আরেক_ফাল্গুনে,পর্ব -03,04
সামানিয়া_জামান_প্রজ্ঞা
পর্ব -03
সিনিয়রদের সঙ্গে সপিং করে রিসর্টে ফিরার পর থেকে মেধাকে কেমন অন্যমনষ্ক লাগছিল। আমার বারবার মনে হচ্ছিলো ওর কিছু হয়েছে। সরাসরি ওকে জিগ্যেস করতে ওর রুমে গেলাম। ও ওয়াশরুম থেকে ফিরে বলল তুই এখানে? কিছু দরকার ছিলো মেহেক?
দরকার কি থাকবে আমি কি আসতে পারিনা। শোন তোকে এতো টেনস লাগছে কেনো বলতো? সপিং ও ঠিকমতো করলিনা চলে এলি এখন আবার আনন্দ করবি হই হুল্লোড় করবি লাস্ট ডে সবার সঙ্গে তা না রুমে বসে আছিস। তোর কি হয়েছে বলতো?
মেহেকে কি সবটা বলে দিবো? না না থাক বলতে নিষেধ করেছিলেন তো উনি। পরে যদি আমার জন্য ওরা মেহেকের কোন ক্ষতি করে দেয় এর চেয়ে না বলাই ভালো।(মনে মনে )
কই না তো কিছু হয় নি আমার। আসলে আব্বু ফোন দিয়েছিলো। ল্যাপটপের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছিলো এজন্য আমাকে ফোন দিয়েছিলো। আর সব ধরনের পাসওয়ার্ড তো আমার সিক্রেট খাতায় থাকে আর আমি তো সেটা রিসর্টে রেখেছি এজন্য সপিং করতে পারলাম না। চলে আসলাম।
ওহহ এই ব্যাপার আমি ভাবলাম কিনা কি হয়ে গেছে। যাইহোক আমি তোর জন্য একটা গিফট নিয়েছি।
গিফট্! কি গিফট্ দেখি?
এই নে।
মেহেক তুই চুরিদার পরতে শুরু করলি কখন?
আরে আমি চুরিদার পরিনা কিন্তু মলে দেখে ভিষণ ইউনিক লাগলো তাই নিয়ে নিলাম। চার সেট কিনেছিলাম তুই দুইসেট রেখে দে। এবার যলদি কালার চুজ কর।
চারটাই সুন্দর। বুঝছি না কোনটা নিবো।
দেখ পিংক কালার আর আকাশি কালার তোর পছন্দ তুই এই দুইটাই রেখে দে। আর আমার সাদা আর নেভিব্লু কালারেরটা।
দোস্ত সে তো হলো। শোন না কালকে তো আমরা ঢাকা ব্যাক করবো চলনা কালকে চুরিদার পরে যাওয়া যাক? কি বলিস?
আইডিয়াটা ভালো। ডান শুয়ে পর সকালে বাস আসবে তো।
হুম তুই ও যা।
…….
সাদাফ তোমাকে বলেছিলাম না ওকে দেখে আমার সৌন্দহ হয়েছিল। কারন ও দেখতে মুহতাসিন আঙ্কেলের মতো। দেশে ফিরার পর ওদের পুরোনো বাসায় খোজ করেছিলাম কিন্তু ওরা ছিলো না। অবশেষে তাকে পেয়ে গেলাম। ভাবতে পারিনি সেন্ট মার্টিনে এতোবড় সারপ্রাইজ পাবো।
স্যার একটা কয়েশচেন ছিল?
হুম বলো। কি কয়েশচেন?
আপনি ম্যামকে কিভাবে চিনেন? ম্যামের পরিবারের সঙ্গে আপনার কি সম্পর্ক যদি ক্লিয়ার করতেন হেল্প হতো।
মুহতাসিন মাহিদ চৌধুরি রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার ছাড়াও আমার বাবার বিজনেস পার্টনার সঙ্গে খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। আমাদের বাসাও একসঙ্গে ছিলো। দুটো বিল্ডিংয়ে দুরুত্ব কম ই ছিলো। বাবার বন্ধু সুবাদে আমি মুহতাসিন চৌধুরীর বাড়িতে যেতাম। আমার যখন দশ বছর বয়স। মেহেক তখন তিনবছরের বাচ্চা। ওর সঙ্গে দুষ্টু মিষ্টি মুহুর্ত গুলো যেনো আমার অভ্যাসে পরিনিত ছিলো।
ওকে একবার না দেখলে কিছুই ভালো লাগতো। দিনে একবার হলেও ওর মুখটা দেখতে যেতাম।
আমি জানতাম না এই অনুভুতিকে কি বলে। একটা তিনবছরের বাচ্চার প্রতি দশবছরের ছেলের কি এমন আকর্ষন থাকতে পারে অভ্যাস ছাড়া। আস্তে আস্তে আমাদের প্যারেন্টস বুঝতে পারলো আমরা দুজনে খুব পজেসিভ দুজনকে নিয়ে। এজন্য উনারা সিদ্ধান্ত নেন বড় হলে আমাদের বিয়ে দিয়ে বন্ধুতটাকে আরো গভীর সম্পর্কে পরিনিত করবে বলে। তারপর আমাদের ছোট অবস্থাতেই এঙ্গেজমেন্ট হয়ে যাই।
স্যার ম্যাম তো অনেক ছোট ছিলেন তখন উনারকি এগুলো মনে আছে?
আমি জানেনা সাদাফ। তবে ওকে যখন একবার পেয়েছি আর হারাতে দেবো না। যে করে হোক আমার অধিকার আমি আদায় করে নিবো।
স্যার কাল ম্যাম ঢাকা ব্যাক করছেন।
কিইই? কালই?
জ্বী স্যার।
তবে কালকে তৈরি থেকো। আমরা যাবো সেখানে।
কিন্তু কেনো স্যার?
পরে জানতে পারবে রহস্যময় হাসি দিয়ে।
সকাল সকাল নাস্তা করে আমরা রেডি হয়ে বাইরে বেরিয়েছি। সবাই যে যার মনে নিজেকে কেমেরায় বন্দি করতে ব্যাস্ত। লাস্ট বারের মতো সমুদ্রের তীরের দিকটা ঘুরলাম। কিন্তু এর মধ্যেই বাস চলে আসে। সবাই বাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। মেধাও ওদের সঙ্গে যাই। আমি ও ওদের কাছে যাবো তার আগে কেউ মুখ চেপে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করতে বলে। লোকটিকে দেখে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম আমার। কারন লোকটি আর কেউ না কালকের কিস ওয়ালা। আমি মুখ দিয়ে উহহহ আওয়াজ করতেই কিছু একটা দিয়ে মুখ চেপে ধরে ব্যাস সবকিছু ঝাপসা হতে থাকে।লুটিয়ে পরলাম লোকটির কাধে।
জ্ঞান ফিরার পর নিজেকে বড় বাংলো টাইপ বাড়িতে দেখতে পাই। আর আমার পাশে ওই লোকটি। আমি ভয় পেয়ে বললাম এটা কোন জাইগা উনি বললেন ঢাকা। আমি ভয় মিশ্রিত কন্ঠে বললাম আমাকে এখানে আনার কারন কি?
উনি কিছু না বলে মুচকি হেসে বললেন,
তোমাকে বিয়ে করবো বলে।
লোকটির অদ্ভুত কথায় রাগ হয় আমার। রাগে বলতে শুরুকরলাম এমন অচেনা অজানা মানুষ কে কে বিয়ে করবে? কেনো এনেছেন আমাকে ছেড়ে দিন বলছি। আমার বাপি জানতে পারলে আপনার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
উনি আমার কথায় হো হো করে হেসে বললেন আচ্ছা তাই নাকি? তো চলো দেখা যাক আমার হবু শ্বশুর মশাই কি করতে পারে আমার।
আজথেকে ছয়দিন পর আমাদের বিয়ে। সমস্যা নেই তোমার বাবাকে সামনে রেখে বিয়ে হবে আমাদের। আর যতদিন না তুমি বিয়েতে রাজি হচ্ছো তোমাকে এখানে ঘর বন্দি হয়ে থাকতে হবে। এদিকে যাই আমি আমার হু শ্বশুর মশাইকে সামলানোর ব্যবস্থা করি। উনি বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিলেন।
আমি কয়েকবার চিৎকার করে দরজা বাড়ি দিলাম কিন্তু খুলল না অবশেষে হাল ছেড়ে কান্না করে দিলাম। কারন এখন আমার ভিষণ ভয় করছে। লোকটির কথা শুনে তো মনে হচ্ছে খুব সিরিয়াস।
সেদিন সমুদ্রের পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় প্রচুর পানি খেয়েছিলাম যার কারনে একপ্রকার থান্ডা লেগেছিলো আবারো ঘর বন্দি থাকা সঙ্গে সারাদিন পেটে কিছু না পরাই প্রচুর হাড় কাপাঁনো জ্বর আসে।
তারপর কিছু মনে নেই সকালে যখন উনাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখি আমি চুপিচুপি গার্ডেনের ওইদিক দিয়ে পালাতে যাই আর ওই সময় ই তিনি ধরে ফেলেন আমাকে। তারপর রক্তিম বর্ন চোখে বলেন বলেছিলাম না এমন ভুল করোনা। সেদিন উনার কথায় রাগ হয়েছিল তাই চিৎকার করে উনাকে বলেছিলাম,
আপনার সাহস কি করে হলো আমাকে এখানে আটকে রাখার? আমি আপনাকে কোনদিন বিয়ে করবো না ছেড়ে দিন আমাকে। কতটা চরিত্রহীন হলে এইভাবে অপরিচিত একটা মেয়েকে কেউ আটকে রাখে?
ব্যাস উনি রেগে গিয়ে আমাকে বলেন,
তুই অপরিচিত না বুঝেছিস। তারপর টানতে টানতে ঘরে নিয়ে আসে। তারপর সোজরে থাপ্পড় দিয়ে হাতে থাকা ফোনটা ভেঙে দেয় আর যাতে না পালাই এজন্য চরম ভাবে শাসিয়ে যায়।
ভাবনা যগত থেকে বের হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিয়ে প্রচন্ড ঘুমে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম।
চলবে ~
(গল্পের ভুল ট্রুটি ক্ষমা পার্থি। কাল্পনিক এই গল্পটাকে বাস্তবতার সঙ্গে মেলাবেন না কেউ! ?)
#আরেক_ফাল্গুনে
#সামানিয়া_জামান_প্রজ্ঞা
[পর্ব -04]
অতীত ভাবতে ভাবতে অনেক রাত হয়ে গেছে। নিজের উপর কেন জানি বিরক্তি লাগছিলো। ঘুম না আসলেও শরীর এলিয়ে দিলাম। গভীর রাত ডা.ফায়াজ আবরারের রুমে আলো জ্বলতে দেখে সাদাফ রুমে ঢুকে একপ্রকার শকড্।
চুল গুলো উসকো খুসকো,চোখ গুলো লাল সঙ্গে অনেক গুলো মদের বোতল। সাদাফ তরিঘরি করে এগিয়ে বলল,
ফায়াজ স্যার! আপনি ড্রিংক করছেন? আপনাকে তো কখনো ড্রিংক করতে দেখিনি। কি হয়েছে স্যার কিছু বলবেন?
কিছু না তুমি যাও সাদাফ গম্ভীর ভাবে বলল।
স্যার প্লীজ কি হয়েছে বলুন। ম্যামকি কিছু বলেছে আপনাকে? উনিকি বিয়েতে রাজি নন?
মেহেক কিছুই বলেনি সাদাফ। ওকে তো বিয়ে করতেই হবে আর সেটাও আমাকেই। কিন্তু…
কিন্তু কি স্যার?
তোমাকে বলেছিলাম না সেদিন ছোট অবস্থায় আমাদের এঙ্গেজমেন্ট হয়েছিল। সবকিছু ঠিকঠাক ই ছিলো কিন্তু ওইযে বলেনা সুখ বেশি টিকসই হয় না। আমার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। এঙ্গেজমেন্টের কিছুদিনের মধ্যে আমার বাবা মা এক্সিডেন্ট করে। আমি দিশেহারা হয়ে পরেছিলাম খবরটা শুনে। চারিদিক দিয়ে টেনশন আমার অসহ্য লাগছিল। বাবার বিজনেস,বাড়ি সবকিছু সামলানো কঠিন ছিলো আমার জন্য । কারন আমি তো কিছুই বুঝতাম ই না। দুরসম্পর্কের এক আঙ্কেল আমার থেকে সই করে বাড়িটা আর বিজনেস টা নিয়ে নেই। কারন বাবা মা পর সবকিছুর মালিক আমিই ছিলাম। বাড়ি, বিজনেস মানুষের হাতে গেলেও আমার একাউন্টের টাকাটা ওরা নিতে পারেনি। এদিকে সবটা শুনে মেহেকের বাবার মত পাল্টে যাই। কারন আমার নামে কিছুই ছিলো না। যা টাকা একাউন্টে ছিলো লওয়ার আঙ্কেলের থেকে পরে জানতে পারি আমি। সেদিন প্রচুর কেঁদেছিলাম যেতে চাইনি আমি মেহেককে ছেড়ে কিন্তু মুহতাসিন মাহিদ চৌধুরী আমাকে মেহেকের থেকে চিরো তরে আলাদা করে দিয়েছিলো। সেই সময় টা প্রচুর কষ্টে কেটেছে আমার। পাচ ছয়দিন খেতেই পাইনি। না খেয়ে পথ চলছিলাম রাস্তায় গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেন্সলেস হয়ে পরেছিলাম। পরে জানতে পারি লওয়ার আঙ্কেল আমাকে রাস্তা থেকে বাসায় এনেছিলো। তারপর সবটা উনাকেখুলে বলি। উনি সবটা শুনে বলেছিলেন তোমার নামে মোটা অঙ্কের টাকা আছে একাউন্টে। ব্যাস আমি আবারো ছুটে গেলাম লওয়ার আঙ্কেলের সঙ্গে কিন্তু
ওরা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো এটা বলে যে ছেলের ভবিষ্যত নেই তার সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে হবে না। সেদিন প্রচুর কষ্ট পেয়েছিলাম। মেহেক ও আমাকে আটকাতে চেয়েছিল কিন্তু ওর বাবা মা চাইনি। সেদিন কষ্টের সঙ্গে অনেক রাগ ও ছিলো তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মুহতাসিন আঙ্কেলকে দেখিয়ে দিবো আর ওয়াদা করেছিলাম অনেক বড় হয়ে মেহেকেই বিয়ে করবো।
তারপর কি হলো স্যার?
তারপর লওয়ার আঙ্কেলের সাহায্যে আমেরিকা চলে যাই। সেখানে সবার সঙ্গে পড়া শোনাই পাল্লা দেও খুব টাফ ছিলো আমার। কারন পরার সময় খাওয়ার সময় ঘুমানোর সময় এমনকি সবসময় আব্বু আম্মু আর মেহেককেই মনে পরতো। ভাবতাম এমনটা কেনো হলো আমার সঙ্গে? আস্তে আস্তে ওর বাবার কথা গুলো সরন করে আব্বু আম্মুকে মনে করে পরতে শুরু করলাম প্রথম প্রথম পড়াই মন না বসলেও একটা সময় পর পড়াশোনার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে যাই আমার। আস্তে আস্তে সবজাইগায় টপ হতে থাকি। যখন আমি টিন এজের মেহেক কে আরো ভিষণ ভাবে মনে হতে লাগলো। সব সময় ভাবতাম কেমন হয়েছে দেখতে আমার মেহেকপরিটা কিন্তু তখনই ওর বাবার কথা গুলো কানে বাধতো। আমি ভিষণ যেদি ছিলাম ওই কথাগুলোর জন্য যেদে মেহেকেকেই বিয়ে করবো বলে আরো কঠোর ভাবে পড়াশোনা শুরু করলাম তারপর কলেজে টপার হয়ে হাভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ পেলাম সেখানে ও টপার হয়ে ডক্টরেট ড্রিগ্রী পেলাম। আমেরিকার ন্যাশনাল ল্যাবে দুইবছর টানা থাকার পর দেশে আসলাম উদ্দেশ্যে মেহেককে পাওয়া। কিন্তু খোজ করার পর ও পাইনি তাকে। দেশে ফিরে চাকরি পেতে একদিন ও সময় লাগে নি আমার। কারন আমার ডক্টরেট ড্রিগ্রিটা। প্রথম বাংলাদেশি বংশদুত যে কিনা হার্ভাডের টপার এজন্য সবাই চিনতো আমাকে। আর এখন তো আমার কাছে ইনাফ টাকা। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম মেহেককে বিয়ে করবো ওর বাবার মার অনুপস্থিতিতে কিন্তু এখন আমি চাই ওনাদের সম্মূখে বিয়ে করতে। মুহতাসিন মাহিদ চৌধুরী,মিডিয়া হাজারো জনগন সবার উপস্থিতিতে বিয়ে করবো আমি।
স্যার আমি খুব খুশি যে আপনি উনাকে মাফ করে দিয়েছেন। আসলে উনার ও দোষ ছিলো না উনিত পরিস্তিতির স্বিকারে নিজের মেয়ের ভালো দিকটাই চেয়েছেন। উনিতো আর জানতেন না আপনি বাংলাদেশের এতোবড় বিজ্ঞানী হবেন। আমার মতে উনাকে মাফ করে দিন স্যার।
তারমানে তুমি বলছো প্রতিশোধ নেওয়াটা ঠিক হবে না? মাফ করে দিবো আমি ওনাকে?
জ্বী স্যার কারন আপনার সবচেয়ে বড় শুএতো আপনার আঙ্কেল। আর আপনি তো তার থেকে সবকিছু নিয়ে তাকে আবারো আগের জাইগায় বসিয়েছেন। আর আপনার উচিত ম্যামের বাবাকে মাফ করে আবারো একটা সুযোগ দেওয়া। আর উনার সম্মতিতেই ম্যামকে বিয়ে করে বাকিটা জীবন সুখি থাকা। বাবা মার দোয়া ছাড়া তো কেউ বড় হয় না। আপনার আসল বাবা মা না থাকলেও শ্বশুর আর শ্বাশুড়ি মা তো আছেই তাদের দোয়া ও আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু….
কোন কিন্তু না স্যার আপনি মুহতাসিন চৌধুরীর ওই কথাটার পজেটিভ দিকটা দেখেন। উনি যদি ওভাবে না বলতো তবে কি আপনি আজ এতো সুনাম এতো কিছু করতে পারতেন? উনাকেও তো ক্রেডিট দেওয়া উচিত কি ঠিক না?
তুমি সবসময় আমার পাশে থেকেছো সাদাফ কখনো বিপদে ছায়ার মতো আবার কখনো আনন্দে কলিজার বন্ধুর মতো। তুমি আমার বন্ধু না ভাই। হ্যা আজ থেকে তুমি আমার ভাই। জরিয়ে
স্যার আপনি আমার বড় ভাইয়ের মতো। আপনার একটুয়ো কষ্ট আমি সহ্য করতে পারিনা। আমি চাই আপনি সবসময় সুখে থাকুন। আপনার পাশে আমি সবসময় আছি স্যার।
ভাই বলো। আর হ্যা কালকে আমরা যাচ্ছি মুহতাসিন আঙ্কেলের বাড়িতে।
জ্বী ভাইয়া।
………..
সকালে ঘুম থেকে উঠেই একটা সারপ্রাইজ পাই আমি।
ডা.ফায়াজ আবরার জুবায়ের নাকি আমাকে মাম্মা বাপির কাছে রেখে আসবেন। খবরটা শুনে ভিষণ খুশি হয়েছি কিন্তু যতক্ষন বাড়িতে যাচ্ছি পুরোপুরি বিশ্বাস হচ্ছে না। উনি এখনো পষ্ট করে কিছুই বলেননি কেনো আমাকে বাড়িতে পাঠাতে চান? বিয়ের ব্যপারেও কোন কথা বলেননি এখনো উনি সত্যি আমাকে বিয়ে করতে চাননা? যদি সত্যি হয় তবে আমার চেয়ে খুশি আর কেউ হবে না।
মেহেক আমি গাড়িতে অপেক্ষা করছি তো। তাড়াতাড়ি করো।
জ্বী আসছি।
যেহেতু উনি আমাকে বাপি মাম্মার কাছে ফিরিয়ে দিতে চান এজন্য উনার প্রতি আর রাগ নেই আমার। সবাই কে বিদায় জানিয়ে চলে আসলাম। গাড়ির পিছনে সিটে বসতেই উনি বলে উঠলেন,
এক মিনিট তোমার আমাকে ডাইভার মনে হচ্ছে ভ্রু কুচকে।
কেনো?ডাইভার মনে হবে কেনো? আপনি তো সাইনটিস্ট জানি আমি।
তো পিছনে বসছো কেনো? সামনে এসো।
সামনে এসে বসতেই উনি আবারো বললেন,
বাড়ি যাওয়ার খুশিতে কি সব ভুলে যাচ্ছো নাকি?
আমি আহম্মকের মতো বললাম,
কেনো কি করলাম আবার?
ওরনা দেখেছো অর্ধেক বাহিরে আর সিটবেল্ট ও বাধোনি? ?
সরি সরি আমি একদম খেয়াল করিনি বলে ওরনাটা ভিতরে টেনে নিলাম। সিটবেল্ট বাধতে যাবো উনি বললেন থাক আমি বেধে দিচ্ছি।
উনার আর আমার মধ্যে বেশি দুরুত্ব নেই আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি আর উনি সিটবেল্ট বাধতে ব্যাস্ত।
হুট করে চোখে চোখ পরতেই উনি ছিটকে সরে গেলেন। আমি ও জোরে নিশ্বাস নিয়ে বাইরে জানালার দিকে তাকালাম।
চলবে