#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির
[পর্ব-৩০]
স্বচ্ছ কোমল অম্বর! থোকায় থোকায় সাদা কাদম্বিনী ভেসে বেড়াচ্ছে। শীতল বাতাসে গাছের সবুজ নেত্রপল্লব চারপাশ সু-সু করে শব্দ তুলে রেখেছে। চাঁদের আলোতে পুরো ছাদটা আজ মিটমিট আলোকিত। রোমাঞ্চিত স্তব্ধ অন্তরিক্ষ। কানের কাছে কিছু বুনো মৌমাছির গুনগুনানি আর নাকে কোনো একটা ফুলের সুগন্ধি পাচ্ছে অভ্র। হয়তো ছাদের কার্নিশে মাটির টবে থাকা সাদা ফুলটার, যেটা অন্ধকারের বুক চিরে অদূরে ফুটে রয়েছে। ছাদের কার্নিশে পরে থাকা কৃষ্ণচূড়ার ডালে কিছু একটা নড়াচড়ার শব্দ পেলো অভ্র। ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকে তাকালো অভ্র। ছাদে থাকা লাইটের আলোতে গাছের পাতা গুলো অল্পস্বল্প ভাবে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তাই অভ্র মোবাইলের ফ্ল্যাশ অন করে সেদিকে তাক করলো। কালচে বাদামি রঙের একটা কাঠবিড়ালি নজরে আসলো তার। নিশ্চিত হবার পর সেদিকে আর পাত্তা দিলো না। কৃষ্ণচূড়া গাছ থেকে লাইট সরিয়ে সামনে আনতেই হঠাৎ রিমিকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।তাকে এখানে দেখে কিছুটা বিস্মিত হলো অভ্র। ফ্ল্যাশ অফ করে রিমিকে প্রশ্ন করলো, ‘এখানে কেন?’
রিমি কিছুটা বিরক্তি সহিত উত্তর দিলো, ‘কি আর করবো? আপনাকে ডাকার জন্য তো আমাকেই দেখতে পায় সবাই।’
অভ্র সাবলীল ভাবে জানতে চাইলো, ‘কে ডাকছে আবার?’
রিমি প্রথমের কন্ঠস্বরে বিরক্তি ও রাগ প্রকাশ করলো। এক হাত উঠিয়ে ঘড়ির দেখিয়ে বলে উঠলো, ‘সময় দেখেছেন? রাতের খাবার খাওয়ার জন্য ডাকছে আপনাকে। কেন যে তখন বলতে গেলাম আপনাকে ছাদে আসতে দেখেছি। যদি না বলতাম তাহলে আমাকে এখানে পাঠাতো না। আর না আপনার মুখখানি দর্শন করতে হতো। বিরক্তিকর!’
মন খারাপের সময় একা থাকতে পছন্দ করে অভ্র। তাই নিঃসঙ্গতার সঙ্গি হিসেবে ছাদের নিরিবিলি পরিবেশটাকে কাছে টেনেছে। কিন্তু এইসময় উলটা পালটা প্রলাপ শুনে মেজাজ বিগড়ে গেলো তার। তবুও নিজেকে শান্ত রেখে শুধাল, ‘এতোই যখন বিরক্ত লাগে তাহলে সামনে আসো কেন? চলে যাও।’
রিমি ঝ’গ’ড়া চালিয়ে যেতে অভ্রের কথার প্রত্যুত্তর করলো, ‘হ্যালো মিঃ? এটা আমার বাড়ি। আমি কোথায় যাবো সেটা সম্পূর্ণ আমি ডিসাইড করবো। আপনি বলার কে?’
ঝ’গ’ড়া করার মতো ইচ্ছে কিংবা মন কোনোটাই অভ্রের এই মুহূর্তে নেই। তাই নিজেকে যথাসম্ভব সংযত করে বললো, ‘তোমার বলা শেষ হলে যেতে পারো।’
অভ্রের এমন কথা শুনে অপমানবোধ করলো রিমি। রাগে দাঁত কিড়মিড় করে কাটকাট গলায় বলে ফেললো, ‘এই মেয়ে মানুষের সাথে কিভাবে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় জানেন না? আপনার বাবা মা আপনাকে শিক্ষা দেয় নাই? ছিঃ উনারা এইটুকু কাজ করতে পারলো না? অন্ততপক্ষে মেয়েদের সম্মান দেবার শিক্ষাটা তো দিতে পারতো।’
এমনিতেই মন খারাপ। নিরিবিলি, নির্জন পরিবেশ দরকার ছিল মন ভালো করার জন্য। সেখানে আবার রিমির অহেতুক প্রলাপ। তার উপর আবার বাবা মা কে নিয়ে কথা! অভ্র প্রকাণ্ড রকমের রেগে গেল। কপালের রগ ফোলে নীল বর্ণ ধারণ করলো। পাশে থাকা ফুল গাছের টবে শরিরের সর্ব শক্তি দিয়ে লাথি দিলো একটা। মাটির টবটা মেঝেতে পরে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। টব ভাঙ্গার শব্দে ভড়কে গিয়ে নাক মুখ কুঁচকে কানে দুই হাত চেপে ধরলো রিমি। হতবাক হয়ে গেলো অভ্রকে এভাবে হঠাৎ রেগে যেতে দেখে। বিস্মিত চোখে তাকালো রিমি। অভ্র ক্রোধান্তিত হয়ে রিমির এক হাত কোমড়ের পিছনে নিয়ে শক্ত করে ধরলো। তার এমন আকস্মিক রাগ দেখে ভয়ার্ত হলো রিমি। ভীতি চোখেমুখে তাকালো অভ্রের দিকে। অভ্র চোয়াল শক্ত করে বললো,
‘এতোদিন কারণ ছাড়া অনেক কথা শুনিয়েছো। আমি টলারেট করেছি। তোমার অহেতুক কাজ কারবার সহ্য করেছি। কিন্তু মম-ড্যাড কে নিয়ে কথা বলে কাজটা ভালো করো নি। তুমি মেয়ে বলে ছেড়ে দিচ্ছি। নাহলে আস্তো রাখতাম না।’
অভ্রের তীক্ষ্ণ চোখের দৃষ্টি দেখে ভীতিগ্রস্ত হলো রিমি। ভয়ের কারণে শুকনো ঢোক গিললো একটা। অভ্র চোয়াল শক্ত করেই রিমিকে আলতো ভাবে ধাক্কা দিয়ে ছাড়িয়ে দিলো। কোনো প্রকার টুঁশব্দ না করে ছাদ থেকে নিচে নেমে গেল। হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো রিমি। অভ্র শক্ত করে হাত ধরায় ফরশা হাতে পাঁচ আঙ্গুলের লাল দাগ পরে গেছে। ধরে রাখা অংশ জ্বলছে ভীষণ। কিন্তু সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই রিমির। সে অবাক হয়ে অভ্রের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। রাগ হলো নিজের উপর। কারণ ব্যতিত কেন অভ্রের বাবা মা কে নিয়ে কথা বলতে গেলো? লোকটা কি খুব বেশি রাগ করেছে? কষ্ট পেয়েছে নিশ্চয়? ক্ষুন্ন হলো রিমির মন। ব্যথিত চেহারায় মন খারাপ করে নিচে নামতে পা বাড়ালো।
_____________________
ভয়ার্ত রিমি মন। বারংবার ভয়ে শুকনো ঢোক গিলছে। গলা দিয়ে খাবার নামছে না আতঙ্কের কারণে। পুরো মস্তিষ্ক জুড়ে ঘুরছে অভ্রের কথা। টানা টানা চোখ দুটো তুলে সামনে বসে থাকা অভ্রের দিকে তাকালো রিমি। অভ্রের মুখ গম্ভীর। অন্যান্য দিনে খাবার খাওয়ার সময় হেসে হেসে কথা বললেও আজ অভ্র একদম নিশ্চুপ। নির্বিকার ভাবে নিজের খাবার খেয়ে যাচ্ছে। অভ্রের এই গাম্ভীর্যপূর্ণ মুখখানি দেখে ক্ষুণ্ণ হলো রিমির মন। খারাপ লাগছে বেশ। সে তো এমনি এমনি অভ্রের বাবা মায়ের কথা বলেছে। তাই বলে এভাবে রেগে যাবে? এবার রাগ হলো নিজের উপর। কেন তখন বাবা মায়ের শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে গেলো? আহত মনেই অনিচ্ছা থাকার পরেও খাবার চিবুচ্ছে রিমি।
রাতের খাবারের টেবিলে বসে আবরারের অপেক্ষায় আছে দীবা। মনে মনে বিরক্ত হলো অনেক। আশ্চর্য লোক তো। সবাই এখানে এসে পরেছে কিন্তু লোকটা এখনো আসছে না কেন? দীবার এই ভাবনার মাঝেই সেখানে উপস্থিত হলো আবরার। শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে টেবিলের কাছে আসলো। নির্বিকার ভাবে দীবার পাশের চেয়ারটা টেনে বসে পরলো। মনে মনে প্রচুর খুশি হলেও বাহ্যিক ভাবে দীবা স্বাভাবিক রইলো। তাকালো না আবরারের দিকে। চুপচাপ খাবার খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।
টেবিলে রোশান উপস্থিত থাকায় আবরার দীবার পাশে বসেছে। সময় গেলেও রোশানের প্রতি আবরারের রাগ, অভিমান কোনোটাই কমে নি। চেয়ার টেনে বসেই প্রথমে রোশানের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো। চোখাচোখি হলো বাবা ছেলের। রোশান গম্ভীর মুখে চোখ সরিয়ে খাবার মুখে তুললো। যদিও মনে মনে ছেলের প্রতি সন্তুষ্ট। আবরার রোশানের থেকে চোখ সরিয়ে অভ্রের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো, ‘আগামীকাল তুমি ঢাকা যাচ্ছো?’
উপস্থিত থাকা সকলের বিস্মিত হওয়া দৃষ্টি অভ্রের দিকে নিবদ্ধ হলো। হঠাৎ-ই চলে যাবার খবর কারোর ঠিক হজম হচ্ছে। অভ্র নির্বিকার ভাবে উত্তর দিলো, ‘হ্যাঁ।’
আবরার কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিশিতা বলে উঠলো, ‘ওমা, কিছুদিন পর রাইমার বিয়ে। আর তুমি এখন চলে যাবে?’
অভ্র প্রত্যুত্তর করলো, ‘অনেক দিন তো হয়েছে এসেছি। ওইদিকে কাজ গুলো জমে আছে। ইদানীং কাজের ভীষণ চাপ। তাছাড়া বনানিতে আমার পারসোনাল কিছু দরকার আছে। বিয়ের সময় নাহয় আসবো।’
আবরার প্লেটে খাবার নিতে নিতে বললো, ‘কাজ সামলানোর জন্য সাত্তার আছে। তোমাকে টেনশন নিতে হবে না। তুমি আমার সাথেই ঢাকা ব্যাক করবে।’
অভ্র বললো, ‘বিয়ের সময় নাহয় আসবো। এখন আমার যাওয়া টা খুব জরুরি।’
তাদের কথার মাঝে নুরা হুট করে বলে উঠলো, ‘অভ্র ভাইয়া! কাজটা কিন্তু ঠিক না। আপনি থাকলে অনেক মজা হবে। প্লিজ এখন যাবেন না। প্লিজ প্লিজ।’
রোশান এতোক্ষণে মুখ খুললো, ‘আর কয়েকটা দিন থেকে যাও অভ্র। আবরার তো বলছে কাজ সামলাতে আরেকজন আছে সেখানে। টেনশন নিও না। থেকে যাও।’
অভ্র ছোট করে উত্তর দিলো, ‘দেখা যাক।’
অভ্রের চেহারা আর না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সন্দেহ হলো আবরারের। হঠাৎ কি এমন হয়েছে যে তাকে না জানিয়ে ঢাকা যাবার প্ল্যান করে নিয়েছে অভ্র? সবসময় মুখে হাসি লেপ্টে থাকা ছেলেটার মুখ এখন গুমরো! কারণ কি? হাতে থাকা ডিজিটাল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তারিখ দেখলো আবরার। কিছু একটা মনে পরতেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিরবে। মনে মনে ভাবলো এই কয়েকদিন অভ্রকে একা রাখা যাবে না।
কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলো রিমি। অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো অভ্রের দিকে। তার ছোট একটা কথায় অভ্র এভাবে চলে যাবে বিশ্বাস হচ্ছে না। কষ্ট লাগছে খুব। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কাটা চামচ প্লেটে ঘুরাতে লাগলো। ভাবলে লাগলো কিভাবে অভ্রের যাওয়া আটকাবে। কিভাবে স্যরি বলবে।
_____________________
আষাঢ়মাসের কারণে বাহিরের পরিবেশটা আজ শীতল। কিন্তু দীবার মনটা আজ অস্থির। দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে আবরারের রুমের সামনে পায়চারি করছে। এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ডাক দিবে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য? রাগ ভাঙ্গাবে কিভাবে? এই ব্যাপারে কোনো অভিজ্ঞতা নেই তার। বারবার অস্থির মনে বড়বড় নিশ্বাস নিয়ে প্রশ্বাস ফেলছে। অতঃপর নিজেকে সামলে নিলো। এবার দরজা ধাক্কা দেবার জন্যই মনস্থির করলো। বহু চিন্তার কারণে শুকিয়ে যাওয়া উষ্ঠধয় জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে হাত উঠাবে এমন সময় পিছন থেকে অভ্র বলে উঠলো, ‘কিছু হয়েছে?’
হকচকিয়ে গেলো দীবা। হতভম্ব হয়ে পিছু ফিরে তাকালো। অভ্র প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। দীবা এক হাতে মাথা চুলকে কিছুটা ইতস্তত করে বললো, ‘না। তেমন কিছু না।’
অভ্র দীবার পিছনে আবরারের রুমের দিকে তাকালো। তারপর দীবার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে উঠলো, ‘ভাইয়ের রা:গ কিন্তু অনেক। সাবধানে কথাবার্তা বলবে ভাইয়ের সাথে। কখন কোন কথায় রে:গে যায় বলা মুশকিল। তবে আমার মনে হয় না এখন তোমার সাথে রাগ দেখাবে। নিশ্চিন্তে যেতে পারো।’
কথা বলেই নির্বিকার ভাবে পকেটে দুই হাত গুঁজে রুমে চলে গেলো। অভ্রের কথা শুনে ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো দীবা। সাবধানে আর কি কথা বলবে সে? যা বলার আগেই তো বলে দিয়েছে। এখন কি করবে সে?? হৃদয় ভয়ার্ত হলেও মনে অনেক সাহস জুগিয়ে দরজায় কয়েকবার টোকা দিলো।
.
বারবার দরজায় টোকা পরার কারণে মহা বিরক্ত হলো আবরার। অপ্রসন্ন হয়ে দরজা খুললো। চেহারায় তার স্পষ্ট রাগের ছাপ। দরজার বাহিরে দীবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্রোধান্তিত চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেলো। গম্ভীর চোখে তাকিয়ে রইলো দীবার দিকে।
আবরার দরজা খুলার পর দীবা ঠোঁট টেনে বোকা বোকা টাইপ হাসি দিলো একটা। সকালে যেভাবে রাগিয়ে দিয়েছিলো ; এখন যদি সেই রাগের বশে থাপ্পড় দিয়ে বসে? কিংবা ভাঙ্গচুর করে? মনে সাহস জুগালো দীবা। শুকনো ঢোক গিলে বলল, ‘হ্যালো!’
প্রত্যুত্তর করলো না আবরার। চোখ ছোট ছোট করে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে রইলো দীবার দিকে। তার এখানে আসার কারণ কি বুঝার চেষ্টা করতে লাগলো। আবরারকে চুপ থাকতে দেখে দীবা আবারো বলে উঠলো, ‘কতোক্ষণ ধরে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি। ভিতরে যেতে বলবেন না? কি অদ্ভুত লোক আপনি।’
‘ভিতরে আসতে হবে না।’ কথাটা বলেই দরজা লাগিয়ে দিতে লাগলো আবরার। তখুনি দরজা লাগাতে বাধা দিতে দিতে চেঁচিয়ে উঠলো দীবা, ‘আশ্চর্য দরজা লাগাচ্ছেন কেন? কতো খারাপ আপনি। সরেন সামনে থেকে।’
একপ্রকার জোর দেখিয়েই দরজা ঠেলে রুমের ভিতরে ঢুকলো দীবা। অবাক হলো আবরার। দরজা না লাগিয়ে পা দিয়ে ঠেলে ভিড়িয়ে দিলো কেবল। নির্বিকার ভাবে নিজের স্টাডি টেবিলের কাছে গেলো। দীবা আবরারের বিছানার উপর দুই পা তুলে বসলো। চোখ ছোট ছোট করে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো তাকে। নির্লিপ্ত আবরার নিজের মতো টেবিলে থাকা কিছু বই, কাগজপত্র গুছাচ্ছে। ভুলেও দীবার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না। এভাবেই পার হলো অনেকটা সময়। দীবা চোখ ঘুরিয়ে দেয়াল ঘড়িতে সময় দেখে নিলো। আবরার এখনো কোনো প্রকার টুঁশব্দ করছে না। কারণটা তার জানা। তবুও আবরারকে খোঁচা দিয়ে বলে উঠলো, ‘কি ব্যাপার? সারাদিন কোথায় ছিলেন? বাড়ি ফিরলেন রাতে তাও ভাব নিয়ে আছেন। হয়েছে টা কি?’
আবরার একগাদা ফাইল ড্রয়ারে রাখতে রাখতে শুধাল, ‘তোমাকে কেন বলবো?’
মুখ কালো করে ফেললো দীবা। মন খারাপ হলো। এতো রেগে থাকার কি আছে? সে তো নিজে থেকে আবরারের রুমে এসেছে। তবুও লোকটা তাকে পাত্তা দিচ্ছে না? ক্ষুণ্ণ মনে বিছানা থেকে নেমে নিঃশব্দে আবরারের পিছনে এসে দাঁড়ালো। কোনো প্রকার সংকোচ ছাড়া আবরারের বাহু ধরে নিজের দিকে ফিরালো। ঠোঁট উলটে ক্ষুণ্ণ মনে বললো, ‘স্যরি। তখন রাগের বশে কি থেকে কি বলেছি জানি না। সকালে অনেক মন খারাপ ছিলো। তাই হুট করে রেগে গিয়েছি। এতটুকুই তো রাগ দেখিয়েছি আপনার সাথে। তাই বলে এভাবে ইগনোর করবেন? আমার কিন্তু অনেক খারাপ লাগছে।’
চলমান….