অভ্র_নীল,২৬,২৭

0
906

#অভ্র_নীল,২৬,২৭
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_26

নীল হাত থেকে ডায়েরি টা অভ্রর দিকে বাড়িয়ে দিলো।
অভ্র- এই ডায়েরি কোথায় পেলে?
নীল- সেটা বড় কথা নয় বড় কথা হচ্ছে…! তুমি পরীকে প্রমিজ করে ছিলে সারাজীবন তুমি তারই থাকবে ও তুমি তাকে বলেছিলক সে জেনো তোমার জন্য অপেক্ষা করে প্রতিবার বিদেশ থেকে এসে তুমি পরীকে পুরো দেশে খুঁজেছো পাওনি তাহলে মাঝখানে আমি কি করে এসে পরলাম।
অভ্র- শান্ত হও প্লিজ নীল প্লিজ শান্ত হও… আমি তোমাকে ভালোবাসি।
নীল- কাউকে প্রমিজ করে সে প্রমিজ যদি নেবাতেই না পারেন তাহলে কেনো করেন প্রমিজ আপনাকে বিশ্বাস করে পরী হয়তো আজও আপনার অপেক্ষা করছে। আর ভালোবাসা আজ যদি পরী আপনার সামনে এসে ওকে প্রমিজ করা সেই প্রমিজ গুলো নেবাতে বলে তখন কি করবেন তখন আমাকে ছেড়ে দেবেন। ভালোবাসি ভালোবাসি আমাকে দেখার আগে তো পরীকে ভালোবাসতেন আর আমাকে দেখে আপনি আমাকে ভালোবেসে ফেলেন।
আজ যদি পরী ফিরে এসে আপনার কাছে ওর অপেক্ষা করা এতগুলো বছরের ভালোবাসা চায়। ফিরিয়ে দিতে পারবেন তখন সেই পরী কে যার জন্য সারাদিন দরজা বন্ধ করে কেঁদেছেন পারবেন কি তাকে তাকে তখন বলতে আপনি অন্য কাউকে বিয়ে করে নিয়েছেন।
নীল এর প্রত্যেকটা কথা অভ্রর হৃদয়ে গিয়ে লাগছে চোখ বেয়ে অটোমেটিক জল পরছে কারণ নীল পরীকে নিয়ে যা বলছে সব সত্যি….!

নীল- কেনো একটা মেয়ের ফিলিংস নিয়ে খেলছেন।
অভ্র- আমি কি করবো নীল ভালোবাসি তোমাকে আমি কখনো পরীকে পেলে ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবো দরকার হলে ওর পায়ে পরে যাবে। পরী আমার হৃদয়ের যে স্থানে ছিলো সে স্থানেই থাকবে আমি পরীকে ভালোবাসি কিন্তু তোমাকে নিজের থেকেও বেশি কখনো পরীকে ছাড়া কাউকে ভাবিনি কিন্তু তোমাকে দেখার পর থেকে তুমি নিজেই আমার মনে তোমার আলাদা জায়গা করে নিয়েছো।
আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি নীলল।
নীল- আর পরী? যে পরী আপনার বলা কথা গুলো বিশ্বাস করে এত বছর আপনার জন্য ওয়েট করেছে প্রতিটা দিন গুনেছে কবে আপনি ফিরে আসবেন।
আর যদি সে পরীর অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু আজও সে পরী আপনাকেই ভালোবাসে।
অভ্র- কি বলছো তুমি আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
নীল- প্রতিটা দিন অপেক্ষা করেছি কবে কখন আমার মেঘ ফিরে এসে বলবে পরী তোমাকে দেওয়া কথা অনুযায়ী তোমার মেঘ ফিরে এসেছে। কিন্তু আমার মেঘ ফিরে আসেনি আমিও আমার মেঘকে খুব ভালোবাসি অভ্র চৌধুরী…!
অভ্র– মেঘঘঘ…….?
নীল- আমার মেঘ….! ( কাঁদতে কাঁদতে)
অভ্র- নীল তুমি আমার পরী….? চোখ বেয়ে অশ্রু জড়ে পরে।
নীল- হুম… এই ডায়েরি না পরলে আমি কখনোই জানতাম না আমার অভ্রই আমার মেঘ আমার ছোটোবেলার সেই বন্ধু যে বলেছিলো আমিই থাকবো তার মনে আমিই আছি তার মনে….! তফাৎ হচ্ছে তখন ছিলাম পরী এখন নীল…!
অভ্র– আমার নীলপরী!
বলেই অভ্র নীল কে জরিয়ে ধরে নীল ও অভ্র কে জরিয়ে ধরে দু’জনেরই চোখে অনবরত পানি জড়ছে। অভ্র নীল এর কপালে চুমু দিয়ে আমার পরী। আমার নীল পরী আমার কাছেই ছিলো আর আমি চিনতেও পারিনি।
নীল- আমার মেঘ! আমি আমার অভ্র মেঘ কে খুব ভালোবাসি।
অভ্র নীল এর থুতনিতে দরে মুখ নিজের দিকে উঠিয়ে।
অভ্র- কি বললে তুমি আবার বলো নীলপরী।
নীল- তুমি যখন লন্ডন চলে গিয়েছিলে তোমার যাওয়ার পর থেকে প্রত্যেকটা ঘন্টা মিনিট আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে আমি তোমাকে ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি আমি নীল শুধুই অভ্রর…. আই লাভ ইউ অভ্র………!

অভ্র- নীলপরী………. বলে নীলকে কোলে তুলে নিয়ে সাদে গোলগোল ঘুরতে শুরু করলো।
অভ্র- আই লাভ ইউ টুু নীলপরী…..!
নীল- কি করছো অভ্র পরে যাবো তো…!
অভ্র- আমি থাকতে আমার নীলপরীর কিচ্ছু হবে না।
নীল- অভ্র……
অভ্র– নীলকে কোলে নিয়ে রুমে যাচ্ছে। রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়…!
নীলকে নিচে নামি দিতেই নীল- একদম আমার কাছে আসবে না বলে দিলাম।
অভ্র- আজ তো আমাকে তোমার কাছে যেতে থেকে কেউ আটকাতে পারবে না স্বয়ং নীলপরীও আটকাতে পারবে না। বলেই নীলকে ধরতে গেলে নীল দৌঁড়ে বেডের উপর উঠে যায়।
নীল- ধরতে পারবে না। এহহহহ…
অভ্র- দাড়াও.!
নীল- আহহহ….!
বলে চিৎকার দিয়ে একবার বেডের উপর উঠছে তারপর নেমে সোফার পেছনে যাচ্ছে আবার পুরো রুম দৌড়াচ্ছে অভ্র নীলকে ধরার জন্য চেষ্টা করছে দৌঁড়াচ্ছে কিন্তু পারছে না।
নীল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে লক করে দেয়।
অভ্র- বাহিরে আসো নীল….
নীল- নাহ কিছু তেই না কখনোই না!
অভ্র- আসবে না তো/
নীল- নাহহহহহহ।
অভ্র- আচ্ছা ওয়েট….
বলেই দিলো সুইচ অফ করে….!
নীল- কুত্তা ছেড়া লাইট অন করো আমার ভয় লাগছে।
অভ্র- ভয় লাগলে বাহিরে চলে আসো.! (দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে)
নীল- কিছুতেই না….!
অভ্র- কেন….?
নীল- কারণ তুমি অসভ্য লুচ্চা…!
অভ্র- কি কি কি? কি বললা আমার মতো ইনোসেন্ট পোলা আর পাইবা একটা খুঁজে।
নীল- অনেক পাবো।
অভ্র- নীলললললল। দাঁত কিটমিটিয়ে বলে।
অভ্র- এই বাথরুমে লাইট অফ থাকলে ভূত আসে। আর আজকে তো তুমিও আছো ভেতরে।
নীল- ওই কুত্তা চোপ কর….!
অভ্র- কুত্তী বাহিরে আয় না।
নীল- না……!
অভ্র- ভিতুর ডিম একটা।
নীল- ওই আমি মোটেও ভিতুর ডিম নই।
অভ্র- সেটা তো দেখতেই পারছি। ভিতু ভিতু ভিতু।
নীল- তবে রে…! (বলে দরজা খুলতেই অভ্র নীল এর উপরে গিয়ে পরে। নীল এর হাতে লেগে শাওয়ার অন হয়ে যায়।
দু’জনের উপর টুপটুপ করে শাওয়ারের পানি পরছে নীল এর মুখ বেয়ে পরা পানি অভ্রর উপরে গিয়ে পরছে।
অভ্র নীল দুজনের দুজনকে দেখছে। নীল অভ্র কে ধরে রাখছে।
নীল- উঁঠো তুমি অনেক ভাড়ি….!
আমি কিন্তু এখন ফেলে দিবো।
অভ্র- ৫মিনিট রাখতে পারছো না। আর আমি যে ৩০মিনিট ধরে কোলে নিয়ে সাদে ঘুরলাম পরে কোলে নিয়ে রুমে আসলাম সেটার বেলা।
নীল- আমি আর তুমি কি এক নাকি? উঠো….

অভ্র- নাহহহহ,,, আমার এইভাবে তোমাকে দেখতে সত্যিই পরীর মতো লাগছে তোমার ভেজা চুল থেকে পানি তোমার কপাল চোখ গাল বেয়ে ঠোঁটে এসে পরছে ঠোঁট থেকে থুতনিতে এসে ভড় করছে আর সে পানি সোজা এসে আমার মুখের উপর পরছে…..
অভ্র রোমান্টিক হয়ে গেছে।
অভ্র উঠে দাঁড়িয়ে নীল এর ঠোঁটের উপর হাত রেখে পানি মুছে দিচ্ছে….
অভ্র- এই ঠোঁট আমাকে পাগল করে দেয়।
নীল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দু’জনেরই উপর পানি পরছে।
অভ্র নীল এর কাছে গিয়ে নীলকে কিস করতে যাবে।
নীল তখনই এক ধাক্কা দিয়ে অভ্রকে ওয়াশরুমের বাহিরে বের করে দেয়।
অভ্র তাল সামলাতে না পেরে দরজার সাথে ধাক্কা লেগে নিচে পরে যায়।
নীল দরজা আঁটকে দিয়ে।
নীল- সরি আমি ইচ্ছে করে করি নাই কা…..!
অভ্র- কা কা বাহিরে আসো একবার বোঝামোনে মজা….!
বলেই উঠে দাঁড়িয়ে ভেজা প্যান্ট শার্ট চেঞ্জ করে নিলো।
এখন শুধু একটা ফুল প্যান্ট পরে আছে….!
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে।।
আর সিটি বাজাচ্ছে..

নীল- আরে যা……! আমি এখন পরবো কি?
আমি তো কিচ্ছু নিয়েই আসিনি।
কুত্তা আবার সিটি বাজাচ্ছে ফুর্তি লাগছে মনে।
মুখ ভেংচি দিয়ে।
নীল- অভ্র…….!
অভ্র- বলো জানপাখি….!
নীল- আমি আমার কোনো কাপড় আনি নাই,, প্লিজ আলমারি থেকে আমার একটা শাড়ি আা জামা দাও প্লিজ…!
অভ্র- পারবো না নিজে এসে নিয়ে যাও। আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিছো। আমি পারবো না।
নীল- আমি বের হতে পারবো না লক্ষীটি প্লিজ দাও… আমি কিছু পরিধান করি নাই কিভাবে বের হবো?
অভ্র- সমস্যা কি বেরিয়ে পরো আমরা আমরাই তো..! একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে।
নীল- সালা লুচ্চা….
অভ্র- কি লুচ্চা বললা। যাও আর দিবোই না। আমি নিচে যাচ্ছি বলেই রুম থেকে বেরিয়ে পরল….!
নীল ওয়াশরুম থেকে কান পেতে শোনার চেষ্টা করছে কোনো শব্দ নেই মানে চলে গেছে….!
বলেই দরজা খুলে নীল বের হলো….!
অভ্র- এই যাহহ আমি শার্ট পরি নাই কেউ যদি দেখে আমাকে এভাবে ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে।
বলেই পেছনে ঘুরে হাঁটা দিলো রুমের উদ্দেশ্যে….!
অভ্র রুমে প্রবেশ করে থমকে যায়।
কারণ নীল শুধু টাওয়াল পরে ঘুরছে…!
অভ্র জেনো নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে।
অভ্র- তুমি কি চাও,, আমি হার্ট অ্যাটাক করে করি…?
নীল অভ্রর কথা শুনে বড়সড় একটা ঢোক গিলে পেছনে তাকায়।
নীল লজ্জায় লজ্জিত হয়ে শেষ মনে চাচ্ছে এখনি পাতালে ডুকে যেতে..!
অভ্র রুমে ডুকে দরজা আঁটকে দেয়। এখন তো নীল চাইলেও পালাতে পারবে না।
শুধু একটা টাওয়াল পরে আছে শীতে একটু একটু কেঁপে কেঁপে উঠছে ভেজা চুল থেকে পানি টপটপ করে পরছে।
অভ্র নীল এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে নীল ঠাডার মতো দাঁড়িয়ে আছে নড়তেও পারছে না বেচারি লজ্জায় পঞ্চমুখ।
অভ্র এভাবে অর্ধনগ্ন Se……y হয়ে ঘুরছো কেনো রুমের মধ্যে এমনিই তো ভালোবাসায় পাগল করে রেখেছো এখন কি মেরে ফেলতে চাইছো নাকি।
নীল- নিশ্চুপ…! মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

অভ্র- তুমি জানো তোমাকে এখন কত Ho….. & Se……. লাগছে…!
নীল- লুচ্চা কোথাকার?
অভ্র- কি লুচ্চামি করলাম হুমম?
নীল- তুমি না বাহিরে গেছিলে তো এখন এলে কেনো?
অভ্র- আমি তো আমার শার্ট নিতে আসছিলাম আর এসে তোমাকে দেখে পুরাই টাশকি খাইয়া গেছি এখন তো আমার তোমাকে আদর করতে ইচ্ছে করছে।
নীল- ইহহহহ..! একটু ও না আমি চেঞ্জ করবো সরো…!
এই বলে অভ্রকে সরিয়ে দিয়ে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে অভ্র নীলকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে।।
নীল এর আত্মা জেনো বেরিয়ে আসবে এখনই..
অভ্র- তো আমি চলে যাওয়ার সাথে সাথেই কেনো বের হয়েছো আরও একটু ওর বের হতে পারতে এখন আমি কিছুই জানি না। আমি এখন আমার নীল পরীকে আদর করবো….!
বলেই নীল এর পিঠ থেকে ভেজা চুল সরিয়ে নীল এর ঘাড়ে অভ্র নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়….!
নীল এর শরীর কেপে কেপে উঠছে নীল দুই হাত দিয়ে শক্ত করে টাওয়াল চেপে ধরেছে।
অভ্র এক হাত দিয়ে নীল এর পেট চেপে ধরে। টাওয়াল এর উপর দিয়েই। নীল শিহরিত হচ্ছে।
ঠোঁট কেঁপে কেঁপে উঠছে।
অভ্র নীলকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
নীল এর কাঁপা ঠোঁট জোড়াতে নিজের ঠোঁট জোড়া মিশিয়ে দিলো….!
দীর্ঘ ১০মিনিট পর ছেড়ে দিলো..!
নীল- এএএএ আহহহ আমার ঠোঁট…. (কান্নার ভান করে)
অভ্র- তোমার এই গোলাপী ঠোঁটে মধু আছে জানপাখি…!
নীল- ছিহহহহ….! সরো…..!
অভ্র- কোই সরবো সবে তো মাত্র শুরু করলাম সারারাত আদর করবো…! আজ আমাদের বিয়ের ২মাস পূর্ণ হলো আর আজ তুমি আমার নীলপরী সম্পূর্ণ রুপে আমার হবে…! যেখানে ১ ইঞ্চির ও গ্যাপ থাকবে না।
নীল- সরো…….!
অভ্র নীল এর দুই হাত চেপে ধরে গালে কপালে ঘাড়ে গলায় পাগলের মতো কিস করছে….!
সবশেষে আবার নীল এর ঠোঁট জোড়ায় অভ্র নিজের ঠোঁট জোড়া মিশিয়ে দেয়।
কিছুক্ষণের মধ্যে নীল ও অভ্র কে জরিয়ে ধরে নীল অভ্রর বড় বড় চুলগুলো হাতের মধ্যে নিয়ে শক্ত করে মুঠি বন্ধ করে নেয়। আরেক হাত দিয়ে অভ্রর পিঠ খামচে ধরে।
আরও ১০মিনিট কিস করার পর অভ্র নীলকে ছেড়ে দিয়ে নীলকে কোলে তুলে নেয়….!
বেডে নিয়ে শুইয়ে দেয় অতঃপর রুমের লাইট ও অফ করে দেয়।
এই ভাবেই মিলন হয়…! অভ্র নীল এর….! সাথে মেঘ পরীর ও..!

আজ এই মধূর রাতে অভ্র নীল এর ভালোবাসা এক হয়েছে। পূর্ণতা পেয়েছে অভ্র নীল এর ভালোবাসা।
আজ অভ্র আর নীল এক হয়েছে। আজ দুইটি প্রাণ এক দেহ হয়েছে হয়েছে অভ্র নীল………!

ভালোবাসার অপর নাম অভ্র নীল…..!
.
.
.
(ওদেরকে ওদের মতো রোমান্স করতে দিন…! ডিস্টার্ব করবেন না কেউ….. এখন চটপট কমেন্ট করে বলো কেমন হয়েছে কেমন লেগেছে তোমাদের কাছে অভ্র নীল এর স্টোরি…..)
.
.
.
#চলবে …..?

#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_27
______
পরেরদিন সকালে.!
জানালার কাচ ভেদ করে মিষ্টি রোদের দুষ্ট আলো রুমের মধ্যে উঁকি মারছে…!
নীল চোখ খুলে নিজের অভ্রর লোমহীন বুকে উপস্থাপন করলে…!
রোদের আলো অভ্রর মুখের উপর পরছে…!
অভ্রর বড় বড় চুল গুলো কপালের উপর পরে আছে নীল এক হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে অভ্রর কপালে আলতো করে একটা চুমু একে দিয়ে বেড থেকে উঠে গেলো…!
আলমারী থেকে ব্লাক একটা শাড়ি বের করে সোপার উপর রেখে ব্লাউজ আর পেটিকোট নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো…!
৩০মিনিট পর বেরিয়ে আসলো….!
রুমে এসে শাড়িটা সুন্দর করে পরে নিলো।
ভেজা চুল গুলো হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নিচ্ছে…!
চুল শুকাতে শুকাতে নীল এর চোখ পরল অভ্রর উপর অভ্র নড়াচড়া করছে। কারণ সূর্যের আলো এখন একটু বেশি.!
যা অভ্রর ঘুমের ডিস্টার্ব করছে সারারাত অনেক পরিশ্রম করছে…!
নীল সেটা লক্ষ্য করে জানালার সামনে গিয়ে পর্দা লাগিয়ে দেয়। এখন অভ্র আর নড়ছে না।
নীল দুই মিনিট পর আবারও পর্দা সড়িয়ে দেয়।
অভ্র আবারও নড়ে উঠে। নীল তা দেখে শব্দ করে হেসে দেয়। অভ্র মিটমিট করে চোখ খুলে..!
অভ্র- নীল জ্বালাচ্ছো কেনো?
নীল- তুমিই স্টার্ট দিয়েছো…?
অভ্র- মানে?
নীল- পুরো রাত আমাকে জ্বালাইছো তার শোধ নিচ্ছি….!
অভ্র- আচ্ছা! তো কি এখন আবারও জ্বালাবো নাকি?
নীল- এই না..!
অভ্র- মিষ্টি খাবো….! বেডের উপর বসে বসে।
নীল- আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি কিচেন থেকে মিষ্টি নিয়ে আসছি…!
অভ্র- আমার নীলপরী ওই মিষ্টি না। অন্য মিষ্টি খাবো।
নীল- কোন মিষ্টি?
অভ্র- তোমার ঠোঁটের মিষ্টি….!
নীল- ইশশশ মামা বাড়ি আবদার নাকি হুহহহহহ আমার ঠোঁট এমনিতেই রাতে কামড় দিয়ে কেটে ফেলছো…!
অভ্র- মামার কাছে নয়, বউয়ের কাছে আবদার…! রাতে কামড় দিছি এখন চুমু দিয়ে শোধ করে দিচ্ছি।
নীল- নাহ…!
অভ্র– হুমমম…!
তারপর অভ্র বেড থেকে নেমে গিয়ে নীল কে জরিয়ে ধরে। নীল এর ঘাড়ে গলায় কপালে গালে চুমু দেয়।
নীল- অনেক হইছে সরো…!
অভ্র নীল এর গালে হাত রেখে নীল এর ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে করে নিলো…!
অভ্র নীলকে ছাড়তেই নীল দৌঁড়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে…!
পেছনে তাকিয়ে দৌঁড়াচ্ছিলো, অভ্র আসছে কিনা দেখছে অভ্র রুমে দাঁড়িয়ে পেটে হাত দিয়ে হাসছে।
নীল দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এসে তোয়ার সাথে ধাক্কা লাগে…!
তোয়া ঠাসস করে ফ্লোরে পরে যায়।
তোয়া- ওরে বাবা গো ওরে মা গো ওরে দাদা দাদী গো আমার পাছা গেলো গো থুক্কু থুক্কু আমার মাজা গেলো গো….!
নীল- সরি সরি তোয়া আমি দেখতে পাইনি তোমাকে.!
তোয়া- ষাঁড়ের মতো দৌঁড়ালে দেখবা কিভাবে আমার মতো আসতো একটা মানুষকে নাকি দেখে নাই আল্লাহ গো মাজা ডা ভাইঙ্গাই গেছে মনে হয়।
নীল- তোয়া…….! হাত ধরো আর উঠো….!
তোয়া নীল এর হাত ধরে উঠলো আর দু’জনেই হাসতে হাসতে নিচে চলে আসলো…!
নীল তোয়া কিচেনে গিয়ে মিসেস চৌধুরীকে হেল্প করছে ব্রেকফাস্ট বানাতে..!

ব্রেকফাস্টের জন্য সবাই ডাইনিং টেবিলে এসে হাজির….!

মিসেস চৌধুরী, মিস্টার চৌধুরী, তোয়া ওরা কনফিউজড। কালকে অভ্রর সাথে আজকের অভ্রর কোনো মিলই নেই। এত খুশি কেনো অভ্র নীল কিম
এমন করেছে।
মিসেস চৌধুরী- বাবা তুই এত খুশি যে?
অভ্র- খুশি হওয়ার মতোই কথা মা…. আমি আমার সত্যি কারের পরীকে খুঁজে পেয়েছি…!
মিস্টার চৌধুরী- আবার….
তোয়া- কে সে?
অভ্র- এবার রিয়েল।।।।
মিসেস চৌধুরী- কে?
অভ্র নীল এর শক্ত করে ধরে…!
অভ্র- আমার নীল আমার ছোটোবেলার সেই পরী যাকে আমি খুঁজেছি আর এই পরীকেই আল্লাহ আমাকে পাইয়ে দিয়েছেন।
মিসেস চৌধুরী। মিস্টার চৌধুরী তোয়া। কিছুটা অবাক হয় পরে অনেক খুশি হয়। কারণ ওনারা দেখেছে অভ্রকে পরীকে খুঁজতে।

মিসেস চৌধুরী- তোর ছোটো বেলার ভালোবাসা তাই তুই নীলকে প্রথম দেখাতেই ভালোবাসা অনুভব করেছিলি কিন্তু আসল কানেকশন টা বুঝতে পারিসনি। এখন বুঝলি তো কেনো নীল কে তুই এত ভালোবেসে ফেলেছিলি প্রথম দেখাতেই….!
অভ্র- হুমমমমম……
বলেই নীলকে চোখ টিপ মারলো….!
নীল তৎক্ষনাৎ চোখ সরিয়ে নিলো।
নীল- লুচ্চা একটা…!
অভ্র নীলের কথা শুনে শব্দ করে হাসি দিলো।

চৌধুরী হাউজ আগের মতো হাসি খুশিতে ভড়ে উঠলো…..!

অভ্র নীলকে কলেজ ড্রপ করে দেয় দেন অফিস চলে যায়।

কলেজ থেকে নীল ড্রাইবার এর সাথে বাড়ি ফিরে আসে…!
সারাদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে অভ্র নীলকে কল দিয়েছে নীল এর খোঁজ নিয়েছে…..!

রাতে ডিনার কমপ্লিট করে সবাই রুমে চলে যায়…!

নীল আয়নার সামনে বসে চুলে চিরুনি করছিলো।
অভ্র সোফাতে বসে ল্যাবটপে কাজ করছিলো।
নীল- উফফ এই চুলগুলো আমি একদিন ঠিক কেটে ফেলবো।
অভ্র নীল এর কথা শুনে ল্যাবটপ থেকে চোখ সরিয়ে নীল এর দিকে তাকালো।
অভ্র- কেনো চুল তোমাকে কি করছে?
নীল- কি করছে মানে কি এত বড় বড় চুল কি সামলানো যায় না-কি আমার বিরক্ত লাগে আমি জাস্ট কেটে কোমড় পর্যন্ত করে ফেলবো। (নীল এর চুল হাটুর থেকে আর একটু নিচ পর্যন্ত লম্বা + বড় আমার মতো হিহিহি)
অভ্র- খবরদার চুলে হাত দিবা না। বলেই ল্যাপটব বন্ধ করে উঠে গিয়ে পেছন থেকে নীল এর চুলে মুখ গুজে দেয় অভ্র নিজের নাক মুখ নীল এর চুলের সাথে ঘোসাঘাসি করতাছে।
নীল- কি করছো?
অভ্র- তুমি জানো না তোমার চুল আমার অনেক প্রিয় এই চুল কখনো কাটার কথা চিন্তাও করবে না।
আজ থেকে তোমার চুলের দায়িত্ব আমার আমি তেল দিয়ে দিবো আঁচড়ে দিবো বেনি করে দিবো। বুড়ো হয়ে গেলেও তোমার চুল আমিই আঁচড়ে দিবো. কি চলবে নীলপরী?
নীল- শুধু চলবে না দৌঁড়াবে ও…! হিহিহি..!
অভ্র- দরকার হলে গোসল করার আগে চুলে স্যাম্পু ও করে দেবো। (আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে)
নীল- না থাক ওইটা আমিই করতে পারবো.!
বলে দু’জনেই হাসতে শুরু করে। অভ্র হাসি থামিয়ে নীল এর টোল পরা গালে আলতো করে একটা চুমু দিলো।
নীল আয়নাতে অভ্রকে দেখছে।

অভ্র তেলের বোতল হাতে নিয়ে তেল হাতের তালুতে ঢেলে নীল এর চুলে দিয়ে দিচ্ছে…!
নীল অন্য মনস্ক হয়ে অভ্রকে দেখছে।
অভ্র নীল এর সম্পূর্ণ চুলে তেল দিয়ে দেয় দেন চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে বেনি করে দেয়।
অভ্র- কমপ্লিট….!
অভ্রর কথায় নীল এর ধ্যান ভাঙ্গে নীল আয়নাতে নিজেকে দেখে চিৎকার দিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
নীল- অভ্র এই কি করছো?
অভ্র- কি করছি?
নীল- পেত্নী পেত্নী লাগছে আমাকে এত তেল দিছো কেন চুল চিপচিপা করে ফেলছো। এত তেল কেউ দেয় পুরো বোতলের তেল সব দিয়ে দিছো নাকি?
অসভ্য…….

অভ্র- কোই পেত্নী লাগছে খুব সুন্দর লাগছে পুরো পরীর মতো। আমার নীলপরী আমার কাছে সুন্দর লাগলেই হবে আর তুমি পেত্নী হলেও আমার কাছে বিশ্বসুন্দরী…..
আর হ্যাঁ আমি ইচ্ছে করেই তেল বেশি দিয়েছি কারণ তুমি যখন কলেজ যাও ছেলেরা তোমাকে এভাবে ওভাবে দেখে যেটা আমার সহ্য হয় না। আর এইভাবে গেলে কেউ তোমার দিকে তাকাবে না। তো আমি একলাই দেখতে চাই আমার বউকে অন্য কেউ কেনো দেখবে।
বলেই নীল এর কপালে একটা চুমু দেয়।

নীল- এই সব না করে একটা বোরকা কিনে দাও বোরকা পরে গেলে আর কেউই দেখবে না।
অভ্র- গুড আইডিয়া! এটা তো আমি ভেবেই দেখিনি। কালই কিনে আনবো বোরকা!
নীল- কিহহহহহ…?

অভ্র- হুম! আমি চাই আমার নীল শুধু আমার সামনেই সুন্দর লাগুন আর কারো সামনে না। বলেই নীল এর ঠোঁটে কিস করে বসলো….!
তারপর আর কি রুমের লাইট অফ হয়ে গেলো।

আর এভাবেই চলছে অভ্র নীল এর ভালোবাসা খুনসুটি ভালোবাসা রাগ অভিমান দুষ্টামিতে ভরপুর…!

১ মাস পর……!
.
.
.
#চলবে …..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here