আমার আকাশ,Part:11,12 last

0
1751

আমার আকাশ,Part:11,12 last
Ayusha Akter Usha
Part:11

-ছাড়ুন আমাকে।।
আমি উনাকে ঝটকা মেরে সরিয়ে দিলাম।
-কি ভেবেছেন কি নিজেকে।যা ইচ্ছে তাই করবেন।আর আমি মেয়ে বলে কিচ্ছু করতে পারবনা।আমাকে ওতটাও অবলা ভাববেননা বলে দিচ্ছি।
-ঊষা আমি তোমাকে ভালোবাসি।এটা বোঝাতে আমি হাঁপিয়ে গেছি আর কি করব যাতে তুমি বিশ্বাস করো যে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
-আমাকে বিশ্বাস করানোর কোনো প্রয়োজন নেই আপনার।এতক্ষণে হয়তো বাড়ির সবাই খুঁজছে আমাকে।আমাকে দয়া করে যেতে দিন।
বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে লাগলাম।উনি পেছন থেকে চেঁচিয়ে বলতে লাগল
-ঊষা প্লিজ ঊষা কেন এমন করছ।কেন আমাকে বুঝতে চাইছো না তুমি আই লাভ ইউ ফর এভার এন্ড এভার ঊষা প্লিজ।
আমি উনার কথার তোয়াক্কা না করে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরলাম এটা কার বাড়ি ছিল।নিশ্চয়ই কোনো বন্ধুর বাড়ি হবে।আমি রাগে গজগজ করতে করতে বাড়ি থেকে বেরোতেই দেখি ভাইয়া বাইকের ওপর বসে আছে।ভাইয়াকে দেখেই আমার মাথায় আকাশ ভাঙল।এখন কি হবে।ভাইয়া কিভাবে নেবে ব্যাপার টা।কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে ভাইয়া খুব স্বাভাবিক ভাবেই বাইকে উঠে বসতে বলল।আমি মাথা নিচু করে কোনো কথা ছাড়াই বাইকে বসলাম।
রাতে বাবার ঘর থেকে কিছু কথা কাটাকাটির আওয়াজ শুনে আমি আমার বই বন্ধ করে বাবার ঘরের দিকে গেলাম।ঘরের মধ্যে বাবা আর ভাইয়ার কথা কাটাকাটি হচ্ছে।এই ঝগড়ার মূল উদ্দেশ্য আমি।আমাকে আর আকাশ কে নিয়ে ঝগড়া হচ্ছে।ভাইয়া বাবার কাছে আমার আর আকাশের বিয়ের কথা বলছে।কিন্তু বাবা কিছুতেই রাজী নয়।তার কথা যেই ছেলে বিয়ের আগে একটা মেয়ের ঘরে আসতে সে না জানি আরো কত মেয়ের ঘরে গেছে।কতটা চরীত্রহীন ছেলে হতে পারে সে।বাবার কথা শুনে আমার দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরতে লাগল।আমি জানি এই বিয়েতে বাবার না বলার কারন আকাশ চরীত্রহীন বলে নয়।না বলার কারন হলো বাবার জেদ।সেদিনের ঝগড়ার কারনে বাবার জেদ যে সে কিছুতেই আকাশের সাথে আমার বিয়ে দেবে না।সত্যি জেদ খুব মারাত্মক জিনিস।তা অনেকের অনেক কিছুই শেষ করে দিতে পারে।হঠ্ৎ ই কাধে কারো স্পর্শ পেলাম।ঘুরে দেখি সুমি মানে আমার ভাবি দাড়িয়ে আছে।আমার চোখে জল দেখে সুমি সেএ জল মুছে দিল।এই জল যে এখন আমার সারা জীবনের সঙ্গী কারন আমি আর কখনোই আকাশকে পাবো না।আমি নিজের ঘরে চলে এলাম।এ নিয়ে আর কোনো কথা হয়নি।দুদিন পর আমি আমি স্কুল থেকে ফিরছি তখনি ভাইয়া আমার কাছে এসে বাইক থামালো।
-ঊষা উঠে আয়।
-কেন
-দরকার আছে উঠে আয় তো।
আমি আর কিছু না বলেই বাইকে উঠে বসলাম।ভাইয়া আমাকে একটা কাজী অফিসের সামনে নিয়ে এলো।তা দেখে আমি অবাক হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।ভাইয়া কিছু না বলে আমাকে নিয়ে অফিসের ভিতর ঢুকল।ভেতরে আকাশ আর তার কিছু বন্ধু দাঁড়িয়ে আছে।
-কাজী সাহেব বউ এসে গেছে আপনি বিয়ে পরানো শুরু করুন।
-এসব কি ভাইয়া।
-এ সব কি মানে দেখতে পাচ্ছিস না এসব কি।তোর আর আকাশের বিয়ে হতে যাচ্ছে।তাও আবার এক্ষুনি।
-কি বলছিস কি এসব।পাগল হয়ে গেলি তুই।বাবা জানতে পারলে কি হবে একবার ভেবেছিস।
-বাবা মা কখনোই তোদের বিয়ে দেবে।তাই এই ভাবেই বিয়ে করাটা শ্রেয় বুঝলি।আমি আকাশ কে খুব ভালো করে চিনি।ও যে তোকে প্রথম থেকে পছন্দ করে সেটাও আমি জানি।আর সেদিন আমিই বলেছিলাম তোকে যেন ওইভাবে নিয়ে গিয়ে দুটো কথা বলে সব ঠিক করে নেয়।কিন্তু তুই ও তো বাপের বেটি।জেদ নিয়ে বসে আছিস।আর এর থেকে ভালো উপায় আমার কাছে আর নেই।তাড়াতাড়ি বিয়েটা সেড়ে নে।তার পর দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
-এটা কখনোই সম্ভব নয়।আমি মা বাবা কে কষ্ট দিয়ে এই ভাবে বিয়ে করতে পারিনা।
-ঊষা কি বলছ তুমি এসব।শেষ মূহুর্তে এসে সবকিছু শেষ করে দিও না।
-এই ব্যাপারে আপনাদের আগে আমাকে জানানোর প্রয়োজন ছিল।আমি বিয়েতে রাজি কি না তা জানার প্রয়োজন ছিল আপনাদের।
-তুমি কি আমায় ভালো বাসো না ঊষা।
-আমি বাবা মা কে ছাড়া এই বিয়ে করতে পারবো।এটাই আমার শেষ কথা।
বলেই ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম।আকাশ ও ওখানেই পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।ভাইয়া আমার জেদ সম্পর্কে জানে তাই আসার সময় শুধু একটা কথাই বলেছিল আমায়।
-যা করছিস ভেবে চিন্তে করছিস তো ঊষা।পরে এই সিদ্ধান্ত এর জন্য তোকে পস্তাতে না হয়।
এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছেও ছিল না।আমি নিজে ই জানিনা।এসব কি হচ্ছে আমার সাথে।আর কেন ই বা আমি আকাশ কে দূরে ঠেলে দিচ্ছি।পরিবারের কথা ভেবে আকাশকে দূরে ঠেলে দেওয়া টা কি সত্যিই ঠিক হচ্ছে।রাতে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।তারপর আমি চুপচাপ বাবার ঘরে গেলাম।
-কি হলো কিছু বলবি।
আমার মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না।কিভাবে বলব বুঝতে পারছি না।
-কি হলো চুপ করে আছিস কেন।
এই বার আমি লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে বলেই ফেললাম।
-বাবা আমি আকাশ কে ভালোবাসি।
বাস এই কথাটাই যথেষ্ট ছিল বাবার রাগ উঠাতে।বাবা আমার কথায় কিছুতেই সায় দিচ্ছিলেন না।কিন্তু আমিও জেদ ধরে বসি।এক পর্যায়ে বাবা আমার উপর হাত তুলেন।তারপরও হাল ছাড়িনি।জেদ ধরে বসি বিয়ে যদি করি তাহলে আকাশকেই করব।কিন্তু এত বলার পর ও বাবার কোনো হের ফের হলো না।সে তার কথায় অটল।আর আমি এইরকম একটা কথায় জেদ ধরার কারনে অনেক মার ও খেতে হলো।একসময় মারতে মারতে হাঁপিয়ে গিয়ে বাবা চলে গেলেন।সাথে সাথে মা আর সুমি এসে আমাকে ধরল।ভাইয়া এতক্ষণ বাড়িতে ছিল না।বাড়িতে এসে আমার এই অবস্থা দেখে বাবার সাথেও অনেক ঝামেলা করে।এই বাড়িতে আমাকে নিয়ে একের পর এক ঝামেলা হয়েই চলেছে।পরেরদিন ভাইয়া বলল আকাশ নাকি অন্য জায়গায় বিয়ের জন্য হ্যা বলে দিয়েছে।এই কথাটা শোনার পর আমার বুক দু মরে মুচরে ভেঙে পরল।আমার আকাশ অন্য কারো হতে চলেছে।আচ্ছা আদৌ কি উনি আমার ছিল।

আজ আকাশের বিয়ে।আজ আমার বুকের ভেতর দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।কিছুই ভালো লাগছেনা।তাই আর স্কুলে ও যাইনি।বাড়িতে বসে মনের দহন টা কমানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু কিছু তেই কমছে না।আজ যে আমার আকাশ অন্য কারো হয়ে যাবে।।।
to be continue…

আমার আকাশ
Ayusha Akter Usha
“”12″”(Last part)
বিয়ে পড়ানো শেষ হলো।আমি চুপচাপ বসে আছি।কি হচ্ছে কিছু ই বুঝতে পারছিনা।সবকিছু মাথার উপর দিয়ে গেল।কারন বিয়েটা আকাশ আর আমার হলো।ওদের কথা বার্তা শুনে যা বুঝলাম তা হলো আকাশ সেদিন কাজী অফিস থেকে এসে তার বাবা মা কে জোর করে এই বিয়েতে রাজী করিয়েছে।তার আমার বাবার সাথে কথা বলে সব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলে।যার ফল আজ আমার বিয়ে।আকাশ নাকি ভাইয়াকে বলেছিল সে যেন আমাকে বলে যে আকাশ অন্য কাউকে বিয়ে করছে।কারন আকাশ যতটা কষ্ট পেয়েছে সে চেয়েছিল আমিও ঠিক ততটাই কষ্ট পাই।হ্যা পেয়েছি আমি।দিনে দিনে প্রত্যেক টা মূহুর্তে আকাশকে হারানোর ক্ষ্ট পেয়েছি আমি।যেই পরিবার আমাকে কিছু বছর আগে চরীত্রহীন বলেছিল আজ তারাই বলছে আমাকে বউ সাজে নাকি খুব মিষ্টি লাগছে।কি আজব পৃথিবী।আমি বাসর ঘরে বসে আছি।আর এসব কথাই ভাবছি।তাতেই আকাশ ঘরে ঢুকে।তাঁকে আসতে দেখে আমার বুকের ঢুকপুকানি বেড়ে যায়।তবুও নিজেকে সামলে তার কাছে যাই।
-আসসালামুআলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি তাই দেখে উনি বললেন
-কি হলো এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছো যেন এই প্রথম তুমি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছো।
-না মানে…..
-তুমিও তো দেখছি অন্যদের মতো না মানে না মানে করতে পারো।
আমি উনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালাম।
-না মানে তোমার যা রাগ আর জেদ দেখলাম এই জীবনে কখনো ভাবিনি তুমিও বলছো বাকি মেয়েদের মতো করবে।
বলে দাঁত বের করে হাসলেন উনি।
-আচ্ছা আপনি বলুন।আমি তো কখনো আপনাকে ভালোবাসি বলিনি তাহলে এই বিয়ে টার ওপর আপনার এতো বিশ্বাস কি করে ছিল।
-বিয়ে টার ওপর নয় আমার বিশ্বাস ছিল আমার ভালোবাসার ওপর।আমার মন বলছিল তুমিও আমায় ভালোবাসো।
-তাই বুঝি।
-হুম আমার মতো একটা হ্যান্ডসাম ছেলে কেউ রিফিউজ করতে পারেনা।
-ওহহো আপনি হ্যান্ডসাম???
-তা নয় তো কি??
বলেই উনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন।তাতে মনে হচ্ছে আমার দম বন্ধ হয়ে যাবে।ভালোবাসার মানুষটাকে এতো কাছে পাবো কখনো ভাবিনি।
-ঊষা আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো।কিন্তু আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।প্লিজ একবার বলো তুমি আমার ভালোবাসো।
আমি সাথে সাথে উনার গলা জড়িয়ে ধরলাম।
-ভালোবাসি খুব ভালোবাসি।আমার পৃথিবীর রঙিন আকাশ আপনি আমার আকাশ আপনি।আপনি শুধুই আমার শুধুই আমার।
উনিও আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।
-ভালোবাসি খুব ভালোবাসি তোমায় ঊষা।
আমার চোখের কোন বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে।এতোটা ভালো মানুষ কাউকে কি করে বাসতে পারে।যে তাকে ভালোবাসি না বলা সত্ত্বেও সে বুজে যায় ওই মানুষটা তাঁকে কতটা ভালোবাসে।
??
বিশ বছর পর….
ডাইনিং টেবিলে বসে আছি।আমার সামনে মেঘ বৃষ্টি বসে আছে।মেঘ আঠারো বছরের।আর বৃষ্টির বয়স ষোল।
-বৃষ্টি শুনলাম তুই নাকি বিয়ে করার জন্য উঠে পরে লেগেছিস।তোর দাদী বলল তোকে সামলে রাখতে নাহলে হাত থেকে বেরিয়ে যাবি।পড়ালেখায় আগে মন দিতে বলেছে তোকে।
-লাইক সিরিয়াসলিসলি দাদী এইভাবে বলেছে।এতো ভূতের মুখে রাম রাম।
-হুম তা কি এমন বলেছিলি দাদীকে যে দাদী একেবারে সাধু হয়ে গেল।
-আর বলোনা মা।দাদী সারাদিন কানের কাছে বিয়ে বিয়ে বলে প্যান প্যান করত।তাই এই কয়দিন ধরে দাদীকে একটা হ্যাংলা ছেলের ছবি দেখিয়ে বলে বিয়ে যদি করি তাকেই করব।ব্যাস কাজ হয়ে গেছে।
বৃষ্টি কথাটা বলেই জোরে জোরে হাসতে লাগল।ওর হাসি দেখে আমার ছেলে মেঘ বলে উঠল।
-হ্যা হাসো হাসো আরো বেশি করে হাসো।তুমি জানো মা তোমার মেয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ওর একশোটা ফ্রেন্ডের সাথে ফুচকা খায়।তাও আবার নিজে ট্রিট দেয়।মনে টাকা সে কামাই করে আনে হুহ।
-ভাই যখন আমার ট্রিট টা তো আমাকে দিতে হবে তাই না।
-মানে তোর ট্রিটের সাথে আমার কি সম্পর্ক? ?
-বারে…আমার ভাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটা মেয়েকে প্রোপজ করল আর সেই মেয়ে ভাইয়াকে ছ্যাঁকা দিয়ে চলে গেল তা সেই খুশিতে ট্রিট টা তো আমার ই দেওয়া উচিৎ তাই না।
-উহহু উহহু…আব আমার খাওয়া শেষ আমি গেলাম
বলেই ছেলেটা চলে গেল।আর মেয়েটা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।এই হলো আমার দুই ছেলেমেয়ে।ঠিক আমাদের দুই ভাই বোনের মতো এরাই লড়াই করে।কিন্তু বিপদের সময় আবার এক হয়ে যায় এটাই হলো ভাইবোনের সম্পর্ক।আমি মা রাতের খাবার খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাইয়ে ভালো করে শুইয়ে দিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম।আজ এক বছর হলো বাবা মারা গেছেন।তখন থেকেই মা অসুস্থ।আরস ভাইয়ার পোস্টিং য়ের কারনে উনি বউ বাচ্চা নিয়ে অন্য জায়গায় উঠে গেছেন।এখন আমি একাই এই বাড়ি দেখভাল করি।
রাত একটা।আমি বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি।চোখে ঘুম ধরাই দিচ্ছে না।এমন সময় দরজায় কেউ কড়া নাড়ল।আমি সাথে সাথে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম।সামনের মানুষটাকে দেখে বুকে মধ্যে এক শান্তির বাতাস বয়ে গেল।
-কি হলো ঘুমোও নি নাকি।
বলেই আকাশ নিজের গাট্টি গুট্টি নিয়ে ঘরে ঢুকল।আজ তিনমাস পর উনি ক্যাম্প থেকে ফিরলেন।আমি মুচকি হেসে বললাম।
-না ঘুম আসছিল না।
-আমার অপেক্ষা করছিলে।
আমি একটু হেসে বললাম।
-যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো।আমি খাবার বারছি।
-হুম
উনি টিবওয়েলে চলে গেলেন।আমি খাবার বাড়লাম।উনি এসে খেয়ে দেয়ে উঠে গেলেন।আমি টেবিল গুছিয়ে ঘরে গিয়ে দেখি উনি বিছানায় হাতের উপর মাথা রেখে চোখ বুজে শুয়ে আছেন।হয়তো জার্নিতে ক্লান্ত হয়ে গেছে।আমি গিয়ে উনার বুকে মাথা রেখে শুলাম।কতদিন এই বুকে মাথা রাখিনি।উনি এক হাতে আমায় জড়িয়ে ধরলেন।
-সবাই ভালো আছে তো
-হুম
-মেঘ বৃষ্টি শুয়ে পরেছে।
-হুম।
-মা ঔষধ খেয়েছেন।
-হুম।
-কেউ জানে না তো যে আমি আজ আসবো।
-না।।
-কাল দেখ আমাকে দেখে সবাই সারপ্রাইজড হয়ে যাবে।
-হুম।
উনি আচমকাই আমাকে সোজা করে শুইয়ে দিয়ে আমার উপর আধশোয়া হয়ে শুয়ে বললেন।
-তুমি ভালো আছো।
উনার এই প্রশ্নে আমার চোখ ছলছল করে উটল।দু হাতে উনার গলা জড়িয়ে ধরে বললাম।
-না ভালো নেই আমি।
-কেন কি হয়েছে।
-আমি আর পারছি।আপনি কেন এই চাকরিটা করেন বলুন তো।পৃথিবীতে কি চাকরির অভাব ছিল।জানেন আপনি এক মূহুর্তের জন্য চোখের আড়াল হলে বুকের মধ্যে এক অজানা ভয় বাসা বাধে।কতদিন আর এই ভয় নিয়ে বাচতে হবে আমাকে।
-যতদিন আমরা বেচে আছি।আমরা সৈনিক ঊষা।দেশের জন্য জীবন দিয়ে দিতেও আমরা ভয় পাইনা।দেশপ্রমীদের যে ভয় পেতে নেই।আর একটা কথা তো তোমায় বলেছিই আমরা সৈনিকদের থেকে তোমরা স্ত্রীদের আরো বেশি শক্ত হতে হবে।যেন যেকোনো বিপদের সম্মুখীন হলেও তোমরা নিজেদের সামলাতে পারো সাথে নিজের পরিবারকেও।দেশের জন্য তো এইটুকু করতেই পারি তাই না।
-হুম।
উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলেন।আমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।তার হাতে স্পর্শে আমি তলিয়ে গভীর ঘুমের রাজ্যে।।

THE END…..
?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here