অসমাপ্ত_ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল #পার্টঃ৩

0
1321

#অসমাপ্ত_ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল
#পার্টঃ৩
(সেড স্টোরি না)
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা

অরণ্য পার্টি অফিসে এসে পার্কিং এ নিজের গাড়ি পার্ক করে যে না বের হতে যাবে এমন সময় কোথায় থেকে একটা নেয়ে দৌড়ে আসে অরণ্যের কাছে।অরণ্য কিছু বুঝার আগেই মেয়েটা অরণ্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আর মেয়েটা অরণ্যের জায়গায় দাঁড়িয়ে যায় তখনি একটা বুলেট এসে মেয়েটার হাতে লাগে।

মেয়েটার সাদা শার্ট টা রক্তে ভিজে যায়। মেয়েটা মাথা ঘুরে পরতে নিলেই অরণ্য এসে ধরে ফেলে।গুলি চালানোর আওয়াজ শুনে সবাই সেখানে জোর হয়ে যায়।

অরণ্য কারো তোয়াক্কা না করে মেয়েটাকে কোলে তুলে গাড়িতে বসাই দেয়। দূর থেকে সবটা লক্ষ্য করে তাহা। তার মন অজানা ভয়ে কেপে উঠে। সে নিজেও জানে না এর কারন। শুভ্র চৌধুরী মানে অরণ্যর বাবার ইন্টারভিউ নিতে এসেছিলো সে।

শুভ্র চৌধুরী এসে তাহার কাধে হাত রাখে।

শুভ্রঃকি হয়েছে মামনি
তাহাঃআমার কিছু ঠিক লাগছেনা বাবাই। আজকে অরণ্য প্রথম দিন পার্টি অফিসে এসেছিলো আর আজকেই তাকে উদ্দেশ্য করে গুলি করা হয় আর কোথায় থেকে হুট করে এই মেয়েটা চলে আসে। আমার ব্যাপারটা ঠিক লাগছেনা তুমি তাড়াতাড়ি হস্পিটালে যাও।
(সন্দেহ জড়িত কন্ঠে)
শুভ্রঃহুম আমার ও তাই মনে হচ্ছে আচ্ছা তুই ও চল আমার সাথে।
তাহাঃনা বাবাই সেখানে গেলে তোমার ছেলে হিংস্র বাঘ হয়ে যাবে। এমনিতেই ওর মাথা এখন বিগড়ে আছে আমার তো সুটার এর জন্য ভয় করছে। সে যদি অরণ্য ভাইয়ার হাতে পরে তাহলে যে কি হবে ওর আল্লাহ জানে।
অভ্রঃএখনো ভাইয়া বলবি(কাধে হাত দিয়ে)
তাহাঃদেরি হয়ে যাছে বাবাই যাও তুমি

——-
পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে তাহাও শুভ্র চৌধুরীর পিছা নেয়। তার কেনো জানি মেয়েটাকে সুবিধার মনে হচ্ছেনা।

তাহা হস্পিটালে এসে দেখে অরণ্য চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে।শার্টে রক্তের ছড়াছড়ি। চোখ মুখে অনুতাপের ছোয়া।

তাহাঃকেন তোমাকে দেখে আমার ভয় লাগছে অরণ্য। তুমি তো শুধু মেয়েটাকে সাহায্য করেছো তাহলে আমার কেন মনে হচ্ছে হাওয়ার দিক পরিবর্তন হচ্ছে। কিসের ভয় আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। কেন তোমাকে পেয়েও হারানোর আশংকায় বুকটা ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে এটা তো হবার নই আমাদের ভালোবাসার শৃঙ্খচীল এর কাহিনী এখানেই সমাপ্ত হতে পারেনা এটা যে #অসমাপ্ত_ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল এর কাহিনী যা শেষ হবার নই।

তাহা আড়ালে দাড়িয়ে সব পর্যবেক্ষণ করছিলো কিন্তু অরণ্য তাহার উপস্থিতি বুঝে গেছিলো।

কিছুক্ষন পরেই ডাক্তার এসে জানালো মেয়েটা এখন ঠিক আছে।অরণ্যে স্বস্তির নিশ্বাস নিলো।ঘুমের ঔষধ দেওয়ার কারনে মেয়েটার ঘুম কাল সকালের আগে ভাংবে না। শুভ্র চৌধুরী গার্ডস রেখে চলে গেলেন। কিন্তু তাহা গেলোনা।

রাত তখন ৮টা বাজে। বাড়িতে সবাই টেনসেন করবে দেখে ফোন করার জন্য করিডোর এ আসতেই একটা বলিষ্ঠ হাত এসে তাহার কোমর জড়িয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো হঠাৎ এমন আক্রমণে তাহা একটুও অবাক হলোনা।

অরণ্যঃকি করছিস এখানে(শক্ত গলায়)
তাহাঃআমার সুন্দর বর টাকে পাহাড়া দিছি কি আর করবো(অরণ্যের গলা জরায় ধরে)
অরণ্যঃসাহস দেখছি বেরে গেছে একটা চড় মেরে এই সব কথা ছুটায় দিবো। আমাকে টাচ করার সাহস পেলি কই
তাহাঃএ্যাহ আইসে আমাকে টাচ করার সাহস পাইলি কই(অরণ্যকে ব্যাঙগ করে) নিজে যে সাপের মতো আমার কোমড় পেচায় রেখেছে সেটার বেলায় কিছুনা
অরণ্যঃতুই আমারে ইনডাইরেক্টলি সাপ বলছিস তোর এতো সাহস
তাহাঃআমি ইন্ডাইরেক্টলি না ডাইরেক্টলি বলছি আর হ্যা আমার অনেক সাহস কারন আছি মুনতাহা রোজা রহমান চৌধুরী গোট ইট
অরণ্যঃসাহস টা বেশি হয়ে গেলোনা
তাহাঃএকদম না জামাই। চৌধুরী সাহেব এর বউ এর এইটুকু সাহস না হলে মানায় না (অরণ্যের নাকের সাথে নিজের নাক ঘষে)

অরণ্যঃকেন করিস এমন তোকে ঘৃণা করতে পারিনা যে বার বার ঘৃণা হেরে ভালোবাসা এসে যায়।মনের কোনে যে ভালোবাসার শৃঙ্খচীল কে আমি আটকায় রেখেছি সে বের হতে চায় কিন্তু তোর করা কাজ গুলোর কথা মনে পরলে যে নিজের উপর রাগ হয়(মনে মনে)

তাহাঃমেয়েটা কেমন আছে(অরণ্যের বুকে মাথা রেখে)

অরণ্য চেয়েও পারেনা তার রোজ এর মাথাটা নিজের বুক থেকে সরাতে।তার যে বড্ড প্রয়োজন ছিলো প্রিয়তমার ছোয়াটা

অরণ্যঃহুম এখন ভালো আছে কালকে সকাল অব্দি জ্ঞান ফিরে আসবে।

কিচ্ছুক্ষণ দুইজনে নিশ্চুপ হয়ে থাকে। হঠাৎ করে অরণ্য বলে উঠে
ঃমামার কি হয়েছে রোজ
তাহা আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলো প্রশ্নটার জন্য সকালে যখন সে প্রশ্ন টা করেছিলো তখন ই বুঝে গেছিলো সে অরণ্য যতক্ষন না প্রশ্নটার উত্তর পাচ্ছে সে শান্ত হবে না

তাহাঃওই যে স্টার দেখছো না ওইটা আমার বাবা।
অরণ্যঃমানে(কাপা কন্ঠে)
তাহাঃ
৪ বছর আগে যখন তুমি বিয়ে করে চলে গেছিলে দেশ ছেড়ে তখন বাবা ভেংগে পরেছিলো কারন আমাদের যে সম্পর্ক ছিলো সেটা ফ্যামিলি যানতোনা। তাই আব্বু মনে করেছিলো ওর ডিসিশান এর জন্য আমার আমার আর তোমার জীবন নষ্ট হয়েছিলো । দিন দিন এই শোকে ঘুমরে মরছিলো। হঠাৎ একদিন শুনি আব্বু ব্রেনস্টোক করেছে।আম্মু সব দোষ আমাকে দিয়ে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে গেলো নানু বাসায়।

নিশ্চুপে অরণ্যের বুকে মাথা দিয়ে নিশ্চুপে চোখের পানি ফেলছে তাহা।পুরানো ঘা টা পুনরায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে।অরণ্য যেনো পাথর হয়ে গেছে কি বলবে কি রিয়েকশান দিবে সে ভুলে গেছ।সে স্বপ্নেও ভাবেনি তার বিদেশে যাওয়ার কারনে তার রেড রোজ কে এতো বড় প্রতিদান দিতে হবে।

——-
এক হাত ঘোমটা টেনে বসে আছে তনুশ্রী।মুখ তার লজ্জায় রাঙা অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে।কিছুক্ষন আগেই তারা বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।

কিছুক্ষন এর মাঝেই অয়ন রুমে প্রবেশ করে। তনুশ্রী নড়েচড়ে উঠে দাড়ায়ে অয়ন এর পা ছুয়ে সালাম করে।অয়ন তনুশ্রী কে উঠিয়ে বুকের মাঝে জরায় ধরে। তনুশ্রী ও গুটিশুটি মেরে কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তিটির বুকের সাথে মিশে থাকে।

অয়নঃএবার খুশিতো ম্যাডাম(তনুশ্রী মাথায় কিস করে)
তনুশ্রীঃআপনি আমাকে ভালোবাসেন না অয়ন তাই না।
অয়নঃকেন এমন মনে হলো
তনুশ্রীঃআজকে আমার বিয়ে ছিলো সেটা আপনি জানতেন তবুও আপনি প্রতিবারের মতো কিছুটি করেন নি।আমি যদি না পালাতাম তবে। আজকে এই সময় আমি অন্য কারো বউ হতাম অন্য কারো (আর বলতে দিলোনা অয়ন).

নিজের ঠোঁট দ্বারা তনুশ্রীর ঠোঁট দখল করে নিলো। তনুশ্রী ও সকল অভিমান রাগ অয়ন এর ঠোঁটের উপর ঝারতে লাগলো।

অয়ন তনুশ্রীর ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে তাকে সোজা করে দাড় করালো

অয়নঃতোমার বাসাতে মোট ৫০০ র মতো গার্ডস থাকে তোমার বিয়ে দিনে।কিছু গার্ডস এর পোশাক পড়ে তো কিছু ছন্দ বেসে।কিন্তু প্রতিবার তুমি সফল হও কি করে।

তনুশ্রী অবাক চাহনী নিক্ষেপ করে অয়ন এর দিকে।
অয়নঃতুমি যে পালিয়ে স্টেশান এ আসো তোমার পিছে কোন গার্ডস আসেনা কেনো তোমার বাবার পাওয়ার এতো কম।

তনুশ্রীঃতার মানে প্রতিবার এইসব মানে আমি যাতে পালাতে পারি তাই কিন্তু কেনো করতেন এমন

অয়নঃইটস টোপ সিক্রেট বেবি যাও ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমায়ে পরো কাবার্ডে ড্রেস আছে।।

তনু অয়ন এর কথা মতো চলে যায় কারন সে যানে যতোক্ষন না অয়ন এর ইচ্ছা হবে সে কিছু বলবে না

তনু সাওয়ার এর নিচে চোখ বন্ধ করে দাড়ায়। সাথে সাথে চোখের সামনে ভেসে উঠে কিছু সৃতি

তখন তনু ইন্টার প্রথম বর্ষে।খুব প্রানচ্ছ্বল মেয়ে সে।বাবা আর ২ ভাইয়ের আদরের টুকরা সে মা ছোট বেলায় তাকে জন্ম দিতে যেয়ে মারা যায়।

তনু সেদিন গাড়ি না নিয়ে যেয়ে হেটে যাওয়ার জেদ ধরে তাই না পেরে তারা বাপি রাজি হয়ে যায় কিন্তু কিছুদূর যেতেই সে দেখে,,,,

চলবে!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here