অভ্র_নী,পর্ব_15

0
987

#অভ্র_নী,পর্ব_15
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা

নীল– তানজু, আর তানিয়া কোই?
কাজল– ওরা কক্সবাজার হানিমুনে গেছে!
নীল- কি!!! ৪৪০ বোল্টের শকট খাইছে নীল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লাস স্টার্ট হয়ে যায়।
ওইদিকে তানজু তানিয়া বেশ আনন্দেই আছে।
কলেজ শেষ হতেই কলেজের গেইটের সামনে গিয়ে দেখে অভ্র গাড়ি চলে আসছে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাত ভাজ করে।
কাজল- এই দুলাভাই তো তোকে একদিন ও নিতে ভুলে না ইয়ার। ভাগ্য করে একটা হাসবেন্ড পাইছিস।
নীল– হইছে আর তারিফ প্রশংসা করা লাগবো না। যাই কাল দেখা হবে।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে নীল একটু একটু আঁড়চোখে অভ্রকে দেখছে আর অভ্রর চোখে চোখে পরে যাচ্ছে নীল লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে কপালে হাত দিয়ে।
নীল– সীট সীট কি অবস্থা কেনো যে তাকাতে গেলাম। উফ কি ভাবছে।
নীলের এই অবস্থা দেখে অভ্র ড্রাইবে মন দিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর তারা বাড়ি পৌঁছে যায়।
সবাই এক সাথে লাঞ্চ করে নিয়ে যার যার রুমে চলে যায় রেডি হওয়ার জন্য।
তিয়ার আদেশ সবাইকে শাড়ি পড়তে হবে।
নীল এতক্ষণ তোয়ার রুমে ছিলো। এখন নিজের রুমে আসছে কি কালার শাড়ি পরবে বুঝতেই পারছে।
এই ভাবতে ভাবতে বিছানার উপর থাকা একটা পার্সেল এর উপর চোখ পরলো।
নীল– দেখবো কি এটার মধ্যে কি আছে না বাবা অন্যের জিনিসে না বলে হাত দেওয়া উচিত না।
ওই শয়তান ছেলেটার হবে। ১মিনিট পার্সেলের উপরে কার্ডে কারো নাম লেখা আছে হয়তো দেখি তো কার।
এই বলে নীল পার্সেলটা নিজের হাতে নিলো পার্সেলের উপর খুব সুন্দর করে লেখা। বিয়ের পর এই প্রথম আমার তরফ থেকে তোমার জন্য ছোট্ট একটা গিফট আশা করি তোমার ভালো লাগবে। ফিরিয়ে দেবে না।
নীল লেখাগুলো পড়ো মুচকি হেসে পার্সেল টা খুলে।
পার্সেল খুলে নীল অবাক পার্সেলের মধ্যে একটা নীল রঙের সিল্ক শাড়ি শাড়িটা বেশ সুন্দর নীলের দেখেই পছন্দ হয়েছে।
নীল এই শাড়িটাই পরবে ঠিক করে ওয়াশরুমে চলে যায়। ভুল করে শাড়ি রুমেই বিছানার উপর ফেলে যায়?
(অভ্র নীলের কলেজে যাওয়ার পথে শপিংমলে গিয়ে অনেক খুঁজে নিজে পছন্দ করে নীলের জন্য এই শাড়িটা কিনে নিয়ে আসে আর অভ্রই তিয়াকে বলে আজকে সবাইকে শাড়ি পরার কথা মানে পড়তেই হবে)
ওই দিকে সবাই রেডি নীল তো অলরেডি রেডিই আছে। অভ্র হল রুম থেকে কানে ফোন লাগিয়ে কারো সাথে কথা বলতে বলতে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে। উদ্দেশ্য রুম!
নীল ওই দিকে শাওয়ার শেষ করে শাড়ি খুঁজে পাচ্ছে না।
নীল– উফফ নীল তুই কবে থেকা সব কিছু ভুলে যেতে শুরু করলি। এখন এইভাবেই চলো বাহিরে।
এই বলে নীল টাওয়াল উপরে দিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। টাওয়াল বিছানার উপর রেখে শাড়িটা সবে মাত্র হাতে নিয়েছে। অমনি অভ্র কানে ফোন লাগিয়েই রুমে ডুকে পড়লো আর চোখ গেলো নীলের উপর নীল শাড়ি ধরে দাঁড়িয়ে আছে অভ্র এক নজরে তাকিয়ে আছে।
ওইদিকে ফোনের অপর পাশ থেকে! স্যার আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন আমার কথা স্যার চুপ করে আছেন কেনো স্যার।
অভ্র বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে- তুমি যদি এইভাবে শাড়ি না পরে রুমে দাঁড়িয়ে থাকো তাহলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে খুব বেশি কষ্ট হয়ে যাবে! নীলের ঠিক এক হাত পেছনে দাঁড়িয়ে। নীল অভ্রর ভয়েস বুঝতে পেরে চটজলদি শাড়ি দিয়ে নিজেকে ঢেকে ফেলে।
ফোনের অপর পাশ থেকে- কি বললেন স্যার?
অভ্র– ফোন রাখো নিলয়। আমি তোমাকে পরে কল দেবো।
নিলয়– নিশ্চয়ই ভাবির সঙ্গে আছে। (নিলয় অভ্রর পি এ)
অভ্র– কি হলো লজ্জা পেলে এতক্ষণ তো বেশ দাঁড়িয়ে ছিলে। এক পা করে নীলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর নীল এক পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে।
নীল পেছাতে পেছাতে দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে যায় অভ্র নীলের দুইপাশ দিয়ে দুই হাত দেওয়ালের উপর রাখে নীলের যাওয়ার পথ বন্ধ।
অভ্র– যাই করো না কেনো শাড়ি ছাড়া তোমাকে বেশ সুন্দর লাগে।
নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে চোখ রসগোল্লার মতো গোল গোল করে কিহহহ লুচ্চা কোথাকার।
অভ্র– কি বললে আমি লুচ্চা। তো কি দেখাবো নাকি লুচ্চা কাকে বলে আর লুচ্চা কি কি করতে পারে। (এক গাল ডেভিল হাসি দিয়ে)
নীল– কি..কি বলতে চান আপনি।
অভ্র নীলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর নীলের চোখ আরও বড় হয়ে গোল হয়ে যাচ্ছে আর একটু হলেই চোখ দু’টো বেরিয়ে যাবে এমন অবস্থা অভ্র নীলের ঠোঁটের সামনে নিজের ঠোঁট জোড়া এগিয়ে নিয়ে আসছে অভ্রর নিশ্বাস নীলের মুখের উপর পরছে। ওদের মধ্যে আর মাত্র এক ইঞ্চির গেপ নীল অভ্রকে এত কাছে অনুভব করে চোখ জোড়া খিচ্চা বন্ধ করে নেয়।
অভ্র নীলের এই অবস্থা দেখে মুচকি হেসে ওর ঠোঁটের সামনে থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে নীলের কানের কাছে মুখ নিয়ে।
অভ্র– তুমি ভাবলে কি করে তোমাকে আমি জোর করবো! তুমি না চাওয়া তো পর্যন্ত তোমাকে আমি কখনো টাচ করবো না প্রমিজ আমাদের ২০মিনিটের মধ্যে বেরোতে হবে তারাতাড়ি রেডি হয়ে নিচে চলে আসো ওরা সবাই রেডি।
এই বলে নীলের সামনে থেকে সরে অভ্র নিজের ব্লাক ব্লেজার টা নিয়ে রুম ত্যাগ করে।
নীল চোখ বন্ধ রেখেই অভ্রর বলা প্রত্যেকটা কথা মন দিয়ে শুনে অভ্রর কথা গুলো জেনো ওকে অভ্রর দিকে খিচে নিয়ে যাচ্ছে। মাশা আল্লাহ যা নেশালো ভয়েস যে মেয়েই শুনবে পাগল হয়ে যাবে। ওর ভয়েসের প্রেমে পরে যাবে নীলের সাথেও সেটাই হচ্ছে। নীল এক দৃষ্টিতে অভ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল তারপর তারাতাড়ি করে শাড়ি পরে নেয়। সাথে মেচিং কানের দুল চোখে গাড়ো করে কাজল দেয় ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিক দেয় চুল গুলো কোমড় পর্যন্ত ছেড়ে দিয়ে সাইড শিতি করে নেয় দুই হাত ভর্তি নীল চুরি পরে নেয় সাথে হাইহিল জুতো।
সবাই নীলের জন্য ওয়েট করছে নীলের আসার কোনো খবর নেই।
অভ্র অন্য দিকে ঘুরে- সেই কখন বলে আসছি তারাতাড়ি রেডি হয়ে নিচে চলপ আসতে আর এখনো খবর নেই। (এক বস্তা বিরক্তি নিয়ে)
তিয়া, তিথি, স্বপ্না, তোয়া এক দৃষ্টিতে সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে আছে ওদের জেনো কখন সিঁড়িতেই আটকে গেছে কেউ কিছু বলছে না।
তিয়া ওর এক হাত দিয়ে অভ্রর কাঁদে বার বার হাত দিয়ে ডাকছে কিন্তু অভ্র ওর এই রকম ব্যবহার দেখে আরও বিরক্ত হয়ে পেছনে ঘুরে রাগী কন্ঠে তিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে।
অভ্র- কি হয়েছে এমন করছিস কেন।।
তিয়া– ভাই সিঁড়ির দিকে তাকা।
অভ্র- কি হয়েছে সিঁড়ি………. এই বলে সিঁড়ির দিকে তাকাতেই আী কিছুই বলতে পারছে না নীলকে সত্যিই একটা নীল পরীর মতো লাগছে সব কিছু নীল পরেছে।আর হালকা সাজে আরও সুন্দর লাগছে অভ্রর ইচ্ছে করছে নীলকে গিয়ে জরিয়ে ধরতে কিন্তু তার উপায় নেই।
নীল অভ্রর সামনে এসে আপনি আমার দিকে হা করে কি দেখছেন মুখ বন্ধ করুন আর নয়তো মশা ডুকে যাবে।
নীলের কথায় অভ্রর ধ্যান ভাঙে আর তিয়া তিথি স্বপ্না তোয়া চার জনে ফিক করে হেসে দেয়।
তিথি, তিয়া, স্বপ্না, তোয়া– ভাবি তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে একদম একটা পরীর মতো।
নীল– অন্য দিন লাগে না বুঝি?
এরই মধ্যে মিসেস চৌধুরী চলে আসেন- অন্য দিনও সুন্দর লাগে কিন্তু আজকে একটা পরীর মতো লাগছে আমার মেয়ে টাকে বলে নীলের কপালে আলতো করে চুমু দেয়।
তিয়া– ওয়া কিতা করলা তুমি ফুপি।
মিসেস চৌধুরী– কি করলাম আমি!
তিয়া– দিলা তো ভাইয়ার আমানতের খেয়ানত করে।
মিসেস চৌধুরী– মানে?
অভ্র – কি বললি?
তিথি– ঠিকই তো বলেছে ও…
স্বপ্না– একদম ঠিক কইছে তিয়া!
মিসেস চৌধুরী– তোরা কি বলছিস আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।
তোয়া- আমিও না।
তিয়া– তোমাদের বুঝার বয়স হয় নাই। হিহিহি
মিসেস চৌধুরী- আমার বুঝার বয়স হয় নাই না আমি তো তোদের পেট থেকা হইছি।
স্বপ্না- ফুপি রাগ করো না এটা আমাদের পার্সোনাল ব্যাপার।
অভ্র — একটা থাপ্পড় দেবো না পার্সোনাল ব্যাপার বেরিয়ে যাবে।
তিথি- হইছে থামো এবার সবাই চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে তো,, চাচি আমরা যাই।
মিসেস চৌধুরী– আচ্ছা যা নিজেদের খেয়াল রাখিস।
এক এক করে সবাই বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরলো।
কিছুক্ষণ পর ওরা ওদের মন্তব্যে পোঁছে যায় জায়গা টার নাম হচ্ছে মুকাসবিল এই জায়গায় শুধু পানি পানি সম্পুর্ন বিলে শুধু পানি আর রোডের সাইডে কয়েকটা ফুচকা + অনেক কিছুর কয়েকটা স্টল আছে।
রোডের এক সাইডে কার পার্ক করে অভ্র তারপর সব গুলো গাড়ি থেকে নেমে যায়। সবাই এখন হাঁটছে। তিয়া, তিথি, তোয়া, স্বপ্না সেলফি তুলতে ব্যস্ত…!
অভ্র নীলের পাশাপাশি পা মিলিয়ে দুই হাত পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটছে নীল ও হাঁটছে।
তিয়া সেলফি তুলতে তুলতে হঠাৎ রোডের সাইডে হঁচোট খেয়ে মাটিতে পরে যায়।
তিয়া– ওরপ আল্লাহ গো আমার মাজা গেলো গো আম্মা গো আব্বা গো।
তিয়ার পরে যাওয়ার পর সবাই চুপ থাকলেও ওর আব্বা গো আম্মা গো শুনে সবাই উচ্চ শুরে হেঁসে দেয় সাথে অভ্র ও হাসতে লাগে।
নীল ওর হাসি থামিয়ে দিয়ে অভ্রর হাসির দিকে তাকিয়ে আছে আরও জেনো তলিয়ে যাচ্ছে নীল।
তিয়া– মাটি থেকে উঠে আশ্চর্য আমি পরে গেছি তোরা কেউ সাহায্য করবি ধরে উঠাবি তা না করে ফিক ফিক করে হাসছিস। আমার মান সম্মানের তেনা তেনা হইয়া গেলো। ইজ্জত পাইলাম না দেখ সবাই কেমনে তাকাই আছে।
অভ্র– একদম ঠিক হইছে আরও তোল চলতে চলতে সেলফি?! এখন তো এক হাত পেটে দিয়ে হাসছে।
তিথি– আরে আমারে কেউ ধোর আমার হাসতে হাসতে গাল ব্যাথা হইয়া গেছে আর পারতাছি না।
স্বপ্না– সেইম! (হাসতে হাসতে)
তোয়া– আপু……
তিয়া– তুই চোপ থাক ছোটো ছোটোর মতো থাক।
তোয়া– যাক বাবা আমি কিছু না বলেই বকুনি খেলাম। এই জন্যই বলে বড়দের সাথে ছোটোদের ঘুরতে যেতে নেই।
নীল– তিয়া তোমার কোথাও লাগেনি তো।
তিয়া– ভাবি আমার লক্ষী ভাবি আমার কথা তোরা না ভাবলেও আমার ভাবি ঠিক ভেবেছে।(কান্না কান্না কন্ঠে)
না ভাবি আমার লাগেনি ঠিক আছি শুধু মাত্র ইজ্জত চলে গেলো!
নীল– ওই ব্যাপার না এখানে কেউ তোমাকে চিনে না আর রোজ রোজ তো তুমি এখানে আসবে না তাই টেনশন করো না এখন চলো।
অভ্র– হ্যাঁ হ্যাঁ চল সবাই এখন।
হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে আসছে সামনেই একটা ফুচকার স্টল + ইত্যাদি।
তিয়া, তিথি, স্বপ্না, তোয়া– ভাইয়া ফুচকা খাবো।
অভ্র– তোদের কাছে না টাকা আছে তো যা খা আমি কি তোদের না করছি নাকি? (অন্য দিকে ঘুরে স্টাইল দিয়ে দাঁড়িয়ে)
তিথি– তুই আছিস কেন তুই খাওয়াবি!
স্বপ্না– তোরে কি হুদ্দাই নিয়া আইছি নাকি বিল তুই দিবি।
অভ্র– এহহহ আমার ঠেকা লাগছে তো তোদের মতো রাক্ষসী গো খাওয়াইয়া আমার টাকা শেষ করমু।
তিয়া– কি বললি আমরদ রাক্ষসী?
অভ্র– আর নয়তো কি, রাক্ষসী বলেই তো রাস্তায় যা দেখিস সেই ছাই পাস খেতে পাগল হয়ে যাস।
স্বপ্না– নিজের বউ যখন খায় তখন সেটা ছাই পাস না আর আমরা খেলেই ছাই পাস।
নীল– আমি ফুচকা খাই না!
অভ্র– এবার বল আমার বউ খায় না ছাই পাস তোরাই খাস।
তিয়া– ভাবি তোমাকে এখনই বলতে হলো তুমি খাও না।
নীল– সরি। যা সত্যি তাই বলছি।
তোয়া– ঝগড়া কি আর আজকে শেষ হবে না।
অভ্র– আমি কোনো বিল টিল দিতে পারবো না যার যারটা সে সে দেবে তাহলেই আমি যাবো।
তিয়া, তিথি, স্বপ্না– ভাইয়ার বাচ্চা….! (দাঁতে দাঁত চেপে)
অভ্র– আমার বিয়ে হয়েছে ১মাসও হয় নাই বাচ্চা কোথ থেকা আসলো? (জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)
তিয়া– শয়তান ছেড়া!
তিথি– বিয়াত্তোমিস পোলা!
স্বপ্না– খাটাশ বেডা!
অভ্র– কি বললি শুনতে পাই নাই জোরে বল।
তিয়া তিথি স্বপ্না– না শোনলে নাই কানের ডাক্তার দেখা যাইয়া।
অভ্র– তোদের কে তো আমি…. অভ্রকে থামিয়ে নীল।
নীল– আপনি এত কিপটে কেন খেতে চাচ্ছে খাওয়ালেই তো হয়।
অভ্র– কি আমি কিপটে আচ্ছা চল দেখি কে কত খেতে পারো।
তিয়া তিথি স্বপ্না- হ্যাঁ হ্যাঁ চল।
স্টলের মধ্যে বসে আছে সবাই ৫প্লেট ফুচকা অর্ডার দেয়।
অভ্র– ৫টা কেন তোরা তো ৪জন।
তিয়া– হয় হয় আমরা খামু আর তোরা চাইয়া চাইয়া দেখবি আর চোখ লাগাবি পরে আমাগো পেট ব্যাথা করতো।
নীল– কিন্তু আমি ফুচকা লাইক করি না।
তিথি– সমস্যা নাই কয়েকটা খেলে কিচ্ছু হবে না।
স্বপ্না– তাহলে তুমি লাইক করো কি?
নীল– বলতে যাবে তার আগেই।
অভ্র– আইসক্রিম।
নীল– অবাক হয়ে অভ্রর দিকে তাকালো। ও জানলো কিভাবে?
তিয়া, তিথি– ও হো হো,, সব জানিস দেখি বউয়ের সম্পর্কে।
অভ্র– Of Course! একটাই বউ আমার সব তো জানবোই A to Z… (টেডি স্টাইল হাসি দিয়ে)
নীল এখন আরও অবাক হলো A to Z বলতে সব জানে কিভাবে সম্ভব একটা মানুষকে কতটা ভালোবাসলে তার সম্পর্কে সব জানতে পারা যায় এতো কেনো ভালো বাসে অভ্র আমাকে। (মনে মনে)
তিথি– খুব ভালোবাসিস ভাবিকে?
অভ্র– নিশসন্দেহে! নীলের দিকে তাকিয়ে নীলও অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে।
তাকাতাকির পালা শেষ করে ফুচকার অর্ডার নিয়ে আসে।
সবাই বেশ মজা করেই খাচ্ছে অভ্র ও খাচ্ছে নীল বসে বসে সবার খাওয়া দেখছে।
তিয়া– কিরে ভাই তুই একা একা খাচ্ছিস যে?
অভ্র- তো কি করবো? (খাওয়া বন্ধ করে তিয়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে)
তিথি– ভাই তুই এত আনরোমান্টিক কেন?
অভ্র– আমি কি করলাম!
স্বপ্না- ভাবিকে খাইয়ে দে!
তোয়া– আমি ভিডিও করবো হিহিহি মোবাইল ডা কই? (মনে মনে)
অভ্র– কিন্তু?
নীল– নিশ্চুপ..!
তিয়া– কোনো কিন্তু না খাইয়ে দে।
তিথি– কি রে দে!
তোয়া- লুকিয়ে লুকিয়ে ভিডিও করছে।
অভ্র– একটা ফুচকা নীলের দিকে এগিয়ে দেয়। নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে।
অভ্র জানে নীল খাবে না। তাই হাত নামিয়ে নিতে গেলেই নীল ওর হাত ধরে নেয় আর টুপ করে খেয়ে নেয় এটা দেখে অভ্র বেশ খুশি হয় কারণ নীলের মনের মধ্যেও অভ্রর জন্য ফিলিংস তৈরি হচ্ছে এটা ভেবে মুচকি হাসে।
নীলের হোস ফিরে তিয়ার জোরে সিস দেওয়া তে।
নীল- আমি কি করছিলাম কোন দিকে হুস ছিলো আমার ওনার হাতে কিভাবে খেয়ে নিলাম।
তারপর স্টোল থেকে বেরিয়ে আবার রোডের সাইডে হাঁটছে। রাস্তার দুই পাশে বিল আর বিল ভর্তি পানি যার নাম মুকাসবিল। পানিতে অনেক জাহাজ ও নৌকা ও স্টিমার।
তো তোয়া তিথি জিদ ধরে ওরা স্টিমারে উঠে পানিতে ঘুরবে। তো সবাই ইচ্ছে মতো স্টিমারে উঠে নীল উঠতে চায়নি কারণ পানি ভয় পায় কারণ সাঁতার জানে না।
তবুও সবার জরাজরিতে যেতে বাধ্য হয়। উঠতে গিয়ে পরে যেতে নিলে অভ্র নীলের হাত ধরে ফেলে তারপর ওরা স্টিমার দিয়ে বেশ দূরেই চলে যায় সবাই বেশ এনজয় করছে কিন্তু কিছুদূর গেলেই পানিতে ঢেউ উঠে আর সবাই বেশ চিল্লা চিল্লি করে অভ্র সবাই শান্ত হতে।
বলে। নীল বেশি ঘাবড়ে যায় আর পেছাতে নিলেই স্টিমার এক কোনায় শাড়ি বেজে পানিতে পরে যায়। সবাই পানিতে কিছু পরার শব্দ শুনে সাথে সাথে পানির কিনারে আসে সবাই এক পাশে আশার কারণপ স্টিমার এক সাইডে নিচু হয়ে যায়। অভ্র সবাই চারপাশে দাঁড়াতে বলে আর নয়তো সবাই ডুবে যাবে।
তিয়া- ভাইয়া ভাবি কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অভ্র– কি?
অন্য একজন লোক- একটা মেয়ে পানিতে পরে গেছে!
অভ্র– একটা মেয়ে পানিতে পরেগেছে আর আপনি এখন বলছেন। বলে চলে যেতে নিলে।
লোকটা– মেয়েটা নীল শাড়ি পরেছিলো।
অভ্র– কিহহ!! (পেছনে ঘুরে)
সাথে সাথেই আর কিছু না বলেই পানিতে ঝাপ দিলো।
৩০মিনিট হয়ে গেছে। নীলকে খুঁজে পাওয়া যায় নাই। অভ্র মাঝে মধ্যে পানির উপরে উঠে নিশ্বাস নিয়ে আবার নীলের খোঁজে পানিতে ডুব দেয়। কিছুক্ষণ পর নীলকে অভ্র পেয়ে যায় ওকে ধরে উপরে নিয়ে আসে সবাই ধরে উপরে উঠায় স্টিমার সাথে সাথে আবার আগের জায়গায় রোডের সাইডে নিয়ে আসে। অনেকক্ষণ পানির নিচে থাকায় নীলের পালস পাওয়া যাচ্ছিলো না অভ্র নিজেকে সামলাতে না পেরে নীলকে জরিয়ে কান্না করে দেয়।
অভ্র– নীল তোমার কিচ্ছু হতে পারে না তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না তোমাকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না প্লিজ চোখ খোলো নীল।
তিয়া– ভাই ভাবি অনেক পানি খেয়ে ফেলছে ওকে নিচে সোজা করে শুয়া। (আগে বলে নেই তোয়া ডাক্তারি পড়ছে)
অভ্র– নীলকে নিচে শুয়ে দেয়!
তোয়া নীলের পেটের উপর চাপ দিচ্ছে বেশ কয়েকবার চাপ দেওয়ায় পেট থেকে অনেক পানি বের হয়। তার পরও নীলের জ্ঞান ফিরে না।
তোয়া- ভাবিকে তোর নিশ্বাস দিতে হবে।
.
.
.

#চলবে …..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here