আনটোল্ড_ডিজায়ার #পর্ব_১৯_২০_২১

0
614

#আনটোল্ড_ডিজায়ার
#পর্ব_১৯_২০_২১

১৯

উত্তরার একটা বিষয় আমার খুব ভালো লাগে,
তা হলো রাত তিনটা বাজুক আর চারটা হাউজবিল্ডিং মোরে নর্থ টাওয়ার এর পাশে সব সময় টং দোকান খোলা পাওয়া যায়। চা – সিগারেটের, হট পেটিস আর পোড়ানো ভুট্টার মত মুখরোচক স্ট্রিট ফুড রাতভর বিক্রি করে দোকানীরা।
সিদ্দীককে নিয়ে চলে গেলাম সেখানে।
গরম ধোয়া ওঠা দুধ চায়ের ভেতর পাউরুটি চুবিয়ে খেতে খেতে দুজনেই ভেবে চলেছি,
“কুকুরের ধাওয়া খেয়ে বেচারা বাবু-মিয়ার শেষমেষ কি অবস্থা হলো!”
বেশ কয়েককাপ চা শেষ করার পরে আমাদের রাত ও শেষ হয়ে আসলো। অদূরের মসজিদ থেকে ভেসে আসলো ফজরের আযানের ধ্বনি।
নির্ঘুম রাত কাটানোর অভ্যেস সিদ্দীকের না থাকলেও আমার ছিলো। তবে আমাদের উপর থেকে যে পরিমাণ ধকল গিয়েছে, মনে হচ্ছিলো ঘুমে ও ক্লান্তিতে রাস্তার উপরে পরে যাব দুজনেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল থেকে মেয়েটির আপডেট জানার জন্য গেলাম।
ডাক্তাররা আমাদের দিকে বারবার সন্দেহের চোখে তাকাচ্ছে।
হুট করে মাথায় একটা বিষয় চলে আসলো।
মেয়েটির জ্ঞান ফেরার পরে যদি ডাক্তারদের কাছে কোন উল্টাপাল্টা স্টেটমেন্ট দেয়,তাহলে আমরা অকারণেই ধরা পরে যাব। সুতরাং মেয়েটির চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সব টাকা পরিশোধ করে এখান থেকে সটকে পড়াই ভালো।
মেয়েটিকে প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং কিছু ফলফলাদি কিনে দিয়ে আমি ও সিদ্দীক বাসার উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেই।
বাবুমিয়াকে নিয়ে ভেতরে ভেতরে প্রচুর টেনশন কাজ করছিলো আমার। কারণ এমনটাও হতে পারে জার্মান শেপার্ড কুকুর এবং নাইটগার্ড বাবুমিয়াকে পাঁকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
এমনটা না হলেই বেশ ভালো হবে। কারণ বাবুমিয়া ধরা পরে যাওয়াটাও আমাদের জন্য বিপদের।
ক্লান্ত শ্রান্ত শরীরে আমি এবং সিদ্দীক ব্যাগভর্তি টাকা ও সোনা-গহনা নিয়ে একটা শপিংমল এ ঢুকি। দুজনের জন্য দুটো ভালো মানের স্মার্ট-ফোন,জুতা, বেশ কিছু জামাকাপড় এবং নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রী কিনে রওনা দেই বাসার উদ্দেশ্যে।
ফেরার পথে একটা হোটেল থেকে গরম ভাত এবং ঝোল করে রান্না শোল মাছ পার্সেল করে নিয়ে নেই।
অনেকদিন পরে আয়েশ করে প্রিয় খাবার খাওয়া হবে আজ।
রুমে ঢোকার পরে দুজনেই গোসল করে ফ্রেশ হয়ে পেটপুরে খাওয়া-দাওয়া করে লম্বা একটা ঘুমের উদ্দেশ্যে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।
যখন আমার ঘুম ভাংগে তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। সিদ্দীকের দিকে তাকিয়ে দেখি ও এখনো বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।
ওকে আর ডাকলাম না। রুম থেকে বের হয়ে পায়চারী করতে করতে ফুলগাছগুলোর কাছে গেলাম।
নিয়মিত পানি পেয়ে বেশ সুন্দর ফুল ফুটেছে গাছগুলোতে। জিনিয়া, গ্যাজনিয়া, হাসনাহেনা, রেইন লিলি পর্তুলিকায় গিজগিজ করছে পুরো ছাদ।
সুন্দর সুরভিত ঘ্রাণে মনটা মুহুর্তেই ফুরফুরে হয়ে গেলো। এমন একটা ফ্রেশ পরিবেশ আরো বেশি উপভোগ্য করে তুললো অসম্ভব মিষ্টি একটা হাসির শব্দ।হাসির শব্দটি অনুকরণ করে পেছনে তাকাতেই দেখতে পেলাম সাদা পোলো টিশার্ট এবং জিন্স পরিহিত সেই মেয়েটিকে, যাদের বাড়িতে আমরা ভাড়া উঠেছি। সাথে প্লুটো নামের কুকুরটাও রয়েছে। মোবাইলের স্ক্রিনে নজর দিয়ে একনাগাড়ে হেসে যাচ্ছিলো মেয়েটি।
আমাকে দেখে হাসির স্রোতে কিছুটা বাণ টেনে বললো, কি খবর ভাইয়া?
কেমন আছেন?
– জ্বী ভালো।
– আপনাদের সাথে পরে আর কথা হয়নি। আসলে সময় করে উঠতে পারিনি। এজন্য দুঃখিত।
– না ঠিক আছে। আসলে আমরাও একটু ব্যস্ততার ভেতরে ছিলাম।
– কোন সমস্যা হলে জানাবেন।
– আপনার সাথে যোগাযোগ করার উপায়?
– আমাকে না। আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার কে জানাবেন ও আপনাদের যে কোন সমস্যায় সাহায্য করবে। আমি বলে দিয়েছি। তবে আপনি আমার ফোন নম্বর রাখুন।
কখনো গল্প করতে ইচ্ছে হলে ফোন দিবেন।
– জ্বী। দিন।
হাত থেকে ফোনটি নিয়ে নিজের নম্বর টাইপ করে দেয় মেয়েটি।
আমি ফোনটি হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কি নামে সেভ করবো?
উত্তরে জানালো,
– অস্পৃশ্য সারিকা ।
অস্পৃশ্য সারিকা? পুরোটাই আপনার নাম?
– “নাহ পুরোটা আমার নাম না। আমার নাম শুধু সারিকা।
এখনো অস্পৃশ্য হয়ে উঠতে পারিনি৷ তবে শীঘ্রই হব।”
কথার আগা মাথা বুঝলাম না।
কি উত্তর দিব, তা ভেবে না পেয়ে বলে ফেললাম, আপনার হাসি সুন্দর।
মেয়েটি জবাব দিলো – আপনি আমার হাসি দেখেছেন?
– একটু আগেই দেখলাম।
– আর বলবেন না, একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সম্প্রতি, একটা ইয়া মোটা চোর কিছু একটা চুরি করে গায়ে কাঁদা মেখে পালাচ্ছিলো। একটা কুকুর পেছন পেছন ধাওয়া করে তাকে ইচ্ছেমতো কামড়েছে।বেচারার পেট ধরে দৌড়ানোর সে ভিডিও দেখলে মৃত মানুষ ও হেসে উঠবে।
মনের অজান্তেই বাবু মিয়ার কথা স্মরন হলো।
আমি বললাম, দেখি ভিডিওটা..
স্ক্রিনে স্পষ্ট করে দেখতে পেলাম,
বাবু মিয়া পেট ধরে দৌড়াচ্ছে। পেছন পেছন দৌড়াচ্ছে এবং ক্রমাগত কামড় দিয়ে যাচ্ছে জার্মান শেপার্ড কুকুরটি।
বাবুমিয়া ও কুকুরের পেছনে যে দৌড়াচ্ছে সে ই ভিডিওটা করেছে। মানে ঐ নাইটগার্ড হারামজাদার কাজ এটা।
ভিডিওটা মাত্র ২৪ সেকেন্ডের। কিন্তু হাজার হাজার লাইক ও শেয়ারের বন্যা বয়ে গেছে।বাবু-মিয়া এখন কোথায় কিভাবে আছে তাও জানা নেই। দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পড়লো আমার।
– কি ব্যাপার আপনার হাসি পায়নি?
– না। আমার বরং কান্না পাচ্ছে।
– কেনো?
– এই লোকটি আমার বন্ধু। আর উনি কোন চোর নয়। গায়ে কাঁদা মেখে কুকুরের সামনে দিয়ে হাঁটলে কুকুর কামড়ায় কিনা সেটা এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়েই বেচারার এই হাল হয়েছে।
– আপনি সত্যি বলছেন?
– হ্যাঁ। ওকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে, কোথায় আছে কেমন আছে, কিছুই খোঁজ পাইনি।
– এটা কোন ব্যপার হলো। আপনি দশ মিনিট পর নিচে আসুন। ওনাকে খুজতে বের হব।
– না থাক, সমস্যা আছে।
– কি সমস্যা আমাকে খুলে বলুন।
মেয়েটির সাথে কথা বলে আমি অনেক কনফিডেন্স পেলাম মনে মনে। ওকে বিশ্বস্ত একজন মানুষ মনে হলো। সবথেকে বড় কথা মেয়েটি অভাবে নেই। যারা অভাবে থাকেনা তারা মানুষকে অকারণে বিপদে ফেলে না। বরং সেধে এসে সাহায্য করে।
“আপনাকে আমি খুব মজার একটা গল্প বলতে পারি।
গল্পটা আমার জীবনের, যদিও শুনলে বাস্তব বলে মনে হবে কিনা আমি জানিনা। তবে বিশ্বাস করা না করা আপনার ব্যপার। ”
সারিকাকে বেশ আগ্রহী দেখা গেল। ও নিচের দিকে যেতে যেতে বললো, আপনি রেডি হয়ে নিচে আসুন। আমরা একসাথে আপনার বন্ধুকে খুঁজব। খুঁজতে খুঁজতে গাড়িতে বসেই আপনার গল্প শুনব।
সারিকা নিচে চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আমি রুমে ঢুকে সিদ্দীককে ডেকে তুললাম।
চোখ ডলতে ডলতে ও জেগে উঠল। চারদিক তখন অন্ধকার হয়ে গেছে।
তড়িঘড়ি করে উঠে জিজ্ঞেস করলো,
-এখন কয়টা বাজে?
– সময় যতই হোক, প্রেসার নিওনা।
রুমের চাবি দিয়ে গেলাম। আমি দেখি বাবু মিয়ার ব্যপারে কি করা যায়। তুমি ঘরদোর গুছিয়ে পরিষ্কার করে রেখো।
– আমাকে নিবেন না?
– উঁহু, তুমি এখন মহিষের মত ঘুমাও। আমি গেলাম।
– আচ্ছা স্যার।
সিদ্দীক আচ্ছা ঘুমাচ্ছি স্যার,
বলে ফোন নিয়ে বসে গেলো।
জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যপার ঘুমাই বলে এখন আবার ফোন টিপছো কেনো?
সিদ্দীক জানালো সে গুগলে সার্চ দিচ্ছে কিভাবে মহিষের মত ঘুমানো যায়।
ওর কথা শুনে হাসব না কাঁদব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। বোঝাবুঝির মত সময় ও হাতে নেই।
বন্ডেজ ক্লাবের এক্সেস কার্ড টা পকেটে নিয়ে নতুন কেনা জিন্স, শার্ট, ঘড়ি, স্নিকারস শরীরে চাপিয়ে পরিপাটি হয়ে রওনা দিলাম।
সাথে নগদ ক্যাশ রাখা ভালো। তাই বের হওয়ার আগে বেশ কিছু টাকাও সাথে নিলাম।
নিচে পৌঁছে দেখি বাসার কেয়ারটেকার আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলো। হুট করে গেটাপে এত চেঞ্জ দেখে ভ্রু কুঁচকে আমার আপাদমস্তক দেখে নিলো সে।
তাকে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতেই দেখলাম “ফেরারি এফ ফর-থ্রি-ও” স্পোর্টস কার নিয়ে অপেক্ষা করছে সারিকা। গাড়িটির হুড ওপেন করা। ড্রাইভারের সিটে সারিকা বসা। পেছনের সিটে প্লুটো। সামনের সিট ফাঁকা রাখা হয়েছে আমার জন্য।
গাড়িতে চেপে বসলাম।
বসার পরে সারিকা বললো, বাবু মিয়াকে উদ্ধার করতে হবে দ্রুত। কোথায় যেতে হবে বলুন।
ওকে সিদ্দীকের ম্যাডামের বাসার সামনের রাস্তার কথা জানালাম। ওখানের নাইট গার্ডটি ই ঐ ভিডিও ধারণ করেছিলো।
সারিকা গাড়ি স্টার্ট দিলো।
ও খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চালায়।
প্লুটো পেছনের সিটে বসে বেশ ভালোই উপভোগ করছে। কিন্তু সারিকার দ্রুত গতিতে গাড়ি টানা এবং মাঝে মাঝে হার্ড ব্রেকের চক্করে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো।
ও কানে হেডফোন গুজে গাড়ি চালাচ্ছে। আমার পুরো ঘটনা খুলে বলার জন্য মনে মনে যে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম তা ভেস্তে গেল। কারণ আমি ওর কাছে আমার লাইফ স্টোরি শোনার জন্য কোন আগ্রহ দেখছিনা।
সেন্টি খেয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বসে রইলাম।
ঢাকার রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হলে যে কমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমরাও সে সমস্যাটার ভেতরেই পড়লাম।
চিরাচরিত জ্যাম।
জ্যামের ভেতর কিছুক্ষন বসে থাকার পরে সারিকা নিজ থেকেই বললো, বেশ বোরিং লাগছে। বোরিং সময়টা কাটানোর জন্য আপনার লাইফ স্টোরি শোনাটা খুব জরুরি।
বলে ফেলুন। তবে বাড়িয়ে বা বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলবেন না।আমি মিথ্যাবাদীদের ঘৃণা করি।
-বেশ।
অতঃপর আমি সাবিহার সাথে আমার পরিচয় পর্ব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমার সাথে যা কিছু ঘটেছে সবকিছু ঘন্টাখানেক সময় নিয়ে বিস্তারিত খুলে বললাম সারিকার কাছে। সারিকা গভীর মনোযোগ দিয়ে সবকিছু শুনলো।
সবকিছু শোনার পরে ও একটা কথাই বললো- আপনার জীবনের গল্পের উপসংহারটুকু এখনো বাকি। আপনি চাইলে আমি শেষ অংশটুকুতে অংশগ্রহণ করতে পারি।
মনে একটা খুশির ঢেউ বয়ে গেল। যেমন ই হোক, বাবু মিয়া, সিদ্দীক, আমি, সারিকা মিলে আমাদের একটা ছোটখাটো টিম হলো।
আমাদের টিমের নাম কি দেয়া যায়! টিম বুলেট! টিম ব্লাক, নাকি অন্য কিছু!
– কি ভাবছেন?
– ভাবছি আমাদের ছোটখাট একটা টিম হলো আমি সিদ্দীক তুমি বাবুমিয়া।
– আরো একজন আছে।
– কে?
– আমার প্লুটো।
– বেশ আমাদের টিমের নাম টা তবে কি দেয়া যায়?
– উম, ডি স্কয়াড
এটার মানে কি?
– ডেভিল স্কয়াড।
– ডেভিল কেন?
– ONLY Devils can Destroy the Devils..
– Nice name, huh.
কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম নাইট গার্ড লোকটির এড়িয়ায়।
সারিকা গাড়ি থামিয়ে ওনাকে বাবুমিয়ার কথা জিজ্ঞেস করলো।
লোকটি হাসতে হাসতে বললো ওনাকে উত্তরা থানার ওসি কাল রাতে পিকাপে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।
ওখানে দেরী না করে সারিকা গাড়ি নিয়ে ছুটে চললো থানার দিকে।
থানায় ঢুকে একটু খোঁজ নিতেই বাবুমিয়ার সন্ধান পাওয়া গেলো। তাকে পুলিশি নজরদারির মধ্যে চিকিৎসা নেয়ার জন্য একটা প্রাইভেট মেডিকেলে এডমিট করানো হয়েছে। কুকুরের কামড় খেয়ে অবস্থা মারাত্মক হয়ে গেছিলো।
সারিকা ওসিকে বললো,বাবুমিয়া নির্দোষ ওনাকে ছেড়ে দিতে।
ওসি পান চিবাতে চিবাতে বললো, ওনার নামে তো অনেক মামলা দেয়া যায়।
কিন্তু এসব মামলা টামলায় ঠুকিয়ে আমাদের লাভ টা কি বলুন! আমিও চাচ্ছি ওনাকে আপনারা নিয়ে যান আর আমাদের কিছু চা নাস্তার ব্যবস্থা করুন তাহলেই হবে।
-চা নাস্তার বিল কত লাগবে আপনাদের?
-বেশি না, হাজার পঞ্চাশেক হলেই হবে।
– আপনাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়া আমার পক্ষে কোন ব্যপার ই না।
কিন্তু এ টাকা আপনাকে না দিয়ে গরিবদের দিলে কাজে লাগবে। আপনার লজ্জা করা উচিৎ আপনি আইনের মানুষ হয়ে বে-আইনী কাজ করছেন।
– নির্লজ্জ হিসবে আমার একটু নাম-ডাক আছে বৈ কি। তবে আপনার মত সুন্দরীদের মুখ থেকে এমন কথা শুনতে আমি পছন্দ করিনা।
– আমার অনেক কিছুই আপনার পছন্দ হবেনা।
– আর কিছু পছন্দ হোক বা না হোক তোমার সুন্দর ঠোঁটদুটো ভারী পছন্দ হয়েছে আমার।
কথাটা বলার সাথে সাথেই সারিকা টেবিল থেকে পেপার ওয়েট উঠিয়ে সোজা ওসির মুখের উপর ছুড়ে মারে। সাথে সাথে ঠোঁট কেটে রক্ত ছিটকে পরে আশেপাশে।
পকেট থেকে মোবাইল ফোন উঠিয়ে সারিকা ঝটপট একটা নম্বর ডায়াল করে, ওপাশ থেকে কল রিসিভ হতেই সারিকা চিৎকার করে বলে,
” ভাইয়া, উত্তরা থানার অসি কামরুল আমাকে ইভটিজিং করেছে।”
ওপাশ থেকে ফোন কেটে দেয়া হয়।
হুট করে কয়েকসেকেন্ডের ভেতরে এমন একটা কান্ড এত দ্রুত ঘটে গেল যে আশপাশের সবাই নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্রিং ক্রিং করে টেলিফোন বেজে উঠে।কামরুল হোসেনের ফোন রিসিভ করার কথা থাকলেও সে মুখে হাত চেপে বসে থাকায় ফোন রিসিভ করে অন্য একজন।
ওপাশ থেকে কি যেন বলা হলো, যে পুলিশটি ফোন ধরেছে সে বার কয়েক স্যার- স্যার, জ্বী স্যার, জ্বী স্যার বলে যাচ্ছে।
একটু পর ফোন রেখে দিয়ে, কামরুল সাহেব কে বললো, স্যার আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য নোটিশ আসবে শীঘ্রই। সারিকার দিকে তাকিয়ে লোকটি হাত উঁচু করে স্যালুট দিয়ে বললো ম্যাডাম আপনার গেস্ট কে আমি স-সম্মানে ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।
অতঃপর বাবুমিয়ার উপর থেকে আইনি সব ধরনের ঝামেলা চলে গেলো। সারিকা কি যেন একটা পেপারে সাইন করলো। আমাদেরকে বাবুমিয়া যে হসপিটালে এডমিট আছে সেটার ঠিকানা দিয়ে দিলো।
সারিকা বের হয়েই আমাকে বললো, বাবুমিয়ার কাছে আমরা পরে যাব। কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে যে যতটা রিস্কে আছে তার থেকেও বেশি রিস্কি অবস্থায় আছে আপনাদের উদ্ধারকৃত মেয়েটি।আগে ওর কাছে গিয়ে ওর শরীরের কন্ডিশন চেক করতে হবে।
গাড়িতে চেপে বসে আমি ও সারিকা খুব দ্রুত বাংলাদেশ মেডিকেলের দিকে অগ্রসর হতে থাকি।
পথে ওকে জিজ্ঞেস করলাম,
– আপনার ভাইয়া কি করেন?
– ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ বাংলাদেশ পুলিশ।
সারিকার ভাই পুলিশের মহাপরিচালক। এতে করে সুবিধাই হলো। অন্তত প্রশাসনিক একটা ব্যাকাপ আমাদের সাথে আছে।
বাংলাদেশ মেডিকেলে পৌঁছানোর পরে ঐ মেয়েটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া ডাক্তার যখন আমাকে দেখলো রাগে ফেঁটে পড়লো। আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেনি।দায়িত্বহীন মানুষদের সে পছন্দ করেনা আরো কত কিছু বললো,সব কিছুই মুখ বুজে সহ্য করলাম। তবে
মেয়েটির শারিরীক অবস্থা আগের থেকে ভালো। চললাম স্যালাইনটা পুশ করা শেষ হলেই আমরা ওকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু আরো হাজার ত্রিশেক টাকা বিল পে করতে হবে।
সারিকা ও আমি মেয়েটির সাথে দেখা করতে যাই। ও আমাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে ছিলো শুধু৷ কোন কথাবার্তা বলছেনা।
আমি মেয়েটির কানের কাছে গিয়ে বললাম। আমিই তোমাকে ঐ বাড়িটা থেকে বের করে এনেছি। ভয় নেই তোমার কোন। তবে পুলিশের কাছে বা ডাক্তারদের কাছে তুমি এখনই ঐ বাড়ি বা তোমার সাথে যা ঘটেছে তা নিয়ে কিছু বলবে না৷ তাহলে আমাদের অনেক বড় বিপদ৷তো হবেই, সাথে সাথে আমাদের মিশন ও কম্পলিট হবে না৷
মেয়েটি আমার কথা বুঝলো নাকি বুঝলো না তা জানিনা। তবে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমি আশ্বস্ত হলাম। মাঝে মাঝে মানুষের চোখের ভাষা মুখের চেয়েও স্পষ্ট কথা বলে।
.
.
.
চারদিকে পার্টি লাইটের নীল লাল আলো। মেয়েরা ছোট খাট ড্রেস পরে মদ সরবরাহ করছে।
কেউ কেউ চারপাশে একাধিক মেয়ে নিয়ে বসে মদ পানে ব্যস্ত। কেউ আবার নিজের সঙ্গীকে নিয়ে চলে যাচ্ছে নির্দিষ্ট কামরাতে। বন্ডেজ জোনের পাশাপাশি রয়েছে
গে জোন, লেসবো জোন ও।
এখানে মানুষ নিজের দৈহিক অঙ্গের থেকেও ফ্যান্টাসির জন্য বেশি ইউজ করে বিভিন্ন ধরণের সেক্স টয়।
মেয়েদের জন্য রয়েছে ভাইব্রেটর, ডিলডো, চেইন বলস সহ আরো অনেক উপকরণ। একেক টাইপের ফ্যান্টাসির জন্য একেক ধরণের টুলস ইউজ করা হয়। আমার আগ্রহ সব ছাপিয়ে বন্ডেজ জোন এর দিকে।
এখানে মেয়েদের স্পর্শকাতর অঙ্গে আঘাত করার জন্য বিভিন্ন ধরণের উপকরণ পাওয়া যায়। আপাতত বন্ডেজ জোনের কোন কক্ষ ই খালি নেই। আপাতত আমাকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে ওখানে ঢোকার জন্য।
সময় কাটানোর জন্য এক গ্লাস রেড ওয়াইন নিয়ে বসলাম অল্প অল্প করে চুমুক দিচ্ছি আর চারদিকটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখে নিচ্ছি। হঠাৎ আমার চোখ আটকে গেলো একটা সুদর্শন মেয়ের উপরে।
নিজের চোখ দু হাত দিয়ে ঘষে আবারো ভালোভাবে মেয়েটিকে দেখে নিলাম। না, আমি কিছুতেই ভুল দেখছি না।
পকেট থেকে ফোন বের করে ঝটপট একটা মেসেজ টাইপ করলাম।
বেশ অনেক্ষন অপেক্ষা করার পরে বন্ডেজ জোনে ঢোকার সুযোগ হলো। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই মেয়েদের চিৎকার চেঁচামেচিতে কান ভারি হয়ে উঠলো।
ওখানে একদল পারফর্ম করে অন্যদল সিনেমা হলের মত টিকেট কেটে তা উপভোগ করে।
বন্ডেজ সেক্স এর ক্ষেত্রে মেয়েদের বলা হয় স্লেভ এবং ছেলেদের বলা হয় মাষ্টার।
এখানে ছেলেদেরকে উপযুক্ত মাষ্টার রোল প্লে করার ট্রেইনিং ও দেয়া হয়। যারা এখানে মাষ্টার হওয়ার ট্রেইনিং দেয় তাদের ভেতর একজন ছেলেটার নাম পিটার। আমার দরকার ওকেই।
কিছুক্ষন খোঁজাখুঁজি করার পর ই পিটারকে পেয়ে গেলাম। কিন্তু আমার ধারণা ভুল না হলে পিটার আমাকে খুব ভালোভাবেই চেনে। এবং আমার বিশ্বাস, পিটারকে কোনভাবে হাত করতে পারলেই আমার অনুসন্ধানের শুরুর সুঁতোটা পেয়ে যাবো।
কিন্তু পিটারকে হাত করাটা ভীষণ কষ্টসাধ্য হবে।
মানুষকে দু-ভাবে হাত করা যায়। এক হলো টাকা-পয়সা দিয়ে এবং নারীর লোভ দেখিয়ে নারীর প্রতি পিটারের আকর্ষণ থাকবেনা এটা শিওর। কিন্তু টাকার প্রতি আকর্ষণ থাকাটা স্বাভাবিক। যারা ট্রেইনার হিসেবে কাজ করে তাদের বসবাস এ অন্ধকার জগতেই। থাকা খাওয়া থেকে শুরু করে এখানে সব ধরণের ফ্যাসিলিটিই দেয়া হয় ওদের।
পিটারকে বাগে আনার জন্য কি করা যায় ভাবছি। এমন সময় হঠাৎ একটা আয়ডিয়া আসলো মাথায়।
______________________
মেয়েটির নাম মালিহা। বাবা- মা এবং ও নিজে। এ তিনজনের সাজানো গোছানো একটা ছোট্ট সংসার ছিলো। কিন্তু একটামাত্র ফোনকল ওদের জীবনে যে এমন ধ্বস নামাবে সেটা কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি মালিহা।
মালিহার বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরীজীবি নিজের কষ্টার্জিত টাকাপয়সার সাথে পেনশনের টাকা মিলিয়ে এ শহরেই ছোট একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করেছিলেন। মালিহাদের বাসায়
তবে অফুরন্ত সুখ শান্তির সাথে বসবাস করাটা খুব বেশিকাল স্থায়ী হয়নি মালিহাদের কপালে। হঠাৎ আসা একটা এনোনিমাস ফোন কল বদলে দেয় মালিহাদের জীবন।
সেদিন ছিলো মালিহার জন্মদিন।
মাঝরাতে একটা অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। “শুভ জন্মদিন” জানানোর পরে জানতে চাওয়া হয়,
“what’s your untold desire ”
মালিহা উত্তরে জানায়,
আমার আব্বু আম্মুর স্বপ্ন পূরণ করাই আমার অব্যক্ত ইচ্ছে।
এ উত্তরটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় মালিহার জন্য।
পরদিন সন্ধ্যায় একটা মাইক্রোবাস আসে।
বাসের সাথে আসে কয়েকজন লোক। ওদের সবার মুখেই কালো মাস্ক পড়া ছিলো। দরজা নক করার পরে যখন মালিহার বাবা দরজা খুলে দেয়, ঠিক তখন ই তার মুখের উপরে একধরণের চেতনা নাশক স্প্রে করে কালো মাস্ক পরিহিতদের একজন। কয়েক সেকেন্ডের ভেতরেই অজ্ঞান হয়ে যান মালিহার বাবা।
এরপর মালিহা এবং তার মাকেও একইভাবে স্প্রে করে অজ্ঞান করা হয়৷ ধীরে সুস্থে সিসি ক্যামেরা ডিজেবল করে সবাইকে ওঠানো হয় মাইক্রোবাসে।
নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত কোন এক জায়গায়৷
সেখানে নানাভাবে অত্যাচার করে হত্যা করা হয় মালিহার বাবা এবং মা কে।
মালিহাকে শুধুমাত্র বাঁচিয়ে রাখা হয়,নিয়মিতভাবে ধর্ষণ এবং শারিরীক অত্যাচার করতে করতে ভীষণ দুর্বল করে ফেলা হয় মালিহাকে।
এর উপরে কোন প্রকার খাবার পরিবেশন না করায় মালিহার শারিরীক অবস্থা আরো অবনতির দিকে চলে যায়।
শুধুমাত্র পানি খেয়ে কোনরকমে বেঁচে থাকে সে।
এ কয়েকদিনে মালিহার বাবা মায়ের লাশ গলে পচে একাকার হয়ে গেছে।
এমন একটি পর্যায়ে হঠাৎ করে ঐ ঘরে আগমন ঘটে সিদ্দীক,শহর এবং বাবু মিয়ার।
মালিহার সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানতে পারলো সারিকা শহর এবং সিদ্দীক।
একটা বিষয় ওরা খুব ভালোভাবে আঁচ করতে পারছে, কোন না কোন ভাবে বন্ডেজ ক্লাবের সাথে সিরিয়াল কিলিং গ্যাং টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বেশ ঠান্ডা একটা কক্ষ। চারদিকে হিমায়িত বরফের ধোঁয়া উড়ে বেড়াচ্ছে। কক্ষটির ফ্লোরের উপরেও আছে বরফের আস্তরণ। একফোঁটা রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে গড়িয়ে পড়ার আগে ঠান্ডা হয়ে জমে যায়, এমন একটা পরিবেশে জামাকাপড় খুলে উদম অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে পিটারকে।
পিটারের পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে।
নিচের দাঁতের পাটির সাথে উপরের পাটি ধাক্কা খাচ্ছে।
পিটারের পুরুষাঙ্গ ছোট হয়ে একটা কীটপতঙ্গের আকার ধারণ করেছে। পিটারের পিঠের দিকে পিঠ ফিরিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে হাসপাতালের রিসিপশনের মেয়েটিকে, যে ফারহানের ক্যান্সারের নাটক সাজাতে সাহায্য করেছিলো।
বন্ডেজ ক্লাবের ভেতরে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ ই মেয়েটির দেখা মেলে। ওকে দেখার সাথে সাথেই আমি সারিকাকে কল দেই। সারিকা তার টার্গেট অনুযায়ী মেয়েটির কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা চালায়।
ক্লাবের ভেতরে একজন আরেকজনের কাছাকাছি যাওয়া বা ক্লজ হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ড্রিংকস শেয়ারিং।
দু হাতে পিওর ভদকার দুটো কড়া পেগের গ্লাস নিয়ে রিসিপশনের মেয়েটির দিকে এগিয়ে যায় সারিকা।
একটি গ্লাস মেয়েটির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
হেই আই এম সারিকা। নাইস টু মিট ইউ।
মেয়েটি একটু ইতস্তত করে সারিকার কাছ থেকে ড্রিংকস এর গ্লাসটি নিয়ে বলে,
– হেলো আই এম প্রাপ্তি সরকার।
– প্রাপ্তি, সরাসরি ই বলি,আই যাস্ট ক্রাশড অন ইউ। আমি একজন লেসবিয়ান।কিছুক্ষন ধরেই একজন উপযুক্ত পার্টনার খুঁজছিলাম।
আর এ ভীড়ের মাঝে আমার দু-চোখ হুট করেই তোমাকে খুঁজে পেলো। তোমার ফিগার দেখে আমার শরীরে অলরেডি উত্তেজনা ছড়িয়ে গেছে। তুমি চাইলে ব্যপারটা বিছানা পর্যন্ত গড়াতে পারে।
– সারিকা, তুমিও বেশ সুন্দর। কিন্তু আমি আসলে লেসবিয়ান না। আমার রাফ সেক্স পছন্দ। সেটাও কোন সামর্থবান ছেলের সাথে।
– ট্রাস্ট মি, আমি তোমাকে নিরাশ করব না।
তোমার আজ নতুন এক অভিজ্ঞতা হবে। হাত এবং জিহবার কাজে আমি খুব পারদর্শী। আর ভেবনা তোমাকে আমি ফ্রী অফার করছি। প্রতি মিনিট হিসেবে তোমাকে আমি পাঁচ হাজার টাকা করে পে করব।
এত টাকার অফারের কথা শুনে প্রাপ্তির লোভের জীভ থেকে লালা গড়াতে শুরু করলো। এক মিনিটে পাঁচ হাজার টাকা পেলে প্রাপ্তি সারিকার নোংরা জায়গা গুলো ও নিজের মুখ দিয়ে পরিষ্কার করতে রাজি আছে। প্রাপ্তি নিজের মোটা দেহ নিয়ে এতদিন একটা ফ্রাস্ট্রেশন এ ভুগলেও আজ তার নিজের শরীর নিয়ে গর্ব হচ্ছে৷ এই মোটা শরীরের বদৌলতেই সে এখন মিনিটে পাঁচ হাজার টাকা রোজগার করতে যাচ্ছে।
মনে মনে এতটা উচ্ছাসিত হয়েছে সেটা সারিকাকে বুঝতে দেয়না প্রাপ্তি। আমতা আমতা করে রাজী হয়। এমন একটা ভাব নেয় যে মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই সারিকার সাথে লেসবো সেক্স করতে যাচ্ছে।
লেসবিয়ান জোনের একটা কামরায় সারিকা এবং প্রাপ্তি ঢুকে পরে। তবে ওখানে ঢুকতে হলে একটা এগ্রিমেন্ট কাগজে সাইন করতে হয়, তা হলো তারা দুজন একে অপরের পূর্ব পরিচিত এবং বিশ্বস্ত ।
সারিকা এবং প্রাপ্তি কামরার ভেতরে ঢোকার পর একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে। এমন সময় সারিকা হাতের আংগুলের ফাঁকে লুকিয়ে রাখা ইলেক্ট্রিক জ্যাপিং প্রাপ্তির ঘাড়ে পুশ করে। মুহুর্তেই কয়েকবার কাঁপুনি দিয়ে নিস্তেজ হয়ে যায় প্রাপ্তি।
মনে মনে প্রাপ্তিকে দুটো গালি দিয়ে অথরিটিকে ফোন দেয় সারিকা।
ক্লাব ভলান্টিয়ার আসার পর সারিকা বলে , ভাইব্রেটর ডিলডো খারাপ হয়ে শক লেগে অজ্ঞান হয়ে গেছে প্রাপ্তি। ওকে বাইরে নেয়ার কোন ব্যবস্থা করা যাবে নাকি!
সারিকার কথা বিশ্বাসযোগ্য মনে হওয়ায় প্রাপ্তির অজ্ঞান হয়ে পরে থাকা দেহকে ক্লাবের বাইরে নিয়ে সারিকার কাছে হস্তান্তর করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এমন হরহামেশাই হয়ে থাকে অতিরিক্ত বন্ডেজ কিংবা সেক্স টয়ের ব্যবহারে জ্ঞান হারিয়ে ফেলা অথবা মৃত্যুবরণ করাও।
এটাকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই দেখা হয় এখানে।
খুব সহজে সারিকা প্রাপ্তিকে বাগে পেয়ে যায়৷
আর তারপরই প্রাপ্তিকে নিয়ে আসা হয় D.Squad এর গোপন আস্তানায়।
প্রাপ্তির পর দ্বিতীয় শিকার ছিলো পিটার।
পিটারকে বাগে আনাটা বেশ সহজ ছিলো৷ এক্ষেত্রেও সারিকার ভূমিকা ছিলো মুখ্য। শহর পিটারকে খুঁজে বের করার পরে সারিকা পিটারের সাথে বন্ডেজ ক্লাবেই যোগাযোগ করে।
সারিকা পিটারের কাছে বন্ডেজ সেক্স এর হোম সার্ভিস চায়।
পিটার সারিকার বাসায় গিয়ে সারিকার সাথে বন্ডেজ সেক্স এ লিপ্ত হবে, যদি সারিকা পূর্ণ সেটিসফেকশন পায় তবেই পিটারকে পুরষ্কার হিসেবে অনেক টাকা পে করা হবে।
পিটার এমন একটা অফার পাওয়ার সাথে সাথেই না করে দেয়। কারণ হুট করে ক্লাবের বাইরে সার্ভিস দেয়টা নিরাপদ নয়। তবে বুদ্ধিমান সারিকা পিটারের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, তোমার অনেক নামডাক শুনে তোমার কাছে এসেছিলাম। তোমার আগে কোন ট্রেইনর আমাকে পূর্ণ সুখ দিতে পারেনি। তুমিও হয়ত পারবেনা তাই আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছ!
পুরুষত্ব নিয়ে কথা বলায় পিটারের গায়ে লাগে। সে অনেক বাঘা বাঘা মেয়েকে বন্ডেজ সেক্স করে একদম ঘায়েল করে দিয়েছে আর সারিকা তো ছিমছাম শরীরের সুন্দরী একটা পুতুল। ধরার আগেই ভেংগে যাবে এমন একটা অবস্থা। পিটার সারিকার কাছ থেকে একটা কাগজে সাইন করিয়ে সারিকার বাসার ঠিকানা রেখে দেয়৷
ঠিক সময়মত পৌঁছে যাবে এমন একটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেদিনের মত সারিকার কাছ থেকে বিদায় নেয়।
যথাসময়ে যখন সারিকার কথামত পিটার এসে উপস্থিত হয়, সে বুঝতে পারে বড় ধরণের কোন একটা ফাঁদে সে আটকে গেছে।
পিটার এবং প্রাপ্তি, দুজনকেই বন্দি করা হয় ডি স্কয়াড এর টর্চার সেল এ।
টর্চার সেলের কক্ষের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির নিচে।
এখানেই জামাকাপড় খুলে দুজনকে পিঠাপিঠি করে বেঁধে রাখা হয়েছে। সারিকা বেশ কয়েকবার পায়চারি করে যাওয়ার পরে টর্চার সেলের ভেতরে ঢুকি আমি।
আমাকে দেখে হাড় শীতল বরফের ভেতরে থেকেও যেন বড়সড় একটা ধাক্কা খায় পিটার। ওর হাত বাঁধা না থাকলে দুচোখ দিয়ে নিশ্চয়ই এখন ও নিজের চোখ ডলতো।
পিটার কিছু একটা বলতে চেয়েও বলতে পারছেনা। কারণ ঠান্ডায় ওর ঠোঁট জমে আছে। সারিকাকে ইশারা দেয়ার সাথে সাথে ও কক্ষের তাপমাত্রা বাড়াতে শুরু করলো।
কিছু প্রশ্ন উত্তর পর্ব এবারে সেরে নেয়া যাক।
একটা চেয়ার টেনে নিয়ে গিয়ে পিটারের সামনে বসলাম।
মাথার উপরে লাল রঙ এর লাইট আবছা আলো বিলিয়ে যাচ্ছে। ওর চোখেমুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট।
পিটারকে ঠান্ডা মাথায় বললাম,
ভয় পেওনা পিটার।
তোমাকে শুধুমাত্র কয়েকটা প্রশ্ন করবো।
ঠিক ঠিক উত্তর দিবে। এর বেশি কিছু নয়।
পিটার আমার দিকে তাকিয়ে চুপ করে রইলো।
মৌনতা সম্মতির লক্ষন।
পিটারের কাছে আমার প্রথম প্রশ্ন ছিলো-
আমাকে কিভাবে কবে থেকে চেনো?
পিটার- নীড়া ম্যাডামের সাথে আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম। তবে আপনার নাম আমি আরো কয়েকদিন আগে শুনেছি। নীড়া ম্যাডামের কাছেই।
-ফারহান এর সাথে তোমার পরিচয় কিভাবে?
প্রশ্নটা শুনে চুপ হয়ে যায় পিটার। আমি আমার পায়ে থাকা শক্ত বুটের জুতোর তলা দিয়ে ওর পুরুষাঙ্গের উপরে চাপ প্রয়োগ করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here