অস্তিত্বের খোজে,৯,১০

0
2424

অস্তিত্বের খোজে,৯,১০
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ৯



– আমি শুভ্রের কাজ গুলো দেখে একদম ফ্রীজ হয়ে গেছি। আজ যেন সহ্যর লিমিট ক্রস করে ফেলছে।
তবে বেশ খুশিও লাগছে বজ্জাতটা আর বজ্জাতি করতে পারবেনা আমার সাথে। এতেই অনেক এবং অনেক পাওয়া।



– রাতে পলা এসে আমাকে খাবার দিয়ে গেল রুমে। আমার নাকি আজ থেকেই এখানেই খেতে হবে এটা বিমলার দিদুনের হুকুম। আমিতো বেশ খুশিই হলাম। খাওয়ার সময় খোটা সহ্য করতে হবে না তো!



– পরী আমায় মাফ করে দাও গিন্নী মাকে আমিই বলেছি সব শুভ্রকে তোমার কাছ থেকে দুরে করতে। কিন্তু এতটা খারাপ কাহিনী গড়ে যাবে এটা আমি কল্পনাতেও ভাবিনি।


– যা করেছো বেশ করেছ। বকা খাইছি কিন্তু তোমার আইডিয়া টি বেশ কাজে দিছে পলা আন্টি। আরামে খাওয়া যাবে নিজের রুমে বসে।


– পলা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল পরীর কথা শুনে। পরী হয়ত জানেনা ওর জন্য আরও কঠিন হতে যাচ্ছে পরবর্তী সময় গুলো।


– আন্টি খেয়েছেন?
– না খাইনি সবাই খেয়ে উঠলে খাব। তুমি খেয়ে নাও বলে উনি চলে গেলেন।


– আমি কিছু না ভেবেই উড়াধুরা খুশি হয়ে খেতে বসলাম। আহা কত দিন পর কোন কথা শুনতে হচ্ছেনা খেতে বসে। বিমলা মহিলাটি আমাকে দেখতেই পারেনা।



– একটু পর পলা এসে সব নিয়ে গেল। আমিও বসে পড়লাম পড়তে। ১১.৪৫ দিকে পড়া কমপ্লিট করে ফোন নিয়ে বসে ফেসবুক ঘাটাঘাটি করছি। এমন সময় একটা আইডিতে চোখ আটকে গেল…….. নীল স্বপ্ন নামের একটা আইডির উপর। আমার এফবি ফ্রেন্ড। আগে কখনও দেখিনি বলে মনে পরছেনা। প্রফাইল চেক করে দেখলাম সব আবেকময় কথা। ব্যাটা নিশ্চয় ছ্যাকাখোর না হলে এগুলো পোষ্ট দেয় বলে হাসতে লাগলাম।



– আমি চুপি চুপি রুম থেকে বের হয়ে ছাদে গেলাম।
গিয়ে দেখলাম কে জানি উল্টা মুখ হয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি ভূ…উ…..ত বলে জোড়ে একখান চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাই।


“শুভ্র দৌড়ে পরীর কাছে এসে ওকে ধরে ফেলে। এই মেয়ের কাছ থেকে যতই সরে যেতে চাই ততই ও আমার সাথে লেপ্টে যায়। শুভ্র ওকে কোলে নিয়ে পরীর রুমে এসে পরীকে সুয়ে দেয়। কপালে একটা কিস করে ওখান থেকে আসার সময় হঠাৎ পরীর ফোনে মাসেজ আসে। শুভ্র গিয়ে ফোন নিয়ে মাসেজ চেক করতে লাগল। যত মাসেজ চেক করছে ততই রেগে শুভ্রর চড়চড় করে মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে। এত ছেলের সাথে চ্যাটিং। এই মেয়েতো সেই লেভেলের বেয়াদপ। এত ফ্রেন্ড থাকে কেমনে তার। এরে ছেড়ে দিয়ে রাখলে তো একদম গাছের মাথায় উঠে বসে থাকবে বলে টেবিলে একটা হাত দিয়ে বাড়ি বসিয়ে রুম থেকে বের হয়ে য়ায়।



“শুভ্র একের পর এক সিগারেট টেনে যাচ্ছে আর পরীর টেনশনে পায়াচারী করছে। এখন পরীর যা বয়স এতে ও যে যেকোন কাজে জড়িয়ে যেতে পারে। এটা বয়সের ও একটা দোষ। কিন্তু এভাবে তো ওর এই কান্ড মেনে নেওয়া যায় না। ধুর যা করে করুক আমার কি তাতে। আমিতো ওকে আমার জিবন থেকে মুক্তি দিয়েছি। ওর স্বাধীনতা চাই না! করুক স্বাধীন ভাবে জিবন যাপন।



“সকালে অর্পিতা এসে দেখে পরীর রুমের দরজা খোলা। অর্পিতা রুমে ঢুকেই দেখে পরী ঘুমে আছে।
পরী দিদি…….. এই পরী দিদি বলে পরীর গা ঝাকালো অর্পিতা।


– আমি ধরপড় করে উঠে বসে বুঝতে চাইলাম কি হচ্ছে আমার সাথে। অর্পিতা আমার সামনে দাড়িয়ে আছে। আমি এখানে কেন? আমিতো ছাদে ছিলাম বলেই ভূতের কথা মনে পড়ে গেল।


“পরী দিদি জলদি রেডী হয়ে নাও নিচে দাদু অপেক্ষা করে আছে বলেই অর্পিতা চলে গেল।


– আমি জলদি রেডী হয়ে নিচে গিয়ে দেখি দাদু অর্পিতা ২ জনেই আমার জন্য দাড়িয়ে আছে।


” কি ব্যাপার পরী এত দেরি করলা কেন বলেই নিতাই সেন বের হয়ে গেল পিছে পিছে অর্পিতা ও পরীও বের হল বাসা থেকে।



– এই অর্পিতা তোমাদের বাসায় কোন ভূত….টুত…. থাকে কি?
– না তো কেন তুমি কি ভূত দেখেছো দিদি!
– আমি বড়সর ঢোক গিলে বললাম হুম রে বলেই দাদুর পিছে পিছে দৌড় দিতে লাগলাম।
– এই দিদি বলনা কি হয়েছে বলে আমার পিছে অর্পিতাও দৌড় দিল আমার সাথে।
– দাদু কাল আমি ছাদে ভূত দেখেছি তার পর আর কিছু মনে নেই বলেই দাদুর দিকে তাকালাম।
– তুমি রাতে ছাদে কেন গিয়েছ পরী?
– দাদু ভাল লাগছিল না তাই গিয়েছিলাম।
– আর রাতে ছাদে যাবা না। খারাপ লাগলে আমাকে বা অর্পিতাকে ডাক দিতে!
– ওকে দাদু বলে চুপ করে গেলাম।



– পাক্কা দেড় ঘন্টা পর বাসায় ঢুকলাম। আমিতো হাপিয়ে শেষ।



” শুভ্র সিড়ি দিয়ে নামছিল এমন সময় অজান্তেই পরীর সাথে ধাক্কা লেগে যায়। এতে পরী ছিটকে পড়ে যায় নিচে। শুভ্র দেখেও না দেখার ভান করে ওকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় বাহিরে। এটা দেখে বিমলা ব্যাপক খুশি হয়। যাক কাজ দিয়েছে। শুভ্র ঐ মেয়েকে আর পছন্দ করেনা…….



– আমার এত জোড়ে লাগে যে আর উঠতে পারছিনা। অর্পিতা এসে আমাকে ধরে উঠানোর চেষ্টা করে কিন্তু উঠতেই পারছিনা। শেষে ব্যাথায় কেঁদে ফেললাম সবার সামনে।


” দাদা তোমার হুস থাকেনা কি ভাবে চলতে হয় বলে অর্পিতা চেচিয়ে উঠল। শুভ্র এর মধ্য বাসার বাহিরে চলে গেছে।



– শুভ্রের বাবা অনিল দৌড়ে এসে পরীকে টেনে তুলে বলল পরী মা তুমি পড়ে গেলে কেমনে?
– অর্পিতা মুখ খোলার আগেই বললাম আঙ্কেল আমি বেখেয়ালে পড়ে গেছি।



-আমি খুড়াতে খুড়াতে অনেক কষ্টে উপরে আমার রুমে গেলাম।
হালা বজ্জাত শুভ্র ইচ্ছা করে আমায় এভাবে ফেলে দিল! আমারও একদিন আসবে সেদিন এমন নাকানি-চুবানি খাওয়াব বাবার জন্মে আমার সাথে লাগা বের হয়ে যাবে।
আজ আমার আর ভার্সিটি তে যাওয়া হলোনা। সারাটা দিন রুমে বসেই কাটালাম।



– সন্ধায় অর্পিতা এসে আমার সাথে গল্প করল অনেক ক্ষন তার পর চলে গেল। আবার একা হয়ে গেলাম। ব্যাথার মেডিসিন খেয়েছি তাই হাটতে আর কষ্ট হচ্ছেনা।



– আমি নিচে নেমে এসে দেখি ডাইনিং রুমে কেউ নেই এই ফাঁকে বাসা থেকে বের হতেই পলা বলে উঠল….. এই রাতে কই যাও পরী?
-পলা আন্টির কথা শুনে আমি ওখানেই দাড়িয়ে যাই। সারছে এখন কি বলি আমি।
না মানে আন্টি একটু বাহিরে আইক্রিম খেতে যাচ্ছি।
– এই রাতে তোমার আইসক্রিম খাওয়ার সখ জাগছে? তোমার যাইতে হবেনা। যাও রুমে বলে একটা ধমক দিল।



“অর্পিতার বড় দাদা “কৌশিক সেন” আর তার ওয়াইফ “নিদ্রা” এসেছে আজ রাত ৯ টার দিকে দেশের বাহিরে থেকে। সবাই মিলে হৈ চৈ করছে। প্রায় ২ বছর পর তারা আসল দেশে। সামনে দূর্গা পুজাও পরে গেছে তাই এই সময়ই চলে আসল তারা।



– আমি বসে ফেসবুকে চ্যাট করছি পড়া বাদ দিয়ে। এমন সময় ঐ অচেনা আইডি থেকে হাই বলে মেসেজ আসল।
– আপনি কে?
– এভাবে কেউ প্রশ্ন করে?(অচেনা)
– আপনি অপরিচিত তাই বললাম আর কি।
– অপরিচিত বলেই পরিচয় জানতে এলাম(অচেনা)
– আপনার নাম?
– মৃদুল…… আপনার?
– পরী….
– wow nice name your….
-tnx..
-আমরা কি বন্ধু হতে পারি। আপনি আপনার কষ্টের কথা বলবেন আমি আমারটা বলব।
– অচেনা ছেলের সাথে কথা বলতে আমি রাজি না বলে অফ লাইনে চলে আসলাম। এই পাবলিক গুলো যে কই থেকে আসে আল্লাহ্ ভাল জানে।



“সবাই খেতে বসেছে। সারভেন্ট সবাইকে সার্ভ করছে। এমন সময় নিতাই বলে উঠল পলা পরীকে খাবার দিয়ে এসেছিস?
– না কর্তা একদমই মনে ছিলনা।
– তোর হুস কবে হবে! ১১ টা বেজে গেছে তাও তোর একবার মনে পড়েনি। এখনি গিয়ে খাবার দিয়ে আয়।
– খাবার সময় ওর কথা না বললেই হয়না! বলেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল বিমলা।



– পরী কে দিদুন….. কথাটি কৌশিক বলে উঠল।
– কে আবার বাড়ির উসছিষ্ট।
– বিমলা চুপ করবা! ছেলে মেয়েদের সামনে কি শুরু করলা।



“পলা পরীর রুমে এসে দেখে পরী ঘুমিয়ে পড়েছে। এই পরী ওঠো খাবার এনেছি।
-…………………..?
-পলা এবার বেশ জোড়েই ডাকল।
– আমি খাবনা ঘুমাতে দাও তো!
– ভুল হয়ে গেছে এত দেরি করার জন্য। আসলে কৌশিক আর নিদ্রা এতদিন পর এসেছে তো তাই।
-……………………?
– দেখ খাবার গুলো ফেরত নিয়ে গেলে গিন্নী মা বাসা মাথায় তুলে ফেলবে।
-কি আর করা আর কিছু না বলে উঠে খেতে লাগলাম। ঐ মহিলা আমায় জ্বালাতন করার জন্য সব সময় প্রস্তুতি নিয়েই থাকে।



– খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম আমি।



– শুভ্র ল্যাপটপে কাজ করছিল বসে এমন সময় ফোনে কল আসল। শুভ্র স্কীনে চেয়ে দেখে আকিক কল দিয়ে ছে। ইচ্ছা না থাকা সত্বেও শুভ্র কল রিসিভ করতে ফোনের ওপার থেকে স্বশব্দে হেঁসে উঠল আকিক।
– দোস্ত তোর জন্য একটা গুড নিউজ আছে শোন তোর আর পরীর কি ভাবে বিয়ে হয়েছে তা বড় বড় অক্ষরে কাল পত্রিকায় হেড লাইন হয়ে বের হবে। সদ্য বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তা কিভাবে একটা নিরীহ মেয়ে কে কোন পথে কি অবস্থায় বিয়ে করেছে।
তোর ক্যারিয়ার তোহ শেষ একদম। শুভ্র তুইতো ভোঁ…….কাট্টা…. ধুম বলেই হেসে উঠল। আমার বেইজ্জতি করেছিস আমার বাবার সামনে এবার পুরো দেশ তোর বেইজ্জতি দেখবে। এবং তোর পরিবারেরও।



– শুভ্র একটু হেসে বলল মানহানি মামলা না খাস তো এই পথ থেকে সরে যা বলছি। তোর কাছে কোন প্রুভ আছে! সেটাও নেই। খালি খালি আমার সাথে লাগতে আসছিস।

– সেটা কাল সকালেই দেখবি যখন তোর বাসায় পুলিশ গিয়ে হাজির হবে। টুত-টুত-টুত করে ফোন কেটে গেল।



– এমনি নিজের ঝামেলায় বাঁচছিনা তার ভিতর এই উটকো ঝামেলা লেগে গেছে বলে শুভ্র রুম থেকে বের হয়ে নিতাই সেনের রুমে গিয়ে ওনাকে সব খুলে বলল।

– নিতাই সেন সুনে বলল জিবনে এধরনের কত কেস সলভ্ করেছি। চিন্তা করিস না। শুধু পরী একটু ঠিক থাকলেই হয়। এই জন্য বলি নিজের গোপন কথা পরানের বান্ধব রে ও বলতে নেই। কে কোথায় শত্রু হয়ে আছে কে জানে। নিদ্রারা এই সময় এসে অনেক ভাল করেছে ওকে দিয়ে আরও কাজ দিবে।



– রাতেই সবাই মিলে মিটিং করে একটাই সিন্ধান্তে পৌছাল যে এখন পরীকে শুভ্রর ওয়াইফ বলে পরিচয় দেওয়া। মানে ২ ছেলের বউ একসাথে সবার সামনে হাজির করা। এখন পরী ব্যাপার টা মেনে নিলেই হয়।
– মেনে নিবেনা মানে আলবাত মানতে হবে বলে শুভ্র পরীর রুমে রওনা দিল।



– দাদু পরী মেয়েটা কে! ওকে তো দেখলাম না আর ও যদি শুভ্রর বউ হয়ে থাকে তাহলে নিজেকে শুভ্রের বউ হিসাবে পরিচয় দিতে ওর সমস্যা কি?

– নিদ্রা তুমিতো যান না পরী একজন মুসলিম
মেয়ে। তোমার সখের বজ্জাত দেবর এক ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়ে পরীর সাথে ঝামেলা করে রেগে ওকে শাস্তি দিতেই জোর পূর্বক সিঁদুর দান করে। আর এটাই গল্পের মূল ইসু।
– পরী যে মুসলিম কথাটা শুনে নিদ্রা রেগে ফায়ার হয়ে গেল। কেন যে হল সেটা বুঝা গেল না।



“শুভ্র পরীর রুমে গিয়ে দেখে বেচারী আরামে সুয়ে ঘুমাচ্ছে। শুভ্র কিছু না ভেবে পরীকে কোলে নিয়ে ওর রুমে নিয়ে যেতেই পরীর ঘুম ভেঙ্গে গেল।


– পরী চিল্লায় বলল এই আপনি আবার আসছেন। ছাড়েন বলছি বলে ঐ অবস্থায় ছটফট করে লাগল সাথে শুভ্রর বুকে এর মধ্য ১০ খানা কিল পরে গেছে। সেদিকে শুভ্রর খেয়াল নেই।
– ছাড়ব তো অবশ্যই… তোমার মত মরিচের বস্তা কে কোলে নিয়ে থাকতে আমার দায় পরেনি। বলেই ওর রুমে নিয়ে গিয়ে নেমে দিয়ে বলল আপাতত আজ তুমি এখানেই থাকবা।


– কিহ্ আমি তোমার সাথে এখানে থাকব তাও তোমার মত মিথ্যা বাদী বান্দরের সাথে!
– এই মুখে লাগাম দাও বলছি বিপদে পড়েছি তাই কাজটি করছি তাছাড়া তোমার মুখও দেখতাম না বলে সব ঘটনা খুলে বলল।

– আমি তো চাই তুমি ধংস হও। জাষ্ট ফিনিস….. বলে হাত দিয়ে ইশারা করে দেখালাম।

– শুভ্র আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল আমি বাহিরে আছি তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পার বলে চলে গেল।



– সকালে নিদ্রা অনিতা এসে পরীকে ডেকে তুলে। নিদ্রা এই প্রথম পরীকে দেখে বলল শুভ্রর চয়েস আছে। ওকে শাড়ি পরিয়ে দেয়। শাঁখা, বালা, সিঁদুর দিয়ে দেয়।
– That’s great একদম দেবীর মত লাগছে পরী তোমায় বলে নিদ্রা হেসে উঠল।
– আমার পুরো শরির রাগে কেঁপে যাচ্ছে।




– পরীকে নিচে নেমে আনা হল। শুভ্র তো পরীকে দেখে বুঝতে পারল মেয়েটা কতটা রেগে আছে। ভালয় ভালয় সময়টা কেটে গেলেই বাঁচি। কোন সিনক্রিয়েট না করলেই সমস্যা সমাধান।



– কৌশিক পরীকে বলল হ্যালো পরী আমি শুভ্রর দাদা আর ওটা তোমার বৌদি।
– আমি তাদের সালাম দিলাম। আমার সালাম দেওয়া দেখে সবাই হতবাক। আমি শুভ্রর দাদাকে বললাম সবই ভাল কিন্তু নিজের ভাইকে মানুষ বানাতে পারেন নি।

– আমার কথা শুনে সবাই চুপ করে গেল। শুভ্র আমার কাছে এসে বলল একটা ঠাটিয়ে গালে চড় না পরলে দেখছি থামবেনা। আমি মানুষ হইনি! আর তুমি! কোথায় কি বলতে হয় সেটাও জানোনা।

– আমি দাদুর দিকে তাকালাম। চোখে চোখ পড়তেই উনি অন্য দিকে মুখ করে থাকলেন। তার মানে এরা সবাই মিলেই প্লান করেছে। এরা সবাই স্বার্থপর। স্বার্থে আঘাত পড়লে সব করতে পারে। আমার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগল।


– সবাই বসে নাস্তা করতেই বাসায় পুলিশ সহ আকিক এসে হাজির। সবাই অবাক হলনা কিন্তু নিতাই সেন বলে উঠল কি ব্যাপার any problem! কি মনে করে। বসেন আমাদের সাথে নাস্তা করেন।


– শুভ্র পিছন থেকে এসে আকিককে জড়িয়ে ধরে বলল আরে দোস্ত তুই এখানে আসবি আগে বলবিনা বলেই কানের কাছে গিয়ে বলল আকিক তুই তো আজ গেছিস। মামলা খাওয়ার জন্য তৈরি থাক। আজতো পুরো প্রস্তুত হয়েই মাঠে নেমেছি। এমনি এমনি এত বড় ক্যাডার পদে নিয়োগ পেয়েছি। ঘটে বুদ্ধির বলেই। পানিতে বাস করেই কুমিরের সাথে লড়াই! দেখ এবার তোর হাল কি করি বলে শুভ্র ওকে ছেড়ে দিল।
চলবে………..

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১০



– শুভ্রে কথা শুনে বেশ ভরকে যায় আকিক। চোখের সামনে যা দেখছে সেটা অন্তত আকিক আশা করেনি। একদম সব সাজানো গোছানো। শেষ ভরসা পরী ছিল….. অও দেখছি স্বাভাবিক বউয়ের মত আচরন করছে। মেয়েটা কে কি দিয়ে এরা মুখ আটকালো।



– বসেন বসেন এক সাথে নাস্তা করি বলে নিতাই সেন তাদের আমন্ত্রন করল।
– না মানে আমরা একটা রিপোর্ট পেয়েই এসেছি। আপনার নাতী শুভ্র সেন নাকি একটি মেয়েকে…………..।


– ইন্সপেক্টর থানায় গিয়ে একটা মানহানির মামলার প্রস্তুতি করেন সাথে আপনাদের অকারনে বাসায় হানা দেওয়ার জন্যও রিপোর্ট লেখানোর জন্যও। তথ্য যাচাই বাছাই না করে কেমনে একজন সম্মানিত পরিবারের উপর অকারনে বদনাম আরোপ করতে এসেছেন। আমি তো আমার স্ত্রীর সামনেই আছি তাকে একবার জিঙ্গাসা করুন….. তার অমতে কোন কাজ করেছিনা কি! বলেই পরীর দিকে চেয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে তাকাল শুভ্র।



– শয়তান, বান্দরের বাচ্চা, উজবুক, হারামি,ব্যাটা বজ্জাত কোথাকার শুধু মানুষ গুলো একবার বাসা থেকে বিদায় হয়ে যাক তোর ৩২ পাটির দাঁত কেলানো যদি আমি বের না করেছি আমার নাম পরী নয়।


– কি পরী চুপ করে কেন আছো ওনাদের কিছু বল। আমাদের সম্মান নিচে নামানোর জন্য কিছু লোক টানাহিচড়া করছে আমাদের ২ জনকে নিয়ে…. বলেই আকিকের দিকে তাকালো শুভ্র।


– দুঃখিত সব স্বাভাবিক তো দেখছি। আমাদের আগে ভাল করে খোঁজ খবর নেওয়া উচিত ছিল। Sorry sir উপর মহলে দয়া করে কিছু বলবেন না।


– জানেন ইন্সপেক্টার আপনা আর মিডিয়ার লোক একই রকম… বড় বড় সম্মানীয় লোকদের কথা তিল থেকে তাল করে ফেলেন। নাস্তা করে যান এবং একটা মামলার প্রস্তুতি নেন। রির্টাট প্রাপ্ত ব্যারিস্টার নিতাই সেনের পরিবারের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করা যে কতটা ভয়াভয় সেটা বুঝাইতে হবেনা বলে নিতাই সেন তাদের দিকে তাকালো।



– Sir sir sorry sir ভূল হয়ে গেছে আমাদের। না বুঝে কাজ করেছি আর হবেনা এমন ভূল।


– না না তা কি করে হয় আপনি এক্ষুনি প্রস্তুতি নেন মামলার বলে নিতাই সেন উঠে গেল।

– ধুর মিয়া আপনার কথা শুনে লোভে পরে এমন কাজ করলাম এখন নিজের চাকরি নিয়ে টানাটানি বলেই আকিক কে রেখেই চলে গেল ওরা।



– কি আকিক মাঠে নেমেই অপদস্থ হলিতো! আমার ক্যারিয়ার ধংস করবি…..আমার বউ কে নিজের বউ বানাবি……আমাকে ধংস করে দিবি.. এই কথা গুলো কই গেল আকিক। পরী তোর বৌদি হয়। আর বৌদি মায়ের মত হয়। ঐ সম্মান টাই ওকে দিস।



– আকিক রাগের চোটে এমন একটা কাজ করে ফেলল যা কেউ কল্পনাতেই ভাবতে পারেনি।
……….
একদম সোজা খাবার টেবিলের সামনে গিয়ে পরীকে এক ঝটকায় চিয়ার থেকে তুলে ঠাশশশ্ ঠাশশশ্ করে ২ চড় বসিয়ে দিল এবং জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। পরীও টাল সহ্য না করতে পেরে ফ্লোরে পড়ে গেল।



– একদম চোখের সামনে ঘটনা গুলো এক নিমিষেই ঘটে গেল। আকিকের পুরো চোখ লাল হয়ে গেছে।এই তুমি কিভাবে এরকম বউ সেজে বসে থাকতে পারলে! এ্যাট লাষ্ট সত্য কথাতো বলতে পারতে।


– এই থার্ড ক্লাস মেয়ে…….. বড় বাড়ির লোভ সামলাতে পারনা। সারা জিবন পায়ের উপর পা তুলে খেতে পারবে তাই নিজের ধর্মও ত্যাগ করে বসলে। আরে আমিও শুভ্রর মত তোমায় আরাম আয়েস দিতে পারতাম। ওর থেকে আমার কি টাকা কম ছিল!
– ছিঃ তোমাকে দেখে আমার জাষ্ট ঘৃনা হচ্ছে। আমি এই মেয়ের জন্য পাগল ছিলাম যে নিজের স্বার্থের জন্য বেশ্যা গিরী করতেও প্রস্তুত। শুভ্র খুব তৃপ্তি দি……ছে বলা শেষ না হতেই শুভ্র আকিকের বুক বরাবর লাথি বসে দেয়। আকিক ছিটকে পড়ে যায়। শুভ্র আকিকের শার্টের কলার ধরে টেনে হিচড়ে তুলে ফটাফট কয়েকটা চড় বসিয়ে দেয়।

-এ…..ই তোর সাহস কি করে হয় আমার সামনে আমারই পরীর গায়ে হাত তোলা এবং অরুচিকর কথাবার্তা বলা!….. এত মাস হয়ে গেল আমি কখনো খারাপ উদ্দেশ্য ওর কাছে যায়নি। …. নিজের বিবাহিতা স্ত্রী হয়েও ওকে আমার রুমে কখনও শিফর্ট করিনি…….. আমি যাকে একদিনও খারাপ ভাষায় কথা বলিনি তুই কোন সাহসে এই ভাষা গুলো ব্যবহার করিস বলেই আকিকের গাল বরাবর একটি ঘুষি বসিয়ে দেয় শুভ্র।



– আকিকের নাক ও মুখ দিয়ে ঝর ঝর করে রক্ত পড়ছে। কৌশিক গিয়ে শুভ্রকে ধরে ফেলে। এই কি করছিস ও তোর খুব ভাল friend ছিল।


– Friend!…. friend my foot বলেই ঐ অবস্থায় আকিককে একটা লাথি বসিয়ে দেয়। যে friend হয় সে কখনও friend এর wife কে এই কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করে!


-কৌশিক শুভ্র কে টেনে হিচড়ে সরে নিয়ে যায়।

– ছাড়ো আমায়… ছাড়ো বলছি.. আজ ওকে মেরেই ফেলব আমি। আমার পরীর গায়ে হাত তোলা…..! ওর হাত না আমি ভেঙ্গে দিব।…. ঐ হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার অবস্থায় রাখবনা।


– চুপপপপপ বলে কৌশিক শুভ্রকে একটা চড় বসিয়ে দেয়। একটা মেয়েকে নিয়ে তোদের এত্ত ঝামেলা! যদি সেই মেয়ে তোদের কাউকে একজন কে ভালবাসত তাহলে এই লড়াইটা ২ জনের মধ্য স্বার্থক হত। তোরা ২ জনেই মেয়েটার জিবন নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছিস।



– খেলাতো আপনার ছোট ভাই মেতে উঠেছে। এর ফলাফলের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলবেন। যার জন্য আমার গায়ে এতগুলো আঘাত করল ও… সেই যদি না থাকে…. বলেই আকিক চলে গেল।



– অর্পিতা গিয়ে পরীকে উঠায়। মাথা হেলে পরী কেঁদেই চলছে। এমন কাহিনী হবে ওকে নিয়ে এমন কল্পনাতেও আনেনি ও।



– সকাল থেকে এমনি ঝামেলার শেষ নেই তার মধ্য এই ঝামেলা। যত দোষ এই মেয়েটার। বলি বাসা থেকে বিদায় হয়না কেন। শনির দৃষ্টি পড়েছে। সয়ং শনি এসে বসবাস করছে সেখানে সুখ আসবে কোথা থেকে বলে বিমলা পরীর চুলের মুঠি ধরে হির হির করে টেনে নিয়ে গেল দরজার সামনে। বের হ এক্ষুনি আমার বাসা থেকে। তোর জন্য বাড়িতে আজ সুখ নেই। আকিক র্থেড দিয়ে গেল। জানি না কোনদিন বিপদ এসে পরে শুভ্রর উপর। দুনিয়াতে এত জায়গা থাকতে এখানে গছতে এলি কেন বলে পরীকে চড় মারে বিমলা।


– মা কি করছেন! মেয়েটাকে মারছেন কেন? ওর কি দোষ। আপনার নাতি ও জিবন নিয়ে খেলেছে। ওকে কেন মারছেন বলে পরীর কাছে যায় অনিতা।


– আরে বাব্বা জল এত দুর গড়িয়ে গেছে দেখছি। যে বউ কোন দিন আমার মুখের উপর কোন কথা বলেনি তারও দেখছি মুখে খৈ ফুটেছে। সব ওর জন্য। ঐ তুই এখনো দাড়িয়ে আছিস বলে পরীর হাত ধরে টান দিতেই শুভ্র এসে পরীর হাত ধরে ওর কাছে টেনে নিয়ে বলে ও কোথাও যাবেনা দিদুন। যদি যেতে হয় তো আমার সাথেই যাবে।



– আমি এক ঝটকায় শুভ্রর কাছ থেকে নিজেকে ছেড়ে নিয়ে উপরে দৌড়ে আসি এবং নিজের রুমে এসে গায়ের শক্তি দিয়ে দরজা ঠাস করে লাগিয়ে দেই।



– শুভ্র আর কৌশিক ২ জন ২ জনার দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। এদের আর বুঝতে বাঁকি রইল না পরী কি করতে যাচ্ছে। ২ ভাই একসাথে দৌড় দিল উপরে। একসাথে দরজায় ধাক্কা দিল। এই পরী দরজা খোল। এখুনি খোল বলছি। এভাবে সমস্যা সমাধান হবেনা। ভুল কাজ করে ফেলনা। আমার কথা একবার ভাবো।

– এই পরী দরজা খোল এমন কিছু করনা। তুমি যেভাবে থাকতে চাও আমি তোমার বড় দাদা হয়ে সেই ব্যবস্থা করে দিব বলে কৌশিক দরজায় ধাক্কা দিল। অনিতা,নিদ্রা,অর্পিতা,অনিল সবাই উপরে দৌড়ে এসে পরীকে ডাকতে লাগল।
– ও পরী দিদি দরজা খোল সবাই তোমায় ডাকছে শুনতে পাচ্ছ না বলে অর্পিতা কেঁদে উঠল।



– পরী খাটে চিয়ার এনে ফ্যানের সাথে ওড়না সেট করে ফাঁস তৈরী করে ফেলল। আর না আমার জন্যই সব সমস্যা এই আমি টা না থাকলেই সব সলভ্ হয়ে যাবে বলেই গলার ভিতর ফাঁস দিয়েই চিয়ার ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।



– ভিতরে কিছুর শব্দ হতেই শুভ্র পাগলের মত গায়ের শক্তি দিয়ে লাথি মারতে থাকে দরজায়। ওরা ২ জনে এক সাথে কয়েকটা শরীর দিয়ে ধাক্কা দিতেই দরজার ছিটকি খুলে যায় এবং চোখের সামনে পরীকে ঐ অবস্থায় দেখে শুভ্র গিয়ে পরীকে জেগে ধরে আর কৌশিক গলা থেকে ওড়নাটা খুলে ফেলে।



– পরীকে নিচে নামিয়ে শুভ্র পরীর গা ঝাকিয়ে বলে এই পরী….. পরী! তুমি এটা কেন করতে গেলে। আমার কথা একবারও মনে পড়ল না কাজটা করতে।কৌশিক এমার্জেন্সি পারিবারিক ডাক্তর কে আসতে বলে। প্রাথমিক যা চিকিৎসা দেওয়ার দরকার শুভ্র দেয়ে। এমনি কৃত্রিম শ্বাস ও দেয় শুভ্র পরীকে।



– কিছুক্ষণ পর ডাক্তার আসে এবং টিট্টমেন্ট শুরু করে দেয়। প্রায় আধাঘন্টা আপ্রান চেষ্টায় পরী একবার ও…উ..ম..হ্ শব্দ করে জোড়ে শ্বাস নেয়।



-ডাক্তার স্বস্তিকর একটা নিস্বাস নিয়ে বলে আর চিন্তা নেই। ওর রেষ্ট দরকার। একটা ইনজেকশন পুশ করে দিচ্ছি। ওর লম্বা ঘুমের প্রয়োজন। কিছু সমস্যা হওয়ার কথা না আর। তবে বলা যায় না। কিছু হলে আমাকে সাথে সাথে ইনর্ফ্রম করবেন। ঘুম ভাঙ্গলে কিছু খাবার খাইয়ে দিবেন। মেয়েটা কে শুভ্র বলে ডাক্তার ওর দিকে তাকাল।
……………………?
– ওদের কোন কথার রেসপন্স না পেয়ে ডাক্তার চলে যায়।



– নিতাই আজ বিমলাকে ইচ্ছামত কথার ধোলায় দিচ্ছে ওর রুমে।




-মেয়েটা আসার পর থেকে ও তোমার চোখের ত্রিশূল হয়ে আছে। খেতে কি নিতে সব সময় খোঁটা দিতেই থাকো। তুমি যে কেমন সভ্য ঘরের মেয়ে সেটা তোমার ব্যবহারেই পরিচয় দেয় বলে নিতাই বিমলাকে ঝাড়ি দেয়।

– কিহ্ আমার বংশ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোল তুমি!পরের মেয়ের জন্য আমায় এত বড় কথা বললে তুমি। মরতেই তো গিয়েছিল। মরল কই। জোরে শক্ত করে গলায় ফাঁস দিতে পারলনা। মরার শুধু অভিনয় করল!
মরলে আপদ চুকে যেত।

– এবার নিতাই আর সহ্য না করতে পেরে বিমলাকে একটা কষে চড় মারল। মুখে লাগাম টানো তোমারই মঙ্গল হবে…..

– বিমলা চিৎকার করে উঠে বলল অঝঙ্গা মেয়ের জন্য তুমি আমার গায়ে হাত তুললে আজ। এই তোমার শিক্ষা! বলেই চিৎকার করে উঠে বলল ও অনিল দেখ তোর বাবা আজ আমার গায়ে হাত তুলেছে ঐ বানের জ্বলে ভেঁসে আসার মেয়ের জন্য।

– এই চুপপপপপ একদম চুপপপপপ দিন দিন কথার মনে হয় পিএসডি করে নিচ্ছে। ভগবান যে কেন এই ধরনের বাঁচাল মেয়ে মানুষ কেন বানালো তিনিই ভাল জানেন। আর একটা কথা যদি বলছো পরী কেন আমিই বাসা ছেড়ে চিরদিনের মত বিদায় হব। মুখও আমার দর্শন করতে পারবেনা কোন দিন। বড্ড বেশি বেড়ে গেছনা! একদম চাঁপা ভেঙ্গে দিব আর যদি একটা কথা বলছো!

– ধমক এবং হুমকি শুনে বিমলা চুপ করে যায়। এই প্রথম ওকে এতটা শাষিয়েছে নিতাই। এক তো মেয়েটার এই অবস্থা সেখানে আবার মৃত্যু কামনা করছে ভাবা যায়! এই জন্য বলে এদের হাটুর নিচে বুদ্ধি নিয়ে শুধু মানুষ কে জ্বালাতেই পারে। আর এদের ঘটে কোন বুদ্ধি নাই বলে নিতাই চলে গেল।



– শুভ্র অফিসে চলে গেল জাষ্ট শুধু সিগনেচার করার জন্য।


– শুভ্রদের বাসায় আকিকের বাবা-মা ২ জনে এসেছে। পলা এদের নাস্তা দিয়ে নিতাই সেন কে ডাকতে গেল।

– নিতাই সেন আসতেই বলল Sir আমার ছেলের লাইফটা নষ্ট করে দেন না। পুলিশ স্টেশন থেকে কল আসছে আপনারা নাকি মামলা করবেন! ও অবুঝ কিছু বোঝেনা ওকে ক্ষমা করে দেন।


– মি. আমিনূল সাহেব আপনারা আসুন আমার সাথে আসেন বলেই আকিকের বাবা-মা কে পরীর রুমে নিয়ে গিয়ে বলল দেখেন মেয়েটার কি হাল হয়েছে।

– পরীর নিথর শরীরটা পড়ে আছে। গলায় লাল দাগ যেন কেটে বসে গছে। দুধে ধোয়া হলুদ রঙ্গে লাল দাগটা বড্ড বেমানান দেখাচ্ছে তাই না আমিনূল সাহেব। দেখেন ওকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে অল্প একটুর জন্য মেয়েটা বেঁচে গেছে। মেয়ে টা সুইসাইড করতে গিয়েছিল যার সূচনা টা আপনার কুলাঙ্গার ছেলে এসে করে গেছে এর পরও বলবেন আপনার ছেলে অবুঝ!

আমরা ছেড়ে দিলেও শুভ্র আপনার ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে কথা বলবেনা।
– আপনার ছেলে আমাদের সম্মান আর এই মেয়েটির জিবন নিয়ে টানাহিচড়া শুরু করে দিছে ওকে সামলান। এর শাস্তি ওকে পেতেই হবে।

– পরীর এই অবস্থা দেখে আকিকের বাবা – মা আর কথা বলার সাহস না করে চলে গেল।



-প্রায় ঘন্টা ২য়েক পর শুভ্র বাসায় ফিরল। এসেই পরীর রুমে গেল। পরী ঘুমিয়ে আছে। ওর কপালে একটা kiss করে নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হল। অনিতা এসে বলল শুভ্র চল বাবা কিছু খেয়ে নে। পুরো দিন কিছু খাসনি।


– মা পরী পুরো দিন না খেয়ে ওভাবে শুয়ে আছে আমি ওকে ছাড়া ক্যামনে খাই বল। আমার গলা দিয়ে যে খাবার নামবে না। তোমরা খেয়ে নাও পরী উঠলে একসাথে খাব। অনিতা চোখের জল ফেলে চলে গেল।



– শুভ্র পরীর রুমে এসে দেখে অর্পিতা ওর পাশে বসে আছে।
– দাদা পরী দিদির কখন ঙ্গান ফিরবে।
– ধুর পাগলি ঙ্গান ফিরার কথা কেন বলছিস ও তো ঘুমাচ্ছে। যা রুমে যা অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমা গিয়ে।


– অর্পিতা চলে গেলে শুভ্র দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে এসে পরীর পাশে সুয়ে পড়ে। মেয়েটা একদম শাড়ী সামলাতে পারেনা। কিন্তু শাড়ীতেই ওকে বেশি সুন্দর লাগে বলে পরীকে কয়েকটা কিস করে বুকে টেনে নেয়।



– একটু পর পরীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। ড্রিম লাইটে দেখল শুভ্র ওকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে আছে। অনেক বার নড়া চড়া করতে লাগল কিন্তু শুভ্র ওকে ছাড়ছেই না!


– পরী কিছু খাবা! বলে শুভ্র ওর কপালে আবার কিস করে।
– উমমম্ ছাড়ুন বলছি বলেই শুভ্রর সাথে ধস্তা ধস্তি শুরু করে দেয়।
– এই তোমার এই অবস্থায় এত শরীরের জোড় আসে কই থেকে বলে ২ হাত দিয়ে পরীর হাত চিপে ধরল।
– ছাড়ুন আমাকে………


– ছাড়ব না… তুমি কি করতে পার সেটাই দেখব আজ বলে শুভ্র মুচকি হেঁসে উঠল।
– আপনি আমাকে আবার জড়িয়ে ধরেছেন কেন?
– আমি ধরব নাতে কে ধরবে!

– আর এত নড়াচড়া করছো কেন! নিজেতো শান্তিতে থাকবানা আমাকে অন্তত শান্তিতে থাকতে দাও। আর শোন তোমার নিরাপত্তা এই শুভ্রের বুকে বুঝছ বলেই পরীর দিকে তাকিয়ে দেখল ও আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।
– এই মেয়ে পারেও বটে! জড়িয়ে ধরতে দিবেনা আবার বুকের মধ্যই ঘুমিয়ে পড়ে……..

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here