অলিন্দ্রীয়া,পর্ব_১৩_১৪_ও_১৫ শেষ

0
3532

অলিন্দ্রীয়া,পর্ব_১৩_১৪_ও_১৫ শেষ
তৃধা আনিকা
পর্ব_১৩

রাতে অলিন্দ্রীয়া নিজে থেকেই ফোন করলো।
—আপনি কিন্তু আসলেই চমৎকার! যেকোনো সময় চলে যেতে পারে এমন বউকে কেউ কিন্তু নিজের দরিদ্রতার কথা এত সহজে বলতে পারে না। বাট ইউ আর সো অনেস্ট!
জুয়েল দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—তবুও তো মন গলানো যাচ্ছে না। দয়ামায়া তো পাচ্ছি না।
অলিন্দ্রীয়া অনেকক্ষণ শব্দ করে হাসলো।
কোনোরকমে হাসি থামিয়ে বললো,
—রূপায়ন আর অংকনকে নিয়ে আসি? আপনার ওখানে কিছুদিন থেকে যাবো।
—কনসোলেট করছো?
—এরকম কি মনে হচ্ছে?
—হুম। কনসোলেশান নিবো না অলি।
—আপনি তো জানেনই আমাকে একটা ভীষণ খারাপ ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলো।
—লিভ ইট, অলি।
অলিন্দ্রীয়া দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

সেদিনের পর জুয়েল আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।বাসায় ফোন করতো নিয়ম করে তবে বাসায় আসা কমিয়ে দিলো। আসতে থাকলো কদাচিৎ। কখনো বা লাঞ্চে, কখনো বা ডিনারে, তবে এর মধ্যে অলিন্দ্রীয়ার সাথে দেখা হতো খুবই অল্প। অলিন্দ্রীয়া তখন চূড়ান্ত বিজি। ফাইনাল প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে।
এর মধ্যে মা এসে একদিন সকালে বললেন,
—লিয়া তোর জন্য কি আনবো বলতো? সবার লিস্ট হয়ে গেছে, তোরটা বাকি শুধু!
—কি আনবে মানে? শপিং এ যাচ্ছো নাকি?
—আরে নারে, ঘুরতে যাচ্ছি সিংগাপুরে। তোর বাবা সহ!
অলিন্দ্রীয়ার হাতে ব্রাশ ছিল, পড়ে গেল।
ব্রাশ তুলতে তুলতে বললো,
—সিংগাপুর! বলো কি? কবে এসব ঠিক হলো?
—কেন? সব তো জুয়েলই করে দিলো। তুই জানিস না?
অলিন্দ্রীয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। মানুষটা তার পরিবারকে কত আপনই না করে নিয়েছে। এমন একটা মানুষের কেন যে নিজের পরিবার নেই? অলিন্দ্রীয়ার খুব আক্ষেপ হলো।

মা-বাবা যেদিন চলে গেলেন, সেদিন থেকে জুয়েলকে বাসায় শিফট করে দিয়ে গেলেন। জুয়েলও মহানন্দে লাগেজ নিয়ে চলে এসেছে। জুয়েল নিচের তলায় ছোটচাচার পাশের ঘরে উঠলো। নিয়ম করে অফিস যাচ্ছে। সকালে ব্রেকফাস্ট করার সময় ছোটচাচা আর সে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে, প্রতিদিনই অংক আবিষ্কার করছে অংকনের সাথে, রূপায়নকে সিরামিক কিনে দিচ্ছে, একসাথে মিলে আবার ভাঙছে। এই সবকিছুর মধ্যে একটা জিনিস চোখে পড়ার মতো। সেটা হলো, জুয়েল অলিন্দ্রীয়াকে যথাসম্ভব এভয়েড করছে।
মায়াবু’র সাথেও জুয়েলের বেশ খাতির জমে গেছে।

একদিন খুব সকালবেলা অলিন্দ্রীয়া নিজের জন্য চা বানাতে নিচে নেমেছিলো। ড্রয়িংরুমের সোফায় দেখলো রূপায়ন অংকন আর জুয়েল সবগুলাই হাফপ্যান্ট পরে খালি গায়ে ঘুমোচ্ছে। ও মাই গড! এইসব কি? এতো পুরোই মিক্সড হয়ে গেছে ফ্যামিলির সাথে।
অলিন্দ্রীয়া সেধে সেধে কথা বলার চেষ্টা করেছে জুয়েলের সাথে কিন্তু কথা তেমন হয়ে উঠে না।জুয়েলের যেন সবসময়ই তাড়া থাকে।

এর মাঝে ছোটচাচা জানালেন, জুয়েল একটা লং ট্যূরে যাবে। দুইশো নব্বই দিনের! রাতে অলিন্দ্রীয়া নিজে ইচ্ছে করেই জুয়েলের ঘরে গেল। জুয়েল শুয়ে ছিল, অলিন্দ্রীয়াকে দেখে পাশ ফিরলো। অলিন্দ্রীয়া কোথায় বসবে? বিছানায়? আর কিছুই তো নেই।অলিন্দ্রীয়া দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো।
—এতদিনের জন্য যাচ্ছেন, বেশি কাজ?
জুয়েল প্রশ্নটা এড়িয়ে গেল। বরং উল্টো প্রশ্ন করলো,
—তোমার ভাইভা ভালো হয়েছে?
—উঁহু, সো সো টাইপ। একটা মজার ব্যাপার জানেন, আমরা যখন প্রজেক্ট টিচারের লটারি করলাম; আমার লটারিতে প্রজেক্ট টিচার পড়েছিলেন সবথেকে জল্লাদ ২ স্যার। উনাদের কাছেই বেশি সময় দিতে হয়েছে। না পড়েই ভাইভা দিয়েছি। একবছর আমার কি যে খাটতে হয়েছে!
যেন কিছুই হয়নি এমন ভঙ্গিতে জুয়েল বিছানায় উপুর হয়ে ল্যাপটপ খুললো।
—আমার কিছু মেইল চেক করতে হবে। তুমি কি আর কিছু বলবে?
—আপনি আমার আঁকা সব ছবি ফেলে দিলেন কেন?
—আমি তো ফেলতে চাইনি, মায়াবু বললো। চা দিতে বলো তো অলি। আমার ঘুম কাটুক।
অলিন্দ্রীয়া ভাবলো, সে নিজেই চা বানায়। মানুষটা কি চা খায়? র-চা নাকি দুধ-চা? চিনি ক চামচ খায়?এতোদিন হলো বিয়ের অথচ এটাও সে জানে না! আশ্চর্য! অলিন্দ্রীয়া চা না বানিয়েই রুমে চলে এলো।সেইরাতেও অলিন্দ্রীয়া সারারাত ছবি আঁকলো।

মা-বাবা ফিরে আসার পর জুয়েল চলে গেল তাঁর ফ্ল্যাটে। বাসা থেকে চলে যাবার খবরটা অলিন্দ্রীয়া শুনলো দুইদিন পরে। ট্যূরে যাবার আগে জুয়েল একটা ফোন পর্যন্ত করলো না অলিন্দ্রীয়াকে। সপ্তাহখানেক পর একদিন সকালে মা ডাকলেন।অলিন্দ্রীয়া তখনো ঘুমে। চোখ কচলাতে কচলাতে, দরজা খুলে দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো।
মা, অলিন্দ্রীয়ার পাশে বিছানায় কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকলেন।
ঘুম ঘুম চোখে অলিন্দ্রীয়া বললো,
—এত সকালে কি চাই?
মা হাসলেন। অলিন্দ্রীয়ার হাতটা আলতো করে টেনে ধরে বললেন,
—তোর জন্য ২টা ভালো খবর আছে, কোনটা আগে শুনবি?
অলিন্দ্রীয়া ধুপ করে উঠে বসলো,
—মানে কি?
—হু। শুনলে তুই খুশিতে পাগল হয়ে যাবি।
—তাড়াতাড়ি বলোতো। উফ..
—তোর আঁকা কিছু ছবি জুয়েল একটা ইন্টারন্যাশনাল এক্সবিশিন কনটেস্টে পাঠিয়েছিলো।ওরা তোর ১৭টা ছবি সিলেক্ট করেছে। ইয়াং আর্টিস্টদের মধ্যে তোর সবথেকে বেশি ছবি ও’রা এক্সিবিশানে রাখছে! মালেয়শিয়া দু’সপ্তাহের জন্য আয়োজন। তোকে ইনভাইট করেছে। বাংলাদেশ থেকে তুই একাই সিলেক্টেড!
অলিন্দ্রীয়া কয়েক সেকেন্ড হা করে থাকলো।
—মা, আমি কি কেঁদে ফেলবো?
—-দ্বিতীয় সুখবরটা শুনলে তো আনন্দে কেঁদেই ফেলবি! একটু কাছে আয় তো মা।
—জুয়েল সেপারেশেনের সব পেপারস রেডী করে ও’র কাজ কমপ্লিট করে পাঠিয়েছে। এই নে…
অলিন্দ্রীয়া কি ঠিক শুনলো? মা কি বললো?
অলিন্দ্রীয়া রোবটের মত বললো,
—কই দেখি? এত বড় একটা সিদ্ধান্ত একা একাই নিয়ে ফেললো?
—একা নেয়নি। তোর বাবা, ফুফুর সাথে কথা বলেই নিয়েছে। তাঁর সাথে আমি কথা বলেছি। যা হয়েছে, সবার সাথে কথা বলেই হয়েছে। তুই এই বিয়েটা বয়ে বেড়াতে পারছিলি না। তোর মানসিক কষ্ট আমরা কেউ আর বাড়াতে চাইনি।
অলিন্দ্রীয়া অভিযোগের স্বরে বললো,
—কই আমার সাথে তো কেউ আলাপ করেনি?
—জুয়েলই বলতে বারণ করলো। তোকে একসাথে ২টা খবর দিবো ভেবে রেখেছিলাম। তবে জুয়েল বলেছে তোর উপর তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। তুই একটা চমৎকার মেয়ে, তোকে এভাবে আটকে রাখলে তুই সামনে আগাতে পারবি না। তাই এই সারপ্রাইজ।

অলিন্দ্রীয়া কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো,
—আই এম এক্সট্রিমলি সারপ্রাইজড মা!

পর্ব_১৪

মালেয়শিয়াতে অলিন্দ্রীয়ার সাথে গেলেন ছোটচাচা।সব এরেঞ্জ করে দিলো জুয়েল। এসময় ছোটচাচার সাথে যতবার ফোনে কথা হয়েছে, জুয়েল খুব স্বাভাবিক। বরং আগের থেকেও স্বাভাবিক। বিয়ে, সেপারেশান এসব কিছুই যেন ঘটেনি। ভিসা থেকে টিকেট সবকিছু জুয়েল সামলেছে।
অলিন্দ্রীয়ার খুব রাগ হলো, খুব! তাকে ছেড়ে মানুষটা এত স্বাভাবিক কেন? এত ভালো আছে কেন? তবে কি মানুষটা মিথ্যে বলেছিলো? অলিন্দ্রীয়ার সাথে তাঁর মনের প্রেম তাহলে কোনোদিনই হয়নি?

এক্সবিশানের এন্ডিং সিরিমনিতে ঘোষণা করা হলো, এবস্ট্রাক্ট ক্যাটাগরিতে অলিন্দ্রীয়ার ৫টা ছবি সেরা হয়েছে এবং এশিয়ান আর্টিস্টদের মাঝে সবথেকে জুনিয়র হিসেবে অলিন্দ্রীয়াকে কিছু বলতে বলা হলো।
অলিন্দ্রীয়া স্টেজে উঠে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়েই রইলো। যেন কি বলবে ভেবে নিলো। তারপর আচমকা বললো, দিস ক্রেডিট ইজ নট অনলি মাইন; ইট অলসো গোস টু সামওয়ান, হু ইজ ভেরি স্পেশাল। বিফোর দিস কনটেস্ট হি ইজ দ্য অনলি ম্যান হু এপ্রিশিয়েটেড মাই ওয়ার্কস। পারসোনালি স্পিকিং, আই ওয়াজ নট শিওর এবাউট মাই পেইন্টিং। বাট হি ওয়াজ। “জুয়েল” ইজ দ্য মেন বিহাইন্ড মাই সাক্সেস। “জুয়েল” দ্য লাইট অফ মাই পেইন্টিং।

মালেয়শিয়া থেকে ফিরেই অলিন্দ্রীয়া সবাইকে বললো,
—তোমাদের জুয়া যদি এবার বাসায় আসে, আমি তাকে সবার সামনে কান ধরে উঠবস করাবো।
—মা বললেন, সে আসবে কেন? সব তো চুকেবুকেই গেছে।
—সে শুধু আসবে না মা, এসে বলবে আমি তাকে পায়ে ধরে নিয়ে এসেছি।
ছোটচাচা বললেন,
—কান ধরে উঠবসটা কি একটু বেশি হয়ে গেল না? জামাই মানুষ! শুধু এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখলে হয় না?
দাদুই বললো,
—মাথা ন্যাড়া করে দিলে কেমন হয়?
অলিন্দ্রীয়া বললো,
—এইটা ভালো আইডিয়া! তবে কাজটা করতে হবে ঘুমের মধ্যে।
মাথা ন্যাড়া করে দিবার আনন্দে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।

এর সাতদিন পরেই জুয়েল এসে হাজির হলো। বাসায় এসেই সবাইকে বললো,
—অলি, রোজ ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে। বললো অন্তত ১দিনের ছুটি নিয়ে আসুন। দরকার হলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আসুন নাহলে মরে যাবো। আমি সেই ভয় পেলাম। জানেনই তো মা, ও’র যা মেজাজ! সেপারেশানের পেপারস দেখে বেচারী ভয় পেয়ে গেছে।ইমার্জেন্সি লিভ নিয়ে চলে এসেছি। বলেছি, দাদুই মারা গেছে। ভালো করেছি না মা?
মা ফিসফিস করে বাবাকে বললেন,
—আমার এতদিন ধারণা ছিল, প্রেমে পড়ে শুধু লিয়ারই মাথা খারাপ হয়েছিলো। জুয়েলের যা অবস্থা দেখছি, আমার তো ক্ষীণ সন্দেহ হচ্ছে চাকরি ছেড়ে টেরে দিয়ে চলে এসেছে কিনা? সেপারেশান নিয়ে লাফালাফি করলো নিজেই, আমাদেরকে বুঝালো; এখন আবার সুড়সুড় করে চলে এসেছে নিজেই। এর তো মাথার কিছুই ঠিক নাই। এই ছেলে এত বড় চাকরি করছে কি করে?

সবার মাঝে মায়াবুর শুধু এককথা,
—কইছিলাম না জুয়াভাই, আপায় ঠিক আপনের পায়ে একদিন ধরবোই ধরবো। হুহু, এই মায়ারুনের কথায় মিথ্যা নাই।
জুয়েল মনে মনে বললো, মায়াবু, আমার না জানি এখন কতদিন তাঁর পায়ে ধরে বসে থাকতে হয়? শুধু রুম থেকে বের না করে দিলেই হলো! দরজা বন্ধ রুমে আমার পায়ে ধরতেও আপত্তি নেই।

রাতে অলিন্দ্রীয়ার সাথে জুয়েলের প্রথম দেখা হলো, খাবার টেবিলে। জুয়েলের গলা শুকিয়ে গেল। দাদুই বললেন,
—লিয়া, জুয়াকে নাকি তুই আমার মরার কথা বলে লিভ নিতে বলেছিস? তুই এটা করতে পারলি? তোকে আমি কত পিঠে চড়িয়েছি, আর তুই?
জুয়েল পাতে ডাল নিচ্ছিলো, ডালের বাটি কাত করে ফেলে দিলো। তার সারা-গা ডালময় হয়ে গেল।
অলিন্দ্রীয়া ঠান্ডা গলায় বললো,
—তুমি তো একদিন এমনিতেও মারা যাবে দাদুই; তার চেয়ে ভালো হলো না, তোমার মরার খবরটা কি কাজে লাগলো নিজের চোখে দেখে গেলে!
এইবার জুয়েল মুখ খুললো,
—দেখছেন দাদুই, অলি ইনসিস্ট করায়ই তো আমি বললাম।
দাদুই অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন।

এগারোটা নাগাদ মা এসে বললেন,
—তোর তো দেখি মহাপাগল জুটেছেরে কপালে। তোর পাগলামী ভালো করতে একে আনা হলো, এর তো এখন ব্রেন ঠিক নাই। রুমে আসতে ভয় পাচ্ছে বোধহয়। কাউকে কিছু বলতেও পারছে না। ডেকে নিয়ে আয় তো।
অলিন্দ্রীয়া বললো,
—মা, মাথা কি সত্যিই ন্যাড়া করে দিবো?
—তোর পাগল, তুই-ই জানিস। তবে করলে ঝামেলা আছে। পরদিনই দেখা যাবে, রূপায়ন আর অংকনও ন্যাড়া করে ফেলবে।
অলিন্দ্রীয়া মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরলো,
—মা আমার বোধহয় মনের প্রেম হয়ে গেছে! যেদিন তুমি ছবিগুলোর কথা বললে, তখনি হয়ে গেল। মানুষটা আমার ছবি আঁকাকে ভালোবেসেছে শুনেই মন অস্থির হয়ে গেল।
—তুই সেপারেশানের পেপারস দেখে কষ্ট পাসনি? মালেয়শিয়ায় গিয়ে গুনগান করে এলি যে বড়!
—পেয়েছি তো, খুউব পেয়েছি। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানো মা? পেপারসগুলো, আমি যখন ভালো করে দেখলাম, এতে ও নিজে সাইন করেনি মা। ফুল নেইমের জায়গাগুলোতে সুইটমিটকে দিয়ে ও’র নাম সই করিয়েছে। এই দেখো, সুইটমিটের লিখা তো আমি চিনি। একটু চিপা দিয়ে ধরতেই সব বলে দিলো। ৮টা সাইনের মধ্যে দাদুইকেও দুটা করতে বলে, দাদুই শেষ অবধি ইনিশিয়ালটা শিখে উঠতে পারেনি ও’র।
মা বিড়বিড় করে বললেন,
—ও মাই গড! ও মাই গড! এই বুদ্ধি ওকে কে দিলো?
—আর একটা মজার ব্যাপার কি জানো? আমার মালেয়শিয়ার প্রোগ্রামেও লাস্ট দিনে এসেছিলো।ছোটচাচাও জানেন না কিন্তু আমি জানি।
—বলিস কিরে?
—হু মা। আমি যে জানি, ও’ জানে না।
মা চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন,
—এর তো দেখছি পুরো মাথা খারাপ!
—ফুফুকে একটা থ্যাংকস বলোতো মা, এরকম একটা পাগল আমায় জুটিয়ে দিয়েছে।

অলিন্দ্রীয়া মায়াবুকে দিয়ে জুয়েলকে ডেকে পাঠালো।মায়াবু, লিয়াকে আবার সাবধান করলেন।
—আপা মনে রাখবেন,
যম, জামাই, ভাইগনা…
এই তিন হয়না আপনা…
এদের কোনো বিশ্বাস নাই। যত খাতিরই করেন, কাম হবে না।
অলিন্দ্রীয়া মাথা নেড়ে বললো,
—তোমার এত বুদ্ধি! তোমাকে তো একটা স্বর্ণের মেডেল দেওয়া দরকার।
মায়াবু লজ্জা পেয়ে গেল।
—মেডেল দিয়ে আমি করবোডা কি? মেডেল লাগবে না আপা।

রুমে এসেই জুয়েল বললো,
—সুইটমিটকে নিয়ে এসেছি, এরা আজ আমাদের সাথে থাকুক। সারারাত গল্প করবো।
অলিন্দ্রীয়া বললো,
—দাদুইকেও নিয়ে আসুন। সবাই মিলে গল্প করলে ভালো হয়।
জুয়েল দোআ ইউনুস পড়ে বুকে ফুঁ দিলো। রূপায়ন বললো,
—আপু, আমার পেট ব্যথা করছে! চলে যাই?
চলে যাই বলে আর দাঁড়ালো না। অংকন কিছু না বলেই চলে গেল।
অলিন্দ্রীয়া খুব স্বাভাবিকভাবে ওপাশ ফিরে শুলো।ব্যাখ্যা দেওয়ার সুরে জুয়েল বললো,
—হয়েছে কি? আমার তো রাগ উঠলে মাথা ঠিক থাকে না, জানোই তো। তবে…
—আপনি হুট করে এভাবে চলে এলেন কেন?
জুয়েল যেন বিরাট ধাক্কা খেলো। এই মেয়ে তো পুরো পাগল করে ছাড়বে দেখছি!
—তুমিই তো বললে, আমি তোমার লাইট অফ দ্য লাইফ।
—লাইফ বলেছি নাকি? আর বললেই কি চলে আসতে হবে?
—সেলিম বলল, যা দোস্ত! এবার কাজ হয়ে গেছে।এখন কি চলে যাবো আবার?
—অবশ্যই চলে যাবেন।
অলিন্দ্রীয়া কাঁথা মুড়ে শুয়ে ছিল। উঠে বসলো। জুয়েল এক ঝলক তাকালো। অলিন্দ্রীয়া একটা ব্যাকলেস নাইটি পরে আছে। এই মেয়েটা এমন কেন? সব মাথা খারাপ করা ড্রেস পরে। এখন বলছে চলে যেতে। জুয়েল আর সাত পাঁচ কিছু ভাবলো না। পিছন থেকে গিয়ে অলিন্দ্রীয়াকে জড়িয়ে ধরলো।
বিস্মিত হয়ে অলিন্দ্রীয়া বললো,
—আপনার হাত এত শক্ত লাগছে কেন?
—জিম করে।
—জিম করে! বলেন কি? এরকম লোহা হয়ে গেছে?দেখি ছাড়ুন।
—তুমি তো একদমই তাকাওনা অলি। সেলিমই বললো, জিম টিম কর। সালমান খানের মত বডি বানালে তুমি নাকি তাকাবে!
—সেলিম কি আপনার বন্ধু?
—হু।
—বাহ্, আপনার বন্ধুর তো দারুণ বুদ্ধি! আর কি পরামর্শ দিলো?
—বললো, বৃষ্টির রাতে আর শীতের রাতে একটু চেষ্টা চরিত করলে সব হয়ে যায়!
—বলেন কি? আপনার এই লেভেলের বন্ধুও আছে! ভেরি গুড! আর কি বলেছে?
জুয়েল আরও আনন্দিত হয়ে বললো,
—সেপারেশানের বুদ্ধিও তো সেই দিলো। মেয়েরা সবথেকে ভয় পায় সেপারেশান। বললো, প্রথমে ভয় খাওয়াবি তারপর অভিমানের সময় ঠোঁটে গভীর করে একটা চুমু খেতে পারলেই কাজ হয়ে যাবে। দেখবি মন পাল্টে গেছে।
—তাই নাকি? তাহলে নিন তো, তাড়াতাড়ি একটা চুমু খান।
জুয়েল গভীর আগ্রহে কাছে গেল। ফিসফিস করে বললো,
—লাইট অফ করে আসি?
—আপনার বন্ধুটি কি লাইট অফ করতেও বলেছে?
জুয়েল সজোরে মাথা নাড়লো। অলিন্দ্রীয়া মিষ্টি হেসে বললো,
—তাহলে তো অবশ্যই লাইট বন্ধ করতে হবে। দাঁড়ান অফ করে আসি।
লাইট অফ করতে গিয়ে অলিন্দ্রীয়া বললো,
—বলেছে অভিমানের সময় চুমু খেতে। এখন তো আমি অভিমান করে নেই। তাহলে?
জুয়েলে এবার ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললো,
—তুমি এরকম কেন করো? আমি শুধু এই জন্যই এত কান্ড করে আসলাম। তুমি কেন বুঝো না?
—আমি ভেবেছিলাম, আপনার শুধু মাথা ন্যাড়া করে ছেড়ে দিবো। এখন দেখছি আপনার বন্ধুটিরও মাথা ন্যাড়া করতে হবে।
জুয়েল এবার সত্যি সত্যিই রেগে গেল। অলিন্দ্রীয়াকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো,
—আমি আর পারবো না, একদম পারবো না। কি করলে তুমি রাজি হবে বলো?
—আপনার না মনের প্রেম? না দেখেও তো থাকা যায়?
জুয়েল এবার রাগে গজ গজ করতে করতে টেবিলের সব জিনিসপাতি ফেলে দিলো। ড্রেসিংটেবিলের সবও ফেলে দিলো। বইয়ের পুরো তাকটাই ফেলে দিলো এবং যথারীতি দুটো ভুল জুতো পায়ে দিতে দিতে বললো,
—আর আসবো না, কোনোদিন আসবো না। পাথর মেয়ে একটা।
অলিন্দ্রীয়া রিকোয়েস্টের গলায় বললো,
—ড্রেসিংটেবিলের কাঁচটাও ভেঙে দিয়ে যান তো, এই আয়নাতে আমাকে মোটা দেখায়!
জুয়েল, অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে চলে গেল এবং সাথে সাথেই ফিরে এলো।
—মোবাইল ফেলে গেছি। আমি এইবার চলে গেলে কিন্তু আর আসবো না।
অলিন্দ্রীয়া চাপা কণ্ঠে বললো,
—-এত রাগ কেন আপনার? ভালোবাসাটা গুছিয়ে বললে কি হয়? ভালোবাসবেন আপনি, কষ্ট পাবেন আপনি, আমায় বললে কি হয়? বন্ধুদের তো ঠিকই সব বলে বেড়াচ্ছেন।
জুয়েল বিড়বিড় করে বললো,
—সব বলি না তো!

অলিন্দ্রীয়া কাছে এসে খুব পাশ ঘেসে দাঁড়ালো। কানের খুব কাছে গিয়ে বললো,
—সব বলেন না? তাহলে একটু আগেই যে সেলিম মেসেজ করলো, ব্রাশ করার পর দুটো এলাচ খেয়ে ফেললে খুব ভালো হয়।
জুয়েল এবার সত্যি সত্যিই ড্রেসিংটেবিলের কাঁচটা ভেঙে ফেললো,
—বলদটার এখনি মেসেজ করতে হলো?
—নাউ গেট আউট। সুন্দর করে ইনিয়ে বিনিয়ে যেদিন আমার মন জয় করতে পারবেন সেদিন সব হবে। সেপারেশান পেপারে আমিও মায়াবুকে দিয়ে সই করিয়ে রেখেছি। নিয়ে যান…
—এইবার কিন্তু আর সত্যিই আসবো না। তুমি আমার সত্যিকার পায়ে ধরলেও আসবো না।

জুয়েল বেড়িয়ে যেতেই অলিন্দ্রীয়া গুণগুণ করে গান ধরলো,
“মে তো তেরি রং মে রং চুকি হো…
বাস তেরে বন চুকি হো….
মেরি মুঝমে কুচ ভি নেহি সব তেরা…..”

প্রায় পাঁচমিনিট পরেই মা দৌড়ে এলেন,
—লিয়া, তোর জামাই সব জিনিসপাতি ভেঙ্গে ফেলছে। ড্রয়িংরুমের টিভিটা ভেঙে ফেললো। ৫৩ হাজার টাকা শেষ! আমার ডাইনিং টেবিলের কাঁচও ভেঙেছে। ১৪ হাজার টাকার কাঁচ! বেছে বেছে সব দামী জিনিসগুলোই ভাঙছে। ও মাই গড! তোর ঘরের একি অবস্থা! সব জিনিস দেখি আবার গুড়া গুড়া! কে ভাঙলো? তুই না তোর জামাই। ও আল্লাহ! ও লিয়ার বাবা সর্বনাশ….
লিয়া হাই তুলতে তুলতে বললো,
—ভাঙুক মা। তোমার জামাই’র এত টাকা খাবে কে? ভেঙে আবার নতুন কিনবে।
মা, দশ মিনিট পরেই ও’ আবার ঘরে আসবে। তুমি যাও তো এখন।

দশ মিনিটও গেল না জুয়েল এসে অপরাধীর ভঙ্গিতে বললো,
—কালই সব কিনে ফেলবো।
—আরো ভাঙতে থাকুন। আপনারই শুধু রাগ, আমার তো নেই। আমি কখনোই আপনাকে এলাউ করবো না, কখনোই না।
বলতে বলতে জুয়েলের শার্ট টেনে ধরলো।
—এরকম কেন আপনি? সব পাগলামি সবাইকে জানাচ্ছেন। সবাই কি ভাবে বলুন তো? অথচ আমার সাথে কখনোই ঠিকঠাক কিছু বলেন না।
জুয়েল গভীর আবেগে অলিন্দ্রীয়াকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,
—তুমি কখনোই সাজো না কেন অলি? সাজলে তোমায় কি মিষ্টি দেখায়! মালেশিয়ার প্রোগ্রামে তোমায় পুরো পুতুলের মতো দেখিয়েছিলো।

অলিন্দ্রীয়া দু-হাতে মুখ লুকালো।

পর্ব_১৫ (শেষ পর্ব)

জুলিয়ার আজ বিশেষ মন খারাপ! তার জন্য বাড়িতে আজ বিশাল কান্ড ঘটেছে। কারণ তার সবথেকে প্রিয় ছোটমামার বিয়েতে সে যেতে পারছে না। গত পরশুই সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে তার হাত ভেঙেছে।তাকে ছাড়া মামণি কোথাও যান না, মামণিও বিয়েতে যাচ্ছে না। বাবাই মামণিকে ছাড়া যাবেন না, তাই বাবাইও বিয়েতে যাবেন না বলছেন। এখন পান মামা বলছেন, জুলিয়াদের ছাড়া তিনি বিয়ে করতেই যাবেন না। জুলিয়া এখন কি করবে? তার হয়েছে যত ঝামেলা। বাবাই আর মা তাকে ছাড়া কিছুই বুঝে না।
এদিকে নানাভাই বলছেন, তাঁর গলাব্যাথা! তিনিও যাবেন না। জুলিয়া তো বুঝে সবাই তার জন্যেই যাচ্ছে না। তাই সে এখন ঠিক করেছে, পান মামার বিয়ে বাঁচাতে ভাঙা হাত নিয়েও সে বরযাত্রী যাবে।
পান মামা একথা শুনে মহাখুশি।

অলিন্দ্রীয়া বিরক্তি আর খুশির মিশ্রণে ঘরে এসে জুয়েলকে ডাকলো,
—আপনার মেয়ে যাবে বলছে। উঠুন, রেডী হোন।
জুয়েল বললো,
—জুলিয়া গেলে চলে যাক না অলি। আমরা বরং থেকে যাই, বাসা তো খালি!
—নো ফাজলামি! টেন মিনিটস টাইম এর মধ্যে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামুন।
জুয়েল অলিন্দ্রীয়ার হাত টেনে ধরলো,
—একটু কাঁথার নিচে আসো না অলি। আদর করে দিই! তোমায় ছবি আঁকার শিল্পী বানিয়ে যত কষ্ট ডেকে আনলাম। সারাবছর শিল্পী মুডে থাকো। আমার তো কোনো খেয়ালই নেই।
অলিন্দ্রীয়া জবাবে মিষ্টি করে হাসলো। খুব কাছে এসে বললো,
—সত্যি করে বলুনতো, আপনার কোন বউটা বেশি পছন্দ? ছবি আঁকিয়ে না ইঞ্জিনিয়ার?
জুয়েল এবার খুব শক্ত করে অলিন্দ্রীয়াকে জড়িয়ে ধরলো,
—আমার তো তোমার ফুল প্যাকেজটাই পছন্দ! সব! তোমার ঘামের গন্ধ, তোমার নাক, তোমার চোখ, তোমার সবববববব.. আর যখন জুলিয়া পেটে ছিল, ফোলা পেটটাও পছন্দ ছিল।
—ছিঃ! পছন্দের কি ধরন? ঘামের গন্ধ, ফোলা পেট!
—তাও তো ভালো, আমার কোনো জিনিসই তো তোমার পছন্দ হয় না! কতভাবে নিজেকে মালিশ করি, তাও তো তোমার চোখে পড়ি না। হুহ…
—পছন্দ হবার মতো বিশেষ কিছু কি আছে?? মাই গড, এটা কি হলো? সবসময় রোমান্টিক মুড। জুলিয়া, জুলিয়া দেখে যাও তোমার বাবাই কি করছে!

জুয়েল অলিন্দ্রীয়াকে ছেড়ে দিলো এবং বিছানার পাশের টেবিলের পানির জগটা ছুঁড়ে ভাঙলো।
অভিযোগের সুরে বলতে লাগলো,
—আর কখনোই কাছে ডাকবো না, কখনোই না।বিয়ের এতগুলো বছরে সবসময় আমারই খালি রিকোয়েস্ট করতে হয়! অপেক্ষা করতে হয়.. জড় পদার্থ মেয়ে একটা! কত স্বপ্ন ছিল ঘরভর্তি বাচ্চা কাচ্চা হবে!
অলিন্দ্রীয়া চলে যাচ্ছিলো ফিরে এসে বিছানায় বসলো।
—এই যে অপনার এত রাগ, অভিমান; এই জিনিসটাই তো আমার খুব পছন্দ! আপনি রাগ করলে আমার মন ভালো হয়ে যায়।
—হবেই তো। আমার নিজের এয়ারলাইন্সে জব।অথচ আমার নিজের বউকে নিয়ে কোথাও নিরিবিলি ঘুরে আসা হলো না।
—সবসময়ই কি আপনার হানিমুন মুড থাকে? কি বিচিত্র পাগল একটা!

জুলিয়া চিন্তিত ভঙ্গিতে ঘরে ঢুকলো,
—উফ মামণি! আবার ভেঙেছো? বাবাই না তুমি?
জুয়েল কাঁদো কাঁদো গলায় বললো,
—আম্মাজান, আপনার মামণি ভাঙলো। আমি বললাম, বিয়েতে শাড়ি পরলে কি হয়? এজন্যই আছাড় মেরে জগ ভেঙে ফেললো!
জুলিয়া অনুরোধের মত করে বললো,
—শাড়ি পরলে কি হয় মামণি? বাবাইর কথা তুমি একদম শোনোনা! তুমি আমার স্কুলে গেলে সবাই ভাবে আমার বড় আপুকে নিয়ে এসেছি। কখনোই শাড়ি পরো না। আজ অন্তত পরো; আমিও তো শাড়ি পরবো।
—তুমি এই ভাঙা হাত নিয়ে শাড়ি পরবে?
—হু, অংক মামী পরিয়ে দিবেন। একটুও ব্যথা পাবো না।
অলিন্দ্রীয়া মেয়ের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো।মেয়েটা দেখতে অবিকল তার মতো হয়েছে। সবসময় জ্ঞানী জ্ঞানী ভাব। যেন সে সব বুঝে, সব সামলাতে পারে অথচ অলিন্দ্রীয়া জানে, ভেতরটা একদম নরম, ভঙ্গুর; ঠিক অলিন্দ্রীয়ার মতো। জুয়েলের মতো কেন হলো না? অলিন্দ্রীয়া মনে মনে প্রার্থনা করলো, অনেক বছর আগে তার জীবনে যেরকম একটা বিশ্রী ঘটনা ঘটেছিলো, জুলিয়ার জীবনে যেন এরকম কখনোই না হয়! জুলিয়ার জীবনে যেন প্রথম থেকেই জুয়েলের মতো একটা মানুষ আসে।

জুয়েল মেয়েকে আদর করতে করতে বললো,
—আম্মাজান, আপনার মা আমার জীবন তামা তামা করে ফেলেছে। আমি বললাম, আপনার আরো ভাইবোন দরকার! আরো বাবু দরকার। আপনার মা শুনেই না।
জুলিয়া কঠিন আদেশের সুরে বললো,
—মামণি তোমাকে না রোজ মাদারর্স হরলিক্স খেতে বলেছি, খাচ্ছো না কেন? অংক মামী রোজ খাচ্ছে, তাঁর তো ঠিকই বাবু হবে।
অলিন্দ্রীয়া আসামীর মত বললো,
—হরলিক্স খেতে আমার বিচ্ছিরী লাগে আম্মাজান। কি করি?
—তুমি না খেলে বাবাইকে খাওয়াই মামণি! তাঁর পেটে বাবু হোক।

জুয়েল অলিন্দ্রীয়া দুজনেই মেয়ের কথায় হেসে ফেললো।
অলিন্দ্রীয়া ফিসফিস করে বললো, জীবন এত মধুর কেন? জীবন এতো ছোট কেন?

(সমাপ্ত)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here