#অভ্র_নীল সিজন_০২#পর্ব_২১
#Sharmin_Akter_Borsha (লেখিকা)
নীল এর সামনে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে তার বুকে গুলি লেগেছে। চুই চুই করে রক্ত বের হতে দেখে চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে মাটিতে পরে যেতে নেবে তখনই কেউ অন্য হাত দিয়ে নীলকে ধরে ফেলল।
দ্বিতীয় হাতে যে লোকটাকে ধরে রেখেছিল তাকে নিচে ফেলে দিয়। পেছনের লোকটাকে শুট করে।
কিছুক্ষণ আগে…
হাত দিয়েই একটা লোককে মেরে আধামরা করে ফেলেছে আর তখনই খেয়াল করল নীল দরজার সামনে চোখ বন্ধ করে কানে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য দিকে নীলের দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছে। লোকটার শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে এসে নীল এর সামনে দাঁড় করিয়ে দিলো। নীল এর দিকে তিড়ে আসা গুলিটা তার শরীরে লাগল। পাশে দাঁড়িয়ে লোকটার ঘাড় ধরে রেখে ওই লোকটাকে শুট করল তাকে যে নীলকে শুট করার জন্য গুলি চালিয়ে ছিল। নীল চোখ খুলে এদিক সেদিক তাকানোর অবস্থায় ছিলো না চোখের সামনে এমন সিন দেখলে অন্য কিছুর হুশ থাকে না তাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। লোকটাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে নীলকে পাঁজা কোলে তুলে নেয়।
গোডাউনের বাহিরে নিয়ে যায় নীলকে মাটির উপর শুইয়ে দিলো। নিজের পরনের শার্ট টা খুলে নিলো। আবারও নীলকে কোলে তুলে নিয়ে বাইকের সামনে বসিয়ে শার্টটা দিয়ে নিজের শরীরের সাথে বেঁধে নেয় যাতে নীল পরে না যায়।
পরেরদিন সকালে
সূর্যের তীর্যক রোদ চোখের ওপর আছড়ে পরলে চোখ-মুখ কুচকে ফেলে নীল। আলতো ভাবে নিজের চোখ দুটো মেলে। মাথা টা বেশ ভারি ভারি লাগছে। মাথার এক পাশে হাত দিয়ে কপাল কুচকে উঠে বসে। এবার সম্পূর্ণ চোখ মেলে নিজের আশেপাশে তাকায়। খেয়াল করে বিশাল একটা রুমে বড়ো এক বেডে বসে আছে সে। সারাটা রুম ধবধবে সাদা। এক পাশে বড়ো থাই গ্লাস আরেক পাশে অনেক বড়ো করিডর। রুমের সবকিছু সাদার মাঝে কিছু কিছু জিনিস কালো আর ধূসর বর্ণের, যা বেশ ফুটে ওঠেছে। বুঝলো যে এখানে থাকে সে বেশ শৌখিন প্রকৃতির একজন মানুষ। ভাবতে লাগে এখানে কি ভাবে আসলো কাল রাতে তো ওই গোডাউনের মতো এক জায়গায় ছিল তাহলে কে নিয়ে আসলো ভাববে ভাবতে লাফ দিয়ে উঠে পরে নীল। উঠে গিয়ে থাই গ্লাস টা সরিয়ে দেয়। বাইরে থেকে পাখিদের কিচিরমিচির কিছু শব্দ আসছে। নীল বড়বড় পর্দা গুলো মেলে দাঁড়ায় মৃদু বাতাস বইছে। নীলের বেশ ভালো লাগলো আবহাওয়া টা। মুখে তার ফুটে ওঠে এক চিলতে হাসি। নীল এভাবেই বাইরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই নিজের পেছন থেকে কারো ডাকে চমকে ওঠে….
অভ্র- নীল!
নীল পেছনে তাকিয়ে দেখে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। সে আর কেউ না অভ্র।
অভ্রকে দেখে মুখে হাসি রেখেই ‘ অভ্র ‘ বলে ডাক দিয়ে দৌঁড়ে যায়। সামনে দাঁড়িয়ে তাকে জরিয়ে ধরে আর বলে উঠে..
নীল- অভ্র তুমি চলে এসেছো অনেক ভালো হয়েছে তুমি জানো কাল রাতে কি হয়েছিল?
অভ্র- কি হয়েছিল?
এমন ভাবে পাল্টা প্রশ্ন করল জেনো সে সব কিছু থেকে অজ্ঞাত। অভ্রকে কাল রাতের কথা বলতে যাবে তখনই নীল এর ওই লোকটার বলা সব কথা মনে পরে যায়।
নিজের থেকে কিছুটা দূরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল..
নীল: আমি এখানে কিভাবে এসেছি?
অভ্র: সাধারণ উত্তর আমি নিয়ে আসছি!
নীল: তুমি আমাকে কোথায় পেয়েছো?
অভ্র: উফফ নীল বাদ দাও এইসব কথা এটা বলো তুমি এখন কেমন আছো?
নীল: আমাকে ছোঁবে না অভ্র আমার কথার উত্তর দাও!
অভ্র নীল এর বা হাতের কব্জিতে হাত রাখতে নিলে হাত সরিয়ে দিয়ে বলে।
অভ্র: নীল তুমি কি বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। তুমি জানতে চাও তো তোমাকে আমি কোথায় পেয়েছি তাহলে শোনো কাল রাতে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখনই তোমার ডাক শুনতে পাই। এদিক সেদিক চোখ বুলিয়ে তাকিয়ে তোমাকে খুঁজি ফাস্ট ভেবেছিলাম হয়তো ভুল শুনছি পরে গাড়ির উইন্ড থেকে তোমার হাত দেখতে পাই তখন ওই গাড়ির পিছু করলে তোমাকে একটা গোডাউনের দরজার সামনে সেন্সলেস হয়ে পরে থাকতে দেখি আর আমার সাথে নিয়ে আসি।
নীল: ওখানে সব নরমাল ছিলো?
অভ্র: হ্যাঁ ওখানে তো সব স্বাভাবিক-ই ছিলো!
নীল: মিথ্যে! মিথ্যে বলছো তুমি আমাকে অভ্র…
কথাটা বলে টেবিলের উপর থেকে ফুলদানি নিয়ে ফ্লোরের উপর আছাড় মারল। মাটির ফুলদানি ভেঙে ঘুরিয়ে গেলো।
অভ্র: নীল করছো কি লেগে যাবে তোমার?
একপা বাড়িয়ে দিলে অভ্রকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠে.
নীল: আমার জন্য একদম মিথ্যা অভিনয় দেখাবে না অভ্র ও সরি বারবার তোমাকে অভ্র বলে ফেলছি আসলে এটা তো তোমার নাম নয়। তোমার আসল নাম তো অন্য কিছু রাইট?
অভ্র: নীললল! তুমি শান্ত হও শোনো আমার কথা।
নীল: আমার কাছে আসবে না তুমি অভ্র উর্ফে আফরান চৌধুরী দ্যা মাফিয়া গ্যাংস্টার। এটাই তো তোমার আসল পরিচয় পেরে ফেলেছো তো কাল রাতে সবাইকে এটাই তো তোমার কাজ আফরান চৌধুরী। সবাই বলে তোমাকে একবার যে দেখে তাকে নাকি তুমি আর বাঁচিয়ে রাখো না। এখন আমাকে কি এখানে মারার জন্য নিয়ে আসছো? এত কষ্টে করে এখানে আনতে গেলে কেনো গোডাউনেই তো মেরে ফেলে আসতে পারতে।
অভ্র- নীল চুপ করো আমার কথা শোনো প্লিজ!
নীল- আমি তোমার কোনো কথাই শুনবো না মেরে ফেলো আমাকে তাদের মতো করে আমিও তো এখম তোমার আসল পরিচয় জেনে গেছি। মেরে ফেলো বলছি।
আর কিছু বলার আগে অভ্র নীল এর সামনে মাথা নিচু করে হাঁটু গেঁড়ে বসে পরে। সব কিছুর জন্য নীল এর কাছে ক্ষমা চায় এবং নীলকে বুঝানোর চেষ্টা করে ও তার আসল পরিচয় লুকাতে চায়নি। কিন্তু যদি তখন বলতো সবাই সাথে নীল নিজেও ভয় পেতো অনেক রিস্ক ছিল আর অভ্র যা করে সেগুলো সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যই করে যা পুলিশ করতে পারে না সেটা অভ্র আড়ালে থেকে করে।
নীল কাঁদতে কাঁদতে অভ্রকে জরিয়ে ধরে আর বলে উঠে..
নীল- আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না অভ্র এইসবের মধ্যে দিয়ে যদি তোমার কিছু হয়ে যায় তখন প্লিজ এইসব বাদ দিয়ে দাও অভ্র!
অভ্র: ওকে আই প্রমিজ! আজ থেকে আমি সব ছেড়ে দিয়েছি শুধু তোমারই জন্য সব কিছু ছেড়ে দিলাম।
দু’জনে দুজনকে শক্ত করে জরিয়ে ধরল।
নীল: এভাবে বসে থাকলেই কি পেট ভরবে কিছু খেতে হবে তো নাকি?
অভ্র: আচ্ছা আমি খাবার অর্ডার করছি!
নীল: নাহ আমরা দু’জনে মিলে একন নাস্তা বানাবো আমি কিচেনে নিয়ে চলো।
রুটি বানানোর জন্য এখন আটা প্রয়োজন আর আটা এত উপরে যা নীল হাত দিয়ে ছুঁতে পারছে না বেশ কিছুক্ষণ লাফালাফি করেছে তবুও পারেনি। তাই ঠোঁট ফুলিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে দুই হাত কোমড়ে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। পেছন থেকে টুস করে কোলে তুলে নিলো। এতে নীল আটার ডাব্বা সহজেই হাতে পেয়ে গেলো। নিচে নেমে ডিব্বার মুখটা খুলতে নিয়ে এত জোরে টান দিয়েছিল। যা আটা উপরে উঠে সোজা অভ্র’র মুখে গিয়ে পরল।
অভ্র- ওও সিট!
নীল- সরি সরি ওই আমি বুঝতে পারিনি।
পানির কল ছেড়ে হাত দিয়ে পানি নিয়ে অভ্রর মুখের উপর দিতে লাগল। নীল এর দুই হাত অভ্র এক দিয়ে চেপে ধরে দাঁত চেপে বলল।
অভ্র- চোখে পানি ছিটাচ্ছো নাকি আমাকে গোসল করাচ্ছো?
অভ্রর কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালে দেখল অভ্রর শার্ট ভিজে চিপ চিপা হয়ে গেছে।
অভ্র- কিচ্ছু করতে হবে না আমি খাবার অর্ডার করছি।
নীল- নাহ আমি ব্রেকফাস্ট বানাবোই!
অভ্র- যা ইচ্ছা করো আমি চললাম ফ্রেশ হতে।
সে চলে গেলো। একটা বড় গামলার মধ্যে আটা ঢেলে নিলো তাতে এক মগ পানি ঢেলে দিলো। এখন দুই হাত দিয়ে কচলাচ্ছে।
যত কচলাচ্ছে ততই হাতের সাথে লেগে যাচ্ছে আঠার মতো। কপাল কুঁচকে এক হাত কপালে ছোঁয়ালো আরেক হাত দুই গালে ছোঁয়ালো তারপর আবারও হাত নিয়ে গলায় ছোঁয়ালো। অভ্র ফ্রেশ হয়ে ভেজা চুলে হাত নাড়াতে নাড়াতে কিচেনে ঢুকল। নীল এর পাশে টেবিলের উপর এক হাত রেখে হালকা ঝুঁকে ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন ছুড়ল।
অভ্র: এইগুলো কি বানাচ্ছো নী…
আর কিছু বলার আগেই নীল অভ্রর দিকে মাথা তুলে তাকালো। নীল এর কপালে গালে গলায় আটা মাখা দেখে বোকার মতো তাকিয়ে থেকে হাসতে শুরু করল। ওমা কি হাসি হাসতে হাসতে জেনো মাটিয়ে লুটিয়ে পরবে এখন অভ্রকে এভাবে হাসতে দেখে প্রচুর বিরক্তিকর ভাব প্রকাশ করেই প্রশ্ন ছুড়ল।
নীল- হাসছো কেন এভাবে জোকার দেখেছো নাকি?
অভ্র- আমি তো দেখেছি এবার তুমিও দেখো।
নীল- মানে?
এক ভ্রু উঁচু করে প্রশ্ন করল। ফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরা নীল এর মুখের সামনে ধরলে তাতে স্পষ্ট দেখা গেলো আটা লাগানো। তা দেখে নীল এর মন খারাপ হলো।
থুতনিতে হাত রেখে সরু গলায় বলল।
অভ্র: এতে কিন্তু তোমাকে বেশ কিউট লাগছে লাইক..
নীল- কিউট লাগছে?
অভ্র- হ্যাঁ লাগছে তো কার…ণ
আর কিছু বলার আগেই নিজের আটা মাখা দুই হাত অভ্রর দুই গালে রেখে চেপে ধরল।
নীল- ইশশ কি কিউট যে লাগছে কারো নজর জেনো আবার না লেগে যায়।
অভ্র- খুব কিউট লাগছে তাই না।
কথাটা বলেই অভ্র আটার বোলে নিজের দুই হাত ডুবিয়ে দিলো তা দেখে নীল উল্টো দিকে দৌড় দিয়ে কিচেন থেকে ছুটল পেছনে অভ্র পুরো বাড়ি দৌঁড়াচ্ছে এক পর্যায়ে বাড়ির উল্টো দিকে চলে আসলো এর সামনে যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
অভ্র- বেবি ডল এবার কোথাও পালাবে?
নীল ধীর হয়ে দাঁড়িয়ে পেছনে ঘুরে তাকালো। মুখে শয়তানি হাসি দিয়ে এগিয়ে আসছে নীল এক পা পিছিয়ে গেলো। এমন ভাবেই দু তিন কদম পেছিয়ে গেলে অভ্র নীল এর হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। নীল খিঁচে দুই চোক বন্ধ করে নিলো। অভ্র নীল এর মায়া ভরা মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে হাতের গুলাল আটা নিজের গালে মাখিয়ে নিচ্ছে। এক চোখ বন্ধ করে অন্য চোখ টিপটিপ করে খুলে তাকিয়ে ছিল। অভ্রর এই কান্ড দেখে চোখ মেলে তাকালো। নিজের হাত দিয়ে নিজের গালে কেনে আটা মাখাচ্ছে নীলের মাথায় ঢুকছে না জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।
গালের উপর থেকে হাত সরিয়ে নিলো। নীল এর দিকে ঝুঁকে নিজের গালের সাথে নীল এর গাল ঘষলো। এতে অভ্রর গালের আটা নীল এর গালে এমনিতে লেগে গেলো নীল কে স্পর্শ করতে হয়নি। নীল লজ্জা পেয়ে লাজুক চাহনি দিয়ে অভ্রর বুকে মাথা লুকালো।
দু’জনেই ফ্রেশ হয়ে হল রুমে বসে আছে।
নীল- এখন কি খাবো খিদে পেয়েছে তো?
অভ্র- চিন্তা করো না আমি খাবার অনলাইন অর্ডার দিয়েছি অনেক আগেই আমি জানতাম তুমি রান্নার কাজে ডেরস।
নীল- কি বললে?
অভ্র- সমস্যা নেই বিয়ের পরে শিখে নিও..!
এমন সময় কলিংবেল বাজলে অভ্রর উঠে দরজা খুলে পাশে দাঁড়িয়ে থাকে নীল। বেশ দূর থেকে কেউ একজন ওদের দু’জনের উপর নজর রাখছে। খাবার ডেলিভারি নিয়ে দু’জনে ভেতরে চলে যায়।
কানে ফোন লাগিয়ে কোনো একজনকে বলছে।
– ভাই আফরান চৌধুরী ওর নিজের বাড়িতেই আছে। সাথে ওর গার্লফ্রেন্ড ও আছে।
– নজর রাখ আরও খবর পেলে জানাবি আল্লাহ হাফেজ।
নীল অভ্র’র সামনে বসে আছে মুখের সামনে কিছু চুল এসে পরে রয়েছে। অভ্র মুগ্ধ হয়ে নীলকে দেখ বা হাত দিয়ে নীল এর চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে দিলো।
এখন নীলকে ফিরতে হবে আজ কে ওর বাবা মা দেশে ফিরবেন। ফ্লাইট ল্যান্ড হয়েও গেছে হয়তো এতক্ষণে অভ্র নীলকে সাথে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়
নীল কে ওর বাড়ির সামনে নামিয়ে কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।
আকাশ, শুভ, তন্ময় এর সাথে মিটিং করছিলো এই বিষয় নিয়েই নীলকে প্রমিজ করেছে এইসব বাদ দিয়ে দিবে। কথা বলতে বলতে প্রায় রাত ১২টার উপরে বেজে যায়। একেক জনের একক রকম মত কারো সাথে কারো উক্তি মিললো না তাই সবাই আজকের মতো এখানে শেষ করেই চলে গেলো।
রাস্তার মধ্যে দুইটা গাড়ি আর চার পাঁচটা বাইক দাঁড়িয়ে আছে সাথে অনেক গুলো এদের সাথে সব সময়ই পালা হয়ে থাকে আফরান চৌধুরীর তাই এইসব ওর কাছে নরমাল। পেছন থেকে গান বের করে শুট করতে লাগলো ওদিক থেকেও শুট করছে৷
কিন্তু ওদের নিশানা একবারও লাগছে না। বন্দুকের গুলি ফুরিয়ে গেলে হাতাহাতি করা হচ্ছে সবগুলোকে মেরে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে এমন সময় পেছন থেকে ডেকে বলল।
– আফরান চৌধুরী কাম ডাউন, এত তারাতাড়ি কি খেলা শেষ করলে চলবে খেলা তো সবে মাত্র শুরু!
অভ্র চেনা পরিচিত আওয়াজ শুনতে পেলো মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো আর চেচিয়ে বলে উঠল…
অভ্র- নাঈম আহমেদ তুই আমার সাথে খেলতে আসিস না মাঠে মারা যাবি।
নাঈম- সেটা তো তুই মরবি এখন আমার হাতে।
অভ্র- আল্লাহ না চাইলে তোদের মতো কীটপতঙ্গ আমার কিচ্ছু করতে পারবি না।
নাঈম- আল্লাহ চায় রে পাগল চায় আর তোকে মারা খুব সহজ কারণ এখন তোর দূর্বলতা আছে আর তখন ছিলো না তাই তোকে আগে এতবার মারার চেষ্টা করেও মারতে পারিনি কিন্তু এখন তোর দূর্বলতা হচ্ছে তোর ভালোবাসা যার কিছু হয়ে গেলে তুই এমনিতেই মরে যাবি। শোন দু’জনে মরার থেকে ভালো নয়কি তুই একাই মর। তুই আফরান চৌধুরী এখন আমার গুলিতপ মরলে ওই খানে তোর ভালোবাসা বেচে থাকবে আর তুই যদি চালাকি করে আমাকে মারিস তাহলে ওইদিকে তোর গার্লফ্রেন্ড কে আমার লোকেরা মেরে ফেলবে এখন চয়েজ ইজ ইউ’রস!
অভ্র- নাঈম।
নাঈম- চিৎকার করিস না তোর চিৎকার এখানে কেউ শুনবে না।
অভ্র- ওর জেনো কোনো ক্ষতি না হয়।
নাঈম কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে উচ্চ সুরে শয়তানি হাসিতে মেতে উঠল। একবার গোল ঘুরে পেছনে অভ্র’র দিকে তাকিয়ে বুক বরাবর শুট করল লাগাতার দু তিনটা গুলি অভ্র’র বুক ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলো। দুই হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পরল। চোখ জিমিয়ে আসছে কিছুক্ষণের মধ্যে মাটিতে শুয়ে পরল। জুতো শব্দ করে হেঁটে অভ্র’র সামনে এসে বসে বন্দুক গোলগোল ঘুরিয়ে বলল।
নাঈম- ইশশ ভালোবাসার জন্য জীবন দিলো আফরান চৌধুরী। জানিস বস তোর গার্লফ্রেন্ড কে আমি চিনি শুধু শুনেছি তুই কাউকে ভালোবাসিস আর দেখ অন্ধকারে কেমন তীর ছুড়েছি আমি আর তীরটা সোজা গিয়ে টার্গেট বরাবর লেগেছে শুনে ছিলাম ভালোবাসা অন্ধ হয় আর আজ তোকে দেখে তার প্রমানও পেয়ে গেলাম। ওপারে ভালো থাকিস। আর শোন তোর ভালোবাসার মানুষকে আমি খুঁজে বের করবোই নিজের হাতে মারবো তারপর কলিজা ঠান্ডা হবে আমার বুঝেছিস।
কথা গুলো বলে নাঈম উঠে চলে গেলো। এই শুনশান রাস্তায় এত রাতে অভ্র’র রক্তাক্ত দেহ পরে আছে।
পরেরদিন সকালে নীল ঘুমাচ্ছিল এমন টাইমে ওর ফোন বেজে উঠল। ঘুমের ঘোড়েই কল রিসিভ করল৷ অপর পায় থেকে বলা কথাগুলো শুনে নীল লাফ দিয়ে উঠে বসলো। যেমন ছিল তেমনই বিছানা থেকে নেমে দৌঁড় দিলো। সিঁড়ি দিয়ে নেমে বাহিরে চলে আসে বাড়ির ভেতর থেকে তার বাবা মা বার বার ডাকলেও নীল থামে না সে নিজেই গাড়ি স্টার্ট দেয়। ড্রাইভার কে কোথাও দেখতে পাচ্ছিল না তাই নিজেই ড্রাইব করবে বেশি সময় নেই তার হাতে খুব তারাতাড়ি পৌঁছাতে হবে তাকে
চলবে?