অভ্র_নীল,২২,২৩

0
880

#অভ্র_নীল,২২,২৩
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_২২
______
পরেরদিন.
নীল এখন আর কালকের মতো মারিয়াকে অপছন্দ করে না সবার মতো মারিয়াকে নীল ও মেনে নিয়েছে ওদের ও খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।

অভ্র- এক রাতের মধ্যে কি এমন হলো এত চেঞ্জ কাল অবধি তো সহ্যই করতে পারতো না আর আজ। অবাক হয়ে।

নীল মারিয়া সময় পেলেই আড্ডা দেয় সাথে তোয়া ও আছে।

এভাবেই চলছে দিন দুইদিনে বেশ আপন হয়েগেছে মারিয়া সবার কাছে।

নীল মারিয়া কে নিয়ে মাঝেমধ্যে বাহিরে যা ঘুরতে শপিং করতে আর কলেজেও নিয়ে যায়। এখন আর নীল মারিয়া কে অভ্রর সাথে কথা বলতে দেখলে jealous ফিল করে না।

পরেরদিন সকালে মিস্টার চৌধুরী কাজের জন্য শহরের বাহিরে সিলেট গেছেন। অভ্রর ও যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখানেও হঠাৎ একটা মিটিং এর জন্য অভ্রকে থাকতে হয়। বিদেশি ক্লাইন্টদের সাথে মিটিং। অভ্র আকাশ শুভ তিনজনে মিটিং করবে।

তোয়া স্কুল চলে গেছে,, মিসেস চৌধুরী কিছু জিনিস কিনার জন্য মার্কেট গেছেন। নীল কলেজের জন্য বেরিয়েও শরীর ভালো লাগছিলো না বলে বাড়ি ফিরে এসে সোজা রুমে চলে যায়। নীলকে কেউ আসতে দেখে না।

বাড়িতে শুধু মারিয়া আর সার্ভেন্ট রা আছে।

নীল অনেকক্ষণ রুমে থেকে এখন আর একা একা ভালো লাগছে না।
নীল- যাই গিয়ে মারিয়ার সাথে আড্ডা দেই। ও তো একাই আছে। আমার ফোন টা কোই (একটু খোঁজার পর) এই তো পেয়েগেছি।
নীল সাথে সাথেই রুম থেকে বেরিয়ে পরে…!
মারিয়া ওর রুমে দরজা জানালা খোলা অবস্থাতেই কার সাথে জেনো কথা বলছে। মারিয়ার জানা মতে বাড়িতে কেউ নেই এই সুযোগ।
নীল মারিয়ার রুমের দরজার সামনে এসে কারো কথার শব্দ শুনে দাঁড়িয়ে যায়।

লেয়লা- যা করতে হবে আমাদের খুব সাবধানে করতে হবে ধরা পরা যাবে না।
মারিয়া- চিন্তা করো না ফুপি কেউ কিচ্ছু টের পাবে না। সবাই আমাকে এখন অনেক বিশ্বাস করে ফেলছে আর এই সুযোগেই আমি সব তছনছ করে দিবো।

লেয়লা- অভ্র খুব চালাক চতুর ছেলে আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে।
নীল- সার্ভেন্ট লেয়লা মারিয়ার ফুপি কোনো না কোনো গোলমাল ঠিকিই আছে।
আমাকে সবটা শুনতে হবে।

মারিয়া- আমরা এখানে এসেছিলাম নীল এর উপর প্রতিশোধ নিতে কিন্তু এখম অভ্রর কাছাকাছি থাকতে থাকতে আমি যে অভ্রকে ভালোবেসে ফেলছি ফুপি আমার যে অভ্রকে চাই অভ্র যখন আমার আশেপাশে থাকে তখন আমার অন্য রকম একটা অনূভুতি হয়। আর যখন নীল এর কাছে থাকে নীল এর কেয়ার করে তখন ইচ্ছে করে সব কিছু তছনছ করে দিতে অভ্রর মায়াবী চোখ গোলাপী ঠোঁট পাগল করার মতো চুল অভ্রর নেশালো কন্ঠ জেনো পুরো আমাকে পাগল করে দেয়।
জে করেই হোক নীলকে আমাকে অভ্রর লাইফ থেকে সরাতেই হবে এমন কিছু করতে হবে জেনো অভ্র নিজে নীল কে ওর লাইফ থেকে সরিয়ে দেয়। তারপর আমি নীল এর জায়গা নিবো।

লেয়লা- এত সহজ হবে না এটা। তুই ভুলে গেছিস তুই মিথ্যে পরিচয়ে এখানে আছিস।
মারিয়া- ভুলিনি আমি ফুপি দরকার হলে আমি অভ্রর জন্য সারাজীবন এই মিথ্যে পরিচয়েই থাকবো।
নীল বিয়ে বাড়ি ভর্তি মানুষের সামনে আমার বোনকে চড় মেরে ছিলো তার প্রতিশোধ নিতেই তো ছদ্মবেশ মিথ্যে পরিচয় মিথ্যে নাম। অভ্র ছোটো বেলার বান্ধবী কে হঠাৎ ফিরে পেলে যে ওর সম্পর্কে কোনো কিছু খোঁজ নিবে না সেটা আমি জানতাম তাই তো হঠাৎ করেই সামনে চলে আসি আর অভ্রর দূর্বল জায়গা খুঁজে বের করতে তোমাকে এখানে পাঠিয়েছি। কারণ ওই বিয়ে বাড়িতে অভ্রকে দেখে আমার ভালোলেগে যায় আর এখন তো ভালোবাসি অভ্র শুধু আমার হবে।
এমন কিছু একটা করবো যাতে অভ্র নীলকে ঘৃণা করে। এখন সময় এসে গেছে সেইরকম কিছু করার প্লেনকে কাজে লাগানোর। আর ফুপি তুমি যাও যে কেউ চলে আসতে পারে। আর কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হতে পারে।
লেয়লা- কতদিন পর তোকে কাছ থেকে দেখলাম এত মানুষের ভেতরে তো সুযোগই পাই না। আর যা করবি সাবধানে করবি কেউ জেনো টের না পায়। তোয়ার স্কুল থেকে আসার সময় হয়ে গেছে আমি যাই তুই কিছু খাবি।
মারিয়া- নাহহহ।
নীল লেয়লা রুম থেকে বের হওয়ার আগেই দৌঁড় দিয়ে নিজের রুমে চলে আসে আর দরজা বন্ধ করে দেয়।

.
#চলবে …..?

#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_২৩
______
নীল লেয়লা রুম থেকে বের হওয়ার আগেই দৌঁড় দিয়ে নিজের রুমে চলে আসে আর দরজা বন্ধ করে দেয়।
নীল রুমের নিচে ধপ করে বসে পরে।
নীলের চোখ জোড়া ভিজে পানি পরছে।
নীল- মারিয়া ফ্রোড ও এখানে আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে আসছে আমার অভ্রকে আমার থেকে কেড়ে নিতে আসছে।
অভ্রর ছোটোবেলার বন্ধু নয় অভ্রকেও ঠকাচ্ছে না এ হতে পারে না আমাকে কিছু করতেই হবে অভ্রকে সব বলতে হবে আমার অভ্রকে আমি কিছুতেই অন্য কারো হতে দেবো না অভ্র আমার। বলেই হুহু করে কেঁদে দেয়।
নীল- (ফোন হাতে নিয়ে) এই ভিডিও আমাকে অভ্রকে দেখাতেই হবে।

চৌধুরী হাউজ……

মিসেস চৌধুরী ও তোয়া বাড়ি ফিরে আসে অনেকক্ষণ আগে ফ্রেশ হয়ে হল রুমে বসে গল্প করছে সাথে মারিয়া ও আছে।
মিসেস চৌধুরী সবসময় রান্না করেন না যখন ইচ্ছে হয় তখন রান্না করেন বাকি দিন সার্ভেন্ট রান্না করে।
হঠাৎ কলিংবেল বাজাতে তোয়া- আমি দেখছি কে আসছে.
মারিয়া- তুমি কেনো যাবে বাড়িতে সার্ভেন্ট আছে তাদের বলো।
তোয়া- কোনো সমস্যা নেই আমিই দেখছি।
মারিয়া- উফফ।
তোয়া গেইট খুলেই। সালাম দিলো তাদেরকে ভেতরে আসতে বললো।
মিসেস চৌধুরী- কে আসছে রে তোয়া?
তোয়া- আন্টি আঙ্কেল আসছেন।
মিসেস চৌধুরী- কোন আন্টি আঙ্কেল আসছে। বলে পেছনে ঘুরতেই দেখলো নীল এর বাবা মা আসছে।
মিসেস চৌধুরী- আরে বিয়াই বেয়ান আসেন আসেন। (সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে)
মিসেস চৌধুরী- কেমন আছেন?
মিসেস ও মিস্টার সরকার- আলহামদুলিল্লাহ আমরা ভালো আপনি কেমন আছেন বেয়ান?

মিসেস চৌধুরী- আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।
তোয়া- আমি ভাবিকে ডেকে আনছি!
মিসেস সরকারের- মেয়ে তো বিয়ের পর আর যায়ওনি আমাদের ও ওকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় ২মাস হয়েগেছে শুধু ফোনেই কথা হয় তাই আমরা ওকে নিতে আসছি কয়েকদিন আমাদের সাথে থাকলে আমাদের ভালো লাগবে বাড়িটা পুরো খালি খালি হয়ে গেছে মেয়েটা আসার পর।
মিসেস চৌধুরী-তা না হয় নিয়ে যাবেন। কিন্তু তার আগে আমাদের সাথে লাঞ্চ করতে হবে।
মিস্টার চৌধুরী- ঠিক আছে বেয়ান আপনি যা বলবেন।
তোয়া দুইবার দরজা নক করতেই নীল দরজা খুলে দেয়। তোয়া- ভাবি তোমার আম্মু আব্বু আসছে!
নীল- কিহহ?
তোয়া- হুম নিচে বসে আছে।
নীল- চলো! বলেই দিলো দৌড়।
সিঁড়ি দিয়ে নেমে নীল আব্বু বলে চিৎকার দিলো। মেয়ের ডাক শুনে দাঁড়িয়ে যায়। নীল দৌঁড়ে এসে মিস্টার সরকার কে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
মিস্টার রায়হান সরকার মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
মিস্টার রায়হান সরকার- এতদিন তো আমাদের ভুলেই গেছিলি নতুন বাবা মা পেয়ে আর আজ দেখে চোখ ভেজাচ্ছিস।
নীল- কে বলছে ভুলে গেছি। তোমরা দিনে ১ বার কল দিতে আর আমি ২ বার এখন বলো কে ভুলে গেছে?
মিসেস সরকার- আমাদের তো তোকে দেখতেও ইচ্ছে করে মা কত আর ফোনে দেখে মন ভরে। আমরা তোকে নিতে আসছি।
নীল- নিশ্চুপ!
সবাই আবারও সোফায় বসে পরে।
মিসের সরকার- বেয়াই কোথায় আর আমাদের জামাই কোথায়?
মিসেস চৌধুরী- ও একটু কাজের জন্য সিলেট গেছে আর অভ্র অফিসে সন্ধ্যার দিকে একটা মিটিং আছে মিটিং শেষ হলে রাতে আসবে।
মিস্টার সরকার- ও আচ্ছা।
তারপর সবাই বেশ কিছুক্ষণ কথা বললো।
নীল- ক্রোধ চোখে মারিয়াকে দেখছে।
মারিয়া হঠাৎ নীল এর এমন ব্যবহারের আগা মাথা কিচ্ছু বুঝছে না।
তোয়া- আহ ভাবি তুমি কলেজ থেকে কখন আসছো আমি তো এখানেই আছি সেই স্কুল থেকে আসার পর থেকে আম্মুকে আসতে দেখছি কিন্তু তোমাকে দেখিনি।
নীল- আমি আজ কলেজ যাইনি তোয়া।
নীল এর কথা শুনে মারিয়া একটা ঢোক গিললো। এখন কেমন জেনে সন্দেহ হচ্ছে নীল কি জানতে পেরেছে কিছু না-কি অন্য কোনো কারণ।
মিসেস চৌধুরী- লাঞ্চের সময়ও হয়ে গেছে চলুন খাওয়া যাক।
মিসেস সরকার- চলুন।

তারপর সবার খাওয়া দাওয়া শেষ হলে নীল লাগেজ গুছিয়ে নেয় বিকেলের আগেই ওরা বেরিয়ে পরে।

মিসেস চৌধুরী আর মারিয়া হল রুমে বসে টিভি দেখছিলেন।
তোয়া- ভাবিকে যেতে দিলা কেন ভাবিকে ছাড়া ভালো লাগে না।
মিসেস চৌধুরী- তোর ভাবি তাই তোর ভালো লাগে না ও চলে গেছে বলে আর ওনাদের তো মেয়ে উনাদের ও তো কষ্ট হয় মা সেদিকের কথাও তো চিন্তা করতে হবে। তুই কোথাও ঘুরতে গেলে যেমন আমাদের ভালো লাগে না তাদেরও তো সেম।
তোয়া- অতশত বুঝি না ধ্যাত ভাল্লাগে না। বলেই উঠে হনহনিয়ে রুমে চলে গেলো।
মারিয়া- ঢং দেখলে বাঁচি না। (মনে মনে বলে মুখ ভেংচি মারে)
মারিয়া- আমি রুমে যাই আন্টি কোনো দরকার হলে তাক দিবেন প্লিজ।
মিসেস চৌধুরী- আচ্ছা যাও…..!

সরকার বাড়ি….!

বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেছে নীল আসার পর থেকে একটুও শান্তি পায়নি ছটফট করছে মারিয়ার সাথে অভ্র না না আর কিছু ভাবতে পারছে না কোনো কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারছে না।
রাতে ডাইনিং টেবিলে…! মিসেস ও মিস্টার সরকার রাত ৮টা বাজলেই রাতের ডিনার কমপ্লিট করে নেয়…!

নীল খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে প্লেটের উপর হাত বুলাচ্ছে।
মিসেস সরকার- কিরে মা খাচ্ছিস না কেনো কি হয়েছে তোর আসছিস পর থেকে কেমন জেনো লাগছে তোকে।
মিস্টার সরকার- কিরে বল?
নীল প্লেট থেকে হাত উঠিয়ে।
নীল- আমি এখনই বাড়ি যাবো বাবা আমার যওয়া অনেক জরুরি আমার যেতেই হবে অভ্রকে সব বলতেই হবে।
মিস্টার সরকার- কি বলবি তুই অভ্রকে?
নীল- তোমাদের পরে বলবো এখন আমার যাওয়ার ব্যবস্থা করে দাও প্লিজ আমাকে যেতেই হবে আমি অভ্রকে সত্যি টা না বলা পর্যন্ত যে শান্তি পাচ্ছি না।
মিসেস সরকার-আজই তো এলি মা আর এখনই চলে যাবি?
নীল- আমি পরেও আবার আসতে পারবো মা আমার যে আজকে যেতেই হবে।
মিস্টার রায়হান সরকার- আচ্ছা যা আমি রামু কে বলছি গাড়ি বের করতে আর তুই গিয়ে রেডি হয়ে আয়।
নীল কিছু না বলেই রুমের দিকে দিলো দৌড়।
মিসেস সরকার- আজকেই এলো কোই তুৃমি যেতে না করবে উল্টো তুমি রেডি হতে পাঠিয়ে দিছো।
মিস্টার সরকার- হয়তো এমন কোনো কথা আছে যেটা আমাদের মেয়ে অভ্রকে না বলা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছে না আর সেজন্যই আপসেট বারবার যেতে চাইছে মা হয়ে মেয়ের মনের কত্থা বুঝতে পারছো না।
যেতে দাও।
মিসেস সরকার- নিশ্চুপ,,, না খেয়েই চলে যাবে।

নীল রেডি হয়ে লাগেজ গুছিয়ে বেরোতে প্রায় ২০মিনিট লাগে।
নীল- কাঁদছো কেন আম্মু আমি আবার আসবো প্লিজ কান্না করো না আমার যাওয়া খুব দরকার।

নীল বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
গাড়ি চলছে নীল ফোনটা হাতে নিয়ে ফোন শক্ত করে ধরে বসে আছে।
নীল গোল জামা পরেছে। তারাতাড়ির জন্য তেমন ভাবে রেডি ও হয় নাই।
নীল- অভ্রকে কল করবো কি এতক্ষণে অভ্র তো বাড়িতে চলে গেছে হয়তো.! না থাক ফোনে সব বলা যাবে না বাড়িতে গিয়েই বলবো।

ওইদিকে ক্লাইন্ট রা আসতে লেইট করে সেজন্য মিটিং ও দেরিতে শুরু হয় এখনো অভ্র মিটিংয়ে।
অভ্র মিটিংয়ের সময় ফোন নিলয়ের কাছে দেয়।

গাড়ি চলছে তো চলছেই মাঝ রাস্তায় এসে গাড়ি থেমে যায়।
ড্রাইবার গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির নাড়িভুড়ি চেক করে বললো।
ড্রাইবার- ম্যাডাম গাড়ির ইঞ্জিন খারাপ হয়েগেছে টাইম লাগবে।
নীল গাড়ি থেকে নেমে।
নীল- আমার কাছে টাইম নেই আমি যাচ্ছি সামনে জ
যে কোনো একটা ট্যাক্সি পেয়ে যাবো আর গাড়ি ঠিক হয়েগেলে আমার লাগেজ বাড়িতে পৌঁছে দিও.!
ড্রাইবার এত রাতে একা একা এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। সেফ নয়।
নীল- আমার কিছু হবে না। বলেই ব্যাগ কাঁধে জুলিয়া হাঁটা শুরু করে।
বেশ কিছুদূর আসার পর কিছুটা দূরে একটা বটগাছ দেখা যাচ্ছে সেখানে বসে আছে চারজন লোক।
নীল একা তাই কিছুটা ঘাবড়ে যায়।

নীলকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে…
প্রথম লোক- দেখ দেখ ওইখানে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।
দ্বিতীয় লোক- কোই?
তৃতীয়- মেয়েটাকে দেখে তো বেশ বড়লোক মনে হচ্ছে রে সাথে ব্যাগও আছে।
চতুর্থ ব্যক্তি লিডার- যা গিয়ে সাথে যা যা আছে সব নিয়ে আয়!
তৃতীয় লোক- বস মেয়েটা কিন্তু সেই..!
লিডার- খবরদার কেউ আজেবাজে কিছু করার চেষ্টাও করবি না ভুলে যাসনা তোরা আমরা চোর হতে পারি কিন্তু ধর্ষক নই।
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় লোক- জি বস।
চেলা তিনজন বসের কথা শুনে নীলের দিকে যেতেই লিডার গাছের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে থাকে আর মুখ দিয়ে সিটি বাজাচ্ছে।

চেলা তিনজন নীলের সামনে এসে চারদিকে ঘুরছে নীল মধ্য খানে দাঁড়িয়ে আছে ভয়ে শেষ না জানি কি হয় আজকে ওর সাথে।
প্রথম লোক তোর সাথে যা যা আছে সব দিয়ে দে।
দ্বিতীয় লোক- ব্যাগ দে।
নীল ব্যাগ টা কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়ে দেয়।
তৃতীয় লোক- তোর সাথে সন্যাের যা যা আছে সব দিয়ে দে।
নীল গলার কানের হাতের সব কিছু খুলে দিয়ে দেয়। শুধু বিয়ের রিং বাদে।
কিন্তু উরা নীলের হাতে রিংটা দেখে সেটাও চাইলো নীল শুরুতে দিতে চায়নি কিন্তু পরে ওদের তিনজনের ধমকে রিং খুলে দিয়ে দেয় কান্না করতে করতে নিচে মাটিতে বসে পরে সাথেই ছিলো সাদা বালু….!
নীল- হাত জোড় করে বলছি প্লিজ আমাকে যেতে দিন আমার সাথে যা যা ছিলো সব দিয়ে দিয়েছি প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
দ্বিতীয় লোক- সব কোই দিলি এখনো তো তোর হাতে আইফোন আছে সেটা তো দে…!
নীল- না আমি ফোন দিতে পারবো ন আমার ফোনে ইমপোর্টেন্ট একটা জিনিস আছে প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
তৃতীয় ব্যক্তি- দিবি নাকি গুলি করে দেবো?
(লেখিকা- সাথে তো একটা ছুঁড়িও নাই আর হুমকি দিচ্ছে গুলি করে দেবে হালার ছেঁচড়া চোর, চোর তো নাই-ই চোর নামে কলঙ্ক এরা)
নীল- না না প্লিজ আমাকে কিছু করবেন না।
প্রথম লোক- ভালোয় ভালোয় ফোনটা আমাদের দিয়ে দে। নয়তো এনেই তোরে আজকা মাইরা লামু!
নীল- চোখ মুছে ফোনটা হাত থেকে গোল জামার পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। মনে মনে বলে ভাগ্যিস এই জামাটা পরেছিলাম। বলেই দুই হাতে মুঠি ভরে বালু নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তিন জনের চোখের দিকে ছুঁড়ে মারে….!
চেলা তিনজন এক হাত দিয়ে চোখ ডলছে।
প্রথম জন- ওরে বাবা গো ওরে মা গো,, ওই ধর ধর ছেড়ি পালাইলো।
দ্বিতীয় লোক- আব্বে হালার পো দেহোস না ছেড়িডায় চোখে আমার৷ বালু দিছে চোখে তো কিছুই দেখি না ধরমু কেমনে?
তৃতীয় লোক- ওরে আমার চোখ জ্বলে যাইতাছে রে। ওই মেয়েরে পাইলে আজকা খাইয়া লামু।
নীল উড়াধুড়া দৌঁড় নিজেও জানে না কোন দিকে যাচ্ছে ছেঁড়ড়া চোরদের ছেঁছড়া লিডারের সামনে দিয়া দৌঁড়ে আসছে হালায় গান হুনে চোখ বন্ধ কইরা তাই দেহেও নাই।
নীল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে তিন রাস্তার মোড়ে এসে পরেছে এখন কোন দিকে যাবে।
ওদিকে ওরা তিনজন শার্ট দিয়ে মুছে চোখ লাল করে ফেলেছে সাথে বালুও বেরিয়ে গেছে।
প্রথম লোক- চল ওইদিকে গেছে.!
দ্বিতীয় লোক- যাওয়ার কি দরকার আমাদের যা দরকার ছিলো আমরা তো তা পেয়েই গেছি।
তৃতীয় লোক- আমার এখন ওই মেয়েটাকেই দরকার।
দ্বিতীয় লোক- বস কি বলেছিলো ভুলে গেছিস?
তৃতীয় লোক- রাখ তুই বস ওই মেয়ের সাহস হয় কি করে আমার চোখে বালু ছোরার আজকে তো শেষ।
প্রথম লোক আর দ্বিতীয় লোক- দিলে দৌঁড়। পেছনে দ্বিতীয় লোক ও দৌঁড় দিলো এটা ভেবে যদি মেয়ে টাকে বাঁচাত পারে।

প্রথম লোক- ওই দিকে গেছে হয়তো চল চল ওইদিকে যাই।
নীল কারো দৌঁড়ানোর শব্দ শুনে আর কারও কথা শুনে ওরাই ভেবে সামনেই একটা ভাঙ্গা বাড়ি ও বড় মোটা কড়োই গাছ আছে সে গাছের পেছনে গিয়ে লুকিয়ে পরে।

প্রথমজন এখানে তো নেই কোনদিন গেছে।

তৃতীয় লোক- তুই ওই রাস্তায় যা আমি এই রাস্তায় যাই আর আমরা আসছি এই রাস্তা দিয়া তো মাইয়া দুই রাস্তার এক রাস্তায় থাকবোই চল চল।
দ্বিতীয় লোক তৃতীয় লোকের সাথেই যায়।

নীল- এরা এখানেও চলে আসছে। কি করবো এখন আমি কিভাবে বাঁচবো এদের হাত থেকে কে বাঁচাবে আমায় কে হেল্প করবে আমাকে এখন। বলতে বলতেই নীল এর অভ্রর কথা মনে পরে…!
নীল জামার পকেট থেকে ফোন বের করে লক খুলে আগে ফোন সাইলেন্ট করে নেয় পরে অভ্রর নাম্বারে কল দিচ্ছে,, রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিভ করছে না।
নীল বারবার কল দিচ্ছে কিন্তু একবারও রিসিভ হচ্ছে না। নীল কল দিতে দিতেই কেঁদে দেয়।
নীল- প্লিজ অভ্র পিক আপ দ্যা ফোন অভ্র প্লিজ প্রায় ৩০/২৯ টা মিসড কল দিয়ে দিয়েছে। নীল চোখের পানি মুছে একটা মেসেজ করে ভাবে।
মেসেজ টাইপ করছে- অভ্র প্লিজ হেল্প মি……..
আর কিছু লেখার আগেই সেই তিনজন ঘুরে
এখানে এসে দাঁড়িয়েছে।
-কোথাও পেলাম না হয়তো পালিয়েছে।
-পালিয়ে আর যাবে কোথায়? খুঁজতে থাকো!
নীল ওদের কোথা শোনে আর কিছু না লিখেই মেসেজ সেন্ট করে দেয়।

.
.
.
#চলবে …..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here