গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️,পর্বঃ০৯,১০শেষ
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৯
ফারিদার সেদিকে খেয়াল নেই সে তার মতো টিকিট করছে, আর ইভান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তার বউটাকে আজ কত সুন্দর লাগছে, পুরাই ফিদা ইভান আজ। ইভান ধীরে পায়ে ফারিদার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় আয়নায় ইভানকে দেখে ফারিদা চমকে যায় কখন এলো সে, যাই হোক এখন ফারিদা এখন ফোনটা রেখে দিলো আর ইভানের পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে ইভান নিজের ডান হাতটা আয়নার মধ্যে রেখে ফারিদার যাওয়া আটকায়। ফারিদা বা দিকে যেতে চাইলেও সেম কাজটাই করে ইভান। ফারিদার তো অবস্থা খারাপ এসি চলছে তাও ঘামছে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে কপালে।ইভান তা দেখে সে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে
—-ঘামছো কেন?গরম লাগছে বুঝি? ফারিদার মুখে আলতো করে ফু দিয়ে, ফারিদার কাটা চুলগুলো ফারিদার মুখে এসে পরে। ফারিদা অন্য দিকে তাকিয়ে বলে
—-হাতির মতো যদি কেউ সামনে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে তো গরম লাগবেই তাই না? ইভান অবাক হয়ে যায়, ইভান মনে মনে বলছে বলে কি,আল্লাহ্ এতো রাগ কিভাবে কি করবে। ফারিদা ইভানের হাতের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায় আর বলে
—-আমি ঘুমাবো, বলেই ওয়াশরুম চলে যায় আর ফ্রেশ হয়ে আসে দেখে ইভানও চেন্জ করে নিয়েছে। ফারিদা এসির পাওয়ারটা লো করে ব্লাইনকেট টা নিয়ে সোফায় চলে যায় আর সাথে একটা বালিশ নেয়। ইভান তা দেখে বিছান ছেড়ে এসে দাড়ালো ফারিদার সামনে ফারিদা ভ্রু-উচুঁ করে ইশারায় বলে কি হয়েছে? ইভান ফারিদাকে কিছু না বলে কোলে তুলে নিল। ফারিদা বলে
—-এই এই কি করছেন,ছাড়ুন, ছাড়ুন বলছি। ইভান কিছু না বলে ফারিদাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজে, ফারিদাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে আর বলে
—-নড়াচড়া করলে খবর আছে আমি ঘুমাবো। ফারিদা নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললো
—–ঘুমান আমাকেও ঘুমাতে দিন। ইভান বলে
—-ঘুমাও,বারণ করছে কে? ফারিদা বলে
—-কমপক্ষে একটা বালিশতো আনতে দিবেন। ইভান বলে
—-হ্যা আমি তোমাকে ছাড়ি তারপর আবার যাও সোফায় আমি আবার তোমায় কোলে করে নিয়ে আসি। লাগবেনা বালিশ আমার হাতে ঘুমাও।
ফারিদাও কিছু বলেনা মুখে বিরক্তের ভাব নিয়ে শুয়ে পরে ইভান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে সেও ঘুমিয়ে পরে। সকাল মিষ্টি রোদের আলো চোখে পরতেই ঘুম ভাঙলো ফারিদার, কিন্তু ঘুম ভেঙে যাবার পর যা দেখে তা দেখে অবাক হয়ে গেলো,সম্পূর্ণ রুম বেলুন দিয়ে সাজানো, তারপর বড় করে লেখা সরি, আর সামনে ইভান কান ধরে দাড়িয়ে আছে, ইভানের পরনে ওয়াইট কালারের টিশার্ট আর গ্রে কালাররে টাউজার, চুলগুলো এলেমেলো দেখে মনে হচ্ছে একটা বাচ্চা যে গ্লাস ভেঙে ফেলছে আর ভয়ে আম্মু সামনে কান ধরে দাড়িয়ে সরি বলছে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়, ইভান বলে
—-যাই হোক একটু তো হাসলো।
ইভান নিচে গিয়ে সবাইকে বললো কার কি কাজ,বাসার সবাই জানে ইভান ফারিদাকে মানানোর চেষ্টা করছে, সাথে আছে ফারিদার মা বাবা আর ফারিন ও হেল্প করছে ইভানকে । কিন্তু এইসব দেখে একজন রাগে ফুলছে সে আর কেউ না মিরা, কারণ তার এতো দিনের প্ল্যান ইভানকে নিজের করে পাওয়ার আশায় আজ জল ঢেলে দিল ইভান নিজেই। তারপর খাবার টেবিল ফারিদা যখন নাশতা করতে বসে। ইভান আসে খাবার হাতে পরনে তার সার্ভেন্ট এর পোশাক। তার হাতের পেলেট টা রাখে ফারিদার সামনে, ফারিদা দেখে ২টা টোস্ট একটায় সেড ফেস আরেকটায় সরি লেখা। তার একটু পর আসে ইরিন, হাতে তার কফি মগ।মুখে মিষ্টি হাসি সেটা রাখে ফারিদার সামনে ফারিদা ভালোকরে খেয়াল করে দেখে কফি মগেও সেড ইমোজি। ফারিদার তো ইচ্ছে করছে ইভান কে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু সবার সামনে যে সেটা সম্ভব না।
তাই সে চুপচাপ খেতে লাগলো। খাওয়ার পর উঠে ফারিদা যখন সামনে ঘুরতে যাবে দেখে আস্ত একটা মিকি-মাউস সেটা ভিতরে অংশ, মিকি মাউস টা একটা টেডিবিয়ার নিজের পিছন থেকে এনে ফারিদার হাতে দেয় সেখানেও লেখা সরি। ফারিদা টেডিবিয়ারটা নিয়ে ওপরের দিকে ওঠতে গেলো দেখে ইভান আর ইভানের মা ঝগড়া করছে। একসময় ইভানের মা অন্য দিকে মুখ ফিরে নিয়ে চলে যেতে নিলে ইভানের বাবা তার সামনে গিয়ে এক কান ধরে সরি বলে আর তাকে জড়িয়ে ধরে। ফারিদা সেটা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ওপরে উঠছে তখনই সামনে দাঁড়িয়ে দেখে ইভান এক কান ধরে সরি বলছে। কিন্তু ফারিদা ভেংচি কেটে চলে গেলো। ইভানের চাচি আসে সাথে ইভানের চাচাও ইভানের চাচি রাগ করে বলছে বাড়ি চলে যাবে আর ইভানের চাচা বলছে
—–বউ গো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না,যাইয়ো না। বউগো তুমি রাগ কইরা বাপের বাড়ি যাইয়ো না। ফারিদা আর নিজের হাসি চেপে রাখতে পারলো না হুহুহু করে হেসে দিল। ইভানের চাচা চাচি নিচে চলে গেলো। ফারিদা নিজের রুমে যায় গিয়ে দেখে একটা নিল চিরকুট। সেখানে লেখা
—- সরি প্লিজ আমার লক্ষ্মী বউটা। ফারিদা সেটা দেখে, মুচকি হাসলো। তার আর সকালে যাওয়া হলোনা নিজের ইচ্ছেতেই যায়নি। কিন্তু সারিদিনে ইভানকে সে কোথাও দেখেনি, আর বাসার সবাইও তেমন কথা বলেনি। প্রতিদিনের মতো ফারিদা খাওয়ার পর ঘুমায়, যখন ওঠে দেখে সন্ধ্যা ৭ টা বাজে তাড়াতাড়ি ওঠে, দেখে ইভান এখনো ফিরেনি, রুমের লাইট ওফ তাই সে ওন করলো আর দেখে সামনে একটা পারপাল কালারের গাউন অনেক সুন্দর কারুকাজ হুয়াইট আর গোল্ডেন ইস্টোনের, আর তার পাশেই মেচিং করা জুয়েলারি। সাথে একগুচ্ছ লালা গোলাপ আর একটা চিরকুট তাতে লিখা। জলদি পড়ে তৈরি হয়ে ছাঁদে চলে আসো। ফারিদা সেটা পরে নেয় আর হালকা সাজে ইভানের পছন্দ আছে বলতে হয়। ফারিদা সেটা পরে বেড়হয় দেখে বাসা সম্পূর্ণ অন্ধকার। ফারিদা ছাঁদের দিকে যাচ্ছে। অংশ ইভানকে কল দিয়ে বলে
—-ভাইয়া ভাবি ছাঁদের দিকে কেনো যাচ্ছে? ইভান বলে
—-জানিনা তো, আমিতো মিরাকে বলেছিলাম চিরকুটটা আর ড্রেসটা রুমে রেখে আসতে। মিরাকেও তো দেখছি না তুই অপেক্ষা কর আমি আসছি। ফারিদা ছাঁদে চলে যায়। অংশ এসেছিলো ফারিদাকে নিয়ে যেতে নিচে কিন্তু সে দেখে ফারিদা হাতে গোলাপ আর চিরকুটটা নিয়ে যাচ্ছে ছাঁদের দিকে তাই সে ইভানকে কল দেয়। ফারিদা ছাঁদে গিয়ে দেখে ছাদেঁ ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে আছে ফারিদার কেনো জানি খুব ভয় করছে। ফারিদা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
—-ইভান কোথায় আপনি। কোনো আওয়াজ না পাওয়াতে সে এগিয়ে যায় সামনে যেতেই দেখে একটা ছায়া। ফারিদা ভাবে হয়তো ইরিন তাই সে তার কাছে যায়। ফারিদা বলে
—ইরিন। আর কিছু বলতে যাবে ছায়াটা ফারিদাকে টান দিয়ে ছাদের রেলিঙের দিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর তাল সামলাতে না পেরে ফারিদাও রেলিঙের দিকে ঝুঁকে যায়। আর মিরা বলে
—-ইভান আমার শুধুই আমার বুঝলি, আর তুই থাকতে আমি ইভানকে পাবোনা তাইতোকে মরতে হবে, ফারিদা। ফারিদা ঘুরতে যাবে তখনই মিরা ফারিদাকে আরেকটা ধাক্কা দেয় আর ফারিদা আরো নিচের দিকে ঝুঁকে যায়। ফারিদা বলে
—-দেখো ভালো হচ্ছে না, ইভান জানতে পারলে। মিরা বলে
—-ইভানের নাম তুই তোর মুখে নিবি না ইভান শুধুই আমার বুঝলি তুই। বলেই মিরা ফারিদাকে অনেক জোরে ধাক্কা দেয় আর সাথে সাথে ছাঁদের লাইট ওন হয়ে যায়। ফারিদা। ইভান বলে চিৎকার করে। আর তখনই ফারিদা বলে দৌড়ে আসে ইভান কিন্তু লাভ হয়নে। কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই সব যেনো শেষ হয়ে যায় ফারিদা নিচে পরে যায় মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে মাথা থেকেও। ইভান নিজের মধ্যে নেই পাগলের মতো দৌড়ে নিচে নামছে। ফারিদা আর ইভানের চিৎকার শুনে সবাই একসাথে ওপরে চলে আসে আর দেখে ইভান পাগলের মতো নিচে নামছে। সবাই ইভানকে কিছু বললেও সে কিছু বলে না বাগানে আর সবাই ইভানকে ফলো করে যায় দেখে ফারিদার রক্তাক্ত দেহ পড়েআছে। ইভান দৌড়ে গিয়ে ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো। বাসার সাবই অবাক ফারিদাকে এই অবস্থায় দেখে। ইাভান পাগলের মতো ডাকছে
—-এই এই এই ফারিদা, এই ওঠো বলছি, ভালো হচ্ছে না কিন্তু, এই মেয়ে। অংশ এসে বলে
—-ভাইয়া ভাবিকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। সবার কথা শুনে ইভান ফারিদাকে কোলে তুলে নিলো অংশ গাড়ি বের করে ফারিদাকে হসপিটালে নিয়ে। এলো আর ঐদিকে মিরা বাঁকা হাসছে আর মিথ্যা চোখের পানি ফেলছে।
চলবে….
গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️
Writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ-১০+শেষ
মানুষের জীবনে সুখ দুঃখ দুনটাই আসে একটার পরই আরো একটার আশা করা যায়। ফারিদাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে, আজ ইভান একজন বড় মাপের ডক্টর হওয়ার পরও সে আজ দূর্বল, ইভান সেই কখন থেকে মিরার দিকে লাল চোখে, তাকিয়ে আছে। ফারিদার মা-বাবা ফারিনও আসছে। ফারিন অনেক কান্না করছিল তাই অংশ তাকে নিয়ে বাইরে চলে যায়। ফারিদার মা আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না করছে। মিরা ভাবে এটাই সময় ইভানের কাছে ভালো সাজার। মিরা ইভানের কাছে গিয়ে কিছু বলতে যাবে। ইভান উঠে দাড়িয়ে দেয় এক চড় বাসিয়ে মিরা ছিটকে গিয়ে নিচে পরে। চড়টা এতটাই জোড়ে ছিল যে মিরার ঠোঁট কেটে যায়। ইভান গিয়ে মিরা চুলের মুঠি ধরে আবার দাড় কারায় ইভানের মা এগিয়ে আসলে ইভান এমন ভাবে তাকায় যে সে আর কিছু বলতে পারেনা। সবাই বুঝতে পারছে মিরা এমন কিছু করেছে যার কারণে তার এমন অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। মিরা অনেক কষ্টে বলে
—কি করছ কি ইভান ভাইয়া? ইভান এবার আরেক হাত দিয়ে মিরার গলা টিপে ধরে আর বলে
—-তোকে আজ মেরেই ফেলবো। আমি নিজে দেখেছি তুই ফারিদাকে ধাক্কা দিয়েছিস। জানে মেরে ফেলবো যদি আমরা ফারিদার কিছু হয় কসম খোদার ।মিরার তো হাত পা দিয়ে কাপঁ উঠে গেছে ইভান কি করে জানলো। মিরা বলে
—-চমার কষ্ট হচ্ছে, আর ফারিদা পরে যাচ্ছিল আমি ওকে। আর কিছু বলতে যাবে ইভান আরো জোড়ে গলা চেপে ধরলো। তখনই ফারিদার বাবা আর ইভানের বাবা এসে ইভান কে ছাড়ায়। কিন্তু লাভ হয়না। ইভান আবার গিয়ে পর পর ৩টা চড় বসিয়ে দেয়। আর বলে
—-তোকে আমি জেলে দিব। কেনো করলি এমনটা? মিরা বলে
—-কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি। সাথে সাথে আরেকটা চড় পরলো তার গালে। সামনে তাকিয়ে দেখে মিরার মা। মিরার মা বলে
—- আমি সব শুনেছি, তোকে নিজের মেয়ে বলতে ঘৃণা করছে। ইভান বাবা। ইভান হাত দিয়ে থামিয়ে বলে
—-কাজ হবে না, ওকে জেলের ভাত খেতেই হবে। মরি যেই না দৌড় দেয় পালানোর জন্য, পিছন পিছন ইভানও,ইভান সামনে তাকিয়ে দেখে অংশ আর ফারিন আসছে। ইভান বলে
—-মিরাকে ধর। ফারিনকে যখন মিরা ক্রস করতে যাবে তখনই ফারিন মিরার খুলা চুলগুলো নিজের হাতে পেচিয়ে ফেলে। আর টান মেরে নিচে ফেলে দেয়। অংশ তো হা হয়ে তাকিয়ে আছে। ইভান এসে আরেকটা থাপ্পড় মারে মিরার গালে। মিরার গালগুলো লাল টোটকে হয়েগেছে। তারপর ইভান বলে
—-তোকে আমি বলে ছিলাম চিরকুটটা নিয়ে ফারিদাকে দিতে। আর আমি চিরকুটে লিখেছিলাম, ভালোবাসি বলিনা কিন্তু তোমায় বাসি,সেটা পরে ফারিদা ছাঁদে কেনো যাবে। আর তাছাড়া আমি নিজ চোখে দেখেছি তোকে তুই আমার ফারিদাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেদিয়েছিস। তখনই একটা ডক্টর এসে বলে।
—-ডক্টর ইভান কি করছেন কি এটা বাসা না, হসপি,,,, আর কিছু বলতে যাবে ইভান তার দিকে তার রক্ত চোখে তাকিয়ে বলে
—–এটা আমাকে শিখাতে হবে না। আর হসপিটালটা আমার বাবার নামে সো, চুপচাপ নিজের কাজে যান,আর অংশ তুই পুলিশকে কল কর। অংশ কল করে দেয় ফারিন গিয়ে মিরার চুলগুলো ইচ্ছে মতো টানে।আর বকে। কিছু সময় এর মধ্যেই মিরার কুকর্তি প্রকাশ পেয়ে যায়। ইভানের আন্টি হাজার বললেও ইভান শুনেনি। বাধ্য করেছে মিরাকে জেলে যেতে। ইভান আর পারে না বুক ফেটে কান্না আসছে। ছেলেদের নাকি কাদঁতে নেই। কিন্তু ইভান যে নিজের কান্নাটা আটকাতে পারছে না। সে দেওয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে জোড়ে জোড়ে কেঁদে দিল। ছেলের এমন অবস্থা দেখে ইভানের বাবা গিয়ে জড়িয়ে ধরে ইভানকে শান্তনা দিতে থাকে। তখনই একটা ডক্টর বেরিয়ে আসে।ইভান দৌড়ে গিয়ে ডক্টরকে বলে
—-আমার আমার ফারিদা কেমন আছে? ডক্টর বললো
—-আমরা আমাদের বেস্টটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আর বাকিটা আল্লাহ জানে। ইভাম ডক্টরের কাঁধের কাছে হাতটা নিয়ে বলে
—-ফারিদার কিছু হলে,সবাইকে হসপিটাল থেকে বের করে জেন্ত কবর দিব। চুপচাপ ভিতরে যান। ডক্টরটা ভয়ে ভিতরে চলে যায়। ইভানের বাবা বলে
—-ইভান পাগলামী না করে আল্লাহর কাছে ফারিদার জন্য দোওয়া কর। ইভান কিছু না বলে চুপচাপ বেড়িয়ে গেলো হসপিটাল থেকে। ছেলেটা তার সহজে রাগে না রাগলে কি করে নিজেও জানে না। ইভানের বাবার টেনশন হচ্ছে এখন।ইভান হসপিটালের পাশের মসজিদ টায় ওযু করে নামাজ পড়তে লাগে। রাত ১টার দিকে ফারিদাকে আইসিইউ তে দেওয়া হয়। ৩৬ ঘন্টাার আগে কিছু বলা যাবে না। ইভান রাত ২ টার দিকে হসপিটালে আসে দেখে ফারিদারমুকে অক্সিজেন মাস্ক, হাতে কেরোলা মাথায় হাতে,পায়ে বেন্ডেজ। ইভানের কলিজা আতকে উঠে। আল্লাহর রহমতে আর সবার দোওয়ায় ৩৬ ঘন্টার আগেই ফারিদার সেন্স ফিরে আসে। নার্স গিয়ে ডক্টরকে বলে যে ফারিদার সেন্স আসছে সেই কথা শুনে সবাই একসাথে জড়ো হয় কেবিনের সামনে। অনেক বলার পর ডক্টর রাজি হয় তাও একজন যেতে পারবে ফারিদার সাথে দেখা করতে। ইভান সবার দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে বলে
—-আম,, আমি যাই? সবাই ইভানকে যেতে বলে। ইভান কেবিনে যায় ধীরে পায়ে। দেখে ফারিদা চোখ বুঁজে আছে। পারিদার কারো উপস্থিত টের পেয়ে চোখ খুলে দেখে ইভান। সে তো ভেবেছিল এই সুন্দর মুখটা আর তার দেখা হবে না। ইভানকে দেখেই ফারিদা কান্না করে দেয়। অনেক কষ্টে নিজের একটা হাত উঁচু করে ইভানকে কাছে ডাকে। ইভান গিয়ে ফারিদাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয় আর বলে
—-আমার কিছু চাই না তোমাকে চাই,ভালোবাসি তোমাকে। ইচ্ছে ছিলো বিয়ের পর বউ এর সাথে প্রেম করবো, কিন্তু কে জানতো এমনটা হবে, আমাকে ক্ষমা করে দাও ফারিদা। আর তোমার অপরাধী নিজের শাস্তি পেয়েছে। ফারিদা অনেক কষ্টে বললো
—-আমিও ভালোবাসি খুব। ইভান একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয় ফারিদার কপালে।
সময়ের সাথে সাথে ফারিদাও অনেক সুস্থ হয়ে উঠেছে। ৬ মাস হয়েগিয়েছে। আর এই ৬ মাসে ফারিদার গোসল থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়ার সব খেয়াল রেখেছে ইভান। সকালে ব্রেকফাস্ট করিয়ে যেতে দুপুরে ভিডিও কলে দেখতো ফারিদা খাচ্ছে কিনা। আর ফারিদার গোসল করা হলে সেটা সে সকালে করিয়ে দিয়ে যেতো। কিছু দিন পর ইভানের সেবার কারণে ফারিদা এখন হাটতে পারে। ফারিন আর অংশের মধ্যে বেশ ভাব হয়েগেছে। ফারিন অংশকে অংশ বলে ডাকে। কিন্তু অংশ ফারিনের চেয়ে ৭ বছরের বড়। আজ ফারিদাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে ইভান। আকাশী কালারের একটা শাড়ি পরে চুলগুলো খুলে দিলো ফারিদা। চোখে কাজল আর ইভান পরেছে আকাশী কালারের পাঞ্জাবি আর সাদা কালের পাজামা। ইভান আর ফারিদা আসছে শহরের কোলাহল থেকে বেড়িয়ে গ্রামের দিকে একটা ঝিলের পাড়ে ইভান গাড়িটা পার্ক করে ফারিদার হাত ধরে হাটতে লাগলো। ফারিদা বলে
—-ভালোবাসেন আমায়? ইভান দুষ্টামি করে বলে
—-না আমি অন্য কাউকে ভালবাসি। ফারিদা সেটা শুনে বলে
—-হুতুম পেঁচা, বেটা খচ্চর নিরামিষ। যা আমার সাথে কথা বলবিনা তুই। আমিও বলবনা বলে পিছন দিকে হাটা দিলো আর ইভান দৌড়ে গিয়ে ফারিদার সামনে দাড়িয়ে পড়ে আর বলে
—-পাগলীটা আমার। আমি তোমাকেই ভালোবাসি তোমাকেই বাসবো #আমি_শুধুই_তোমার আর তুমি শুধুই আমার। ফারিদা মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—-আমার কিউট হুতুম পেঁচা টা। লাভ ইউ। ইভান বলে
—-এক মিনিট। ঝিলের পাড়ে ছিলো অনেক বড় বড় ঘাস ইভান সেই ঘাস গুলো দিয়ে একটা রিং এর মতো বানায় আর ফারিদার সামনে হাটু গেড়ে বসে বলে
—-চাই না তোমাকে হারাতে,পারবোনা তোমাকে হারাতে। ভালোবেসে রাখবো কাছে। বলতে পারি খুব ভালোবাসি, আমাকে কি একটু ভালোবাসা যায় না নাকি? ফারিদা বলে
—-হ্যা, যায় আমিও বাসি। কিন্তু আমি বড্ড অভিমানি, পারবেন তো অভিমান ভাঙাতে? ইভান মুচকি হাসি দেয় আর বলে
—ঢের পারবো। ভালোবাসি। ফারিদাও বলে
—-ভালোবাসি। চলেন পালিয়ে বিয়ে করে বাসায় সবাইকে চমকে দেই কি বলেন। ইভান দাত কেলিয়ে বলে
—-মন্দ না আমার অনেক দিনের শক ছিলো।
——সমাপ্ত —–