#অসমাপ্ত_ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল
#পার্টঃ২
(সেড স্টোরি না).
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
পাঞ্চিং ব্যাগে একের পর এক ঘুষি মেরেই চলেছে অরণ্য। সম্পূর্ণ রাগ সে ঝারছে পাঞ্চিং ব্যাগে।
অরণ্য পাঞ্চিং ব্যাগে লাস্ট পাঞ্চ করে বসে পরলো। পাশে থাকা বাস্কেট বল নিয়ে দেওয়াল এর সাথে ছুড়তে লাগলো
অরণ্যঃকাজ টা তুই ঠিক করিসনি রোজ(সবাই তাহা বললেও অরণ্য রোজ বলেই ডাকে)আমার ভালোবাসাকে তুচ্ছ করেছিলি না আমার ভালোবাসাকে। আর এখন আমার ভাইয়ের সাথে ছিঃ। কি করে নামলি রে এতো নিচে কি করে। আমি তো এই রোজ কে ভালোবাসি নি এটা আমার রোজ হতেই পারেনা কখনো না।তোকে ঘৃণা করি।আমার ভালোবাসার শৃঙ্খচীল কে তুই খুন করেছিস। (রাগে চিৎকার করে বল টা জোরে ছুড়ে মারে বল টা ফেটে হাওয়া বেরিয়ে যায়।)
__
বুজলেন না তো কিছু আসলে তখন তাহা কে ফেলে চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে অরণ্যর টনক নড়ে। সে ছুটে যায় তাহার রুমে আর যেয়ে দেখে নিভ্র তাহাকে কোলে নিয়ে বেডের দিকে এগুছে। ওদের মুখটা বিপরিত দিকে থাকায় অরণ্য ঘুমন্ত তাহাকে দেখেনি।।
,
,
,
অন্ধকার স্টেশানে বসে আছে নতুন বউ পরনে বেনারোসি শাড়ি। কান্না করতে করতে চোখ ফুলায় ফেলেছে। স্টেশানে থাকা কিছু মানুষ অদ্ভুদ চোখে তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে কিন্তু মেয়েটা নিজের মতো কান্না করতে ব্যস্ত।
কোন দিকে খেয়াল নেই তার।
কিছু সময় পরেই সেখানে এসে পৌঁছায় একজন সুদর্ষন যুবোক। মুখে মাস্ক থাকায় তার মুখটা দেখা না গেলেও তার সবুজ চোখ জোড়া স্পষ্ট।সে এসে মেয়েটার সামনে হাটু মুড়ে বসে পরে।
যুবোকঃআবার পালিয়েছো(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)
মেয়েটাঃতো কি করবো বিয়ে করে নিবো ওই ডাক্তার কে। কতোবার বললাম করবোনা বিয়ে করবোনা বিয়ে কেউ শুনে না আমার কথা। (কেদে কেটে অস্থির হয়ে)
যুবোকঃপালায়ে কি লাভ হয়। তোমার ই বদনাম হয়
মেয়েটাঃহোক বদনাম। মরে যায় তবুও বসবো না বিয়ের আসরে আমি।
যুবোকঃকেন করছো এই জেদ। আমি তো দেখেছি ছেলেটাকে তার চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা আছে। তাই তো তোমার এতো বার পালানোর সর্তেও তোমাকেই বিয়ে করতে চায়(দুই হাত দিয়ে মুখ তুলে)
মেয়েটাঃঅচেনা এক ছেলে যাকে তুমি চিনোনা জানোনা তার চোখ পড়তে পারো আর যে মেয়েটা দিন রাত ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিৎকার করে তার ভালোবাসা তোমার চোখে পরেনা(মনে মনে)।আমি তাকে ভালোবাসি না আর না তাকে বিয়ে করতে চাই।
যুবোকঃতোমাকে বুঝিয়ে লাভ নাই চলো বাড়ি থুয়ে আসি(হাত ধরে)
মেয়েটাঃ নাহ আমি যাবোনা। চলোনা আমরা বিয়ে করে ফেলি(আদুরে কন্ঠে)
যুবোকঃআমার লাইফ আর তোমার লাইফ এক না বুঝো না কেন।
মেয়েটাঃআমি কিছু বুঝিনা ভালোবাসি তোমাকে।আমার অসমাপ্ত ভালোবাসার শৃঙ্খচীল তুমি।যে ভালোবাসার কোনসমাপ্তি নেই সে ভালোবাসা তুমি আমার।(কাদতে কাদতে ফ্লোরে বসে পরে)
ছেলেটাঃসব কিছু কি পেতে হয়। জীবনে কোন কিছু না পাওয়াও থাকতে হয়(দীর্ঘশ্বাস ছেরে)
মেয়েটাঃআমি কিছু জানিনা।
ছেলেটাঃতুমি আমার জীবন সম্পর্কে অবগত তনু(তনুশ্রী রেজওয়ান)..
তনুশ্রীঃহ্যা তো
ছেলেটাঃআমার জীবন বাকি ছেলেদের মতো না সেটাও তুমি জানো আমি মাস্ক খুলে কোথাও যেতে পারিনি। ২৪ ঘন্টা আমার মাথার উপরে যমরাজ থাকে।আমি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় এই নিশ্চয়তা দিতে পারিনা যে আদৌ আমি ফিরতে পারবো কি করে জরাবো তোমাকে আমার সাথে যার কারনে আমি আমার আদরের বোনটাকে আমার থেকে দূরে রেখেছি।কি করে এমন একটা জীবনে তোমাকে জরায়(তনু কে বুকে জরিয়ে নিয়ে)
তনুঃআমি জানিনা যদি মরণ হয় তাহলে তোমার বউ হয়েই মরতে চায় বিধবা হতে হলেও তোমার বিধবা হবো তবুও আমি এই তুমি টাকে চায় আমার ভালোবাসার শৃঙ্খচীল কে চায়।ভালোবাসি অয়ন খুব ভালোবাসি আমার গ্যাংস্টার অয়ন টাকে।
অয়নঃআর কি করার চলেন ম্যাডাম ট্রেন এসে গেছে।(ট্রেন এর দিকে ইশারা করে)
তনু খুশিতে লাফিয়ে উঠে অয়ন এর গলা জরিয়ে ধরে।অয়ন তনু কে ওইভাবে উঁচু করে তুলে ট্রেনে উঠে পরে। অয়ন তনুকে বসায় দেয় সিটে।পকেট থেকে ফোন বের করে কাকে যেনো ম্যসেজ করে।ফোনটা পুনরায় পকেটে পুরে ফেলে। পাশে তাকিয়ে দেখে তনু অয়ন এর কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
(তনু পুরো নাম তনুশ্রী রেজওয়ান।ঢাকার অনেক বড় শিল্পকার এর মেয়ে। বয়স হবে ২১ ২২ এর কাছে।মারাত্মক সুন্দরী।হাজার হাজার ছেলে যার পিছনে পাগল সে মেয়ে অয়ন রহমান এর পেছনে পাগল।
অয়ন রহমান উর্ফে AR।দেখতে অনেক সুন্দর। দুধে আলতা গায়ের রঙ ব্রাউন চুল। সবুজ জোড়া আখি যুগোল।রাগ তার নাকের ডোগায়। মন পছন্দ কিছু না হলে সেটা তছনছ করতে এক সেকেন্ড ও সময় নেয় না। তার রাগ দেখে বড় বড় গ্যাংস্টার ও ভয় পায়।কিন্তু তার রাগ দেখে শুধু মাত্র তনু আছে যে ভয় পায় না।
ধীরে ধীরে এদের অতিত ও জানবেন)
,
,
——-
ছোট একটা মেয়ে দুই সাইডে ঝুটি বেধে দৌড়াচ্ছে মনের সুখে কোন দিকে খোজ নেই তার হাতে বেলুন এর সমাহার।ফোকলা দাতের হাসিতে অসম্ভব মায়াবী লাগছে।
ছোট মেয়েটাকে হুট করে একটা ছেলে এসে কোলে তুলে নেয়। নরম গাল খানিতে ছোট করে ভালোবাসার স্পর্শ দেয় পিচ্চিটা খিল খিল করে হেসে উঠে।যেনো মুক্ত ঝরছে।
ছেলেটা সেটা দেখে বলে উঠে
ঃএই ভাবে হাসলে কিন্তু তোএ হাসিটা আমি খেয়ে ফেলবো বলে দিলাম(চোখ পাকায়ে)
মহূর্তে পিচ্চিটার মুখে ভয় এসে জোড় হয় আর ভ্যা করে কেদে দেয় সেটা দেখে ছেলেটা চুপ করানোর জায়গায় হেসে দেয়
পিচ্চি টা আদো আদো বুলিতে বলে উঠে
ঃপতা(পচা) অতন্য (অরণ্য)ভাইয়া।
অরণ্য কথাটা শুনে তাহার ঝুটি ধরে দেয় টান।
ঘুমন্ত তাহার ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে হাসি।চোখ জোড়া খুলতেই আপন মনে হেসে দেয় সে।ছোট বেলার সৃতি হয় ই এমন।
তাহাঃছোট বেলাতেও যেমন কাদাতে পছন্দ করতে এখনো ঠিক তেমন টাই করো। বুঝিনা কি পাও আমাকে কাদিয়ে(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
——-
অরণ্যঃতাড়াতাড়ি খেতে দেও মা(ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে)
মিসেস চৌধুরীঃএই নে তোর খাবার।এক মিনিট তুই এইভাবে রেডি হয়ে কই যাস
অরণ্যঃপাটি অফিস
মিসেস চৌধুরীঃশুনো ছেলের কথা কালকে আসলো আর আজকে থেকে নাকি সে কাজে লেগে পরবে না না সেটা হবে না।
অরণ্য কিছু বলতে যাবে তার আগেয় সিড়ি দিয়ে তাহাকে নামতে দেখে বলে উঠে।
অরণ্যঃআমি তো আর কারো মতো অন্যর টাকায় খেতে পছন্দ করিনা
তাহা স্পষ্ট বুঝতে পারলো কথা টা তাকে শুনানোর জন্যেই বলা হলো তাহা সে কথার পাত্তা না দিয়ে নিভ্রর রুমে গেলো।
মিসেস চৌধুরীঃতুই যাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বললি সেটা বলার আগে একটা বার ভাবলি না
এটা তার শশুড়বাড়ি। সে কেন কামায় করবে একটু বুঝাবি।আর বড় কথা সে এই বাড়ির বড় বউ হয়েও নিজে ইনকাম করে এসিস্ট্যান্ট জার্নালিস্ট সে অনার্স টা কাম্পিলিট করলেই সেও একজন জার্নালিস্ট হয়ে যাবে।আর এমনকি সে নিজের সম্পূর্ণ খরচ নিজের টাকায় চালায় তার মা যে টাকা পাঠায় সেটা ও নেয় না।
অরণ্যঃওর মা টাকা পাঠায় মানে।মামু পাঠায় ন। আর অয়ন ই বা কই।
(অবাক সুরে)
মিসেস চৌধুরীঃনা অয়ন এখন কথায় কেউ জানেনা (আমতা আমতা করে)
অরণ্যঃআর মামু
(অবাক সুরে)
মিসেস চৌধুরী কিছু বলতে যাবে তার আগেয় সেখানে তাহা এসে বলে যে তাকে নিভ্র ডাকছে।মিসেস চৌধুরী জেনো হাফ ছেরে বাচে চোখের ইশারায় তাহাকে ধন্যবাদ বলে চলে যায়। তাহাও ভার্সিটির উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরে।
কিন্তু অরণ্যর মনে সন্দেহ বাসা বাধে
অরণ্যঃমামার কথা শুনতেই মা র চেহারার রঙ পালটে গেলো। কিন্তু কেনো। কোথাও তো একটা গন্ডগোল আছে।কিছুতো একটাই লুকানো হচ্ছে(সন্দিহান কন্ঠে)
অরণ্যর ফোনে কারো ফোন আসায় সে ভাবনা বাদ দিয়ে ফোন কানে নিয়ে বেরিয়ে পরে।
চলবে!!!!
যারা নাম দেখে মনে করেছেন এটা সেড স্টোরি তাদের বলছি এটা কোন সেড স্টোরি না অসমাপ্ত মানে যেটার সমাপ্তি নেই।