আমার আকাশ,Part:5,6

0
682

আমার আকাশ,Part:5,6
Ayusha Akter Usha
Part:5

রাতে সবাই মিলে ছাদে বসে আছি।আজ রাতেই রিমি আপুর এই বাড়িতে শেষ রাত তাই সবাই মিলে একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছি।আমি রিমি আপুর পাশে বসে আছি।আর আমার অন্য পাশে আকাশ বসে আছে আমাদের মাঝের দূরত্বে একজন অনায়াসে বসে পরতে পারে।তাই আঁখি যেমন এসে আমার পাশে বসতে যাবে ওমনি কই থেকে যেন সুমন এসে ধুপ করে আমার পাশে বসে দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগল।তাঁকে এইভাবে বসতে দেখে আঁখি চোখ মুখ খিচিয়ে ভাইয়ার পাশে গিয়ে বসল।এই আড্ডাতে আর যাই হোক পটানোর কাজটা সবাই খুব ভালো করেই করছে দেখছি।সুমন আমার সাথে বকবক করে আমার মাথা ধরিয়ে দিয়েছে।আর ভাইয়া আখিকে পটানোর চেষ্টা করছে।আর সাদিয়া চেষ্টা করছে আকাশকে পটানোর আকাশ আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমার এসবে কোনো খেয়াল নেই।আমার সব খেয়াল ভাইয়ার দিকে।সব ছেলেরাই বুঝি একই রকম হয়।তা নয় তো কি।একদিকে আমার ফ্রেন্ড সুমির সাথে প্রেম করছে আর এখানে এসে আখিকে পটাচ্ছে।ভাইয়ার সাথে চোখাচোখি হতেই ভাইয়া চোখ নামিয়ে নিল।কারন সবসময় আমাকে খোটা দিলেও সুমির বিষয়ে ভাইয়া আমাকে প্রচন্ড রকম ভয় পায়।আর আমিও কখনো কখনো তার ফায়দা উঠাই?।এমন সময় রিমি আপু বলে উঠল
-ঊষা একটা গান গাও।
-গান??এখন।।
-হুম।আকাশ যা তোর গিটার টা নিয়ে আয়।
-এখন গিটার দিয়ে কি হবে।
-গাধা গান হবে যা তো তাড়াতাড়ি।
আকাশ চরম বিরক্তি প্রকাশ করে নিচে গেল গিটার আনতে।গিটার এনে বসতেই সবাই আমাকে গান গাওয়ার জন্য বলল।আমি গান ধরলাম।
বড় ইচ্ছে করছে ডাকতে
তার গন্ধে মেখে থেকতে
কেন সন্ধ্যে সন্ধ্যে নামতে সে পালায়
তাকে আটকে রাখার চেষ্টা
আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে তেষ্টা
আমি দাঁড়িয়ে দেখছি শেষটা জানালায়
বোঝেনা না সে বোঝেনা।।।।
গিটার বাজছে তার সাথে আমি গান গাইছি।এই রাতের বেলা নিস্তব্ধ পরিবেশে এই একটা গান ই আমায় রমরমা মনে হলো।গান গাইতে গাইতেই দেখলাম সবাই চোখ বন্ধ করে আছে।শুধু আকাশই গিটার বাজাতে বাজাতে আমাকে দেখছে।কি হলো সবাই কি আমার গান শুনে ঘুমিয়ে পরল নাকি।এই ব্যাপারে সিওর হোয়ার জন্যে মাঝ পথেই গান আটকে দিলাম।আমার গান বন্ধ হওয়া দেখে আকাশ ও গিটার বাজা থামিয়ে আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো।তার সাথে সবাই।
-কি হলো গান থামালে কেন।
সাদিয়ার কথা শুনে আমি দাত বের করে হেসে বললাম।
-দেখছিলাম তোমরা সবাই ঘুমোচ্ছিলে নাকি আমার গান শুনছিলে।
-ধুর মুড টাই খারাপ করে দিলা এখন আর একটা গান শোনাও।
আঁখির কথায় আমি অবাক
-আবারোও।
-হুম আবারো।।শুরু কর।
রিমি আপুর কথা শুনে আবার গান শুরু করলাম
ও পোলা ও পোলা রে তুই অপরাধী রে আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা দে ফিরাইয়া দে।।।
আমার গান শুনে ভাইয়া তাড়াতাড়ি করে গেয়ে উঠল
-ও মাইয়া ও মাইয়া যে তুই অপরাধী যে আমার যত্নে গড়া ভালো বাসা দে ফিরাইয়া দে।
ভাইয়ার গান শুনে রেগে মে গে আমিও শুরু করলাম
-ও পোলা ও পোলা রে তুই অপরাধী রে
-ও মাইয়া ও মাইয়া রে তুই অপরাধী রে।
-ও পোলা ও পোলা রে তুই অপরাধী ।।।
-ও মাইয়া ও মাইয়া রে তুই অপরাধী রে
–আরেএএএ স্টপ ইট।।।কি শুরু করলে তোমরা।গানের মাধ্যমেও ঝগড়া শুরু করে দিলে।কে কোন অপরাধী এসব পুলিশদের দেখতে দাও এখন প্লিজ তোমরা থামো।
আরস ভাইয়ার কথা শুনে আমি চুপ।এভাবেই কেটে গেল সারারাত।পরের দিন সাকলে মা বাবা এলো। তাঁদের দেখে আমি খুব খুশি।সবসময় মায়ের পিছু পিছু থেকেছি সেদিন।দুপুরে সবাই খাওয়ার জন্য ডেকের কাছে গেলাম।আমি মা বাবা ভাইয়া একসাথেই বসলাম।ভাত দিয়ে গেছে এখন তড়কারির পালা।দেখলাম আকাশ আজো তরকারি বিতরণে ব্যস্ত।আল্লাহ আজ না আবার আমায় না খাইয়ে রাখে এই ছেলে।আমাদের টেবিলে আসতেই প্রথমে বাবাকে দিল।তারপর মাকে তারপর আমাকে যেই দিতে আসবে আমি হাত দিয়ে প্লেট ঢেকে ধরলাম।সাথে সাথে উনি হাত পাস করে ভাইয়াকে তরকারি দিলেন।উনার দিকে তাকাতেই দেখি উনি দাত কেলিয়ে হাসছে।ওহহো আমাকে বোকা বানানো হলো।উনি ওখান থেকে যাওয়ার আগে চেঁচিয়ে আরস ভাইয়াকে বলে গেলেন আমাকে পরোজি দিতে।সবাই খাচ্ছে আর আমি বসে আছি।ভাইয়াকে দেখে মনে ও আমাকে দেখিয়ে আরো বেশি করে খাচ্ছে।কিছুক্ষণ পর আরব ভাইয়া এলো পরোজি নিয়ে।
-এটা কিসের মাংস।
-ছাগলের।।
-আমি ছাগলের মাংস খাই না।
-তো কি খাস শুনি গরুর খাস না ছাগলের খাসনা।তুই পৃথিবী তে আইসিলি কেন কিছুদিন পর শুনবো তুই ভাত ও খাসনা।
-ধুর ভাইয়া।।আমারে ডাল দেন।
-ডালের মধ্যে গরুর মাংস ঢুকাইছে খাবি।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেল আমার।আর ওই দিকে ভাইয়া আমারে দেখিয়ে গরুর হাড্ডি চিবোচ্ছে।জানেই তো ওই হাড্ডি খাওয়া যাবেনা।অসহ্য।সবার খাওয়া শেষে আমাকে মুরগির মাংস দিয়ে ভাত দিল।তখন আমার খিদেই মরে গেছে।খাবো আর কি প্রায় সন্ধ্যা ছুই ছুই তখন বরযাত্রী এলো।অনেক মজাতেই সময়টা কাটলো।রাতের বেলা একসময় কারেন্ট চলে গেল।বিয়ে বাড়িতে কারেন্ট যাওয়া মানে মারাত্মক ব্যাপার।সবাই দৌড়া দৌড়ি করছে।আর এইদিকে অন্ধকারে আমি সাদিয়া আখি মিলি একসাথে চেয়ারে বসে বসে গল্প করছি।এমন সময় একটা ছেলে(বরযাত্রী) এসে বলল তাঁকে পানি খাওয়াতে।তার কথা শুনে আঁখি চে তে উঠল।এতো এতো থাকতে যাঁরা অন্ধকারে বসে আছে তাদের কাছেই পানি চাইতে হলো।তার উপর টিব ওয়াল ও সামনে আছে
-আমাদের কি আপনার ওয়েটার বলে মনে হচ্ছে।
-আহহা আঁখি কি করছ কি।মেহমান মানুষ।হয়তো পানির তেষ্টা পেয়েছে।আপনি দাঁড়ান আমি পানি আনছি।
বলেই ওখান থেকে উঠে রুমে চলে এলাম।রুম থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে ওনার সামনে ধরলাম।
-এই নিন।
উনি ও দাত বের করে হেসে পানির গ্লাসে চুমুক দিয়েই সাথে সাথে মুখ থেকে সব পানি ফেলে দিলেন।
-ইয়াক ইয়াইয়াআ এটা কি।।।।
-নিম পাতার রস খান খান খুব মজা তো।
বলেই হাসতে হাসতে আঁখির সাথে হাই ফাইভ করলাম।আর উনি তেতো মুখ নিয়ে ইয়াক ইয়াক করতে চলে গেলে।এই গ্লাস টা বরের দরজা আটকানোর জন্য বানানো হয়েছিল।ওখানে কোনো কাজে আসেনি।তাই এখানেই কাজে লাগালাম।।।।
to be continue…

আমার আকাশ?
Ayusha Akter Usha
“”6″”
-কি হলো আপনি আমাকে এখানে আনলেন কেন।
-চুপচাপ ঘরের মধ্যে বসে থাকো।বিয়ে শেষ হওয়া অবধি এই ঘর থেকে এক পা ও বের হবে না।
-মানে কি বের হবো না কেন।
-বের হবে না যখন বলেছি তখন বের হবে না।বের হলে পায়ের হাড্ডি ভেঙে খাটে বসিয়ে রাখব।যাও গিয়ে ঘরে বসো।
-আমি আপনার কথা শুনতে যাবো কোন দুঃখে।
-আমি বলছি তাই।কোনো কথা না বলে চুপচাপ ঘরে যাও।
-যাবো না।
-ঊষা আই সেইড ঘরে যাও।
ওনার ঝারন খেয়ে চুপচাপ ঘরে চলে এলাম।কেমন টা লাগে।এখন এই বিয়েতে আমি আনন্দ না করে কি ঘরের মধ্যে বসে থাকবো।তারওপর এই বয়স্ক মহিলাদের মধ্যে নিজেকে রোহিঙ্গা বলে মনে হচ্ছে।ছেলেটাকে তিতা খাওয়ানোর পরেই আকাশ আমাকে ডেকে ঘরের সামনে এনে ইচ্ছে মতো ঝেরে দিলেন।আমি বুঝতে পারছি না আমাকে ঘরে বসতে দেওয়ার মানে কি।আর আমিই বা কেন ওনার কথায় এখানে বসে আছি।ধুর।সব কথা উপেক্ষা করে কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে ফেসবুক চালানো তে মন দিলাম।নয়তো এই বয়স্ক মহিলাদের কথা শুনতে শুনতে কখন না জানি আমিই বুড়ি হয়ে যাই।
বিদায়ের পালা শেষ হলো।বাড়ির সবাই স্বাভাবিক ভাবে আছে।কাল বিকেলেই আমরা চলে যাবো।বেশ রাত করেই সবাই ঘুমোতে গেল সারাদিনের ধকলে শোয়ার সাথে সাথেই চোখে ঘুম নেমে এলো।পরের দিন সকালে আমরা বেরিয়েছি গ্রাম দেখতে।আজ চলে যাবো।তাই সকালে সবাই মিলে গ্রাম দেখার প্লেন করলাম।বিকেল বেলা আবার রিমি আপুকেও আনতে যাবে।ভাইয়া আমি আঁখি সাদিয়া মিলি আকাশ আরস ভাইয়া সবাই মিলে বেরিয়ে পরলাম।গ্রামের চারপাশটা অনেক ভালোই।এর আগে কখনওই এই গ্রামে আসিনি।চারপাশটা দেখতে দেখতেই আমার নজর গেল সামনের এক খোলার দিকে।সেখানে কিছু ছেলেমেয়ে ক্রিকেট খেলছে।আমি একটু ঝুঁকে আঁখির কানের কাছে এসে বললাম।
-আঁখি তুমি কি ক্রিকেট খেলতে পারো।
-অল্প অল্প পারি কেন।
-চলো খেলব।
-কোথায়।
-সামনে।
-ধুর ওরা খেলতে দিলে নাকি।
-সেটা ছেলেরা বুজে নেবে আমরা খেলতে পারলেই হলো।

আমার কথা শুনে আঁখি হেসে বলল
-ওকে আমি আকাশ ভাইয়াকে বলি।
-ওকে।
আঁখি খেল আকাশ কে বলতে আমি আমি ধরলাম ভাইয়াকে।অনেক ধস্তাধস্তির পর তারা চলল পিচ্চিদের কাছে।তাদের কয়েকটা ধমক দিয়ে পাশে দাঁড় করিয়ে দিল আরস ভাইয়া।আমি গিয়ে বেড হাতে নিলাম।ভাইয়া বোলিং করবে।আরস ভাইয়া সাইডে দাড়ালো।আর আকাশ আমার পেছনে দাড়ালো।আখি সাদিয়ে মিলি তাঁরাও পাশে গিয়ে দাঁড়ালো বল ক্যাচ করার জন্য।চারপাশে পিচ্চিরাও ঘিরে আছে।বাহ খুব তাড়াতাড়ি একটা ক্রিকেট টিম তৈরী হয়ে গেল।ভাইয়া বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে।আমি ব্যাড নিয়ে সেদিকে মন দিলাম।এমন সময় আমার সামনের ছোট ছোট চুল গুলো উড়ে আমার চোখে পরে খুব বিরক্ত করছে আমাকে ধুর ব্যাড ছেড়ে দিয়ে চুল ঠিক করতে লাগলাম।চুল গুলো ভালো করে ঠিক করে যেই ব্যাড নিয়ে সামনে তাকালাম দেখি ভাইয়া দৌড়ে আমার দিকে আসছে একি ভাইয়া এইভাবে দৌড়ে আমার দিকে আসছে কেন।কিছুক্ষণ পর বুঝলাম আমার দিকে নয় আমার পেছনে আকাশের দিকে যাচ্ছে।ওমা আকাশ কপালে হাত দিয়ে কেন দাঁড়িয়ে আছে কি হলো।সবাই আকাশের কপাল দেখছে।আর আকাশ আমার দিকে রক্তচক্ষু নিক্ষেপ করছে।
-ভাগ্যিস বল টা বেশি জোরে ছুড়িনি।নাহলে নিশ্চিত কপাল টা ফেটে যেত।
ভাইয়ার কথা শুনে নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেছেন কি হয়েছে।ভাইয়া বোলিং করেছিল সেটা আমি না দেখেই চুল ঠিক করতে ব্যস্ত ছিলাম।আর এইদিকে বল আমার পাশ থেকে গিয়ে সোজা আকাশের কপালে।আমি ক্রিকেট খেলতে পারিনা।তাই ভাইয়া কে বলেছিলাম আস্তে বোলিং করতে।তাই বল টা ধীরেই করেছিল।আঘাত টা ওতোটা গভীর নয়।কিন্তু উনার রাগটা অনেক গভীর আমার উপর।হয়তো ভাইয়া রা আছে।তাই কিছু বলতে পারছেননা।এরা না থাকলে হয়তো এতক্ষনে আমাকে গিলে খেত।
-কি রে তোর চুল সামলাতে পারিস না তো চুল রেখেছিস কেন কেটে ফেলতে পারিস।
-বারে চুল হচ্ছে মেয়েদের সৌন্দর্য।আর তুই আমার এতো সুন্দর চুল গুলো কেটে ফেলতে বলছিস।
-তো কি করব তোর এই চুলের জন্যই এতো কিছু।আজ তুই ঘুমালেই তোর সব চুল কাঁচি দিয়ে কাটবো।
-হুম কাটতে আসিস।তারপর দেখবি মজা।
বলেই আকাশের দিকে তাকালাম।উনাকে দেখে যেমন খারাপ লাগছে তেমনই হাসিও পাচ্ছে।ইতোমধ্যে আঁখি রা মুখ চেপে হাসতে শুরু করে দিয়েছে।।।
পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি এটা এই গ্রামে সবচেয়ে বড় পুকুর।অনেকটা জায়গা নিয়ে এই পুকুরটা।সান বাধানো।ভাইয়া আরস ভাইয়া আকাশ সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।আর আমরা মেয়েরা সানের পাশে পুকুরে পাড়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছি।খুব ভালোই লাগছে পুকুরটা দেখতে।এপাশ থেকে ওপাশের গাছপালা গুলো অনেক ছোট ছোট দেখাচ্ছে।আমরা গল্প করছি আর হাসছি।এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন আমাকে ঠেলে দিল।আমি টাল সামলাতে না পেরে সোজা পুকুরে ধপাস করে পরি।আমার যে পানিতে ফোবিয়া।আমি সাঁতার জানিনা।পুকুরের পরে প্রত্যেকটা ডুব আমার কাছে মনে হচ্ছে এই ডুবটাই আমার শেষ ডুব।আমি গভীর থেকে গভীরে তলিয়ে যাচ্ছি।এই গভীরতা থেকে আর উঠতে পারব না।অনেক চেষ্টা করছি বাচার জন্য কিন্তু পারছিনা।দম বন্ধ হয়ে আসছে।এমন সময় মনে হলো কেউ আমার হাত ধরে টানছে।কিছুক্ষন পর কেউ আমার কোমর ধরে আমাকে সানের ওপর বসিয়ে দিল।আমি খোলা বাতাস পেয়ে বুকে হাত রেখে কাশতে লাগলাম।আখি আর ভাইয়া এসে আমাকে ধরল।কিছুক্ষণ ধরে বুক ভরে নিশ্বাস নিলাম তারপর কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে সামনে তাকাতেই দেখি আকাশ পুকুরের পানিতে কোমরে দু হাত দিয়ে আমার দিকে চোখ ছোট ছোট করে দাঁড়িয়ে আছে।পুকুরে গভীরতা ওনার পেটের কিছুটা ওপর পর্যন্ত।তার মানে আমার হয়তো গলা পর্যন্ত হতো।তাহলে আমি পুকুরের তল খুঁজে পাচ্ছিলাম না কেন।আর পাবোই বা কিভাবে আমি তো চেষ্টাই করিনি পুকুরে তলে পা দিয়ে দাড়ানো।ভয়ের চটে সব কিছু ভুলে গিয়েছিলাম।
-শুনি ওতোই যদি মরার শখ ছিল তো এখানে ঝাঁপ দিলি কেন।পদ্মা নদীতে তো তোর জন্য ফাঁকা পরে আছে।ওখানে যেতে পারতি।
আমি ভাইয়ার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকালাম।
-তা মরার শখ এতো সেটা তো আমাকে বললেও পারতে আমিই চুবিয়ে চুবিয়ে এখানে মারতাম।
হায় আল্লাহ একটাই কি কম ছিল যে আর একটা কে পাঠায় দিলা।আকাশের কথা শুনে রেগে মেগে বলতে লাগল
-আশ্চর্য তো ।কেউ কি ইচ্ছে করে মরতে চায়।আমি জানি পানিতে আমার ফোবিয়া।
-তাহলে ঝাঁপ দিলি কেন।
-আরে আমি ঝাঁপ দেই নি কেউ আমাকে পেছন থেকে ঠেলে দিয়েছে।
-এই রকম বেহায়া মজা আবার কে করবে
বলেই আরস ভাইয়া আখিদের দিকে তাকালো।সাথে আমিও।ওরা সবাই সবার দিকে চাওয়া চাওয়ি করছে।কেউই ধাক্কা মারেনি তাহলে কে ধাক্কা দিল ভাবতে ভাবতেই যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানে চোখ গেল।আল্লাহ উঠাই নাও।আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানে একটা লাল রঙের গরু গাছের সাথে বাধা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘাস খাচ্ছে।মাইরালা কেউ আমারে।এই গরুও দেখি আমার সাথে শত্রুতা পালন করতেছে।সবাই ব্যাপার টা বুঝতে পেরেই হেসে গড়গড়ি খেতে লাগল।কিন্তু আমি হাসতে পারছি না।পুকুরে পরে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
-চল বাড়ি চল।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি অসহায় দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালাম।ভাইয়া খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।মনে হয় আমার চোখের ভাষা পরতে পারছে না।এবার আমি চোখ নামিয়ে আকাশের দিকে তাকালাম।সে নিজের শরীরের দিকে এমন ভাবে তা কালো যেন শরীর শুকনো থাকলে এক্ষুনি আমাকে ওনার শার্টটা খুলে দিতেন।এরই মাঝে বুঝতে পারলাম কেউ আমার শরীরে কিছু জড়িয়ে দিচ্ছে।তাকিয়ে দেখলাম ভাইয়া নিজের শার্টটা খুলে আমাকে জড়িয়ে দিল।আমিও সেটা ভালো করে জড়িয়ে নিয়ে উঠে পরলাম।।।

to be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here