#অভ্র_নীল সিজন_০২ #পর্ব_১৬,১৭
#Sharmin_Akter_Borsha (লেখিকা)
১৬
” কাজল আমার নীল এর খেয়াল রেখো আমরা পেছনে আসছি। ”
তানজু প্রতিউত্তরে কিছু বলে না শুধু মাথা নাড়ালো। অনেকবার নীল কে ডাকা হয়েছে কিন্তু সেন্সলেস হওয়ার কারণে শুনতে পায়নি।
চোখে মুখে ছিটেফোঁটা পানি দিতেই নীল ধীরে ধীরে চোখ খুলে।
সবাই খুব চিন্তিত নীল এর হুশশ ফিরতেই একেক জনে একেকটা প্রশ্ন ছুড়তে শুরু করল। এখন তানজু তানিয়া নীল তিনজনে একেক জনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে এটা যে শুধু একটা Prank ছিলো সেটা এনাদের কাউকে বলা যাবে না। তিনজনে মিলে হঠাৎ পরে যাওয়ার কারণ বলতে গিয়ে থুতুমুতু খেয়ে যায় বানিয়ে ঠিক মতো মিথ্যা কথা ও বলতে পারে না। তবুও বানিয়ে কিছু একটা তো বলতে হবে তানজু সবার উদ্দেশ্যে বলল। ” সারাদিন এত ঘুড়াঘুড়ির জন্য মাথা ঘুরে পরে গেছে ওতো ভাবার কিছু নেই নীল এখন ঠিক আছে। ”
সবাই মেনেও নেয় চুপচাপ বসে রয়। বাড়িতে এসে তিনজনে উপরে রুমে চলে যায় তিনজনে প্রচুর হাসাহাসি করছে।
হল রুমে সবাই জিনিসপত্র রেখে বসে আছে কাজলও সবার সাথেই বসে আছে। বাড়ির মধ্যে ঢুকে কাজলের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে মারল!
‘ নীল কোথায় এখন কেমন আছে? ‘
‘ঠিক আছে এখন রুমে রেস্ট নিচ্ছে’
‘ আমি গিয়ে একটু দেখে আসি’
‘ আচ্ছা যাও!’
সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে রুমের মধ্যে ঢুকতে যাবে তখনই ভেতর থেকে হাসাহাসি শুনতে পেলো। রুমের সামনেই দাড়িয়ে রইল ভেতর থেকে কথা শুনতে পেলো।
‘ আচ্ছা নীল তুই যে হুট করে পরে যাওয়ার নাটক করছি মানে যদি তখন পরে যেতি কত ব্যাথা পেতিস ভেবেছিস’ (তানিয়া)
‘ আরে আমি তো ওইভাবেই পরতাম যেভাবে পরলে ব্যাথাই পেতাম না কিন্তু কোথা থেকে যে এসে ধরে ফেলল কিছুই বুঝলাম না। ‘
‘ ভাগ্যিস অভ্র তখন ওখানেই ছিলো তাই তো ধরতে পেরেছিলো যাইহোক এখন এটা বল যখন ও তোকে কোলে তুলে নিয়েছিল তখন কেমন লেগেছিল তোর?’ (তানজু)
‘কেমন লেগেছিল এটা আবার কেমন বেহুদা প্রশ্ন হুহহ? প্রথম বার কোলে তুলে নিয়েছে নাকি আগেও তো নিয়েছিল। (তানিয়া)
‘ তোরা প্লিজ চুপ করবি’
——-
– মিস নীলাঞ্জনা নীল….
নীল, তানজু, তানিয়া পেছনে তাকিয়ে দেখে বেশ লম্বাচওড়া বডিবিল্ডার ওয়ালা একজন দাঁড়িয়ে আছে। সে আর কেউ না অভ্র। অভ্র কে খেয়াল করে ও প্রচুন্ড রেগে আছে সেটা ওর চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সাদা রঙের প্যান্ট আর এশ কালারের একটা টি-শার্ট পরে সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জানালা দিয়ে বাইরে থেকে আসা হালকা বাতাসে তার মাথার চুলগুলো ঢেউ খাচ্ছে। গাল ভর্তি চাপদাড়ি। এক হাত পকেটে গুজে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক ভ্রু উঁচু করে। এক দৃষ্টিতে নীল এর দিকে তাকিয়ে আছে চোখ তুলে তানজু, তানিয়ার দিকে তাকিয়ে কন্ঠ কঠোর করে বলল।
‘তোমরা দু’জন এখন এখান থেকে যাও আমার নীল এর সাথে কথা আছে। ‘
‘ কিন্তু কেনো? ‘ (তানিয়া)
” যেতে বলছি ‘
পকেট থেকে হাত বের করে ধমক দিয়ে বলল। মাথা নিচু করে ওরা দুজন চলে গেলো। ওরা রুম থেকে বের হতেই অভ্র ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলো। নীল অভ্রর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে বলল।
‘ আপনি দরজা বন্ধ করেছেন কেন? ‘
ওর হাত শক্ত করে ধরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরল। নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলল।
‘ প্লিজ ছাড়ুন আমার কষ্ট হচ্ছে ‘
দুই হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সামনে নিয়ে ধরে বলল।
‘ আমারও কষ্ট হয়েছিল যখন তুমি সেন্সলেস হয়ে পরে গেছিলে। জানো কতটা বিচলিত হয়ে পরেছিলাম কিভাবে বাইক চালিয়ে আসছি নিজেও জানি না। আর এখন এসে জানলাম তুমি সবটা নাটক করেছো ভাবতে পারছে আমার মনের মধ্যে কি চলছিল। আমি সিরিয়াস হয়ে পরেছিলাম মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল৷ তুমি কেন বুঝো না নীল আই লাভ ইউ আই জাস্ট লাভ ইউ তোমার কিছু হয়ে গেলে বাঁচবো না আমি। ‘
কথাগুলো বলে নীলের হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের সর্বচ্চ শক্তি দিয়ে দেয়ালে পাঞ্চ মারল। একটা বিকট শব্দ হলো নীল কেঁপে উঠল দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো অভ্রর যাওয়ার দিকে নীল তাকিয়ে রইল।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসলো।
গ্রামে সব কিছুই অন্য রকম
চলবে?
#অভ্র_নীল
#সিজন_০২
#পর্ব_১৭
#Sharmin_Akter_Borsha (লেখিকা)
লাল পাইড়ের মধ্যে হলুদ শাড়ির পরে সিঁড়ি দিয়ে নামছে পায়ে বাজছে ছুনছুন নুপুর।
সবাই অপেক্ষা করছে শুধু নীল এর আসার অপেক্ষা নীল আসতেই সবাই রওনা দিলো। সবার হাতে হলুদের ঢালা সবাই হলুদ শাড়ি পরেছে খুব সেজেছে সবাই কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
সাদা পায়জামা হলুদ পাঞ্জাবি পরে গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়ের বাড়ি লোক যেতেই সবাই কে ফুল দিয়ে বরন করা হলো। স্টেজে বসে আছে তন্ময় সবাই এক এক করে গিয়ে তন্ময়কে হলুদ ছুঁইয়ে দিচ্ছে এদিকে অভ্র নীল এর পিছু পিছু ঘুরছে বার বার ও বউ ও বউ করে পেছু ডাকছে নীল বেশ বিরক্ত নিয়েই পিছে তাকাচ্ছে।
হঠাৎ অভ্রর ফোনে একটা কল আসলো ফোনের স্কিনে তাকিয়ে অভ্রর ভ্রু কুঁচকে ফেলে সবার সামনে থেকে চলে যায় ফোনের দিকে তাকিয়েই ব্যাপারটা নীল এর কাছে সুবিধার লাগল না। এতক্ষণ ধরে বিরক্ত করছে আর কে এমন কল দিলো যার ফলে ও সবার সামনে থেকে চলে গেলো। সবার আড়ালে নীল অভ্র ‘র পেছু নিলো। একটা রুমের সামনে এসে নীল দাঁড়িয়ে পরল। ওর কাছে জেনো মনে হলো অভ্র এই রুমের মধ্যেই ঢুকেছে। নীল রুমের দরজাটা আস্তে করে খুলে নিজের মুখটা একটু বের করে দেখে নেয়। তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না রুমের লাইট অফ তাছাড়া জানালা দিয়ে বাহির থেকে ঝাড়বাতির মিটিমিটি আলোয় রুমে কিছুটা আলো ফুটে উঠেছে দরজা হালকা আলতো হাতে খুলে ধীর পায়ে রুমের মধ্যে ঢুকল।
ভেতরে গিয়ে দেখে অভ্র নেই নীল কপাল কুচকে ফেলে। মাত্রই না দেখলো অভ্র কে এখানে আসতে। ইন ফ্যাক্ট নীলের আগেই এসেছে অভ্র এখানে তাহলে গেলো কই! নীল উঁকি ঝুকি মেরে দেখতে লাগল কিন্তু সে এটা খেয়াল করেনি অভ্র যে ঠিক তার পেছনেই দুইহাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। নীলকে এভাবে উঁকি ঝুঁকি মারতে দেখে অভ্র মুচকি হাসি দেয়, তারপরেই নীলের পেছন থেকে নিজের দুহাত প্রসারিত করে দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। নীল যেনো বরফ হয়ে গেলো মূহুর্তেই। স্তব্ধ লেগে দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র তাকে একদম আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে এতে যেনো নীল এর দম যায় যায় অবস্থা। অভ্র নীল এর চুলের মাঝে নিজের মুখ গুজে দিলো। এই মূহুর্তে নীলের মধ্যে এত্তো লজ্জা কাজ করছে যে মুখ দিয়ে আর কথাও বের হচ্ছে না। অভ্র নীল এর ঘাড়ে নিজের নাক ঘষতে ঘষতে বলে ওঠে…
‘ এতটাই মিস করছিলে আমায় যা একটু চোখের আড়াল হয়েছি আর খুঁজতে চলে আসছো? ‘
অভ্রর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়। এদিক সেদিক তাকিয়ে বলে ওঠে.
‘ আমি আপনাকে খুঁজতে আসিনি আমি আসলে হারিয়ে গেছি ‘
‘ ও তুমি তাহলে হারিয়ে গেছো এখন তোমাকে রাস্তা দেখাতে হবে? ‘
কথাগুলো অভ্র মুখে একটা শয়তানি হাসি রেখে নেশালো কন্ঠে বলল কথায় জেনো নেশা কাজ করছে।
একহাত পকেটে গুজে দিয়ে নীল এর দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসতে লাগে। নীল আমতা আমতা করে কিছু বলতে গিয়েও আবার আটকে যায়। অভ্র তার দিকে এভাবে এগোচ্ছে কেনো! অভ্র তার দিকে যত এগোচ্ছে নীল তত পেছাচ্ছে। পেছাতে পেছাতে এক সময় নীল খাটের পায়ার সাথে ঠেকে বিছানার উপর পরে যায়। নীল হকচকিয়ে একবার পেছনে তাকায় তারপর আবার সামনে অভ্র দিকে তাকায়। কিন্তু ততক্ষণে অভ্র নীলের বেশ কাছে এসে পরেছে। অভ্র তার এক হাত নীল এর হাতের ওপর রেখে চেপে ধরে।
নীল অভ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে আমতা আমরা করে বলে ওঠে..
নীল- প্লিজ আমাকে যেতে দিন আমি কিছু করিনি প্লিজ!
অভ্র- অনেক কিছু করেছো তুমি!
নীল- কি করেছি আমি?
অভ্র- তুমি আমাকে তোমার নেশায় মাতাল করে দিয়েছো আমি মত্ত হয়েগেছি ডুবে গেছি। তোমার আসক্তে আসক্তি হয়ে গেছি। তুমি আমার সেই নেশা যে নেশায় আমি দিওয়ানা হয়ে গেছি এখন যদি তোমাকে আমি কিস না করি পাগল হয়ে যাবো আমি।
কথাগুলে শুনে নীল এর চোখ অটোমেটিক বড় হয়ে যায়। অভ্রকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিবে তখন অভ্র আরও শক্ত করে নীল এর হাত চেপে ধরে।
অভ্র নীলকে আর কিছুই বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের বাম হাত দিয়ে নীল এর গাল দুটো শক্ত করে চেপে ধরল। এতে নীল এর মুখ টা একদম চুপসে গিয়ে কিউটিপাই লাগছে পুরাই কিউটের ডিব্বা। অভ্র আর এক মূহুর্ত দেরি না করে নীল এর দুগালে, থুতনীতে, নাকের ডগায়, কিছুটা ঠোঁটের পাশেও চুমু একে দেয়। আর সর্বশেষে নীল এর কপালে চুমু দেয়। এই সময়টাতে নীল সম্পূর্ণই নিজের চোখ খিচে বন্ধ করে দুই হাত দিয়ে বিছানার চাদর খামচে ধরে রেখেছিলো। অভ্র এবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়। ফট করে চোখ মেলে সামনে তাকায় নীল। চোখ মেলে দেখে অভ্র’র ঠোঁটে হাসির ঝলক রেখে দাঁড়িয়ে আছে। পকেটে হাত গুঁজে দিয়ে নীল এর উদ্দেশ্যে বলল!
অভ্র- জানপাখি এইবার নিশ্চয়ই আর হারিয়ে যাবে না তাছাড়া তুমি যদি আবারও হারিয়ে যাও আমার জন্য কিন্তু ভালোই হবে ফ্রি তে মিষ্টি পেলে কারই না খেতে ইচ্ছে হয়! আর তোমার এই মিষ্টি শুধু আমার জন্য তুমি শুধু আমার তোমার উপর শুধু আমার অধিকার। এখন চলো তোমাকে সোজা রাস্তা দেখিয়ে আসি।
অভ্র নীল এর দিকে এক হাত বাড়ালে নীল উঠে অন্য দিকে দাঁড়িয়ে যায়। শাড়ির আঁচল শক্ত করে চেপে ধরে বলল।
নীল- আমি একাই যেতে পারবো!
কথাটা বলেই নীল এক প্রকার দৌড়েই তার রুম থেকে ছুটে বের হয়ে আসে। আর নীল এর এভাবে ছুটে যেতে দেখে অভ্র দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে বিছানার উপর বসে পরে।
নীল তো বাইরে এসেই বুকের উপর ডান দিয়ে চেপে ধরেছে বাম হাত কোমড়ের উপর রেখে একটু নিচের দিকে ঝুঁকে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে।
পাশ থেকে কেউ একজন একটা পানির বোতল নীল এর দিকে বাড়িয়ে দিলো। কোনো কিছু না ভেবেই বোতল টা হাতে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াল। বোতলের মুখা খুলে বোতলের সাথে ঠোঁট লাগিয়ে পানি খেতে গিয়ে পাশে থাকা মানুষটার দিকে তাকালো।
এক হাত প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে সিনা টানটান করে দাঁড়িয়ে আছে। উনাকে দেখে নীল এর কিছুক্ষণ আগের ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠে। নীল এর হাত থেকে বোতল টা পরে যায় মুখ থেকে পানি বের হয়ে সবটা লোকটার পাঞ্জাবির উপর গিয়ে পরল। যদিও নীল এটা ইচ্ছে করে করেছে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভেজা পাঞ্জাবির দিকে ভ্রু উঁচু করে একবার চোখ পাকিয়ে নীল এর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। এক বড়সড় ঢোক গিলে বলে উঠে.
নীল- সরি আ আম আমি ইচ ইচ্ছে করে করিনি হঠাৎ আপনাকে দেখে মুখ থেকে পানি বেরিয়ে গেছে।
কথাটা বলতে দেরি কিন্তু নীল এর পালিয়ে যেতে দেরি হয়নি। এমন দৌঁড় দিছে এক দৌঁড়ে স্টেজের সামনে তানিয়া তানজুর কাছে চলে আসে ওরা যদিও নীলকে হাঁপাতে দেখে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছিল ‘ কি হয়েছে?’ কিন্তু নীল কথা বলে না বলে যে পরে বলবে ওরাও আর তেমন জোর দেয় না।
______
পুরো বাড়ি জুড়ে হৈ-হুল্লোড় বর এসেছে বর এসেছে। গেইটের সামনে লাল ফিতা বেধে সবাই দাঁড়িয়ে আছে টাকা না দিলে ভেতরে যেতে দিবে না। পুরো ৩০ মিনিট গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে রইল। মেয়ে পক্ষের কাছে শেষমেষ হার মানতে হলো তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিলে তারা গেইটের সামনে থেকে সরে যায়। নীল চেয়ারের উপর বসে টাকা গুনছিল পাশেই ছিল সৈন্য বাহিনী টাকার ভাগিদার গুলো। হালকা বাতাসে কিছু চুল বারবার মুখের সামনে এসে দোল খাচ্ছে। মুখের সামনে থেকে চুলগুলো সরিয়ে কানের পেছনে গুঁজে দিলো। নীল টাকা গুনতে গুনতেই তাকিয়েই বলল।
নীল- থ্যাংকস রে তানু অনেক ডিস্টার্ব করছিল চুলগুলো!
অভ্র- অনেক ডিস্টার্ব করতেছিলো চুলগুলো আমার বউ টাকে?
নীল- অভ্র?
বলেই হুট করে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালো পাশে তাকাতেই তাকে দেখতে পেলো। অভ্রকে দেখে নীল কপাল কুঁচকালো আর বলে উঠে…
নীল- আপনি এখানে কি করছেন হা? লজ্জা করে না ছেঁচড়া পোলাদের মতো পেছন পেছন ঘুরেন যান এখান থেকে!
অভ্র- আমি ছেঁচড়া ও আচ্ছা?
কথা গুলো শুনে বেশ রাগ হলো। খোপ করে টান দিয়ে নীল এর হাত থেকে সব গুলো টাকা নিয়ে দৌঁড় দিলো মীল সহ বাকিরা অভ্রর পেছনে ছুটল কিন্তু অভ্রকে আর খুঁজে পেলো না সবাই মন খারাপ করে যার যার মতো চলে গেলো।
বিয়ে সম্পূর্ণ হলে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় কাজল লাফিয়ে উঠল খুব এক্সাইটেড হয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলল।
কাজল- গেম খেললে কেমন হয়?
নীল- তুই না নতুন বউ তোর এখন আবার গেম খেলতে ইচ্ছে করছে?
অভ্র- কি গেম খেলতে চাও বলো এখনই ব্যবস্থা করছি।
নীল বাধে সবাই সম্মতি দেয়। ফাইনাল হয় চেয়ার সেটিং খেলবে আর বাধ্যতা মূলক সবাইকে খেলতে হবে।
যতগুলো মানুষ আছে তার থেকে একটা চেয়ার কম সাজানো হলো। গান বাজানো হলো সবাই চেয়ারের চার পাশে ঘুরতে শুরু করল। হঠাৎ গান স্টপ হল সবাই তারাহুরো করে চেয়ারে বসে পরে। একজন মেম্বার আউট হয়ে গেলো তারপর একই নিয়মে গেম চলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে গিয়ে সব মেম্বার আউট হয়ে গেলো। এখন শুধু একটা চেয়ার রয়েছে আর মেম্বার দু’জন অভ্র নীল। চেয়ারের দিকে দু’জনেই তাকিয়ে আছে। গান স্টার্ট হতেই দুজনে দৌঁড়াতে শুরু করল।
কিছুক্ষণ পর গান স্টপ করে নেয় অভ্র আগে চেয়ারে বসে এক টানে নীলকে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়। নীল এতে ভরকে যায় হুট করেই কি হলো সব তার মাথার ওপর দিয়ে গেলো। নিজেকে অভ্রর কোলের ওপর অনুভব করতে পেরে দ্রুত সেখান থেকে উঠে চলে আসতে নিবে তখনই অভ্র তার একহাত দিয়ে নীল এর পেট চেপে ধরে। নীল মুখ বাকা করে অভ্র’র দিকে তাকায়। তবে সেদিকে যেনো অভ্রর কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। নীল তার দুইহাত দিয়ে ঠেলেও অভ্রকে সে সরাতে পারছে না। সে অভ্রর দিকে তাকিয়ে দেখে তার মাঝে কোন ভাবান্তর-ই নেই। এমন একটা ভাব যেনো সে কিছুই করছে না। নীল ক্রমাগত নড়েই চলেছে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে অভ্রর হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। অভ্র নীল এর পেটে চাপ দিয়ে ধরে বলে।
অভ্র- এবার বেশি নড়াচড়া করলে একদম কোল থেকে ঠাস করে মাটিতে ফেলে দিবো।
নীল যেনো অসহায় কিছুই করার নেই ওর এখন চুপ করে বসে আছে। নীলকে এমন চুপ করে বসে থাকতে দেখে অভ্র নীলের দিকে তাকিয়ে দেখে নীল কপাল কুচকে তার নিচের ঠোঁট টাকে উল্টিয়ে রেখেছে৷ তা দেখে অভ্র ফিক করে হেঁসে দেয়। আর নীল তার দিকে তাকিয়ে থাকে। অভ্রকে এভাবে হাসতে দেখে নি সে খুব মায়াবীক হাসি, নীল কপাল ভাজ করে তার দিকে তাকিয়েই ছিলো তার মাঝেই অভ্র তার এক হাত দিয়ে নীল এর দুগাল চেপে ধরে হাসিমাখা কন্ঠেই বলে ওঠে…
অভ্র- জান পাখি তুমি কি জানো তোমাকে দেখতে এখন কত বেশি কিউট লাগছে!
এত মানুষের সামনে এ কথা বলায় নীল বেশ লজ্জা পেয়ে যায় অভ্রর হাত সরিয়ে কোনো রকম দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। সবাই ভেবেই নেয় নীল আর আসবে না এখানে বাকিরাও চলে গেছে বাচ্চা গুলোও যার যার বাড়ি চলে গেছে। বিয়ে শেষ নাচ গানা শেষ তানজু একা দাঁড়িয়ে ছিল ছাঁদের এক কোণায় আকাশ গিয়ে তানজুর পাশে দাঁড়ালো আর বলল।
আকাশ- আমি নেকামো করতে জানি না। আমি আর পাঁচ দশটা ছেলের মতোন না। আমি আমার মতন মনের কথা চেপে রাখতে পারবো না৷ একটা কথা বলতে চাই।
তানজিলা- হ্যাঁ বলুন না কি বলবেন?
আকাশ- আমি তোমাকে ভালোবাসি যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন থেকেই আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই তানু সারাজীবনের জন্য আমার হয়ে যাও বিয়ের পর চুটিয়ে প্রেম করবো প্লিজ না করো না আর যদিও করো তাহলে এই ছাঁদ থেকেই লাফিয়ে পরে মরে যাবো হুম।
তানজিলা- সত্যি মরে যাবেন?
আকাশ- মরে যাওয়ার কথাটা সিরিয়াসলি না নিলেই পারতে ওটা তো আমি আবেগের বসে বলে ফেলছি।
তানজু- ইট’স ওকে। আমিও আপনাকে ভালোবাসি তবে বিয়ের জন্য ফ্যামিলিকে রাজি করাতে হবে! পালিয়ে বিয়ে করবো না রাজি?
আকাশ তানজিলাকে জরিয়ে ধরে সাথে এ-ও বলে!
” আমি রাজি”
ওইদিকে শুভ ও একই কাজ ভিন্ন স্টাইলে করল তানিয়া কেও পটিয়ে ফেলল।
তন্ময় কাজল অভ্র এক সাথে বসে আছে তিনজন তিনটা চেয়ারে এমন সময় কাজল বলে উঠল।
কাজল- অভ্র নীল কিন্তু মিথ্যা কথা একদমই সহ্য করে না আর আমরা ওর আড়ালে অনেক নাটক বাজি করেছি।
তন্ময়- আমরা তো মিথ্যে বলিনি শুধু অভিনয় করেছি।
অভ্র- সত্যি ভাবি তুমি না থাকলে কিছুই হতো না। আম গাছের নিচে, রুমে, আর ওইদিন শপিংমলে যেভাবে বাচিয়ে দিয়ে ছিলে তুমি আমায়। যেভাবে চিৎকার দিয়েছিল নীল আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। তুমি আমাকে বের করে দিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দাও পরে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে যাও আর নীল ভাবে পরপর কয়েকবার ও আমাকে ইমাজিন করেছে খুব জোর বেঁচে গিয়েছিলাম সেদিন ধরা পরলে গন ধুলাই খেতে হত।
কাজল- কিন্তু নীল…
আর কিছু বলতে যাবে তখনই লক্ষ্য করল অভ্রর ঠিক পেছনো দাঁড়িয়ে আছে নীল। কাজলকে চুপ থাকতে দেখে অভ্র পেছনে তাকায় আর নীলকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে উঠে দাঁড়ালো নীল এর দিকে এক পা এগুতে নিবে নীল তখন ওর হাত সামনে দাঁড় করায় আর বলে..
নীল- এইসব কিছু সাজানো ছিল। ছিহহ আর তুই না আমার ফ্রেন্ড তুই আমার সাথে এমন কি ভাবে করতে পারলি। আপনাদের দেওয়া ধোঁকা আমি কখনে ভুলবো না।
কথাটা বলেই নীল উল্টো দিকে ঘুরে দৌঁড় দেয় পেছন থেকে অনেকবার ডাকলেও নীল পেছু ফিরে ডাকায় না।
রুমের মধ্যে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। অভ্র পিছু পিছু এসে ছিলো বন্ধ দরজার সামনে এসে অনেক বার ডেকে ছিল কিন্তু নীল….
চলবে?