আমার_একলা_আকাশ_তোমায়_জুড়ে-০২,০৩

0
778

#আমার_একলা_আকাশ_তোমায়_জুড়ে-০২,০৩

#২য়_পর্ব

পরীক্ষার কোনো বিষয়েই অন্না ভালো করে নি। ভালো তো দূরে থাক, সে ফেল করেছে। অন্নার মুখখানা মিয়ে গেলো। নতমস্তক এক কোনায় দাঁড়িয়ে রইলো। ঠিক তখন ই দ্বিতীয় বারের মতো তার মাথায় বজ্রপাত হলো যখন রিতাদেবী বলে উঠলেন,
“এখন থেকে বাহিরে যাওয়া বন্ধ৷ সন্ধ্যে থেকে পড়তে বসবি। আর আজ সন্ধ্যে থেকে তোর টিউটর আসবে। আমি অর্জুনকে বলেছি, ও আজ থেকে তোমাকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পড়াবে”

কথাটি শেষ করার পূর্বেই অন্না বিস্ময়মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলো,
“অর্জুন দা রাজী হয়েছে আমাকে পড়াতে? এতো অষ্টম আশ্চর্যজনক ঘটনা। পৃথিবীর পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা উচিত”

অন্নার কথায় চোখ গরম করলেন রিতাদেবী। সেই ক্রোধাগ্নি চাহনী নাপার মতো কাজ দিলো, অন্না চুপ করে দিলো। তারপর হিনহিনে কন্ঠে তিনি বললেন,
“হতে চায় নি। শুধু আমার আর তোমার দাদার মুখ চেয়ে পড়াবে। ছেলেটা নেহাত আমাদের সম্মান করে, নয়তো তোর মতো একটা লেজ কাঁটা বাঁ’দরকে কেউ পড়াতো না। মেয়ে যে বড় হচ্ছে খবর নেই, ধিঙ্গিপনা তার করতে হবে। বলি কোথায় ছিলে এতো সময়?”
“শামীম ভাই এর দোকানের সামনে কুলফি ওয়ালা এসেছিলো। সেটা খেতে!”
“কুলফি খেতে দুপুর?”

অন্না আর কিছু বলার সাহস করলো না। সকালের ঘটনা মার কানে গেলে পি”ঠের চা’ম’ড়া আস্তো থাকবে না। মায়ের রাগ বেশ ভালো করেই জানা। ওড়না দিয়ে র’ক্তা’ক্ত হাটুটি ঢেকে নিলো। রিতাদেবী কিছু বলার পূর্বেই অবন্তীকা দেবী বলে উঠলেন,
“অন্নপূর্ণা তুমি স্নান সেরে আসো। ভাত হয়ে গেছে। দুপুর গড়িয়েছে অথচ এখনো কেউ ভাত খায় নি। এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না। যাও এখন ই যাও।”

বড়মার আস্কারা পেতেই অন্নাকে আর পায় কে! ছুটে চলে গেলো নিজের ঘরে। এদিকে রিতাদেবীর রাগ এখনো শান্ত হচ্ছে না। ধিঙ্গি মেয়েটাকে নিয়ে তার চিন্তার শেষ নেই। অবন্তীকা দেবী তাকে শান্তস্বরে বলেন,
“রিতা, মেয়ে বড় হয়েছে। এতোটা শাসন ভালো নয়। ধুমধাম গা’য়ে হা’ত দিবে না। দেখায় কেমন? অন্না একটু চঞ্চল, বয়সের সাথে ঠিক হয়ে যাবে।”
“আর কবে ঠিক হবে দিদি? এখন মেয়ে ইন্টারে পড়ে, বয়স তো আঠারো হতে বেশি বাকি নেই। ওর বয়সে আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছিলো। তোমার তো দেবব্রত কোলে ছিলো।”
“আমাদের দিন আলাদা ছিলো। তখন কি মোবাইল, কম্পিউটার ছিলো বলো? বয়স হতেই বিয়ে দিয়ে দিতো। এখন জমানা আলাদা। কোথায় উনিশত নব্বই আর কোথায় দুহাজার বাইশ?”
” আরোও মাথায় তোলো। কোথায় একটু শাসন করবে! নাহ! মাথায় তুলে নাচো। এই তোমাদের আদরে মেয়েটা বাঁ’দ’র হচ্ছে। আমি আর কিছু বলবো না। যা পারো করো তোমরা”

রিতাদেবী হনহন করে ভেতরে চলে গেলেন। অবন্তীকার বুক চিরে বের হলো দীর্ঘশ্বাস। এবাড়ির লোকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। দেবব্রত জন্মাবার ছয় বছর পর অন্নপূর্ণার জন্ম হয়। এর পূর্বে তিন প্রজন্মে কোনো মেয়ের জন্ম হয় নি। ফলে তিনকুলের এই প্রথম মেয়ে হবার খুশিতে আত্মহারা হয় মুখার্জি পরিবার। মেয়ের নাম দেয় অন্নপূর্ণা। মেয়ে যেনো দেবী লক্ষীর রুপে এই পরিবারে আগমণ ঘটিয়েছে। অন্নার জন্মের পর ব্যাবসায় বেশ ভালোই লাভ হয় নারায়ন বাবু এবং প্রদীপ বাবুর। তাই তো মেয়ের দুষ্টুমি গুলোও যেনো চিনির সিরায় ডোবানো মিছরি লাগে। আর এদিকে আদর পেতে পেতে অন্নাও ডানামেলে বিহঙ্গিনীর রুপ নিলো। মাথা ভর্তি গিজগিজ করতে লাগলো দুষ্টবুদ্ধি। ফলে রিতাদেবীর চিন্তা আরোও বাড়লো। অবন্তীকা দেবী জানেন, অন্না চঞ্চল কিন্তু অভ’দ্র নয়। সে জানে তার দায়রা। তাই তিনি ঢাল রুপে দাঁড়ান। যতই হোক, মেয়েটি যে সকলের আদরের। প্রদীপ বাবুর দিকে তাকিয়ে হতাশ কন্ঠে বললেন,
“যাও, দেখো রিতার রাগ পড়লো কি না!ওর মান ভাঙ্গিয়ে খাবার টেবিলে আসো”

প্রদীপ বাবু মাথা নাড়লেন। এখন মুখ্যম কাজ স্ত্রীর রাগের দমন_____

******

সূর্যের অন্তিম কিরণ মিলিয়ে যাবার সাথে সাথে ধরণীর বুকে নামলো নিগূঢ় আঁধার। শঙ্খের ধ্বনি কানে আসছে। পর্দার ফাঁকে তমসায় ঘেরা পাঁড়াটিকে একনজর দেখলো অন্না। কালো আকাশের নিচে ছোট ছোট একতালা, দোতালা বাড়ি, টিনের ঘর। তাতে জ্বলছে সাদা আলো, কিছু আবার অন্ধকার। চোখের সম্মুখের হিসাববিজ্ঞানের বই গড়াগড়ি করছে অথচ তার সেদিকে নজর নেই। তার উন্মুক্তমনা হৃদয় তো প্রকৃতিকে দেখছে। এমন সময় দরজায় আঘাত পড়লো। তার সাথে সাথেই রিতাদেবীর রাশভারী কন্ঠ,
“অন্না, অর্জুন এসেছে”

কথাটি শুনতেই অন্না মুখ বাঁকালো। লোকটির এখন ই আসা লাগলো! মিনিট দুয়েকের মধ্যে হনহন করে ঘরে প্রবেশ করলেন মাস্টারমশাই। চেয়ার টেনে বসলো। অন্না আড়চোখে তাকালো তার দিকে। পরণে গেরুয়া রঙ্গের পাঞ্জাবী। পাঞ্জাবীটা কড়কড়া। এখন ই যেনো ইস্ত্রী করে আনা। হাতাগুলো কনুই অবধি তোলা। হাতের বড় বড় লোম দেখা যাচ্ছে। নাকের একটু উপরে তার কালো ফ্রেমের চশমা। কপালে আসা চুলগুলো বা হাত দিয়ে পেছনে ঠেলে ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো সে। যা দেখে শুকনো ঢোক গিললো অন্না। এই হাসির অর্থ “এক মাঘে শীত যায় না”— এবার আর বুঝতে বাকি রইলো না, পড়ুয়া অর্জুন দা কেনো সেধে সেধে তাকে পড়াতে এসেছে। হাজার ডলার একদম সুদে আসলে উঠিয়ে নিবে সে। অর্জুন হাতাটা ঠিক করতে করতে বললো,
“পরীক্ষার খাতা কোথায়? শুনলাম হিসাববিজ্ঞানে নাকি নয় পেয়েছেন। তা বলি! এই নয় দিয়ে ডলারের হিসাব দিস আমাকে? বল এক ডলার কত টাকা?”

অন্না জানে না এক ডলার কত টাকা! থাকে বাংলাদেশে, ডলার কত তা জেনে কি হবে। তাই চুপ করে রইলো সে। অর্জুনের হাসি প্রসারিত হলো। এবার বাগে পেয়েছে সে অন্নাকে। আর ছাড় হবে না। অন্নাকে চুপ থাকতে দেখে বললো,
“খাতা দিতে বললাম তো”

অন্না খাতা এগিয়ে দিলো। অর্জুন বিজ্ঞের মতো চোখ বুলালো খাতায়। মেয়েটি পারে না কথাটি ভুল। সে পারে কিন্তু সব খানে অহেতুক ভুলভ্রান্তি। প্রতিটা স্থানে যোগ বিয়োগে ভুল। যেখানে ৩০০ বিয়োগ করতে বলা হয়েছে সে ২০০ বিয়োগ করে রেখে এসেছে। ফলে সব মিলিয়ে তার মার্ক এসেছে নয়। অর্জুন গাল ফুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো, তারপর বললো,
“তুই কি পরীক্ষার সময় চোখ খুলে ঘুমাস? সব জায়গায় এতো এতো ভুল কেনো? সামান্য দেখে তুলবি তাও হলো না?”
“আসলে প্রশ্ন পাবার পর খুশি হয়ে গেছিলাম। ভেবেছি সব পারা অংক এসেছে। আমিও চোখ বুজে করতে বসেছি। কে জানতো স্যার যে ভেতরে ভেতরে সংখ্যা বদলে দিবে?”

অর্জুন কিছুসময় অন্নার দিকে তাকিয়ে রইলো। বেছে বেছে একটা ছাত্রী জুটেছে। নেহাত দেবব্রত তার বন্ধু নয়তো এই মেয়েকে পড়ানোর প্রশ্নই উঠে না। এর মাঝেই রিতাদেবী মিষ্টি নিয়ে এলেন। অর্জুনকে খেতে দিয়ে বললেন,
“একটু দেখিয়ে দাও বাবা, একটা বিষয়েও পাশ করে নি। এভাবে হলে আর ইন্টার পাশ দিতে হবে না। ভেবেছিলাম মেয়েটা আমার শান্তশিষ্ট হবে! আফসোস”

অর্জুন তখন বিড়বিড়িয়ে বললো,
“হ্যা, শান্তশিষ্ট, লেজবিশিষ্ট”

অন্না সাথে সাথেই বলে উঠলো,
“কিছু বললে অর্জুন দা?”

অন্নার কথায় রাম ধমক এলো,
“অর্জুন দা কি রে, স্যার বল”

অন্না মাথা কাত করে সম্মতি দিলো। অর্জুন তখন বললো,
“দেখুন কাকীমা, আমি খারাপ ছাত্রী পড়াই না। আর অন্না শুধু খারাপ ছাত্রী ই নয়, ওর ভবিষ্যৎ অন্ধকার। দেখছেন ই তো ইংলিশ আর বাংলা বাদে কিছুতেই সে পাশের মুখ দেখে নি। অবশ্য হবেই বা কিভাবে অন্যের বাড়ি চু’রি করতে গেলে তো দেবীর কৃপা হয় না। তাই বলি আমি ওকে আপনার মুখ দেখে পড়াবো কিন্তু আপনার ওকে চোখে চোখে রাখতে হবে”

চু’রির কথাটা শুনতেই অন্নার মুখ রক্তশূন্য হলো। আড়চোখে তাকালো রিতাদেবীর দিকে। বুঝলো আজ আর রাতে ভাত জুটবে না। এদিকে অন্নার মিয়ে যাওয়া মুখখানা দেখে অর্জুনের ঠোঁটে ফুটে উঠলো দুষ্টু হাসি। মনে মনে বললো,
“বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান,
এবার ঘুঘু তোমার ব”ধিব পরাণ”

******

কলেজে মুখ লম্বা করে বসে রয়েছে অন্না। একেই অর্জুন দায়ের অত্যাচার, উপরে মাও পেয়েছে হাজারে একটা। বাড়ি থেকে বের হওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে। মাঝে মাঝে অন্নার মনে হয়, এটা কি আমার ই মা? এদিকে মীরজাফরের দলের মুখে মুখে এক কথা “অর্জুনদা অন্নাকে পড়ায়, এবার অন্নাকে ঠেকায় কে?” তাই তো তামিমা ঠেস মেরে বলেই দিলো,
“অর্জুনদা তোকে পড়াতে রাজী হলো কিভাবে এটাই বুঝে পাচ্ছি না। সে তো আমাদের দেখলেই অগ্নিদৃষ্টি প্রয়োগ করে! কাহিনী কি বল তো”

তামিমার কথায় চোখ কুচকে তাকালো অন্না। বিরক্তি মুখশ্রী থেকে চুয়ে চুয়ে পড়ছে। বার তিরিশেক তাদের বলেছে কিন্তু তাদের বিশ্বাস হয় না। একেই অশান্তিতে প্রাণ যায়, উপরে বান্ধবী তো নয় যেনো আস্তো শত্রু। অন্নাও কম যায় না। সেও বেশ ভাব দেখিয়ে বললো,
“আসলে আমার বলতে লজ্জা হচ্ছে, কি করে বলি বল”
“আরে বল ই না, এতো ভাও খাচ্ছিস কেন?”

এবার খানিকটা লজ্জামাখা কন্ঠে বললো,
“আসলে অর্জুন দা আমাকে ভালোবাসে। একটু ব’লদ টাইপ তো তাই লজ্জা পায়। এতোদিন লজ্জার জন্যই আমার দিকে তাকাতো না। তাই তো যেই মা আমার পড়ানোর কথা বললো, ওমনি রাজী হয়ে গেলো। প্রেয়সীকে পড়ানোর সুযোগ কি কেউ হারায়?”

অন্নার কথা মীরজাফরের দলে বি’স্ফো’রকের মতো কাজ করলো। সকলের মুখ হা, কারোর মুখে কথা নেই। তারা যেনো হজম ই করতে পারছে না অন্নার কথা। এদিকে অন্না মনে মনে হাসলো, বান্ধবীদের এরুপ বিস্ফারিত মুখগুলো বাধাই করে রাখতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু সে তো জানে না, তার জন্য কি অপেক্ষা করছে!

*****

কথা আগুনের চেয়েও দ্রুত ছড়ায়। ছড়াবার আগে তার হাজারো শাখা প্রশাখা মেলে, সেই শাখা প্রশাখায় থাকে নিজেদের সাজানো মতবাদ। “অর্জুন অন্নাকে ভালোবাসে” কথাটাও আগুনের মতো ছড়ালো। দুদিনের মধ্যে পুরো পাড়ার যুবসমাজ তা জেনে গেলো। দিনটি ছিলো সোমবার। গোধলীলগ্ন, সূর্যের তেজ কম। কলেজ থেকে হেটে ফিরছিলো অন্না। ঠিক সেই মূহুর্তে অর্জুন তার রাস্তা আটকালো। অর্জুনের চোখ লাল, মুখশ্রী শক্ত। হুট করে রাস্তা আটকাতেই অন্না চমকে উঠলো। অন্নার বিস্মিত, ভীত মুখ উপেক্ষা করেই অর্জুন প্রশ্ন ছুড়লো,
“তুই আমার প্রেমিকা?”

প্রশ্নটি মস্তিষ্কে ঝংকার তুললো। মিনিট খানেক সময় লাগলো বিষয় বুঝতে। যখন ধাতস্থ হলো ব্যাপারখানা ঠিক কি এবং কি ঘটতে যাচ্ছে অমনি অন্না উলটো দৌড় দিলো। ভেবেছিলো এই যাত্রায় রক্ষে কিন্তু তখন ই অর্জুনের মোটা পুরুষালী কন্ঠ কানে এলো,
“এই অন্না শোন, দাঁড়া বলছি। অন্নার বাচ্চা দাঁড়া”

পেছনে তাকাতেই ছোটার গতি বাড়ালো অন্না, কারণ অর্জুনদাও তার পেছনে পেছনে দৌড়াচ্ছে আর চেচাচ্ছে…….

চলবে

#আমার_একলা_আকাশ_তোমায়_জুড়ে
#৩য়_পর্ব

অন্নার বিস্মিত, ভীত মুখ উপেক্ষা করেই অর্জুন প্রশ্ন ছুড়লো,
“তুই আমার প্রেমিকা?”

প্রশ্নটি মস্তিষ্কে ঝংকার তুললো। মিনিট খানেক সময় লাগলো বিষয় বুঝতে। যখন ধাতস্থ হলো ব্যাপারখানা ঠিক কি এবং কি ঘটতে যাচ্ছে অমনি অন্না উলটো দৌড় দিলো। ভেবেছিলো এই যাত্রায় রক্ষে কিন্তু তখন ই অর্জুনের মোটা পুরুষালী কন্ঠ কানে এলো,
“এই অন্না শোন, দাঁড়া বলছি। অন্নার বা’চ্চা দাঁড়া”

পেছনে তাকাতেই ছোটার গতি বাড়ালো অন্না, কারণ অর্জুনদাও তার পেছনে পেছনে দৌড়াচ্ছে আর চেচাচ্ছে। কোনো থামাথামি নেই, তেজহীন সূর্যের তাপে অন্না অর্জুনের যেনো দৌড় প্রতিযোগিতা চলছে। শুধু শেষ সীমানাটি কোথায়, জানা নেই। পড়ন্ত বিকেলে পাড়ার রাস্তা ফাঁকা, এই সময়টিতে ক্লান্ত মানুষেরা নিজেদের যাবতীয় কাজের অবসান ঘটিয়ে ঘুমায়, নয় জিরোয়। তাইতো মোড়ের স্বপন পানওয়ালার দোকান ও বন্ধ। ভাগ্যিস রাস্তায় এখন মানুষ নেই, নয়তো কালকের হেডলাইন হতো, “অর্জুন দা অন্নার প্রেমে এতোই মজেছে যে মাঝরাস্তায় সে অন্নার পেছনে ছুটছে”। কিন্তু এ যে প্রেমদৌড় নয়, এ হলো জীবন বাঁচানোর দৌড়। অর্জুনদার ক্রোধের হাত থেকে বাঁচার দৌড়। তার দপদপ করা শিরা, রক্তিম চক্ষু ই সাক্ষী আজ অন্নাকে কাঁচা চি’বি’য়ে খাবে। অন্না দৌড়াচ্ছে আর মনে মনে গুটিকয়েক খাস বাংলা গা’লি বকছে নিজের সইদের। মীরজাফরের দল জীবনে শুধরালো না। ক্রমান্বয়ে নিজের গতি বাড়ালো অন্না, যেনো পেছনে কোনো হিং’স্র বা’ঘ পড়েছে। একটা সময় অর্জুনের কন্ঠ ক্ষীণ হয়ে গেলো। অন্নাও দৌড়ে অন্য পাড়ায় ঢুকে পড়লো। পেছনে ফিরে অর্জুনের অবস্থান দেখার চেষ্টা করতেই দেখতে পেলো তার থেকে বেশ কিছুটা দূরে অর্জুন রাস্তার উপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। নড়ছে না, চড়ছে না। অন্নার বুক ধক করে উঠলো৷ এতো উঁচুলম্বা ছেলে হুট করে রাস্তায় গড়াগড়ি খাবে, ব্যাপারখানা বোধগম্য হচ্ছে না। অন্না ছুটে গেলো অর্জুনের কাছে। দু চার বার ধাক্কা দিলো, কিন্তু সাড়া পেলো না। অর্জুন কে ঠেলে চিত করলো, শ্বাসের বেগ ক্ষীন। অন্নার বুকে এবার ভয় চাপলো। নিগূঢ় কালো ভয়। অর্জুনদা কি তার পেছনে ছুটতে ছুটতে পটল তুললো? ভয়ে কাঁপছে অন্না। ভীতসন্ত্রস্ত কন্ঠে বললো,
“অর্জুনদা, উঠো না। ভয় হচ্ছে”

এর মাঝেই এক রিক্সাওয়ালা তার কাছে এসে বললো,
“মামনী, তুমি কাঁদছো কেনো?”

অন্না অশ্রুসিক্ত নয়নে তার দিকে কিংকর্তব্যবিমুঢ় দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।

****

ফিনাইলের তীক্ষ্ণ গন্ধ নাকে আসছে। হাতে চিনচিনে ব্যাথা। ধীরে ধীরে চোখ মেললো অর্জুন। তার মাথার উপর সাদা সিলিং। বুকের যন্ত্রণাটা এখন ক্ষীন। মাথাটা হালকা ভার ভার লাগছে। পাশ ফিরে তাকালো আশপাশে। একটা ছোটখাটো ক্লিনিকের সফেদ বিছানায় শুয়ে আছে সে। ফিনাইলের তীক্ষ্ণ গন্ধ সহ্য হয় না তার, ফলে নাক মুখ কুচকে এলো। হাতের চিনচিনে ব্যাথার উৎস খুঁজে পেলো সে। ক্যানোলা লাগানো, স্যালাইন চলছে। তার অবস্থান ধাতস্থ হতেই নজর গেলো তার বা পাশের প্লাস্টিকের চেয়ারটায়। অন্না ঝিমুচ্ছে, তার জামার হাতা কনুই অবধি তোলা। মুখখানা মূর্ছা গেছে। ক্লান্তি শুষ্ক মুখে বারবার এসে পড়ছে অবাধ্য কোকরানো চুলগুলো। এমন সময় বয়স্ক নার্স প্রবেশ করলো রুমে। হাতে থাকা প্লেটটা শব্দ করেই রাখলো সে। ফলে অন্না হড়বড়িয়ে উঠলো। অর্জুনকে চোখ মেলতে দেখে ব্যাস্ত গলায় বললো,
“এখন কেমন লাগছে অর্জুন দা?”
“আমি এখানে কেন?”

নার্স তখন বললো,
“তুমি বেহুশ হয়ে গিয়েছিলে, হিমোগ্লোবিন তোমার কম তো। তাই তো ডাক্তার বললেন র’ক্ত দিতে হবে। ভাগ্যিস মেয়েটার র’ক্তের গ্রুপ মিললো। কিছু ইঞ্জেকশন দিয়েছে। সময় সময় দিও কিন্তু। এই বয়সে এমন অসুখ তো ভালো না”
“আমাকে র’ক্ত ও দিয়েছে?”
“হ্যা”
“এখন ই বের করুন, আমি ওর র’ক্ত নিবো না”

ভনীতাছাড়া বলে উঠলো অর্জুন। অর্জুনের এমন কথায় হতবিহ্বল হয়ে গেলো নার্স। অন্নার মুখখানা হা হয়ে গেলো। অবাক কন্ঠে বললো,
“কেনো? আমার র’ক্তে কি সমস্যা?”
“আবার জিজ্ঞেস করিস, আজ আমি হাসপাতালে কেন? তোর জন্য। আর পাড়ায় কি রটিয়েছিস আমি জানি না। নিবো না তোর র’ক্ত। নার্স আপনি ওর রক্তটুকু বের করে নিন তো।”

নার্স করুন কন্ঠে বললো,
“দেওয়া রক্ত বের করে কিভাবে?”
“আমি জানি না, আপনি আমার পারমিশন ছাড়া দিলেন কেন?”

অর্জুনের অস্থিরতা বাড়লো। অহেতুক পাগলামি প্রথমে চুপ করে সহ্য করলেও বেশিক্ষণ সহ্য করলো না অন্না। তার সহ্যের ও একটা বাঁধ আছে। সে অর্জুনকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে নার্সকে বলে উঠলো,
“ছাড়ুন তো উনার কথা, ছোটবেলায় কাকীমার হাত থেকে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছে। তার সব ক’টা ছেড়া”
“আমার তার ছেড়া?”
“একদম চুপ। আর একটা প্যা পু শুনেছি তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। একে মাঝরাস্তায় ভিরমি খাবে আবার নাক উঁচুগিরি দেখাবে। একদম চুপ”

অন্নার রুদ্ররুপ দেখে হকচকিয়ে গেলো অর্জুন। আপনাআপনি সে চুপ করে গেলো। অন্না বুঝলো ঝা’ড়ি কাজে দিয়েছে, অর্জুনদার প্যা পু আজকের মতো বন্ধ। নার্স মুচকি হেসে চলে গেলেন। অর্জুন কিছু বলছে না, কিন্তু সে অন্নার দিকে ক্রোধাগ্নি প্রয়োগ করতেও পিছপা হচ্ছে না। দৃষ্টি দিয়ে যদি কাউকে ভ’স্ম করা যেতো তবে অর্জুন হয়তো সত্যি ই অন্নাকে ভস্ম করে দিতো।

অন্না এবং অর্জুন বাড়ি ফিরলো রাত ন’টা নাগাদ। অন্না বাড়িতে জানিয়ে দেওয়ায় অর্জুনের বাবা দীপংকর বাবু এবং অন্নার বাবা প্রদীপবাবু ক্লিনিকে চলে গিয়েছিলেন। অন্নার উপস্থিত বুদ্ধির বেশ প্রশংসা করলেন দীপংকর বাবু। অর্জুনের মা কাকলী দেবী তো অন্নাকে ধন্যবাদ দিতে দিতে মুখে ফ্যানা তুললেন। মেয়েটি র’ক্ত দিয়ে প্রাণ না বাঁচালে ছেলেটি না জানে কি অবস্থায় থাকতো। কিন্তু তারা তো জানেন না, ছেলের অসুস্থতার উৎস ও এই নারীটি। অর্জুন যখন বিনা ধন্যবাদেই উপরে চলে গেলো তখন কাকলী দেবী বললেন,
“ও একটু এমন ই রে, মনে কিছু নিস না”

*****

অর্জুনের জ্বর আজ দুদিন। পড়াতে আসছে না সে অন্নাকে। তাই অন্নার সুখের অন্ত নেই। হিসাববিজ্ঞান বই সে শিকে তুলে রেখেছে। রিতাদেবীর বকাবকির মাত্রাও বেড়েছে। কিন্তু অন্না গায়ে মাখাচ্ছে না। কিন্তু মনে মনে খচখচানিটাও অব্যাহত রয়েছে। অর্জুনদার জ্বর হলো কেন? সে কি ভীষণ অসুস্থ? তাই ভালো ভাড়াটিয়া এবং ছাত্রী রুপে তাকে দেখতে এসেছে। সদরে কড়া নাড়তেই কাকলী দেবি দরজা খুললেন, হাসি মুখে বললেন,
“তুই তাহলে এমুখো হলি?”
“অর্জুনদা কেমন আছে?”
“জ্বর টা কমছে না, ঔষধ খাচ্ছে। যা না, ভেতরেই আছে। যেয়ে দেখ কোনো মোটা বই এ মুখ গুজে আছে। তুই অর্জুনের ঘরে যা, আমি নাড়ু নিয়ে আসছি”

বলেই তিনি হেসেলে গেলেন। অন্না পা টিপে টিপে অর্জুনের ঘরে ঢুকলো। পর্দা টেনে অন্ধকার করে রাখা ঘর। অর্জুন হেলান দিয়ে বিছানায় বসে রয়েছে। চোখ বুজে রয়েছে, বুকের উপর হিসাব বিজ্ঞানের বই, “principle of accounting”। লোকটা পারেও। এই জ্বরে কেউ হিসাববিজ্ঞান পড়ে। এলোমেলো খাতা এবং মুখটি খোলা কলম সাক্ষী তার পড়াশোনার। অন্না কিছুসময় শ্যামমুখশ্রীর দিকে অপলক চেয়ে রইলো। মাঝে মাঝে ঈশ্বর সৃষ্টির এমন অপরূপ নিদর্শন মুগ্ধ নয়নে দেখতে ইচ্ছে হয়। কি সুন্দর অর্জুন দা, তার ঘুমন্ত মুখখানা দেখে মনে হচ্ছে যেনো সুদর্শন কোনো শিল্পকর্ম। শ্যাম মুখ, খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, লম্বা লম্বা নেত্রপল্লব, খাঁড়া নাক। অন্না ঠিক কতোটা সময় তাকিয়ে রইলো জানা নেই। কিন্তু যখন ধ্যান ভাঙ্গলো তখন ই সাথে সাথে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। সুন্দর জিনিস মারাত্মক বিপজ্জনক। আর অর্জুনদা বিপজ্জনক টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি। তাই বিছানার কাছ থেকে সরে অর্জুনের বই এর তাকের দিকে গেলো। এর মাঝে একটি বই সারির মধ্যে উলটো করে রাখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “নৌকাডুবি”। অন্না আস্তে করে বইটি বের করলো। মলাট খুলতেই প্রথম পাতায় ফাউন্টেন পেনে গোটা গোটা করে লেখা,
“জন্মদিনের শুভেচ্ছা, অর্জুনদা”

তার নিচে ছোট করে লেখা “কৃষ্ণা”। নামটি দেখে খানিকটা অবাক হলো অন্না। অর্জুনকে এই ক বছরে কোনো মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখে নি সে। তাহলে মেয়েটি কে? কোনো বান্ধবী নাকি অতিপ্রিয় কেউ?
“আমার জিনিস ধরেছিস কেন? রাখ বলছি”

অর্জুনের তীক্ষ্ণ স্বর কানে আসতেই চিন্তার মেঘে ছেদ পড়তো। ঈষৎ কেঁপে উঠলো অন্না। বইখানা বন্ধ করে পেছনে ঘুরে বুকে হাত দিয়ে বললো,
“চেঁচাচ্ছো কেন? আমি কি চু’রি করেছি কিছু? একটু হলেই প্রাণখানা খাঁচা ছাড়া হতো”
“তোর তো সাহস কম না আমার বই ধরিস!”

বলেই ছো মেরে বইখানা নিয়ে নিলো অর্জুন। অর্জুনের এরুপ কার্যে অবাক হলো অন্না। মুখ বাকিয়ে বললো,
“ভাবখানা এমন যেনো প্রেমিকার প্রথম উপহার!”
“তোকে বলবো কেন? আর এখানে কি করছিস? আমার ঘরে ঢুকেছিস কোন মতলবে?”

অর্জুন খেঁকিয়ে উঠলো। তার মুখশ্রী বিরক্তিতে ঘেরা। চোখ ছোট ছোট করে অন্নার দিকে তাকিয়ে আছে সে। অন্নার রাগ হলো, প্রচন্ড রাগ। ইচ্ছে করছে অর্জুনের লম্বা চুল গুলো টেনে ছিড়ে ফেলতে। চুল ছি*ড়ে অর্জুনদাকে বানিয়ে দিতে “টেকো অর্জুনদা”। কিন্তু সে তা করলো না। গাল ফুলিয়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়লো। তারপর করুন গলায় বললো,
“তুমি তো মানুষ ভালো না অর্জুন দা, জীবনদাতার সাথে কেউ এভাবে কথা বলে?”
“নিকুচি করি তোর জীবনদান!”
“এইজন্য এসেছি, মা বললো তোমার জ্বর এসেছে। দু-তিন দিন পড়াবে না। আমি বাপু দায়িত্ববান নারী। ম’রে ট’রে গেলে কি না দেখতে এসেছি। বলা তো যায় না, সামান্য বাগানে ঢুকেছি বলে চো’র বানিয়েছো। এখন জ্বর হয়ে ম’রে ট’রে গেলে ভু’ত হয়ে বলবে অন্নার র’ক্তে ভাইরাস। তাই দেখতে এলাম। যাক, যেহেতু আমার উপর চেঁচাতে পারছো তার মানে ভালোই আছো। মন শান্ত হলো। সেই চোটে কাকীমার হাতের নাড়ু তো জুটেছে। তোমার ভয়ে তো এমুখো হওয়াই ছেড়ে দিয়েছিলাম। মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে এতো ভালো মায়ের ঘরে এমন খ’চ্চ’র ছেলে কিভাবে জন্মায়?”
“এখন ভয় হয় না?”

খানিকটা ঝুকে অন্নার চোখে দৃষ্টি রেখে ধীর কন্ঠে কথাটা বললো অর্জুন। অর্জুন ঝুকে আসাতে তার উষ্ণ নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে অন্নার মুখশ্রীতে। তার দৃষ্টি অর্জুনের প্রগাঢ় নয়নে আটকে গেলো। ভয়ংকর দৃষ্টি। নাহ, এই ভয়ংকরের অর্থ ই ভিন্ন। এই দৃষ্টিতে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারে, ডুবে যেতে পারে৷ এ যেনো শান্ত একটা দীঘি। অন্নার অনুভূত হলো তার হৃদয়টা স্পন্দিত হচ্ছে। বেসামাল সেই স্পন্দন। অন্না দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। খানিকটা সরে দাঁড়ালো অর্জুনের থেকে। তারপর অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,
“যতই হোক আমি তোমার পাওনাদার, আর পৃথিবীতে পাওনাদার দেনাদার থেকে উপরে। তুমি আমার কাছে ঋণী, এই ঋণ এতো সহজে ছাড়ছি না। আর তবুও যদি তুমি আমাকে বকাঝকা করো, সোজা কাকীমাকে বলে দিবো। চ্যাটার্জি বাড়ি বুঝি ঋণদাতার সাথে এই আচারণ করে?”
“মুখে তো খই ঝড়ে, এক ঘা দিবো সব ঋণ বেরিয়ে যাবে। আমার অবস্থার জন্য দায়ী কে? শুনি?”
“আমি বলেছি আমার পেছনে দৌড়াতে?”
“আমাকে হেডলাইন বানাবা আমি চুপ করে থাকবো? তোর সাত পুরুষের ভাগ্য তোকে এখনো কথা বলার সুযোগ দিচ্ছি”

এবার একটু দমলো অন্না। হ্যা, দোষটা তার। সে মিথ্যে বলেছে, যার কারণে আজ সকলের মুখে মুখে তার উপাধি “অর্জুন দার প্রেমিকা”। গলা খাকারি দিলো অন্না, একটু রয়ে সয়ে বললো,
“ঠিক আছে, ঠিক আছে। আর কথা শোনাতে হবে না। এই কান ধরে বলছি, আর কেউ কখনো বলবে না, আমি তোমার প্রেমিকা”
“কি করবি?”
“সেটা আমার উপর ছেড়ে দাও, এতো প্রশ্ন কেন? আম খাও, গুটি গুনে কি হবে”

বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো অন্না। অর্জুন হতবিহ্বল চাহনীতে মেয়েটির দিকে চেয়ে রইলো। মেয়েটি তাকে অবাক করার একটি সুযোগ ও ছাড়ে না। আগে তাও একটু ভয়ভীতি ছিলো, এখন তাও নেই। র’ক্ত দিয়ে এখন র’ক্ত চো’ষার কাজ করছে। বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বের হলো অর্জুনের। হাতে থাকা “নৌকাডুবি” বইটা এক পলক চোখ বোলালো সে। তারপর যথাস্থানে রেখে দিলো।

******

অর্জুনের শরীর এখন বেশ ভালো। জ্বর নেই, অন্নার র’ক্ত শরীর মানিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মনটা ভালো নেই। তাই তো বইখাতা বন্ধ করে পাড়ার চায়ের দোকানে গেলো সে। পড়ন্ত বিকালের তেজহীন রশ্নি গায়ে এসে পড়ছে। যুবসমাজের চায়ের ধোঁয়ায় কথা উড়ছে! কত শত তাদের কথা। বিশেষ কথা পুজো আসছে। পাশে একখানা মন্দির থাকায় পুজোটা বেশ জমজমাট ই হয়৷ এই পাড়ায় ধর্মের মতোভেদ নেই। উৎসব টা সুষ্ঠভাবে পালন ই প্রধান। অর্জুন এসে বসতেই সকলের কেন্দ্রবিন্দু হলো সে। চা এগিয়ে দিতে দিতে পাড়ার মোস্ট সিনয়র রবিন ভাই বলে উঠলেন,
“কি ভায়া, শরীর ভালো?”
“জ্বী”
“তা ভাই, প্রেমে পড়ে জ্বর হয় শুনেছি, ছ্যাকা খেয়ে জ্বর হয় প্রথম শুনলাম। দেবদাস হোক তো তোমার মতো! অন্নার পেছনে দৌড়ে কি না শেষ অবধি ক্লিনিক চলে গেলে…….

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here