অলিন্দ্রীয়া,পর্ব_১_২_ও_৩

0
3069

অলিন্দ্রীয়া,পর্ব_১_২_ও_৩
তৃধা আনিকা
পর্ব_১

রূপায়নের বড় আপুর নাম অলিন্দ্রীয়া চৌধুরী। বাসায় এত কঠিন নাম কেউ ডাকতে পারে না। তাই নাম ছোট করা হয়েছে। ছোট করে ডাকা হয় “লিয়া”।
‘অ’ আর ‘ন্দ্রী’ বাদ দেয়া হয়েছে। নাম ছোট করবার ব্যাপারে সবচেয়ে দক্ষ হলেন ছোটচাচা। তিনি সহজেই যেকোনো নাম ছোট করে ফেলেন। যেমন, অংকন ভাইয়ার নাম ছোট করে দিয়ে দিলেন ‘অংক’। সাথে এও বলে দিলেন, যার নামই অংক তাঁর কোনোদিন কোনো অংক ভুল হবেনা। সে সারাজীবন অংকে এ’প্লাস পাবে। তবে অংক ভাইয়া ক্লাস নাইনে উঠে গেলেও এখনও পর্যন্ত একবারও অংকে এ প্লাস পায়নি। ছোট চাচা বলেছেন,
—এ নিয়ে চিন্তা করবার দরকার নেই। ভবিষ্যতে তুই অংকে নোবেল পাবি।
অংক ভাইয়া চিন্তিত মুখে বললো,
—কিন্তু চাচা, অংকে তো নোবেল দেয়া হয় না।
—দেয়া হয় না তো কি হয়েছে? তুই এমন জটিল অংক আবিষ্কার করবি যাতে কমিটি তোকে নোবেল দিতে বাধ্য হয়।
অংক ভাইয়া দিনরাত অংক আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন। সেদিন বললেন,
—জানিস, ছাগল আর বেগুণ নিয়ে জটিল অংক বানিয়েছি! একটা ছাগল দিনে ২লক্ষ বেগুন খেতে পারে, এরকম ১২৫টা ছাগল কত একর জমির বেগুণ একদিনে খেতে পারবে?
মা’কে দেখাতেই মা বললেন,
—একটা ছাগল দিনে ২ লক্ষ বেগুণ খায়? বলিস কি! এটা কি ছাগল না রাক্ষস রে?
মায়াবু বললেন,
—ছাগলের উপরে মনে হয় আম্মা জ্বীন আছর করছে। জ্বীন আছর করলে কিছুই অসাম্ভাব না। জ্বীন যদি আপনারে আছর করে, আপনে নিজেও হাজার হাজার বাইগুন খাইতে পারবেন গো আম্মা!

রূপায়নের নামটিও ছোট করা হয়েছে। নাম বিশেষ সুবিধার হয়নি। রূপা করলে মেয়েদের নাম হয়ে যায়। তাই ছোটচাচা বললেন,
—‘রূ’ আর ‘য়’ বাদ দিয়ে “পান”!
বাসায় সবাই রূপায়নকে “পান” বলেই ডাকে।রূপায়নকে যখন “পান” বলে ডাকা হয়, তাঁর জবাব দিতে ইচ্ছা করে না। এছাড়াও কাউকে পান চিবিয়ে খেতে দেখলে রূপায়নের মনে হয়, তাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলা হচ্ছে। দাদুই তো মাঝে মাঝেই বলেন,
—কইরে “পান” এদিকে আয়, আজ তোকে সুপারি দিয়ে খেয়ে ফেলি।
কি সাংঘাতিক!
সাথে অন্য টেনশনও আছে। বড় হয়ে না আবার পানওয়ালা হতে হয়! তবে রূপায়ন খুব মন দিয়ে পড়ছে, তাকে যে করেই হোক ক্যাডেট কলেজে চান্স পেতেই হবে। এতে করে যদি পানওয়ালা হওয়া থেকে বাঁচা যায়।
তবে লিয়া আপু রূপায়নকে “পান” বলে কখনোই ডাকেন না। বরং মিষ্টি করে ডাকেন, রূ-পা-য়-ন মাই সুইট ব্রাদার! প্রতিবার ডাকার সময়ই বলেন, মাই সুইট ব্রাদার। আর অংকন ভাইয়াকে ডাকেন, অং-ক-ন মাই মিট ব্রাদার। যখন দুজনকে একসাথে ডাকতে হয় তখন সংক্ষেপে ডাকেন, মাই “সুইটমিট” ব্রাদারস।

লিয়াআপু বুয়েটে পড়ছেন। তাঁর বিষয় ট্রিপল ‘ই’! এসব পড়তে তাঁর মোটেও ভাল্লাগে না। পড়ছেন শুধু বাবার ভয়ে। রূপায়নের বাবা ডাঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী একজন ইএনটি স্পেশালিষ্ট। অথচ বারো মাসই তাঁর নিজের নাক বন্ধ থাকে, গলা খুচখুচ করে এবং কান চুলকায়। প্রায় প্রতিদিনই তিনি নাকে মেনথল স্টিম নেন, আদাগরম পানি খান এবং কানে কটনবাড দিয়ে খঁচাখুঁচি করেন।
দাদুই বাবাকে প্রায়ই বলেন,
—হ্যারে জিলু, কি ঘোড়ার ডিমের ডাক্তারি শিখেছিস? তুই নিজেই তো রোগী। চিকিৎসা কিছু জানিস বলে তো মনে হয় না।
বাবা কঠিন গলা করে বলেন,
—আমার ডাক্তারি নিয়ে কিছু বলবেন না বাবা। এর থেকে দরকার হলে ২টা চড় দিয়ে দেবেন।
সাথে সাথেই দাদুই বাবাকে চড় মারার ভঙ্গি করেন। বাবা ভয়ে গাল সরিয়ে নেন। শেষঅবধি চড় মারেন না।
তবে দাদুই বলেছেন, একদিন ঠিকই চড় মারবেন।বাবার সব দাঁত পরে যাবে। আমরা অধীর আগ্রহে সেই দাঁত পড়া দেখার অপেক্ষা করছি।

লিয়া আপুর এইম ইন লাইফ হলো, পেইন্টার হওয়া। সপ্তাহে একদিন তিনি রং চং নিয়ে ছবি আঁকার চেষ্টা করেন। তিনি যখন ছবি আঁকেন, আমি আর অংক ভাইয়া মনোযোগ দিয়ে তাঁর ছবি আঁকা দেখি এবং কোথায় কোন রং কম পরছে, বেশি পরছে বলে দিই।
তবে আঁকাআঁকি কিছু হয় বলে মনে হয় না। লাস্ট উইকে তিনি ব্ল্যাক আর ইয়েলোর তিনটা শেড নিয়ে সারাদিন আঁকলেন। বিকেলে বুয়া চা দিতে গেলে লিয়াপু জিজ্ঞেস করলেন,
—ছবি কেমন হয়েছে বলতো, মায়াবু?
বুয়া অনেকক্ষণ ভেবে বললেন,
—বড়ই সুন্দর একটা মিষ্টি কুমড়া আঁকছেন গো আপা। তবে মিষ্টি কুমড়াডা বেশি পুক্ত হয় নাই।কাটলে দেখা যাবে ভিতরে এখনো দানা হয় নাই।
লিয়া আপু সহ আমাদের সবার মন খারাপ হয়ে গেল। তবে আমাদের ধারণা লিয়াপু একদিন ঠিকই এমন কিছু একটা এঁকে ফেলবেন যে, দুনিয়ার সবাই তাকে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি অব বাংলাদেশ বলবে।

লিয়া আপুর সবথেকে অপছন্দের বিষয় “বিয়ে”! তিনি বলেছেন বিয়ে করলে ছেলেরা হয়ে যায় “বেকুব গাধা” আর মেয়েরা হয়ে যায় “দুষ্টু গাধী”। তাঁর এই মহান ধারণায় অভিভূত হয়ে আমরা তিন ভাই বোন ঠিক করলাম আমরা কখনোই বিয়ে করবো না।
আপু গভীর রাত জেগে বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করে পড়াশোনা করেন। এসময় তাঁর পরনে থাকে ব্ল্যাক থ্রি কোয়ার্টার লেগিংস আর পিংক কালারের টি-শার্ট।মাথার চুলগুলো পনিটেল বাঁধেন, তার উপরে পরেন সবুজ প্রিন্সেস হ্যাট। এটা তাঁর রিডিং টাইম ইউনিফর্ম। টি-শার্টটা লিয়া আপুর নিজের ডিজাইন করা, এতে নেভি ব্লু কালার দিয়ে লিখা,
“It’s reading time, Don’t knock”

তিনি বলেছেন,
—পড়াশোনার একটা ডেফিনিট ইউনিফর্ম থাকা উচিত, বুঝলি। এতে ইজিলি কনসানট্রেট করা পসিবল। দেখিস না শেফরা, নার্সরা, ডক্টররা, পুলিশরা যেমন পরে, তেমনি। পড়াশোনাটা তো তার থেকেও হার্ড প্রফেশন, এজন্যই…
তিনি যখন এই ইউনিফর্মটা পরে পড়াশোনা করেন, তখন তাকে সবথেকে বেশী সুন্দর লাগে। তাঁর ফর্সা পা দুটোকে কোমল কাঁশফুলের মতো দেখায়। তাঁর গলার মুক্তোর লকেটটা তখন এদিক ওদিক দুলতে থাকে। ঠিক যেন বারবি প্রিন্সেস! রূপায়ন জানে
দীপিকা পাড়ুকোন যদি লিয়াপুকে দেখতেন তবে বলতেন,
—হেই অলিন্দ্রীয়া, তুম পদ্মাবতী বনোগি? তুমহারি খুবসুরতি তো চান্দকো ভি শরমিন্দা কর দেগি। প্লিজ বান যাও না পদ্মাবতী।

রূপায়ন মনে মনে ভাবে লিয়া আপুর মতো দ্বিতীয় কোনো বারবি প্রিন্সেস যদি তাকে এসে রিকোয়েস্ট করে তবে সে “বেকুব গাঁধা” হতেও রাজি আছে।
কিন্তু সে জানে, তার এই আপুটির মতো বারবি প্রিন্সেস পৃথিবীতে আর একটিও নেই। শুধু এই পৃথিবী কেন আশেপাশের কোনো পৃথিবীতেও নেই!

পর্ব_২

রূপায়নের জন্য কমিকস কিনতেই লাইব্রেরীতে আসা।
লাইব্রেরীতে ঢুকতেই অলিন্দ্রীয়া ছোটখাটো শক খেলো। ক্যাশ কাউন্টারে একটি ছেলে খুব মনোযোগী হয়ে জব সলিউশানস পড়ছে। সাথে সাথে বই কেনাবেচার টাকা রাখছে। নীলক্ষেতের এই লাইব্রেরীটিতে অলিন্দ্রীয়া আগে অনেকবার আসলেও এই ছেলেটাকে দেখেনি। অলিন্দ্রীয়া আগ্রহী হয়ে কিছুক্ষণ ছেলেটার পড়াশোনা দেখলো, সে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে খাতায় নোট করছে। মাথার চুল উসকোখুসকো, বেশ অনেকদিন চুল না কাটলে যেরকম দেখায়। পরনের ব্লু টি-শার্টের একদিকের হাত পুরাই গুটানো, জিন্সটাও ধোয়া হয়নি অনেকদিন। পৃথিবীর কোনোদিকে যেন আগ্রহ নেই; সব মনোযোগ বইয়ে। তাও যেন দেখতে ভীষণ অন্যরকম ভালো লাগছে।

বিল পেমেন্টের সময় অলিন্দ্রীয়া নিজে থেকে কথা বললো,
—আপনি কি জবের জন্য পড়ছেন?
ছেলেটা মলিন করে হাসলো। যেন হাসতে তাঁর ভীষণ বিরক্ত লাগে!
—-লাইব্রেরীতে কেন? এত ক্রাউড! এর মাঝে পড়া হয়?
—পড়ে ফেলি কষ্ট করে।
—বাসায় কেন পড়ছেন না?
ছেলটা বিলের বাকি টাকা ফেরত দিতে দিতে বললো,
—বাসা নেই, মেসে থাকি।
অলিন্দ্রীয়া চলে এলো।

পরদিন ক্লাস শেষে অলিন্দ্রীয়ার মনে হলো, লাইব্রেরীতে আরেকবার গেলে কেমন হয়? ছেলেটাকে দেখে আসা যাক। ছেলেটা কি ভাববে? যা খুশি ভাবুক, অলিন্দ্রীয়া তো বই কিনতে যাবে। গিয়ে ছেলেটাকে পাওয়া গেল না। তবে ক্যাশ কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল ছেলেটা এখানে পার্টটাইম জব করে। বিকেল ৫টা থেকে বসে। মাস দুয়েক হলো কাজ করছে। ক্যাশ কাউন্টার সামলানো বাবদ সে কোনো বেতন নেয় না, শুধু লাইব্রেরী থেকে তাঁর প্রয়োজনীয় বইগুলো পড়ে নেয়। তাঁর নাম নাহিদ হাসান।

পরেরদিন বিকেল ৫টার আগে আগেই অলিন্দ্রীয়া লাইব্রেরীতে হাজির হলো। গিয়ে দেখে নাহিদ হাসান ক্যাশ কাউন্টারের কাছে বই জড়ো করছেন।
অলিন্দ্রীয়াকে দেখেই বললো,
—ম্যাডাম কি কমিকপ্রেমী নাকি?
—আসলে, আপনার সাথেই দেখা করতে আসা।
—কেন?
—আপনি যদি কিছু মনে না করেন, আপনার দরকারী বইগুলো যদি আমি আপনাকে কিনে দিই?
নাহিদ আচমকা যেন রেগে গেল।
—আপনি কিনে দিবেন মানে? কেন কিনে দিবেন? আমি কি বলেছি?
—রাগ করছেন কেন? আপনি এত কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়ে…
অলিন্দ্রীয়ার কথা শেষ হবার আগেই নাহিদ চিৎকার কণ্ঠে বললো,
—রাগ করবো না তো কি হাসবো? শোনো মেয়ে, টাকার বাহাদুরি দেখাতে আসবে না। আমাকে দেখে মনে হলো, আমাকে সাহায্য করলে পূণ্য হবে… মজা করা হচ্ছে!
এরকম কথাবার্তায় পুরো লাইব্রেরীর সব লোকজন কাউন্টারের কাছে জড়ো হয়ে গেল। অলিন্দ্রীয়ার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছিলো। সে ভাবতেই পারেনি ছেলেটা এভাবে চটে যাবে। অলিন্দ্রীয়াকে কোনো ধরনের কথা শোনাতে সে ছাড়লো না।

বিমর্ষ মুখে অলিন্দ্রীয়া বাসায় ফিরে এলো। এসেই বললো,
—মাই সুইটমিট ব্রাদারস, চলো ছবি আঁকবো! আজ আমি একটা রাগী দৈত্য দেখে এসেছি, তাঁর রাগী মুখটা মাথায় থাকতে থাকতে এক্ষুনি ছবিটা এঁকে ফেলতে হবে।
আমরা গভীর মনোযোগ দিয়ে লিয়াপুর ছবি আঁকা দেখতে থাকলাম।

পর্ব৩

এই প্রথম লিয়াপু কোনো ভালো ছবি আঁকলেন! তবে ছবিটা কোনো রাগী দৈত্যের না; একটা খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা লোকের, যে গভীর মনোযোগী হয়ে বই পড়ছে।

পরদিন সকালে দাদুই ছবিটা দেখেই বললেন,
—তোর শ্রীকান্ত নাকিরে, লিয়া?
লিয়াপু বললো,
—এখনো কনফার্ম হইনি দাদুই। দেখার পর থেকে পড়াশোনা মাথায় ঢুকছে না। চোখের সামনে ভাসছে। ঘুমোতে গেলে, শুতে গেলে, ব্রাশ করতে গেলে, গান শুনতে বসলে সবসময়ই মনে পড়ছে। মহাবিপদে আছি। কঠিন আবেগ না কঠিন ঘোর কিছুদিন গেলে বুঝবো।
—তা কোথায় পেলি? কি করে?
—লাইব্রেরীতে দেখলাম। চাকরির জন্য পড়াশোনা করছে। নামটাই শুধু জানি।
দাদুই বললেন,
—ও আচ্ছা… বেকার, ভিখিরি বুঝি!
লিয়াপু হেসে ফেললেন।
—এক অর্থে তাই। আর ভীষণ রাগী।

আমার আর অংক ভাইয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। আমাদের বারবি প্রিন্সেস লিয়াপু যে কিনা বুয়েটে ট্রিপল ই’র মতো সাবজেক্টে পড়ছে সে একটা ভিখারীর প্রেমে পড়ে গেল!
লিয়াপু আমাদের দু-জনকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
—তোরা কি ও’কে দেখতে যাবি?
আমরা সানন্দে মাথা নাড়লাম।
—শোন্, একটু রাগিয়ে দিতে পারবি না? গিয়ে বলবি, নাহিদ ভাই তোমার কত বই দরকার বলো, কিনে দিই? ব্যাস…চটে যাবে। তোদের দু-জনের যদি পছন্দ হয় খুব শীঘ্রই বিয়ে করে ফেলবো।
—বিয়ে করে ফেলবে মানে? তুমি তো বলেছিলে, কখনোই বিয়ে করবে না। বিখ্যাত হবে।
লিয়াপু অসহায় মুখ করে বললেন,
—দেখার পর থেকে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মস্তিষ্কের নিউরন সব তালগোল পাকিয়ে গেছে। বিয়ে না করলে ব্রেইন স্বাভাবিক হবে না।
—তোমাকে বিয়ে করতে যদি রাজি না হয়?
—বিয়েতে রাজি করানো তো খুব সোজা। ক্লোরোফর্ম দিয়ে বেহুশ করে নিয়ে আসবো। পরে জ্ঞান ফিরিয়ে গলায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলবো, বলো বাবু কবুল। বিয়ে শেষ!
লিয়াপুর এত এক্সাইটিং এডভাঞ্চার করে বিয়ে হবে ভেবে আনন্দে আমাদের গা শিউরে উঠলো।

বিকেলে আমরা লাইব্রেরীতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। লোকটার মুখে মোটেও খোঁচাখোঁচা দাড়ি নেই। ক্লিন শেভড, চমৎকার চেহারা। ছ’ফুটের মতো লম্বা। এরকম একটা রাজপুত্তুরের মতো লোককে যদি লিয়াপু বিয়ে করে আমরা ধন্য হয়ে যাবো।
নাহিদ ভাইয়া আপুকে দেখেও না দেখার ভান করলো। আপু নাহিদ ভাইয়ার সামনেই আমাদের জিজ্ঞেস করলো,
—মাই সুইটমিট ব্রাদারস, তোমাদের দুলাভাই পছন্দ হয়েছে?
আমি আর অংক ভাইয়া একসাথে বলে উঠলাম
—ইয়েস এন্ড স্টার ইয়েস।
লিয়াপু আনন্দিত গলায় বললো,
—নাহিদ সাহেব, আপনার কি কাল একটু সময় হবে? আপনাকে স্যরি বলতাম। প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
নাহিদ ভাইয়া পরদিন বিকেলে দিলেন।

আমরা তিন ভাইবোন বাসায় এসে আপু কিভাবে দেখা করতে যাবে সেই প্রস্তুতি নিতে থাকলাম।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here