আবার দেখা হবে সিজন 2 পর্বঃ০৩

0
2357

আবার দেখা হবে
সিজন 2
পর্বঃ০৩
জাহান আরা

কি ভেবে তখনি পদ্মার রুমে যাই,দেখি পদ্মা শুয়ে আছে,হাসছে পদ্মা,রাফিদ দরজার দিকে পিছ দিয়ে পদ্মার বিছানার পাশে বসে আছে,পদ্মার বুকে রাফিদের হাত।
পদ্মা হাটু উঠিয়ে রাখায় হাতের স্টেথোস্কোপ দেখা যায় না।
পরী আবার ছবি তুলে নেয় পিছন থেকে।

রুমে ফিরে যায় পরী।
রুমে গিয়ে ভাবতে থাকে কি হচ্ছে এসব??
পরী এখন পুরোপুরি নিশ্চিত রাফিদ আবার পদ্মাকে ভালোবেসে ফেলেছে।
ড্রয়ার খুলে ডায়েরি বের করে,ছোট্ট একটা চিরকূট লিখেই পরী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।



পদ্মার জন্য পদ্মার মা পানি নিয়ে আসতেই রাফিদ তাকে বলে যে পদ্মার শরীর সম্পূর্ণ ঠিক আছে,কোনো কাজ করে না যে বাসায় তাই এরকম লাগছে,বলেই পদ্মার দিকে চোখ বড় করে তাকায়।
পদ্মা রাফিদের দিকে তাকিয়ে অবজ্ঞার হাসি দেয়।

রাফিদ তক্ষুনি রুমে ফিরে আসে।
রুমে এসেই রাফিদের বুকের ভিতর টা কেঁপে উঠে। পরী বিছানায় নেই,বিছানার উপর রাফিদের ডায়েরি পড়ে আছে।
রাফিদের পুরো শরীর কাঁপতে থাকে,কাঁপা কাঁপা হাতে রাফিদ ডায়েরি হাতে নেয়।

দেখে পরীর লিখা,”নিজের চোখে দেখা কখনো ভুল হয় না রাফিদ,তবু যদি তোমার মনে হয় আমি ভুল দেখেছি ২ দিন,তো মেনে নিলাম,কিন্তু পরের ২ দিন ও কি আমি আবার ভুল দেখেছি??
তা হলে তুমি এবার দেখে নিও তোমার ফোনের টেক্সট আর গ্যালারি তে প্রমাণ রেখে গেলাম।
তোমার সুখের পথে বাঁধা হতে চাই না,তুমি চাইলে পদ্মা কে বিয়ে করতে পারো,আমি চলে গেলাম তোমাদের মাঝখান থেকে”

রাফিদ দ্রুত নিজের ফোন চেক করে,দেখে পদ্মার মেসেজ,পদ্মার আর রাফিদের ছবি।
ওহ্,শীট বলে রাফিদ দরজায় লাথি মারে।

রাফিদ তক্ষুনি অনিককে কল দেয়,কল দিয়ে খুলে বলে পদ্মার কৃতকর্ম।
অনিক শুনে তক্ষুনি চলে আসে,রাফিদ গিয়ে তার শ্বশুর শাশুড়ী কে সব জানায়।




পরী ঢাকায় যাওয়ার বাসে উঠে,পরী জানে এই দুনিয়ায় তার একমাত্র নিরাপদ জায়গা শ্বশুর বাড়ি,সেখানে তার আরেক বাবা মা আছে,সব কিছু সে তাদেরকে খুলে বলবে।তারপর তারা যা সিদ্ধান্ত নেয়ার নিবে।

রাফিদ পরীদের বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা স্টেশনে চলে আসে,খোঁজ নিতেই জানতে পারে পরী কোন বাসে উঠেছে।
রাফিদ বাড়িতে কল দিয়ে বাবা মা কে সব জানায়।পরের বাসে সেও রওনা দেয়।

ইমতিয়াজ সাহেব সব শুনে রাফিদকে ইচ্ছে মতো বকাবকি করে,পরীকে খুঁজে না পেলে তিনি রাফিদকে ত্যাজ্য করবেন বলে হুমকি দেয়।

পরী গাড়ি থেকে নামতেই দেখে ইমতিয়াজ সাহেব সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
পরী তাকে সালাম করে।

বাড়ি পৌঁছাতেই পরীর শাশুড়ী ছুটে এসে পরীকে জড়িয়ে ধরে।
খাওয়া দাওয়ার পর পরী সব কথা তাদের খুলে বলে।
তারা সব শুনার পর সত্যি ঘটনা সব পরীকে খুলে বলে।




বাবা মার থেকে সব শোনার পর আমি বুঝতে পারি যা আমাদের মধ্যে যা ঘটেছে তা পুরোটা ভুল বুঝাবুঝি।

কিছুক্ষণের মধ্যেই রাফিদ চলে আসে।
বাবা রাফিদকে অনেকগুলো কথা শুনিয়ে দেয় এরই মাঝে।
রাফিদ সব কথা মাথা নিচু করে মেনে নিয়ে পরীর সামনে গিয়ে ফ্লোরে বসে

পরীর ২ পা নিজের কোলে টেনে নিয়ে বলে,”বাবুর আম্মু,ভুল হয়ে গেছে আমার,মাফ করে দাও।”

রাফিদের মুখে বাবুর আম্মু কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই।
মা ততক্ষণে মিষ্টি নিয়ে হাজির।

রাফিদঃ আমি বাবা হতে চলেছি পরী,তুমি মা হবে।

হঠাৎ করেই আমার মনে হলো আমি স্বপ্ন দেখছি,আমি মা হবো!!!!!
আমার একটা বাবু হবে!!!!

সেই মুহুর্তের আনন্দের কথা আমি বুঝাতে পারবো না। কি যে সেই আনন্দ আমার তখন হচ্ছিলো।

এক মুহূর্ত আমি কথা বলা ভুলে গিয়েছিলাম।ফ্যালফ্যাল করে রাফিদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
রাফিদের উপর জমে থাকা আমার সব রাগ,সব অভিমান যেনো হাওয়ায় মিশে গেলো।
ইচ্ছে করছিলো রাফিদকে জড়িয়ে ধরি,কিন্তু বাবা মার সামনে লজ্জায় তা পারছি না।

কি জানি বাবা হয়তো আমার মনের কথা বুঝতে পারলো,
বাবাঃ যাও তোমরা রুমে যাও,রাত প্রায় শেষ হতে চললো।

রাফিদ আমাকে নিয়ে উপরে চলে এলো।
রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়েই রাফিদ আমাকে তার বুকে টেনে নিলো।। কি জানি ওর কি হলো,কান্নায় ভেঙে পড়ে রাফিদ,বার বার ক্ষমা চাইতে থাকে আমার কাছে।




দিন সুখেই কেটে যেতে থাকে,আস্তে আস্তে আমার শারীরিক পরিবর্তন আসে,সাথে মানসিক পরিবর্তন ও দেখা দেয়।

প্রতিদিন রাফিদ হাসপাতাল থেকে আসার সময় অনেকরকম মেয়ে বাবুর জামা নিয়ে আসে,এসে আমার পেটের উপর ধরে দেখে তার মেয়েকে মানাবে কিনা।
আমার খুব হাসি পায় রাফিদের এসব ছেলেমানুষি দেখে।

রাফিদঃ আমার মেয়ের নাম কি হবে বলো তো??

আমিঃ তুমি বলো।

রাফিদঃ আমার মেয়ের নাম হবে রাফিয়া,না রাজিয়া,না রাফা,না রিমঝিম,না রিহা,না রাত্রি,না……………..
উফফফফ,এতো নাম মনে পড়ছে বুঝতেছি না কি রাখবো!!!
আচ্ছা একটা কাজ করা যায় না??

আমিঃ কি কাজ?

রাফিদঃ আমরা অনেকগুলো বাবু নিই তাইলে তো আমার যতো নাম মনে পড়েছে সব রাখতে সুবিধা হবে।
বলেই দুষ্টুমির হাসি দেয়।

আমিঃ ইশশ,শখ কতো,পেটে তো তুমি ধরো না তাই বুঝো না। কতো কষ্ট হয়।

রাফিদঃ কি বললে,আমি কষ্ট করি নি মেয়ের জন্য??

আমিঃ তুমি কি কষ্ট করেছো??(অবাক হয়ে)

রাফিদঃ আমি যে দিনরাত পরিশ্রম করে ফসল বুনেছি তোমার মাঝে,সেই কষ্টের বুঝি দাম নেই তোমার কাছে,কতো রাত জেগে জেগে পরিশ্রম করেছি ভাবতে পারো তুমি???
বলেই রাফিদ মুচকি হাসতে লাগে।

আমিঃ ছিঃ কি খারাপ তুমি,কেমন অসভ্য কথা বলছো যাও।

রাফিদঃ অসভ্য কথা বল্লাম কই,নিজের বৌ’য়ের সাথে যা করেছি তা বলেছি,এটা বুঝি অসভ্য কথা হলো???
তাহলে এখন একটু করি অসভ্যতা??

আমিঃ আসো করতে।

রাফিদঃ এখন তো আমার মেয়েটা তাকিয়ে আছে,থাক রাতে করবো।

আমার শ্বশুর শাশুড়ীর পাগলামি তো আরো বেশী।প্রতিদিন বাবা মা খেলনা এনে ড্রয়িং রুম ভরিয়ে ফেলতেছে।বাবা ইতিমধ্যে ৩ টা দোলনা লাগানো শেষ করে ফেলেছে।

আমি অবাক হয়ে দেখি তাদের সবার পাগলামি।

প্রতিদিন বাবা,রাফিদ আমার জন্য নানারকম খাবার নিয়ে আসে,আমার কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না, কিন্তু তাও খাওয়া লাগে,বাবা মা যখন নিজে হাতে মুখে তুলে দেয় তখন চাইলেও ফেলতে পারি না,কিন্তু রাফিদের বেলায় রাফিদকে ইচ্ছেমতো মারধর করি।
কি সুন্দর করে রাফিদ সব কিছু মেনে নেয়

আমি মাঝেমধ্যে ভাবি,ছোট্ট একটা অনাগত শিশু,তার আসার খবরেই কিভাবে এরা সবাই পাগলামি শুরু করে দিয়েছে।আমার সব অত্যাচার রাফিদ সহ্য করে যায়।

আমাকে মাঝে মাঝে বলে,”জ্বালিয়ে নাও যা পারো,আমার মেয়ে শুধু আসুক দুনিয়াতে,তখন বুঝাবো তোমাকে বাবা-মেয়ে একদল হয়ে”

ইদানীং ছোটখাটো বিষয়ে আমি প্রচুর বিরক্ত হয়ে যাই।উদ্ভট উদ্ভট ইচ্ছে করতে থাকে আমার।
আমার সেই উদ্ভট ইচ্ছে গুলো রাফিদ যতোটুকু সম্ভব পূর্ণ করতো,যেটা সম্ভব না সেটা কোনোভাবে আমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে এটা সেটা বলে বুঝিয়ে দিতো।

কে জানতো আমার এরকম উদ্ভট ইচ্ছে আমার বিপদ নিয়ে আসবে!!

সেদিন রাফিদের হাসপাতাল থেকে ফিরতে দেরি হয়। একটু বেশী টায়ার্ড হওয়ায় রাতে আমাকে খাইয়ে দিয়েই নিজেও ঘুমিয়ে যায়।

মাঝেরাতে আমি শুনতে পাই আমাদের বাড়ির বাহিরের বাগানে কেউ বাঁশি বাজাচ্ছে,কি যে করুণ সেই সুর,মনে হয় যেনো প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়েছে বুকে,রাফিদকে না ডেকেই আমি নিজে বের হয়ে এলাম,আমার মনে হচ্ছিলো হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতো এই বাঁশির সুরের ও নিজস্ব ক্ষমতা আছে আমাকে ঘরের বাহির করার।

বারান্দায় গিয়ে দেখি কাউকে দেখা যাচ্ছে না কিন্তু সুর স্পষ্ট শুনা যাচ্ছে।
মুহূর্তেই আমি কেমন ঘোরের মধ্যে চলে গেলাম।
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলাম,বাহিরে বের হওয়ার জন্য।




ঘুমের ঘোরেই রাফিদ বুঝতে পারে তার বাম বাহু খালি হয়ে গেছে হঠাৎ করে। পরী বালিশে ঘুমায় না,রাফিদের বাহুতে ঘুমায়,আগে রাফিদের বুকে ঘুমাতো এখন পেটে চাপ লাগার ভয়ে বাহুতে মাথা রেখে ঘুমায়।

রাফিদ চোখ মেলে দেখে ওয়াশরুমের দরজা খোলা,পরী কোথায় তাহলে???

সারাদিনের ক্লান্তি,ঘুম নিমিষেই উধাও হয়ে যায় রাফিদের,রাফিদ বারান্দায় গিয়ে দেখে পরী বাগানের দিকে যাচ্ছে।
দৌঁড়ে বের হয়ে যায় রাফিদ,পিছন থেকে যতো ডাকছে পরী শুনছে না,হেটেই যাচ্ছে পরী।
রাফিদ যতো দৌঁড়ে পরীর কাছে যেতে চায় ততই সে পিছিয়ে যায়।

পরীর সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে রাফিদের,রাফিদ বুঝতে পারে কিছু একটা গোলমাল হয়েছে,রাফিদ আয়াতুল কুরসি পড়তে নেয় কিন্তু হঠাৎ করেই যেনো সে ভুলে যায়।
“আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল……”

শত চেষ্টা করেও রাফিদ বাকিটুকু পড়তে পারে না।

সামনে একটা সীমানা দেয়া পরী তার মাঝে ঢুকে যেতেই পরী অদৃশ্য হয়ে রাফিদের দৃষ্টি সীমা থেকে,এবার রাফিদ পুরো আয়াতুল কুরসি পড়তে পারে,কিন্তু তাতে করে তার চারপাশ হালকা হয় কিছুটা কিন্তু পরীকে আর দেখে না কোথাও।




সেই করুণ,হৃদয় ভাঙা বাঁশির সুর শুনতে শুনতে আমি যেনো কোথায় চলে যাচ্ছি,একমুহূর্তে মনে হতে লাগলো আমার আমি অজানা কোনো জায়গায় চলে এসেছি,চারপাশে কিছু নেই,কুয়াশা শুধু।

মুহূর্তেই আবার চারপাশ পাল্টে গেলো,আমার চারপাশে জ্বলজ্বল করছে আগুন,একটু নড়লেই যেনো আমি আগুনে পড়ে যাবো।
সেই বাঁশির সুর আরো কাছে আসছে

কিছুদূর যাওয়ার পর দেখতে পেলাম কই থেকে সেই সুর আসছে।
কেউ একজন সেই বাঁশি বাজাচ্ছে।

তক্ষুনি আমার যেনো কি হলো,আমি নিজেকে দেখছি না কিন্তু আমি জানি আমি এখন আর পরী না,আমি এখন রানী অশ্রুমালা হয়ে গেছি।
অশ্রুমালা হওয়ার সাথে সাথে বুঝতে পারি যে বাঁশি বাজাচ্ছে সে সাধারণ কেউ না,সেই রক্তচোষা পিশাচ।




পিশাচ টা চোখ তুলে তাকাতেই দেখে তার সামনে তার শিকার দাঁড়িয়ে আছে।
পরীকে প্রথম যেদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে স্টেশনে আসতে দেখে তক্ষুনি কবরস্থানে বসে পিশাচটা পরীকে দেখে।সেদিনই পিশাচের নজর পড়ে তার উপর,কৌশলে অনেকবার পরীকে ঘরের বাহির করার চেষ্টা করে পূর্নিমা রাতে,কিন্তু প্রতিবারই বাঁধা পায়,পরীদের বাড়ির নির্দিষ্ট একটা সীমানা পর্যন্ত বাড়ি বন্ধ করা আছে,সেখানে প্রবেশ করতে গেলে নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে পিশাচ টা। প্রতিবার পরী বের হয়ে যেতে গেলে রাফিদ পরীকে আটকায়।রাফিদের জন্য কোনো প্রলোভনে পরীকে বাগানে আনতে পারে না।

তাই পরীকে বের করে আনার জন্য অন্য উপায় ধরে,আজ সফল হয়।
রক্ত খাওয়ার জন্য পরীর দিকে এগুতেই পিশাচ থমকে যায়,যে দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে সে সাধারন কোনো মেয়ে না,সে ক্ষমতাশালী এক আত্মা,রানী অশ্রুমালা।

পিশাচ টা বুঝতে পারে তক্ষুনি কেনো পরীদের বাড়িতে ঢুকা যায় না।

শিকারকে এভাবে হারাতে দেখে পিশাচের রাগ উঠে যায়। ২ চোখ থেকে আগুনের গোলা বের করে সে অশ্রুমালার দিকে দেয়।

অশ্রুমালা নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
আগুনের গোলা অশ্রুমালার ২ পাশ দিয়ে চলে যায়।
কোমর থেকে তলোয়ার বের করে অশ্রুমালা পিশাচের গলায় কোপ দেয়।
সাথে সাথে চারপাশ পাল্টে যায়,আগুন,কুয়াশা কিছুই নেই।
এতোক্ষণ কি হয়েছে তার কিছুই আমার মনে নেই।

রাফিদ আল্লাহকে ডাকতে থাকে মনে মনে।
তারপর হঠাৎ দেখে পরী সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
রাফিদঃ পরী তোমার কি হয়েছে,কোথায় গিয়েছিলে তুমি??
আমিঃ আমি তো বাগানেই আসছিলাম কিন্তু কি হয়েছে আমার আমি বুঝতেছি না।
রাফিদঃ তোমার বুঝতে হবে না,রুমে চলো,তুমি বের হলে কেনো রুম থেকে???
আমিঃ জানি না আমি কেনো বের হয়েছি।

রুমে গিয়ে বিছানায় শুতেই বুঝতে পারলাম আমার পিরিয়ড হচ্ছে, উঠে রাফিদকে বলতেই রাফিদ চমকে উঠে।

রাফিদঃ কি বলছো তুমি পরী???
পিরিয়ড হচ্ছে মানে???

আমিঃ আমি ওয়াশরুম থেকে আসি তারপর তোমাকে বলছি।

ওয়াশরুমে যেতেই দেখি ব্লিডিং।মনে হচ্ছে যেনো স্রোতের মতো ব্লিডিং হয়েই যাচ্ছে।

আমি বুঝে যাই আমার কি হয়ে গেছে,রাফিদ উঠে এসে দরজায় নক করে,আমি কোনোমতে টলতে টলতে উঠে দরজা খুলে দিই।

আমার পায়ের দিকে তাকাতেই রাফিদ দেখে রক্ত বন্যা বয়ে যাচ্ছে। আমি আর স্থির থাকতে পারি না।
রাফিদ আমাকে তক্ষুনি কোলে করে নীচের দিকে ছুটতে থাকে।
রাফিদের চিৎকার শুনে বাবা মা বের হয়ে আসে রুম থেকে।
রাফিদ ছুটে গাড়ি বের করে আমাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে।আস্তে আস্তে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি

হাসপাতালে যেতেই পরীকে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যায়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রাফিদের বাবা মা চলে আসে হাসপাতালে।

পরীর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়,পরীকে ওটি’তে নিয়ে যায়।

সবাই বাহিরে অপেক্ষা করতে থাকে,কিছুক্ষণ পরেই ডাক্তার বের হয়ে আসে।
ডাক্তার এসে জানায়,পরীর বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে।
তারপর ডাক্তার রাফিদকে ডেকে নিয়ে যায় অন্য পাশে।

ডাক্তারের কথা শুনে রাফিদ নির্বাক হয়ে যায়।
কিন্তু এছাড়াও আর কোনো উপায় নেই রাফিদ সেটা জানে।

ডাক্তার চলে যেতেই রাফিদের বাবা মা গিয়ে জিজ্ঞেস করতে থাকে রাফিদকে কি বলেছে ডাক্তার।
রাফিদ যা বলে তার জন্য তারা কেউই প্রস্তুত ছিলো মা,এভাবে তাদের সকল আশা-ভরসা কবর দিতে হবে তা কেউ স্বপ্নে ও কল্পনা করে নি।

চলবে………???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here