আকাশের চেয়েও বেশী তোমায় ভালোবাসি,অষ্টম পর্ব
লেখনীতে:Waziha Zainab (নিহা)
রাত এগারোটা পঞ্চান্ন মিনিটে আঁচল পা টিপে টিপে ঘরে গেলো।দেখলো আবির গভীরে ঘুমে মগ্ন।আঁচল একটা মেরুন রঙের শাড়ী পরেছে যাতে গোল্ডেন স্টোন বসানো একটা গোল্ডেন রঙের থ্রী কোয়াটার হাতার ব্লাউজ পরেছে।গলায় একটা ছোট্টো স্বর্ণের লকেট পরা যেটাতে “A” লিখা।আঁচলের লম্বাচুলগুলো সাইডে সিথি কাটা খোলা চুলের একপাশে একটা তাজা গোলাপ লাগানো। ঠোঁটে মেরুন রঙের লিপস্টিক আর চোখে গাঢ় কাজল।আঁচল ধীরে পায়ে একহাতে একটা বেলুন আর অন্যহাতে একটা আলপিন নিয়ে এগিয়ে গেলো আবিরের দিকে।আবিরের কাছে গিয়ে আঁচল নিচু হয়ে বসলো আবিরের পাশে।আঁচলের চুলগুলো আবিরের মুখের ওপর গিয়ে পড়লো আঁচল তা আলতো হাতে সরিয়ে আবিরকে ফিসফিস করে ডাকলো
“আবির উঠুন। এই আবির”
আবির নড়ে চড়ে পাশ ফিরে শুড়ে পড়লো।আঁচল এবার আরেকটু জোরে ডাকলো
“এই আবির উঠুন”
আবির পিটপিট করে চোখ মেলে তাকাতেই আঁচল হাতে থাকা আলপিনটি দিয়ে বেলুন টা ফাটিয়ে দিয়ে বলে।
“শুভ জন্মদিন বরবাবু”
আবির খানিকটা চমকে উঠে। একহাতে চোখ মুছে উঠে বসে বলে “কি করছো তুমি”
আঁচল মুচকি হেসে বলে
“শুভ জন্মদিন বরবাবু। জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“এতো রাতে ঘুম ভাঙিয়ে বার্থডে উইশ”
আঁচল আবিরের হাতে একটা মেরুন রঙের পাঞ্জাবি দিয়ে বলে
“ওয়াশরুমে গিয়ে ৫ মিনিটের ভেতরে ফ্রেশ হয়ে আসুন যান”
আবির ভ্রু কুচকে বললো
“এই মাঝরাতে ফ্রেশ হবো কেনো”
আঁচল বিরক্তিমাখা কন্ঠে বললো
“আরে যান না”
বলেই আবিরকে টেনে টুনে ওয়াশরুমের ভেতরে নিয়ে গেলো।আবিরকে ভেতরে রেখে আঁচল বেরিয়ে গেলো।আর বিছানায় বসে আবিরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো
কিছুক্ষণ পর আবির ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো। আবিরের পরনে একটা মেরুন রঙের পাঞ্জাবি আর সাদা রঙের পায়জামা। চুলগুলো এলোমেলো ভাবে কপালের অর্ধেক ঢেকে পড়ে আছে। আবির গিয়ে আঁচলের সামনে দাড়ালো আর বললো
“এতো রাতে কি শুরু করেছো তুমি?”
আঁচল মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে বললো
“পারফেক্ট এবার চলুন”
আবির ভ্রু কুচকে বললো
“কোথায় যাবো?”
আঁচল আবিরের কপালে পড়ে থাকা এলোমেলো চুলগুলো আরেকটু এলোমেলো করে দিয়ে বলে
“উফফ এতো প্রশ্ন করেন কেনো আপনি?আমার সাথে আসুন”
আঁচল পা টিপে টিপে বাড়ী থেকে বের হয় আঁচলের পেছন পেছন আবিরও বের হয়।মেইন গেইট থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠেই দুজনে একটা লম্বা নিশ্বাস ছাড়ে।আঁচল আবিরের পাশে গিয়ে আবিরের এক হাত জড়িয়ে ধরে আবির ভ্রু কুচকায় কিন্তু কিছু বলে না।
উদ্দেশ্যহীন ভাবে দুজনে হাটতে থাকে।আঁচলের মুখে মুচকি হাসি। আকাশ ভরা তারা তার মাঝে একটা চাঁদ।চাঁদের আলো এসে পড়ছে আঁচলের মুখে।আঁচলের চুলগুলো মুখের উপর এসে পড়ছ।ভীষণ সুন্দর লাগছে।আবির এক হাত দিয়ে আঁচলের চুলগুলো সরিয়ে দিলো। রাস্তার মাঝে আঁচল একটা দোকান দেখে লাফিয়ে উঠে বলে
“বরবাবু ওই যে ওই দোকানটা খোলা”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“দোকান খোলা তো আমি কি করবো?”
আঁচল মুখে ভেঙচি কেটে বলে
“আইস্ক্রিম নিয়ে আসুন না”
আবির হালকা কেশে বলে
“এতো রাতে আইস্ক্রিম খেলে সকালে জ্বর উঠবে ঠান্ডা লেগে যাবে আইস্ক্রিম খাওয়া চলবে না”
আঁচল চোখ রাঙিয়ে বলে
“আইস্ক্রিম নিয়ে না আসলে আমি বাড়ী যাবো না এখানেই এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো”
আবির কপাল ভাজ করে বলে ওঠে
“এতো রাতে রাস্তার মধ্যে আইস্ক্রিম খাবে নাকি? আইস্ক্রিম কিনে বাড়ি যেতে যেতে তো আইস্ক্রিম গলে যাবে”
আঁচল মুখে এসে পড়া চুল গুলো কানের পাশে গুজে দিয়ে বলে
“হুম রাস্তায় হাটতে হাটতে আইস্ক্রিম খাবো।যান না নিয়ে আসুন”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“তুমি কি জানো রাত বারোটার পর রাস্তাঘাটে অতীপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায়?”
আঁচল আবিরের কথা কে পাত্তা না দিয়ে বলে
“তো আমি কি করবো”
আবির ফিসফিসিয়ে বললো
“দেখো আইস্ক্রিমের রঙ সাদা আর আত্নারাও কাপড় পরে সাদা,অত্রীপ্ত আত্মারা যদি আইস্ক্রিম দেখে নেয় তো কি হবে বুঝতে পারছো”
আঁচল লাফিয়ে ওঠে বলে
“সত্যি?”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“এতো খুশি হচ্ছেন কেনো আপনি?”
আঁচল আবিরের এক হাত ধরে বলে
“আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ভুত,প্রেতাত্মা এগুলোর সাথে মিট করার কিন্তু বাসা থেকে তো কোনোদিন রাতের বেলা বের হওয়ার সুযোগই পাই নি। তাই আজ আপনার জন্য দেখা হবে ওদের সাথে ওয়াও ব্যাপার টা ভীষণ ইন্ট্রেস্টিং”
আবির কপাল ভাজ করে বলে
“আমার জন্য কেনো দেখা হবে?”
আঁচল দাঁত কেলিয়ে বলে
“আপনি এখন আমাকে আইস্ক্রিম কিনে দিবেন আর যদি না কিনে দেন তাহলে ভুতদের সাথেও দেখা হবে না আর আমি বাড়িও যাবো না”
আবির দাঁতে দাঁত চেপে বলে
“আরে এটা হেলথ এর জন্য অস্বাস্থ্যকর খাবার।চলো আইস্ক্রিম পার্লার থেকে আইস্ক্রিম খাবে”
আঁচল ঠোঁট উল্টে বললো
“না আমি এখান থেকেই খাবো।যান নিয়ে আসুন”
আবির আর কোনো উপায় না পেয়ে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে আইস্ক্রিম নিয়ে এলো। দুজনে আইস্ক্রিম খেতে খেতে রাস্তার পাশ দিয়ে হাটছে গন্তব্যহীন কোনো অজানা জায়গায়।
আঁচল আর আবির একটা নদীর পাড়ে।চারদিক জনমানবহীন।
আবির ভ্রু কুচকে বললো
“আমরা এখানে এসেছি কেনো?”
আঁচল মুচকি হেসে বললো
“সামনে চলুন”
নদীর তীরে দুটো নৌকা বাধাঁনো ছিলো।আঁচল গিয়ে নৌকায় উঠলো আঁচলের পেছনে আবিরও উঠলো।ওরা ওঠার সাথে সাথেই মাঝি নৌকা চালাতে শুরু করলো।আবির ভালোকরে লক্ষ করলো পুরো নৌকা ফুল আর বেলুন দিয়ে ডেকোরেশন করানো কিছু কিছু বেলুন ফেটেও গেছে দেখা যাচ্ছে নৌকার চারদিকে মোমবাতি জ্বালানো।মোমবাতির আলোয় আলোকিত নৌকা। গাদা ফুলের মাঝে গোলাপ দিয়ে শুভ জন্মদিন লিখা।আঁচল আবিরের হাত দুটো শক্ত করে ধরে বললো
“শুভ জন্মদিন” আবির বেশ খানিকটা অবাক হয়।।আঁচল আবার বলে
“জানেন আজকের দিনটা আমার কাছে ভীষণ স্পেশাল। আজকে আমার জীবনসঙ্গী আই মিন আপনার জন্মদিন। আমি লাইফে রিলেশন প্রেম ভালোবাসা এগুলো বিশ্বাস করতাম না কারণ আজ প্রেম করবে দুইদিন পর ছেড়ে চলে যাবে।শুধু শুধু কি দরকার নিজের সুন্দর গোছালো জীবনকে আগোছালো করার বলুন। আমার সব বান্ধবীরা প্রেম করতো বয়ফ্রেন্ডর সাথে মিট করতো আরো কতো কি বয়ফ্রেন্ডের বার্থডে তে ফাইভস্টার হোটেলে পার্টি করতো কিন্তু আমি চাইতাম বিয়ের পর হাজবেন্ডের সাথে প্রেম করবো তখন আর হারিয়ে ফেলার কোনো ভয় থাকতো না কেউ কাউকে ছেড়ে যেতো না।কিন্তু কপাল আমার কালকে চলে যাবো আপনার বাড়ী ও আপনার জীবন থেকে”
এতোটুকু বলেই আঁচল ছোটো একটা নিশ্বাস নিয়ে একটা ছোট্ট কেক নিয়ে আসে। আবিরের সামনে রেখে আবিরের হাতে একটা চুরি দিয়ে বলে
“কেক কাটুন”
আবির অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। খোলা আকাশের নিচে নদীর মাঝখানে নিজের বার্থডে সেলিব্রেট করা হয় নি এর আগে। স্নেহার সাথেও আবির এর আগে অনেকবার বার্থডে সেলিব্রেট করেছে বাট সেটা ফাইভস্টার হোটেলে। এভাবে কখনো সে এতো বড় সারপ্রাইজ পায়নি।আবিরকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আঁচল মুচকি হেসে বললো
“কি হলো কেক টা কাটুন মোমবাতি গুলো শেষ হয়ে আসছে একটু পর নিভে যাবে”
আবির মুচকি হেসে কেক কাটলো।পুরো ব্যাপারটা আবিরের কাছে খুব ভালো লাগলো।মাঝরাতে রাস্তায় হাটতে হাটতে আইস্ক্রিম খাওয়া খোলা আকাশের নিচে আর মাঝনদীতে বার্থডে সেলিব্রেট করা সব মিলিয়ে পুরো ব্যাপারটাই আবিরের কাছে সারপ্রাইজ ছিলো অনেক বড় সারপ্রাইজ।।
রাত প্রায় তিনটা বাজে
রাস্তার মাঝ দিয়ে হাটছিলো আঁচল ও আবির।আঁচল আবিরের এক হাত শক্ত করে ধরে আছে বাচ্চাদের মতো যেনো ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবে সে। আঁচল আবিরের হাতে একটা গিফট বক্স দিলো।আবির ভ্রু কুচকে বললো
“কি এটা?”
আঁচল মুচকি হেসে বলে
“নিজেই খুলে দেখে নিন”
আবির কিছু বললো না চুপ রইলো আঁচল আবিরের এক হাত ধরে বললো
“এখন খুলুন এটা দেখুন ভেতরে কি”
আঁচলের কথামতো আবির বক্সটা খোলে ভেতরে দেখে ছোট্ট একটা বক্স বক্সটা অনেক সুন্দর করে বাহিরে থেকে সাজানো।আবির ভ্রু কুচকে আঁচলের দিকে তাকিয়ে বলে
“কি এটা?”
আঁচল কপাল ভাজ করে বলে
“দেখতে পাচ্ছেন না এটা।চোখ কি বাসার আলমারি তে রেখে এসেছেন”
আবির চোখ রাঙিয়ে বলে
“দেখতেই পাচ্ছি বাট হোয়াই? এটা কেনো”
আঁচল মুচকি হেসে বললো
“আপনার জন্য বার্থডে গিফট।আমি তো মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে তাই এর চেয়ে ভালো গিফট দেওয়ার সামর্থ আমার নেই। বক্সটা খুলে দেখুন”
আবির বিরক্তিকর ভাব নিয়ে বক্সটা খুলে বেশ অবাক হয়।কারণ বক্সের ভেতরে একটা ডায়মন্ডের আংটি যেটার উপর A লিখা। আবির আঁচলের দিকে তাকিয়ে দেখে আঁচল আগের মতোই আনমনে হাটছে।আবির কিছু বললো না।
কিচ্ছুক্ষণ পরই আবিরের মোবাইলে কল আসে।আবির পকেট থেকে মোবাইল বের করে।
আবির কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আওয়াজ আসে
“আপনাকে চারদিক থেকে ঠকানো হচ্ছে। আপনার জীবনের অনেক বড় সত্য জানতে হলে এখনই হোটেল ব্রিটানিয়ার ৪১২ নাম্বার রুমের খোজ নিন।অনেক কিছু জানতে পারবেন”
আবির বিস্মিত হয়ে বলে
“হ্যালো কে বলছেন হ্যালো”
ওপাশ থেকে আওয়াজ আসে
“আমি কে সেটা জানা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনার ভালোর জন্যই বলছি যদিও এর পেছনে আমার কোনো স্বার্থ নেই কথা দিচ্ছি আপনি আশাহত হবেন না আমার কথার উপর একটু বিশ্বাস রেখে ওই হোটেলে গিয়ে খোজ করুন।আপনার ভালো হবে কেউ আপনার ভালো চায় না”
ওপাশ থেকে লাইন কেটে যায়। আবির দুই থেকে তিনবার ওই নাম্বারে কল করার চেষ্টা করে কিন্তু মোবাইল সুইচ অপ করা।
আবির আঁচলের দিকে তাকিয়ে দেখে আঁচলের কোনো রিয়েকশন নেই।।আবিরের মনের ভেতর সন্দেহ জাগে বিষয়টা কি কে এই লোক কেনো কল করেছে আরো নানা প্রশ্ন জাগে আবিরের মনে
আবির আঁচলকে বাসার গেইটের ভেতর পর্যন্ত পৌছে দিয়ে আঁচলকে বলে ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে আবিরের কাজ আছে ও পরে আসবে।আঁচল ভেতরে চলে যায় আর আবির বাইক নিয়ে চলে যায় ওই হোটেলের উদ্দেশ্যে।
আঁচল ঘরে গিয়ে শাড়ী চেঞ্জ করে একটা থ্রী পিছ পরে নেয়। আঁচল বারান্দায় গিয়ে চেয়ারে বসে।আঁচল কফির মগে চুমুক দিচ্ছে উন্মাদের মতো হাসছে আর বলছে
“আজকের এটাই আপনার জন্য আপনার জন্মদিনের সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ মিস্টার আবির।আজকে যা ঘটতে চলেছে আপনি তার জন্য একদমই প্রস্তুত নন। সব কিছুর হিসেব আপনাকে দিতে হবে তিলে তিলে। পাল্টা আঘাত দেওয়ার সময় এসে গেছে।এই থার্ডক্লাশ মেয়ের কাছে যে আপনাকে আসতেই হবে।”
আবির দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে হোটেলে গিয়ে পৌছায় কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় হোটেলের সিকিউরিটিরা। আবির কোনো ভাবে ওদের টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ভেতরে যায়। রিসিপশনে একটা সুন্দরি মেয়ে বসে আছে।মেয়েটার চুল তেমন লম্বা না। গায়ে একটা কোট পরা আর গলায় টাই লাগানো। আবির ওখানে যাওয়ার সাথে সাথে মেয়েটা বলে
“আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি”
আবির হন্তদন্ত হয়ে বলে
“৪১২ নাম্বার রুমের”
আবিরকে কথার মাঝে থামিয়ে মেয়েটা বলে
“স্যার ৪১২ নাম্বার রুম তো বুক করা”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“কাইন্ডলি আমাকে কিছু ইমপমেশন দিতে পারবেন”
মেয়েটা আবিরের দিকে সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে
“সরি স্যার এটা আমাদের রুলস এর বাহিরে ”
আবির ভ্রু কুচকে বললো
“রুলস এর বাহিরে মানে?”
মেয়েটা আবিরকে বলে
“হোটেলের একজনের খোজ অন্য জনকে দেওয়াটা আমাদের রুলস এর বাহিরে।আপনি চলে যান এখান থেকে হোটেলের মালিককে ডাকার জন্য আমাকে বাধ্য করবেন না”
আবির হা হা করে হাসে আর পকেট থেকে আবিরের ভিজিটিং কার্ড বের করে মেয়েটাকে দেখায় মেয়েটা খানিকটা চমকে বলে
“স্যার আপনি।সসরি স্যার আমি আপনাকে চিনতে পারি নি ”
আবির মুচকি হেসে বলে
“দেখে তো মনে হচ্ছে কাজে নতুন জয়েন করেছেন”
মেয়েটা কাচুমাচু হয়ে বললো
“জ্বি স্যার”
আবির ভ্রু কুচকে বলে
“তো নতুন হলে আমাকে চিনেন কিভাবে?”
মেয়েটা মাথা নিচু করে বলে
“এর আগে যে কাজ করতো সে আমার বড় আপু ওর থেকেই শুনেছি এই হোটেলের মালিক সেজান চৌধুরীর বোনের একমাত্র ছেলে আপনি।সবাই আপনাকে অনেক ভয় পপায়”
আবির মুচকি হেসে বলে
“গুড এন্ড তোমার কাজ অনেক ভালো।আমাকে এখন ৪১২ নাম্বার রুমে কে আছে সেটার সব ইমপরমেশন দিন”
মেয়েটা কিছুক্ষণ অফিসের কিছু ফাইল ঘাটাঘাটি করে বললো
“ওখানে বিবাহিত দুজন স্বামী স্ত্রী থাকে”
আবির বললো
“ওহ”
আবির আবার কিছুক্ষণ পর জিজ্ঞাস করলো
“যারা থাকে তাদের নামটা একটু বলো”
মেয়েটা বললো
“স্নেহা জাহান আর স্নিগ্ধ হোসেন”
আবিরের পায়ের মাটি সরে গেলো মেয়েটাকে বললো
“কি যা তা বলছো মাথা ঠিক আছে তোমার”
মেয়ে টা আবিরের দিকে একটা ফাইল এগিয়ে দিয়ে বলল
“দেখুন ওনাদের দুজনেরই সিগনেচার দেওয়া আছে এখানে আর ওনারা গত নয় দিন ধরেই এই হোটেলে আছেন”
আবির সিগনেচার গুলো লক্ষ্য করলো একটা স্নেহার সিগনেচার “sneha Jahan” লিখা আর অন্যটা আবিরের বন্ধু স্নিগ্ধর সিগনেচার “snigdho hossen”
আবির মেয়েটাকে কিছু বল্লো না হোটেল থেকে বেরিয়ে বাইক নিয়ে বাড়ীতে চলে এলো।
আবির দেখলো আঁচল বিছানায় ঘুমাচ্ছে।আবির একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বারান্দায় রকিংচেয়ারে দুলছে আর নিজের মনে বলছে
“কেনো করলি তোরা এইরকম আমার বিশ্বাসের সাথে ছলনা করেছিস তোরা।স্নেহা তোমাকে তো আমি অনেক ভালোবাসতাম আমার ভালোবাসায় কোনো কমতি ছিলো না আর স্নিগ্ধ তোকে তো আমি নিজের বন্ধুর চেয়েও বেশী ভাবতাম তুই ও বেইমানি করলি।এর সাজা তোদের পেতেই হবে”
সত্য এটাই যে ঠকায় একদিন সেও ঠকে
চলবে__