আঠারো_বছর_বয়স,পর্ব-৩,৪
লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া
পর্ব-৩
রুহির মতো ভীতু একটা মেয়ে যে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে পারে, সেটা ওর নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছেনা। আবার কতগুলো ছেলের মাঝে ও একা একটি মেয়ে। এখন যদি কোনো বিপদে পড়ে তাহলে কি হবে! রুহি ঘামতে শুরু করলো। বুঝতে পারছে, এভাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসাটা মোটেও ঠিক হয়নি। কিন্তু এটা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না রুহির।
‘নিশীথে যাইও কন্যা জোনাকবনে।’
গানটি জোরেশোরে গাইছে আবির। কালো হলেও গলায় সুর আছে বেশ। কিন্তু স্বভাবটাই বেপরোয়া, খারাপ। দীর্ঘ একঘন্টা যাবৎ হুজুরের বাড়িতে বসে আছে বিভোররা। বুঝতে পারছেনা এই হুজুর দিয়ে কি করাতে চায় আবিরের লোকেরা।
হুজুরের নাম রশিদ শেখ। তার দো’তলা বাড়িটি বেশ সুন্দর। কিন্তু এই গন্ডগ্রামে একটা হুজুরের এতো বড় বাড়ি কীভাবে থাকতে পারে সেটা ভেবে বিভোর অবাক। হুজুর কোনো একটা কাজে বাজারে গিয়েছে। রাত দশটায় বাজারে কোন কাজ থাকতে পারে ভেবে পাচ্ছেনা ও। আবিরের লোকদের কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে ওদের খুব পরিচিত এই হুজুর। ইতিমধ্যেই হুজুরের নাতি ওদেরকে চা-নাস্তা, কোকাকোলা জাতীয় পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। চায়ের সঙ্গে কোকাকোলাটা মিশিয়ে খাচ্ছে আবির। স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতন আবিরকে এভাবে খেতে দেখে বিভোর চেঁচিয়ে বলল,
‘ এটা আপনি কী করছেন? এভাবে খাওয়া হেলথের জন্য ভালো নয়।’
বিরক্ত হয়ে আবির বলল,
‘ তোর হেলথের গুল্লি মারি। বাঁচমুই ক’দিন, হেলথ দিয়া হইবো কি।’
‘ এটা ক্ষতিকর।’
‘ হায়াত-মউত সব আল্লাহর হাতে। তুই তোর বউয়ের খেয়াল রাখ।’
বিভোর রুহির দিকে তাকালো। মেয়েটা ঘুমিয়ে কাদা। বিভোরের কাঁধে মাথা রেখে এমনভাবে ঘুমুচ্ছে যেন সত্যিই রুহি বিভোরের হবু বউ। কতোটা বিশ্বাস করেছে মেয়েটা ওকে, ভেবেই বিস্মিত হলো বিভোর।
আবির একটা সিগারেট ধরালো। বিভোরের ইচ্ছে করছে ওকে লাথি মেরে ফেলে দিতে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও এটা করতে পারবেনা। কারণ রুহির না কোনো ক্ষতি করে দেয়। তাছাড়া নয়জনের সাথে ওর এই শক্তি কাজে আসবেনা।
আবির ওর উদ্দেশ্যে বলল,
‘ নাম কিরে তোর?’
‘ বিভোর।’
‘ এইডা আবার কেমন নাম!’
বিভোর হাসলো।
‘ তর বউয়ের নাম কী?’
বিভোর মনে করার চেষ্টা করলো। কিন্তু কিছুতেই রুহির নামটা মনে করতে পারলোনা। মানসপটে লালচে জবার কথা মনে হতেই রুহির মুখখানা ভেসে উঠলো। অগত্যা বলে ফেললো,
‘ রক্তজবা।’
আবিরের হাত থেকে সিগারেট পড়ে গেলো। সালেক, আপনসহ বাকিদের চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো। চোয়াল ঝুলে পড়লো কয়েকজনের।
‘ রক্তজবা আবার কেমন নাম?’
বিভোর ওদের অবস্থা দেখে মনে মনে হাসলো। তারপর গম্ভীর গলায় বলল,
‘ জবা ফুলের মতো সুন্দরী বলেই রক্তজবা।’
‘ এই তুই আর তর বউ কোন গ্রহের প্রাণী? এমন নাম তো এই ত্রিশ বছরেও হুনিনাই। যত্তসব আলতো-ফালতু নাম।’
সালেক বলল,
‘ বেশি আদিক্লামি!’
বিভোর বিরক্ত হলো। হঠাৎই হুজুরের নাতিটা এসে জানালো হুজুর এসে গিয়েছে। অফিসঘরে অপেক্ষা করছে। ওদেরকে যেতে বলেছে।
আবির বললো,
‘ এই তোর বউরে উঠা ঘুম থেইকা।’
‘ কেন?’
‘ এইহানে কী তোরারে ঘুমাইতে নিয়া আসছি? কামে আইছি, উঠা!’
বিভোর রুহিকে আস্তে করে ডাকলো। কিন্তু ও উঠলো না। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে চিৎকার করে ডাকতেই রুহি ধরফরিয়ে উঠলো। ভয়ার্ত চোখে জিজ্ঞেস করলো,
‘ কী হয়েছে?’
আবিরই কথা বললো প্রথমে।
‘ তোমারে তো কামে নিয়া আইছি মামুনি। ঘুমাইতে না।’
কটমট করে বললো আবির। তারপর ওদেরকে নিয়ে হুজুরের অফিসঘরে চলে গেলো। বাড়ির মধ্যেই অফিস, বাহ! হোমিওপ্যাথি ডাক্তার হুজুর। শেলফগুলোতে ঔষধ সাজিয়ে রাখা, একপাশে বড় একটা টেবিল। তার সামনে দুটো চেয়ার রাখা। হুজুর আবিরের সাথে কথাবার্তা বলে জিজ্ঞেস করলো,
‘ এখানে পাত্র-পাত্রী কে?’
বিভোরের সাথে সাথে রুহিও চমকে উঠলো।
আবির বলল,
‘ ওই যে এরা। নিন শুরু করুন বিয়ে পড়ানো। এই তোরা চেয়ারে বস!’
বিভোর অবাক হয়ে বলল,
‘ পাত্র-পাত্রী মানে?’
‘ তোরাই তো কইলি তোরা হবু স্বামী-স্ত্রী। এখন তোদের বিয়া দিমু।’
‘ আর ইউ মেইড? কীসব বলছেন আপনি?’
‘ ওই বেশি ইংলিশ ছাড়স কেন? একদম চুপ কইরা যা কইছি তা কর।’
‘ আমি এটা করতে পারবোনা।’
‘ কেন পারবিনা?’
‘ আমি এভাবে কাউকে না জানিয়ে কিছু করতে পারবনা।’
আবির হলুদ দাঁতের ফাঁকে সিগারেট চাপালো। কর্কশ গলায় বলল,
‘ বিয়া তো করবিই তোরা। আমাগো সামনেও এর প্রমাণ হইয়া যাক, যে তুই সত্য! মানুষরে জানাইবার দরকারই বা কী!’
‘ এতবড় ঘটনা, আর আমি কাউকে জানাবোনা? আজব তো!’
‘ হুম!’
‘ আপনার কথা শুনতে আমি বাধ্য নই।’
‘ অবশ্যই বাধ্য।’
‘ আমাকে রাগালে এর ফল ভালো হবেনা।’
কথা কাটাকাটির একসময়ে বিভোরের সাথে আবির আর ওর লোকেরা ঝামেলা শুরু করলো। ধস্তাধস্তি, হাতাহাতির একপর্যায়ে হঠাৎ বিভোর রেগে ঘুসি দেয় আবিরের মুখে। নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরিয়ে যায় ওর। এসব দেখে আবিরের লোকেরা বিভোরকে ধরে ফেলে। এতগুলো লোকের সাথে কিছুতেই পেরে উঠছেনা ও। বিভোরের পেটে লাথি দিলে ব্যথায় কঁকিয়ে উঠে ও। হুজুর একপাশে দাঁড়িয়ে আছে অসহায় চোখে, কিছু করার নেই ওনার। আবিরের কর্মকাণ্ড ওনার জানা আছে। এই গন্ডগোল দেখে রুহি এক কোণায় দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপছে। সবকিছু ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
আবির নাকে হাত চেপে ধরলো। হিংস্র গলায় বলল,
‘ এইডারে ইচ্ছামত মার। শালা আমার গায়ে হাত তোলার সাহস দেখায়।’
বিভোরকে সবাই মিলে মারতে থাকে। রুহি চিৎকার করে বলল,
‘ ওনাকে ছেড়ে দিন প্লিজ, মারবেন না।’
‘ এইডা সত্যিই তোর হবু জামাই? হাছা কইরা বল!’
রুহি কাঁদতে থাকে। কি উত্তর দেবে ভেবে পাচ্ছেনা। যদি “না” বলে তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে পারে। উপায়ন্তর না পেয়ে বলল,
‘ জ্বি!’
‘ তাইলে তোরে বিয়া করতে চায়না কেন?’
‘ জানিনা।’
আবির রেগে যায়। বিভোরকে একের পর এক আঘাত করেই যাচ্ছে সবাই মিলে। রুহি ভাবছে ওর জন্যই বিভোরের এই অবস্থা, ও সত্যিই পোড়াকপালি। বিভোরের ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে। রুহি এই দৃশ্য নিতে না পেরে আবিরের পায়ে ধরে বলল,
‘ ওনাকে মারবেন না। আপনি যা বলবেন তাই হবে!’
মেয়েটা কী পাগল হয়ে গেলো নাকি? ও একথা মানতে নারাজ। কিছুতেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে পারবেনা ও। বিভোর চেঁচিয়ে বলতে লাগলো ও বিয়ে করবেনা।
বিভোরের কথাশুনে আবির মুখচোখ খিঁচিয়ে বলল,
‘ এই ছেড়া তোরে বিয়া করবেনা, শর্ত অনুযায়ী তুই আজ রাইতে আমাদের! হা হা।’
রুহির হাত ধরে টানতে লাগলো আবির। রুহি যেতে চাচ্ছেনা। বিভোরের দিকে অসহায় চোখে তাকাচ্ছে আর কাঁদছে।
‘ তোরে আইজ ছাড়ছিনা সুন্দরী! হাত-পা নাড়াইয়া কোনোই লাভ নাই!’
বিভোর চমকে তাকালো। কিছুতেই মেয়েটির সাথে এমন অন্যায় হতে দেওয়া যাবেনা। কি করা যায় ভাবতে লাগলো, পালানোর পথও নেই। অতএব, কিছুই করা যাবেনা। অবশেষে বিভোরের অবস্থা দেখে রুহি নিজেই রাজি হয়ে যায় বিয়ে করতে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একপ্রকার হুমকি, ভয় দেখিয়ে রুহির সাথে বিভোরের সারাজীবন এক সুতোয় জুড়ে দিলো। রুহি কবুল বলার সময় কান্না করে দিলো এবং শব্দটা বলেই অজ্ঞান হয়ে গেলো। বিভোর ধরলোও না। ওর ভয়ংকর রাগ হচ্ছে, পুরো শরীর জুড়ে কিলবিল করছে আগুনের হলকা।
বিভোরের সব রাগ পড়লো গিয়ে রুহির উপর। ও কেন বেশি বাড়াবাড়ি করতে গেলো? এখন কীভাবে কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা।
‘ এই তোর বউ অজ্ঞান হইয়া গেছে দেখছিস না?’
বলেই আবির আর ওর দলের ছেলেরা উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো। তারপর বেরিয়ে গেলো। ওরা বেরিয়ে গেলে হুজুর লোকটার নাতনি, একটা মহিলা ধরাধরি করে রুহিকে একটা রুমে নিয়ে শুইয়ে দিয়ে চলে গেলো। বিভোরকেও আসতে হলো। পাঁচ মিনিট পরে ওর কাছে এসে হুজুরটি বলল,
‘ আজ রাতটা এখানেই থেকে যাও বাবা। মেয়েটা তো অসুস্থ হয়ে পড়েছে!’
বিভোর চুপ। হুজুর বিষন্ন ভঙ্গিতে বলল,
‘ ওরা অনেক খারাপ বাবা। এই এলাকায় ওরা যতবার আসে ততবারই কিছু না কিছু ঘটিয়ে যায়।’
বিভোর কিছুই বলছেনা দেখে হুজুর আবারও বলল,
‘ কিন্তু এখন আর কিছুই করার নাই, বিয়ে তো হয়েই গিয়েছে। এই মেয়েটাই এখন আপনার স্ত্রী!’
বিভোর রেগে হাতের কাছে থাকা একটা ফুলদানি মেঝেতে ছুঁড়ে মারলো। হুজুরের পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে বলল,
‘ এই বাক্যটা সেকেন্ড টাইম আর উচ্চারণ করবেন না।’
হুজুর লোকটা কোনোমতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিভোরের কাছ থেকে দূরে সরে গেলো। বিভোর ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। চোখমুখে হিংস্রতা বিদ্যমান। ওর এই রুপ দেখে হুজুর ভয়ে চুপসে গেলো। রুহির দিকে দৃষ্টি পড়তেই তাড়াহুড়ো করে বোতলের পানি ছিঁটিয়ে দিলো ওর চোখেমুখে।
কিন্তু রুহির সেন্স ফিরলো না। এটা দেখে না চাইতেও বিভোর এসে ওকে ধরলো। বোতলের সবটা পানি ছিঁটিয়ে দিলো কিন্তু সেন্স আসলো না। বিভোর ওর ব্যাকপ্যাক খুঁজতে লাগলো। সোফার উপর পড়ে আছে। ব্যাকপ্যাক খুলে ডাক্তারির প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম বের করে পালস চেক করলো, চোখগুলো টেনে দেখলো। গায়ে জ্বর। অতিরিক্ত স্ট্রেসে এমন হয়েছে, তাছাড়া শরীরও বেশ দুর্বল। মনে হয় মেয়েটা কিছু খায়নি।
মুহূর্তেই রাগ উবে গেলো। আসলে মেয়েটা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিলো। মনে হতেই বিয়েটিয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের মাথা ঠান্ডা করলো বিভোর। হুজুরকে পানি আনতে বললে ওনি মাঝারি আকারের একটা বালতি ভর্তি করে পানি নিয়ে আসেন। বিভোর রুহিকে ঠিকঠাক করে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মাথায় পানি দিতে লাগলো। এর বেশিকিছু ওর মাথায় আসছিলোনা। হুজুর নিজের আয়ুবের্দিক ঔষধ নিয়ে আসলো। কিসব শেকড়-পাতা বেটে ওটার রস বাটিতে করে বিভোরের হাতে দিয়ে বললো,
‘ মেয়েটাকে ওটা খাইয়ে দাও!’
‘ এসব কী?’
‘ ঔষধ বাবা।’
‘ এসব কোনো কাজে আসবেনা, রোগীর জন্য এটা বেশ ক্ষতিকর হতে পারে।’
‘ কোনো ভয় নেই বাবা।’
‘ দেখুন, আমি একজন ডাক্তার। আপনি বললেই আমি বোকার মতো এটা মেয়েটাকে খাওয়াতে পারবোনা।’
হুজুর অবাক হয়ে বলল,
‘ আপনি ডাক্তার?’
‘ হুম।’
‘ তাহলে আপনিই কিছু করুন।’
‘ কী করবো? এতো রাতে এখানে তো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বা ঔষধ কিছুই পাওয়া যাবেনা। তাই চাইছি আপাতত জ্বরটা কমুক!’
হুজুর চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
‘ গ্রামগঞ্জে এটাই সমস্যা।’
‘ প্যারাসিটামল পাওয়া যাবে?’
‘ না। তবে আমার বানানো ঔষধটাও খাওয়াইতে পারেন, ওটা প্যারাসিটামলের চেয়ে বেশি কাজে দেবে।’
‘ এর কোনো শিওরিটি আছে? যদি হিতে বিপরীত হয়? আপনি তখন কী করবেন?’
‘ এটা ১০০% কাজে দিবে। গ্রামের মানুষদের অসুখ বিসুখ হলে তো আমিই ঔষধ দিই। কই কখনো তো খারাপ কিছু হয়নাই!’
হুজুরের কথাগুলো বিভোরের অসহ্য লাগছে। পেশেন্টের কাছে উচ্চ গলায় কথা বলা ঠিক না, এটা মানুষ বুঝতে চায়না কেন? কিন্তু এখন লোকটার কথা অনুযায়ী মেয়েটাকে কি ঘাসপাতার ঔষধটা খাইয়ে দেখবে? জ্বর তো ক্রমশই বাড়ছে! একটা চান্স নিয়ে দেখাই যাক। কিন্তু হুজুরের সামনে ওর অস্বস্তি হচ্ছে, সেটা বুঝতে পেরেই হুজুর ওর সামনে বাটিটা রেখে দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
চামচে একটু ঔষধ নিয়ে খুব সাবধানে রুহিকে খাইয়ে দিলো বিভোর। ভেজা চুলগুলো গামছা দিয়ে মুছে দিলো। বেশ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে রুহিকে। কেমন একটা ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছে আশেপাশে। রুহির মুখটা নিষ্পাপ, চোখের উপরে কালো তিলটা নজর কাড়ে বারবার। সারারাত এই চেহারার দিকে তাকিয়ে যে-কেউ কাটিয়ে দিতে পারবে, একটুও ক্লান্তি আসবেনা। এই মেয়েটা নাকি বিভোরের বউ! ও মানবে নাকি কোনোদিন?
শেষ রাতের দিকে বিভোরের ঘুমটা ভেঙে গেলো। একটু দূরেই বিছানার উপর বসে রুহি কাঁদছে। কান্নার শব্দটা ওর কানে নুপূরের রিনঝিন ধ্বনির ন্যায় লাগছে। মেয়েরা কাঁদলে কি এতো সুন্দর শব্দ হয়? জানতো না তো কোনোদিন।
‘ কাঁদছো কেন রক্তজবা?’
কান্নাভেজা গলায় রুহি বলল,
‘ আমি বাড়ি যাবো।’
বিভোরের অক্ষিকোটর থেকে ওর চোখদুটো বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। এখনো ভোর হয়নি, তাছাড়া মেয়েটা বাড়ি থেকে পালিয়েছে একদিনও হয়নি এর মধ্যেই একদম সোজা হয়ে গিয়েছে। মেয়েটা বাড়ি ফিরে গেলে তো ভালোই হয়। কিন্তু.. এটা কি ঠিক হবে? উচিৎ-অনুচিত বোধটা কাজ করছেনা কেন? কি করবে বিভোর এবার! মাতাল ছেলের সাথে যারা একটা মেয়ের বিয়ে দিতে চায়, সেই লোকগুলো নিশ্চয় ভালো হবেনা! বোধহয় মেয়েটার ফিরেই যাওয়া উচিৎ।
গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। সবাই গল্প পড়েন, কিন্তু মন্তব্য করেননা। আমিতো সময় ব্যয় করে লিখি, আপনারা মন্তব্য জানালে ভালো লাগে। কিন্তু ভালো লিখতে পারিনা বলেই হয়তো মন্তব্য পাইনা। ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
চলবে…ইনশাআল্লাহ!
#আঠারো_বছর_বয়স
#লেখনীতে-ইশরাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-৪
বিভোর অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছালো যে রুহিকে ওর বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আসবে। দরকার হলে ওর ফ্যামিলিকে বোঝাবে যে এখন যাতে ওর বিয়ে না দেয়। তাছাড়া এক্সিডেন্টলি ওদের যে বিয়ে হয়েছে সেটা ভাঙার জন্যও কিছু করতে হবে। ও কিছুতেই বিয়েটা মানতে পারছেনা। নিশ্চয়ই রুহিও৷ বিয়েটা মানবেনা। যেই ভাবা সেই কাজ।
‘ আমি তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসবো, সত্যিই যাবে?’
রুহি মাথা নেড়ে বলল,
‘ হুম।’
‘ শিওর?’
‘ জ্বি!’
‘ কতদূর পড়াশোনা করেছো? কিসে পড়ো?’
‘ এইট অবধি পড়েছিলাম। এরপর ভাইয়া পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছে, কিন্তু আমি লুকিয়ে এস.এস সি এক্সাম দিয়েছি। কেউ জানেনা।’
বিভোর চোখ কপালে তুলে বলল,
‘ রিয়েলি?’
‘ হুম। কিন্তু জানতে পারলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে!’
‘ কেন?’
‘ কারণ ওরা চায়না আমি পড়াশোনা করি।’
‘ এটা তো খারাপ।’
রুহি মাথা নিচু করে বসে রইলো। বিভোর পানি এগিয়ে দিয়ে বলল,
‘ পানি খাও। ভালো লাগবে।’
‘ আপনি সত্যিই ডাক্তার?’
বিভোর হেসে বললো,
‘ হুম।’
‘ ডাক্তারদের আমি পছন্দ করি।’
‘ জানি।’
‘ আচ্ছা।’
বিভোর অস্বস্তি বোধ করছে। কিন্তু তাও সাহস করে বলল,
‘ তোমার সাথে আমার কিন্তু বিয়ে দিয়ে দিয়েছে ওরা। কিন্তু আমি এই বিয়েটা মানিনা। আমি এটা থেকে খুব শ্রীঘ্রই বেরিয়ে আসবো, ডোন্ট ওরি!’
রুহি কিছু বললো না। ভাবতেই পারছেনা ও এখম বিবাহিতা আর সামনে বসা অচেনা ব্যক্তিটি ওর স্বামী। যার সাথে কাল রাতে ট্রেনে দেখা হলো মাত্র। সময়ের মূল্য অনেক। নইলে রুহি কী কোনোদিন ভেবেছিলো নরক থেকে পালিয়ে এসেও ও বাঁচতে পারবেনা? ভাবেনি। ওইখানে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই ওর। বেরুবার সময় মাথায় এতোকিছু আসেনি, কিন্তু এখন আসছে। কোথায় যাবে, কি করবে, কি খাবে সেসবই ঠিক করে উঠতে পারেনি, তার মধ্যেই হুট করে কয়েকটা ছেলে ওর বিয়ে দিয়ে দিলো।
মাথাটা ঝিমঝিম করছে। ও মানুক আর না মানুক বিয়ে হয়েছে ওর। বাড়ি ফিরলে মাহিম ওকে আবার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে, তাও সজীবের সাথে। এবার বোধহয় বিয়েটা করতেই হবে। কারণ যে ডাক্তারের সাথে ওর বিয়ে হয়েছে সেই লোকটা ওকে মানেনা। আর কোনোই পথ খোলা নেই রুহির কাছে।
‘ কি ভাবছো?’
‘ কিছুনা। আচ্ছা এটা কোন জায়গা?’
‘ এটা ফেনী।’
রুহি চোখ কপালে তুলে বলল,
‘ আমরা তাহলে যাচ্ছিলাম কোথায়? ট্রেনটা কোথায় যেতো?’
‘ ঢাকায়। কিন্তু তোমার বাড়ি কোথায়?’
‘ মহেশখালী!’
‘ ওহহ আচ্ছা। সকালেই নিয়ে যাবো।’
রুহি কিছু না বলে জানালা খুলে বাইরে তাকিয়ে রইলো। ঘরে লাইট অফ করা, টিমটিমে একটা বাতি জ্বলছিলো এতোক্ষণ। জানালা খুলতেই বাইরের কালচে-সাদ রুপ আবর্তিত হলো। নদীর পাশে হুজুরের এই দোতলা বাড়িটা হওয়ায় পানির শব্দ শোনা যাচ্ছে। বাতাস খুব জোরে বইছে। দমকা হাওয়ায় রুহির চুলগুলো লেপ্টে গেলো বিভোরের মুখে। মিষ্টি সুবাস আছে ওর চুলে। ঘ্রাণটা মোহনীয়!
না চাইতেও বিভোর চুলগুলো সরিয়ে দিলো। মেয়েটা কাগজেই ওর স্ত্রী। মন থেকে কোনোদিন বিভোর মানতে পারবেনা একে। কিন্তু এই মুহূর্তে রক্তজবার মতো আকর্ষণীয় লাগছে রুহিকে। সদ্য ফোঁটা তাজা রক্তজবা ভোরবেলা যেভাবে কলি ফেটে বেরিয়ে আসে ঠিক তেমনই। মুগ্ধ হওয়ার মতো কিছু সময়।
রুহির সেদিকে খেয়াল নেই। ও আছে গভীর দুশ্চিন্তায়। সকাল হতেই বিভোর রুহিকে তাড়া দিলো। হুজুর ওদেরকে জোড়াজুড়ি করলো খাবার খাওয়ার জন্য। কিন্তু বিভোর আর এক মুহূর্তও সেখানে দাঁড়াতে চাইলো না। রুহির কাছ থেকে ঠিকানা জেনে নিয়ে বাসে চাপলো দুজনে। খুব বেশি যাত্রী নেই গাড়িতে। এদিকে ক্ষুধায় পেট জ্বলে যাচ্ছে রুহির। বিভোর রোল নিয়েছিলো দুইটা, নিজে একাই খাচ্ছে৷ পাশে কে আছে তাতে হুঁশ নেই। হঠাৎ রুহির দিকে চোখ পড়তেই মনে পড়লো মেয়েটা না খেয়ে আছে। ভদ্রতা করে জিজ্ঞেস করলো,
‘ কিছু খাবে?’
রুহি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো। বিভোর ওর দিকে রোল এগিয়ে দিলে রুহি বলল,
‘ আমি রোল খাইনা।’
বিভোর রেগে বলল,
‘ আশ্চর্য! আমি বাসের মধ্যে এখন কি বিরিয়ানি এনে দিবো?’
‘ নাহ। আচ্ছা থাক লাগবেনা।’
রুহি হেসে না বললো। তারপর বাইরের দিকে মনোযোগ দিলো। বিভোর রেগে কিছুক্ষণ ভাবনাচিন্তা করে ড্রাইভারকে বলল,
‘ এই মামা, গাড়ি থামাও।’
রুহি চমকে ওঠে বলল,
‘ আমার বাড়ি এখানে নয়।’
‘ একদম চুপ। বেশি বুঝো কেন? আমি কি বলেছি এখানে তোমার বাড়ি? রাবিশ!’
ড্রাইভার গাড়ি থামাতে চাইলো না। হেল্পার এসে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিলো। বিভোর রেগে গেলো প্রচন্ড। বলল,
‘ এক্ষুণি গাড়ি থামান বলছি।’
‘ কেন থামামু? এই বাস মহেশখালী গিয়াই থামবো। আর কোনোহানে থামানো যাইব না।’
‘ দেখুন,প্রবলেম না থাকলে বলতাম না। আমার দরকার আছে।’
‘ দরহারটা কী?’
‘ বলা যাবেনা।’
‘ তাইলে আমিও থামামু না।’
‘ আরে আমি খাবার কিনতে চাই। ক্ষিধে লেগেছে।’
বাসের হেলপার দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,
‘ পালোয়ানের মতো শরীর আর দুই মিনিট পরপর আপনের ক্ষিধা লাগে? এক্ষুণি দেখলাম রোল খাইসেন আর এক্ষুনি ক্ষিধা লাইগা গেল? আজব কারবার।’
বিভোর কালো চেহারা করে বলল,
‘ এই আপনি বেশি বুঝেন ক্যান হ্যাঁ? যত্তসব আজাইরা।’
‘ আপনি বেশি খাইবেন আর আমরা কইলেই দোষ? কোথা থেকে আসেন মিয়া।’
‘ একদম ঠাট্টা করবেন না। আমি আমার জন্য না, ওই মেয়েটার জন্য খাবার কিনতে যাচ্ছি।’
সবার চোখ পড়লো রুহির উপর। রুহি মাথা নিচু করে ফেললো। হেলপার ওকে একপলক দেখে বলল,
‘ মাইয়াডা কিডা? আপনের বোন?’
বিভোর ইতস্তত করে বলল,
‘ না।
‘ তাইলে কে?’
‘ বলতে পারবোনা।’
হেলপার যতোটা না ত্যাড়া তার চেয়ে বেশি বিভোর ত্যাড়া। দুজনের কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেনা। বিভোর কিছুতেই স্বীকার করবেনা এই মেয়ে কে? রুহি ওর কি লাগে। কিসের সম্পর্ক। বাসের এক যাত্রী চিৎকার করে বলল,
‘ মনে হয় দুইজন বাড়ি থেইকা পালায় আসছে৷ বুঝো না? হা হা!’
বিভোর রেগে ওই ছেলের কাছে গিয়ে ঠাস করে চড় মেরে দিলো। ছেলেটা গালে হাত দিয়ে ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো।
ডাক্তার যে এভাবে ঝগড়া করতে পারে রুহি ভাবতেও পারেনি। এতো পুরোই সাইকো। রুহি অসহায় গলায় বলল,
‘ আমি কিছু খাবোনা। আপনি চুপ করে বসুন।’
হেল্পার কাটা গায়ে নুনের ছিঁটা দিতে বলল,
‘ চুরি চুরি আবার সিনাজুড়ি! মাইয়াডারে ভাগাইয়া নিয়ে আইসা এখন আমাগো যাত্রীদের উপর ক্ষেইপা লাভ আছে? তোমরা দোষ করলে কিছু না, আমরা কইলেই দোষ!’
বিভোরের মাথা গরম হয়ে গেলো নীতিবাক্য শুনে। এমনিতেই মনমেজাজ খারাপ তার উপর বাসের লোকগুলো যা নয় তা বলে যাচ্ছে দেখে বিভোর চিল্লিয়ে বলল,
‘ এই মেয়েটা আমার বউ। ওকে? আমি কাউকে পালিয়ে নিয়ে আসিনি, আর আমার বউয়ের ক্ষিধে লেগেছে তাই খাবার কিনতে যাবো। এখন গাড়ি থামান।’
ওর চিৎকার শুনে সবার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। রুহি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। বিভোর বলছেটা কী? আশ্চর্য! ড্রাইভার বাধ্য হয়ে এবার গাড়িটা একটা হোটেলের সামনে থামালো। হেল্পারকে তাচ্ছিল্যভরা একটা হাসি উপহার দিয়ে বিভোর গাড়ি থেকে নামলো। ছাউনিঘেরা ছোটখাটো ভাতের হোটেল। কি কি মেন্যু পাওয়া যায় তার তালিকা বাইরে ঝোলানো আছে। ভাত, ডাল, সবজি, মাংসের তরকারি আর বিরিয়ানি। এছাড়া কিছু ফার্স্টফুড। বিভোর দুই প্যাকেট বিরিয়ানি আর কোল্ড ড্রিংকসের বোতল নিয়ে এক হাজার টাকার নোট দিলো দোকানিকে। ভাংতি টাকা না পাওয়ায় পুরো টাকাটা দিয়েই খাবার নিয়ে চলে এলো।
ও খাবার নিয়ে গাড়িতে উঠতেই বাস ছেড়ে দিলো। রাগে গজগজ করছে ও। বিভোরের রাগ দেখে রুহি চুপচাপ বিরিয়ানি খেতে লাগলো। কি ভয়ংকর পরিস্থিতি রে বাবা। বাড়ি গেলে তো এরচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ভেবেই গলা শুকিয়ে গেলো রুহির। খাবার মুখে তোলার ইচ্ছেটাও মরে গিয়েছে।
‘ কী? খাচ্ছোনা কেন? আমি কি টাকা দিয়ে আনিনি? আজব!’
‘ খেতে ইচ্ছে করছে না।’
‘ দেখো আমাকে রাগালে ভালো হবেনা, এমনিতেই মাথা গরম আছে।’
‘ জ্বি খাচ্ছি!’
‘ নাও স্টার্ট। আর এভাবে খাচ্ছো কেন? খাওয়া শিখোনি? ঠিকমতো খাও, খাবার কেউ চুরি করতে আসবেনা।’
অপমানিত বোধ করলো রুহি। এরপর আর কথাই বললো না। বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেলা হয়ে গেলো অনেক। বিভোর নিজেই নিয়ে এলো বাড়িতে। ভয়ে কান্না চলে এলো রুহির। উঠোনে আসতেই মাহিমকে দেখতে পেলো ওরা। ফোনে কার সাথে যেন রেগে কথা বলছে। হঠাৎ রুহিকে দেখতে পেয়েই ফোন কেটে দিয়ে তেড়ে এলো ওর দিকে। হিংস্র গলায় বলল,
‘ ওই হারামি, কই গেছিলি তুই? তোরে খোঁজার জন্য চারদিকে লোক পাঠাইছি আর তুই এখন বাড়ি ফিরছস। তোর সাহস তো কম না, তুই জানালা দিয়া পলাস।’
রুহি কাঁদতে থাকে। বিভোর অবাক হয়ে যায় মাহিমের মুখের ভাষা শুনে। কিসব ভাষায় কথা বলছে বোনের সাথে। ছিঃ!
মাহিমের স্ত্রী ফাহিমা এসে রুহির গালে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে বলল,
‘ সজীবের লগেই তোর বিয়া দিমু আইজকা। দেখি কেমনে ঠেকাইতে পারস। তোর রুপের দেমাগ না কমাইতে পারলে আমিও ফাহিমা না। আর এই পোলা কেন তোর লগে? কেমনে বাঁচবি আমিও দেখুম!’
রুহিকে নিরুত্তর থাকতে দেখে ওকে মাটিতে ফেলে মার্তে থাকে মাহিম। বিভোর গিয়ে আটকায়। মাহিম এতক্ষণ খেয়ালই করেনি বিভোরকে। এবার দেখতে পেয়ে ক্ষেপে যায়। বলে,
‘ এই নাগরের লগে পলাইছিলি বুঝি হারামজাদি!’
বিভোর ধমক দিয়ে বলল,
‘ এসব কি বলছেন আপনি? সম্মান দিয়ে কথা বলুন।’
‘ কারে সম্মান করমু? তোরে না এই হারামজাদিরে?’
ক্ষেপাটে গলায় বিভোর উত্তর দেয়,
‘ বিশ্রি ভাষা যদি আরেকবার ব্যবহার করেন তাহলে এক থাপ্পড়ে দাঁত ফেলে দিবো আপনার!’
‘ দেমাগ দেখাস? কু* বাচ্চা!’
বিভোর এবার আর সহ্য করতে পারেনা। ঠাস করে একটা থাপ্পড় মারে মাহিমকে। দূরে ছিঁটকে পড়ে মাহিম। বিভোর রুহিকে মাটি থেকে তুলে মাহিমের উদ্দেশ্যে বলল,
‘ এই মেয়েটাকে আমি আমার সাথে নিয়ে যাচ্ছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পুলিশকে জানাতে বাধ্য হবো।’
রুহি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকায়। পুলিশের কথা শুনে চুপসে যায় মাহিম-ফাহিমা। বিভোর কিছুতেই নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা। একটা মেয়েকে এভাবে মারধর করা হয় তার উপর জোর করে বিয়ে দেওয়ার কথা বলছে? কত বড় সাহস ওদের। কিন্তু বিভোর থাকতে রক্তজবাকে এই নরকে রেখে যেতে পারবেনা। স্ত্রী হিসেবে না মানুক, অন্তত সাহায্য তো করতে পারে। ঢাকায় নিয়ে গিয়ে না হোক কোনো একটা ব্যবস্থা করা যাবে, যেহেতু মেয়েটার কেউ নেই।
চলবে…ইনশাআল্লাহ!