আমি_তোমাতে_বিলীন #পর্ব_১৬,১৭

0
803

#আমি_তোমাতে_বিলীন
#পর্ব_১৬,১৭
#সুমাইয়া মনি
১৬

সকালে তাদের বিদায় দিয়ে জায়ান নাজমুলকে নিয়ে পাশের রুমে বসে কিছু দরকারি কাগজপত্র দেখেছিল। আজ আর বাহিরে যাবে না তারা। দু তিন পর আরেকটি সভা হবে মিরপুরের। তারা সেই বিষয়ই আলাপআলোচনা করছে। মনি রুমের পাশে উঁকি দিয়ে তাদের একবার দেখে ড্রইংরুমে এসে হাজির হয়। টিভি ছেড়ে ইচ্ছে করে ভলিউম বাড়িয়ে আরিজিৎ সিংয়ের গান শুনছে। গানের ভলিউম এতটাই বাড়িয়েছে যে তাদের আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
জায়ান নাজমুলকে মনির নিকট পাঠায় টিভির সাউন্ড কমানোর জন্য। তিনি এসে এই বার্তাটি বলতেই মনি কথা অমান্য করে বলে,
‘পারব ন..’
‘স্যারকে বলল?’
‘গো গো…’ হাতের ইশারায় রুমের দিকে দেখিয়ে বলল মনি।
নাজমুল কিছুটা বিরক্ত নিয়ে রুমের ফিরে। জায়ানকে কথাটা বলতেই সে রুম থেকে বেরিয়ে সিঁড়ির উপর থেকে মনিকে ডাকতে লাগল। জায়ানের ডাক মনি শুনলেও গানের সাউন্ডের শব্দকে অনুসরণ করে ভান ধরে বসে রয়। জায়ান কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসতে নিলে মনি ভলিউম কমিয়ে দেয়। অথচ মনি জায়ানের আগমন পিছনে ঘুরে দেখেনি। জায়ান এটা দেখে ফিরে আসে রুমে। তখনই আবার নিচ থেকে উঁচু সাউন্ড শুনতে পায় গানের। জায়ান ক্রোধ নিয়ে নাজমুলের পানে চেয়ে আবার রুম ত্যাগ করে। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নিলে মনি এবারও সাউন্ড কমিয়ে জিরোতে এনে রাখে। জায়ান এটা দেখে আবারও কিছু না বলে ফিরে আসে রুমে। ফের সেই একই কাজ করে মনি। ভেতরে আসতেই রাগ চরম সীমানায় পৌঁছে যায়। তেড়েফুড়ে রুম ত্যাগ করতেই নাজমুল হেসে ফেলে। মনি বেশ ভালোই গেম খেলছে। জায়ান এবার নিচে এসে টিভির ফ্লাক খুলে মনির দিকে ক্রোধানল দৃষ্টি ফেলে হনহনিয়ে উপরে উঠে যায়।
জায়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনি হাসে। এতক্ষণ মনি জায়ানের আগমন বামপাশে থাকা আয়নাম মাধ্যমে দেখেছে। যার দরুন জায়ান সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার আগেই মনি সাউন্ড কমিয়ে দিয়েছিল। সে নিজেই চেয়েছিল জায়ান যেন নিজে এসে টিভি বন্ধ করে। একটু গাধার মতো খাটুনি খাটাল আরকি। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সেই রুমের পানে নজর ফেলে বলে,
‘আপনার ঐ রাগকে যদি নিজের কাবুতে না এনেছি, তো আমি আপনার জান না হুহ্! আপনি আমার অর্ধেক কথা বলা বন্ধ করেছেন। এর বিনিময়ে, আই মিন এর শাস্তিযোগ্য হবে এটা।’ বলে রান্না ঘরের দিয়ে এগোলো মনি। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে রুমে এলো। দরজার সামনে কতগুলো মার্বেল ছড়িয়ে রাখে। এগুলো কাল মনি আসার সময় মিদুলের কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এসেছিল। মূলত জায়ানের পিন্ডি চটকাতে।
মার্বেল গুলো বিছিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। এখন শুধু জায়ানের আসার অপেক্ষা মাত্র। দশ মিনিট অতিবাহিত হতে না হতেই ধপাস করে আওয়াজ হয়। মনি বারান্দায় দেখে চটজলদি রুমে এসে দেখে নাজমুল ফ্লোরে চিৎ হয়ে কাতরাচ্ছে। উঠে বসার চেষ্টা করতেই নিচে শক্ত ও ছোট কিছুর অনুভব করে। হাত দিয়ে তুলে এনে দেখে মার্বেল।
ততক্ষণে নজর মনির ওপরে পড়ে নাজমুলের। দরজায় হাত রেখে ঠেক দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। কোমড়ে হাত বুলিয়ে ক্ষেপে জিজ্ঞেস করল,
‘মার্বেল এখানে কেন ফেলেছো?’
‘ফেলেছি কোথায়, আমি তো খেলছিলাম।’ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল।
‘দরজার সামনে কেউ খেলে মার্বেল?’
‘আমি খেলছি, তো?’
‘তো মানে? আমি পড়ে ব্যথা পেয়েছি।’ তেজি গলায় বলল।
‘তো?’
‘আবার তো?’
‘আপনার চোখ অন্ধ, তাই তো!’ ঠোঁট গোল করে সুর দিয়ে বলল মনি।
‘নাহ!’
‘ভেতরে আসার সময় দেখে আসতে পারেন নি।’
‘তুম…’ বলতে গিয়েও নাজমুল থেমে যায়। কথায় কথা বাড়ে। মনির সঙ্গে কথা বললে সেটা বেড়ে আরো তিনগুণ হবে। তার চেয়ে ভালো ব্যথাকে কাবু করা। নাজমুল পাশের টেবিলে হলুদ রঙের একটা ফাইল দেখতে পেয়ে সেটা নিয়ে চলে যায়। ফাইল নিতেই সে রুমে এসেছিল।
মনি হাত বগলদাবা করে দাঁড়ায়। ভাবলো কি? আর হলো কি!
সমস্যা নেই, তার অন্য পদ্ধতি ভাবা আছে। এখন শুধু কাজ করার পালা।
_
‘জায়ান জেনে গেছে আমি ঢাকাতে আছি।’ মাহিদ বলল তার বন্ধুর উদ্দেশ্যে।
‘জানা কথা। সে একজন এম,পির ছেলে। চালাকচতুর কম নয় তিনি।’
‘কি করা যায়?’
‘আমার বাসায় চলে আয়।’
‘সমস্যা হবে না তো?’
‘নাহ!’
‘তুই কি আমায় সাহায্য করবি না?’
‘করব। তবে, আমার কথাও তোকে রাখতে হবে।’
মাহিদ মিনিট কয়েক চুপ থেকে বলল,
‘রাখব।’
‘ডান!’ বলে সে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে বলে,
‘ব্যাগ গুছিয়ে নে। আমি একটু পরে এসে তোকে নিয়ে যাব।’
‘ওকে।’
সে বেরিয়ে যায়। মাহিদ দু হাঁটুর উপর হাত ভর রেখে মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা ভাবছে। সেদিনের পর রজত আলি তাকে আর ফোন দেয়নি। হয়তো তিনি রেগে আছেন, মাহিদ নিজেও আর কল দেয় না তাকে।
.
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর নিলম মনির সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে। এই দু দিন ভার্সিটিতে আসেনি কেন কারণ জানতে চাইলে মনি সব খুলে বলে। কালকে আসবে বলে জানালে মনে পড়ে কাল শুক্রবার। তাই একেবারে পরশুদিন দেখা হবে তাদের। ফোন কাটার পরপরই জায়ান রুমে প্রবেশ করে। কার সাথে কথা বলেছে জিজ্ঞেস করতেই মনি নিলমের কথা বলে। ভ্রু কিঞ্চিৎ বাঁকালেও মুখে কিছু বলে না। জায়ানের রিয়াকশন দেখে মনি আগাগোড়া দেখে নিয়ে মুখ ভেংচি কাঁটে।
রাতে কম্বল টানাটানি করে শেষে দু’জনে দুই কম্বল নিয়ে ঘুমায়। তবে এক বিছানায়। মনি আগে ঘুমিয়ে গেলেও জায়ান পরে ঘুমায়। এপাশ ফিরে মনিকে দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে নিজেও জানে না। সকালে ঘুম ভাঙে হৈচৈ শুনে।
বিছানায় মনিকে দেখতে পায় না। উঠে বসে অনুমান করে ড্রইংরুম থেকেই চিল্লাচিল্লির শব্দ ভেসে আসছে। দেরি না করে নেমে পড়ে। করিডরে এসে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে মনি, নাজমুল সহ আরো দু জন কাজের মেয়ে একটি রাজ হাঁসকে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কেউ তাকে ধরতে পারছে না। ধরতে পারছে না বললে ভুল হবে। ঠোকরের ভয়তে কেউ কাছে যেতে পারছে না। এদিকে হাঁস পুরো বাড়ি ময়লা করে দিয়েছে তার পালক দিয়ে। জায়ান ওপর থেকে চেঁচিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলল,
‘হাঁস কে এনেছে?’
সবার নজর এবার ওপরের দিকে। চুপ হয়ে যায় সবাই। জায়ান পুনোরায় জিজ্ঞেস করতেই মনি ও বাকি’রা নাজমুলের দিকে হাতের ইশারায় দেখায়। নাজমুল এটা দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। সে নিজেও হাঁস কে এনেছে জানে না। হাঁসের উঁচু শব্দে তার ঘুম ভাঙে। বাহিরে বের হতেই সবাইকে হাসের পিছনে ছুঁটতে দেখতে পায়। মনি তখন তাকেও হাঁস ধরার কাজে নিয়জিত করে নেয়। সেও হাঁস ধরার চেষ্টা করছিল। উত্তেজিত হয়ে চটজলদি বলে উঠে,
‘না, না। আমি আনি নি স্যার। ম্যাম মিথ্যে কেন বলছেন?’
‘মিথ্যে কেন বলব। কাল রাতে তো আপনিই রাজ হাঁস খাওয়ার প্রসংগ উঠিয়েছেন।’
‘হ্যাঁ! কিন্তু আমি আনাই নি।’
‘মনি এটা তোমার কাজ।’ জায়ান ওপর থেকে কাঠিন্য কণ্ঠে শুধালো।
‘ঠেকা, ঠেঙ্গা!’
‘সেট-আপ! এই এটাকে ধরে জবাই করে ফেল।’
একজনকে নির্দেশ দিতেই মনি বলে উঠে,
‘আগে ধরে তো দিন।’
‘ধরব মানে?’
‘সবাইকে ঠুকরিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে স্যার। কেউ কাছে যেতে পারছে না।’
‘একটা হাঁস ধরতে পারছো না, এটা আবার বলছো মুখে।’
‘স্যার, আমি ছোট থেকেই এই হাঁসকে প্রচুর ভয় পাই। কাল তো সেটা বললামই।’ মিনমিন কণ্ঠে বলল নাজমুল।
‘তোমরা ধরো।’ কাজের মেয়েদের উদ্দেশ্য বলল জায়ান।
তারাও ভয়তে আগে যেতে পারছে না। একে তো হাঁসটি ছিল বেশ বড়সড়। তার ওপর বিকট আওয়াজ তুলে ডাকছে। জায়ান তাদের নিরবতা দেখে বিরক্ত হয়। হাঁসের ডাক শুনে তার আরো বিরক্ত বোধ হচ্ছে। শেষে সে নিজেই এগিয়ে আসে। নিচে নেমে দু হাত দু পাশে তুলে এগিয়ে যায় ধরতে। সবাই এখন জায়ান ও হাঁসের পানে চেয়ে আছে। জায়ান যত এগোচ্ছে হাঁস তত পিছিয়ে যাচ্ছে। এভাবে করতে করতে হাঁসের নিকট আসতেই হাঁস ঠোকর দেওয়ার জন্য জায়ানের দিকে এগিয়ে আসতে নিলে খপ করে লম্বা গলা ধরে জাগিয়ে ফেলে। পাখনা ধরে কাজের মেয়েদের হাতে তুলে দেয়। তাদের রান্নাঘরে যেতে বলে মনির হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে আসে জায়ান। এভাবে মনিকে নিয়ে যেতে দেখে নাজমুল কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। কালকে পড়ে যাওয়ার ফলে কোমড়ে এখনো ব্যথা আছে। তার ওপর সকালের হাঁসের টর্চার। আচ্ছামতো দিবে যে জায়ান মনিকে আজ। সেটা ভেবে মৃদু হাসে।
হাত ছেড়ে দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘সমস্যা কি তোমার? এভাবে টর্চার করছো কেন আমাকে?’
‘কই?’ আমতা আমতা কেটে বলল।
‘চুপ আছি বলে ভেবো না আমি কিছু বলব না। একটা থাপ্পড় দিলে পাগলামি ছেড়ে যাবে।’
মনি মাথা নত করে নিরুত্তর থেকে দাঁড়িয়ে রয়। রাগ ও ভয় দু’টোই তাকে ঘিরে ধরেছে। জায়ান মনিকে নিরব দেখে কপালে আঙুল বুলিয়ে নিজেকে শান্ত করে। মনির পিঠে হাত রেখে কাছে টেনে থুতনিতে হাত রেখে মুখ উঁচু করে। মনি নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। জায়ান স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,
‘লুক এট মি মনি।’
মনি তাকায় না। জায়ান মনিকে আরো কাছে টেনে নেয়। এবার মনি বিস্মিত চোখে তাকায়। জায়ান বাঁকা হাসে। বলে,
‘আই নো, তুমি এখন তাকাবে।’
মনি নজর পুনোরায় সরিয়ে ফেলে।
‘টিভির সাউন্ড বাড়ানো, মার্বেল দিয়ে নাজমুলকে ফেলে দেওয়া৷ হাঁস দিয়ে সকালের ঘুম হারাম করা। এই সবই তোমার ইচ্ছাকৃত করা কাজ। আমাকে জ্বালাতন করার নতুন অধ্যায়।’
মনির চোখমুখ ভীতিকরতায় ছেয়ে যায়। জায়ান তার উদ্দেশ্য ধরে ফেলেছে।
জায়ান মনির গালে ঠোঁট স্পর্শ করে কোমল স্বরে বলে,
‘এমন পাগলামি আবার করলে, আমিও আমার পাগলামি দেখাব। আমি জানি তুমি এটা চাও না। সো, থেমে যাও জানেমান।’
মনি শুকনো ঢোক গিলে নেয়। জায়ান এবার মৃদু চুম্বন এঁকে নেশাতুর কণ্ঠে শুধালো,
‘ইউ নো, আমার মধ্যে প্রচুর তৃষ্ণা! তোমাকে পাওয়ার তৃষ্ণা। মিটবে তোমাতে বিলীন হলে। তুমি কি সেটা চাও জোরপূর্বক বিলীন হয়ে তৃষ্ণা মিটাই?’
মনির চোখ বড়ো আকার ধারণ করে। জায়ানকে ঠেলে সরিয়ে হতচকিত কণ্ঠে বলল,
‘না, না। আমি একদম পাগলামি করব না। সভ্য, ভদ্র শান্তশিষ্ট ভাবে থাকব কথা দিলাম।’
জায়ান এক ভ্রু উঁচু করে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
‘সত্যি?’
‘তিন সত্যি!’
জায়ান কথাটা শুনে মাথা একবার দুলিয়ে বাথরুমের দিকে অগ্রসর হয়। মনি উল্টোদিকে ফিরে বুকে হাত রেখে ভারী নিশ্বাস ফেলে। এতক্ষণে বুকের ভেতরে বাজানো বাদ্যযন্ত্র কিছুটা হলেও বন্ধ হয়েছে। জায়ান কাছে আসলেই হার্টবিট কেন যে ফাস্ট কাজ করে জানা নেই। আর এতক্ষণ যা বলেছে সেটা মনে পড়তেই শরীরে অজানা কম্পন সৃষ্টি হয়। আপাতত ক’দিনের জন্য হলেও উল্টোপাল্টা কাজ বন্ধ করতে হবে। আর নয়তো জায়ান যে থ্রেট দিয়েছে, সেটা কাজে লাগাবে।

নাস্তা করার সময় মনিকে এত শান্তশিষ্ট দেখে নাজমুলের সন্দেহ হয়। মনে মনে ভেবে নেয় জায়ান মনে হয় মনিকে ইচ্ছামত সায়েস্তা করেছে। যাক, এখন থেকে এমন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখলে ভালো হবে। না কোনো জ্বালাতন সহ্য করতে হবে, না মুলা ভাইয়া ডাক শুনতে হবে। জায়ান মনির পানে আড়চোখে তাকিয়ে অগোচরে স্মিত হাসে। সে জানে মনির পাগলামি বন্ধ করার মেডিসিন কি। কিন্তু সেটা এত দ্রুত কাজে আসবে সেটা জানত না৷ তবে ভালোই হয়েছে। মনি মোমের পুতুলের ন্যায় সোজা রূপ ধারণ করেছে। এটাই তো সে চেয়েছিল। জায়ান তার কাজে সফল হয়েছে।
জায়ানের ভয়ে মনি সারাদিন কোনো প্রকারান্তর পাগলামি করে নি। চুপচাপই ছিল। রাতেও কম্বল নিয়ে টানাটানি আর হয় নি। যেভাবে ঘুমিয়েছে, সেভাবেই নতুন একটি সূর্যোদয় হয়েছে। জায়ান মনিকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে যায়।
বান্ধবীদের সঙ্গে ক্যান্টিনে আড্ডা দেওয়ার পর ক্লাস করতে যায়। সব ক্লাস শেষ হবার পর মাঠে আসতেই নিলমের সঙ্গে দেখা হয়ে তাদের। ভার্সিটিতে আসার পর থেকে চার বান্ধবী মিলে কতবার যে কল দিয়েছে তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই। এখন নিলমকে হুট করে উপস্থিত হতে দেখে তারা কিছুটা অবাক হয়। তাদের কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মনির হাত ধরে জোরপূর্বক টেনে বাহিরে নিয়ে আসে। সঙ্গে তারানা, তমা, মিনাকেও পিছু পিছু আসতে বলে। তারা গেটের বাহিরে আসতেই সবাইকে গাড়িতে উঠতে বলে নিলম। মনিকে সামনে বসিয়ে সিটবেল্ট পড়িয়ে দিয়ে নিলম অপর পাশে উঠে বসে।
তারা বার বার ‘কোথায় যাচ্ছি আমরা’ জিজ্ঞেস করার পরও নিলম কোনো উত্তর দেয় না। শেষে মনি প্রচুর ক্ষেপে গাড়ির চাবি খুলে নিয়ে বলে,
‘আগে বলবি তারপর গাড়ি স্ট্রার্ট দিবি।’
‘চাবি দে। গেলেই দেখতে পারবি।’
‘নাহ! আগে বল।’
‘ধুর! দে।’ বলে এক প্রকার কেঁড়ে চাবি নিয়ে নেয় নিলম।
গাড়ি চালাতে আরম্ভ করে। মনি সহ বাকিরা নিলমের এমন অদ্ভুত আচরণে অবাক না হয়ে পারে না। তারা বুঝতে পারছে না হঠাৎ নিলমের মাঝে এমন পরিবর্তন ঘটার কারণ কি? আর এখন না বলে কোথায়ই বা নিয়ে চলল তাদের।
.
.
#চলবে?

#আমি_তোমাতে_বিলীন
#পর্ব_১৭
#সুমাইয়া মনি

নিলম মনিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় ২টার দিকে। মনি যতক্ষণ না আড়াল হচ্ছে, ততক্ষণ নিলম মনিকে গাড়িতে বসেই দেখছিল। যখন তার আড়াল হয় তখন নিলমের ভীষণ কষ্ট অনুভব হয়। দু ঘন্টা তারা এক সঙ্গে ছিল। নিলমের ভালো লেগেছে। কিছুক্ষণের জন্য ভুলেই গিয়েছিল যে মনি এখন অন্যকারো। আজ তমার জন্মদিন ছিল। সেটা কারো মনে ছিল না। কিন্তু নিলমের মনে ছিল। শুধু তমা নয় বাকিদের জন্মদিনের লিস্টও আছে তার কাছে। একাই একটি রেস্টুরেন্টে ছোট পার্টির আয়োজন করেছিল তমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। এ ক’দিন মনির সঙ্গে তার তেমন একটা দেখাসাক্ষাৎ হয় নি। তাই নিলম এক কাজে দু কাজ সেরেছে। একদিকে তমার জন্মদিন উপলক্ষে পার্টি রেখেছিল, আরেকদিকে মনির সঙ্গে এর বিনিময় কিছু সময়ও কাটিয়ে নেয়। ভালোবাসার মানুষটিকে কাছ থেকে দেখার ইচ্ছে কার না থাকে। তারও ব্যতিক্রম নয়। তাই এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। তবে তার কাছে যেমন ভালোবাসার মুল্য আছে, তেমনি বন্ধুত্বের গুরুত্ব বিদ্যমান। কোনোটিই তার কাছে ছোট নয়। নিলম ও মনির উপস্থিত জায়ান বারান্দা থেকে দেখেছে। যতক্ষণ নিলম গাড়ি নিয়ে বসেছিল ততক্ষণ জায়ান বারান্দাতেই ছিল। নিলমের যাওয়ার পরই জায়ান ভেতরে আসে। মনি লাঞ্চ করে এসেছে। গোসলের জন্য টাওয়াল নিয়ে বাথরুমের দিকে অগ্রসর হতেই জায়ানের গলার স্বর শুনে থেমে যায়।
‘কোথায় ছিলে?’
অবশ্য জায়ান জানে মনি এতক্ষণ কোথায় ছিল। কার সাথে ছিল। কেননা মনির পিছনে গোপনে লোক ঠিক করে রেখেছে। যার দরুন জায়ান জানে মনি কোথা থেকে এসেছে। তবুও ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করে।
‘রেস্টুরেন্টে! তমার বার্থডের জন্য ছোট পার্টির আয়োজন করেছিল নিলম।’
‘লাঞ্চ নিশ্চয় করে এসেছো?’
‘হ্যাঁ!’ মনি ছোট করে জবাব দেয়।
জায়ান চুপ হয়ে রুম থেকে বেরোলো। মনি এগিয়ে গেল বাথরুমের দিকে। জায়ান টেবিলে বসার পর সার্ভেন্টরা এসে খাবার দিয়ে যায়। নাজমুলকে নিয়ে দুপুরের আহার শেষ করেন তিনি। রুমে ফিরার পর দেখে মনি আধোভেজা চুল নিয়েই ঘুমিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কেবল ঘুমিয়েছে। জায়ান কোনো প্রতিক্রিয়া করে না। প্রথমে টাওয়াল দিয়ে মনির চুল আলতোভাবে মুছে দিয়ে মনির ফোনট নিয়ে সোফায় বসল। লক জায়ানের জানা ছিল। তাই সহজেই ফোন আনলক করে গ্যালারিতে যায়। সেখানে আজকের তোলা সব ছবি গুলো জায়ান এক এক করে দেখে নেয়। বেশিরভাগ ছবিই ছিল নিলম ও মনির। এক সঙ্গে বেশ কিছু ছবি ছিল ওদের। জায়ান কিছুটা ক্রোধান্বিত চোখে মনির ঘুমন্ত মুখের পানে তাকায়। পরক্ষণে নজর সরিয়ে ফোন সেখানে রেখে বিছানার নিকট আসে। মনি কাত হয়ে শুনে ছিল। চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে গলা পর্যন্ত কম্বল টেনে প্রস্থান করে।
মনি এত গভীর ঘুমে ছিল সে কিছুই টের পায় নি।
‘এখানে সিসি ক্যামেরায় দু’জন লোককে বাড়ির সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে স্যার দেখুন!’ নাজমুল কথাটি বলে জায়ানের দিকে ল্যাপটপ ঘুরিয়ে দিল।
জায়ান সুক্ষ্ম নজর ফেলে দেখে নেয় সেই আগন্তুক দু’জন ব্যক্তিকে। দু’জনার মুখে মাস্ক ছিল। তাই চেহারা স্পষ্ট নয়।
জায়ান গুরুগম্ভীর কণ্ঠে শুধালো,
‘১৫-১৬ তারিখের ফুটেজ চেক করে দেখো। সেদিন যদি তাদের দেখা যায়। তাহলে এটাই মাহিদ।’
‘রাতুল বলেছে মাহিদ ১৫ তারিখে ঢাকা এসেছিল।’
‘হুম, ফুজের দেখো। তাহলেই বুঝতে পারব এটা মাহিদ নাকি অন্য কেউ।’
‘আচ্ছা।’
একে একে তার পরেরদিন ও আগের দিনের ফুটেজ চেক করে এই দু’জনকে দেখতে পায়। তারা কনফার্ম হয় এটা মাহিদ, আর পাশের জন্য সম্ভবত তার বন্ধু না হয় লোক।
‘রাতেরবেলার ফুটেজ গুলো দেখো। আমি রাতুলের সঙ্গে কথা বলে আসছি।’
‘ওকে।’
___
‘অপুন, তোর বাসায় তো আসলাম। কিন্তু আমি কি এখানে নিজেকে হাইড করে রাখতে পারব। মানে বলছে চাইছি জায়ান নিশ্চয় আমাকে পাবে না?’
‘নো চান্স! নিশ্চিতে থাকতে পারবি।’
‘থ্যাংকস গড!’
‘আগে কি করছিস?’
‘লোক তো ঠিক করাই আছে। যে কোনো মুহূর্তে জায়ানের ওপর আক্রমণ করা যাবে।’
‘নির্দিষ্ট সময় বের কর।’
‘সকালে?’
‘নাহ! রাতে।’
‘ডান।’
‘বলে দে তোর লোকদের।’
‘বলছি এখনি।’
‘বোস, আম্মু ডাকছে আমাকে। আসছি।’
‘যাহ!’
__
মনি আছরের পর ঘুম থেকে উঠে দেখে জায়ান বাহিরে গিয়েছে। একাই গিয়েছে। নাজমুল বাড়িতে ছিল। হাতমুখ ধুয়ে ড্রইংরুমে এসে সোফায় বসে। টিভি ছেড়ে দেখে। একবার ভাবে জায়ানকে কল দিবে। কিন্তু পরপরই ভাবে যদি কোনো মিটিং এ থাকে। এই ভেবে আর দেয় না। নাজমুলকে হাঁকিয়ে ডেকে ড্রইংরুমে আসতে বলে। নাজমুল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল। মনির ডাক শুনে ফোন রেখে বাহিরে আসে। ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই জিজ্ঞেস করল,
‘বলো?’
‘কোথায় গিয়েছে আপনার স্যার?’
‘কেন?’
‘আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন মুলা ভাইয়া।’
চোখমুখ ঘুচে এলো নাজমুলের। মনির দিকে তাকিয়ে বিরক্তিমাখা কণ্ঠে বলল,
‘তোমার মতো ফাজিল মেয়ে কখনো নজরে এসেছে কি-না জানা নেই।’
‘এখন তো চোখের সামনে নাচানাচি করছে। দেখেনিন আমাকে।’
নাজমুল কিছু বলে না। মনি পুনোরায় বলে,
‘কোথায় গেছে বলেন।’
‘বলে নি আমাকে।’
‘কেমন এ্যাসিস্ট্যান্ট আপনি? নিজের স্যার কোথায় গেছে বলতে পারেন না।’ পিঞ্চ মেরে বলল মনি।
‘মানুষের পার্সোনালি কোনো কাজ থাকতে পারে না।’
‘তো?’
‘তো মানে কি? সে হয়তো তার কোনো পার্সোনাল কাজে বের হয়েছে।’
মনি সেকেন্ড কয়েক চুপ থেকে তৎক্ষনাৎ বলল,
‘আপনার স্যারের কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি?’
‘হপ! এছাড়া অন্য কোনো পার্সোনাল কাজ থাকতে পারে না।’ ধমকিয়ে বলল।
মনি ট্যারা চোখে তাকায়। নাজমুল কপাল কুঁচকে বলে,
‘কি হলো?’
‘কল দেন তার কাছে। জিজ্ঞেস করুন কোথায় গিয়েছে।’
‘হাহ! যার লাগবে সে যেন দেয়।’ বলেই নাজমুল চলে গেলে।
মনির মুখ বেঁকে আসে। বিড়বিড় করে বলে,
‘দেখব তো আমিও!’
জায়ানকে কল দিতে চেয়েও কল দেয় না মনি। কিঞ্চিৎ ভয় এসে বুকে বিক্ষিপ্তভাবে নাচছে। আপাতত তার জন্য অপেক্ষা করবে মনি। কিছুক্ষণ পর শ্বাশুড়ির কল আসে। তার সঙ্গে কথা বলা আরম্ভ করে।
.
জায়ানের বাসায় আসতে রাত হয়ে যায়। এতটা ব্যস্ত ছিল যে ঘড়িট সময় দেখতে ভুলে গেছে। বাসার সামনে গাড়ি এসে থামতেই নেমে যায়। পাওয়ার বাটনে ক্লিক করে স্ক্রিনে বারোটা ছুঁই ছুঁই দেখতে পায়। মনির তিনটা এসএমএসও নজরে আসে। সীন করতে করতে রুমে দিকে পৌঁছায়। মনি ঘুমিয়ে কাদা। টেবিল লাইটের আলোয় মনির স্নিগ্ধ চেহারার দিকে তাকায়। হাঁটু ভাজ করে মুখ বরাবর বসে ঘন্টাখানিক আগের কথা গুলো ভাবছে।
হাইওয়ে রোড পাড়ি দিয়ে ওসির সঙ্গে এপাড়ে আসে জায়ান। রেড ব্লু রেস্টুরেন্টর ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। বেশ কিছুক্ষণ কথপোকথন হয় তাদের মাঝে। জায়ানের সঙ্গে এখানের ওসির আগে থেকেই চেনা পরিতিচিত ছিল। তারা মাহিদের বিষয় আলাপ করছিল তখনই একজন ওয়েটার এসে খারাপ সার্ভ করে। সেই মুহূর্তে ওয়েটার ছেলেটি চিল্লিয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে। তার ডান হাত থেকে গলগলিয়ে রক্ত জড়ছিল। তাকে গুলি করা হয়েছে।
জায়ান ও ওসি উঠে উত্তেজিত হয়ে গুলি করা ব্যক্তিকে খুঁজতে লাগলেন। আশেপাশের মানুষজন এটা দেখে দ্রুত রেস্টুরেন্ট ত্যাগ করতে আরম্ভ করল। এক প্রকার হুড়াহুড়ি পড়ে যায়। জায়ান ওসিকে বাহিরে দেখতে বলে ছেলেটিকে ধরতে যায়। তাকে এম্বুলেন্সের সাহায্যে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। জায়ানের কথা অনুযায়ী পুরো রেস্টুরেন্টে সিল করে দেওয়া হয় দু দিনের জন্য। ভেতরে-বাইরে সব সিসিটিভির ফুটেজ নেওয়া হয়। তৎক্ষনাৎ খোঁজাখুঁজি শুরু হয় গুলিবর্ষণকারীকে। মুলত গুলিটি জায়ানের উদ্দেশ্য করে ছুঁড়া হয়েছিল। এমতাবস্থায় ছেলেটি জায়ানের নিকট আসার ফলে তার হাতে লাগে।
আজ যদি ছেলেটির স্থানে গুলিটি তার হাতে বা গায়ে লেগে যেতো তখন? মনি কি ওর জন্য কষ্ট পেতো? খারাপ লাগত তার জন্য? অবশ্য না লাগারই কথা। এক প্রকার জোর করেই বিয়ে করেছে ওঁকে। তাকে যে মনি ভালোবাসে না এ ব্যাপারে তিনি কনফার্ম। কথা গুলো ভেবে জায়ান সরু নিশ্বাস নিলো। মনির গালে বুড়ো আঙুল বুলিয়ে তাকিয়ে থেকে বাথরুমের দিকে এগোয়।
তিনটার দিকে হঠাৎ মনির ঘুম ভেঙে যায়। ডান পাশে হাত রেখে দেখে জায়ান বিছানায় নেই। অথচ টেবিল লাইট বন্ধ। লাইট জ্বালিয়ে পুরো রুমে নজর বুলিয়ে নেয়। জায়ান নেই! ফোন হাতে নিয়ে দেখে তিনটা বাজে। গায়ে চাদর পেচিয়ে বেরোয়। পাশের রুমে উঁকি দিয়ে দেখে জায়ান সেই রুমেও নেই। নিচে নেমে আসে। মনি বুঝতে পারে জায়ান এসেছিল। কিন্তু আবার কোথায় চলে গেছে সেটা তার অজানা। কল দেওয়ার কথা ভেবেও না দিয়ে নাজমুলের রুমের দিকে অগ্রসর হলো। তাকে একবার জিজ্ঞেস করতে চায়।
দরজা খোলা ছিল। ফ্লাশলাইট জ্বালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। আলো ফেলতেই কম্বল জড়িয়ে আরাম করে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তাকে।
মনি একটু মুখের দিকে ঝুঁকে ফ্লাশলাইট থুতনির নিচ থেকে মুখের উপর ফেলে। এতে মনির চেহারা ভয়ংকর দেখাচ্ছে। সেই অবস্থায় মনি নাজমুলকে ডাকতে আরম্ভ করে।
‘শুনছেন মুলা ভাইয়া। মুলা ভাইয়া। এই মুলা ভাইয়া।’
নাজমুলের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুমঘুম আঁখিযুগল মনির উপর পড়তেই চেঁচিয়ে লাফিয়ে কম্বল জড়ানো অবস্থায় ধপাস করে খাটের উল্টোদিকে পড়ে যায়। দৃশ্যটি মনি দেখে কূলকিনারা বিহীন হাসিতে ফেটে পড়ে। মনির হাসি শুনে নাজমুল উঠে বসে বুকে ফু দিয়ে এনার্জি লাইট জ্বালায়। মনি তখনো হেসেই চলেছে। নাজমুলের চোখমুখে এক রাশ রাগ ভর করল। চেঁচিয়ে বলল,
‘এটা কোন ধরনের ফাজলামো বলে মনি?’
হাসতে হাসতে মনির দু গালের চাপায় ব্যথা অনুভব করে। দু হাত দ্বারা দু গাল চেপে ধরে হাসি নিয়ন্ত্রণে এনে বলল,
‘আমি আপনাকে ডাকছিলাম। আপনি যে ভয় পাবেন সেটা জানতাম না।’ বলেই ফিক করে হেসে ফেলে।
‘এভাবে কেউ ডাকে। কতটা ভয় পেয়েছি জানো।’ রেগেমেগে বলল।
‘স্যরি! মুলা ভাইয়া।’
‘রাখো তোমার স্যরি। আমার রুমে কেন এসেছো?’
‘আপনার স্যার কোথায়?’
‘স্যার কোথায় আমি কীভাবে বলল?’
‘আপনি জানেন না?’
‘নাহ! তিনি রুমে নেই?’
‘নেই, তাইতো আপনার কাছে এসেছি জিজ্ঞেস করতে।’
‘আমাকে তো বলেনি কিছু।’
‘তিনি বাড়িতে এসেছিল না?’
‘হ্যাঁ! এসেছিল। কিন্তু আমাকে তো বলে যায় নি বাহিরে।’
মনির আদলে নিমিষেই চিন্তার ছাপ এসে ভর করল। নিরব রয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। এক মুহূর্ত দেরি না করে ফোন দিতে আরম্ভ করে জায়ানকে। কল ঠিকিই যাচ্ছে, কিন্তু জায়ান ফোন রিসিভ করছে না। অস্থিরতা এসে ঝাপটে ধরে তাকে। কয়েক ঘন্টা যাবত মানুষটির সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। ঠিক আছেন তো তিনি? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করল মনি।
.
.
.
#চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here