#অরুণিকা
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-১৪||
২৭.
মাওশিয়াতের দৃষ্টিতে অস্থিরতা। আর ইমনের দৃষ্টি মাওশিয়াতের দিকেই স্থির। তাদের শ্রেণিকক্ষে তিনটি সারি। মাওশিয়াত সবসময় শুরুর সারিতে প্রথম বেঞ্চেই বসে। আর ইমন মধ্যের সারিতে তৃতীয় বেঞ্চে আহনাফ আর তাহমিদের সাথে বসবে। এটাই তাদের প্রতিদিনকার বসার নিয়ম। তবে ইভান আর আরাফ মধ্যের সারিতে প্রথম বেঞ্চে বসবে, আর তূর্য একদম শেষ বেঞ্চে। আজ প্রথম বেঞ্চে অন্য কেউ বসেছে। কারণ আরাফ আর ইভান স্কুলে আসে নি। শুধু ইমন আর তূর্যই এসেছে। আর ইভানকে না দেখেই মাওশিয়াতের দৃষ্টিতে এমন অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্লাস শেষে মাওশিয়াত ইমনের সামনে এসে দাঁড়ালো। ইমন চুলে হাত চালাতে চালাতে বলল,
“অনেকদিন পর দেখা হলো।”
মাওশিয়াত মুচকি হেসে বলল,
“হুম, শুনলাম তুমি অসুস্থ ছিলে! এখন কেমন আছো?”
“একদম ফিট।”
“আচ্ছা, ইভানকে দেখছি না!”
“ভাই অসুস্থ, তাই আজ আসে নি।”
মাওশিয়াত চিন্তিত কন্ঠে বলল,
“কি হয়েছে ইভানের?”
“জ্বর ছিল। তবে আজ একটু কমেছে। আরাফও অসুস্থ। ওরও জ্বর। আহনাফ হয়তো কাল থেকে আসবে।”
“ওহ।”
মাওশিয়াত অন্যমনস্ক হয়ে ইমনকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই ইমন বলল,
“চলো, এখন তো ব্রেক আছে। একটু বসি কোথাও।”
“না, আমার এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।”
মাওশিয়াত চলে গেলো। আর ইমন মলিন মুখে তার যাওয়া দেখছে। বাসায় এসেই ইমন ইভানকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“ভাই, আমি যখন অসুস্থ ছিলাম মাওশিয়াত আমার কথা জিজ্ঞেস করেছিল?”
ইভান সেই মুহূর্তে খাচ্ছিলো। সে খাওয়া বাদ দিয়ে ইমনের দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকালো। ইমন বলল,
“এভাবে দেখিস না। তাড়াতাড়ি আমার প্রশ্নের উত্তর দে।”
ইভান কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। ইমন তাড়া দিয়ে বলল,
“এতো ভেবে উত্তর দিচ্ছিস কেন?”
ইভান বলল,
“আগে এটা বল, তোর মাওশিয়াতের ব্যাপারে এতো আগ্রহ কেন?”
“তুই প্রসঙ্গ পাল্টাচ্ছিস কেন? আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দে।”
“হ্যাঁ, করেছিল।”
ইমন কথাটি শুনে এক গাল হেসে বলল,
“আচ্ছা আমি গোসল সেরে আসছি। আমার জন্য খাবার তুলে রাখিস।”
ইভান ইমনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“মাওশিয়াতের ব্যাপারে ওতো ঘাঁটাঘাঁটি করিস না। ও তোর জন্য ভালো হবে না।”
ইমন ইভানের দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকালো। ইভান ইমনের দিকে তাকিয়ে বলল,
“দেখ, মেয়েটাকে আমার সুবিধার মনে হয় না। ও স্বার্থ দেখে বন্ধুত্ব করে। আর প্রচন্ড অহংকার ও জেদ নিয়ে চলাফেরা করে। তুই ওকে নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করিস না।”
এবার তূর্য বলল,
“আমি তো ইমনকে বলেছি, মেয়েটাকে আমার মোটেও ভালো লাগে না। কারো সাথেই কথা বলে না। ইভানের সাথে ভাব জমিয়েছে ও ভালো ছাত্র তাই।”
তাহমিদ বলল,
“তাহলে ইমনের সাথে বন্ধুত্ব করেছে কেন?”
“হয়তো ইভানের সাথে ভাব জমানোর জন্য।”
ইমন কথাগুলো শুনেই দমে গেল৷ সে তাড়াতাড়ি কাপড় বের করে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
বিকেলে গেইটে শব্দ হওয়ায় দরজার কাছে গিয়ে ইমন অবাক হলো। মাওশিয়াত হাত নাড়িয়ে বলল,
“বাসায় ঢুকতে দেবে না?”
ইমন গেইট খুলে মাওশিয়াতকে ভেতরে আনলো। ঘরে ঢুকেই মাওশিয়াত পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে নিলো।
মনে মনে বলল,
“এইটুকু ঘরে ছ’জন!”
বাম পাশের খাটে আরাফ ঘুমাচ্ছে। আর তার পাশেই শুয়ে শুয়ে ফোন চালাচ্ছে তূর্য। ডান পাশের খাটে অরুণিকা ঘুমাচ্ছে। আর মেঝেতে বেড বিছিয়ে ঘুমাচ্ছে ইভান। তাহমিদ বসে বসে পড়ছে। তার অনেক দিনের পড়া জমে গেছে। এতোদিন অসুস্থ থাকায় একটুও পড়া হয় নি। তাই আপতত দোকান না খুলে সে পড়াতেই মনোযোগ দিয়েছে। আর আহনাফ সেই মুহূর্তে বাসায় ছিল না। সে দোকানে গিয়েছিল।
মাওশিয়াতকে দেখে তূর্য বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো। এরপর ইমনের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। মাওশিয়াত আশেপাশে তাকিয়ে তাহমিদকে পড়তে দেখে বলল,
“এই বেলায় কেউ পড়ে?”
তাহমিদ মেয়েলী কন্ঠ শুনে বইয়ের পাতা থেকে চোখ তুলে মাওশিয়াতকে দেখে চমকে উঠলো। অবাক কন্ঠে বললো, “তুমি এখানে?”
মাওশিয়াত তার কাঁধের ব্যাগ থেকে একটা থলে বের করে বলল,
“তোমাদের দেখতে এলাম।”
এরপর সে ইমনের হাতে থলেটা ধরিয়ে দিয়ে তাহমিদের দিকে এগিয়ে এসে বইটা দেখে বলল,
“বাহ! সবই তো পড়ে ফেলছো! তবে তোমার আগে আরো অনেকেই আছে।”
তাহমিদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“অনেকদিন অসুস্থ ছিলাম, তখন একটুও পড়াশুনা হয় নি। তাই এখন একটু পড়তে বসলাম। সামনে তো বার্ষিক পরীক্ষা।”
মাওশিয়াত পাশ ফিরে অরুণিকাকে দেখে ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“এটা আবার কে?”
কাছে গিয়ে অরুণিকার মুখের উপর থেকে কাঁথাটা সরিয়ে বলল,
“এই পিচ্ছিটা কে?”
তূর্য বলল,
“আমার টুইংকেল।”
“টুইংকেল! তোমাদের বোন?”
তাহমিদ তূর্যের দিকে শীতল দৃষ্টিতে তাকালো। ইমন বলল,
“হ্যাঁ, আমাদের বোন।”
মাওশিয়াত ভ্রূ কুঁচকে বলল,
“আমি তো কথার কথা বলেছি। কিন্তু তোমাদের বোন কিভাবে হলো? তুমি আর ইভানই তো আপন ভাই। বাকিরা তো তোমাদের বন্ধু। তাহলে এ মেয়ে কার বোন? তোমাদের নাকি..”
তাহমিদ বলল,
“আমার বোন। আমার আপন বোন।”
হঠাৎ আরাফ নড়েচড়ে তূর্যকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল,
“বকবক করছিস কেন? চুপ কর, মাথা ব্যথা করছে।”
তূর্য বলল, “মাওশিয়াত এসেছে।”
আরাফ তূর্যের দিকে তাকিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো। মাওশিয়াত অরুণিকার পাশে বসে আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কেমন লাগছে এখন?”
আরাফ বলল, “মোটামুটি।”
“আচ্ছা। ইভান নিচে ঘুমাচ্ছে কেন? ওর ঠান্ডা লাগবে না?”
তাহমিদ বলল, “নিচে বেড আছে।”
“তা তো দেখছিই। আচ্ছা, তোমরা রাতে কোথায় ঘুমাও?”
“এখানেই।”
“তুমি তোমার বোনের সাথে থাকো, তাই না?”
আরাফ ভ্রূ কুঁচকে মাওশিয়াতের দিকে তাকালো। তূর্য আরাফের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল,
“তাহমিদ ওকে বলেছে টুইংকেল ওর আপন বোন।”
আরাফ বিড়বিড় করে বলল,
“এই মেয়ে এখানে কেন এসেছে? ও তো জানে আমরা আপন ভাই না। আর এলাকার সবাই জানে আমরা ভাই ভাই। এখন সত্যটা জানাজানি হয়ে গেলে?”
“ধুর, ও কি মাইক নিয়ে বলবে নাকি আমরা আপন ভাই না। ও এসেছে, আবার চলেও যাবে।”
“রাস্তায় কেউ যদি ওকে দেখে জিজ্ঞেস করে?”
“চিন্তা করিস না। ওকে আমি নিজেই গাড়িতে তুলে দেবো। এই মহল্লা থেকে বের না হওয়া অবধি ও আমার নজরে থাকবে। দেখছিস না, এখনই এসে জিজ্ঞেস করছে টুইংকেল কার বোন!”
“এই মেয়ের এতোকিছু জেনে কি হবে?”
“আল্লাহই জানে। আমাদের উপর পি.এইচ.ডি করে ফেলবে মনে হয়।”
মাওশিয়াত ইভানের ঘুম ভাঙার অপেক্ষায় ছিল। ইভান উঠতেই সে ইভানের পাশে বসে বলল,
“ইমন বলল তুমি অসুস্থ। তাই আমি তোমার জন্য ফলমূল নিয়ে এসেছি।”
এবার তূর্য বলল,
“শুধুই কি ইমন অসুস্থ? আরাফও তো অসুস্থ। এখন ফলগুলো কি শুধু ইভানই খাবে?”
“আরেহ না। তোমরাও খাবে। আমি তো এমনিতেই বললাম।”
অরুণিকা অনেকের কন্ঠ শুনে ঘুম থেকে উঠে বসলো।মাওশিয়াত তার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে বলল,
“হাই, কেমন আছো বাবু?”
অরুণিকা মাওশিয়াতের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বিছানা ছেড়ে নেমে আরাফের কাছে ছুটে গেলো। এটা অরুণিকার প্রতিদিনকার অভ্যাস। সে ঘুম ভাঙলেই আরাফের কোলে উঠে বসে থাকবে। আর তার কোলেই বাকি ঘুম কাটিয়ে সে নেমে পড়বে। এই কাজটা তার বাবার ছিল। এখন সেই কাজটা আরাফের উপর এসেছে।
মাওশিয়াত আরাফকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“মনে হয়, তাহমিদের চেয়ে ও তোমার প্রতি একটু বেশিই দুর্বল।”
ইমন বলল,
“আরেহ, তাহমিদ সকালে ওকে বকেছিল। তাই তাহমিদের সাথে রাগ করেছে।”
“ওহ আচ্ছা, তাই বলো।”
মাওশিয়াত অরুণিকার কাছে এসে বলল,
“হাই, বাবু কথা বলবে না?”
অরুণিকা মাথা নেড়ে না বললো। আরাফ অরুণিকার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাওশিয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“ও ঘুম থেকে উঠলে কারো সাথে কথা বলে না।”
“ওহ আচ্ছা। কি নাম ওর?”
“অরুণিকা।”
তাহমিদ তূর্যকে ইশারায় বললো, মাওশিয়াতকে তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। তূর্যও কথার ফাঁকে বলল,
“আমি এখন বের হচ্ছি। মাওশিয়াত, চলো তোমাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেই।”
মাওশিয়াত বসা থেকে উঠে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলল,
“তুমি ক্লাসে কখন আসবে?”
ইভান বলল, “যখন সুস্থ হবো।”
“আমি চাই, তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ক্লাসে আসো।”
কথাটি বলে মাওশিয়াত মুচকি হেসে বিদায় নিলো। ইভানও সৌজন্যমূলক হাসি ফেরত দিলো। আর ইমন তাদের দুইজনের দিকে চেয়ে রইলো।
রাতে খাবারের সময় সবাই গোল হয়ে বসে খাচ্ছিলো। তখনই ইমন ইভানকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“একটা বিষয় বুঝলাম না। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম, তুই মাওশিয়াতকে বলেছিস। তবুও ও আমাকে একবারও দেখতে এলো না। অথচ তোকে দেখতে এলো। কেন ভাই? তোর সাথে তো ওর তেমন বন্ধুত্বও নেই।”
ইভান ইমনের দিকে ভাবুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
“জানি না। আমি কিভাবে বুঝবো? আমার ওকে মোটেও পছন্দ না।”
“তোর তো কোনো মেয়েই পছন্দ না। মনে আছে, মা কি বলতো? মা বলতো তুই নাকি বউ মেরে আসামী হবি।”
ইভান দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“আমি রাগী স্বভাবের, তাই বলতো।”
“ভাই, আমি চাই না মাওশিয়াত তোকে বেশি গুরুত্ব দিক। তুই ওর থেকে একটু দূরে থাকিস।”
আহনাফ খাওয়া বাদ দিয়ে বলল,
“তোর মনে ভালোবাসার ফুল ফুটেছে নাকি? ইমন, তুই কিন্তু আমাদের ছোট!”
“তো, তাও একবছরের। কিন্তু এখন তোরা সবাই আমার ক্লাসে পড়ছিস।”
তাহমিদ বলল,
“ওটা পরিস্থিতির জন্য হয়েছে। আর একমাস পর আমাদের এস.এস.সি পরীক্ষাটা ছিল। কিন্তু তখনই দেশ ছাড়তে হয়েছে। নয়তো এতোদিনে আমরা কলেজের সিনিয়র হতাম।”
ইমন বলল,
“থাক, বয়স অনুসারে আমরা ঠিকই আছি।”
তাহমিদ আবার জিজ্ঞেস করলো,
“আচ্ছা, তোদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? কি করবি এরপর?”
আরাফ বলল,
“মেডিক্যালের জন্য পড়াশুনা করবো।”
আহনাফ বলল,
“আমার তো টাকা প্রয়োজন। ভাবছি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়ে টেকনিক্যাল কাজগুলো শিখবো। এটা আমায় কাজ দেবে, অভিজ্ঞতাও হবে।”
ইমন বলল,
“আর আমার ফুটবল খেলার স্বপ্ন কি পূরণ হবে না?”
আহনাফ বলল,
“আগে স্কুলের ফুটবল ম্যাচে অংশগ্রহণ কর। যদি জিততে পারিস। সব সেট হয়ে যাবে।”
তূর্য বলল,
“ওহ, হ্যাঁ, আমাদের তো আগামী সপ্তাহ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে। আমি তো ভাবছি গানে দেবো।”
ইভান জিজ্ঞেস করলো,
“তাহমিদ, তুই কি দিবি?”
“খাবার তৈরী করার প্রতিযোগিতা থাকলে অবশ্যই দিতাম। কিন্তু এখন পড়াশুনা করতে হবে। পরীক্ষা ভালো না হলে, আরেক ঝামেলা। আর্থিক সহযোগিতার জন্য একটা আবেদন পত্র লিখবো। তাই আমাকে ভালো একটা নম্বর তুলতে হবে।
আরাফ অরুণিকার দিকে তাকিয়ে বললো,
“আগামী বছর অরুকে স্কুলে দেবো।”
অরুণিকা আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমি তোমাদের মতো স্কুলে যাবো?”
“হ্যাঁ।”
“আমার ব্যাগ লাগবে, ড্রেসও লাগবে। কার্টুন বক্স লাগবে।”
ইভান বলল,
“হয়েছে, তার সব লাগবে। শুধু পড়াশুনা করতে বসলেই যতো অসুস্থতা!”
অরুণিকা মলিন মুখে ইভানের দিকে তাকালো। আরাফ তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“এখন পড়তে হবে না। খেয়ে নাও।”
অরুণিকা আরাফের কানের কাছে এসে বলল,
“আরাফ, তুমি ওই পঁচা ছেলের সাথে কথা বলবে না। কেমন?”
“আচ্ছা, বলবো না।”
ইভান ভ্রূ কুঁচকে বলল, “কি বললো ও?”
অরুণিকা মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“তোমাকে বলবো না। এটা আমার আর আরাফের সিক্রেট।”
চলবে-