#অভ্র_নীল (সিজন-০২),০৫,০৬,০৭
#sharmin_akter_borsha
#পর্ব_০৫
এবার চিৎকার দেওয়ার কারণ পায়ে হচট খেয়েছে সাথে কোমড়ে ব্যাথা পেয়েছে হাটতে পারবে না।
তবুও জোর করে হাঁটতে চেষ্টা করলে নীল পরে যেতে নিলেই অভ্র পেছন থেকে নীলকে ধরে ফেলে আর সাথে সাথে কোলে তুলে নেয়। নীল চোখ দুটো বাহির করে অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে সেদিকে অভ্রর কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। পেছনে তানজু তানিয়া কাজল, আকাশ শুভ তন্ময় হা করে তাকিয়ে আছে অভ্রর দিকে অভ্র যে এভাবে নীলকে কোলে তুলে নেবে কেউ ভাবতেই পারেনি। রাস্তার এক পাশে ধান ক্ষেত আরেক পাশে সরিষা ক্ষেত আর দুই ক্ষেতের মানুষেরা অভ্র নীলকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে এদিকে নীল ছোটাছুটি করছে অভ্র কাছ থেকে ছোটার জন্য কিন্তু পারছে না অভ্র নীলকে শান্ত করার জন্য বলল বেশি নাড়াচাড়া করো না সামলাতে পারবো না পরে গিয়ে কোমড় ভাঙবে তখন তোমার অভ্রর কথা শেষ হতেই নীল বলল আমাকে ভালো মানুষের মতে নামান বলছি আর নয়তো আমি চিৎকার করবো। নীল এর কথায় অভ্র মুচকি হেঁসে বলল আচ্ছা চিৎকার দিয়ে কি বলবে তোমার বর তোমাকে কোলে নিয়ে হাটছে কারণ তুমি পায়ে ও কোমড়ে ব্যাথা পেয়েছো এটাই বলবে? অভ্রর কথায় নীল চোখ বড়বড় করে বলল। আপনি আমার কিসের বর আজব সেই কাল থেকে বউ বউ করছেন। অভ্র নীলকে কিছু বলতে যাবে তখন সামনে থেকে রাস্তায় এক বয়স্ক মহিলা অভ্রকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করল। বাবা এই বুড়ো বয়সে তোমাদের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ এভাবেই সারাজীবন তোমার বউ টাকে ভালোবেসো আল্লাহ উনার রহমত দান করুক তোমাদের উপর কারো নজর জেনো তোমাদের না লাগে আল্লাহ সহাই হোক এভাবেই ভালোবেসে দু’জন দু’জনকে কথাগুলো বলে মহিলা অভ্রর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মহিলার কথাগুলো শেষ হলে অভ্র দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল.
দোয়া করবেন আমাদের জন্য দাদী আমার বউটা খুব দুষ্ট আমাকে একটুও ভালোবাসে না।
মহিলা মুচকি হেসে নীল এর উদ্দেশ্যে বলল, তোমার স্বামী তোমাকে কত ভালোবাসে তুমি দুষ্টামি করো কেনো এত ভালোবাসে স্বামী কোই পাবা? আর দুষ্টামি করো না বেশি বেশি ভালোবাসবে আর আদর করবে। নীল চোখ দু’টো বের করে তাকিয়ে আছে অভ্রর দিকে অসভ্য ছেলে সময়ের সৎ ব্যবহার করছে। মহিলা দু’জন ওদের সামনে থেকে চলে যেতেই নীল ক্ষিপ্ত চোখে উচ্চ সুরে চোখ দু’টো গোলগোল করে বলল,
“নামান আমাকে বলছি ভালো হবে না কিন্তু! সবাইকে আমি আপনার বউ বলছেন কেন আজব ভাবেন কি নিজেকে প্লিজ নামান আমাকে.! ”
নীল এর কথা গুলো জেনো অভ্রর কান দিয়েই যাচ্ছে না ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে হাঁটতে শুরু করল, নীল প্রচুন্ড রেগে অভ্রর কাধ থেকে একটু নিচে হাতে শক্ত করে কামড় বসিয়ে দেয় অভ্র “আউচ” একটা শব্দ করে চোখ ছোটো ছোটো করে নীল এর দিকে তাকালো নীল ভয় পাওয়া তো দূরের কথা উল্টো চোখ বড়বড় করে অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল.
“নামান বলছি আমাকে”
এতবার নামান শুনতে শুনতে অভ্র বিরক্ত হয়ে কোল থেকে নামিয়ে দিলো আর বলল!
“না-ও নামিয়ে দিয়েছি এখন তো হ্যাপি আজব আজব করছে, আমার মাংস খাওয়ার এত ইচ্ছা কেনো তোমার রাক্ষসী জীবনে মেয়ে মাংস খাওনি? ”
(আজব না অভ্র নীলকে পাঁচ দিন ধরে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটুও কি হাত ব্যাথা করে নাই ওর? কে জানে শিক্ষা দিলাম একটা এত মেয়েদের কোলে নেওয়ার সখ কেন? কেমন শিক্ষা দিলাম? যাইহোক গল্পএত দেরিতে দেওয়ার জন্য সত্যি দুঃখিত ব্যক্তিগত কিছু প্রবলেম এর জন্য গল্পটা লিখতে পারছিলাম না)
নীল অভ্রর কথা শুনে রাগে কটমট করছে ভ্রু কুঁচকে অভ্রর চোখে চোখ রেখে বলল.
“কি বললেন আমি রাক্ষসী..?”
নীল এর প্রশ্ন শুনে অভ্র মুচকি হেঁসে বলল.
” বিশ্বাস না হলে ওদের জিজ্ঞেস করো”
অভ্রর কথায় নীল এর বিরক্তি লাগলো কারণ অভ্র আর নীল ছাড়া এখানে কেউ নেই আর ওই বান্ধবী গুলা সব হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে গেছে ওই মহিলার সাথে যখন কথা বলছিলো তখনই.. চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ নিয়ে নীল অভ্রর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে আর বলে.!
” কাকে জিজ্ঞেস করবো? ”
নীল এর প্রশ্ন শেষ হলে অভ্র ওর দুই হাত পেছনে নিয়ে নীল এর দিকে একটু ঝুঁকে যায় তারপর বলে.
” ওই যে বর্ষা দাদীর পাঠক ও পাঠিকাদের কে জিজ্ঞেস করো উত্তর পেয়ে যাবে.. ”
কথাটা বলে অভ্র নীল কে চোখ টিপ মেরে হাসতে হাসতে চলতে শুরু করল এদিকে নীল হাবলার মতো তাকিয়ে আছে অভ্রর যাওয়ার দিকে। অভ্রর দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে নীল প্রশ্ন করলো..
” তোমরাই বলো বর্ষা দাদীর সম্মানিত পাঠক ও পাঠিকারা আমি নীলাঞ্জনা নীল কি রাক্ষুসী ”
নীল করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তোমাদের উত্তরের আশায়..
নীল আশেপাশে ভালো করে লক্ষ্য করল তানজু তানিয়া কাজলের ছাঁয়াও দেখা যাচ্ছে না এদিকে একটু আগে গেলো অভ্র ওকেও দেখা যাচ্ছে না এদিকে নীল হাঁটার চেষ্টা করলেও পারছে না পা মচকে গেছে আর কোমড়েও বেশ ব্যাথা পেয়েছে। কি করবে তখন পাকামি না করলেই ভালো হতো আরামচে বাড়ি যেতে পারতো এখন কিভাবে যাবে আর গ্রামের কোনো কিছুই চেনে না যদি হারিয়ে যায় ভাবতে ভাবতে চলার জন্য এক পা বাড়ালেই নীল আবারও পরে যেতে লাগল আর ঠিক তখনই এক যু…
চলবে?
#অভ্র_নীল (সিজন-০২)
#পর্ব_০৬
#sharmin_akter_borsha
_______
আর গ্রামের কোনো কিছুই চেনে না যদি হারিয়ে যায় ভাবতে ভাবতে চলার জন্য এক পা বাড়ালেই নীল আবারও পরে যেতে লাগল আর ঠিক তখনই এক যুবক এসে পেছন থেকে নীলকে কোলে তুলে নেয়। নীল ভয় পেয়ে চিৎকার দেয় আর যুবকের মুখের দিকে তাকাতেই অভ্র কে দেখল। আর অভ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল.
” আপনি আবার আমাকে কোলে তুলেছেন নামান বলছি আমাকে ”
অভ্রকে চোখ রাঙিয়ে বলল নীল. অভ্র নীল-এর কথায় নীল এর দিকে চোখ বড়বড় করে তাকালো যা দেখে নীল একটু ভয় পেলো কারণ খুব ভয়ংকর লাগছে চোখ দু’টো লাল হয়ে গেছে এতক্ষণ নায়ক লাগলেও এখন ভিলেন লাগছে। নীল অভ্রর চোখ দেখে ভয় পেয়ে যায় চোখ দু’টো ছোটো-ছোটো করে অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল।
” আপনি না চলে গিয়েছিলেন তাহলে আবার কোথা থেকে উদয় হলেন ”
অভ্র ভ্রু কুঁচকে নীল এর দিকে এক নজর তাকিয়ে আবারও আগের ন্যায় সামনের দিকে তাকিয়ে হাটতে শুরু করে। প্রশ্নের কোনো উত্তর না পেয়ে নীল আবারও অভ্রর দিকে তাকিয়ে জিব দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে অভ্রর কানের সামনে মুখ নিয়ে জোরে শব্দ করে বলল..
” আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি উত্তর দিচ্ছেন না কেনো? ”
নীল এর কথায় আর একটু হলেই জেনো অভ্রর কানের পর্দা ফেটে যেতো অভ্র আঁড়চোখে নীল এর দিকে তাকিয়ে বলল।
” এট জোরে কেউ বলে আমি কি বয়রা নাকি? ”
নীল অভ্রর কথা শুনে সামনের দিকে তাকিয়ে অভিমানী কন্ঠে বলল।
” সুন্দর ও নম্র করেই বলেছিলাম কিন্তু এখানে একজন বয়রা আছে যে শুনতে পায়নি। তাই আমাকে জোরে বলতে হয়েছে। ”
অভ্র নীল এর মুখে বয়রা শুনে দাঁড়িয়ে গেলো আর নীল এর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবারও হাঁটতে শুরু করে হাঁটতে হাঁটতে অভ্র বলল।
” এক আমি বয়রা নই, দুই এখানে তোমাকে একা রেখে আমি চলে যাবো এটা কোনো ভাবেই পসিবল নয়, একটা অচেনা জায়গায় তাও তোমার এমন করুণ অবস্থা মানে লেংড়া অবস্থায় তোমাকে একা রেখে অন্তত আমি যেতে পারবো না। ”
অভ্রর মুখে লেংড়া শুনে নীল রাগী কন্ঠে বলল!
“আমি লেংড়া নই! ”
নীলের কথায় অভ্র হেঁসে নীল এর দিকে তাকালো নীল এর মুখের দিকে তাকাতেই অভ্র জেনো ওর হাসি থামাতেই পারছে না। হাসি থামিয়ে অভ্র একটু গলা ঝেড়ে বলল।
“আমিও তাহলে বয়রা নই ”
কিছু দূর হাঁটার পর অভ্র বিরক্ত হয়ে নীল এর উদ্দেশ্যে বলল.
মাথায় কি কমনসেন্স নাই এভাবে হাত ঘুটিয়ে কোলে চড়ে আছে হাতির মতো ভাড়ি।
নীল অভ্রর কথায় রাগান্বিত হয়ে বলল।
” আপনাকে কে বলেছে আমাকে কোলে নিতে আর মোটেও আমার ওজন বেশি নয়। আপনি জানেন আমার ওজন কত.? ”
নীলকে থামিয়ে অভ্র বলল.
থাক আর বলতে হবে না আপনার ওজন কত এখন আপনার দুই হাত দিয়ে আমাট গলা জরিয়ে ধরুন আর নয়তো দু’জনেই উল্টিয়ে পরবো!
অভ্রর একটু কষ্ট হচ্ছে এভাবে কোলে নিয়ে হাটতে সেটা বুঝতে পেরে নীল অভ্রর দুই পাশে কাঁধের উপর দিয়ে হাত নিয়ে অভ্রর গলা জরিয়ে ধরলো।
আরও কিছুদূর এভাবে হাটতেই ওদেরকে অভ্র দেখতে পেলো। নীলকে কোলে নিয়েই ওদের কাছে হেঁটে গেলো ওরা সবাই হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে একটা বড় কড়ই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে আকাশ শুভ ঘাসের উপর হা পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে। অভ্র নীলকে তানজু তানিয়া কাজল ওদের পাশে বসিয়ে দিলো আর নিজের মাটির উপর ঘাসে বসে বড় বড় নিশ্বাস ফেলছে
যা দেখে শুয়ে থেকেই অভ্রকে প্রশ্ন করলো আকাশ.
” কি ভাই হাঁপিয়ে গেছিস বুঝি “?
অভ্র আকাশ এর দিকে তাকিয়ে বলল!
” পানি..”!
অভ্র কে দেখে নীল এর প্রচুর হচ্ছে পুরাই নাটক বাজ এতক্ষণ সব ঠিক ছিলো যেই না ওদের দেখেছে তখন থেকেই এমন ভাব ধরছে যে মনে হচ্ছে মানুষ নয় ৫০মন আলুর বস্তা নিয়ে আসছে। শুভর পাশেই ছিল পানির বোতল যেটা শুভ অভ্রর দিকে ছুড়ে মারে অভ্রু কেচ ধরে আর ধকধক করে সবটা পানি খেয়ে ফেলে।
পানি খেয়ে কলিজা ঠান্ডা করে অভ্র বলল..
” আর বলিস না খেয়ে খেয়ে মোটি হয়েছে কোলে নিয়ে আসতে গিয়ে আমার অবস্থা টাইট”
এতক্ষণ অভ্রর নাটক সহ্য করতে পারলেও নীল এবার আর চুপ করে থাকতে পারলো না। কত ফাজিল সবার সামনে অপমান করছে নীল রেগে গেলে কি করে ও নিজেও বুঝতে পারে না। নীল এর হাতের কাছেই ছিলো ইটের অর্ধেকের অর্ধেক টুকরো যেটা নীল হাতে নিয়ে অভ্রর পিঠে ছুঁড়ে মারে। ঢিল খেয়ে বেকা হয়ে যায় অভ্র আহ আহ করতে করতে পেছনে ঘুরে তাকায়। নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করে বলল.
চলবে?
#অভ্র_নীল (সিজন-০২)
#পর্ব_০৭
#Sharmin_Akter_Borsha (লেখিকা)
________
নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করে বলল!
– অসভ্য ছেলে লজ্জা করে না এখানে বসে বসে মিথ্যে বলছো।
অভ্র নীল এর দিকে তাকালো মুখ দিয়ে “আউচ” শব্দ করে নীল এর উদ্দেশ্যে বলল!
– পাগল নাকি এই এত্তো বড় ইট দিয়ে কেউ কাউকে ঢিল মারো মাথায় বুদ্ধি মোটেও নেই দেখছি।
অভ্র’র কথা শুনে নীল রাগে দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করতে করতে বলল!
– আমি মোটেও পাগল না মিস্টার!
নীল এর কথা শুনে অভ্র মাটিতে আরাম করে বসে এক হাত মাটিতে রেখে অন্য হাতের শাহাদাত আঙুল থুতনিতে ঠেকিয়ে নীলকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল!
– ও সরি সরি! পাগল তো হয় ছেলেরা আর তুমি তো মেয়ে তাই তুমি তো পাগলী।
অভ্রর কথা শুনে নীল ক্ষেপে গিয়ে বলে!
– আপনি পাগল আপনার বউ পাগলী আপনার মেয়ে পাগলী আপনার ছেলে পাগল।
নীল এর কথায় অভ্র শব্দ করে হেঁসে দেয় তারপর আবারও বলে।
” সেটাই তো বললাম তুমি পাগলী ”
নীল আড়চোখে অভ্রর দিকে তাকালো আর ভ্রু নাচিয়ে অভ্রর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারল.
– মানে?
অভ্র কথা কাটানোর জন্য কথা গুড়িয়ে বলল!
‘ এত মানে বুঝতে হবে না বেশি বকবক না করে পা টা আমার দিকে দাও ‘
নীল অভ্রর দিকে আঙুল তুলে আঙুল নাচিয়ে নাচিয়ে বলল!
নীল- কি বললেন আমি বকবক করি? ‘
অভ্র- হ্যাঁ করো তো এখনও ঠিক তাই করছো এখন বেশি বকবক না করে পা টা আমার দিকে বাড়াও দেখতে দাও আমাকে কোথায় মোচ এসেছে।
নীল- আমার পা আমি কেনো দেবো আপনাকে দেবো না।
কথাটা বলে নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি দিয়ে হাত গুটিয়ে অন্য দিকে ঘুরে তাকালো। যেটা অভ্রর ইনসাল্ট মনে হলো। অভ্র দাঁতে দাঁত চেপে ওর জায়গা থেকে উঠে নীল এর একটু সামনে বসে ওর পায়ে হাত। হঠাৎ পায়ের উপর স্পর্শ পেয়ে নীল হাল্কা কেঁপে উঠল আর সামনের দিকে তাকালো। তাকিয়ে দেখল অভ্র ওর পায়ে হাত দিয়ে রেখেছে আর হঠাৎ পা ধরে টান দিলো। অভ্র এমন ভাবে পা ধরে টান দিবে নীল ভাবতেও পারেনি। টান দেওয়ার ফলে নীল পেছনের দিকে পরে যায়। সম্পূর্ণ পরেনি তার আগেই নীল ওর দুই হাতের কনুই মাটির উপর চাপ দেয় যার ফলে সম্পূর্ণ পরে যায়না। নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে অগ্নী দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে এমন সময় অভ্র নীল এর দিকে তাকিয়ে বলল।
‘ তোমার পা তোমারই থাকবে কেটে ফেলবো না আমি বুঝেছো ইস্টুপিট গার্ল ‘
অভ্রর কথা শুনে নীল আবারও ক্ষেপে গেলো আর বলল।
‘ আমি ইস্টুপিট না….. ‘
বাকি নীলকে থামিয়ে দিয়ে অভ্র বলল।
‘ ওকে সরি! তুমি ইস্টুপিট না তুমি গুড গার্ল ইস্টুপিট তো আমি আমার বউ মানে তুমি আমার মেয়ে আমার ছেলে যাদের মা ও তুমি ওকে তুমি ইস্টুপিট না হইছে হ্যাপি ‘
নীল অভ্রর কথা শুনে অভ্রর মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে কি বললো এই বজ্জাত ছেলেটা কিছুই বুজতে পারলো না নীল। সবটা জেনো নীল এর মাথার উপর দিয়ে গেলো। বোকার মতো অভ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল আর ঠিক তখনই নীল এক চিৎকার দিলো। নীল এর চিৎকার শুনে আশে পাশের বসা বান্দর বান্দরনী সবগুলা কানে হাত দিলো।
অভ্র নীলের পা ছেড়ে দিয়ে বলল…
– পাগল হইছো তুমি এত জোরে গলা ফাটিয়ে কেউ চিৎকার করে নাকি আর একটুর জন্য আমাদের সবার কানের পর্দা ফেটে যায়নি।
ঠিক তখনই নীল উঠে বসে পরল আর সোজা গিয়ে অভ্র’র শার্টের কলার চেপে ধরল।
– সাহস কি করে হয় আপনার আমার পা উল্টা মোচড়ে দেওয়ার? দিলেন তো এখন আমার পা গোড়া থেকে ভেঙে এবার আমি হাঁটবো কি করে?
কথাটা বলেই নীল নাকে বাজিয়ে কাঁদতে শুরু করল। এভাবে ছেঁচ কাঁদুরির মতো কাঁদতে দেখে অভ্রর প্রচুর ম্যাজাজ খারাপ হচ্ছে এক তো পা ঠিক করে দিয়েছে কোই Thanks বলবে ম্যাডাম সেটা না করে ছেঁচ কাদুরির মতো কেঁদে চলেছে। নীল এর চোখে এতক্ষণ পানি ছিলো শুধু মুখেই এএএএ ছিলো কিন্তু এখন চোখের কার্ণিশে পানি জমেছে যে পানি অভ্রর চোখ এড়ালো না। নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে আছে এমন সময় নীল এর চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পরে চোখ বেয়ে পানি গাল পর্যন্ত আসতেই অভ্র খুব জোরে নীলের উদ্দেশ্যে ধমক দিলো।
– Stop it! কান্না করা থামাও নীল ভুল করেও জেনো ওই এক ফোঁটা পানি মাটিতে না পরে তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। ভুল করেও তোমার ওই দুই চোখ জোড়া থেকে জেনো পানি না পরে কখনো না। আমি সহ্য করবো না। আর কিসের জন্য কাঁদছো তোমার পায়ের কিচ্ছু হয়নি হাল্কা মোচ আসছিলো যত্তসব কিছু হলেই চোখ দিয়ে পানি কোথা থেকে চলে আসে? শোনো নীল অপচয় জিনিসটা আমি একদমই পছন্দ করি আর সেটা যদি হয় আমার জিনিসের তাহলে তো আমি একদমই সহ্য করি না।
কথাটা বলে অভ্র নিজের হাত দিয়ে নীল এর গাল বেয়ে পরা পানিটা মুছে দিয়ে উঠে চলে যাচ্ছে। এখানে বসে থাকা প্রত্যেক টা মানুষ নীল এর দিকে ঘুরে তাকিয়ে আছে এমন সময় নীল ওদের সবার দিকে তাকিয়ে বলল।
– ওই ওই বজ্জাত ছেলে টার কথার মানে কি হুহ? ওর জিনিস বলতে কি বুঝাইছে?
এখানে বসে থাকা প্রত্যেক টি ব্যক্তি এক এক করে উঠে দাঁড়াল তন্ময় শুভ আকাশ অভ্র ‘র পেছনে ছুটলো কারণ ওরা জানে অভ্র রাগের মাথায় কত কিছু করতে পারে আর কি কি করতে পারে সহজে অভ্র রেগে যায় না খুব শান্ত শিষ্ট ভদ্র ছেলে কিন্তু যখন রেগে যায় তখন বলার বাহিরে তখন অভ্রর আগুনের লাভার মতো চোখ জোড়া দেখলেই সবাই ভয় পেয়ে যায় আর ধমক দিলে তো বুক থেজে কলিজা বের হওয়ার মতো অবস্থা হয়! ওদের তিনজনকে অভ্রর পেছনে যেতে দেখে ওরা তিন জন তানজু, তানিয়া, কাজল নীলের উদ্দেশ্যে বলল!
– এর মানে তো আমরা কেউ-ই বুঝিনি! আর তুই ও যদি না বুঝে থাকিস তাহলে বাদ দে পরে সময় পাবি বুঝে নিস। এখন উঠ বাড়ি ফিরতে হবে তো নাকি অনেক লেট হয়ে গেছে এমনিতে.!
কথাটা বলে তানিয়া নীল এর হাত ধরে টান দিলো আর নীল ও উঠে দাঁড়াল খানিকক্ষণ বাধ সেখানে শুভ দূর থেকে দৌঁড়ে আসে আর ওদের চারজনের সামনে দাঁড়িয়ে বলল।
– আপনারা বাড়ি চলে যান আমরা কিছুক্ষণ পর চলে যাবো। আপনারা কি একা যেতে পারবেন নাকি আপনাকে আমি পৌঁছে দেবো?
শুভকে থামিয়ে দিয়ে কাজল বলল।
– আমারই গ্রাম ছোটো থেকে শহরে থাকলেও গ্রামের সব কিছুই চিনি আমি। আমরা যেতে পারবো ভাইয়া তুমি চিন্তা করো না।
তৎপর শুভ একবার তানিয়ার দিকে তাকিয়ে আবারও দৌঁড় দিলো। নীল এক দেনে ভ্রু কুঁচকে ওই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে যে রাস্তা দিয়ে অভ্র গিয়েছে ঠিক তখনই তানজু….
চলবে?