#অরুণিকা
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
||পর্ব-৪৩||
৭৩.
হলুদ শাড়ি আর ফুলের গহনার আবরণের ঢাকা পড়ে গেছে একটা বিধ্বস্ত মন। পিঁড়িতে পুতুলের মতো বসে আছে শতাব্দী। সবাই একে একে এসে তার গায়ে হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে, আর তার দেহটা যেন সেই হলুদের স্পর্শে শিউরে উঠছে। সে নিজেও জানে না সে কোন ভাবনায় ডুবে আছে। কিছু এলোমেলো আলোছায়া তার মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই আলোছায়ার ভীড়ে ভেসে উঠছে প্রথম দেখা তাহমিদের সেই বিরক্তিমাখা মুখ, রোদে রাঙা হয়ে যাওয়া গাল, অসহায় চোখ, প্রশান্তির হাসি। এসব ভাবতে ভাবতেই তার চোখ দু’টি ছলছল করে উঠলো। এতোক্ষণ তার চোখ জোড়া পায়ের নখের দিকেই স্থির ছিল, এবার সে চোখ জোড়া উপরে তুলতেই সভার ভীড়ে সবুজ পাঞ্জাবি পরা সেই ছেলেকে দেখতে পেলো, যাকে সে এতোক্ষণ মনের আলোছায়ার ভীড়ে খুঁজছিল।
এদিকে তূর্য আর অরুণিকা শতাব্দীর সামনে এসে দাঁড়ালো। অরুণিকা হাঁটু গেড়ে বসে বলল,
“শতাব্দী দিদি, তুমি আমাদের ফেলে চলে যাবে?”
অরুণিকার মুখে ‘শতাব্দী দিদি’ ডাকটা শুনে শতাব্দীর ভেতরটা আরো খালি হয়ে গেলো। শতাব্দী কাঁপা কন্ঠে বললো,
“ছোট সখী, এভাবে পর করে দিলে আমায়? আমাকে শতু আপু ডাকবে না?”
অরুণিকা তূর্যের দিকে একবার তাকালো, তারপর বলল,
“আমি তো চেয়েছি তোমাকে আমার আপু করে নিয়ে যেতে। তুমিই তো দিদি হয়ে গেলে। কি হতো তাহমিদকে বিয়ে করলে? তুমি সবসময় আমার সাথেই থাকতে পারতে।”
তূর্য অরুণিকার হাত ধরে ইশারায় তাকে চুপ থাকতে বললো। শতাব্দী মলিন হেসে বলল,
“আমার তো আপু হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। ঈশ্বর এটাই চেয়েছিলেন। উনি আমাকে তোমার দিদি বানিয়েই পাঠিয়েছিলেন।”
আহনাফ তূর্যের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
“কংগ্রাচুলেশন। নতুন জীবন সুখের হোক।”
শ্রীজা এসে অরুণিকার হাত ধরে বলল,
“দিদিকে হলুদ লাগিয়ে দাও।”
অরুণিকা হলুদ লাগিয়ে দিয়ে শতাব্দীকে বলল,
“জানো, কাল আমি তাহমিদকে প্রথম কাঁদতে দেখেছি।”
শতাব্দী চোখ বড় বড় করে অরুণিকার দিকে তাকালো। অরুণিকা আবার বলল,
“ও কারো সামনে কাঁদে না। ওয়াশরুমে গিয়ে কাঁদে। ওর চোখ অনেক লাল হয়ে যায়। সায়ন্তনী আপু মারা যাওয়ার পর আরাফ যেভাবে কাঁদতো, এখন ঠিক সেভাবেই তাহমিদ কাঁদে। আমি আগে কখনো তাহমিদকে কাঁদতে দেখি না। ও কেন কাঁদে জানো?”
শতাব্দীর গলায় কিছু একটা আটকে যাচ্ছিল। সে কোনো শব্দ বের করতে পারছিলো না। তবুও অনেক কষ্টে অরুণিকার হাত ধরে কাঁপা কন্ঠে বলল,
“বলো না সখী। শুনতে পারবো না।”
অরুণিকা আরো কিছু বলতে যাবে তখনই আহনাফ বলল,
“অরু, এদিকে আসো।”
অরুণিকা নামতেই আহনাফ তার হাত ধরে অন্যদিকে নিয়ে গিয়ে বলল,
“শতাব্দীকে তাহমিদের ব্যাপারে কোনো কথা বলবে না!”
“কেন?”
“তুমি এসব বুঝবে না। এখন এসব বললে ঝামেলা হবে। তুমি কি চাও কোনো ঝামেলা হোক?”
“না, আমি কেন চাইবো? আমি তো চাই, ওরা দু’জন…!”
আহনাফ অরুণিকাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
“তোমাকে প্রেম গুরু হতে হবে না। তুমি বয়সে অনেক ছোট। আমাদের এসব বুঝার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। যেখানে আমরা চুপ করে আছি, সেখানে তোমাকে বুঝতে হবে, এটা সম্ভব না, তাই আমরা চুপ করে আছি।”
এদিকে ইমন আর মাওশিয়াত শতাব্দীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একপাশে গিয়ে বসলো। ইভান মেহমানদের খাওয়া-দাওয়ার দেখাশুনায় মাস্টারমশাইকে সাহায্য করছে। আরাফ তাহমিদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তাহমিদ দূর থেকেই শতাব্দীর দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকক্ষণ পর তূর্য এসে বলল,
“তুই শতাব্দীর সাথে কথা বলবি না?”
তাহমিদ মাথা নেড়ে সামনে পা বাড়ালো। তাহমিদ কাছাকাছি যেতেই শতাব্দী পিঁড়ি থেকে উঠে দাঁড়ালো। তার মা কাছে আসতেই সে বলল,
“মা, স্নান করিয়ে দাও। গা জ্বলছে।”
শতাব্দী ভেতরে চলে যেতেই তাহমিদ অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। শ্রীজা হঠাৎ কোথা থেকে এসে তাহমিদের হাতে একটুখানি হলুদ লাগিয়ে দিলো। তাহমিদ সাথে সাথেই চমকে উঠলো। শ্রীজা বলল,
“শুনেছি, কনের গায়ে লাগানো হলুদ তার বরের গায়েই লাগে। যদিও এটা কতোখানি সত্য তা আমি জানি না। কিন্তু যদি সত্য হয়, তাহলে দেখবে তুমিই আমার দাদা হবে।”
তাহমিদ পকেট থেকে রোমাল বের করে হলুদগুলো মুছে নিলো। শ্রীজা তা দেখে বলল,
“দাদা, দিদি তোমাকে অনেক ভালোবাসে। তুমি দিদিকে নিয়ে পালিয়ে যাও। তোমরা তো দেশে চলে যাবে। ওখানে নিয়ে গেলে এরা আর দিদিকে খুঁজে পাবে না।”
তাহমিদ কোনো উত্তর দিলো না। শ্রীজা মলিন হেসে বলল,
“দিদি ঠিকই বলেছে, তুমি তোমার কষ্ট লুকিয়ে রাখতে পারো না। তোমার চোখ দেখলেই সব বোঝা যায়।”
তাহমিদ চোখ বড় বড় করে শ্রীজার দিকে তাকালো। শ্রীজা আবার বলল,
“সবার চোখেই হাসি। শুধু তোমার চোখে বিষন্নতা। কেন দাদা? তুমি কষ্ট পাচ্ছো, তাই তো!”
“এমন কিছুই না।”
তাহমিদ কথাটি বলেই সরে গেলো। তারপর আরাফের সামনে এসে বলল,
“আমি বাসায় যাচ্ছি।”
আরাফও তাহমিদকে আটকাতে পারছিলো না। সে ইভানকে এসে বলল,
“আমি তাহমিদের সাথে বাসায় চলে যাচ্ছি।”
এদিকে ইভান অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করার সময় খেয়াল করল, একটা অর্ধ বয়ষ্ক লোক বাইরের চেয়ারে বসে খুব মনোযোগ দিয়ে ইমন আর মাওশিয়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। ইভান কিছুটা সামনে এগুতেই সালেহ আলী তার সামনে এসে দাঁড়ালো। ইভান তাকে দেখেই বলল,
“কেমন আছেন, চাচা?”
সালেহ আলী ব্যস্ত কন্ঠে বললেন,
“আমি তো ভালো আছি। তুমি এখানে কি করছো? তুমি আমাদের মেহমান। চলো, ওখানে বসো গিয়ে।”
সালেহ আলী তাকে টেনে নিতেই সে পেছন ফিরে দেখলো, সেই লোকটি আর সেখানে নেই। ইভানের এবার সন্দেহ হলো। সে সালেহ আলীর সাথে কথা বলার মাঝেই মেসেজ করে বাকিদের বিষয়টা জানিয়ে দিলো। আরাফ ততোক্ষণে তাহমিদকে নিয়ে বাসায় পৌঁছে গেছে। সে দেখলো, ইভান গ্রুপে মেসেজ দিয়েছে,
“কেউ একজন আমাদের উপর নজর রাখছে। অরুণিকার উপর নজর রাখিস।”
আরাফ মেসেজটি দেখেই তাহমিদকে বলে বাসা থেকে বের হতে যাবে তখনই তাহমিদ এসে দরজা ভালোভাবে আটকে দিলো। আরাফ ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“সর। দরজা বন্ধ করে দিয়েছিস কেন? অরুকে আনতে যাবো।”
তাহমিদ লাইট বন্ধ করে দিয়ে আরাফকে নিয়ে বারান্দায় এলো। আরাফ নিচে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটি দেখে বলল,
“এই গাড়িটা এখানে!”
“আমরা ওখান থেকে ফেরার সময় এই গাড়িটা আমাদের পিছু নিচ্ছিল। কিন্তু আমি এতোক্ষণ এটা স্বাভাবিক ভাবছিলাম। এখন ইভানের মেসেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি।”
“কি করবো এখন!”
“বাসা থেকে বের হতে হবে। ওরা জানে না আমরা ক’তলায় থাকি। কিন্তু এভাবে বের হলে তো চিনে ফেলবে।”
“কিন্তু সালেহ আলী তো জানে, আমরা কোথায় থাকি, ক’তলায় থাকি। তাহলে আজই কেন আসলো? আর এভাবেই বা কেন পিছু নিলো?”
হঠাৎ দরজায় বেল বেজে উঠলো। আরাফ আস্তে আস্তে দরজার সামনে গিয়ে পীপহোল দিয়ে দেখলো, একটা কালো কোট পরা লোক দাঁড়িয়ে আছে। তাহমিদ রান্নাঘর থেকে একটা ছুরি নিয়ে এলো। আরাফ ধীরে ধীরে তার রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে আলমারির ভেতর থেকে একটা পিস্তল বের করে আনলো। তাহমিদ পিস্তলটি দেখে বলল,
“এটা কোথায় পেয়েছিস?”
“ইভান দিয়েছিল। ওর এক বন্ধুর বাবার পিস্তল। উনি পুলিশে চাকরি করেন।”
“এটা বেআইনী, আরাফ।”
“আইন কানুন মেনে চলার সময় এই মুহূর্তে নেই। ইভান এটা সিকিউরিটির জন্য এনেছে। আর এই বিষয়ে আমি আর ও ছাড়া কেউই জানে না।”
“আচ্ছা, এখানে কি বুলেট আছে?”
“হ্যাঁ, চারটা আছে।”
আরাফ পিস্তল নিয়ে দরজার কাছে আসতেই তাহমিদ বলল,
“আরাফ, আগে কখনো পিস্তল চালিয়েছিস?”
“না।”
“তাহলে, অভিজ্ঞতা ছাড়া বুলেটসহ পিস্তল হাতে নিয়েছিস কেন? কিভাবে চালাতে হয়, তা তো জানতে হবে।”
“আরেহ, এটা তো সবাই জানে।”
“না, ভাই। উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে গেলে? দাঁড়া, এক কাজ করি, বিক্রম দাদাকে ফোন দেই।”
“বিক্রম কে?”
“অরুণিকার কেইসে যিনি আমাদের সাথে ছিলেন!”
“তোর উনার সাথে যোগাযোগ আছে?”
“হ্যাঁ, আছে।”
“তাহলে, তাড়াতাড়ি ফোন দে।”
তাহমিদ ফোন দিতেই বিক্রম ফোন রিসিভ করলো। তাহমিদ পুরো ঘটনা খুলে বলতেই তিনি তখনই তার টিম নিয়ে তাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। এদিকে লোকটা কিছুক্ষণ পর পর বেল দিচ্ছিল। হুট করে সে কোথায় চলে যাচ্ছে, আবার পাঁচ মিনিট পর পর এসে বেল দিচ্ছে। আরাফ ইভানকে মেসেজ দিয়ে বলে দিলো, বাসায় না আসার জন্য। তাই মাওশিয়াত তার চাচ্চুকে গাড়ি পাঠাতে বললো। আর সেই গাড়ি নিয়ে তারা সোজা মাওশিয়াতের বড় চাচার বাসায় চলে গেলো। মাওশিয়াতের বড় চাচা সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। আর এই মুহূর্তে তার বাসাটাই সবার জন্য নিরাপদ। প্রায় দশ-পনেরো মিনিটের মধ্যে বিক্রম তাহমিদকে ফোন করলো। তাহমিদ বারান্দায় এসে দেখলো বিক্রম তার গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর আগের গাড়িটাও নেই। পুলিশের গাড়ি দেখে হয়তো সেই গাড়িটা চলে গেছে। এরপর বিক্রম তাদের ফ্লোরে এসে তাদের নিয়ে নিচে নামলো, আর তার গাড়িতে করেই তাহমিদ আর আরাফকে মাওশিয়াতের চাচার বাসায় নামিয়ে দিলো।
তারা সবাই গোল হয়ে একটা রুমে বসে আছে। অরুণিকা ঘুমিয়ে পড়েছে। মাওশিয়াত এসে বলল,
“অরুণিকাকে পাশের রুমে শুইয়ে দাও।”
আরাফ জোর গলায় বলল,
“না। ও ওখানেই থাকুক।”
“কি বলছো, আরাফ? ও এখন বড় হয়ে গেছে। বাসায় চাচীরা আছে। বড় চাচীই বললো ওকে নিয়ে আসতে।”
এবার ইমন বলল,
“আরাফ যেতে দে ওকে। মাওশিয়াত থাকবে তো অরুণিকার সাথে।”
আরাফ আরো জোর গলায় বলল,
“না, বললাম তো। ও এখানেই থাকবে। আমি আর আহনাফ নিচেই ঘুমাবো।”
মাওশিয়াত বলল,
“না, নিচে কেন থাকবে? পাশে আরেকটা রুম আছে, ওখানে দু’টো বেড পাশাপাশি আছে। তোমরা দু’জন বরং অরুণিকাকে নিয়ে ওখানেই থাকো।”
এরপর সবাই যার যার রুমে শুয়ে পড়লো। আহনাফ অরুণিকার হাত ধরে বসে আছে। তখন আরাফ বলল,
“আমাদের ওই বাসা ছাড়তে হবে।”
আহনাফ বলল,
“হ্যাঁ, আর ভাবছি, আমরা অরুকে নিয়েই দেশে ফিরবো। এখানে তুই আর ইভান একা থাকবি। অরুকে কার ভরসায় রেখে যাবি? ওখানে আমরা সবাই থাকবো!”
“আমি অরুকে কারো ভরসায় ছাড়তে চাচ্ছি না। ওর কিছু হয়ে গেলে?”
“আমি আছি তো।”
“আমি তোর উপর বিশ্বাস করতে পারবো না। অরু তোর কথা শুনবেও না। ও শুধু আমার কথায় শুনে।”
“আচ্ছা, তাহলে ওরা যাক! আমি এখানেই থেকে যাই। তোরা বাইরে থাকলে আমি অরুকে দেখবো।”
“হুম, সেটাই কর। আর আমাদের শুটিং শিখতে হবে। লাইসেন্স গান লাগবে।”
এদিকে সকালে এই বিষয়ে কথাবার্তা হতেই তূর্য বলল,
“টুইংকেল না গেলে আমিও এখানে থাকবো।”
আহনাফ ভ্রূ কুঁচকে বললো,
“ওর সাথে তোর কি!”
“আমার ওকে ছাড়া ভালো লাগে না। ও আমার মন খারাপের বিনোদন।”
ইমন বলল,
“আচ্ছা, তাহলে আমরা সবাই একসাথেই দেশে ফিরবো। আরো একবছর অপেক্ষা করি। এই মুহূর্তে আমাদের একসাথে থাকা দরকার। আলাদা হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ।”
ইভান বলল,
“তাহলে আমাদের দ্বিতীয় ধাপটাই আগে শুরু করা উচিত। আপতত বিজনেস দাঁড় করানো উচিত। আর কিছু ট্রেনিং দরকার। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমরা এখনো শক্ত হই নি। তাই এই এক বছরে আগে আমাদের নিজেদের রক্ষা করার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তা হোক আর্থিক, বা শারীরিক।”
এদিকে রহমতুল্লাহর ফোনে কল এলো। কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একজন বলে উঠল,
“কি হলো এটা?”
রহমতুল্লাহ কাঁপা কন্ঠে বললেন,
“পুরো পরিকল্পনায় নষ্ট হয়ে গেছে, জনাব।”
“ওরা না ফিরলে আমাদের এতোদিনের পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যাবে।”
“দেখুন জনাব। হঠাৎ করেই যে এমন কিছু হবে!”
রহমতুল্লাহকে থামিয়ে লোকটা বলল,
“সব তোমার বোকামীর কারণে হয়েছে।”
“আমি তো ভেবেছি, ওরা ভয় পেয়ে কলকাতা ছেড়ে দেশে ফিরবে।”
“হ্যাঁ, কিন্তু এখন তো ওরা দেশেই ফিরবে না বলছে।”
“কিন্তু জনাব, আপনি কিভাবে নিশ্চিত হয়েছেন যে ওরা দেশেই ফিরছে না?”
“তুমি কি ভাবছো, ওদের সাথে আমি আমার লোক রাখি নি? ওই ছ’জনের প্রতি পদক্ষেপের খবর আমার কাছে আছে। আমার লোক সবসময় ওদের সাথেই থাকে। ওরা যে তোমার উপর সন্দেহ করে দেশে এসেছিল একমাসের জন্য এটাও আমার লোকেই বলেছে। ভাগ্যিস সব আগেই জানতে পেরেছি, নয়তো ওরা জেনে যেতো, তুমি আমার লোক। এখন ওরা তা-ই দেখেছে, যা আমি দেখিয়েছি। ওরা এখন মুরশিদ জুবাইয়েরকেই সন্দেহ করছে।”
“কিন্তু জনাব, লোকটা কে যে আপনাকে এসব খবর দিচ্ছে!”
“তোমার এসব না জানলেও চলবে। এখন যা করার, আগে ওদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করো। ওদের দেশে আনার ব্যবস্থা করো। নয়তো সেই ছ’টা বুলেট তোমাকেই বিদ্ধ করবে।”
চলবে-