#আফিম_বড্ড_নেশালো_০২,পর্বঃ৪৪
#লেখিকা_মাহযাবীন
অন্ধকার ছোট্ট একখানা কক্ষ।শুধু একখানা চেয়ার ছাড়া কিছুই নেই এ কক্ষে।চেয়ারের সামনেই মেঝেতে পরে একজন অচেতন পুরুষের দেহ।শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত তার।ক’ঘন্টা যাবত লোকটা এভাবেই এ কক্ষে পরে আছে তার হদিস নেই।
হটাৎ সে কক্ষের বন্ধ দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে এক যুবক।মাথায় ব্যান্ডেজ তার।গায়ে জড়ানো সাদা শার্ট ও নীল জিন্স।যুবকের পেছন পেছন আরও দু’জন সে কক্ষে প্রবেশ করে।তিনজনে এগিয়ে যায় সে লোকটির ধারে।সে যুবক গিয়ে বসে পরে লোকটির সামনে পাতানো চেয়ারে।পায়ের উপর পা তুলে বসে নিজের সাথে আসা দু’জন ব্যক্তির মাঝে একজনকে চোখের ইশারায় কিছু বুঝায়।
ইশারা বুঝে লোকটি গিয়ে অচেতন লোকটির চোখমুখে পানি ছেটায়।এবার চেতনা ফেরে তার।আধো আধো চোখ মেলে ব্যথায় কাতর কন্ঠে সে বিরবিরিয়ে বলে ওঠে,
“আমি কোথায়?”
বাঁকা হাসে যুবক।বলে ওঠে,
-আরেহ মনির সাহেব! আপনার দেখছি স্মৃতি লোপ পেয়েছে।ভুলে গেলেন নিজের প্রতিশোধের কথা?কই উঠেন।দেখেন আপনার সামনেই বসে আছে আফিম ইবনান।
কথাগুলো বলে থামে আফিম।এখনো ঠোঁটে সেই বাঁকা হাসি লেগে আছে তার।
আফিমের কন্ঠস্বর কানে আসতেই তার দিকে তাকায় মনির হাসান।শরীরের বেশ কিছু অংশে আঘাত লাগায় ব্যথা অনুভূত হচ্ছে তার।তবুও রাগে বেসামাল হয়ে পড়লো সে।হাত-পা বাঁধা থাকায় কিছু করতে পারছে না সে কিন্তু রাগে ফুঁসছে।চোখে সে রাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তার।আফিম সে চোখে দৃষ্টি স্থির রেখে বলে ওঠে,
-রিয়াদ,মনির সাহেবের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেও।তিনি বোধহয় আরো খেলতে চান।আমার বাঘেরা হয়তো তার মনমতো খেলতে পারেনি সেজন্য এখন সিংহের সাথে এক ম্যাচ খেলতে চাইছেন।অ্যাম আই রাইট মিঃহাসান?
আদেশ পাওয়া মাত্র মনির হাসানের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হলো।এবার উঠে বসলো লোকটা।তাকালো আফিমসহ পুরো কক্ষ পানে।বুঝলো এ মুহুর্তে পরিস্থিতি তার প্রতিকূলে।এমতাবস্থায় কোনো একভাবে নিজের জীবন ভিক্ষা পেলে প্রতিশোধের কথা সে পুনরায় আবারও ভাবতে পারবেন কিন্তু এখন প্রতিশোধের কথা ভাবলে কয়েক সেকেন্ডও পৃথিবীর বুকে টিকতে পারবেন না।সবটা বিবেচনা করে মনির হাসান নিজের রাগকে চেপে রেখে এক দীর্ঘ শ্বাস ছাড়েন।দক্ষ অভিনেতার ন্যায় মাথা নত করে করুন কন্ঠে বলে ওঠেন,
-দেখো আফিম আমি তোমার বাবার বয়সী।আমার বয়স হয়েছে,বুদ্ধিও সেই আগের মতো নেই বাবা।ভুল হয়ে গেছে বাবা আমার।তোমার অফিসে কাজ করা কালীন সময়ে একদিন বয়স্ক এক দারোয়ান সাথে দূরব্যবহার করার অপরাধে তুমি সেই দারোয়ানের হাতেই থাপ্পড় খাইয়েছিলে আমায়।এই অপমান হজম করতে পারছিলাম না আমি।আর এ হতে উৎপন্ন রাগ গত ৬-৭ বছর ধরে নিজের মাঝে পুষে রেখেছিলাম।শেষে নিজের এই চাপা রাগের কবলে পরেই করে বসেছি এই ভুল টা।বাবা আমার,এবারের মতো ক্ষমা করে দেও, আমাকে প্রাণে মেরো না।কথা দিচ্ছি দ্বিতীয়বার এমন ভুল আর কখনো করবো না।
মনির হাসানের কথাগুলো মনোযোগের সহিত শোনে আফিম।লোকটা নিজের কথা শেষ করতেই ধীরে ধীরে আফিমের ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে।অতঃপর ঠোঁট চেপে হাসি হাসি মুখে রিয়াদের দিকে তাকায় সে।রিয়াদও একই ভঙ্গিতে হাসছে।তাদের উভয়ের চোখাচোখি হতেই একই সাথে সশব্দে হেসে ওঠে তারা।
রিয়াদ বলে ওঠে,
-স্যার,কুকুর নিজে বলতেছে যে তার লেজ নাকি সোজা হয়ে গেছে অথচ ইতিহাস সাক্ষী কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না।
একথা বলে আবারও হেসে ওঠে রিয়াদ।আফিমও ঠোঁট চেপে হেসে বলে ওঠে,
-আপনার বুদ্ধির প্রসংশা করতেই হচ্ছে মিঃহাসান।নিজের জীবন বাঁচানোর কি সুন্দর ফন্দি এটে নিলেন কয়েক সেকেন্ডে!
মনে মনে রাগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় মনির হাসানের।তবে তা প্রকাশ না করে সে আবারও করুন কন্ঠে বলে ওঠে,
-বাবা বিশ্বাস করো..
মনির হাসানের কথা সম্পূর্ণ হবার আগেই হাত উঠিয়ে তাকে থামিয়ে দেয় আফিম।ছেলেটার ঠোঁটে লেগে থাকা হাসি নিজের অস্তিত্ব হারায়।মুখে ফুটে ওঠে গম্ভীর ভাব।গম্ভীর কন্ঠে বলে ওঠে,
-আমার বাবার উপর অ্যাটাক,আমার বিশ্বস্ত সঙ্গী ইরফানের মৃত্যু, আমার অর্ধাঙ্গীনির উপর কুনজর।কথা গুলো বলে একটু থামে আফিম।চোখ বুজে নেয় নিজের।ক’সেকেন্ড বিলম্বে দাঁতে দাঁত চেপে উচ্চ স্বরে সে আবারও বলে ওঠে,
-তোরে কেটে টুকরো টুকরো করলেও তোর অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ায় কমতি রয়ে যাবে মনির।আফিম ইবনানের কলিজায় হাত দেওয়া ঠিক হয় নাই তোর।তোর শত্রুতা আমার সাথে ছিলো আমার উপর প্রতিশোধ নিতি।আমার উপর অ্যাটাক করলেও আমি হয়তো মাফ করে দিতাম তোকে কিন্তু তুই একে একে আমার তিনটা দূর্বল জায়গায় আঘাত করছিস।আমার বাবার এক্সিডেন্ট করানো তোর প্রথম অপরাধ,বিনা অপরাধে আমার সবথেকে কাছের বডিগার্ড যার কাছে আমি সবথেকে প্রিয় ছিলাম তাকে আমার চোখের সামনে খু*ন করা তোর দ্বিতীয় অপরাধ।আর তৃতীয়বারে তো সোজা আমার হৃৎপিণ্ডে আঘাত!আমার স্ত্রীর দিকে বাজে নজরে তাকানোর সাহস হয় কি করে তোর?
চেচিয়ে শেষ প্রশ্নখানা করে উঠে দাঁড়ায় আফিম।তড়িৎ গতিতে নিজের হাতে থাকা ছু*রি দ্বারা আ*ঘা*ত করে মনির হাসানের চোখ বরাবর।তৎক্ষনাৎ চেচিয়ে ওঠে লোকটা।তার দু’চোখ বেয়ে সমানে র*ক্ত গড়িয়ে পরতে আরম্ভ করে।যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে চলছে লোকটা।দয়া হয় না আফিমের।বরং চোখমুখে একরাশ ঘৃণা ফুটে আছে তার।
লোকটা নিজের চোখ ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছে।এ দৃশ্য ক’সেকেন্ড দেখলো আফিম।শান্তি লাগছে তার।যতবার নাফিয়ার ক্রন্দনরত সেই অসহায়, ভীত চেহারার কথা মনে পড়ছে আফিমের ততবার রাগে শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে ছেলেটার।লোকটাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি সে দিবেই।ইরফানের সাথে হওয়া অন্যায়ের জন্যে হলেও এই লোক প্রাণ ভিক্ষা পাওয়ার যোগ্য না, কোনোভাবেই না।
এসব ভেবে তাকায় আফিম রিয়াদের দিকে। আফিমের চোখের ভাষা বুঝতে অসুবিধে হয় না রিয়াদের।সে সাথে সাথে কাজে লেগে পরে।
কয়েক মিনিটের মাঝেই বেশ কয়েকটা বিষাক্ত সাপ,বিচ্ছু ও একটি মাঝারি আকারের ক্ষুদার্থ বাঘ এনে বন্দি খাঁচা হতে উন্মুক্ত করে কক্ষে প্রবেশ করিয়ে কক্ষের দরজা বাইরে হতে লাগিয়ে দেওয়া হয়।আফিম ও রিয়াদ কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়েই কক্ষের ভেতর থেকে আসা লোকটার গগন বিদারক আর্তনাদ স্পষ্ট শুনতে পারছে,অনুভব করতে পারছে বিষাক্ত ও হিংস্র পশুগুলোর আক্রমণের ভয়াবহতা।আর দাঁড়ায় না আফিম।স্থান ত্যাগ করে।উদ্দেশ্য নিজের পরিবারের কাছে পৌঁছানো।
!!
হসপিটালে ভর্তি আরহান সাহেব।তবে খুব একটা খারাপ অবস্থা নয় তার।এখন মোটামুটি ভালোই আছেন তবে শরীরের কিছু কিছু অংশে এখনো তীব্র ব্যথা,নড়াচড়া করাও কঠিন ঠেকছে তার।
নাফিয়া তার বাবার পাশে বসে আপেল কাটতে ব্যস্ত।একটু পর পর আরহান সাহেবকে খাওয়ানো, ওয়াশরুমে যেতে সাহায্য করা,কিছু লাগলে এনে দেওয়া,খারাপ লাগলে নার্সকে ডাকা থেকে শুরু করে সময় মতো ওষুধ খাওয়ানো সব করছে নাফিয়া।যদিও এসব তার করার প্রয়োজন ছিলো না।এসব করার জন্য ৫-১০ টা নার্স রাখার সামর্থ্য আছে তার স্বামী,শশুরের।কিন্তু নার্সদের মাঝে কি আরহান সাহেব মেয়ের ভালোবাসা পেতেন? এতোটা যত্ন কি পেতেন যতটা নাফিয়ার কাছ হতে পাচ্ছেন? নার্সরা কি এভাবে শাসন করে বলতো,”বাবা আপনাকে এখন কিছু খেতেই হবে নাহলে ওষুধ খেতে পারবেন না।তাই দ্রুত এটা খান কিন্তু”।
নাফিয়া আপেল কাটা শেষে এক টুকরো আপেল আরহান সাহেবের মুখের কাছে ধরে।এতে আবেগাপ্লুত হন আরহান সাহেব।নাফিয়ার মাথায় হাত রেখে বলে ওঠেন,
-আমার আর সানিয়ার একটা মেয়ের খুব শখ ছিলো কিন্তু সে শখ পূরণ করার আগেই সানিয়া চলে গেলো আমাকে ফেলে।তবে আজ এতো বছর পর মনে হচ্ছে আল্লাহ আমার এই অপূর্ণতাটাও তোমার মাধ্যমে পূর্ণ করে দিয়েছে, মা।
ঠোঁটে হাসি ফোটে নাফিয়ার।সে বলে ওঠে,
-আর আমার ক্ষেত্রে তো মাম্মির বাণী সত্যি প্রমাণিত হয়েছে বাবা।মাম্মি বলেছিলেন না,আমার শশুরের মাঝেই আমি আমার বাবাকে পাবো?আসলেই তো পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
বাবা-মেয়ের এমন আবেগঘন মুহুর্তে সেখানে উপস্থিত হয় আফিম।বলে ওঠে,
-দিস ইজ নট ফেয়ার বাবা! ইউ আর টেকিং মাই ওয়াইফ এয়োয়ে[away] ফ্রম মি।
গম্ভীর স্বরে বাক্যদ্বয় বলতে বলতে ক্যাবিনে প্রবেশ করে নাফিয়ার পাশে এসে বসে আফিম।উত্তরে আরহান সাহেব বলে ওঠেন,
-ইজ ইট মাই ফল্ট [fault] দ্যাট মাই ডটার[daughter] লাভস মি মোর দ্যান ইউ?
বাবার এমন উত্তরে আফিম তৎক্ষনাৎ তাকায় নাফিয়ার দিকে।তার চোখে স্পষ্ট প্রশ্ন ফুটে উঠেছে, “তুমি আমার থেকে বেশি বাবাকে ভালোবাসো?”। আফিমের চোখে ফুটে ওঠা প্রশ্ন বোধগম্য হয় নাফিয়ার।তবে সে কিছু না বলে নিরবে ঠোঁট চেপে হাসে।হাসছেন আরহান সাহেবও।শুধু গোমড়া মুখ হয়ে আছে আফিমের।ছেলেটার বাবা-মেয়ের এমন হাসি যেনো সহ্য হলো না।উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো সে।নাফিয়ার হাত শক্ত করে আঁকড়ে ধরে নিজের বাবার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
-বাইরে রিয়াদ আছে।নার্স, ডক্টর যা লাগবে তা ওকে বললেই ও হাজির করে দিবে।টেক রেস্ট বাবা!
কথাগুলো বলে আর দাঁড়ায় না আফিম।নাফিয়াকে নিজের সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসে ক্যাবিন হতে।
!!
হসপিটাল হতে বেরিয়ে আসে আফিম ও নাফিয়া।গাড়িতে এসে বসতেই নাফিয়া বলে ওঠে,
-বাবা কি ভাবলো?
-ভাবলো ছেলে নিজের বউকে নিয়ে গেছে রোম্যান্স করতে।
-ইয়ুক ছিঃ!
আফিম তাকায় নাফিয়ার দিকে।নাফিয়ার দৃষ্টি এরিয়ে মৃদু হাসে সে।তবে মুহুর্তেই চোখমুখে ক্লান্তিভাব ফুটিয়ে তুলে নিম্ন স্বরে বলে ওঠে,
-আই নিড টু চার্জ মাইসেল্ফ মিস. শেখ।আই অ্যাম সো টায়ার্ড!
আফিমের মুখপানে তাকাতেই মায়া হয় নাফিয়ার।আসলেই ক্লান্ত লাগছে ছেলেটাকে।সে এগিয়ে আসে আফিমের দিকে।আলতো হাতে স্পর্শ করে আফিমের গাল।ঠোঁট এগিয়ে চুমু বসায় ছেলেটার কপালে।বলে ওঠে,
-বাসায় চলুন,একটু রেস্ট নিলে ক্লান্তি চলে যাবে।
আফিম আরো কাছে চলে আসে নাফিয়ার।কেমন এক নেশা ধরা কন্ঠে বলে ওঠে,
-উহু।রেস্ট নিলে এ ক্লান্তি কমবে না।ইট ডিমান্ডস সামথিং ইলস।
আফিমের কথার ধরনেই নাফিয়া বুঝে যায় ছেলেটার নিয়ত।লজ্জানুভূনি মনে এসে জায়গা করে নিতেই আফিমের থেকে সরে আসতে চায় সে।তবে পেরে ওঠে না।আফিম এক হাতে আলতো করে আঁকড়ে ধরে তার গাল।সেই একই নেশা ধরা কন্ঠে বলে ওঠে,
-প্লিজ চার্জ মি মিস.শেখ।
কথাখানা বলে চোখ বুঁজে নেয় আফিম।আফিমের এ আবদার মুহূর্তেই ঝড় তুললো নাফিয়ার মনে।চেয়েও সাড়া না দিয়ে পারলো না সে।ভালোবাসার মানুষটার গালে আলতো করে হাত ছোঁয়ালো মেয়েটা।খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে হাত বুলোতে বুলোতে নিজের ঠোঁটজোড়া এগিয়ে নিয়ে রাখলো আফিমের ঠোঁটে।ধীরে ধীরে ডুবতে আরম্ভ করলো তারা একে অপরের মাঝে।
বেশ খানিকটা সময় পর সরে এলো নাফিয়া।গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে আরম্ভ করলো মেয়েটা।সেদিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো আফিম।গাড়ি স্টার্ট দিলো বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আফিম ড্রাইভিং শুরু করতেই নাফিয়া জিজ্ঞেস করে উঠলো,
-আমরা কোথায় যাচ্ছি?
-বাসায়।
-ওহ।
-একজন ট্রেইনার এসেছেন বাসায়।তিনি এখন থেকে তোমাকে সেল্ফ ডিফেন্স শিখাবেন।
মৃদু অবাক হয় নাফিয়া।জিজ্ঞেস করে ওঠে,
-হটাৎ?
-আগেই বলেছিলাম তোমাকে সেল্ফ ডিফেন্স শিখতে হবে।অন্তত আমাদের সমাজের কিছু মানুষরূপী জানোয়ারের খারাপ নজর থেকে বাঁচার জন্য হলেও তোমার নিজের আত্মরক্ষা করতে শিখতে হবে।
-শুধু আমারই শিখতে হবে?অন্য মেয়েদের শিখতে হবে না?
-সবার শিখা উচিৎ।
-কিভাবে শিখবে?আপনি নির্ঘাত আমার জন্য বিদেশি ট্রেইনার হায়ার করে এনেছেন?বাংলাদেশের সবার এতো সামর্থ্য আছে?
নাফিয়ার প্রশ্নে নিরব থাকে আফিম।ভাবে নাফিয়া ভুল কিছু তো বলছে না।আমাদের বাংলাদেশে মেয়েদের সেল্ফ ডিফেন্স শিখানোর মতো এমন কোনো কোর্সের ব্যবস্থা তো নেই বললেই চলে।আর যাও একটু শোনা যায় তা তো অধিকাংশ মানুষের জানাই নেই।আফিম বেশ কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলে ওঠে,
-তুমি কি চাচ্ছো এই বিষয়ে আমি কিছু করি?
-হ্যাঁ।আমি চাচ্ছি আমাদের বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সব জায়গায় এমন কোর্স করানো হোক।প্রতিটা মেয়ে নিজের আত্নরক্ষা করতে শিখুক। আমি চাই কোনো মেয়ে আর অবলা নারী হয়ে সমাজে পরে না থাকুক,মুখ বুঁজে ইভটিজিং বা ব্যাড টাচ এগুলো সহ্য না করুক।আমি সাহসী এবং আত্নরক্ষা করতে জানা নারীদের চাই এই সমাজে।
নিজের স্ত্রীর চিন্তা-চেতনায় গর্ভ বোধ করে আফিম।মৃদু হেসে মাথা নাড়ায় সে।
চলবে।