আমার হৃদয়ে তুমি ২,পর্বঃ২৭
Tanisha Sultana
রাই জিহাতের মুখ চেপে ধরে।
“একদম ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো মে মে করবেন না
রেগে বলে রাই। জিহাত মাথা নারায়। রাই হাত সরিয়ে নেয়।
” এবার বলুন আমায় কেমন লাগছে?
চুল সামনে থেকে সরিয়ে বলে রাই।
জিহাত খাটের ওপর ভালো করে বসে।
“ভালোই
শুকনো ঢোক গিলে বলে জিহাত।
” শুধু ভালো
কপাল কুচকে বলে রাই
“মারাক্তক ভালো
” ভালো না অন্য কিছু বলতে হবে
“অন্য কি
” মিনিস্কার্ট পড়লে আপনার অফিসের মেয়েদের যেমন লাগে। তখন বললেন
“আমি ছোট বাচ্চা আমাকে মাফ করে দেওয়া যায় না
ইনোসেন্ট ফেস করে বলে জিহাত।
রাই তেড়ে জিহাতের দিকে যায়। কলার ধরে টান দিয়ে কাছে নিয়ে আসে।
” ছোট বাচ্চাকে কি করে বড় করতে হয় জানা আছে আমার
“এমন করো কেন?
কলার আরও একটু টেনে বলে
” এমনই করি আমি। আর না বললে নতুন কিছু করবো।
” বলছি বলছি
“হুমমম তারাতাড়ি
” হহহহট
“না তুতলিয়ে
“পারুম না লজ্জা করে
” ইহহহহ ঢং। তারাতাড়ি বলুন। নাহলে কিন্তু মাথা ফাটিয়ে দেবো
“মাপ করে দাও
চোখ গরম করে রাই।
“হটট
রাই মুচকি হেসে জিহাতের কলার ছেড়ে দেয়। জিহাত সোফা হয়ে বসে।
“এই ছেড়া জামা তুমি কোথায় পেয়েছো?
” এটা ছেড়া জামা না। মডেল এটা
জিহাতের পিঠে ঠাস করে চাটি মেরে বলে রাই।
“ওহহ সরি। আগে কইবা তো
” আমার সামনে আসলে ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারেন না। আর আমার আড়ালে বেশ মেয়েদের সাথে নিকনিক করেন।
“তুমি বউ। এই জনমে আর তোমার থেকে নিস্তার নেই। আর ওরা তো বউ না। তাই আর কি একটু আধটু
” তাই না
জিহাতের চুল টেনে দিয়ে বলে রাই
“কয়েকদিন পরে ইতিহাসের পাতায় বড়বড় করে লেখা থাকবে বউয়ের নির্যাতনে শহিদ হয়েছে জিহাত খান।
রাই আরও একটা কিল মারে। জিহাত রাইকে হালকা জড়িয়ে ধরে বলে
” কে কিনে দিছে
” ভার্সিটি থেকে ফেরার সময় দেখলাম আপনি এইরকম একটা ড্রেস পড়া মেয়ের সাথে কথা বলছেন। তাই আমিও কিনে নিয়ে এলাম।
“এর থেকেও ছোট ড্রেস পড়া মেয়ের সাথে আমি কথা বলি। কিনে এনো
দাঁত কেলিয়ে বলে জিহাত।
” ঠিক আছে। কিনে আপনার অফিসে যাবো পড়ে।
শয়তানির হাসি দিয়ে বলে রাই
“না না একদম না
” কেনো জামাই
“মেরে ফেলবো একদম
” আমিও যদি তোমায় আলতুফালতু মেয়েদের সাথে কথা বলতে দেখি তো মেরে ফেলবো।
“এটা বউ না ভিলেন
বিরবির করে বলে জিহাত
” কি বললেন?
“বললাম আমার টুনুমুনু বউ। আসো আদর করে দেই
সন্ধার দিকে রাইয়ের বাবা আসে জিহাতের বাড়িতে। জিহাত এতো উন্নতি করবে উনি তা ভাবতেই পারে নি। ড্রয়িং রুমে সিঙ্গেল সোফায় বসে আছেন উনি। জিহাতের মা ওনার সামনে চা বিস্কুট রাখে। টুকটাক গল্প করছেন উনারা। রাই আর জিহাত ফ্রেশ হয়ে আসেন।
” শশুড় মশাই কেমন আছেন?
দাঁত কেলিয়ে শশুড় মশাইয়ের আপর পাশের সোফায় বসে বলে জিহাত।
“আলহামদুলিল্লাহ। তুমি?
” বিন্দাস
রাই চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে কোনো কথা নেই৷ চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। কতো দিন পরে বাবাকে দেখলো। রাইয়ের বাবা রাইয়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। রাইয়ের মাথায় হাত দিয়ে বলে
“সরি সোনা
রাই আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না। বাবাকে জড়িয়ে হু হু করে কেঁদে ফেলে। রাইয়ের বাবাও কাঁদে।এতোদিনের অভিমান কান্নার মাধ্যমে প্রকাশ করে। একটু কান্নাকাটি করে শান্ত হয়। রাইয়ের বাবা বলে জিহাত আর রাইকে নিতে এসেছে। জিহাতে কাজের প্রেসার তাই জিহাত যেতে পারবে না। রাই একাই যাবে। এই প্রথম রাই জিহাতকে ছেড়ে একা কোথাও যাচ্ছে। মনের মধ্যে কেমন একটা করছে। জিহাতকে ছেড়ে যেতে মন চাইছে না।
রাই রুমে চলে যায় জামাকাপড় গোছাতে। লাগেজ বের করে গোছাতে থাকে। জিহাত রুমে এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসো।
” আমি চলে যাচ্ছি
রাই জিহাতের পাশে দাঁড়িয়ে বলে
“সাবধানে যেয়ো। আর দুচারদিন বেশি থেকে এসো।
রাই রেগে যায়। কিন্তু রাগটা প্রকাশ করে না
” আমি তো জানি আমি চলে গেলে আপনি খুব ভালো থাকবেন
“বাহহ এই না হলো আমার বউ। কেমন মনের কথা বুঝে গেলো
দাঁত কেলিয়ে বলে জিহাত।
“ভালো তো আর বাসেন না
অভিমানের সুরে বলে রাই।
” বউ পুরোনো হয়ে গেলে ভালোবাসা কমে যায় জানো না
রাই ল্যাপটপ সরিয়ে জিহাতের কোলে বসে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে জিহাতকে
“পুরোনো হলেও আমার সাথেই থাকতে হবে
” হুমমম সেটাই
রাই জিহাতের হাত ধরে পিঠের ওপর রাখে।
“ভালোবাসি
” জানি
“আর আপনি
” সত্যি বলবো
“হুমনন
” বাসি না
রাই চুল টান দেয় বুকে কয়েকটা কিল দিয়ে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে যায়। জিহাত হেসে ফেলে
“তোমায় কতোটা ভালোবাসি সেটা আমি নিজেও জানি না।
রাতেই বাবার সাথে চলে আসে রাই। রুহি আর মা রাইকে দেখে ভীষণ খুশি হয়। তিন বছরে বাড়ির পরিবেশটাই পাল্টে গেছে। রাই মা বাবা আর বোনের সাথে গল্প করতে থাকে। তিন বছরে অনেক কথা জমা হয়েছে। সবাই মুগ্ধ হয়ে রাইয়ের কথা শুনছে। কতো পরিবর্তন হয়ে গেছে রাই। আগের থেকে একটু মোটা হয়েছে। চুল গুলোও বড় হয়ছে।
এমন সময় কলিং বেল বাজে। রাই যায় দেখতে কে এসেছে। দরজা খুলে রাই খুশি হয়ে বলে
” আপনি
চলবে