#অভ্র_নীল,৩০,৩১
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_৩০
______
পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট শেষ করেই অভ্র নীল আর তোয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
এখন ও অনেক মানুষদের ইনবাইট করতে হবে সাথে কালকের সব Arrangement ও তো করতে হবে।
সবাইকে ইনবাইট করতে করতে দুপুর হয়ে যায়।
অভ্র নীল তোয়া একটা নামি-দামি রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করার জন্য আসে।
ও যার যেটা পছন্দ সেটাই অর্ডার দেয়…!
খাওয়ার মধ্যে মধ্যে অভ্র নীলকে একটু খাইয়ে দিচ্ছে
নীল ও অভ্র কে খাইয়ে দিচ্ছে।
তোয়া- আমি যে এখানে আছি তা হয়তো কারো চোখেই পরছে না। আমাকেও তো একটু খাওয়াই দিতে পারে…!
নীল- ওওওও…… হা করো…..!
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে. …!
ওরা ডেকোরেশন এর ফুল এর খাবার দাবারের সব কিছুর ব্যবস্থা করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসে…!
বাড়ি এসে পুরো সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত গল্প ও আড্ডা দেয়। রাতে ডিনার করে সবাই ঘুমাতে চলে যায় আগামীকাল শুক্রবার….!
সবার ছুটি সবাই বাড়িতেই থাকবে।
নীল রুমে আসতেই অভ্র নীলকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে,,, পিঠের চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ে আলতো করে একটা চুমু একে দেয়।
পরে নীলকে আয়নার সামনে বসিয়ে চুলে চিরুনি করে বেনি পাকিয়ে দেয়।
সব শেষে অভ্র নীল এর কপালে চুমু একে দেয়।
নীল এর একটু শারীরিক সমস্যা হচ্ছে চলতে ফিরতে সেটা অভ্র ভালো করেই বুঝতে পারছে।
নীল অভ্রর কাছে যেতে একটু ভয় পাচ্ছে।
অভ্র- নীলপরী ভয় পেয়ো না আজ কিছু করবো না শুধু তোমাকে বুকের সাথে জরিয়ে ধরে ঘুমাবো।
নীল সন্দেহের চোখে অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ এ কোথা বললো কেনো?আমি ভয় পাচ্ছি ও বুঝলো কিভাবে?
অভ্র- কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি! আর তোমার যে অসুবিধা হচ্ছে সেটাও আমি খুব বুঝতে পারছি। তাই আজকের জন্য মাফ করে দিলাম এখন তারাতাড়ি আসো আমি তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমাবো…!
নীল- হুহহহহহহহহ……..!
তারপর নীল বেডে গিয়ে শুয়ে পরলো অভ্র নীলকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলো।
দু’জনেই ঘুমিয়ে গেলো।
পরেরদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তোয়া আর নীল কিচেনে মিসেস চৌধুরী কে হেল্প করছেন। আর পাম মারছে এটা সেটা বুঝাচ্ছে।
মিসেস চৌধুরী সাধারণ মানুষ তাই উনার ওদের এমন ব্যবহারের মধ্যে কোনো ঝামেলার গন্ধ ও পায়নি।
দুপুরে সবাই লাঞ্চ করে সবে মাত্র বসেছে। ওমনি কে জেনো কলিংবেল বাজাচ্ছে।
নীল- সিউর আব্বু আম্মু চলে আসছে…! ( মনে মনে)
মিস্টার ও মিসেস সরকার হল রুমে এসেই সালাম দিলো সবাই সালামের উত্তর নিলো সবাই বেশ খুশি বেয়ান বিয়াই এসেছে বলে কথা।
সবাই মিলে আরও বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দিলো।
নীল- বার বার চোখ দিয়ে ইশারা করছে উনাদের বাহিরে যাওয়ার কথা এদিকে টাইম ও হয়ে আসছে অর্ডার ডেলিভারির।
মিস্টার সরকার- বেয়াই বেয়ান একটা কথা বলবো প্লিজ আপনারা কেউ আমাদের ফিরিয়ে দেবেন না৷
মিস্টার চৌধুরী- আচ্ছা ঠিক আছে বলেন। (হাসতে হাসতে বললেন)
মিস্টার সরকার- সিনেমা হলে যাবো আমরা দুই বেয়াই বেয়ান সিনেমা দেখবো পরে ঘুরবো ঘারবো পরে বাড়ি আসবো.!
মিস্টার চৌধুরী- ঠিক আছে। তা কখন যেতে হবে?
মিসেস সরকার- বেয়াই সাব এখনই…!
মিসেস চৌধুরী- এখনই? তাহলে তো রেডি হতে হবে.!
নীল- হ্যাঁ যাও যাও রেডি হয়ে নাও…! আমরা বাড়ির খেয়াল রাখবো।
মিসেস চৌধুরী- তোয়া আর তোরাও চল আমাদের সাথে..!
তোয়া- তাহলে আমি রেডি হয়ে আসছি।
নীল সাথে সাথে তোয়ার পায়ের উপর পা দিয়ে পারা দিলো।
তোয়া- আহহহ….!
মিস্টার চৌধুরী- কি হইছে?
নীল- কিচ্ছু হয় নাই কিচ্ছু হবে ও না। তোমরা যাও আমরা কোথাও যাবো না। আমরা বাড়িতেই থাকবো তোমরা গিয়ে ঘুরে আসো তা ছাড়া কোথাও তো যাও ও না। তো যাও যাও তারাতাড়ি যাও…..!
অভ্র- নীল ঠিক বলেছে। তোমরা যাও…!
মিসেস ও মিস্টার চৌধুরী রেডি হয়ে উনাদের সাথে বেরিয়ে পরলেন।
উনারা যাওয়ার ২মিনিট পরেই ডেলিভারি দিতে গাড়ি চলে আসছে।
নীল- আল্লাহ বাঁচাইছে! আর ২মিনিট আগে গাড়ি আসলে প্লেন সব চপাট হয়ে যেতো..!
বলেই তোয়ার মাথায় টোকা মারে।
তোয়া- ভাবি মারলা কেন?
নীল- বাহিরে যাওয়ার কথা শুনলেই লাফালাফি করতে মন চায়। আমিও যাবো রেডি হয়ো আসছি বাড়িতে এত কাজ ভুলে গেছো নাকি…?
তোয়া- সরি ভাবি ভুলে গেছিলাম।
ততক্ষণে তিয়া তিথি স্বপ্নাদের ও গাড়ি চলে আসলো।
পেছনে আরও দুইটা গাড়ি..! যাহির হে.. শুভ আর আকাশের গাড়ি…!
তিয়া, তিথি, স্বপ্না, তানজু, তানিয়া, কাজল, আকাশ ও শুভ… গাড়ি থেকে নেমে সোজা হেঁটে আসছে।
ফ্যামিলি সন্ধ্যার পর আসবে পার্টি শুরু হলে।।
আর এরা সব কিছু সাজাতে হেল্প করতে আসছে তাছাড়া ডেকোরেশনের লোক তো আছেই।
ওরা কামের না নামের…!
তানজু, তানিয়া, কাজল এসে নীলকে জরিয়ে ধরে।
শুভ আর আকাশ অভ্রকে.!
তিয়া তিথি স্বপ্না তোয়াকে।
নীল- এমন ভাব করছিস মনে হচ্ছে কত বছর পর দেখা হলো, কালকেও তো দেখা হইছে।
তানিয়া, কাজল- তুই কেমন জানি হইয়া গেছোস রে।
তানজু- অভ্র জরিয়ে ধরে তো এখন তাই আমাদের ধরা ওর পছন্দ হলো না।
তানিয়া, কাজল- ওওও তাই নাকি?
নীল- মাইর খাবি কিন্তু তোরা এখন।
ডেকোরেশনের লোক হল রুম সাজাচ্ছে সাঁঝবাতি + ফুল দিয়ে। স্টেজ সম্পূর্ণ ফুল দিয়ে সাজানো হবে। যখন দরজা দিয়ে ঢুকবে উনাদের মাথার উপর গোলাপের পাপড়ি ফালানো হবে।
সব কিছু নীল এর প্লেন মতোই হচ্ছে.!
কেক সন্ধ্যা ৬টায় ডেলিভারি করা হবে.!
৭টায় গেস্টরা সব চলে আসবে.!
৮টা বাজে মিসেস ও মিস্টাররা চলে আসবে।
যা করার এই সাড়ে ৬টার মধ্যে করে রেডি হয়ে থাকতে হবে।
৩ঘন্টা পর প্রায় সব কাজ শেষ সবাই মিলে টুকিটাকি হেল্প করেছে।
নীল বসে বসে গোলাপের পাপড়ি ছিড়তেছে….
.
.
.
#চলবে …..?
.
“হ্যাপি রিডিং”………
#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_৩১
______
নীল বসে বসে গোলাপের পাপড়ি ছিড়তেছে….
অভ্র পাশেই টেবিলের উপর বসে হাতে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে একটা একটা পাপড়ি ছিড়ছে আর নীল এর দিকে ছুড়ে মারছে।
গোলাপের পাপড়ি নীল এর ঠোঁটে গালে চোখে চুলে গিয়ে পরছে।
নীল- অভ্র দুষ্টামি করছো কেনো?
অভ্র- কি করলাম আমি?
নীল- ফুল নষ্ট করছো তুমি। আর ফুল তো আরও আসছিলো সেগুলো কোই আমার কেনো জানি কম কম লাগছে আরও দু’জন ডেকোরেশনের লোক কোই?
অভ্র- কি চোখ রে বাবা! (মনে মনে)
অভ্র- ফুল সব এখানেই আছে আর ডেকোরেশনের লোক হয়তো আছেই এখানে ওখানে ব্যস্ত…!
বলে আবারও ফুলের পাপড়ি ছুড়তে লাগলো অভ্র.
নীল- অভ্রর বাচ্চা কুত্তা দাঁড়া….!
অভ্র টেবিল থেকে লাফ দিয়ে নেমে দিলো দৌঁড়…!
নীল ও দিলো দৌঁড়.!
দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে নীল অভ্রর পেছন থেকে শার্ট টেনে ধরে.!
অভ্র পরে যায় সাথে নীল ও অভ্রর উপর পরে যায়..!
বাকিরা সবাই ওদের এতক্ষণ দৌঁড়াতে দেখে বেশ মজা নিচ্ছিলো যেই পরলো দৌঁড়ে এসে ওদের উপর গোলাপের পাপড়ি ছিটাতে লাগলো…! পুরাই ফিল্মি স্টাইল হয়ে গেলো…!
নীল অভ্র দুজনেই দু’জনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দুনিয়া দারির কথা ওরা ভুলেই গেছে।
বাকিরা ওদের দেখে হাসছে, ওদের হাসির শব্দ শুনে নীল অভ্রের ধ্যান ভেঙে যায়। দু’জনেই উঠে দাঁড়ায়..!
অভ্র- তোমরা সবাই গিয়ে রেডি হয়ে নাও এদিকে বাকি কাজ আমি দেখছি।
নীল- তুমি রেডি হবে না।
অভ্র- তুমি আর তোমরা সবাই আগে রেডি হতে যাও আমি অন্য রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে নেবো আমার অত টাইম লাগবে না শুধু একবার ড্রেস নিতে রুমে যেতে হবে। এখন যাও তোমরা ৬টা বাজে প্রায়।
সবাই উপরে চলে গেলো রেডি হতে..!
তিয়া তিথি স্বপ্না তোয়ার সাথে তোয়ার রুমে চলে গেলো।
গেস্ট রুমে তানজু তানিয়া কাজল.!
তার পাশের রুমে আকাশ আর শুভ…!
শুভ একজন স্পেশাল গেস্ট কে ইনবাইট করেছে সে সন্ধ্যার পর আসবে।
নীল রুমে ডুকেই বেডের উপর একটা বাক্স দেখে অবাক….
বাক্স টা হাতে নিয়ে দেখলো লেখা- আজকের সন্ধ্যা তোমার জন্য…..!
নীল- মুচকি হেঁসে বাক্সটা খুললো.!
নীল- ওয়াওওওওওও…..!
গরজিয়াস একটা হোয়াইট গাউন…..
তার উপরে ছোটো ছোটো বাটারফ্লাই ও ফুল পিংক কালারের খুব সুন্দর একটা গাউন…!
নীল গাউন টা বেডের উপর রেখে আলমারীর ভেতর থেকে একটা নীল বাক্স বের করে সোফার টেবিলের উপর রেখে ওয়াশরুমে চলে যায়।
অভ্র ২০মিনিট পর রুমে আসে..!
আর বাক্সটা দেখে, কারণ এটা অভ্র আনেনি।
অভ্র বাক্সটা হাতে নিয়ে দেখলো লেখা- আমার কিউট ও হ্যান্ডসাম বরের জন্য ছোট্ট উপহার…!
অভ্র- নীললললল…. বলে বাক্সটা হাতে নিয়ে খুলে দেখলো। পিংক কালারের শার্ট, হোয়াইট কালারের ব্লেজার ও প্যান্ট সাথে ব্লাক একটা ঘড়ি ও আছে..!
অভ্র- আমাদের চয়েজ ও যে সেম জানা ছিলো না তো নীল পরী…! বলে হেঁসে দিলো।
অভ্র ৫মিনিটে রেডি হয়ে নিলো..! চুলগুলো তে জেল দিয়েছে।
হাতে ঘড়ি পরে নিয়ে ব্লেজার পরে নেয় এখন একদম রেডি..! নীল এর এখনো কোনো পাত্তা নেই।
অভ্র আয়নাতে কিছুক্ষণ নিজেকে দেখে রুম থেকে বেরিয়ে সোজা সাদে চলে গেলো। সাদ থেকে সোজা নিচে..!
নীল ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো…!
নীল- পেছনের চেইন কিভাবে লাগাবো আমি তো ছুঁতেই পারছি না। উফফ উফফ…
এরই মধ্যে,,
-কিরে তোর হলো?
নীল পেছনে ঘুরে!
নীল- আল্লাহ তুই আসছিস আয় প্লিজ ভেতরে আয়.!
কাজল- হুম বল!
নীল- আমার চেইনটা লাগিয়ে দে না!
কাজল- দাঁড়া দুলাভাই কে ডাক দিতেছি।
নীল- খাবি এক চড় তারাতাড়ি লাগা!
কাজল- লাগাচ্ছি লাগাচ্ছি।
নীল হালকা সেজেছে, লাল লিপস্টিক চোখে কাজ
.
.
.
#চলবে …..?
.
“হ্যাপি রিডিং”………