অমানিশা❤️,পর্ব-১৪,১৫
লেখিকা_মালিহা খান❤️
পর্ব-১৪
সেদিন রাতে মাহতাব সাহেব ফিরতে বেশ দেরি করলেন। ঘড়ির কাঁটা রাত সাড়ে এগারোটার ঘর পেরিয়ে গেলো চোখের পলকে, তবু তিনি ফিরলেননা।
বারান্দার রেলিংয়ে ঝুঁকে দাড়িয়ে আছে মুনতাহা। যতটুকু দেখা যায় ততটুকুতেই চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে চাতকের মতো। মুখে তার প্রকট উৎকন্ঠা, ভীত দৃষ্টি। চোখজুড়ে একটাই প্রশ্ন, “বাবা আসছেনা কেনো?”
আরশাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কোল থেকে ল্যাপটপ নামিয়ে বিছানা ছেড়ে মুনতাহার পাশে যেয়ে দাড়ালো। মুনতাহা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো একবার। মূহুর্তেই একটা অসহায় চাহনীতে বুক কাঁপিয়ে আবার মনোযোগ দিলো রাস্তার কালো পিচে।
আরশাদ আবারো গোপনে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। মেয়েটা বাবাকে এতো ভালোবাসে।। এই যে বিয়ের পড়েও একটা দিন তার সাথে থাকেনি। তবু কিছু বলেনি। তার সাহস-ই হয়না কিছু বলার।
মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো আরশাদ। বলল,
—“চলে আসবে মুনতাহা। হয়তো কোনো কাজে আটকে গিয়েছে।”
মুনতাহা মাথা ঝুঁকিয়ে ফেলল ধপ করে। ঠোঁট কামড়ে ধরে বলল,”কাজ থাকলে ফোন ধরছেনা কেনো?” এটুকু বলতেই চাপা স্বরে ডুঁকরে উঠল চিকন কন্ঠ। বাধা দিতে চোখ বুজে ফেলতেই কান্নাগুলো চিপড়ে চিপড়ে বের হয়ে গেলো যেনো। ঘন পাপড়ি ভিজলো। এক দু’ফোটা জায়গা করতে না পেরে গালেও গড়ালো। আরশাদ অস্হির হয়ে উঠলো,”আহা! এটুকুর জন্য কাঁদতে হয় নাকি? ফোন সাইলেন্ট হয়ে থাকতে পারে। শুনেননি হয়তোবা। চলে আসবে এক্ষুণি।”
মুনতাহা হেঁচকি তুললো। কান্না বাড়লো বই কমলোনা। আরশাদ জোর করে গাল ধরে মুখ তুললো। চোখ মোছালো। বলল,
—“আপনি ঘুমান যেয়ে। আংকেল আসলে আমি ডেকে দিবো। ঠি কাছে?”
মুনতাহা মাথা নাড়ায়। সে যাবেনা। আরশাদ অপ্রতিভ হয়ে বলে,”কি না?”
মুনতাহা হাতের পিঠে ঠোঁটের কাছে জমা হওয়া পানি মুছে। চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,”ঘুমাবোনা।”
আরশাদ জোর করলোনা। করেওনি কখনো। মেয়েটার জোর নেয়ার অভ্যাস নেই ছোট থেকে। মাহতাব সাহেব বলেছিলেন সেদিন। তিনি কখনো জোর করেননি মেয়েকে। সে কেনো করবে?
রাত বারোটার পর যেয়ে একটা রিকশা ভিড়িলো গেটের কাছে। মুনতাহা তখনো ঠাঁই দাড়িয়ে আছে। আরশাদ একটু রুমে এসেছিলো ফোন নিতে। মুনতাহা হুড়মুড় করে ঢুকলো ভেতরে। বালিশের পাশে রাখা ওড়নাটা তুলে গায়ে জড়াতে জড়াতে বলল,”আব্বু এসেছে।”
আরশাদ হাসলো। যাক, অমাবস্যার অন্ধকার সরেছে চাঁদের মুখ থেকে। আলমারি খুলে পাতলা গেন্জি বের করতে করতে সে হাঁক ছাড়লো,
—“দাড়ান, আম্মারা ঘুমিয়ে পড়েছে। বাইরে অন্ধকার। আমি দিয়ে আসি।”
মুনতাহা শ্বাস আটকে অপেক্ষা করলো। আরশাদ দু’সেকেন্ডের মাথায় টি-শার্ট চাপিয়ে বেরোলো তাকে নিয়ে। মাহতাব সাহেব সিঁড়ি বেয়ে উঠছিলেন। আরশাদ দরজা খুললো তখনই। সিঁড়ির লাইট জ্বালানো নেই। মুনতাহা বেরিয়ে দাড়ালো অন্ধকারেই। মাহতাব সাহেব উঠেই হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নিলেন তাকে। মাথায় ছোট্ট একটা চুমু খেয়ে পাশে দাড়িয়ে থাকা আরশাদকে বললেন,”কান্না করেছে?”
আরশাদ মুখে কিছু বললোনা। তবে চোখের ইশারায় মৃদু মাথা দুলালো। মাহতাব সাহেব বুঝলেন, মেয়ে কেঁদেছে। হায় আল্লাহ! মেয়েটা একটু সময় থাকতে পারেনা তাকে ছাড়া। এতদিন কিভাবে থাকবে?
আরশাদ বসে আছে সোফায়। মাহতাব সাহেব বসতে বলেছেন। কি জরুরি কথা বলবেন। মুনতাহা ঘরে গেছে। দরজা ভেজানো। আরশাদ একবার বন্ধ দরজায় চোখ বুলিয়ে টেবিলে তাকালো। খাবার দাবার সব সাজিয়ে ঘরে গিয়েছে। সবদিকে খেয়াল থাকে এতটুকু মেয়ের।
মাহতাব সাহেব হাত মুখ ধুয়ে আসলেন। সোফায় বসতেই আরশাদ বলল,
—“আপনি খেয়ে আসেন আংকেল। আমি অপেক্ষা করছি। সমস্যা নেই।”
—“না, ঠি কাছে। রাত হয়েছে। অনেকক্ষণ যাবত বসে আছ।” আরশাদ দিরুক্তি করলোনা। মাহতাব সাহেব একটু সময় নিয়ে আবার বলতে শুরু করলেন,
—“যেটা বলছিলাম আরকি। আমার একটু ঢাকার বাহিরে যেতে হবে বাবা। অবশ্য একটু বললে ভুল, যেতে হবে প্রায় সাতদিনের জন্য। আগে কখনো এতদিন কোথাও থাকিনি। হয়তো গিয়েছি, দু’ একদিনে কাজ সেড়েই চলে এসেছি। কারণটা জানোই, মুন একা থাকতে ভয় পায়। খুব বেশি জরুরি না হলে আমি কোথাও থাকিনা। কিন্তু এবার ব্যাপারটা একটু জটিল। তবু তুমি না থাকলে হয়তো আমি দ্বিতীয়বার ভেবে দেখতাম, হয়তোবা শেষমেষ যেতামও না। কিন্তু তুমি থাকায় চিন্তাটা একটু কম। মুন তো প্রায় সময়ই তোমার আম্মার কাছে থাকে, ওর তেমন সমস্যা হবার কথা নয়। তাই বলছি, এই সাতটা দিন ও তোমার কাছে থাকুক। একা খুব ভয় পায়তো রাতে।”
আরশাদ বিনীত ভঙ্গিতে মাথা নাড়ালো। ছোট্ট করে বলল,”আচ্ছা ঠি কাছে আংকেল। আপনি চিন্তা করবেননা।”
মুনতাহা বেরিয়ে এলো তখনই। পরণে কামিজটা বদলে এসেছে। দুপাশে ঝুলছে লম্বা দুই বেণি। আরশাদ হাসলো মনে মনে। মেয়েটা সবসময় পরিপাটি হয়ে ঘুমায়। গুছিয়ে গুছিয়ে চুল বাঁধে। পাতলা আরামদায়ক জামা পরে। সবতেই যেনো পরিচ্ছন্নতা।
মুনতাহা স্বভাবতই প্রশ্ন ছুঁড়ল,”আব্বু খাওনি?”
মাহতাব সাহেব ছোট্ট করে বললেন,”এখানে আয়। বস।”
সবটা শুনতেই মুখটা শুকিয়ে গেলো মুনতাহার। কন্ঠে স্পষ্ট মন খারাপের আভাস নিয়ে বলল,”কেনো? তুমি কেনো যাবে?”
—“কাজ আছে আম্মা। আচ্ছা, তুই মানা করলে যাবোনা।”
মুনতাহা চুপসে গেলো। মন খারাপ হলেও ঠেলেঠুলে বললো,”না যেও। আমি থাকতে পারবো।”
—“আরশাদের কথা শুনবি। কেমন?”
আরশাদ চেয়ে আছে তার মুখের দিকেই। মুনতাহা মাথা কাত করলো। অর্থ্যাৎ,”সে শুনবে।”
চলবে
#অমানিশা❤️
#লেখিকা_মালিহা খান❤️
#পর্ব-১৫
তখন শেষভোর। কৃষ্ণবর্ণীয় কাদম্বিনীর রাজ্যের পূর্বকিনার ঘেঁষে মুঠো মুঠো সিঁদুরগুঁড়ো স্ফুলিঙ্গের মতন ছলকে ছলকে পড়ছে। বিচ্ছুরিত অগোধ রক্তিম আলোর বর্ণখেলায় ক্রমশ মেতে উঠছে ঘরের সাদা মুক্ল, ধবল মেঝে। তখন ধীরে ধীরে সকাল হচ্ছে।
মুনতাহা ঘুম। গভীর ঘুম। বিছানার মাঝখানে সোজা হয়ে শুয়ে আছে তার ছোট্ট দেহ। ঘুমন্ত নিরুপমে আচ্ছাদিত মুখশ্রীতে তেরছাভাবে পড়েছে সূর্যের উত্তপ্ত রশ্নি। মাহতাব সাহেব ধীরপায়ে ঘরে ঢুকলেন। প্রথমেই বাতাসের বলে ফাঁক হয়ে যাওয়া পর্দা টেনে আলোর দুয়ারপথ বন্ধ করলেন। চোখের উপর ছায়া পড়লে মুনতাহা সামান্য নড়েচড়ে উঠে। গলার স্বর্ণের চেইনটা বেণিতে পেঁচিয়ে গেছে।
মাহতাব সাহেব মাথার কাছে বসলেন। না ডাকতেই পিটিপিট করে চোখ মেললো মুনতাহা। মিষ্টি একটা হাসিতে মন ভরে গেলো মাহতাব সাহেবের। আদুরে সম্বোধণের “আম্মা” ডাকে মেয়ের হাসি আরো গাঢ় করে মুখ নামিয়ে চুমু খেলেন কপালের ঠি ক মাঝখানটায়। বললেন,”এতো হাল্কা ঘুম তো তুই ঘুমাসনা। বুঝলি কি করে আমি এসেছি? রাতে ঘুম হয়নি?”
মুনতাহা এবারো হাসলো। উঠে বসে বলল,
—“আমি তোমার গন্ধ চিনি আব্বু। তুমি পাশে বসতেই আমার ঘুম ভেঙে গেলো।”
দরজা খোলা। ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা বাদামী রংয়ের ব্যাগটা দেখা যাচ্ছে। ভেতরে কাপড়চোপড়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মুনতাহা নিজেই গুছিয়ে দিয়েছে রাতের বেলা। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। হাসিটা মিলিয়ে গেলো। মলিন হলো চোখ। কন্ঠ হলো নিষ্প্রান,”তুমি এখনই চলে যাবে আব্বু? মাত্রতো সকাল হলো। একটু পরে যাও।”
—“বাস তো ছ’টায় মা। টি কিট কেটে ফেলেছিনা? স্ট্যান্ডে পৌছোতে সময় লাগবে তো। তোর ঘুম ভাঙাতে চাইনি। একটু দেখতে এলাম, উঠে গেলি। এখন, উঠেই যখন পরেছিস। দরজা টা আটকে দিয়ে যা। আয়।”
মুনতাহার মুখভঙ্গির উন্নতি হলোনা। মাহতাব সাহেব দাড়ালেন। মুনতাহা আবার একটু আবদার করল,
—“আব্বু তুমি তাড়াতাড়ি এসে পড়ো?”
মাহতাব সাহেব আবার ঝুঁকলেন। মাথার দু’পাশের হাত রেখে আবার চুমু খেলেন। মাথায়, কপালে পরপর কয়েকটা চুমু দিয়ে বললেন,
—“আচ্ছা ঠি কাছে, এখন কাঁদবিনা মা। যাওয়ার পরেও কাঁদবিনা।”
মুনতাহা মানলো। কাঁদলোনা। বাবার সব কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলাই যেনো তার একমাত্র কাজ। নেমে গেলো বিছানা থেকে। ঘর থেকে বেরিয়ে ডাইনিং টেবিলে রাখা ব্যাগটা নামালো। চেইন খুলতে খুলতে বলল,”একটু দাড়াও আব্বু, কিছু দিতে ভুলে গিয়েছি নাকি দেখে নেই।”
তখন সূর্যোদয়। পর্দা সরে গেছে আবার। মাহতাব সাহেব সেখানে দাড়িয়েই একবার জানলার বাইরে তাকালেন। আকাশের রক্ত- কৃষ্ণের মিশ্রণে চোখ ধাঁধালো। মূহুর্তেই।
কালো? সে তো শোকের প্রতীক! আর, লাল? লাল তো বিপদ! ঘোর শণি!
এ যেনো এক আশ্চর্য কালোরক্তের ভোর।
–
দুপুরের দিকে কলিংবেল বাজলো। মুনতাহা দরজা খুলতেই আরশাদকে দেখা গেলো দাড়িয়ে থাকতে। পরণে শুধু ট্রাউজার। খালি গা। গলায় তোয়ালে। ভেজা চুলের পানি কাঁধে পড়ছে। কাঁধ থেকে বাহু, বুক, সবখানে।
মুনতাহা কপাল কুঁচকে চোখ নামালো। ঝাঁঝিয়ে উঠে বলল,”আপনি বাসায় থাকেন থাকেন। বাহিরে বের হলেও এমন উদোম গায়ে ঘুরেন কেনো?”
আরশাদ সরু চোখে তাকালো। ভ্রু উচিয়ে বলল,
—“গোসল করলাম মাত্র। ভেজা গায়েই জামা পড়বো?”
—“তো গা মুছতে পারেননা? তোয়ালে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন কেনো?”মুনতাহার পাল্টা প্রশ্ন। কন্ঠে কিন্চিৎ তেজ।
আরশাদ যেনো আকাশ থেকে পড়ল। বিস্ময় নিয়ে বলল,”আপনি তো দেখি রাগও করেন মুনতাহা।”
মুনতাহা উওর দিলোনা। উপরতলা থেকে কে যেনো নামছে। সিঁড়ির ভাঙার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। মুনতাহা সরে দাড়ালো চটপট। ঢোকার জায়গা দিয়ে বলল,”ভেতরে আসেন, মানুষ দেখবে।”
আরশাদ ঢুকলোনা। মনে পড়ল, সেই সন্ধ্যা। সে ফাইল দিতে এসেছিলো, আর মেয়েটা ফাইল নিয়েই মুখের উপর দরজা আটকে দিয়েছিলো। ধুম!
উপরতলা থেকে দুটো মহিলা নেমে এলো। ভাড়াটিয়া। একবার তাদের দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে দ্রুতবেগে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলো। মুনতাহা স্পষ্ট দেখলো তাদের চোখে পরিহাস। আরশাদ আড়চোখে দেখলো। মহিলাদুটো নিচে নেমে যেতেই সেদিনকার মতোই দরজায় ঠেস দিয়ে বলল,
—“আপনার মনে আছে মুনতাহা? আপনি একদিন আমার মুখের উপর দরজা আটকে দিয়েছিলেন?”
মুনতাহা বিশ্রিভাবে মুখ কুঁচকালো। বলল,
—“আপনি ঢুকবেন? কি ভাবলো উনারা। ছিহ!”
আরশাদ ঘাড় বাঁকালো,”কি ভাববে? বাসায় প্রত্যেক তলায় তলায় গুড়ো গুড়ো বাচ্চারা পর্যন্ত দু’তিনটা করে বিয়ের মিষ্টি খেয়েছে। সবাই জানে আমরা বিবাহিত। এত ভাবাভাবির তো কিছু দেখছিনা।”
—“তবুও….ধ্যাত! আপনি আসেননা। বাইরে দাড়িয়ে থাকবেন নাকি?”
আরশাদ ঢুকতে ঢুকতে বলল,
—“আপনি আমাকে কি বলেছিলেন প্রথমদিন মনে আছে?”আব্বু বাসায় নেই। পরে আসেন।” আজকেও তো আব্বু বাসায় নেই। আর আপনি আমাকে ঢোকার জন্য জোর করছেন। সময় কথা বলে। দেখেছেন?
ইশ! আপনি এতো বদলে গেলেন মুনতাহা।”শেষের কথাটায় ঠাট্টার সুর। মুনতাহা পূর্বের স্বর টেনে বলল,
—“আমি মোটেও জোর করিনি আপনাকে।”
—“করেছেন।”
মুনতাহা দরজা আটকাচ্ছে। আরশাদ ঘরের দিকে তাকালো। পড়ার টেবিলে খাতাপত্র খোলা। বলল,”পড়াশোনা করছিলেন নাকি?”
উওর এলো,”হু।”
ঘন্টাখানেকের মধ্য বইপত্র, জামাকাপড় সমেত মুনতাহাকে নিজের ঘরে নিয়ে এলো আরশাদ। বলে দিলো ও বাসায় যেতে না। এখানেই থাকতে। মুনতাহা দিরুক্তি করেনি।
–
মুনতাহা খুন্তি ধরতেই আনতারা না না করে উঠলেন,”এ্যাই না, তুমি পারবানা আম্মু। আমি করছি। তুমি ঘরে যাও।”
মুনতাহা বোকা বোকা চোখে তাকালো। একটু বুঝ হবার পর থেকেই রান্নাঘরের সাথে বিশেষ সখ্যতা তার। একটু আধটু রান্না শেখার পর থেকে আর বাসায় কোনো খালা আসতে মানা করে দিয়েছিলো সে। খালার রান্নার থেকে নিজের রান্নাই ভালো লাগে। কতশত হাত পুড়েছে। আঙুল কেটেছে। বাবা ধমকে ধমকে বলেছে রান্নাঘরে যেতে না তবু সে গিয়েছে।
আনতারা খুন্তি নিয়ে নিজেই পেঁয়াজ ভাজছেন। মুনতাহা মিনমিন করে বলল,
—“আমি পারি মা।”
—“না, না, তেল ছিঁটবে। ঘরে যাও। ঘুমাও গিয়ে একটু। আরশাদ চলে আসবে একটু পর। একা একা লাগছে?”
মুনতাহা হকচকালো। দৃষ্টি বাঁচিয়ে চোরাকন্ঠে বলল,”নাহ্, না তো।”
চলবে