!!আদিত্যের কপালে হাত দিতেই আদিত্য চোখ মেলে তাকালো’!!আচমকা এমনটা হওয়াতে কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম আমি’!!কোনোকিছু না বলে সরে আসতে নিলাম আমি’!!সাথে সাথে আদিত্য উঠে বসে বললোঃ

———-“আমাকে ভালোবাসো……

“সকাল সকাল আদিত্যের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হলাম আমি’!!তারপর বলে উঠলামঃ

———-“না বাসি না,আপনাকে ভালোবেসে আমার কি লাভ বলেই হন হন করে চলে গেলাম আমি’!!

“এদিকে আদিত্য মনে মনে হাসলো’!!তারপর বলে উঠলঃ

———–“আমি জানি তুমি আমায় এখনো ভালোবাসো,এখন একটু অভিমান করে আছো, ঠিক আছে আজ থেকে তোমার অভিমান ভাঙানোর দায়িত্ব নিলাম আমি’!!

__________________________________________

_______________________

“রাত বিছানায় বসে আছি আমি’!!এমন সময় হুট করে আদিত্য রুমে এসে কোলে তুলে নিলো আমায়’!!আদিত্যের এমন কাজে অবাক হলাম আমি’!!ঘাবড়ে গিয়ে আদিত্যের শার্টের হাতা খামচে ধরে বললামঃ

————“কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়…..

“বিনিময়ে আদিত্য কিছু বললো না’!!কোলে করেই হাঁটা শুরু করলো সে’!!আর আমি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে……

||

“আদিত্য কোলে করে এনে গাড়িতে বসিয়ে দিল আমায়’!!তারপর নিজেও ড্রাইভার সিটে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করলো’!!

“বেশকিছুক্ষন পর…….

আদিত্য গাড়ি থামিয়ে দিল’!!তারপর আমার হাত ধরে বললো….

———-“চলো…..

“হ্যা না কিছু বলার আগেই আদিত্য হাত ধরে হাঁটতে শুরু করল’!!কিছু দূর হাঁটতেই একটা আইসক্রিমের দোকানের সামনে দাঁড়ালো’!!তারপর বলে উঠলঃ

———-“আইসক্রিম খাবে…..

“আদিত্যের কথা শুনে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম আমি’!!আদিত্য কিছু না বলেই দুটো আইসক্রিম নিয়ে আসলো’!!তারপর আমার হাতে দিয়ে ধমক দিয়ে বললোঃ

———–“খাও……

“আদিত্যের দমক শুনে পুরো কেঁপে উঠলাম আমি’!!বাবা গো মনে হয় পুরো চোটে আছে’!ভয়ে আদিত্যের হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে নিলাম আমি’!!তারপর আইসক্রিম খেতে শুরু করলাম’!!

“আদিত্য আমার কান্ডে হাসলো’!!তারপর আমার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলো সে’!!তার কাজে রীতিমতো অবাক আমি’!!কিছুটা আগের আমির মতো বিহেব করছে সে’!….

চলবে……..

অভিমানেই আছো তুমি?
Writer: TanjiL Mim
part:07

?
“জোৎসা ভরা রাত’!!আকাশে কয়েক শত তাঁরা ঝলমল করছে’!!তার সাথে ফুড়ফুড়ে বাতাস’!!সব মিলিয়ে একটা অসম্ভব সুন্দর একটা পরিবেশ’!!আর এমন পরিবেশ দিয়ে আমার হাত ধরে হাঁটছে আদিত্য’!!উপরে উপরে রেগে থাকলেও ভিতর থেকে অসম্ভব খুশি আমি’!!এমন সময় সামনে কিছুটা দূরে ফুচকার দোকান দেখতে পেলাম’!!কিন্তু সেটা আদিত্যকে কিভাবে বলবো’!!দোকানের ফুচকার দিকে তাকাতেই ঠোঁট বাহিরে বেরিয়ে? আসলো আমার’!!ধুর!রেগে থাকলে এই এক ঝামেলা না যায় কিছু বলা না যায় কিছু করা’!!আমরা ফুচকাওয়ালার দোকান টপকে চলে যাচ্ছি’!!……

“ধুর ভালো লাগে না’!!

||

“কিছুটা দূর যেতেই হর্ঠাৎই আদিত্য দাঁড়িয়ে পরল’!!তার কাছে অবাক আমি’!!হর্ঠাৎই আদিত্য বলে উঠলঃ

———–“ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে এটা বললেই তো হয়’!

————-“বুঝলো কেমনে(মনে মনে)

————“যেভাবে তাকিয়ে ছিলে যে কেউ বুঝে যেত…

————???

————“ওভাবে তাকানোর মতো কিছু বলি নি চলো তাড়াতাড়ি……

“এই বলে আবার উল্টো দিকে আমার হাত ধরে হাঁটা দিলো’ আদিত্য….
“আমি আদিত্যের কাজে মনে মনে চরম খুশি হইছি….

“আদিত্য আমার হাত ধরে ফুচকাওয়ালার দোকানের সামনে নিয়ে গেল তারপর পর পর তিন প্লেট ফুচকা খেলাম’!!আর আদিত্য শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো……

||

____________________________________

||

“পরেরদিন বিকেলে……..

“ফুড়ফুড়ে আলোকিত সুন্দর একটা পরিবেশে ব্রিজ উপর দিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছিল আদিত্য’!!হর্ঠাৎই সে গাড়ি থামিয়ে দিল’!!তারপর আমার হাত ধরে নিয়ে গেল ব্রিজের নিচে’!!অসম্ভব সুন্দর আর মনো মুগ্ধকর পরিবেশ’!!আদিত্য আমার হাত ধরে নদীর কিনারার চলে গেল’!!তারপর বললোঃ

———–“উঠবে নৌকায়…..

“কোনো উওর দিলাম না’!!

“আদিত্য আর কিছু বলে আমার হাত ধরে উঠে পরলো নৌকায়’!!নদীর টেউরের শব্দ আর আশেপাশের গাছপালা দিয়ে ঘেরা একটা জায়গা’!!মুহূর্তগুলো সুন্দর’!!হর্ঠাৎই আদিত্য বলে উঠলঃ

————-“আমি জানি তুমি এখনো আমায় খুব ভালোবাসো,শুধু তোমার অভিমানের দেয়ালটা একটু ভাড়ি’!!তাই বলছো না,ঠিক আছে কোনো ব্যাপার না তোমায় কিছু বলতে হবে না শুধু কখনো ছেড়ে যেও না আমায়’!!আমি যে তোমায় অসম্ভব ভালোবাসি’!!যেদিন তোমার অভিমানের দেয়াল হালকা হবে সেদিন বেশি কিছু নয় শুধু সুন্দর করে সেজেগুজে মুখ ফুটে বলো আমায় “অভিমানেই_আছো_তুমি” ? কথা দিচ্ছি আর কখনো কষ্ট দিবো না তোমায়……

“এতটুকু বলে নৌকার উল্টো দিকে চলে গেল আদিত্য’!!আর আমি চুপটি করে আদিত্য কথাগুলো শুনলাম’!!আদিত্য চলে যেতেই আনমনে হাসলাম আমি’!!অভিমান তো কবেই ভেঙে গেছে প্রিয়……

_____________________

||

“মাঝখানে কেটে গেল পর পর অনেকগুলো দিন’!!সারাদিন ঘুরাঘুরি আর মজার মুহূর্তেই কেটেছে দিন গুলো’!!এই কয়েকদিনে বেশ কয়েকটা জায়গায় ঘুরেছি আমরা’!!দিনের বেলা নদীর কিনারার ঢেউয়ের হাতছানি,আর রাতের বেলা আকাশে জ্বল জ্বল করা তাঁরা চাঁদের সংমিশ্রণে করা হাসি’!!সব মুহূর্তগুলোই একদম হৃদয়ে গাঁথা থাকবে’!!

||

“সকালের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙলো আমার’!!পাশেই আদিত্য এখনো ঘুমিয়ে আছে’!!আনমনে হাসলাম আমি’!!আদিত্য অনেক বদলে গেছে’!!সত্যি খুব সুন্দর ছিলো বিগত দিনগুলি’!!আনমনেই আমার হাত চলে গেল আদিত্যের কপালে’!!অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে’!!কপালের সাথে আঁটকে থাকা চুলগুলিতে অসম্ভব মানিয়েছে তাকে’!!ছেলেদের এত সুন্দর হলে চলে নাকি’!!আনমনে হাসলাম আমি’!!তারপর বিছানা থেকে উঠে সোজা চলে গেলাম ওয়াশরুমে’!!আজকে খুব খুশি লাগছে’!!ওয়াশরুম থেকে বের হতেই দেখলাম আদিত্য উঠে গেছে’!!কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম আমি’!!

||

“ব্রেকফাস্ট শেষ করে আদিত্য চলে গেল তার কাজে’!!আর আমি সারাদিন শুধু ঘর থাকি’!বিকেলে ঘুরতে বের হই’!!আজকে ভেবে রেখেছি আদিত্যের সাথে আর রাগারাগি করবো না’!!আজকেই বাড়ি ফেরলে সব রাগ অভিমান ভেঙে নতুন করে সব শুরু করব আমরা’!!তারপর পরিবারের সাথেও আবার সব ঠিক করে নিবো’!!আমি জানি আব্বুকে সব বুঝিয়ে বললে ঠিক আমাদের মেনে নিবে’!!আজকে খুব সুন্দর করে সেজেগুজে আদিত্য সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠবো আমি “অভিমানেই_আছো_তুমি” ?আর আমার সেই অভিমানের দেয়াল ভেঙে নতুন করে তৈরি করবো আদিত্য – আরুশির নতুন জীবন’!!আর থাকবে না কোনো কষ্ট, আর থাকবে না কোনো যন্ত্রণা’!!আজকে আদিত্য তোমায় বলে দিবো তোমায় যে ভালোবাসি খুব’!!এসব ভাবতে ভাবতে আনমনে হেঁসে উঠলাম আমি’!!তারপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে আসলাম’!!

”””

“দুপুর ২ঃ০০টা…….

“শাওয়ার নিয়ে এসেছি অনেকক্ষণ হয়েছে’!!আজকে একটা রেড কালারের কাতান শাড়ি পড়েছি’!!মুঠো ভর্তি লাল কাঁচের চুরি, চুলগুলো খুলা,সাথে চোখে কাজল,আর হালকা মেকাপ’!!ঘড়ির কাঁটায় দুপুর দুটো বেজে দু মিনিট আর কিছুক্ষনের মধ্যেই আদিত্য চলে আসবে’!!আজকে অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবো তোমায় মাই কিউট জামাই…..!!ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে খুব’!!

~

“মাঝখানে পাড় হয়ে গেল অনেকটা সময়’!!ঘড়ি কাঁটায় তিনটে বেজে গেছে’!!কিন্তু আদিত্য আসার নাম গন্ধ নেই’!!একরাশ টেনশন মাখা মুখ নিয়ে রুমে মধ্যে পায়চারি করছি আমি’!!হর্ঠাৎ কেন একটা অনুভব হলো আমার’!!আচমকা এমনটা হওয়ার কারন বুঝলাম না’!!ধুর আদিত্যের কিছু হয় নি’!!হয়তো কোনো কাজে আঁটকে পড়েছে’!!এখনি চলে আসবে’!!এসব বলে নিজেকে শান্ত্বনা দিচ্ছি মনকে’!!কিন্তু মনটা অস্থির হয়ে আছে’!!টেনশনে কেটে গেল আরো এক ঘন্টা’!!এখন পুরোই অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে’!!এতটা দেরি হচ্ছে কেন…

“কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না’!!অস্থিরতা কাজ করছে ভীষণ’!!বুকের ভিতর ভয় ভয় লাগছে’!!আচমকা ফোনের শব্দে আমি পুরো কেঁপে উঠলাম’!!কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা তুলে নিলাম উপরে আদিত্যের নাম দেখে একটু রেগে বলে উঠলামঃ

————-“এত সময় লাগছে কেন বাড়ি ফিরতে,আর বাড়ি না এসে ফোন কেন দিচ্ছো…..

আর কিছু বলার আগেই অপর পাশ থেকে একটা অচেনা লোক বলে উঠলঃ

————ম্যাডাম,

“অপরিচিত কন্ঠ আসতেই বুক কেঁপে উঠল আমার’!!আদিত্যের ফোনে অন্য কেউ’!!আমি কাঁপা গলায় বলে উঠলামঃ

————“হুম বলুন আপনি কে আর আদিত্যের ফোনে আপনি কথা বলছেন কেন…..

———–“আসলে ম্যাডাম এই ফোনটা যার সে এক্সিডেন করেছে…..

“মুহূর্তে মধ্যে লোকটা কথা শুনে মনে হলো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে আমার’!!

————“কি……

————“ওনাকে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে আপনি চলে যান খুব গুরুতর আঘাত পেয়েছে সে’!!

“লোকটার কথা শুনে পুরো কলিজা কেঁপে উঠল আমার’!!এটা হতে পারে

———-“আদিত্য’!!চেঁচিয়ে কেঁদে উঠলাম আমি’!”

“কিছুতেই কিছু মেনে নিতে পারছি না আমি’!!আমি তো ঠিক করে নিতে চেয়েছিলাম তাহলে এটা কি হলো’!!আর ভাবতে পারছি না আমি’!!দ্রুত গতিতে হসপিটাল যেতে হবে আমার'”!

||

”হসপিটালের করিডোর দিয়ে দৌড়াচ্ছি আমি’!!বুকের ভিতর অসম্ভব যন্ত্রণা হচ্ছে’!!বার বার মনে হচ্ছে আদিত্যের কিছু হয়ে গেলে আমি কি করে বাঁচবো’!!চোখের পানি যেন থামছেই না’!!

__________________________________________

_______________________

“হসপিটালের বেডে ঢুকতেই কলিজা কেঁপে উঠলো আমার’!!পুরো মুখে ব্যান্ডেজ দেওয়া আদিত্যের’!!সারা শরীরে অবস্থা খুব খারাপ যা দেখে রীতিমতো অবস্থা খারাপ হয়ে গেল আমার’!!আমি দৌড়ে আদিত্যের হাত ধরে কেঁদে বলে উঠলামঃ

————–“এসব কি হয়ে গেল আদিত্য,আমি তো এমন কিছু চাই নি’!!এমনটা কেন হলো আদিত্য’!!আমি তো ভেবেছিলাম আজকে তোমার সাথে সব অভিমান ভেঙে দিয়ে নতুন করে সব শুরু করবো’!!তাহলে এটা কি হয়ে গেল….বলতে বলতে কেঁদে উঠলাম আমি’!!

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here