আমিই_কাবেরী [১]

0
1445

#আমিই_কাবেরী [১]
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

‘প্লিজ আপনার পায়ে পড়ি,আজকে অন্তত আমায় ছেড়ে দিন।আমার পিরিয়ড চলছে,আমি সহ্য করতে পারবো না।পায়ে পড়ি আমায় অন্তত দুদিন সময় দিন’

‘চুপ করে যা করছি সেটাতে সায় দে,একরাতের বিনিময়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি তোকে।এসব অজুহাত দিয়ে পার পাবি না’

কাবেরীর কথাটি সম্পুর্ন উপেক্ষা করে কথাটি বলে
এক হাত দিয়ে কোমর চেপে ধরে আরেক হাতে শাড়ির আঁচলটা বুক থেকে সরিয়ে কাবেরীর গোলাপি ঠোঁট দুটি দখল করে নিলো জয়।নরম ধবধবে পিঠে শক্ত হাতের স্পর্শে প্রত্যোকবার কেঁপে কেঁপে উঠছে কাবেরী।বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে জয় যখন শার্টের বোতাম খুলতে ব্যাস্ত তখন কাবেরী ভয়ে বিছানার এক কোনে হাত পা গুটিয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে অনবরত কেঁদেই চলেছে।মুহুর্তেই জয় শার্ট খুলে কাবেরীর বুক,কোমরের পানে একবার লালসা ভরা চাহনিতে তাকায়।

পাগলের মতো ঠোঁটে,ঘাড়ে,পিঠে কিস করতে থাকে।আজ সে পিশাচের রুপ নিয়েছে।যেন কাবেরীর কান্নামিশ্রিত আকুতি-মিনতির স্বর তার কান অব্দি পৌঁছাচ্ছেই না।এক পর্যায়ে কাবেরী যেন একদম নিজতেজ হয়ে গেলো।তাকে আর বাধা দিচ্ছে না।কিছুক্ষন পর কাবেরীর ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট সরিয়ে একটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে ওয়াসরুমে চলে গেলো জয়।আকাশি রঙ্গের বিছানার চাদরে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ লেগে আছে।যেনো থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে।ওয়াসরুমে থেকে এসে জয় লক্ষ করলো মেয়েটি নড়ছে না।কিঞ্চিৎ ভয় হতে লাগলো।কাছে গিয়ে নাকে হাত দিতেই ২ কদম পিছিয়ে গেলো জয়। মেয়েটি শ্বাস নিচ্ছে না,অর্থাৎ মারা গেছে।ভয়ে চুপসে গেলো জয়।দেয়ালের সাথে ধপ করে বসে পড়লো ফ্লোরে।আৎকা ভয়ে গা শিউরে উঠছে,ঘনঘন নিশ্বাস পড়ছে।অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলো যে মেয়েটাকে এই পরিত্যক্ত বিল্ডিং এর ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিবে,লোকে ভাববে আত্মহত্যা।যেমনি ভাবনা তেমনি কাজ।

ঘড়ির কাটা ৩টার ঘরে টিকটিক করছে।লাশটাকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে টেনে ছাদে নিয়ে পৌঁছাতেই হাফাতে লাগলো জয়।সাত পাচ না ভেবে মেয়েটিকে কোলে তুলে নিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিলো।তবে আশ্চর্যের ব্যাপার মাটিতে পড়ার শব্দ তার কানে এলো না।৩ তলা বিল্ডিং এতোটাও বড় না যে একটি লাশ ফেলে দিলে সে শব্দ কানে আসবে না।সে যাই হোক,এক মূহুর্ত আর এখানে থাকা যাবে না।রুমে গিয়ে রক্তাক্ত বিছানার চাঁদরটা নিয়ে বিষন্ন গাড়িতে উঠে বসলো।

এরপর কেটে গেলো একমাস।জয় বড়লোক পরিবারের বিগড়ে যাওয়া সন্তান।রাত করে বাড়ি ফেরা,বন্দুদের সাথে হৈ হুল্লোর,মেয়ে নিয়ে থাকা এগুলা তার কাছে রোজকার অভ্যাস।এতোদিনে সে রাতের ঘটনা প্রায় ভুলে গেছে জয়।সে রাতে একটি বদ্ধ হোটেলে আরেকটি মেয়েকে নিয়ে যায়,উদ্দেশ্য কাবেরীর সাথে যে কুকর্ম করেছে সে কাজ এই মেয়েটির সাথেও করার।রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দেয় জয়।লাইটটা বন্দ করে কুটকুটে অন্ধকারে মেয়েটির কোমর চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।কিছুক্ষণ পর-

‘এখন ছাড়ো,আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসি,তারপর, সারারাত তো আছেই জান’ মেয়েটি বললো।

‘উফফ,এখনি যেতে হবে?’

‘হ্যা বাবু,এখনি যাবো আর এখনি আসবো’

মেয়েটি ওয়াসরুমে গেলে জয় বিছানায় শুয়ে একটা সিগারেট ধরালো।তখনি মেয়েটি এসে ওর মুখ থেকে সিগারেটটা নিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিয়ে..

‘আমার ঠোঁট থাকতে তুমি সিগারেট খাবে কেন জান? কাম আন বেবি,আজ আমার সবটা বিলিয়ে দিবো তোমায়’

এরপর তারা লিপ্ত হলো একে অপরের শারিরিক চাহিদা মেটাতে।জানালা থেকে মিহি আলো ঢুকে পড়লো ঘরে।সে আলোয় মেয়েটির মুখ দেখে চরমভাবে শক খায় বিষন্ন।মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে দেয়ালের সাথে লেপ্টে যায় বিষন্ন।

‘কে.কে.কে তুমি?’

‘হাহাহাহাহাহা’ মেয়েটি বিকট শব্দে হাসতে লাগলো।যেনো এ হাসি এই পৃথিবীর নয়,অন্য কোনো ভূবনের।এরুপ হাসি দেখে বিষন্ন একদম ঘাবড়ে যায়।চোয়াল বেয়ে টপটপ করে ঘাম ঝরছে।

‘আমায় চিনো না? মনে আছে? আজ থেকে এক মাস আগে আমায় নৃশংস ভাবে ধ’র্ষ’ন করে মেরে ফেলেছো? মনে পড়ে?সেদিন মেয়েটা কতো আকুতি-মিনতি করেছিলো?এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেছো?আমি এসেছি,ফিরে এসেছি’

‘তু-তু-তুমি সেই মে-মে-মেয়েটা?’ চরম পর্যায়ের ভয়ার্ত কন্ঠে বললো।

‘হ্যা,আমিই সেই মেয়ে,কি ভেবেছিলি এতো সহজে পার পেয়ে যাবি?কখনো না,আমার মৃত্যুর প্রতিশোধ আমি নিবোই’

কথাটা বলে কাবেরী তার অগ্নিদৃষ্টি জানালা দিয়ে নিক্ষেপ করলে বাহিরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো।এবং জানালা দিয়ে একটা লাফ দিয়ে জানালার কপাট ধরে বললো-

‘আমি ফিরে এসেছি,আমিই কাবেরী’

জয় জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে ধপ করে পড়ে গেলো।তারপর আর কিচ্ছু মনে নেই।যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সে ঝুলন্ত অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করলো।বট গাছের ইহা বড় বড় শেকড়ের সাথে পেচিয়ে ঝুলে আছে।একবার হেলে এদিকে আসছে আো একবার ওদিকে যাচ্ছে।কোথায় ঝুলে আছে সেটা বুঝতে দেরি হলো না নিচের কুচকুচে কালো জল দেখে।সে একটা কুয়োর মধ্যে ঝুলে আছে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here