আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ #মাইশাতুল_মিহির [পর্ব-২৫]

0
1780

#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির

[পর্ব-২৫]

আবরারের এমন কথা শুনে লজ্জাভূতি হলো দীবা। কুনই দিয়ে আবরারের পেটে আ’ঘা’ত করলো। ব্যাথায় মৃদু আর্তনাদ করে উঠলো আবরার। দীবা নিজেকে ছাড়িয়ে বলে উঠলো, ‘অ’সভ্য লোক।’

অল্প শব্দে হাসলো আবরার। দীবা ঝুড়ি থেকে কলেজ ড্রেস নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হলো ওয়াশরুম থেকে।

দীবার উপর বিরক্ত হলো নিশিতা। এতোক্ষণ লাগে কাপড় নিয়ে আসতে। দীবাকে ডাকতে রুমের ভিতরে তাকাতেই বিছানার উপর আবরারের শার্ট নজরে আসলো তার। এই শার্টটাই আবরার গতকাল পরেছিল। এটা দীবার রুমে এলো কিভাবে? কারণটা বুঝার জন্য খুব বেশি সময় লাগে নি তার। দীবার এই অস্বস্তির কারণ খুব সহজেই ধরে ফেলল। নিজেরই লজ্জা লাগলো হঠাৎ এমন আগমনে। দীবা দরজার কাছে আসতে রোহানা মৌনতার সঙ্গে ড্রেস নিয়ে চলে গেলো। কিছু জিজ্ঞেসও করলো না। দীবা চটজলদি দরজা লাগিয়ে ফুঁশ করে একটা নিশ্বাস ফেললো। এবার যেন সে হাঁফ ছেঁড়ে বেঁচেছে। স্বস্তির সাথে বিছানায় বসে আবরারের অপেক্ষা করতে লাগলো।

আষাঢ়মাসের আবহাওয়া সম্পর্কে আন্তাজ করা অড্ড মুশকিল। কিছুসময় পূর্বেও অম্বর ছিলো স্বচ্ছ নীল। আর কিছুসময়ের মাঝেই ঘোলাটে হলো আকাশ। প্রভঞ্জনে ভারী হলো চারপাশ। দীবা বারান্দার দরজা দিয়ে বাহিরে উঁকি দিলো। অন্তরিক্ষের হঠাৎ বিবর্ণ অবস্থা দেখে কপাল কুঁচকালো। আবরারের সাথে তুলনা করে নিলো তাৎক্ষনাৎ। ঠিক তিন মাস আগেও আবরার ছিলো বড্ড জেদি, একরোখা! আর তিন মাস পরেই লোকটা মাঝে প্রকাশ পেল কোমলায়ন! প্রকাশ পেলো দীবার প্রতি তার ভালোবাসা। বুঝলো বিয়ের গুরুত্ব। আকাশ টাও এমন। একটু আগে ভালো তো এখন খারাপ। আকাশ আর ভদ্রলোক, দুটোই এক প্রকৃতির। তখুনি দরজা খোলার শব্দ কর্ণগোচর হতেই পিছু ফিরে ওয়াশরুমের দিকে তাকালো দীবা। মুহূর্তেই তার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। চটজলদি দুই হাতে মুখ ঢেকে ফেললো। বিহ্বল হয়ে বলে উঠলো, ‘লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে ফেলছেন? এভাবে বের হয়েছেন কেন?’

ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকালো আবরার। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো খালি গায়ে সে। পরনে তার দীবার আকাশী রঙের টাওয়াল! তবে তাকে দেখে দীবার এভাবে মুখ ঢেকে ফেলার কোন মানে খুঁজে পেলো না। তাই কন্ঠস্বরে ক্ষুব্ধ প্রকাশ করে বলল, ‘এভাবে মুখ ঢাকার কি আছে? আজিব!’

দীবা মুখে হাত রেখেই বললো, ‘আমি আপনার মতো নি’র্ল’জ্জ না। এভাবে খালি গায়ে বেড়িয়েছেন কেন? ছিঃ’

আবরার ভ্রুঁ কুঁচকে বললো, ‘চোখে দেখো না তুমি? খালি গায়ে কোথায়? তোমার টাওয়াল পরে আছি আমি।’

‘ তোমার টাওয়াল ‘ কথাটা শুনেই চমকে উঠলো দীবা। মুখের সামনে থেকে হাত সরিয়ে আবরারের দিকে তাকিয়েই চোখ চড়কগাছে উঠে গেছে তার। নিজের প্রিয় টাওয়ালের এমতাবস্থায় দেখে মৃদু আওয়াজে চেঁ’চি’য়ে উঠলো, ‘এএএটা কি করলেন? আমার টাওয়াল পরলেন কেন?’

দীবার কথার পাত্তা না দিয়ে আবরার ত্যাঁছড়া ভাবে উত্তর দিল, ‘কেন পরেছি দেখতে পারছো না? টাওয়াল ছাড়া বাহিরে আসবো আমি? গাধা!’

আবরারের এমন প্রত্যুত্তর শুনে থমথমে খেলো দীবা। চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকালো। আবরার আয়নার সামনে গিয়ে দীবার উদ্দেশ্যে বললো, ‘আমার রুম থেকে সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট নিয়ে আসো। ‘

দীবা ঠোঁট গোল করে ব্যঙ্গ করে বলে উঠলো, ‘আমার শার্ট প্যান্ট নিয়ে আসো। আপনার হাত পা নেই? নিজের কাজ নিজে করতে পারেন না? আমার রুম থেকে এখুনি বের হোন বলছি।’

আবরার বিরক্তির চোখে তাকালো দীবার দিকে। কন্ঠে কিছুটা ক্রোধ ফুটিয়ে বললো, ‘যাবে?’

দীবা বুকে হাত গুঁজে একরোখা ভাবে বললো, ‘নাহ!’

দীবার প্রত্যুত্তর শুনে বাঁকা হাসলো আবরার। অতিদ্রুত দীবার সম্মুখে এসে দাঁড়ালো। হকচকিয়ে গেলো দীবা। পিছিয়ে যেতে নিলেই আবরার এক হাতে দীবার কোমড় ধরে কাছে টেনে নিলো। দীবা এখনো আশ্চর্যান্বিত! আবরারের ঠোঁটে এখনো শয়তানি হাসি বিদ্যমান। দীবার মুখের দিকে নিজের মুখ এগিয়ে নিতেই চেঁচিয়ে উঠলো দীবা, ‘আমি যাচ্ছি। আমি যাচ্ছি ভাই সরেন আমার থেকে।’

ধা’ক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো আবরারকে। তারপর এক মুহূর্তও বিলম্ব না করে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। দীবার এই অবস্থা দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো আবরার।
_________________

গলায় স্কার্ফ লাগাতে লাগাতে রুম থেকে বের হলো রিমি। গুনগুন করে হিন্দি গান গাইছে সে। মনটা তার বেশ ফুরফুরে। সিঁড়ির কাছাকাছি আসতেই দেখলো আয়েশা উপরে উঠছে। তাকে দেখেই আয়েশা কাজ দিয়ে দিলো, ‘রিমি তুই গিয়ে অভ্র কে ডেকে নিয়ে আয়। আমার কাজ আছে উপরে যেতে পারবো না।’

রিমি কাজের কথা শুনে মুখ কালো করে বললো, ‘আমি না আসলে তো ঠিকই উপরে যাইতা।’

রিমির আলসেমি দেখে এক গাল হাসলো আয়েশা। উপরে না গিয়ে নিচে যেতে যেতে বললো, ‘তাড়াতাড়ি যা!’

‘যাচ্ছি!’ বলে গটগট পায়ে আবারো ফিরতি পথের দিকে পা বাড়ালো রিমি। বিরক্তিতে বিড়বিড় করতে করতে অভ্রের রুমের সামনে আসলো। দরজায় কয়েকবার টোকা দেবার পর অভ্র দরজা খুললো। রিমিকে এখানে এইসময় দেখে অভ্র প্রশ্ন করলো, ‘তুমি এখানে?’

রিমি উগ্র কন্ঠে প্রত্যুত্তর করলো, ‘অকারণে নিশ্চয় আসি নি। এসেছি যেহেতু কাজ আছে। ছোট মা পাঠিয়েছে তাই বাধ্য হয়ে আপনার মুখখানি দেখিবার জন্য এসেছি।’

রিমির কথা শুনে ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকালো অভ্র। মনে মনে তাকে মাত্রাধিক ত্যাড়া মেয়ে বলে উপাধি দিলো। কথায় কথায় ঝ’গ’ড়ার জন্য এক্সপার্ট এই মেয়ে। মনে মনে হাসলো অভ্র। বুকে হাত গুঁজে দাঁড়ালো। তাকে এভাবে দাঁড়াতে দেখে রিমি কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললো, ‘বলছি সাহেব! একটু সময় হলে দয়া করে নিচে এসে নাস্তা খানা গিলে যান।’

অভ্র মাথা কিছুটা কাত করে বুঝালো ‘ঠিক আছে’! রিমি অভ্রের দিকে সূক্ষ্ম চোখে এক পলক তাকিয়ে চলে যাবার জন্য পা বাড়ালো। কিছুটা সামনে যাবার পর অভ্র পিছু ডেকে উঠলো, ‘রিমি?’

ডাক শুনে পিছু ফিরে তাকালো রিমি। তাকে তাকাতে দেখে অভ্র মিষ্টি করে একটা হাসি দিলো। তারপর ঠোঁটে হাসি রেখেই বলল, ‘কিছু না!’ বলেই রুমে চলে গেলো।

অবাক হলো রিমি। প্রথমে বিস্মিত হলেও এখন রাগ উঠলো শরিরে। এক হাত উঠিয়ে রাগে গিজগিজ করতে করতে চেঁচিয়ে উঠলো, ‘আরে ভাইইই কিছু না হলে ডাকলি কেন?”

অভ্র রুমে চলে আসলেও দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলো। রিমির কথাটা শুনে নিঃশব্দে হেসে উঠলো। মেয়েটা একটু বেশি পাগলী! ভালোলাগা কাজ করলো মনে। আনমনে হেসে এক হাতে সিল্কি চুল গুলো এলোমেলো করে ফেললো সে।
_________________

মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশ! শীতল হাওয়া প্রভাহমান। ঘন কালো মেঘ জমে আছে আকাশে। কিয়ৎক্ষণ পর ঝিরঝির বৃষ্টিতে মুখরিত হলো আগ্রাবাদ শহরাঞ্চল। অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ মৃদু আলোকিত হতে লাগলো। ধমকা হাওয়ার কারণে বারান্দার পর্দা গুলো উড়ছে। কিছুটা বিরক্তবোধ করলো আবরার। এগিয়ে এসে বারান্দার দরজাটা লাগিয়ে দিলো। তখুনি সেখানে উপস্থিত হলো দীবা। হাতে তার আবরারের শার্ট প্যান্ট। মুখখানি কালো রেখেই কাপড় দুটো আবরারের দিকে এগিয়ে দিলো। আবরার স্বাভাবিক ভাবে কাপড় হাতে নিয়ে বলল, ‘ফ্রেশ হয়ে আসো।’

আবরারকে দীবার এই মুহূর্তে আদেশকারী মনে হচ্ছে। বিরক্তিকর চোখেমুখে আবরারের দিকে এক পলক তাকিয়ে কাভার্ড থেকে আকাশী রঙের পিস জামা আর প্লাজু নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। এই ফাঁকে আবরার তৈরি হয়ে নিলো। তারপর বিছানায় বসে দীবার অপেক্ষা করতে লাগলো। দীবা ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আবরারকে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে বলল, ‘আপনি এখনো যান নি?’

আবরার মোবাইলের দিকে তাকিয়েই উত্তর দিলো, ‘না তোমার অপেক্ষায় ছিলাম। এক সাথে নিচে যাবো।’

অসন্তুষ্ট হয়ে ফুঁশ করে নিশ্বাস ফেললো দীবা। প্রতিক্রিয়া না করে চুপচাপ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ে বেনী করে নিলো। আবরার দাঁড়িয়ে মোবাইল পকেটে রাখলো। তারপর দীবার এক হাত ধরে বললো, ‘চলো।’

দীবা জানতে চাইলো, ‘কোথায়?’

‘এক সাথে নিচে যাবো নাস্তা করার জন্য।’

দীবার হাত ধরেই দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো আবরার। দীবা বলল, ‘ঠিক আছে কিন্তু হাত তো ছাড়ুন।’

‘না। এভাবেই যাবো।’

চোখ বড়বড় করে তাকালো দীবা। অস্থির হয়ে নিজের হাত ছাড়ানোর প্রয়াস করে বললো, ‘ইম্পসিবল! হাত ধরে নিচে যাওয়া সম্ভব না। হাত ছাড়ুন।’

ইতিমধ্যে দুইজন রুমের বাহিরে এসে পরেছে। আরেকটু সামনে গেলে সিঁড়ির কাছাকাছি চলে আসবে। দীবার কথা কর্ণপাত হতেই দাঁড়ালো আবরার। দীবার দিকে ফিরে বললো, ‘হাত ধরে যেতে না চাইলে কোলে তোলে নিয়ে যাবো। যাবে? কোনটাতে কমফোর্টেবল ফিল করবে? হাত ধরে নাকি কোলে উঠে?’

থমথমে খেলো দীবা। চোখমুখ কুঞ্চিত করে প্রথমের মতোই বললো, ‘হাত ছাড়ুন।’

আবরার দীবার দিকে কোলে নেবার ভঙ্গিতে এগিয়ে এসে বললো, ‘তাহলে কোলে আসো।’

ভড়কে গেলো দীবা। স্তম্ভিত হয়ে অস্থির কন্ঠে বলে উঠলো তাৎক্ষনাৎ, ‘না না না। এভাবেই ঠিক আছি। কোলে নিতে হবে না।’

দীবার এমন হতভম্ব অবস্থা দেখে হেসে ফেললো আবরার। দীবার এক হাত খুব যত্ন সহকারে মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো। হাতটা তুলে মুখের সামনে এনে প্রগাঢ় ভাবে একটা চুমু দিলো। মৃদু কন্ঠে বললো, ‘আমি হাত ধরলে ছাড়ার কথা কখনো বলবে না। আমার ভালো লাগে না।’

দীবা প্রত্যুত্তর করলো না। পলকহীনভাবে তাকিয়ে রইলো আবরারের দিকে। এই মুহূর্তে ভালো লাগা কাজ করলো তার মনে। লোকটার ব্যবহার, কথাবার্তা ও চালচলন সব কিছুতেই কেমন অদ্ভুত মায়া কাজ করে। অনুভূতি নামক নতুন কিছু অনুভব হয় মনে। দীবার চোখে আবরারের প্রতি একরাশ মুগ্ধতা প্রকাশ পেলো। আবরার দীবার হাত ধরে নিচে যেতে লাগলো। প্রথমে দীবা কিছু না বললেও সিঁড়ির দিয়ে নিচে নামার সময় অস্বস্তি কাজ করতে লাগলো। বাসার সবার সামনে হাত ধরে যাবে? ইশ! ব্যাপারটা অপ্রীতিজনক। সিঁড়ি থেকে নামার পর দীবা ফিশফিশ গলায় বললো, ‘প্লিজ হাত ছাড়ুন। সবার সামনে এভাবে যাবো না। আমার লজ্জা লাগছে।’

‘কিছু হবে না!’ বলল আবরার। দীবা নিরবে চেষ্টা করলো ছাড়ানোর। কিন্তু আবরার শক্ত করে ধরে রাখায় ব্যর্থ হলো। ডাইনিং টেবিলের কাছে আসার পর উপস্থিত সকলের দৃষ্টি তাদের দিকে পরলো। নিশিতা, রোহানা, আয়েশা অবাক হলো অনেক। সাথে অবাক হলো অন্যরাও। দীবা অস্বস্তিতে একদম জমে গেছে। আবারো হাত ছাড়তে চাইলে আবরার শক্ত করলো বাঁধন। ক্ষান্ত হলো দীবা। হাল ছেড়ে দিলো। লজ্জায় নত হয়ে ইতস্তত করতে লাগলো। আবরার রোশানের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে ঠিক তার সামনে চেয়ার টেনে নিজে বসলো ও দীবাকে তার পাশে বসালো। এখানে মূলত এভাবে আসার কারণ টা হচ্ছে রোশান! গতপরশু রোশানের করা কাজটার জন্যই আবরার দীবার হাত ধরে সবার সামনে এসেছে। বুঝানোর চেষ্টা করিয়েছে যে তার আর দীবার সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে। ছেলের নিরব প্রত্যুত্তর দেখে সকলের অগোচরে মুচকি হাসলো রোশান। রিমি, নুরা চুপচাপ বসে আছে। রোশান ও হোসেন এখানে উপস্থিত থাকায় মজা করতে পারছে না। তবে ঠোঁটে ঠোঁট টিপে মৃদু হাসি ঝুলে আছে সবার মুখে। আবরার নির্বিকার ভাবে নাস্তা শুরু করেছে। দীবা স্যান্ডউইচ হাতে নিয়ে বসে আছে। ভীষণ লজ্জা লাগছে তার। সবার সামনে বসে থাকার মতো স্বস্তি পাচ্ছে না।

বেশ কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত হবার পর রোশান মুখ খুললো, ‘আফজালের সাথে কথা হয়েছে আমার। আমাদের সবাইকে ডিনারের জন্য ইনভাইট করেছে আজ।’

সাবিত বললো, ‘কোথায়? উনাদের বাসায়? কিন্তু বিয়ের আগে এভাবে..’

রোশান বললো, ‘রাজিবের একটা নিজস্ব রেস্টুরেন্টে আছে। সেখানেই ইনভাইট করেছে। যদিও প্রথমে তাদের বাড়িতে যাবার জন্য বলেছিলো। আমি বারণ করায় রাজিব তার রেস্টুরেন্টের কথা বলেছে।’

নিশিতা বললো, ‘ভালো করেছো। বিয়ের আগে এভাবে পরিবার সহ পাত্রের বাড়িতে যাওয়াটা বেমানান।’

আয়েশাও সম্মতি দিলো জা’য়ের কথায়। অতঃপর রোশান সবাইকে সন্ধ্যা তৈরি থাকতে বললো। দীবা কোনো রকমে খাবার শেষ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। তার সাথে সাথেই রিমি, নুরা উঠে গেলো। বাকিরা নিজেদের মতো করে খাবার খেতে লাগলো।

দীবা সিঁড়ির কাছাকাছি এসে পিছনে তাকিয়ে দেখলো নুরা আর রিমি তার পিছু আসছে। তাদের আসতে দেখেই দীবা তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে উপরে যেতে লাগলো। তাকে দৌড়াতে দেখে রিমি নুরাও পিছু দৌড়ালো। দীবা দৌড়ে নিজের রুমে ঢুকতে যাবে এমন সময় নুরা আর রিমি এসে তাকে ধরে ফেললো। হতভম্ব হয়ে গেলো দীবা। বিরক্ত হয়ে একটা তপ্ত শ্বাস ফেললো। নুরা দীবার হাত ধরেই বললো, ‘পালাচ্ছিলি কেন?’

দীবা কটমট করে বললো, ‘তোদের কাছে থাকলে ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে। তাই ইজ্জত বাঁচাতে পালাচ্ছি। হাত ছাড়।’

নিজের হাত ছাড়ানোর জন্য মোচড়ামুচড়ি করতে লাগলো দীবা। নুরা রিমি শক্ত করে ধরলো হাত দুটো। রিমি দীবার কথার প্রত্যুত্তর করলো, ‘ইজ্জতের ফালুদা করার মতো সিচুয়েশন ক্রিয়েট করছ কেন?’

নুরা দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো, ‘তবে যাই বল। ইজ্জতের ফালুদা খেতে আমাদের অনেক ভালো লাগে। এখন তাই খাবো। ছাদে আয়।’

অনিচ্ছা থাকার পরেও দীবা তাদের সাথে ছাদে যাবার জন্য পা বাড়ালো। ছাদে যাওয়ার এইটুকু পথটাকেও রেহাই দেয় নি নুরা রিমি। নানান কথার ছলেবলে কৌশলে দীবাকে আচ্ছা মতো প’চা’নি দিয়েছে

চলমান..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here