অভ্র_নীল,২৮,২৯

0
929

#অভ্র_নীল,২৮,২৯
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_28
______
১ মাস পর চৌধুরী হাউজ.!
বিকেল ৩ টা বাজে তোয়া একা একা সাদে বসে আছে….!
অভ্র আর নীল তোয়ার রুমে যায় কিন্তু সেখানে তোয়া নেই।
নীল হল রুমে এসে মিসেস চৌধুরী কে জিজ্ঞেস করে তোয়া কোথায়।
মিসেস চৌধুরী বলতে পারেননা।
একটা সার্ভেন্ট বলে তোয়া কে সাদে যেতে দেখছে।

তারপর অভ্র ও নীল সাদে চলে এলো।
এসে দেখে তোয়ার মুড অফ মুখটা একটুখানি করে চুপচাপ বসে আছে।
নীল- তোয়া কি হয়েছে তোমার?
অভ্র- আমার বোনের কি হইছে এত চুপচাপ কেন? হাতে বই নিয়ে বসে আছিস কিন্তু পড়াতে কোনো মন নেই….!
তোয়া- আমার কিছু হয়নি। তুই কি ভুলে গেছিস?
অভ্র- কি?
নীল- কি ভুলে যাওয়ার কথা তুমি বলছো তোয়া?
তোয়া- মানে ভুলে গেছিস তাইতো?
অভ্র- কি ভু্লে যাওয়ার কথা বলছিস?
তোয়া- ২দিন পর আব্বু আম্মুর Anniversary……..!
অভ্র– অত্তেরী….. ভুলে গেছিলাম।
নীল- anniversary?
তোয়া- হুম….!
নীল- তো তোমাদের প্লেন কি….?
অভ্র- কিসের প্লেন?
তোয়া- কোনো প্লেনই নাই….!
আম্মু আব্বু নিজেদের Birthday ই সেলেব্রেট করে না আর কোই Anniversary….!
নীল- মা বাবা-রা কখনোই নিজেদের কথা চিন্তা করে না। উনারা উনাদের কোনো কিছুই সেলেব্রেট করে না কিন্তু তোমদের টা কিন্তু ঠিকই করে কারণ উনারা মা বাবা নিজেদের আগে সন্তানের কথা চিন্তা করেন।
আর এই একটা সুযোগ আমাদের তিনজনের এক হয়ে উনাদের জন্য কিছু করা!
অভ্র- কি করতে চাচ্ছো তুমি? ভ্রু কুঁচকে তাকালো নীল এর দিকো।
তোয়া- কি করবো আমরা কিই বা করতে পারি আমরা?
নীল- সারপ্রাইজ পার্টি দিতে পারি আমরা।
সব আমি সামলে নিবো। তোয়া তোমার কিছু হেল্প লাগবে সেটা তুমি করলেই হবে আর অভ্র তুমি যাদের যাদের ইনবাইট করতে চাও তাদের এখনই ইনবাইট করো।
বাকি সব দায়িত্ব আমার।

অভ্র- পারপ্রাইজ পার্টির জন্য মা বাবাকে বাড়ির বাহিরে যেতে হবে আর আমরা উনাদের কোথাও যেতে বললে যাবে তো নাই আরও একশো টা প্রশ্ন করবে!

নীল- সেটারও প্লেন আছে আমার কাছে তারজন্য আমাদের আজকেই আমাদের বাড়ি যেতে হবে।

অভ্র- তা না হয় যাওয়া যাবে তবে তুমি বলো তো কি করতে চাচ্ছো….!

নীল- আগে আগে দেখো হতা হে কেয়া…!
আর হে তিয়া তিথি স্বপ্না কেও বলো দিও..!

অভ্র- সেটা এখনই বলে দিচ্ছি…!
আমি শুধু ইনবাইট করবো তার পরে আর কিছু আমাকে করতে বলবে না আমি পারবো না।
নীল- কাম চোর….
অভ্র- কি বললে?
নীল- কিছু না।

অভ্র আর কিছু না বলে ফোন বের করে তিয়া তিথি স্বপ্নাকে গ্রুপ কল দিলো….!

আর বলে দিলো ওদের আসতেই হবে…! ওরাও আসবে বলে জানায়.!

১ঘন্টা পর….

অভ্র-
হল রুমে মিসেস ও মিস্টার চৌধুরী কে জানায় ওরা তিনজন আজকের জন্য সরকার হাউজ ঘুরতে যেতে চায়। তারাও আর বাধা দেয় না। কারণ নীল আগের বার গিয়েও ফিরে আসে আর অনেক দিন ধরে যায়ও না….!

নীল তোয়া রেডি হয়ে নিচে চলে আসে…!

তোয়া নীল অভ্র,, মিসেস ও মিস্টার চৌধুরীর কাছে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরলো…!

অভ্র ড্রাইব করছে… নীল পাশেই বসে ফোন টিপছে। তোয়া পেছনে বসেও ফোন টিপছে..!

তোয়া- ভাইয়া ভাইয়া গাড়ি থামা……!
অভ্র চটজলদি ব্রেক করে।
অভ্র- কি হয়েছে?
তোয়া- আরে ভাই কিচ্ছু হয় নাই ফুচকা খাবো..!
অভ্র- তুই ফুচকা খাওয়ার জন্য গাড়ি থামাতে বলছিস এভাবে আর আমি ভাবছি অন্য কিছু,,, তোকে আর ওই তিন রাক্ষসী কে নিয়ে কোথাও বাইরে যেতেও ইচ্ছে করে না। রাস্তায় যে ছাইপাশ দেখিস সেটার জন্যই পাগল হয়ে যাস।
নীল- ওই বলতে কোন রাক্ষসী?
তোয়া- বুঝো নাই ভাবি ভাইয়া তিয়া তিথি স্বপ্না আপুদের কথা বলছে।
নীল- ওওও।
অভ্র- হ্যাঁ হ্যাঁ ওদেরই…! খেতে হবে না,, অনেকের বাড়ি গিয়ে ইনবাইট করতে হবে লেট হয়ে যাবে।
তোয়া- না আমি খাবোই না খেলে যাবো না।
অভ্র- কি পেয়েছিস যে তোরা এই ফুচকার মধ্যে।
নীল- আমি আইসক্রিম খাবো।
অভ্র- এই ঠান্ডার মধ্যে কোনো আইসক্রিম খাওয়া চলবে না ঠান্ডা লেগে যাবে। তার থেকে ফুচকাই ভালো।

তিন জনেই গাড়ি থেকে নেমে রাস্তার পাশের ফুচকার দোকানে গেলো।
তোয়া- মামা ২প্লেট ফুচকা দাও তো ঝাল করে।
অভ্র তোয়ার কান মোলা দিয়ে।
অভ্র- তোর কোন জন্মের মামা?
তোয়া- ভাইয়া হাত সরা!

ওইদিকে আরেক কাস্টমার- ভাইয়া ৩ প্লেট ফুচকা দাও তো।
আরেক কাস্টমার – আমাকে আগে ২প্লেট ফুচকা দাও।

অভ্র- আমরা আগে বলছি। আড়াল থেকে!
কেউ কাউকে দেখছে না।
প্রথম কাস্টমার- আমরা আগে বলছি।
দ্বিতীয় কাস্টমার- আমি বলছি আগে আমাকে দিবো।

তিনজনেই ঘুরে তিনজনের মুখো মুখি হয়।
অভ্র- আকাশ তুই.
শুভ- অভ্র তুই।
আকাশ- শুভ তুই?

#চলবে …..?

#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_29
______
অভ্র- আকাশ তুই.
শুভ- অভ্র তুই।
আকাশ- শুভ তুই?
অভ্র- তোরা কবে থেকে ফুচকা খাওয়া শুরু করলি?
শুভ- আমি কি ফুচকা খাই নাকি? বউ আর শালীকে নিয়া আসছি!
আকাশ- আর বলিস না ফুচকা পাগলী বউকে নিয়া আসছি, সাথে চাচতো বোন।
আকাশ, শুভ- আর তুই?
অভ্র- ওই যে আমার রাক্ষসী বোন ওর জন্য আসতে হলো।
তারপর সবাই এক সাথে বসেই ফুচকা খায় + আড্ডা দেয়। (আমি তো ফুচকা খাই না তাই আমার গল্পের নায়িকা গো খাওয়াই,, সময় ও সুযোগ পেলে আমার পাঠক ও পাঠিকাদের কেও খাওয়াবো! ইন শা আল্লাহ)

অভ্র ওদের সবাইকে ইনবাইট করে দেয়। টাইমলি চলে যাওয়ার জন্য,, ওরাও যাবে কথা দেয় তারপর আবার যে যার মতো চলে আসে
নীল গাড়িতে বসে কাজলকে কল দেয়। কাজল এর শশুড় বাড়ি যাচ্ছে ইনফর্ম করার জন্য,, কাজল আর শাশুড়ী ছাড়া কেউ নেই। তন্ময় ও ছুটি শেষ হতেই চলে যায়। বাড়িতে শুধু কাজল আর ওর শাশুড়ী…!

অভ্র নীল তোয়া, এসে উনাদের দু’জন কে ইনবাইট করে চলে যায়।
যাওয়ার পথে অনেক জনকেই অভ্র ইনবাইট করে যায়। যাদের ইনবাইট না করলেই নয় তাদের কেই করেছে। এখন পালা নীল দের বাড়ি যাওয়া।
অভ্র বাজারে গাড়ি থামিয়ে হরেকরকমের ফল কিনে নেয় সাথে মিষ্টি ও কিনে।

সরকার বাড়ি…..!

গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
অভ্রর বিরক্তি লাগছে কারণ ওর হাতে সব ধরিয়ে দিয়েছে ওরা ফল গুলো বা মিষ্টি গুলো নিলো না।
অভ্র- মান ইজ্জত পাইলাম না। কেউ দেখলে কি বলবে নতুন জামাই আর হাতে…..!

নীল এক বার কলিং বেল বাজাতেই একজন মেড সার্ভেন্ট এসে দরজা খুলে দেয়।
আর ওরাও ভেতরে ডুকে পরে।
নীল- খালা তোমাদের জামাইয়ের হাত থেকে ওইগুলো নিয়ে কিচেনে রেখে দাও।
সার্ভেন্ট- জি!
নীল- আম্মু,,,,,,,, আব্বু,,,,৷৷ কোথায় তোমরা!
মেয়ের ডাক শুনে রুম থেকে দৌঁড়িয়ে বেরিয়ে আসে মিসেস ও মিস্টার সরকার।
সিঁড়ি দিয়ে নামছে….
নীল- আম্মু আব্বু বলেই দৌঁড়ে কাছে গেলো।
উনারাও সিঁড়ি থেকে নেমেই মেয়েকে জরিয়ে ধরে।

কতদিন পর আবারও দেখলেন মেয়েকে।

১০ মিনিট পর সবাই হল রুমের সোফায় বসলে।

নীল ওদের হঠাৎ করে না আসার কারণ বলে আর নীল এর প্লেন উনাদের ভালো ভাবে বুঝিয়ে দেয়।

মিসেস ও মিস্টার সরকার এই প্লেনে ওদের হেল্প করবে জানায়।
তারপর সবাই এক সাথে ডাইনিং টেবিলে বসে খেয়ে নেয়।

বেড রুম…….

নীল ওয়াশরুম থেকে মাত্র বেরিয়েছে।
অভ্র ফোন গাটাগাটি করছিলো।
হঠাৎ নীল এর দিকে চোখ যেতেই অভ্র থমকে যায়, জেনো ওর চোখ সরাতেই পারছে না।
নীল অভ্রর লোং টি-শার্ট পরছে হাঁটু থেকে কিছু টা উপরে…ও!
অভ্র বেড থেকে নেমে নীল এর কাছে যায়।
অভ্র- কি পাগল করার ধান্দা আছে না-কি?
নীল- হুম হুম,,,, অবশ্যই সেটাই করতে চাই। বলেই অভ্রর পায়ের উপর পা দিয়ে দাঁড়ালো। অভ্রর দুই ঘাড়ের উপর দুই টা হাত রাখে।
অভ্র- আজ তো মনে হচ্ছে আমার নীলপরী বেশ রোমান্টিক মুডে আছে…! নীক এর কোমড় চেপে ধরে….
নীল অভ্রর চুল শক্ত করে ধরে।
তারপর দু’জনেই দু’জনকে কিস করতে শুরু করে।
রুমের লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পরে। আর আজ এভাবেই হয় অভ্র নীল এর দ্বিতীয় বাসর পূরণ হলো।

পরেরদিন সকালে…!
ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসে সবাই। ব্রেকফাস্ট খেয়েই যেতে হবে।

.
.
.
#চলবে …..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here