অভিমানে তুমি,পর্বঃ৮

0
2689

অভিমানে তুমি,পর্বঃ৮
ফারিয়া আফরিন ঐশী

হঠ্যাৎ সাদির ফোন বেজে উঠল, সাদি ফোনটা রিসিভ করে কানে নিতেই অপর পাশের ব্যক্তি বললো—হাই সাদি ব্রো,,কেমন আছিস???
সাদি—ইশান!!!
ইশান—ইয়েস ব্রো,,ইটস মি।।ভালোই চিনেছিস আমাকে।।বাই দা ওয়ে আমার জানের কি খবর??
শুনলাম চোট পেয়েছে।।
সাদি দাঁত কটমট করে বলে–মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ ইশান।মিথি ইজ ওনলি মাইন।
ইশান–কেন রে!!!সব কি টাকা দিয়ে অনলি মি করে রেখেছিস।।
সাদি–শাট আপ!!
ইশান–নিজের মাকে তো খুঁজে নিলি।বাট লিসেন সাদি,মিথি আমার,ওকে আমি আমার কাছে নিয়ে আসবই।
সাদি–আমি বেঁচে থাকতে পারবি না।
ইশান–ওয়েট এন্ড সি ব্রো!!ইশান সব পারে।
বলেই ইশান ফোন কেটে দেয়।সাদিকে চিল্লাতে শুনে মিথি ঘুম থেকে উঠে যায়।ব্যালকোনিতে এসে বেশ আতঙ্ক নিয়ে বলে–কি হয়েছে সাদি ভাই??
সাদি বুঝতে পারে যে মিথি ভয় পেয়ে আছে,তাই মিথিকে কাছে টেনে বলে–কিচ্ছু হয় নি।অফিসে একটা ঝামেলা ছিল তাই ওদের একটু বকে দিলাম।
মিথি–ও ও আচ্ছা। আমি ভাবলাম বোধহয় কোনো বিপদ হলো আবার।
সাদি –না।।সরি!!আমার চিৎকার এ তোর ঘুমটা ভেঙে গেল।
মিথি একটু হেসে বলে–নো প্রবলেম।।
সাদি মিথিকে হুট করে কোলে তুলে নেয়,মিথি অবাক হয়ে বলে–কি করছেন সাদি ভাই??
সাদি–চুপ!!
মিথিকে কোলে নিয়ে সাদি দোলনাতে বসে পরে,তারপর মিথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে–এবার ঘুমা।
মিথি–কিন্তুু সাদি ভাই,এতে তো আপনার কষ্ট হবে।
সাদি–ওসব নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।।তুই চোখ বন্ধ কর আর ঘুমা।
মিথি–কিন্তুু–
সাদি চোখ গরম করে তাকানোতে মিথি ভয়ে আর কিছু না বলে চোখ বন্ধ করে নেয়।কিছুক্ষণের মধ্যেই মিথি ঘুমিয়ে পড়ে।
সাদি মিথির মুখের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলতে থাকে—জানিস মিথি পাখি,তোকে ১ম যখন দেখেছিলাম তখন তুই মাত্র ১২ বছরের পিচ্চি, ২ টো বেণি বেঁধে সারা ঘর ঘুরে বেড়াতি।গ্রামে বেড়াতে গিয়ে তোকে দেখেই তোর প্রতি অদ্ভুত মায়া কাজ করতে শুরু হয়।আমি নিজেও সবে ১৮ তে পা রেখেছিলাম,নিজের অনুভতি নিজেই বুঝতে পারছিলাম না।গ্রাম থেকে বেড়িয়ে আসার পরও তোর কথা সবসময় মনে পড়ত।চোখ বন্ধ করলেই তোর ছবি দেখতে পেতাম।এসব অনুভূতির কথা কাকে বলব বুঝতে পারছিলাম নাহ।অবশেষে সব দ্বিধা কাটাতে বাবাকে সব খুলে বলি।বাবা জানায় তোর প্রতি আমার এই ভাবনার নামই হলো ভালোবাসা।বুঝলাম যে তোকে ভালোবাসি।।বাবা-মা কথা দিলেন যে তারা ঠিক সময় মতো তোকে আমায় উপহার দেবেন।সব আশা নিয়ে পাড়ি জমালাম বিদেশ।তবে দেশে ফেরার পর দেখি সব ওলটপালট।দাদুনের গায়েব হয়ে যাওয়া, বাবার এক্সিডেন্ট এ মারা যাওয়া। আমার,মা এর ওপর একের পর এক আচমকা হামলাতে অস্হির ছিলাম।চাইছিলাম না যে এই অনিশ্চিত জীবনে তোকে এনে তোকে ভুক্তভোগী করে দি।তাই অপেক্ষা করছিলাম।সব খোঁজ নিয়ে জানতে পাড়ি এসব ইশান করছে।সবটা না জেনেই প্রতিশোধের নিদারুণ খেলায় মেতে উঠেছে ও।কোনোভাবে ওর নজর তোর ওপরেও পড়ে,,ও নিজে যখন তোর জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় তখন মা উপস্থিত থেকে ব্যাপারটা মিটিয়ে দেয়।
আর যা প্রস্তাব আসতো তা আমিই ভাগিয়ে দিতাম।
পরে জানতে পারি যে ইশান তোর চাচাকে ভয় দেখিয়ে এক ৪৫ বছর বয়সী লোকের সাথে তোর বিয়ে ঠিক করেছে,ওর টার্গেট ছিল ওই লোকের সাথে তোর বিয়ে দিয়ে তোকে শহরে আনাবে ওর কাছে।কিন্তুু ওই লোক নারী পাচারকারী ছিল।তোকে দেখে লোভ সামলাতে না মেরে ইশানকে মাঝপথে রিজেক্ট করে দেয়,এটাই ছিল ইশানের রাগ আর ওকে মারার কারণ।আর তোর বিয়ের আগের দিনই আমাদের বাড়িতে হামলা হয়।মা ইনজুরড হয়।রবিন স্যার কড়া সিকিউরিটি রাখেন আর আমায় বেড়োতে নিষেধ করেন।তার সিকিউরিটি ফাঁকি দিয়ে তাও তোর বিয়ের দিন আমি বেরিয়ে ছিলাম কিন্তুু গ্রাম অবধি পৌঁছানোর আগে কেউ জোরে আমার গাড়িতে ধাক্কা মারে।মাথায় চোট পাওয়ার কারণে সেন্সলেস হয়ে যাই।সেন্স আসার পর কোনোমতে গ্রামে পৌঁছে দেখি মাঝরাস্তাতে লোকজনের ভিড়।তাদের থেকে জানলাম ঐ লোকের মৃত্যু হয়েছে ট্রাকের ধাক্কা তে।
বাট নো ওয়ারিজ।ইশান না মারলেও ওই লোককে আমি মেরে দিতাম বিকজ তুই শুধু আমার।তোর জন্য সব করতে পারি।তোর জন্য খুন করতেও হাত কাঁপবে না আমার।তোকে কলেজে বিরক্ত করা ছেলেগুলোর হাত আমি ভেঙেছি,তোর দিকে বাজে দৃষ্টি দেওয়া মুদি দোকানদারের চোখ আমি উঠিয়ে নিয়েছি।
তোর জন্য আমি সব করতে পারি মিথি পাখি।কিন্তুু কথা হলো ইশানের নজরে তুই এলি কিভাবে!!!আমি তো এই ভয়ে কখনো তোর আশেপাশে যাইনি।।তাহলে???
সব ভাবনার মাঝে দূর থেকে ভোরের আযান শোনা যায়।
সাদি দোলনা থেকে উঠে ঘরে এসে মিথিকে বেডে শুয়িয়ে দিয়ে গায়ে কাথা টেনে চলে যায় ফ্রেস হতে।ফ্রেস হয়ে নামাজ পড়ে সাদি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়।অফিসে পৌঁছে সাদি দেখে সামনে রিদান আর রুহি দাঁড়িয়ে আছে।সাদি আসতেই তারা স্যালুট জানিয়ে সাদিকে নিয়ে ভেতরে যায়।সাদি –তিশার আপডেট কি রুহি??
রুহি–স্যার,হাই ডোজের মেডিসিন চলছে।আশা করি কাল স্টেটমেন্ট রেকর্ড করতে পারব।
সাদি–ওকে।রিদান!!
রিদান–ইয়েস স্যার
সাদি–মায়ের আপডেট কি??
রিদান–স্যার,ইশান ম্যাম কে সিলেটের একটা বাগানবাড়িতে রেখেছিল এখানকার গোডাউন থেকে সরিয়ে। আমাদের টিম খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যায়।ম্যামকে খুঁজে পেলেও,ইশানকে ধরতে পারে নি।
ম্যাম কিছুটা ইনজুরড থাকার কারণে ম্যামকে ইমারজেন্সি শিফট করা যাচ্ছে না।তবে ইনশাআল্লাহ কাল সব সিকিউরিটি এ্যালার্ট করে ম্যামকে ঢাকা নিয়ে আসব।
সাদি–ওকে।
রিদানের কাজ থাকায় সে দ্রুত প্রস্হান করে,রুহিকে সাদি বলে তার সাথে তার কেবিনে আসতে।
কেবিনে এসে সাদি রুহিকে বসতে বলে সাদি গ্লাসে পানি খেতে লাগল।
সাদি পানি খেয়ে পেপার ওয়েট ঘোরাতে ঘোরাতে বলল–ইউ নো রুহি!! আমার একজনের ওপর খুব সন্দেহ হচ্ছে।। সে আমার আশেপাশেই আছে।তাহলে সন্দেহ দূর করতে কি করা উচিত বলোতো??
রুহি একটু ভেবে বলে–তাকে সরাসরি প্রশ্ন করে সন্দেহ দূর করে নেওয়া উচিত স্যার।
সাদি-কারেক্ট,,সো রুহি টেল মি–ইশানের সাথে তোমার ফ্যামেলির এতো ভালো রিলেশন থাকা শর্তেও তুমি কেন আমাদের ইশানের বিরুদ্ধে সাহায্য করছ??
রুহি থতমত খেয়ে যায়।হাত দিয়ে হাত ঘষতে শুরু করে।
সাদি–তারমানে কি ধরে নিবো,রুহি ইশান যে বারবার আমাদের হাত থেকে ছুটে যাচ্ছে এর কারণ তুমি।তুমি ইশানকে ইনটেলিজেন্স রিপোর্ট লিক করছ।
রুহি–না স্যার,আমি কোনোদিন আমার প্রফেশনের সাথে বেইমানি করি নি।
সাদি–দেন ওয়াটস দা রিজন রুহি??
রুহি–স্যার, ইশানকে আমার বাবা আমাদের বাড়িতে এনেছিল।কথা ছিল ইশান আমাকে বিয়ে করবে।ছোট থেকে বাবা সবসময় বাইরে থাকায় কখনো বাবার সাথে তেমন সখ্যতা গড়ে ওঠেনি,তবে মা ছিল আমার বেস্টফ্রেন্ড।ইশান ইতালি থেকে ওর বড় ভাইকে মেরে আসার পর ওর আর বাপীর কথপোকথন এর একটা রেকর্ড মা করে লুকিয়ে। ইশান মাকে রেকর্ড করতে দেখে নেয় তখন মা কে ইশান আর বাপী মিলে অনেক ভয় দেখায় যাতে মা রেকর্ডিং টা তাদের দিয়ে দেয় কিন্তুু মা দিতে নাকোজ করায় ইশান মাকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে।কয়েকবার আঘাত করায় মা মারা যায়।
এসবই আমি নিজে চোখে দেখেছিলাম তখন কিছু করলে ওরা আমাকেও মেরে দিত।
তার কিছুদিন পর রবিন স্যার আমাকে কাজের জন্য হায়ার করেন। ইনফরমেশন গেদার করে জানতে পারি ইশানের মায়ের সাথে আমার বাপীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল।ইশানের মা বাপীর মাফিয়া গ্যাং এর কোনো একটা অ্যাটাকের তথ্য জেনে যাওয়াতে ইশানের মাকে প্লান করে ১ম এ বাপী আহমেদ ভিলা থেকে বের করেন তারপর রাস্তাতে বাসের নিচে পিসে মেরে ফেলেন।আর ইশানের এমন করে ব্রেন ওয়াশ করেছে যে ইশান তার সব কথা মানতে বাধ্য। রুহি চোখের পানি মুছে বলে–আমি তো স্যার শুধু আমার মায়ের খুনিদের শাস্তি দিতে চাই।এজন্যই আপনার সাথে কাজ করছি।।
সাদি–আসলে সত্যি টা জানা দরকার ছিল রুহি।।এক সাথে কাজ করতে হলে লুকিয়ে রেখে কাজ করা যায় না।
রুহি–ইয়েস স্যার।।
এর মধ্যে একগাদা ফাইল নিয়ে রিদান প্রবেশ করে কেবিনে।।।
ফাইল টেবিলে রেখে রিদান চেয়ারে বসে পড়ে।
তখন সাদি বলে–বাট রিদার আর রুহি তোমরা একটা ইম্পরট্যান্ট কথা আমার থেকে লুকিয়েছ।
রিদার আর রুহি একসাথে বলে–কি স্যার??
সাদি একটু হেসে বলে–এই যে তোমরা কাজের আড়ালে দুজন হেব্বি প্রেম করছ।
রুহি বেশ লজ্জা পেয়ে যায়।রিদান মাথা চুলকে আমতা আমতা করে বলে–ঐ আর কি স্যার!!!
সাদি–থাক আর লজ্জা পেতে হবে।এই কেস মিটলে একটা বিয়ে কর।অনেকদিন বিয়ে খাই না।
রিদান একটু বেশি হেসে বলে–স্যার আমরা তো অপেক্ষাতে আছি আপনার আর ম্যামের বিয়ে খাওয়ার। কারণ কেস মিটলে আপনি যে আর দেরি করবেন না তা বেশ জানি কিন্তুু।।
রিদানের কথাতে সাদি,রুহি হেসে ওঠে।

অন্যদিকে,,,,
মিথি আজও সকালে উঠে দেখে সাদি বেরিয়ে গিয়েছে। বেশ মন খারাপ হয়ে যায় ওর।সাদিকে বার দুয়েক ফোনও করে বাট সাদি রিসিভ করে নি।এসব নিয়ে বেচারা মিথির বেশ মন খারাপ।সে নিজেও বুঝতে পারছে না যে তার কেন এমন মন খারাপ হচ্ছে। সাদি আশেপাশে না থাকলেই কেন তার টেনশন হয়।এসব ভাবনার মাঝেই সারাদিন কাটে মিথির।মেইড এসে জোর করে খাবার খাইয়ে দিয়ে যায় মিথিকে।রাত ৯ টার দিকে মিথি ভাবে সাদির ঘরটা একটু গুছিয়ে দিয়ে আসবে।
মিথি সাদির ঘরে গিয়ে সাদির ঘর গোছাতে থাকে।তারপর দেখে দেয়ালে টানানো সাদির বিভিন্ন সময়ের ছবি দেখতে থাকে।খেয়াল করে দেখে যে তিশার কোনো ছবিই নেই।মিথি মনে মনে বেশ খুশি হয়।
সাদির বই,জামাকাপড়, বিছানা এগুলো গুছিয়ে প্রায় ১০.৩০ টার দিকে বেরিয়ে আসে।মিথি নিচে আসতেই মেইড বলে তাকে খেয়ে নিতে কিন্তুু মিথি জানায় সে সাদি আসলে খাবে।অপেক্ষা করতে করতে রাত ১২.০০ টা বাজে,তখন মেইড বলে এরপর না খেলে,সাদি জানতে পারলে তাদের বকবে।তাই মিথি একপ্রকার বাধ্য হয়েই খেয়ে নেয়।তারপর নিজের ঘরে বসে সাদির অপেক্ষা করতে থাকে।রাত ১ টা পার হওয়ার পর ও সাদি না ফিরলে মিথি যেন আরও টেনশনে পড়ে যায়,সাদিকে বারবার ফোন করছে বাট ফোন নট রিচএবল বলছে।মিথি টেনশন করতে করতে জানালার পাশের আরাম কেদারাতে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।অনেকক্ষণ অপেক্ষার শেষে মিথি তন্দ্রা ভাবের কারণে মিথির চোখ বুজে যায়। বেশ অনেকক্ষণ পর মিথি ধরফর করে উঠে যায়,সময় দেখে ৩ বেজে ২৮ মিনিট।মিথি দৌড়ে সাদির ঘরের সামনে গিয়ে দেখে আলো জ্বলছে।মিথি দ্রুত দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে দেখে সাদি মাত্র ওয়াসরুম থেকে বেরিয়েছে।মিথি দৌড়ে গিয়ে সাদির জড়িয়ে ধরে।সাদি অবাক হয়ে যায়।তারপর বুঝতে পারে মিথি কাঁদছে।
সাদি মিথিকে জড়িয়ে ধরে বলে–কি হয়েছে মিথিপাখি?? বল আমায়।।
মিথি কান্না সুরে বলে–কই ছিলেন আপনি??এতো লেট হলো কেন ফিরতে??ফোন ও ধরছিলেন না।।জানেন কত টেনশন হচ্ছিল।।
সাদি মিথিকে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে–সো সরি মিথিপাখি।আমি একটু কাজে আটকে গিয়েছিলাম।। আমি ফ্রেস হয়েই তোর কাছে যেতাম।
মিথি সাদিকে সরিয়ে দিয়ে বলে-খুব বাজে আপনি।সারাক্ষণ আমাকে কষ্ট দেন।
বলেই মিথি বেলকনিতে গিয়ে আকাশের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে।সাদি গিয়ে পিছন থেকে মিথিকে জড়িয়ে ধরে বলে–সরি মিথিপাখি, আর রাগ করো না প্লিজ।।আর এমন করবো না।।
মিথি ঘুরে বলে–সত্যি তো??
সাদি মিথির নাক টেনে বলে–একদম সত্যি।। তাহলে এখন মহারাণী এবার হেসে এই অধমকে উদ্ধার করুন।
মিথি সাদির করুণ মুখ দেখে হেসে দেয়।সাদি মন ভরে দেখে নেয়।
মিথি হাসি থামিয়ে বলে–আচ্ছা সাদি ভাই,ফুপি কি কাল রাতে বাড়িতে ফিরছে??
সাদি–হুমম।।কালই ফিরছে।
মিথি বেশ উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে বলে–আর যারা ফুপিকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের ডুম করে মেরেছেন??
সাদি –হুমম মেরেছি।।
মিথি একটু কপাল কুঁচকে বলে–কি হু হা করে উত্তর দিচ্ছেন??
সাদি–এখন নেশা ধরে গিয়েছে আমার।।যতক্ষণ নেশা না করব ততক্ষণে শান্তি নেই।
মিথি চোখ-মুখ কুঁচকে বলে–আপনি নেশা করেন সাদি ভাই ছি!!!!কি কি খান শুনি???
সাদি মিথিকে কাছে টেনে শক্ত করে ধরে মিথির গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।মিথি যেন পুরো জমে বরফ হয়ে গিয়েছে। তার হাতে পায়ে যেন বিন্দু মাত্র শক্তি নেই।
সাদি মিথির গলাতে পরপর ২ বার কামড় বসাতেই মিথি সাদির পিঠ খামচে ধরে।সাথে সাথে সাদি আরো জোড়ে কামড় বসিয়ে দেয়। মিথির চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে।সাদি মিথিকে কোলে নিয়ে বেডে শুয়িয়ে দেয় তারপর মিথির ওপর শরীরের ভর দিয়ে মিথির গলার অপর পাশে নিজের ঠোঁটের ছোঁয়া দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।আজ যেন সাদির মনে হচ্ছে মিথির নেশা তার মাথা অবধি চড়ে গিয়েছে। এ নেশা যেন কেবল মিথিকেই দিয়েই মেটানো সম্ভব।।
কিন্তুু এসবের মাঝে সাদির বেডের সাইড টেবিলে রাখা ল্যান্ডলাইনের ফোনটি কর্কশ আওয়াজে বেজে উঠে।
সাদি মিথিকে ছেড়ে উঠে বসে মুখ থেকে একটা বিরক্তির আওয়াজ করে ফোন রিসিভ করে।মিথি ও উঠে বসে।সাদি ফোন রিসিভ করতেই বুঝতে পারে ফোনটা রুহির।
রুহি–সরি স্যার, অসময়ে ডিস্টার্ব করার জন্য।।
সাদি–ইটস ওকে বলো।
রুহি–স্যার,তিশার সেন্স ফিরেছে ও বার বার কোনো ইভানের কথা বলছে।
সাদি–এই ইভান আবার কোন ঝামেলা??
রুহি–আমিতো কখনো নামটা শুনি নি।।স্যার তিশাকে কি ঘুমের ইনজেকশন পুশ করে শান্ত করব??
সাদি–হুমম,তাই কর।।একটু আলো ফুটলে আসছি আমি।।
রুহি–ওকে স্যার।।
রুহি ফোন রাখতেই সাদি ফোন টা জোরে রিসিভার এর ওপরে রাখে।
মিথি কাছে এসে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে–কি হয়েছে সাদি ভাই??এই ইভানটা কে??
সাদি–ও কেউ না।।অফিসের লোক।।
মিথি –ও ও।।
তারপর সাদি মিথিকে জড়িয়ে ধরে।।
অন্যদিকে,,,
ইশান বারে বসে মদ গিলতেই আছে সেই সন্ধ্যা রাত থেকে।।আজ যেন তার রাগ আসমান ছুঁয়েছে।ফোনের স্ক্রিনে সাদি মিথির ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটা ছবি দেখে বলে–ঠিক করছিস না সাদি।।এর দাম তোকে দিতে হবে।।মিথি শুধু আমার।।বলেই ফোনটা আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে।তারপর চিৎকার করে বলে–মিথি ইজ মাইন।।গেড রেডি ফর নিউ টুইস্ট সাদি।।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here