অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা,#৪র্থ_পর্ব,০৫

0
3465

অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা,#৪র্থ_পর্ব,০৫
#ফারজানা_আক্তার
৪র্থ_পর্ব

ক্লাস শেষে হিয়া আর রিতা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো। গেইটের কাছে আসতেই হিয়া অবাক হয়ে চমকে গেলো হঠাৎ, হিয়া আর সামনে আগানোর সাহস পাচ্ছেনা। পা দুটো যেন তার পাথরে পরিনত হয়েছে।

হিয়া কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে “রি রি রিতা আমাকে বাঁচা, না হয় আজকে আমায় তেলাপোকা বানিয়ে দুধের সাথে মিশিয়ে আমাকেই খাওয়াবে আবার।

রিতা- কি হয়েছে, এমন করছিস কেন তুই। (ভ্রু কুঁচকে)

হিয়া ভিতু সুরে বলে “সামনে ওই ছেলেটা, দেখ ফোনে কথা বলতেছে,, যদি আমায় চিনে ফেলে?? তবে তো আমায় করলার জুস বানিয়ে আমাকেই খাইয়ে দিবে,, ছি ইয়াক, কি তিতা।।

রিতা- কোন ছেলে? কি বলস এসব আবুল তাবুল?

হিয়া রাগি কন্ঠে বলে ” আরে ওই ছেলে, যে ছেলেকে ফেসবুকে আমি বিরক্ত করি”।

রিতা কপাল ভাজ করে বলে “মানে? কাকে বিরক্ত করস তুই? আর কেন?

হিয়া ঠোঁট উল্টিয়ে করুণ সুরে বলে ” আমি তো শুধু মজা করি একটু,, আর কিছুনা”

এটা বলে ছেলেটার দিকে তাকাতেই দেখে ছেলেটা নেই,,

আমাকে খুজতেছেন??

পিঁছন থেকে হঠাৎ কারো এমন কথা শোনেই হিয়া পিঁছনে ফিরে,, আর সাথে সাথেই জ্ঞান হারায়।

জ্ঞান ফিরতেই হিয়া আবিস্কার করলো সে তার রুমেই আছে। তার মানে ওই ছেলে তাকে করলার জুস বানায়নি। সে একদম ঠিক আছে। আহ্ বড়জোর বেঁচে গেলাম, দেখি কয়টা বাজে। আরে মাত্র তো বাজে চারটা পনেরো,, তার মানে আরো এক ঘন্টা ঘুমুতে পারবো তারপর স্যার আসবে।।

ওওওও কি মজা কি মজা,, আজকে নতুন স্যার আসবে আবার শুরু হবে নতুন খেলা। এসব বকতে বকতে ফোনটা বেজে উঠলো, আরে এটা কার নাম্বার,, ওই ঢেঁড়সের কল নয়তো। না বাবা রিসিভ করবোনা যদি আমায় মেরে ফেলে। এখনো তো বিয়েও হয়নি আমার আর পতুলের মতো কিউট একটা বাচ্চাও হয়নি, আঁআঁআঁআঁআঁ।।

হিয়া এসব বকবক করছে আর এইদিকে ফোন বেজেই যাচ্ছে,

আচ্ছা একবার রিসিভ করে দেখি,, ওই শয়তান তো ফেসবুকে চিনে নাম্বার তো জানেনা,, যদি কারো থেকে নিয়ে থাকে নাম্বার তখন কি হবে??? আল্লাহ বাচাও আমায়

হিয়া- আসসালামু আলাইকুম

“ওয়ালাইকুমুস সালাম”
ওপাস থেকে কাব্য এর কন্ঠস্বর ভেসে আসলো।। হিয়া অবাক

হিয়া- আ আ আপনি?

কাব্য- তো কি অন্য কারো কলের অপেক্ষায় ছিলে নাকি?

হিয়া- না মানে আসলে,,,, আপনি কেন কল দিয়েছেন আমায়,, আমার দশ টাকা দেওয়ার জন্য নাকি?

কাব্য- না,, আমি সুন্দরী ফকিরদের কে ভিক্ষা দেয়না
হিয়া- তো কল দিলেন কেন? (ভ্রু কুঁচকে)

অভি-প্রেম করতে

হিয়া ঢোক গিলে,, কি বলে এই ছাগলটা? নেশা করেছে মনে হয়

হিয়া- আপনি নেশা করছেন,, ওয়েট সবাইকে বলে দিবো আমি (গম্ভীর হয়ে বলে)

কাব্য- কিহহহহহহ আমি নেশা করেছি? পাগল নাকি? (চমকে উঠে বলে)

হিয়া কোমরে হাত রেখে রাগি কন্ঠে বলে “নিজে নেশা করে আবার আমাকে পাগল বলা,, সাহস তো কম না টিকটিকির বাচ্চার”

কাব্য- ছি কি সব বলছো? কেন মনে হয় তোমার আমি নেশা করেছি? (শান্ত স্বরে)

হিয়া- নেশা না করলে কি গাধার মতো হবু স্ত্রীর সাথে প্রেম করার জন্য কল দিতেন? (বোকার মতন ফেস করে বলে)

এবার তো কাব্য আর রাগ সামলাতে পারলোনা,, সে গিজ গিজ করতে করতে বলল “এই মেয়ে এই তোমার মাথায় গোবর ছাড়া আর কিচ্ছু নাই নাকি,, যখন তখন আবুল তাবুল বকবক করতেই থাকো”?

হিয়া- ওমা গোবর আমার মাথায় আসবে কোত্থেকে,, গরুর গোবর তো আপনি,, (ঠোঁট উল্টিয়ে বলল)

কাব্য- জাস্ট ইম্পসিবল

এটা বলেই কাব্য ফোন কেটে দিলো। আর নিজে নিজেই ভাবে, “কি আজব মেয়ে রে,,মাথাটাই নষ্ট করে দিলো। আমার সাথে চালাকি,, ঠিক আছে এবার বুঝবে এই কাব্য কি কি করতে পারে।
জানিনা কি আছে এই আধপাগলি মেয়েটার মাঝে,, চোখজোড়া বারবার তাকেই খোঁজে।।

এইদিকে তো হিয়ার হাসতে হাসতে ঢেকুর উঠে গেছে।। এবার বুঝবে মজা আমার দশ টাকা না দিয়ে তো চলে গেছে, এখন আমিও পাগল বানিয়ে দিবো আবুল তাবুল বকতে বকতে,,হিহিহিহাহা

ইস্ কত্ত শখ বেটার,, আমার মতো সোনার ফুলের সাথে নাকি প্রেম করবে। মুখ ভেংচিয়ে কথাগুলো বলে হিয়া।

হিয়া ঘড়িতে দেখে পাঁচটা বাজতে আর মাত্র ৩মিনিট বাকি,, শালার গন্ডার আমার ঘুম শেষ করে দিলো বকবক করতে করতে। বিয়ে করতে হ্যাঁ বলে যেন মহাবিপদে পরে গেলাম।
এখন তো স্যার চলে আসবে,, ফ্রেশ হয়ে আসি আগে, কিছু খেয়ে পড়তে বসবো নে।

হিয়া বকবক করতে করতে ওয়াশরুমে চলে গেলো। আলিয়া বেগম এসে দেখে পুরা রুমটা খালি, হিয়া কোথাও নেই।

কি হয়েছে হঠাৎ, মেয়েটা এভাবে অজ্ঞান হলো কেন? শরীর ঠিক আছে তো মেয়েটার। চিন্তায় চিন্তায় মারবে এই মেয়েটা আমায়।
আলিয়া বেগম হিয়ার রুমের বেলকনিতে গিয়ে গ্রিল ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে এসব ভাবছে।

হিয়া ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আয়নার সামনে বসতেই আয়নাতে দেখে বেলকনিতে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। সে ধীরে ধীরে বেলকনিতে গেলো, যেয়ে দেখে আলিয়া বেগম এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।

হিয়া মাকে দেখে পা টিপে টিপে মায়ের ঠিক পেঁছনে গিয়ে চিৎকার করে বলে উঠে “বোম”

আলিয়া বেগম আচমকা এমন শব্দ শোনে খুব ভয় পেয়ে যায়, পুরো শরীর তার কেঁপে উঠে। পেঁছন ফিরে দেখে হিয়া হাসতে হাসতে একাকার।

তিনি রাগান্বিত স্বরে বলেন “তোকে জন্ম দেওয়ায় কি আমার ভুল ছিলো”?

হঠাৎ এমন কথা শোনে হিয়ার মন খারাপ হয়ে গেলো। সে তো একটু মজা করেছে, তাতে কি এমন হয়ে গেছে যে মা তাকে এমন বাজে কথা শুনিয়ে দিলো।

হিয়া চুপ হয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আলিয়া বেগম জোরে জোরে দুটো নিঃশ্বাস নেই তারপর শান্ত স্বরে বলে ” দেখ মা তিনমাস পর তোর বিয়ে, এসব বাচ্চামো ছাড়তে হবে তোকে, যথেষ্ট বড় হয়েছিস মা তুই, আর এমন ভয় আর কাউকে কোনোদিন দেখাবি না এতে মানুষের ক্ষতি হতে পারে।

হিয়া মনে মনে চিন্তা করে এতে আবার কিসের ক্ষতি, তবুও মায়ের হাত ধরে বলে সে এমন দুষ্টুমি আর করবে না, যদিও মিথ্যা বলেছে। কারণ দুষ্টুমি না করে সে থাকতেই পারেনা।

আলিয়া বেগম চিন্তিত স্বরে জিজ্ঞেস করেন “আজ কলেজে কি এমন হয়েছে যে তুই হঠাৎ অজ্ঞান হয়েছিলি”?

হিয়া- তোমাদের জন্যই তো।। (মুখ বাঁকিয়ে বলে)
আলিয়া বেগম – ওমা আমরা কি করেছি?
হিয়া- তোমাদের জন্যই তো কাল রাতে দেরিতে ঘুমিয়েছি আর তাই আজ অজ্ঞান হয়েছি,।

উফ্ এই মেয়ে পাগল করে দিবে।।
শোন এবার যে স্যার আসবে সে ওই কলেজেরই ছাত্র ছিলো চার বছর আগে। এই ছেলে নাকি খুব ভালো ছাত্র। এবার যদি কোনোরকম দুষ্টমি করে এই স্যারকে তাড়িয়ে দিস তবে আর কোনো স্যার পাবিনা, পরিক্ষায় ফেল করলে শশুর বাড়িতেও মুখ দেখাতে পারবিনা।
এসব বলেই গিজ গিজ করতে করতে চলে গেলেন আলিয়া বেগম।

হিয়া মন খারাপ করে আকাশের দিকে তাকালো, আর এমন সময় আলিয়া বেগম নিচে থেকে চিল্লিয়ে বলল স্যার আসছে স্টাডি রুমে যেতে।

হিয়া বিরক্ত ফেস নিয়ে গেলো, স্টাডিরুমের দরজায় যেতে সে চমকে গেলো নতুন স্যারকে দেখে।।

না এটা হতেই পারেনা, আমি তো শেষ, আল্লাহ বাঁচাও আমায়। বিড়বিরড় করে এটা বলেই সে আবারো জ্ঞান হারায় ____

#চলবে

#অল্প_পাগলামি_সীমাহীন_ভালোবাসা
#পর্ব_৫
#ফারজানা_আক্তার

জ্ঞান ফিরতেই সে মিটিমিটি করে চোখজোড়া খুললো,, চোখ মেলে দেখে সামনে তার মা আর স্যার দাঁড়িয়ে আছে।

সে আবারো চোখ বন্ধ করে নিলো

আলিয়া বেগম রাগান্বিত স্বরে বলল “আজ আসুক তোর বাবা, আদর দিয়ে তো মেয়েকে মাথায় তুলেছে,, বাপ মেয়ে দুজনকেই আজ বাসা ছাড়া করবো।

হিয়া এবার লাফ দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসে আর আলিয়া বেগমের উদ্দেশ্যে বলে “ছি ছি নিজের স্বামী সন্তানকে বের করে দিয়ে এই বয়সে আবার বিয়ে করবে তুমি?? আল্লাহ গো তুমি আমারে তুইলা নাও, আমি এই দু’চোখে মায়ের বিয়ে দেখতে কিছুতেই পারবোনা”।

স্যার মুচকি হেসে দেয় এটা শোনে, আলিয়া বেগম আড়চোখে সেটা দেখে ফেলে আর রাগে ফুসতে ফুসতে বলে ” পড়তে বস যা,,। এটা বলেই আলিয়া বেগম হনহন করে সেখান থেকে চলে যায়।

_________

পড়ার টেবিলে

স্যার- তোমার নাম কি?
হিয়া- তাহিয়া ইসলাম হিয়া.(নিচের দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে)
স্যার- তাহিয়া আর হিয়া তো একই নাম,, এতে আবার আলাদা কি আছে?
হিয়া- জানিনা স্যার
স্যার- আমার নাম নীলয় আহমেদ।। তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেন? কারণ কি?
হিয়া- না, ঠিক আছি আমি
নীলয়- ঠিক নেই তুমি, স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। (কপাল ভাজ করে)
হিয়া- আসলে মানে,, আমি পানি খাবো। (ঢোক গিলে ভিতু স্বরে বলে)
নীলয়- আচ্ছা

একটু থেমে ভ্রু কুঁচকে নিলয় বলে “আজ কলেজেও আমায় দেখে জ্ঞান হারিয়েছো, এখন আবার হলো একই ঘটনা,, কারণটা কি??

হিয়া কিছু বলছেনা, চুপ হয়ে আছে।। আর মনে মনে ভাবছে, উগান্ডা তোরে ইচ্ছে করছে কুচিকুচি করে কেটে রান্না করে কুকুরকে খাওয়াইতাম।

নীলয় এবার বিরক্তি স্বরে বলল ” ভাবছো কি? আচ্ছা বাদ দাও এসব,, পড়া শুরু করো”

পড়তে পড়তে হিয়া বলল “স্যার আমি আপনার জন্য শরবত করে নিয়ে আসি”? আর ভ্রু নাচিয়ে নাচিয়ে মনে মনে বলে “শরবতের সঙ্গে মরিচ দিয়ে আজকেই ভাগামু তোরে, কালো বান্দর হিহিহি”

নিলয় কড়া কন্ঠে বলল ” বলেছি আমি”?

হিয়া মন খারাপ করে চুপ হয়ে গেছে,,

প্রায় আধঘন্টা পর হিয়ার ফোন বেজে উঠলো পড়ার মাঝখানে,, হিয়া চমকে উঠলো কল এর শব্দ শোনে।

নীলয় বিরক্তিকর কন্ঠে বলল “পড়ার সময় প্রতিদিন ফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট করে রাখবে,, got it?

হিয়া ফোন হাতে নিয়ে নিচু স্বরে বলল “স্যার রিসিভ করি? প্রয়োজনীয় কল..”

নিলয়- দ্রুত রিসিভ করে বলো, পড়তেছো এখন, পড়া শেষ হলে কথা বলবে

হিয়া- আচ্ছা

হিয়া বেলকনিতে গিয়ে ফোন রিসিভ করে বলল “ওই গরুর গোবর কল করতে কি আর সময় পেলেন না, একটু আগেই তো কথা বলেছিলাম। যখন তখন কল দেন কেন?? হিয়া এক নাগারে কথাগুলো বলে থামলো

কাব্য শান্ত ভাবেই বলল “তোমার আজাইরা বকবক শেষ হলে কি আমি কিছু বলবো এখন”?

হিয়া- না, এখন কোনো কথা শোনারই সময় নেই আমার

কাব্য- কেন?

হিয়া- বলবো কেন? (একটু ঢং করে)

কাব্য- ভাব নিচ্ছো?

হিয়া- হতে পারে

কাব্য- ওয়েট,, এখনই আসতেছি

হিয়া- কে কে কেন?(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে)

কাব্য বাঁকা হেসে বলে ” আসলেই দেখবে”

প্রেমআলাপ আজকে শেষ হবে নাকি আমি চলে যেতাম?
হঠাৎ পেঁছন থেকে বলে উঠলো নিলয়।।

হিয়া চমকে গেলো,,

হিয়া- স্যার আ আপ আপনি?

নীলয়- থোঁথলাতে বলিনি,, পড়বে নাকি চলে যাবো?(কর্কশ কন্ঠে)

হিয়া- স্যার আপনি যান, আমি আসতেছি

হিয়া কল কাটতে ভুলে গেছে যার কারণে কাব্য সব শোনতেছে, কাব্য নিজে নিজে বিড়বিড় করে বলল “রূপসী, আমি ছাড়া অন্য কোনো পুরুষ তোমার কাছাকাছি আসুক,আমি সহ্য করবোনা,হোক সে টিচার কিংবা অন্যকেউ”

এটা বলেই মুখ শুকনা করে কল কেটে দিলো।।

স্যার চলে যাওয়ার পর হিয়া ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে কাব্য কল কেটে দিয়েছে,, হিয়ার মন খারাপ হয়ে গেলো।।
__________

রাত নয়টা,

খাবার টেবিলে মিজান সাহেব জিজ্ঞেস করলো “মা আজ নাকি দু’বার অজ্ঞান হয়েছো,, কাল কলেজে যেওনা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো তোমায়”

হিয়া একটু হাসির অভিনয় করে বলে “না বাবা,, ঠিক আছি আমি, কিছু হয়নি আমার,, তুমি চিন্তা করো না”

এমন সময় কেউ একজন পেঁছন থেকে হিয়ার চোখজোড়া চেপে ধরেছে হাত দিয়ে,,

হিয়া কর্কশ কন্ঠে বলে উঠলো “উঁহু আমার বিরিয়ানির ভাগ আমি কাউকেই দিবোনা”

নিহান মন খারাপ করে বলল ” ধুর ভাল্লাগেনা, কিভাবে চিনে যাস তুই আমায়”

হিয়া ভ্রু নাচিয়ে বলে “এই টেলেন্ট সবার থাকেনা,, চিকনা ইঁদুর ”

নিহান- খেয়ে এসেছি, খুব টায়ার্ড ঘুমুতে গেলাম।

হিয়া- দাঁড়া, আমার জন্য কি কি আনলি দিয়ে যা

নিহান দুষ্ট হেঁসে বলে “তোর জন্য করেলার চিপস এনেছি, একদম মধুর মতো টেস্ট ” এটা বলেই নিহান দৌড় লাগায়

হিয়া মুখ ভেংচিয়ে তার রুমে চলে যায়, আর যাওয়ার সময় মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে “বোম” এটা বলে সেও একদৌড়ে গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।।

দরজা বন্ধ করে হাফ ছেড়ে যেন বাঁচলো,, আল্লাহ এই যাত্রায় তো বেঁচে গেলাম,,
এখন কি করবো, নিলয় স্যার কে বিরক্ত করা যাক। যেই ভাবা সেই কাজ, হিয়া নিলয়কে মেসেজ দিলো “ও মাই হার্ট, ও মাই লাভ,, তুমি আমার প্রেমেরই গোলাপ” গানটা হিয়া প্রায় গুনগুন করে গায়, তাই এটাই মেসেজ করে দিলো।

নিলয় হিয়ার মেসেজ পেয়ে মনে মনে চিন্তা করে এই মেয়ের লেজ কাব্য ছাড়া আর কেউ সোজা
করতে পারবেনা।

নিলয় আর মেসেজের রিপ্লাই দেয়নি হিয়াকে,, সে ভাবছে কাল কলেজে যাবে।

এইদিকে হিয়া রিপ্লাই না পেয়ে ইচ্ছেমতো গালি দিচ্ছে নিলয়কে “খচ্চর কুমির, করেলার জুস, ছাগলের ডিম, তোরে যদি আমি কাল না ভাগাচ্ছি তো আমার নাম হিয়া নয়, হিয়া থেকে চেঞ্জ করে নাম জরিনা রেখে দিবো”

রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে এগুলো বিড়বিড় করতে করতে শুয়ে পরেছে,, হঠাৎ আবার লাফ দিয়ে শোয়া থেকে উঠে গেলো,,

আল্লাহ আমাকে বাঁচাও, ওই কাব্যর বাচ্চা তো আমায় শেষ করবে।। একটা কল দিয়ে কি দেখবো, না থাক, উনি খুব খুব ভয়ংকর, রাগ সামলাতে পারেনা

এসব ভাবতে ভাবতে হিয়া ঘুমিয়ে গেলো। সকালে পাখির কিচিরমিচিরে ঘুম ভাঙলো হিয়ার,, ফোন হাতে নিতেই দেখে ৩০টা মিসকল কাব্যর,, হিয়া ভয়ে ঢোক গিলে “আজ তো আমাকে কাঁচা মরিচ দিয়ে পাটাই পিশে খাবে ওই বজ্জাতটা,, এ্যাঁএ্যাঁএ্যাঁ আল্লাহ গো বাঁচাও আমায়
______________
?

হিয়া ওয়াশরুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই দেখে তার ডান গালে কি জানি লেখা আছে,, প্রথমে হিয়া ভয় পেয়ে যায়, পরে আয়নাতে খুব ভালো করে দেখার চেষ্টা করে কিন্তু আয়নাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছেনা তাই পড়তে পারতেছেনা।

হিয়ার মাথায় এবার বুদ্ধি এলো, সে দৌড়েই বেড রুমে যায় আর চট করে ফোনটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,,

ফোনে গালের ছবি ক্লিক করে সেটা ঝুম করে পড়ার চেষ্টা করছে, “এই আমি তুমি ছাড়া বড্ড একা”

ছিঃ কে লিখেছে এমন লেখা? দরজা তো বন্ধ তবে কে এসেছে আমার রুমে আর কিভাবে??

উফ মাথা ফেটে যাবে চিন্তায়,, আম্মু লেবু চা খাবো। চিল্লিয়ে বলে।।।
অভিকে কি ফোন দিয়ে জানাবো এসব???

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here