আঁধারের মাঝে আলো,পর্বঃ ০১

0
6986

আঁধারের মাঝে আলো,পর্বঃ ০১
লেখকঃ আবির খান

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যদি কোন কিছুকে মানুষ ঘৃণা করে থাকে সেটা হলো, কালো। আর সেই মানুষই যদি কালো রঙের হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। তাকে কেউই পছন্দ করে না। উল্টো তার জীবনটাকেই তছনছ করে দেয়, শুধুমাত্র সে কালো বলে। ঠিক তেমনই মানুষের ঘৃণার পাত্র হয়ে আবিদ জীবনের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে শত লাঞ্চনা, শত কষ্ট সহ্য করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে আসতে আসতে ও আজ ওর ভার্সিটির দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে। জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হবে আজ। যাকে বলে, ভার্সিটি জীবন। সবার কাছেই আবিদ শুনেছে, যে ভার্সিটি লাইফ নাকি অনেক সুন্দর,অনেক মজার হয়। যা মন চায় তাই করা যায়৷ অনেক মজা অনেক আনন্দ৷ কিন্তু আবিদ জানে ওর কপালে এর একটাও নেই। কারণ ও কালো বলে ওর বন্ধু কখনো কেউ হয় নি। এখন ভার্সিটিতে উঠেও যে কেউ হবে না সেটাই স্বাভাবিক। আবিদ বরাবরই একটা হাসি দিয়ে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে ভার্সিটির ভিতরে প্রবেশ করে।

ও চুপচাপ মাথা নিচু করে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে নোটিশ বোর্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ওর ক্লাস কত নং রুমে সেটা দেখার জন। ওর পরনে, কালো প্যান্ট আর গায়ে চেক শার্ট। ভদ্র ছেলের মতোই লাগছে ওকে। তবে ওর সাথে যারা এসেছে তারা অনেক হ্যান্ডসাম আর অনেক দামী ড্রেস পরে এসেছে। একদম নায়কের মতো। আবিদ কয়েকটা ছেলেদের গ্রুপ পাড় করে সামনে হাঁটতেই পিছন থেকে শুনতে পায় ছেলেগুলো বলছে,

— দেখ দেখ কালিয়া আসছে উগান্ডা থেকে। হাহা।

আবিদ সেগুলো স্পষ্ট শুনেও চুপচাপ সামনে এগিয়ে যায়। এ আর নতুন কিছু না। এর চেয়ে কত কথা ও মুখের উপর শুনেছে। ওর দোষ একটাই, ও কালো। পৃথিবীর সবাই মনে করে, কালো রঙের মানুষরা মানুষই না। তারা সমাজের বোঝা। ফলে সবাই তাদের ঘৃণা করে। তাই বলে আবিদ হার মানে নি। ওর বাবা-মার মুখের দিকে তাকিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ওর ইচ্ছা ও ওর বাবা-মাকে অনেক খুশি করবে৷ ও একদিন অনেক বড়ো হবে৷ ওর এই কালো হওয়া সেদিন কেউ নিচু চোখে দেখবে না। তাই তো খুব মন দিয়ে আবিদ পড়াশোনা করে এরকম বড়ো একটা ভার্সিটিতে স্কলারশিপ নিয়ে ও ভর্তি হয়েছে। ওর পরিবার মধ্যবিত্ত। তাই এত টাকা-পয়সাও নেই। ওর বাবা ছোট একটা সরকারি জব করে৷ আবিদের ইচ্ছা ও অনেক বড়ো পদে একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করবে। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই আবিদ সব সহ্য করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সাথে বাবা-মা আর আল্লাহ ছাড়া ওর আর কেউ নেই। আবিদ আরেকটু সামনে এগিয়ে আসতেই নোটিশ বোর্ড দেখতে পায়। ও এগিয়ে যেতেই সেখানে থাকা কয়েকটা মেয়ে ওর দিকে কেমন কেমন ভাবে এক্সেন তাকিয়ে আস্তে আস্তে করে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে,

~ ইইই! এরকম একটা ছেলেকে কে এই ভার্সিটিতে চাঞ্চ দিয়েছে? কি কালো ও দেখ। ছিঃ! হাউ ডিজগাস্টিং!

আবিদ মেয়েগুলোর কথা শুনে ফেলে। অনেকেই ওর দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। ও একটু সাইড হয়ে ফাঁকা পেয়ে নোটিশ বোর্ডে ওর কক্ষ নংটা দেখে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসে। পিছনে অনেকেই ওকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছিল। আবিদ সেগুলো শুনেও মনে নেয় নি। ও দ্রুত ওর ক্লাসে চলে আসে। আবিদ ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে ভাবছে, আগামী চারটি বছর এই ক্লাস রুমেই ওকে পাড় করতে হবে এই মানুষগুলোর সাথে। ও পেরে উঠবে কিনা এটাই বড়ো চ্যালেঞ্জ। আবিদ ক্লাসের ভিতরে ঢুকে চুপচাপ একদম লাস্ট বেঞ্চে চলে যায়। গিয়ে চুপচাপ কোণার সিটে বসে পড়ে। কারণ এখানে বসলে ওকে কেউ ঠিক ভাবে দেখবে না৷ ক্লাসে আর যারা ছিল তারা সবাই ওর দিকে তাকিয়ে নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করছে। কিছু মেয়েতো যাতা বলছে। সবারই একই কথা, এই কালো ছেলে কেন ওদের ক্লাসেই পড়লো! আবিদ চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে। কারো দিকে তাকাচ্ছেও না। একে একে সবাই চলে আসে। একটা বান্দাও ওর কাছে এসে ওর সাথে পরিচিত কিংবা বন্ধুত্ব করেনি। আবিদ বুঝতে পারে এখানেও সবাই রূপের পূজারি। রূপ মানুষের কাছে যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আবিদ হারে হারে বুঝতে পারে। একমাত্র আজ পর্যন্ত ওর বাবা-মা ওকে কখনো ওর কালো হওয়া নিয়ে ওকে কিছুই বলেনি। বরং ওকে বুঝিয়েছে যে, কালো, মোটা, অসুন্দর এগুলো জীবনের প্রতিকূলতা। এগুলোর জন্য হয়তো মানুষ তোকে পছন্দ করবে না৷ কিন্তু তুই যদি ওসব কাটিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে অনেক বড়ো হয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারিস তাহলে তুই মানুষের মতো মানুষ হতে পারবি। কারণ লোহাকে যত মারা হয় সে তত শক্ত হয়। আবিদ সেদিন থেকেই এই দুনিয়ার বাস্তবতাকে বুঝে গিয়েছে। যে বাবা-মাই একমাত্র আপন। আর কেউ না৷

আবিদের পাশের সিটটা ফাঁকাই রয়ে গেল। কেউ ওর পাশে এসে বসলো না৷ তাতে ওর কোন সমস্যা নেই। ও একাই ভালো আছে। একটু পরই স্যার ক্লাসে চলে আসেন। এসে সবার প্রথম নিজের পরিচয় এবং পদবি সম্পর্কে বলেন। তার কথা শেষ হওয়া মাত্রই,

~ May i coming Sir?

স্যার সহ ক্লাসের সবাই দরজার দিকে তাকায়। আবিদও বাদ যায় না। ও দেখে অসম্ভব সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আবিদ কখনো এত সুন্দরী মেয়ে নিজ চোখের সামনে দেখে নি। সে এতই সুন্দরী আর রূপবতী যে আবিদ দূর থেকে তাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। একটু পরই আবিদ ফিল করে, ওর এভাবে তাকিয়ে থাকা ঠিক না৷ ওর কোন অধিকার নেই এরকম সুন্দরী একটা মেয়ের দিয়ে তাকিয়ে থাকার। ক্লাসের হ্যান্ডসাম ছেলেগুলোই ড্যাবড্যাব করে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷ আবিদ মাথা নিচু করে ওর পার্সোনাল ডাইরিতে কি যেন লিখতে থাকে। ও সবসময় ওর সাথে এই কালো কালারের ডাইরিটা রাখে৷ এটা হলো ওর একমাত্র বন্ধু। যে ওর সব মনের কথা,দুঃখ, কষ্ট সব জানে।

এদিকে,

– ক্লাসের প্রথম দিনই লেইট? ভেরি ব্যাড। আজ কন্সিডার করলাম, নেক্সটে কিন্তু লেইট হলে আর ক্লাসে ঢুকতে পারবে না।
~ সরি স্যার। আর এমন হবে না।
— ওকে ইউ মে কাম নাও।
~ থ্যাঙ্কিউ স্যার।

মেয়েটা খুব সুন্দর একটা হাসি দিয়ে ক্লাসের ভিতরে ঢুকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে লাস্টে একটা সিট খালি। মেয়েটা সোজা গিয়ে আবিদের পাশে বসে পড়ে। আবিদ এতক্ষণ মন দিয়ে মাথা নিচু করে ওর পার্সোনাল ডাইরিতে লিখালিখি করছিল। এতক্ষণ ক্লাসে কি হয়েছে ও মনই দেয় নি। ওর ডাইরি লেখা শেষ হলে মাথা তুলে পাশে তাকাতেই ও বড়ো ধরনের সক খায়। সেই রূপ নগরের রূপসী ওর পাশের সিটে বসে আছে। মেয়েটাও আবিদের দিকে তাকায়। ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। আবিদ তো অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। মেয়েটা হঠাৎই মুচকি একটা হাসি দেয়। তারপর সামনে স্যারের দিকে তাকায়। আবিদ আরও অবাক হয়ে যায়। জীবনে প্রথম কোন মেয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়েছে। তাও আবার এত সুন্দর একটা হাসি। আবিদের হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এই মেয়েটার চোখে আবিদ ওর জন্য কোন ঘৃণা দেখে নি। তাহলে কি এই মেয়েটা সমাজের আর দশটা মেয়ের মতো না? যদি নাই হয় তাহলে আবিদ অনেক অনেক খুশি। এই ভেবে যে, দুনিয়াতে ওর বাবা-মা ছাড়া আরও একজন ওর কালো হওয়া নিয়ে ওকে ঘৃণা করে না৷ আবিদ যে কুচকুচে কালো এমন না৷ কিন্তু কালো। তবে ওর দেহের গঠনটা অনেক সুন্দর। লম্বা, সুঠাম দেহ, ঘন কালো চুল কিন্তু ওর গায়ের রঙটা কালো বলে ও সবার কাছে ঘৃণার পাত্র। যাই হোক আবিদ মহা খুশি। এরকম একটা সুন্দরী মেয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়েছে এটা সত্যিই সৌভাগ্য ওর জন্য৷ এরপর যথারীতি ক্লাস শুরু হলে স্যার সবার পরিচয় জানতে যায়। একে একে সবাই নিজের পরিচয় বললে আবিদের কাছেও আসে। আবিদ আস্তে করে উঠে দাঁড়ায়। ক্লাসের সবাই ওর দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। এবং পাশের সেই সুন্দরী মেয়েটাও যে ওর দিকে তাকিয়ে আছে সেটাও আবিদ ফিল করছে। আবিদ সবাইকে উপেক্ষা করে দৃষ্টি একদম স্যারের দিকে করে ও বলে,

– আমি মোঃ আবিদ খান। ঢাকাতে পরিবারের সাথেই থাকি। এসএসসি এবং এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস এবং এখানে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে এসেছি।
– ওয়াও তুমি তো ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট। পিছনে বসেছো কেন? কাল থেকে আমার সামনে বসবে৷
– ওকে স্যার।
– বসো বাবা। কোন হেল্প লাগলে আমাকে বলবে।

আবিদ চুপচাপ বসে পড়ে। ক্লাসের সবাই অবাক হয় যে এই কালো ছেলেটা এত ভালো স্টুডেন্ট কিভাবে! আবিদের পর এবার ওর পাশের সেই মেয়েটার পালা। মেয়েটা দাঁড়ায়। আবিদ চুপচাপ সামনে তাকিয়ে আছে৷ মেয়েটার দিকে তাকায় নি। ওর সে সাহস নেই। মেয়েটা দাঁড়িয়ে বলছে,

~ আমি সাবরিনা আলম ময়ূরী। ঢাকাতেই থাকি। এসএসসি এবং এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস।
— বাহ! তোমরা দুইজনই দেখি ভালো ছাত্র-ছাত্রী। আবার বসেছোও একসাথে। ভালো ভালো। তোমরা এভাবে পড়াশোনায় উন্নতি করে যাও সেই দোয়া রইলো।
~ ধন্যবাদ স্যার।

আবিদ এই প্রথম মেয়ের কণ্ঠ আর তার নাম শুনলো। কি সুন্দর কণ্ঠ আর নাম। ময়ূরী। দেখতে দেখতে প্রথম দুইটা ক্লাস শেষ হয়ে যায়। তারপর দেওয়া হয় টিফিন ব্রেক। ক্লাসের অনেক ছেলে মেয়েই ময়ূরীর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে আসে। কিন্তু আবিদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। হয়তো ক্লাসে দুইজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট আছে বলে একজনকে পাত্তা না দিলে তেমন কিছুই হবে না তাই। আবিদ মুচকি একটা হাসি দিয়ে ওর ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে ক্যান্টিনে চলে যায়। একটা বনরুটি আর এককাপ চা নিয়ে ক্যাম্পাসের নিরিবিলি একটা জায়গায় গিয়ে বসে ও। বনরুটিটা চায়ে ভিজিয়ে এক কামড় খেতেই সেই পরিচিত একটা ঘ্রাণ আর কণ্ঠ আবিদ শুনতে পায়।

~ হায় আবিদ। তুমি এখানে একা কি করছো?

আবিদ পিছনে তাকিয়ে দেখে ময়ূরী! ও পুরো থ হয়ে যায়। কি বলবে ও বুঝতে পারছে না। একদম থতমত খেয়ে গিয়েছে ও। ময়ূরী ওর পাশে এসে বেঞ্চে বসে। আবিদ অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে যায়। ময়ূরী আবার বলে,

~ তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে এসেছি। আমার বন্ধু হবে তুমি?

আবিদ এটা শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। এটা অসম্ভব! এরকম অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে কিভাবে নিজ থেকে ওর বন্ধু হতে আসে? অসম্ভব এটা। আবিদ নিজেকে সামলে বলে,

– তুমি কি আমার সাথেই বন্ধুত্ব করতে এসেছো? নাকি কোন মজা এটা?
~ না না সত্যিই তোমার বন্ধু হতে এসেছি। ক্লাসের সবাই আমার সাথে কথা বলতে আসলো কিন্তু একমাত্র তুমিই আসলানা। তাই আমিই নিজ থেকে আসলাম তোমার বন্ধু হতে। আফটার অল একসাথে এতগুলো সময় পাড় করতে হবে আমাদের।

আবিদ রীতিমতো অবাকের শেষ সীমানায় পৌঁছে গিয়েছে। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না। ও খুব খুশি হয়ে জিজ্ঞেস করে,

– তুমি সত্যি আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাও?
~ তুমি করতে চাইলে অবশ্যই করবো। তুমি কি চাও?

আবিদ খুব খুব খুশি হয়ে বলে,

– হ্যাঁ হ্যাঁ চাই। তোমার মতো এরকম সুন্দরী একটা মেয়ে আমার বন্ধু হবে এটা তো স্বপ্নেরই ব্যাপার। কেন চাইবো না বলো?

আবিদের কথা শেষ হলে ময়ূরী ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আর কিছুই বলছে না৷ আবিদ কিছুই বুঝতে পারলো না। ও আবার জিজ্ঞেস করলো,

– কি ব্যাপার এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
~ ভাবছি একটা মানুষ এত কালো হয় কিভাবে?
– মানে?
~ তোমার মনে হয় তোমার মতো এরকম কালো একটা ছেলেকে আমি আমার বন্ধু বানাবো? আমার কি বন্ধুর অভাব পড়েছে? ফালতু একটা ছেলে। সুন্দরী মেয়ের সাথে সে বন্ধুত্ব করবে আসছে। লজ্জা করে না?

আবিদ পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। একটু আগের ময়ূরী আর এখনের ময়ূরী একদম আকাশ পাতাল তফাত। আবিদ মলিন কণ্ঠে বলে উঠে,

– তুমি নিজেই তো আসলে বন্ধুত্ব করতে ময়ূরী!

হঠাৎই কয়েকটা ছেলে মেয়ে কোথা থেকে বের হয়ে এসে বলে,

– ময়ূরী বলছি না তোমাকে ও একটা ফকিন্নি মার্কা ছেলে। তোমাকে দেখলে ও পাগল হয়ে যাবে৷ ওর জায়গাটা ও ভুলে যাবে৷ দেখছো? শালা কালা হইয়া ময়ুরীর মতো মেয়ে তোর বন্ধু হবে ভাবলি কিভাবে?

আবিদ মাথা নিচু করে আছে। আসলেই তো ওরা ঠিক বলছে। আবিদ সত্যিই ওর জায়গাটা ভুলে গিয়েছিল। ময়ূরী উঠে দাঁড়িয়ে বলে,

~ তোমার মতো কালো ছেলে কখনো আমার বন্ধু তো দূর আমার বাসার কাজের লোক হওয়ারও যোগ্যতা রাখে না। এই আসো তোমরা।

ময়ূরীরা আসার সময় আবিদের চায়ের কাপটা ফেলে দেয়। আবিদ হাতে বনরুটিটা নিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। ওরা হাসাহাসি করতে করতে চলে যায়। আবিদ পড়ে থাকা চায়ের কাপটা হাতে তুলে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কখন যেন চোখ থেকে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে মাটিতে। আবিদ চোখটা মুছে হেসে বাকি বনরুটিটা পানি দিয়ে খেয়ে ক্লাসে চলে যায়।

চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here