আগুনের_তৃষ্ণা,Part.24,25

0
1227

আগুনের_তৃষ্ণা,Part.24,25
Maishara_Jahan
Part.24

,,,,সায়ন,, দিয়ার মৃত্যুতে অয়নের কোনো দোষ নেয়, সব দোষ আমার।

সায়ন উঠে বসে গিয়ে বলে,,,,,মানেহহ।

সায়নের বাবা মাথা নিচু করে বলে,,, ঐদিন যখন দিয়া বলে সে কোনো দিন মা হতে পারবে না। সেটা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই পার্টিতে তাকে টাকা দিয়ে চলে যেতে বলি কিন্তু সে রাজি হয় না। তোকেও তো কতো ভবে বুঝানোর চেষ্টা করলাম। তারপর ভাবলাম দিয়াকে ভয় দেখিয়ে চলে যেতে বলবো।

ঐদিন আমি বন্ধুক বের করে এমনি দিয়ার সামনে ধরে হুমকি দিচ্ছিলাম, যেনো সে তোমার জীবন থেকে সরে যায়। তখনি দিয়া ভয়ে দৌড় দিতে নেয় আমিও তাকে আটকাতে যায়, দিয়া আমাকে ধাক্কা দিতে নেয় আর ভুল করে আমার হাত দিয়ে বন্ধুক থেকে গুলি বের হয়ে যায়।

দিয়া সাথে সাথে মারা যায়। অয়ন দৌড়িয়ে এসে আমার হাত থেকে বন্ধুকটা নিয়ে দিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে৷ সে নিজেও বুঝে না কি হচ্ছে। একটু পরেই তুই এসে চিৎকার করতে থাকিস। অয়নের হাতে বন্ধুক দেখে ওকে দোষারোপ করতে থাকিস। আমার অবস্থা তখন খারাপ ছিলো, আমি বুঝতেই পারছিলাম না কি থেকে কি হয়ে গেলো।অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে, আমার অবস্থা থেকে সব দোষ নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেয়।

আমি কিছু বলতে পারিনি । আমি জানি অয়ন যতোই আমার ওপরে রেগে থাকুক না কেনো সে চাই না তোর নজরে আমি ছোট হয়ে যায়,তুই আমাকে অপরাধী ভাবিস সেটা অয়ন চাই না। তাই সব অপরাধ নিজের উপরে নিয়ে নেয়। পিল্জ আমাকে মাফ করে দে।

বলে তার বাবা কান্না করতে থাকে, অয়ন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সব শুনছে।অয়নের চোখেও পানি চলে আসে। সায়ন পানি ভরা চোখে সামনে তাকিয়ে দেখে অয়ন দাঁড়িয়ে আছে।সায়ন বেড থেকে নেমে অয়নকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। আর বার বার সরি বলতে থাকে।

অয়ন সায়নের পিঠে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে, সায়নকে বেডে বসিয়ে নিজেও সায়নের পাশে বসে।তাদের বাবা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু ক্ষন তিন জনে চুপচাপ বসে থাকে।

অয়ন তার বাবার হাতের হাত রেখে বলে,,,, যা কিছু হয়েছে এতে করো কোনো দোষ ছিলো না। এমন পরিস্থিতি এসে গেছে যে কাকে কাওকেই দোষারোপ করা যাচ্ছে না। আমরা সবাই পরিস্থিতির শিকার। আমরা সবাই অনেক দুঃখ পেয়েছি এখন দুঃখকে সরিয়ে খুশি থাকার পালা। সায়ন পিল্জ বাবাকে মাফ করে দে। মানছি ভুল ওনার ও ছিলো কিন্তু যা হয়েছে ভুলে হয়ে গেছে।

সায়ন কিছু বলে না, শুধু মাথা নাড়িয়ে অয়নকে জরিয়ে ধরে। তাদের বাবা চোখে পানি নিয়ে বলে,,,জানি তোর কাছে মাফ চাওয়ার ও আমার মুখ নেয়। নিজের নজরেই নিচে নেমে গেছি, তাও মাফ চাইছি। তোর কিছু হয়ে গেলে আমি কি নিয়ে বাঁচবো। নিজেকে কোনো দিন মাফ করতে পারবো না।

সায়ন অয়নকে ছেড়ে তার বাবাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। তার বাবাও সায়নকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। তাদের বাবা অয়নের দিকে তাকায় তকন অয়ন ও দুজনকে জরিয়ে ধরে।

এমন সময় আলো সোজা সায়ন বলে ভিতরে ডুকে, ডুকতেই অভাক হয়ে যায়। ওরা তিন জন তিনজনকে ছেড়ে দেয়। তিন জনের চোখেই পানি। আলো একটু নার্ভাস হয়ে বলে,,,, আমি একটু পরে আসছি।

বলে যেতে নেয়, তখনি সায়নের বাবা উঠে বলে,,, ডক্টর আলো আপনাকে যেতে হবে না। আপনি আমার ছেলের ভালোভাবে চিকিৎসা করেন, আমি আসছি।

আলো,,,,ওকে আংকেল।

তিনজনি তাদের চোখের পানি মুছে ফেলে। অয়ন দাঁড়িয়ে বলে,,,আমি আপনাকে বাহিরে পর্যন্ত ছেড়ে দিয়ে আসি।

অয়ন আর তার বাবা বাহিরে যায়। সায়ন ও ঠিক করে বসে। আমি সায়নের পেশার চেক করতে করতে বললাম,,,, যায় হয়ে যাক মাথায় কোনো চাপ নিবে না। সব কিছুর সমাধান আছে।

সায়ন মুচকি হেঁসে বললো,,,,, আর চিন্তা করতে হবে না আমার। মিস্ আলো আমি সুস্থ হতে চাই। যদিও আমার মন বার বার বলছে,, তুই দিয়াকে ছাড়া বাঁচবি না,, তাও আমি সুস্থ হতে চাই।

আমি খুশিতে লাফিয়ে বললাম,,,,সত্যি,, ওয়াও এটা তো অনেক খুশির খবার। আর দিয়ার কথা বার বার আপনার মন না মাথা বলছে, যেটাকে আপনার কন্ট্রোল করতে হবে।

,,,,,,,হুমমম। পাশে থাকবে তো আমার।

,,,,আপনি না চাইলেও সব সময় আপনার পাশে থাকবো। এই আলো অন্ধকারেও আপনার সাথে থাকবে।

সায়ন হালকা হাসে। তখনি অয়ন আসে। এসে সায়নকে বলে,,, তোকে আজকে বাড়ি নিয়ে যাবো। সেখানেই তোর চিকিৎসা করাবো।

সায়ন অন্য দিকে ফিরে বলে,,,,আমি বাড়ি যাবো না।

অয়ন,,,,কেনো।

সায়ন,,,,আমার জন্য ভাবীর বিপদ হতে পারে।

অয়ন,,, এখন এমন কিছুই হবে না, তুই তো সব কিছু জেনেই গেছিস।

সায়ন,,,, আমি ভাবীর সামনে গিয়ে দাঁড়াবো কিভাবে। ওনাকে মারার জন্য সব প্লেন আমিই করেছি। কতো বার মারার চেষ্টা করেছি। ভাবীর সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আমার নেয়।

তখনি মারু আসে এসে সায়নের সামনে দাঁড়ায়। সায়ন আমাকে দেখে অভাক হয়ে যায়। নিজের মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আমি সায়নের সামনে দাঁড়িয়ে বলি,,,, আমি জানতাম তুমি আসতে চাইবে না, তাই আমিও সাথে এসেছি তোমাকে নেওয়ার জন্য।

সায়ন নিচের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, আমি কোথাও যাবো না।

আমি বেডে সায়নের পাশে বসে বলি,,,,,, কেনো আসবে না, আর আমার জন্য গিল্টি ফিল করার কোনো দরকার নেয়। তুমি আমার ভায়ের মতো। আর ভাই একটা ভুল করলে মাফ করায় যায়৷ তাছাড়া তুমি তো কিছু ইচ্ছে করে করো নি। আর আমি জানি সায়ন কোনো দিন ইচ্ছে করে কারো খারাপ করতে পারে না। আর তুমি সবসময় আমাকে বাঁচিয়েছো। নিজের অজান্তেই আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করলেও নিজের ইচ্ছায় সজ্ঞানে আবার আমাকে বাঁচিয়েছো।

তুমি আমাদের সাথে বাড়ি যাবে বেস এটাই শেষ কথা।তোমাকে ছাড়া বাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাকা লাগে। মনে হয় বাড়িতে জান নেয়।

সায়ন,,,,কিন্তু ভাবী।

,,,কোনো কিন্তু নয়,, বাড়ি ফিরে যাবে মানে যাবে। এখন যদি তুমি আমার কথা না শুনো তাহলে আমি কষ্ট পাবো। আর এসময় আমার কষ্ট পাওয়া ঠিক না। তাহলে বেবির সমস্যা হতে পারে ।

সায়ন,,,,,ভাবী এসব কথা কেও বলে,, বেবির কিছু হবে না।

,,,তাহলে তুমি যাবে।

সায়ন একটু ভেবে বলে,,,হুমম যাবো।

তখন সবাই খুশি হয়ে যায়। তখন অয়ন বলে,, আমি তোর জন্য আমেরিকার একজন বেস্ট সাইকোলজি ডক্টর এর ব্যাবস্থ করেছি, সেই তোর চিকিৎসা করবে।

এটা শুনে আলোর মুখটা মলিন হয়ে যায়। সায়ন আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,আলোও কিন্তু অনেক ভালো ডক্টর। তাই আমার মনে হয় আলো আমার চিকিৎসা করলে ভালো হয়।

অয়ন,,,,,হুমম,, আলোও ডক্টরের সাথে থাকবে। আলো প্রতিদিন আমার বাসায় আসতে কোনো প্রবলেম নেয় তো তোমার।

আলো এক লাফে বলে উঠে,,,,, না কোনো প্রবলেম নেয়।

অয়ন আর আমি আলোর দিকে চোখ দুটো বড় করে তাকায়। তখনি আলো তাড়াতাড়ি করে বলে উঠে,,,, না মানে এটা তো আমার কর্তব্য।

আমি আর অয়ন হাল্কা হেঁসে বলি,,,, হুমম

কিছু ক্ষন পরে আমরা সায়নকে নিয়ে বাসায় পৌঁছে যায়। সায়ন রুমে শুয়ে রেস্ট করতে থাকে। মা সায়নের পাশে বসে আছে।

আমি আর অয়ন বসে আছি। অয়ন ফ্রেশ হয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,,প্রহর কোথায় ওকে দেখছি না যে।

,,,,, প্রহর তো তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলো, বলছিলো কি যেনো কাজ আছে।

,,,হুমম আজ কাল ওর কাজটা একটু বেশিই থাকে।

,,,,,তোমার এতে কি প্রবলেম।

,,,নাহহ আমার আর কি সমস্যা থাকতে পারে।
,,,,,,,,
প্রহর স্নেহার বাসায় যায়। সেখানে তাকে জামাতার মতো ব্যবহার করা যায়। সে স্নেহার রুমে যায়, গিয়ে দেখে স্নেহা শুয়ে আছে৷ ওর মাথায় জ্বর পট্টি দেওয়া। স্নেহা প্রহরকে দেখে উঠতে নেয়, প্রহর উঠতে মানা করে।

প্রহর আমার পাশে বসে বলে,,,,জ্বর কিভাবে বাঁধালে।

যতো টুকু জ্বর উঠেছে তার থেকে বেশি ভাব নিয়ে বলে,,,আমি কি জানি,, আমি কি ইচ্ছে করে করেছি নাকি।

প্রহর স্নেহার কপাল থেকে পট্টিটা সরিয়ে জাত লাগিয়ে চেক করে বলে,,,তোমার তো দেখে অনেক জ্বর,, আমি ডক্টরকে কল করছি।

,,,, ডক্টর এসে দেখে গেছে আর ঔষধ ও দিয়ে গেছে, বলেছে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি আর বেশি দিন বাঁচবো না।

স্নেহার অবস্থা আর কান্না কান্না ভাব দেখে প্রহর স্নেহার হাত ধরে বলে,,,,, এমন কিছু হবে না। এসব তোমার মনের ভুল ইসটুপিড। জ্বর হলে এমন মনে হয়। আর এটা তো সাধারণ একটা জ্বর,তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।

স্নেহা রোগীদের মতো করে বলে,,,,অনেক জ্বালাতন করেছি আপনাকে, পারলে মাফ করে দিয়েন।

,,,,,,,স্নেহা এবার একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। চুপচাপ শুয়ে থাকো, দেখবে এমনি ঠিক হয়ে যাবে।

,,,,,আমি আর ঠিক হবো না, আমি নিশ্চিত মরে যাবো।

,,,, দূররর তোমার সাথে কথা বলাটাই ভুল, আমি চলে গেলাম।

বলে প্রহর যেতে নেয় স্নেহা হাত ধরে টান দেয়। প্রহর তাল সামলাতে না পেরে স্নেহার উপরে গিয়ে পড়ে যেতে নেয় কিন্তু প্রহর তার দুহাত স্নেহার দুপাশে বিছানায় ধরে ফেলার কারনে স্নেহার গায়ে পড়ে যায়নি কিন্তু স্নেহার অনেক কাছে চলে আসে।

দুজন দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রহর উঠে যেতে নিলে স্নেহা তার দুই হাত প্রহরের ঘাড়ে রেখে তাকে আটকায়। প্রহর স্নেহার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,, কি করছো স্নেহা।

স্নেহা প্রহরের গালে কিস করে বলে,, আই লাভ ইউ প্রহর,, তোমাকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি। তুমি কি আমাকে ভালোবাসবে।

প্রহর তাড়াতাড়ি উঠে পরে। নিজের গালে হাত দিয়ে স্নেহার দিকে তাকিয়ে চলে যায়।
,,,,,,
আমি,অয়ন, প্রহর, সায়ন নিচে বসে আছি। এমন সময় কেও একজন দরজার বেল বাঝায়৷ একজন মেইড এসে দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতেই রিয়ান জোরে আমার নাম নিয়ে ভিতরে আসে।

রিয়ান এসেই বলে,,,,মারু আমি এসে গেছি।

আমিও উঠে গিয়ে খুশিতে লাফিয়ে বলি,,,,তোর অপেক্ষাতেই ছিলাম।

অয়ন দাঁড়িয়ে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকিয়ে বলে,,,, কেনো।

আমি রিয়ানের হাত থেকে প্যাকেটটা নিয়ে বলি,,,এর জন্য,, এতে আন্টির তৈরি করা আমের আচাড় আছে। আমার অনেক খেতে ইচ্ছে করছিলো, তাই রিয়ানকে বলেছি এনে দিতে।

প্রহর,,,,এতো ইচ্ছে করলে আমাদের বলতে পারতে। কিনে এনে দিতাম।

,,,আরে আন্টির হতের আচারের সাথে কোনো আচারের মিল হতেই পারে না। আমার অনেক ইচ্ছে করছিলো তাই বলেছি৷

অয়ন,,,হুমম

রিয়ান,,,,আরে তোমাদের প্রবলেমটা কি হুমম,,আমি এখানে এসেছি বলে৷ ঠিক আছে আমি চলে যাবো, চলে যাবো ২/৩ ঘন্টা পরে। কতো দিন হলো মারুর সাথে ঠিক করপ কথা হয় না।

আমি সোফায় দুপা উঠিয়ে বসে, আচারের ডিব্বাটা বের করে খেতে থাকি। আমার খাওয়া দেখে সায়ন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু ক্ষন পরে বলে,,,ভাবী আমাকেও একটু দাও।

আমি সায়নের দিকে ডিব্বাটা এগিয়ে দিলাম। সায়ন সেখান থেকে একটা খোসা নিলো। প্রহর সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, তুইও কি প্রেগন্যান্ট নাকি।

সায়ন খেতে খেতে বলে,,,, কোন বইয়ে লিখা আছে আচার শুধু প্রেগন্যান্ট মেয়েদের জন্য।

চলবে,,,,,,,,

ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।

#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..25

আমি সায়নের দিকে ডিব্বাটা এগিয়ে দিলাম। সায়ন সেখান থেকে একটা খোসা নিলো। প্রহর সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, তুইও কি প্রেগন্যান্ট নাকি।

সায়ন খেতে খেতে বলে,,,, কোন বইয়ে লিখা আছে আচার শুধু প্রেগন্যান্ট মেয়েদের জন্য।

রিয়ান আমার পাশে এসে বসে। অয়ন আর প্রহর তীব্র নজরে তাকিয়ে আছে। রিয়ান আমার দিকে ফিরে বলে,,,, কতো দিন হলো আমরা এক সাথে বসে গল্প করি না। আগে তো অনেক রাত পর্যন্ত আমরা বসে বসে গল্প করতাম মনে আছে।

,,, থাকবে না কেনো, আমরা এক সাথে কতো মজা করতাম। আর রাতে সবাই মিলে ভুতের গল্প করতাম।

অয়ন একটু সামনে এসে বলে,,,, তোমরা রাত ভর কথা বলতে।

আমি অয়নের তাকানো দেখে হ্যাঁ, না কিছু বলতে পারছি না। কিন্তু রিয়ান সোজা সোজি হ্যাঁ বলে দেয়।

অয়ন এসে আমার পিছনে বসে, আমি একটু নড়েচড়ে বসি। প্রহর সামনের টেবিলে বসে বলে,,,,,, আর কি কি করতে শুনি।

রিয়ান,,,,,আরে আরো অনেক কিছু করতাম,যেমন এক সাথে ঘুরতে যেতাম, আড্ডা দিতাম, আমরা তো ভার্সিটির অনুষ্ঠানে এক সাথে ডান্স ও করেছি।

আমি রিয়ানকে থামিয়ে দিয়ে বলি,,,, রিয়ান অনেক ক্ষন হলো এসেছিস আমি তোর কফি এনে দেওয়ার জন্য বলছি।

রিয়ান,,,,,হুমমম

সায়ন,,,,, তোমরা কি প্রতি রাতেই ভুতের গল্প করতে নাকি।

রিয়ান,,,,আরে নাহহ,, কিছু দিন পর পর করতাম। রাতে ছাদে গিয়ে, অল্প আলোতে ভুতের গল্প বলার মজায় আলাদা।

প্রহর,,, আচ্ছা,, তাহলে আজ রাতে ছাদে গিয়েই গল্প করবো, দেখবো কতো সাহস আছে তোমার মনের ভিতরে। কি বলিস অয়ন।

অয়ন ও একটা ডেবিল হাসি দিয়ে বলে,,, হুমম ওকে।

দুজনকে দেখে মনে হচ্ছে, দুজনের মনে অবশ্যই কিছু না কিছু চলছে। আমিও আচার খেতে খেতে দুজনের দিকে তাকায়। দুজনের হাসি রহস্যময় লাগছে।

সায়ন,,,,বাহহ তাহলে আজ মজায় হবে দেখা যায়।

রিয়ান,,,,তাহলে কি আমি রাত হওয়া পর্যন্ত এখানে থাকবো, তাহলে তো মজায় হবে।

এমন সময় আলো দরজায় বেল বাঝায়। দরজা খুলতেই আলোর চেহেরা দেখে সায়ন দাঁড়িয়ে যায়। সায়নের ঠোঁটে হাসি চলে আসে। আলো সবাইকে হ্যালো বলে।

আমি আলোকে দেখে হাসি দিয়ে বললাম,,,এসো, এখানে বসো।

আলো এসে সায়নের সাইডে বসে। সায়ন আলোর দিকে ফিরে বলে,,, যানো আজ রাতে ছাদে বসে ভুতের গল্প করা হবে। তুমি চাইলে জয়ন করতে পারো।

প্রহর,,,,,সায়ন আলো চাইলে তো জয়ন করতে পারবে কিন্তু তুমি না। তুই চুপচাপ রুমে শুয়ে থাকবি। তোর রেস্টের প্রয়োজন।

আলো,,,,, সবার সাথে বিজি থাকলে সায়নের জন্য আরো ভালো,, তবে বেশি ক্ষন জাগার কথা আমিও বলবো না।

সায়ন,,,,,, ঠিক আছে গল্প তাড়াতাড়ি শুরু করবে তাহলেই তো হয়,, বাট যায় হোক আমি থাকবো।

আলো,,,,ঠিক আছে।

সায়ন,,,,,তুমিও থাকবে তো নাকি।

আলো কিছু ক্ষন ভেবে বলে,,,,, ঠিক আছে, আমিও থাকবো।

এটা শুনে সায়ন একটা হাসি দেয়। অয়ন সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে,,,, আজ কাল একটু বেশিই হাসছিস।

রিয়ান,,,,,, হাসবে না তো কাঁদবে নাকি, আজব। মারু তুই বিয়ে করার জন্য আর লোক খুঁজে পেলি না।

অয়ন রিয়ানের দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে তার রাগটাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে। রিয়ান এদিকে কোনো পাত্তাই দেয় না।

আলো,,,,সায়ন চলো তোমার ঔষধ দেওয়ার সময় হয়ে গেছে।

সায়ন,,,,হুমম চলো,, দিয়ে দাও ইনজেকশন। তোমার কাছে ইনজেকশন ছাড়া আর কোনো মেডিসিন নেয় নাকি।

আলো,,,, আরে আমি কি করবো, যে রোগের যে মেডিসিন সেটাই তো দিবো।

আলো আর সায়ন রুমে যায় গিয়ে, সায়ন বসে আলো সায়নকে চেকাপ করে মেডিসিন দিয়ে দেয়।

আলো,,,, এখন কিছু ক্ষন শুয়ে থাকো।

সাশন বিছানায় শুয়ে আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,,,, আলো অনেক দিন হলো গান শুনি না। একটা গান শুনাও না।

আলো,,,,,এখন।

,,,,হ্যাঁ,, তাছাড়া বিকেলে গান শুনলে খারাপ কি। অনেক দিকে হয়ে গেছে গান গায় না। আজ বড়ো ইচ্ছে করছে গান শুনতে, গিটারের ধুন শুনতে।

আলো মুচকি হেঁসে বলে,, ঠিক আছে, তবে আমার গান শুনে আবার আমার উপর হাসবে না কিন্তু।

বলে সায়নের গিটারটা নেয়, গিটারের সামনে দিয়া লিখা। আলো সেটা দেখে হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে। সায়ন দেখে বলে,,,, নামটা ঢাকার দরকার নেয় কারন গিটারটাই দিয়েছে দিয়া। এটা দেখলেই আমার তার কথা মনে পড়ে যায়। তুমি শুধু গিটার বাঝাও অন্য কিছু ভাবার দরকার নেয়।

জানি না কেনো গিটারটার দিকে তাকিয়ে আমার মনে একটা অজানা কষ্ট হচ্ছে। মাঝে মাঝে দিয়ার নাম শুনলে বড্ড হিংসে হয়। সে দুনিয়াতে নেয় তাও তার ভালোবাসা এখনো সায়নের মনে গেঁথে আছে।

আমি সায়নের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে গিটার বাঝানো শুরু করি। আর বুঝেনা সে বুঝেনা গান গায়তে শুরু করে দিয়৷ আমি নিজেও জানি না, এই গানটা আমি কেনো গায়লাম। আমি গান গাচ্ছি, আর সায়ন আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

গানটা শেষ করে গিটারটা নিচে রেখে দিয়। সায়ন হেঁসে বলে,,,, তুমি ডক্টর কেনো হলে সিঙ্গার কেনো হলে না।

,,,,একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না, আমি এতোটাও সুন্দর গায় না।

,,,,হুমম,, কিন্তু মন মুগ্ধ করার মতো তো অবশ্যই গাও।

,,,,,, তাই,, আপনার ভালো লেগেছে।

,,,,,,, হুমম অনেক।

আমি শুধু হালকা হাসলাম কিছু বললাম না। সায়নের রুমে অনেক বই রাখা। আমি গিয়ে সেগুলো দেখতে থাকি আর বমি,,,,বই পড়তে এতো ভালো লাগে বুঝি।

সায়ন,,,,,, শুধু এডভান্সার স্টোরি পড়তে ভালো লাগে।

,,,ওহহহ,, আর আমার শুনতে ভালো লাগে। কেও যদি গল্প পড়ে শুনাতো তাহলে অনেক ভালো লাগতো।

,,,সোজা সোজি বললেই তো হয়, এটা গল্প পড়ে শুনাতে।

,,,,বুদ্ধিমানের জন্য ইংগিতই যথেষ্ট।

,,,,,হুমম,, তাহলে একটা বই আনো আমি পড়ে শুনায়।

আমি একটা বই বের করে নিয়ে যায়। সায়ন সেই বইটা নিয়ে পড়তে থাকে, আর আমি মনো যোগ দিয়ে শুনছি।মাঝে মাঝে পড়ার মাঝখানে একটু বিরক্ত ও করছি।
,,,,,,,
আমি আর রিয়ান বসে গল্প করছি। অয়ন মাঝখান থেকে উঠে বলে,,, এখন তোমার রেস্ট করা উচিত। পড়ে গল্প করো।

রিয়ান,,,,তাহলে আমি এখানে একা বসে বসে কি করবো।

অয়ন,,,, কেনো আমরা আছি না, আমাদের সাথে গল্প করো।

রিয়ান মুখ বেকিয়ে বলে,,,, হেহহ তোমরা সারা ক্ষণ মুখ ফুলিয়ে রাখো। মুখে একটু হাসিও নেয়। গল্প করবো কিভাবে।

প্রহর,,,,,মারু তোমার এখন আরাম করা দরকার।

মারু,,,, হুমম আমারো কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে। আচ্ছা আমি একটু শুয়ে আসি,তোমরা কিন্তু রিয়ানের খেয়াল রাখবে। আর হ্যা ঝগড়া করার চেষ্টা একদমি করবে না।

প্রহর,,,,তোমার কি আমাদের ছোট বাচ্চা মনে হয় যে আমরা ঝগড়া করবো।

,, ছোট বাচ্চাও আপনাদের থেকে ভালো আছে।

বলে আমি সেখান থেকে চলে যায়। প্রহর রিয়ান এর সাথে এসে বসে, অয়ন রিয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে,, অনেক গল্প আছে না তোর মনে, তাহলে এখন গল্প করো করবি বল। আর আমি এটা বুঝি না মেয়েদের ছেলে বেস্ট ফ্রেন্ড থাকার কি দরকার।

রিয়ান,,,,কেনো জেলেসি ফিল করছো নাকি, অবশ্য আমার বউয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছেলে থাকলে আমিও জেলেসি ফিল করতাম। আচ্ছা আমি আমার কিছু ফানি গল্প শুনায় তোমাদের।
,,,,
প্রায় অনেক ক্ষন হয়েছে আমি শুয়ে আছি। প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে।অয়ন এখনো আসলো না রুমে। আমার তো রিয়ানের জন্য ভয় হচ্ছে। আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। গিয়ে দেখি তিন জনে বেশ হেঁসে হেঁসে কথা বলছে। হাসির আওয়াজটা একটু বেশিই শুনা যাচ্ছে।

আমি তাদের সামনে গিয়ে বলি,,, কি ব্যাপার এতো হাসা হাসি কিসের জন্য হচ্ছে।

প্রহর,,,,,,রিয়ান প্রচুর ফানি কথা বলে।

অয়ন,,,,, আমরা এমনি আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ফানি গল্প বলছিলাম।

,,, ওহহ তাহলে তোমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।

অয়ন,,,, ভেবে দেখা যেতে পারে।

রিয়ান,,,,, আমিও ভেবে দেখতে পারি।

,,,আচ্ছা তোমরা ভাবা ভাবি করতে থাকো আমি তোমাদের জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি। সায়ন আর আলো তো হারিয়েই গেছে, ওদের ও ডাক দাও।

সবাই নিচে আসে। সবার জন্য হালকা নাস্তা রেডি করে টেবিলে রেখেছি। সবাই খাচ্ছে আর কথা হচ্ছে।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই সোফাস বসে কথা বলছি। প্রহরের ফোন আসায় সে একটু দূরে চলে যায় কথা বলার জন্য।

প্রহর,,,,হ্যালো, স্নেহা বলো কি বলবে।

স্নেহা,,,,, কত বার কল দিলাম ধরলে না যে।
,,,,,এখন তো ধরেছি বলো।
,,,,,, আমার সাথে রাগ করে আছো।
,,,,, না,, চিন্তায় আছি।
,,,কিসের চিন্তা।

,,,,,,দেখো স্নেহা আমি তোমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসতে পারবো না৷ আমার মনে হয়না আমি কাওকে আর ভালোবাসতে পারবো।
,,,,,,আমার পুরোটা লাগবপ না, তোমার মনে একটু জায়গা দিলেই হবে।

,,,,এটা বলতেই ভালো লাগে স্নেহা, আর বাস্তবে সবাই পুরোটা চাই। তুমি এখন বুঝতে পারছো না কিন্তু এই কথাটাই তোমাকে পরে অনেক কষ্ট দিবে। যা আমি চাই না। ভালোবাসায় কষ্ট সবাই সহ্য করতে পারে না।

,,,,,আমাকে একটা সুযোগ দিয়ে তো দেখতে পারো। আমি জানি আমি তোমার মন একদিন না একদিন অবশ্যই জিতে নিবো।

,,,,,স্নেহা বুঝার চেষ্টা করো, আমি আর কাওকে ভালোবাসতে চাই না।
,,,,যে ভালোবাসা কোনোদিন তোমার হবে না তাকে মনে গেঁথে রাখাকে পাগলামো ছাড়া আর কিছু বলে না প্রহর।

,,,,,, ভালোবাসার মানে শুধু পাওয়ায় হয় না স্নেহা। তুমি কেনো বুঝতে পারছো না, আমি আর কাওকে ভালোবাসতে চাই না। আমাকে ভালোবাসলে শুধু কষ্ট ছাড়া আর কিছুই পাবে না।

,,,,এই কষ্টের মাঝেও একটা আনন্দ আছে প্রহর।

,,,,,পিল্জ আমাকে ভালোবাসতে এসো না।

,,,,,, ভালো তো আর ইচ্ছে করে বাসা যায় না, আর আমি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে কি করবো। ইচ্ছে করে তো আর করিনি।

,,,,তাহলে কষ্ট পাও, আমার আর কিছুই করার নেয়। বাই।

,,,,, এক মিনিট এক মিনিট, ফোন রাখার আগে তুমি এটা বলে যাও, তুমি কি এই মূহুর্তে আমাকে রিজেক্ট করলা।

প্রহার রাগী গলায় বলে,,,,,, হুমম।

,,,,, তুমি আমাকে রিজেক্ট করছো মানে, তুমি হেন্সাম বলে নিজেকে কি ভেবেছো, আমিও কম সুন্দর না। যানো আমার আগে পিছনে কতো ছেলে গুর গুর করে। কি ভাবোটা কি নিজেকে। সোজা সোজি কেও না করে। একদিন দেখবে তুমি আমাকে প্রপোজ করবে আর আমিও এভাবে সোজা সোজি না করে দিবো হুহহহ।

বলে ফোন রেখে দেয়, প্রহর অভাক হয়ে ভাবতে থাকে,,,, এটা মেয়ে নাকি এলিয়েন, মানে এ সময়ে এমন কথা কে বলে।

ঐদিকে স্নেহা কান্না করে নদী ভাসিয়ে দিচ্ছে, প্রহর স্নেহাকে আবার ফোন করে। স্নেহা ফোন উঠিয়ে জোরে বলে,,,,,, কিহহহহ

প্রহর চমকে গিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে নাম্বার ঠিক আছে নাকি। দেখে আমার কানে ধরে বলে,,,আচ্ছা আমরা কি ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে পারি না। আগে ফ্রেন্ড হয়ে দেখি।

,,,তোহহ আগে কি ছিলাম।

,,,,স্টুডেন্ট।

,,,,কিহহহ তুমি আমাকে স্টুডেন্ট ভাবতে। আচ্ছা যাই হোক। আগে স্টুডেন্ট ভাবতে, এখন ফ্রেন্ড কিছু দিন পরে গার্লফ্রেন্ড ও ভাবতে পারো তারপরে বউ। ওকে ওকে আমি রাজি ফ্রেন্ড হতে।

বলে খুশিতে কেটে দেয়, প্রহর কিছু বলার আগেই। প্রহর ফোনের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে,,,,, পাগল একটা।

রাত ঠিক ১০ টার দিকে সবাই ছাদে গিয়ে গোল করে বসি। ছাদে লাইট গুলো নিবিয়ে দিয়ে কয়েকটা মম বাতি জ্বালানো হয়েছে। চারপাশে আবার বড় বড় গাছ, যে গুলো হাওয়াতে দুলতে আর গা ছম ছমে একটা আওয়াজ হচ্ছে। অলরেডি ভয় লাগা শুরু হয়ে গেছে।

আমি অয়নের সাথে একদম ঘেঁষে বসেছি তার এক বাহু জরিয়ে ধরে। আর আলো কিছুটা সামনে এগিয়ে এসে সায়নের দিকে চাপছে। সায়ন বুঝতে পেরে মুচকি হেঁসে তার কানের কাছে গিয়ে বলে,,,ভয় পেয়ো না, আমি আছি না কিছু হবে না।

আলো,,,,, আমি ভয় পায় না।

সায়ন,,,,,সে তো দেখায় যাচ্ছে।

প্রহর,,,,, কিসের ভুতের গল্প বলবে, একটুও ভয় হচ্ছে না।

অয়ন,,,,,,রাত ১/২ টার দিকে বসলে ঠিক হতো, কিন্তু সায়ন তো এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকা যাবে না।

সায়ন,,, জেগে থাকতে আমার কোনো সমস্যা নেয়।

আলো আর অয়ন ভাইয়া এক সাথে বলে উঠে,,,,,,, আমার আছে।

দুজনে যেভাবে মুখটা ভার করে বলে এর পরে আর কিছু বলার সাহস পায়নি সায়ন।

রিয়ান একটু অদ্ভুত কন্ঠে বলে,,, আমি আজ অনেক ভয়ানক ভয়ানক ভুতের গল্প বলবো।

আলো,,,,আপনি এভাবে কেনো বলছেন স্বাভাবিক কন্ঠে ও বলতে পারেন।

রিয়ান,,,তাহলে ভয় পাবে কিভাবে।

মারু,,,,,তুই এতো ভুতের গল্প পাস কোথায়।

রিয়ান,,,,,,, ভুত এফ এম এ।

প্রহর,,,,, শুরু করা যাক।

চলবে,,,,,,,,

ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here