অভ্র_নীল,04,05,06

0
1369

#অভ্র_নীল,04,05,06
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_04
____________
অভ্র শুয়ে শুয়ে শুধু নীলের কথাই ভাবছে,,
আর বলছে অনেক ভালোবেসে
ফেলেছি আমি তোমাকে নীল,,,
নিজের থেকেও বেশি কিন্তু কেনো নীল কেনো তুমি বুঝো না কেনো বুঝো না আমার ভালোবাসা… ( অভ্র কান্না করে দেয়)

কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পরে অভ্র …

সকালে…

নীল প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে উঠে
নাস্তা করে কলেজে চলে যায়…

আর অভ্র নাস্তা করে তার বাবার সাথে অভিসে চলে যায়…

কলেজে যাওয়া পর প্রতিদিনের মতো চার জনে আড্ডা দিতে লাগলে,,,

তানজুম, তানিয়া আর কাজল বললো আজ কলেজ শেষের পর আমরা সবাই পার্ক যাবো আর নীল তোকেও যেতে হবে কোনো না শুনবো না আমরা,,,

নীলও যাবে বলে,,,
এবার সবাই চল ক্লাসে যাই,,,
ওই দিকে আকাশ আর শুভ মিলে অভ্র কে পার্কে আসতে বলে,,,

অভ্র শুরুতে না বলে,,, পরে ওদের জোড়াজুড়ি তে রাজি হয় আসবে…!

কলেজে শেষে আজ আর কেউ নেই,,,
নীলকে একনজর দেখার জন্য…

সবাই মিলে পার্ক গেলো,,, ইতিমধ্যে অভ্র ও চলে এলো…

কাজল তানজুম তানিয়া,,, নীলকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে বলে চলে আস একটা বাহানা দিয়ে..

নীল– আশপাশ টা কত সুন্দর

আকাশ আর শুভর কাছে গেলো অভ্র…
কিরে কেনো আসতে বললি এখানে আমি কলেজেও যেতে পারলাম আজ এক নজর নীলকে দেখতেও পাবো না

দূর থেকে,,, অভ্র কে দেখে

তানজুম — দেখ তোরা ছেলেটার কি অবস্থা হয়েছে এই কয়দিনে,,,

তানিয়া — হ্যা রে কি অবস্থা করেছে নিজের।

কাজল– যেদিন প্রথম দিন দেখেছিলাম তখন কত্তো কিউট ছিলো আর এখন,, ওর এই অবস্থার জন্য নীল দায়ী.

আকাশ — অভ্র ওই সামনের দিক দিয়ে সোজা হেঁটে যাবি আর সামনেই নীল দাঁড়িয়ে থাকবে তুই আজ মন খুলে সব বলে দে,,,
এটা আমাদের প্ল্যান ছিলো,,,,
অভ্র– আমাদের বলতে,,,
আমাদের বলতে আমাদের ৫জনের বলে উঠলে তানজুম পিছন থেকে…

যাও ভাইয়া ওকে বুঝাও আর সব বলে দাও

অভ্রর চোখ বেয়ে জল চলে আসে আর বলে তোমাদের উপকার আমি কখনো ভুলবে না,,,
ধন্যবাদ তোমাদের আর তোদেরও

তারপর অভ্র দৌঁড়াতে লাগলো আর কিছুদূর যেতেই দেখলো একটা মেয়ে একটা বসে আছে,,,

অভ্র — নীলের কাছে গেলো আর ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে চাইলো কিন্তু নীল

নীল- আমার আপনার সাথে কোনো কথা নাই চলে যান এখান থেকে,,

অভ্র অনেক ভাবে নীলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে

কিন্তু নীল কোনো কিচ্ছু শুনতে চাচ্ছে না আর অভ্রর দিকে তাকাচ্ছেও না

অভ্র রেগে গিয়ে নীলের সামনে দাঁড়িয়ে নীলের দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে

নীল– ছাড়ুন আমার ব্যাথা লাগছে ( এই প্রথম নীল আজ অভ্রর দিকে তাকালো আর কিছু বলল)

অভ্র — তোমার থেকে অধিক দ্বিগুণ বেশি ব্যাথা আমার বুকের মধ্যে করছে নীল ( শক্ত করে হাত চেপে ধরে)
নীল তুমি কেনো বুঝো না আমি তোমাকে ভলোবাসি অনেক ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না আমি আর পারছিও না তোমাকে ছাড়া থাকতে..

” কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর ”
নীল– আমি আপনাকে ভালোবাসি না,,, আপনি আমাকে ভুলে যান।

অভ্র — আমার ভালোবাসা কি তোমার সস্তা মনে হয়,, যে তোমাকে ভুলে যেতে বলছো।

অভ্র– আমি তোমাকে ভালোবাসি আর তোমাকে আমার হতেই হবে…

নীল– আমি আপনাকে ভালোবাসি না,, আমাকে বিরক্ত করবেন না আর আমার কলেজের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন না বলে দিলাম

অভ্র— কেনো কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে তুমি কি করবে হুমম শুনি ( অভ্র নীলের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলছে)

নীল– আমি আপনার নামে আমি আপনার নামে

অভ্র– হুম হুম আমার নামে কি (সোনা)

নীল— কি বললেন??

এই ধারাবাহিকের পরের পর্ব আপনারা
আগামীকাল ঠিক এই সময়ে পেয়ে যাবেন
ততক্ষণ নিজের খেয়াল রাখুন
.
.
.
.
.
চলবে….????

#অভ্র_নীল
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
#পর্ব_৫
____________

নীল– আমি আপনার নামে আমি আপনার নামে…

অভ্র– হুম হুম আমার নামে কি (সোনা)

নীল— কি বললেন??

অভ্র– কি বলছি শুনো নাই তুমি?
নাকি আবারও শুনতে চাও ( একদম নীলের কাছে গিয়ে)

নীল অভ্রকে ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে দেয়..

নীল– একদম আমার কাছে আসবেন না আর ওই সব উল্টা পাল্টা নামে আমাকে ডাকবেন না বুঝেছেন আপনি ( রাগে ফায়ার)

নীল– Last Warning,,, আমাকে বিরক্ত করবেন না আর কথা না শুনলে আপনার নামে আমি কেইস করবো…

অভ্র– আচ্ছা বাবু তুমি এটা করতে পারবা ( আবারও নীলের কাছে যেতে যেতে বলে)

নীল– অবশ্যই পারবো ( ধাক্কা দিয়ে অভ্র কে সরিয়ে দিয়ে নীল সেখান থেকে চলে যায় )

তানজুম, তানিয়া,, কাজল,, ধুর এই ছেমড়িকে দিয়া কিচ্ছু হবে না

আকাশ — সব প্ল্যান নষ্ট করে দিলো নীল,, ও কি তোমাদেরই ফ্রেন্ড নাকি কোথা থেকে টুকিয়ে আনছো ( রাগী লুক নিয়ে ওদের ৩জনের দিকে তাকিয়ে)

শুভ– হা করে তাকিয়ে আছে তানিয়ার দিকে

তানিয়া– ইচ্ছে করতেছে ঘুষি দিয়া নাকটা ফাটিয়ে দেই কিভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে এখনি গিলে খাবে… (মনে মনে বলতে থাকে)

তানজুম — দেখুন আপনি আমাদের ফ্রেন্ডকে নিয়ে বাজে কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি…

আকাশ– বলবো একশো বার বলবো তোমাদের ফ্রেন্ড আমাদের ফ্রেন্ড এর কি অবস্থা করেছে দেখতে পাচ্ছো না,,, ওও তোমাদের ফ্রেন্ড,, ফ্রেন্ড আর আমাদের ফ্রেন্ড কি ডাস্টবিনের ময়লা..

ইতিমধ্যে,, তানজুম আর আকাশের মধ্যে তলপার ঝগড়া লেগে গেছে,,,

শুভ তানিয়াকে দেখছে…
তানিয়া মনে মনে শুভর ১৪ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে…

কাজল — চুপ চাপ বসে বসে ওদের কান্ড দেখছে আর হাসছে..

(আকাশ রাগী লুকে কাজল এর দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বললো)..
এই তুমি একদম হাসবে না
চুপ করে বসে থাকে আর বেশি হাসলে
কলে করে নিয়ে ওই পুকুরে ফেলে দেবো

কাজল ধমক শুনে,, মুখে হাত দিয়ে চুপচাপ বসে রইলো বেচারি সেজে…

তানজুম — আপনার সাহস তো কম না,,
আপনি ফ্রেন্ডকে ধমক দিচ্ছেন আর বলছেন পানিতে ফেলে দিবেন,,,

আকাশ– এই মেয়ে এই সাহসের কি দেখছো তুমি হুহহ ( তানজুমের দিকে দুই এক পা এগিয়ে এসে)
তুমি জানো আমার কত সাহস,,,
আমার সাহস নিয়ে তোমার কোনো ধারণাই না বুঝছো মেয়ে

তানজুম– ভদ্র ভাবে কথা বলুন আমার একটা নাম আছে ওকে মেয়ে মেয়ে করছেন কেন?
যেই না সাহস আসছে আবার আমা………..
তানজুম আর কিছুই বলতে পারলো না কারণ
আকাশ আর কিছু বলার আগেই তানজুমের ঠোঁট জোড়ার সাথে নিজের ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দেয়…

তানিয়া শুভ কাজল… ভেবাচেকা খেয়ে গেলো

তানিয়া,, কাজল এক সাথে বলে উঠলো,,, কি হলো এটা

শুভ— সাহস দেখানো হচ্ছে

তানজুম পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে
কি হলো ওর সাথে এটা

কিছুক্ষণ পর আকাশ তানজুম কে ছেড়ে দিয়ে বললো..
মিস. তানজুম দেখেছেন আমার সাহস,,,

তানজুম বেআক্কেল মতো তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে… আর সবাই তাকিয়ে আছে ওদের দুই জনের দিকে।

ওইদিকে…

নীল অভ্রর সামনে থেকে তো চলে আসলো,,
আর নিজে নিজেই বক বক করতে লাগলো..

নীল– অসভ্য, বাজে লোক বাঁদর কোথাকার নিজেকে কি ভাবে হে
নিজেকে দেখেছে কখনো আয়নায়

(অভ্র পিছন থেকে বলে উঠলো..)

অভ্র– রোজ দেখি সোনা
আর আমি অসভ্য হই আর যতই বাজে হোই না কেনো
আমি শুধু তোমারই বাবু

নীল– আপনি আবার আমার পিছু নিচ্ছেন
পর্ব → ৬
_______

নীল– আপনি আবার আমার পিছু নিচ্ছেন

অভ্র– রাগ করো কেনো কলিজা আমি তো তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি…

নীল— ঠাসসসসসসসস,,,

(আপনারা ঠিক ভাবছেন সোজা অভ্র চৌধুরীর গালে মিস নীলাঞ্জনা নীল চড় মেরেছেন)…

নীল– আপনাকে বলছি তো আমি আপনাকে পছন্দ করি না ভালোবাসি না তবুও কেনো বিরক্ত করেন আমাকে,,,

আমি এইসব পছন্দ করি না বিরক্তিকর লাগে আমার
আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না প্লিজ…. ( কথা গুলো বলতে বলতে কেঁদে দেলো নীল)

অভ্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে…

অভ্র– নীল চাওনা আমি তোমার আশেপাশে ঘুরঘুর করি তাই তো..

নীল– হ্যা তাই চাই না

অভ্র– ওকে আমি আর আসবো তোমার সামনে
ভালো থেকো নীল…
কিন্তু এটা সত্যি আমি তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি…
তোমাকে ছাড়া থাকা অনেক কঠিন নীল
তবুও আমি কষ্ট সয়ে নেবো শুধু তোমার জন্য…
যাওয়ার আগে একটা শেষ কথা বলবো উত্তর দিবে আমার প্রশ্নের…?

নীল— চুপ… ( আর কেঁদেই যাচ্ছে )

অভ্র— নীল কান্না বন্ধ করো তোমার কান্না আমি সইতে পারি না প্লিজ বন্ধ করো…

নীল– জি বলেন কি প্রশ্ন…/ ( অভ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে নীল দেখলো অভ্র কাঁদছে )

অভ্র– শেষ প্রশ্ন,, তোমার লাইফে কি অন্য কোনো ছেলে আছে যাকে তুমি পছন্দ করো বা ভালো বাসো??
মিথ্যে বলবে না নীল সত্য কথা বলবে…

নীল— আমার লাইফে কোনো ছেলে নাই আর না থাকবে… (কান্না থামিয়ে)

অভ্র– তার মানে, তুমি কাউকে ভালো বাসো না…!

নীল– নাহ…

অভ্র– ওকে আল্লাহ হাফেজ ভালো থাকো… ( অভ্র চলে গেলো আর একবারও পিছনে ফিরে তাকালো না)

নীল অভ্রর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে..

ওদের দুজনের সব কথাই ওরা দূর থেকে শুনেছে।

অভ্রকে চলে যেতে দেখে আকাশ ও শুভ ওর পিছনে চলে গেলো।

আর তানজুম তানিয়া কাজল নীলের কাছে এসে ওকে সাথে নিয়ে নীলের বাড়িতে পৌঁছে দেয়…

তারপর যে যার বাড়ি চলে যায়…

গভীর রাত হয়ে গেছে ওইদিকে
অভ্র এখনো বাড়ি ফেরেনি… এত লেট অভ্র কখনো করে না আর সাথে ফোনটাও বন্ধ…

মিসেস চৌধুরী অনেক ভয় পেয়ে যান আর রাতে
আকাশকে কল করে জানতে পারে
অভ্র ওর সাথে নেই,,

মিসেস চৌধুরী– তাহলে কোথায় আমার ছেলে অভ্রর কোনো বিপদ হয়নি তো .. (
কান্না করে দিছে)

আকাশ– আন্টি কাঁদবেন না প্লিজ আমি আর শুভ এখনো যাচ্ছি অভ্র কে খুঁজতে..

আকাশ শুভকে কল দিয়ে সব বলে আর সাথে ওকে খুঁজতে বের হয়ে যায়…!

এই দিকে…

নীল এখনো ঘুমাইনি সে এত রাত পর্যন্ত কখনো জেগে থাকে না,,,
আজ তার চোখে ঘুম নেই…

নীল বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় চলে যায়,,,

নীল– আকাশে আজ অনেক মেঘ বৃষ্টি হতে পারে..

(কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নীল রুমে চলে গেলো আর শুয়ে ঘুমিয়ে পরলো)

আকাশ আর শুভ অভ্র কে খুঁজতে খুঁজতে অস্থির হয়ে পরে আর ফোনও বন্ধ বার বার কল দিয়েই যাচ্ছে..

কিছুদূর আসার পর শুভ দেখতে পেলো…

রাস্তার পাশে একটা ছেলে বসে আছে আর ছেলেটার সাথে একটা কুকুরও আছে,,,
ছেলেটা কুকুরটার সাথে কি জেনো কথা বলছো আর হাত থেকে রুটি ছিড়ে দিচ্ছে কুকুরটা খাচ্ছে…

শুভ আকাশকে ডেকে বলবো

শুভ– ওই দেখ আকাশ ওই ছেলেটাকে দেখতে অভ্রর মতো লাগছে..

আকাশ– সালা ওটা অভ্রর মতো লাগছে না
ওইটা অভ্র-ই চল.. তাড়াতাড়ি

আকাশ আর শুভ অভ্রর কাছে গিয়ে বসলো,,,
অভ্র ওদের দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারলো না।
(ওদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পরলো)
আমরা জানি ছেলেরা কান্না করতে পারে না বা করে না,, এটা ভুল ছেলেরা কান্না করে ঠিক তখনি করে যখন তারা অতিরিক্ত কষ্ট পায় তখন কান্না করে।

আকাশ — শুভ ওকে ধর,,, অভ্র চল বাড়ি চল..

অভ্র– আমি কি ভালোবেসে ভুল করি তোরা বল

শুভ– তুই এখন আমাদের সাথে বাড়ি চল,, আমরা কাল কথা বলবো.. প্লিজ ভাই চল আন্টি কান্না করছে তোর জন্য টেনশন করছে চল…

অভ্রকে নিয়ে চলে আসে আর রাতে ওরা অভ্রর সাথে ওর বাড়িতেই থাকে…

পরদিন সকালে….

চলবে….????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here