আমি_শুধুই_তোমার❤️?,পর্বঃ-০৬

0
1144

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️?,পর্বঃ-০৬
writer:-আইদা ইসলাম কনিকা

রাতের বেলা আমরা বেশ কিছু সময় আমরা ছাঁদে ছিলাম তারপর হালকা কিছু খেয়ে নিলাম।আর পায়েশটা ভালোই হয়েছে, সবাই ভালো বললো কিন্তু হুতুম পেঁচা টা কিছু বললো না। রাগটা আরো চেপে ধরেছে। আমি কালই বাবার বাড়ি চলে যাবো।ঐ সব ভাবছিলাম তখনই সে আমার কানে কানে বলে

—-পায়েশটা বেশ ভালো হয়েছে। এই কথাটাই আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো নিমেষেই সব রাগ মাটি হয়ে গেলো। আমি মুচকি হাসি দিয়ে বললাম

—-ধন্যবাদ। সেও প্রতি উত্তরে মুচকি হাসি দিলো। কিন্তু আমাদের এই সুখ বেশিসময় স্হায়ী হলো না। মিরা এসে বলে মনে ইভানের হাত ধরে বলে

—-ইভান ভাইয়া চল আমরা আইসক্রিম খেতে যাই। কিন্তু ইভান নিজের হাত ছাড়িয়ে বলে

—-দেখ মিরা এখন অনেক রাত হয়েছে আমরা ঘুমাতে যবো। বায়। মনে মনে তো খুশিই হয়েছিলাম সবে মাত্র বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছি। ওমনি দরজায় কেউ নক করে পারেতো ভেঙে ফেলে। ইভান আর আমি চমকে যাই। কারো কিছু হলো না তো, দরজা খুলে দিকে মিরা দাঁড়িয়ে। দরজা খুলার সাথে সাথে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ইভানকে আর বলতে লাগে

—–ইভান ভাইয়া আমি তোমার সাথে ঘুমাবো, আমার ঐ রুমে ভয় করছে। ইভান বলে

—–কেনো ইতি, নাতাশা (ফুপির মেয়ে) ওরা কোথায়,আর ছাড় আমাকে।আমার তা দেখে গা জ্বলছে। মিরা বলে

—-তুমিতো জানই আমি ওদের সাথে ঘুমাই না, একা ঘুমাই কিন্তু আজ আমার অনেক ভয় লাগছে। আমি এবার আর চুপকরে থাকতে পারলাম না বলেই ফেললাম

—–তোমার বুঝা উচিত, এখন ইভান বিবাহিত, আর সে মেয়ে না ছেলে। তোমার যদি এতই ভয় লাগছে ইতি ওদের রুমে গিয়ে নক করলেই পারতে। ইভান আমার দিকে চোখ পাকিয়ে আছে। সে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে

—–বিয়ে করেছি জানি সেটা আমি, কিন্তু ও তোমার বড় সম্মান দিয়ে কথা বলো। মিরা এখানেই শুবে তুমি আর ও বিছানায় ঘুমাও আমি সোফায় শুয়ে পরছি। আমি আর পারলাম না কিছু না ভেবেই তাদের মুখের ওপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে রুম ত্যাগ করলাম। কান্না পাচ্ছে খুব কেন এমন করেন উনি? কি করেছি। এতটা ঠান্ডা বাইরে তারপরও আমি বাগানে এসে ঢের দাঁড়িয়ে আছি। মাঝে মাঝে হালকা হালকা বাতাসও বইছে। আর কিছু বলবো না আমি কি করে বলবো সে যে এমনটা করবে কে জানে? কিছু সময় পর আমি বাসায় চলে আসি দেখি ইভান ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে। আমি তাকে কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম অন্য রুমে। রুমটা খুব বড় না হলেও বেশ সুন্দর দরজা লক করে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমতো শুধু মুখের কথা এমনি ঘুমের ভাঙ ধরলাম। সকালে ঘুম থেকে আগে উঠে যাই ওপর থেকে নিচে তাকিয়ে দেখি ইভান ড্রয়িং রুমের সোফায় ঘুমিয়ে আছে। একটুপর তারও ঘুম ভাঙলো। আমি তাড়াতাড়ি সরে এলাম। নিজের রুমে গিয়ে দেখি মিরা আমার একটা শাড়ি পরছে একটা বেকলেস ব্লাউজ এর সাথে। শাড়িটা আমার বেশ পছন্দের ছিল কারণ সেটা আমাকে দিয়েছিল আমার শাশুড়ী মা। আমি মিরাকে বললাম

—–কারো কিছু পরতে হোলে আগে যে বলতে হয় তা কি আপনার জানা নেই। মিরা আমার দিকে তাকিয়ে বলে

—-তো কি হয়েছে? কি করবা তুমি?কিছু করতে পারবা? তখনই ইভান রুমে আসে দেখে মিরা শাড়ি পরেছে। সে ইভানকে দেখে তার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলে

—- কেমন লাগছে আমাকে?

—–দেখ ভালো লাগছেনা যা। মিরা বলে

—-না আগে বলো তারপর। ইভান আমার দিকে তাকিয়ে বললো

—-অনেক ভালো লাগছে যা এবার।

আমি শুধু নিরব দর্শকের মতো চেয়ে দেখছি। এই ইস্টার জলসা আর ভালো লাগছে না তাই কার্বাড থেকে তোয়ালে নিয়ে একটা থ্রিপিছ নিলাম আর শাড়ি পরবো না। মিরাও চলে যায় আমি ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসলাম দেখি ইভান বসে আছে। আমি কিছু বললাম না। ইভান এখন নিজের খারাপ লাগছে কালকে বেশি বেশি করে ফেলেছে এভাবে বলাটা উচিত হয়নি তার কিন্তু সরি যে বলবে সে সুযোগটা ফারিদা তাকে দেয়নি। ফারিদা নিচে যায় নাস্তা বানাতে সবাই একসাথে বসে আছে। তারপর যখন নাস্তা টেবিলে দেয়। নাতাশা বলে

—–ভাবি আজকে দুপুরে তোমার হাতের রান্না খাবো। কি বলিস,অংশ, ইরিণ,ইতি,মিরা,মেহেদী? সবাই বললো তারা আমার হাতের রান্না খাবে আমি আর না করতে পারলাম না। সেখানে ইভানও উপস্থিত ছিল। মিরা বলে

—-আমার জিরা ফাঁকিতে সমস্যা আছে। তাই আমার জন্য যাই করবা জিরা ফাঁকি দিবে না। আমিও কিছু বললাম না। ইভান আর আজকে হসপিটাল যাবে না কারণ সবাই একসাথে জোর করেছে তাই একদিন ছুটি নিলো কিভাবে কি করলো কে জানে। দুপুরে রান্না করলাম সবার জন্য পোলাও রোস্ট আর, মরগির মাংসের ভুনা। সাথে সালাদ আর লাচ্ছি বানালাম। আর মিরার জন্য তরকারিতে জিরা ফাঁকি দিলাম না তারপর গেলাম গোসল করতে। রুমে গিয়ে দেখি ইভান নেই হয়তো ওয়াশরুম। পানির আওয়াজ আসছে। কিছু সময় পর সে বললো
—ফরিদা তোয়ালে টা একটু দাওতো। আমি আর এবার রাগলাম না গিয়ে চুপচাপ তোয়ালেটা নিয়ে দরজায় নক করলাম। ইভান ভেবে ছিলো ফারিদা রেগে যাবে কিন্তু ফারিদা রাগে না। সে দরজাটা খুলে নিজের হাত বারিয়ে দেয় আমি তোয়ালে দিতে গেলে সে আমার হাত ধরে(কি ভাবছেন টান দিয়ে ভিতরে নিয়ে যাবে ফারিদাকে ইহোজন্দীগিতে এমন করতে দিমু না?কারণ আমি এতো ভালো না?) আমি সাথে সাথে হাতটা সরিয়ে নিলাম।
দুপুরে খাওয়ার সময় সব ঠিক ঠাকই ছিল কিন্তু হাঠাৎ করেই মিরা কাশতে শুরু করে, পানি খাওয়াতে কাজ হয় না। বেচারির চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। দেখেতো আমার নিজেরই খারাপ লাগছে। ইভান তো নিজের সোর্বচ্চো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একসময় অনেক কষ্টে ইভান সব কিছু ঠিক করে নেয়, মিরা এখন ঘুমাচ্ছে। বাসার সবাই শান্ত হয়ছে এখন। কি অবস্হা হয়েছে মেয়েটার। ইভান আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই একটা চড় বসিয়ে দিলো আমার গালে সবার সামনে। উপস্থিত সবাই অবাক। ইভান আমার গাল চেপে ধরে বলে
—–তুমি যে এতোটা নিচ আগে জানতাম না। একটা শাড়ি আর কাল রাতের কাহিনীর জন্য তুমি মিরার সাথে এমনটা করলে। আমার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। আমার শাশুড়ী মা বলে

—–ইভান কি হচ্ছে টাকি?ফারিদা কি করেছে এখানে? ইভান বলে

—–মিরা যে সকালে বললো তার জিরা ফাঁকিতে সমস্যা তাহলে, ও যেনে শুনে এমনটা কেনো করল? ওর জন্য আজ মিরার এই অবস্থা,আরেকটু হলে মিরা মারাও যেতে পারতো। আমি বলি

—-বিশ্বাস করুন আমি।ইভান বলে

—-হয়েছে হয়েছে, তুমি এটা না করলেও পারতে। একটা শাড়িইতে যাও কালকে তোমার রুমে ভরে দিবো শাড়ি দিয়ে।কিন্তু নিজের চিন্তা ভাবনা ঠিক কর। আজ যদি মিরার কিছু হয়ে যেতো?

এবার আমি রেগে যাই আর পারবো না সহ্য করতে যেটা করেনি সেটার দোষ কেন আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে।

—-এই একদম বাজে বকবেন না। আর আমি না আপনি নিচ। কিভাবছেন টাকি আমাকে খেলার পুতুল আমি। বিয়ের রাতে বলেন বপনি সোফায় শুন বিছানায় না বিয়েটা আমার অমতে হয়েছে,মানলাম। বিয়ে আপনার অমতেই হয়েছে। আর কালকে রাতের কাহিনীটা কি সামান্য ব্যাপার ছিল? মাঝ রাতে মিরা গিয়ে আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলে আমার ভয় করছে। আমি খারাপ কি বলেছিলাম এটাইতো এখন আমরা বিবাহিত আমাদের প্রাইভেছি বলতে কিছু আছে? ওকে সরি আমার ভুল হয়েগেছে। কিন্তু আমি খাবারে কিছু মিক্স করিনি। আর আমি ওপরের দিকে পা বাড়াই। আমার শাশুড়ী মা বলে

—-মারে শুন মাথাটা ঠান্ডা কর। আমি বলি

—প্লিজ মা , আমার শশুড় মসাই বলে।

—-ওকে যেতে দাও। মা তুমি যাও। আমি আর দাড়ালাম না কান্না করতে করতে। ওপরে আসছিলাম তখনই একটা সার্ভেন্ট ইভানের কাছে ভয়ে ভয়ে গিয়ে বলে

—-স্যার মাহিরা মেম কিছু করেনি। আমি দেখলাম যে সে জিরা ফাঁকি দেয়নি, তাই আমি দিয়ে দিয়েছি। তখনই ইভানের মাথায় আকাশ ভেঙে পরে আর মনে পরে একটু আগের কথা কতগুলো মানুষের সামনে সে ফারিদার গায়ে হাত তুলেছে। তখনই ইভানের বাবা গিয়ে একটা চড় লাগিয়ে দেয় ইভানের গালে।ইভানের বাবা বলে
—–নিজেদের ঝগড়া নিজেদের রুমে মিটাবি,আর আমি যেখানে এতো বছরেও তোর মায়ের গায়ে হাত তুলিনি আর তুই বিয়ে করে সেরে পারলিনা। যারা মেয়েদের গায়ে হাত তুলে তারা পুরুষ না কাপুরুষ, আর তুই আমার ছেলে হয়ে কিভাবে হাত তুললি? ইভান মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে, আমি আর পারলাম না দৌড়ে চলে এলাম রুমে। তার মনে আমার জন্য ভালোবাসা আছে কিন্তু তার সেটা আমি কাছে থাকলে সে কোনোদিন ও ভালোবাসি বলবে না বলবে না #আমি_শুধুই_তোমার না বলুক আর বলতে হবে না। আর রাগটাও আছে রুমে গিয়ে নিজের বেগ গুছিয়ে নিলাম। বিকেলেই চলে যাবো

❤️❤️❤️ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে❤️❤️❤️আমার কোনো ইভান নাই তাই ওদের সুখে দেখে আমার আর সহ্য হলো না দিলাম ভেজাল লাগীয়ে,তোমাদের ক্রাশ ইভানের কিতা হইবো, এখন। ??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here