#আষাঢ়ে_শ্রাবণের_বর্ষণ
#মাইশাতুল_মিহির
[পর্ব-৫৫]
‘নুরা? দরজা খোল প্লিজ। আর কতোক্ষণ রুমে বসে থাকবি? আমাদের তো ভিতরে যেতে দে।’
আকুতি করে কথাটা বললো দীবা। অসহায় চোখে পিছু ফিরে নিশিতার দিকে তাকালো। আয়েশা আতঙ্কিত গলায় বিচলিত হয়ে বলে উঠলো, ‘এই নুরা। কি করছিস ভিতরে? দরজা খুলছিস না কেন?’
তবুও উত্তর দিলো না নুরা। বিছানার পাশে ফ্লোরে বসে নিরবে কাঁদছে সে। চোখ দুটো তার অসম্ভব লাল হয়ে আছে। আরব ভাই তার ব্যক্তিগত ক্ষোভ দেখালো। রাজ দীবাকে ভালোবাসতো মানছে। কিন্তু যখন জানতে পেরেছে দীবা আরব ভাইয়ের স্ত্রী তখন তো দূরে সরে গেছে। তাহলে কেন এতো রাগ থাকবে তার?
বাহির থেকে আবারো ডাকার শব্দ কানে আসলে বিরক্ত হলো নুরা। বসা থেকে উঠে ফুলের একটা টপ দরজার দিকে ঢিল দিয়ে ভেঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলো, ‘ডাকবে না কেউ আমায়। এখন আদিক্ষ্যেতা দেখাতে হবে না।’
টপ ভাঙ্গার শব্দ শুনে অস্থির হয়ে উঠলো আয়েশা। নুরা কি রাগের বশে কোনো ভুল পদক্ষেপ নিয়ে নিবে? এই প্রশ্ন টা মাথায় আসতেই অস্থির হয়ে নিশিতা কে মিনতি করে বললো, ‘ভাবি, নুরাকে দরজা খুলতে বলেন। কিছু না আবার করে ফেলে। প্লিজ ভাবি আমার অনেক ভয় লাগছে।’
‘উফফ যাবে তোমরা এখান থেকে? দরজা খুলবো না আমি।’
আবারো চেঁচিয়ে বলে উঠলো নুরা। রিমি গলা ঝেড়ে স্বাভাবিক ভাবে বললো, ‘ডিনার করবি না?’
‘না।’
নুরার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিশিতা। আয়েশাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিয়ে গেলো। বাড়ির পরিবেশটা একদম থমথমে। রাতের খাবারে কারোর মন বসেনি। কেউ খেয়েছে তো কেউ খায় নি।আবরার ভাবলেশহীন। সে স্বাভাবিক ভাবে খেয়েদেয়ে রুমে গিয়ে ল্যাপটপে নিজের কাজ করছে। এই দেখে দীবার রাগ আরো বেড়ে গেলো। রাগে গটগট পায়ের কদম ফেলে আবরারের রুমে আসলো। একদম সামনাসামনি দাঁড়িয়ে ঝাঁঝালো গলায় বলে উঠলো, ‘সমস্যা কি আপনার? এমন ভান ধরে আছেন যেন কিছুই হয়নি।’
আবরার ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে দীবার দিকে শান্ত চোখে তাকালো একবার। কোনো প্রকার প্রত্যুত্তর না করে চোখ নামিয়ে নিলো। তাকে চুপ থাকতে দেখে দীবা ল্যাপটপ টা ঠাস করে বন্ধ করে ফেললো। চোয়াল শক্ত করে ফেললো আবরার। নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করলো। ল্যাপটপ বন্ধ করেই দীবা রাগি গলায় বললো, ‘ আঙ্কেল কে না বলে দেওয়ার কারণ কি?’
‘এই ব্যাপারে আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই না। ঘুমাও।’
বলেই উঠে দাঁড়ালো। আলমারির কাছে গিয়ে দরজা খুলে কাপড় বের করতে লাগলো। দীবা আবরারের পিছু গিয়ে ফের বলে উঠলো, ‘অবশ্যই বলতে হবে। রাজ স্যার আর নুরার রিলেশন মানতে অসুবিধে কোথায় আপনার?
বহু চেষ্টা করেও নিজেকে আর আটকাতে পারলো না আবরার। রাগের বশে আলমারির দরজাটা শব্দ করে লাগিয়ে দিলো। পিছু ফিরে দীবাকে ধমক দিয়ে বলে উঠলো, ‘অবশ্যই আছে। সমস্যা আছে। রাজের সঙ্গে কিছুতেই নুরার বিয়ে হবে না। গট ইট? এবার যাও এখান থেকে।’
দীবা কপাল কুঁচকালো। গম্ভীর কন্ঠে শুধাল, ‘আমার কেন জানি মনে হচ্ছে রাজ স্যারের উপরের রাগ আপনি নুরার উপরে ঝাড়ছেন। আপনাদের মাঝে কি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে আমি জানি না। কিন্তু সেই রাগ আপনি নুরার উপরে কেন দেখাবেন? রাজ স্যার….”
দীবা কথাটা সম্পূর্ণ করার আগেই আবরার উচ্চস্বরে ধমকে উঠলো, ‘চুপ! একদম চুপ। রাজের নাম যেন তোমার মুখে দ্বিতীয় বার না শুনি।’
ধমক শুনে ইষৎ কেঁপে উঠলো দীবা। এতোক্ষণে রুমে নিশিতার আগমন ঘটেছে। আবরারকে এভাবে ধমকাতে দেখে বিস্মিত হলো সে। দ্রুত এগিয়ে এসে দীবার বাহু ধরে অবাক হয়ে বলে উঠলো, ‘এভাবে কথা বলছিস কেন তোরা? বাহির থেকে সব শুনা যাচ্ছে।’
দীবা নিশিতার কথায় উপেক্ষা করে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো। আবরারের কাছে এসে আবারো ঝাঁঝালো গলায় বলল, ‘কেন বলুন তো? স্যারের সাথে আপনার সমস্যা কোথায়? প্রথম দিন থেকেই দেখে আসছি আপনি তাকে সহ্য করতে পারেন না। আর সেই কারণেই নুরার বিয়ে দিতে চান না। রাইট?’
‘এক্সেক্টলি। রাজকে আমি সহ্য করতে পারি না। ওকে দেখলেই জাস্ট মে/রে ফেলতে ইচ্ছে করে। আরে দুইদিনের মধ্যে নুরার প্রতি তার এতো ভালোবাসা আসলো কোথায় থেকে?’
দীবা আবরারের চোখে চোখ রাখলো। তার কথার প্রত্যুত্তরে কঠোরভাবে প্রশ্ন করে ফেললো, ‘এই সেম প্রশ্নটা যদি আমি আপনাকে করি। তাহলে কি জবাব দিবেন?’
দীবার প্রশ্ন শুনে নিশিতা ধমক দিয়ে উঠলো, ‘পাগল হয়েছিস নাকি? কি বলছিস এইগুলো?’
নিরবে দাঁতে দাঁত পিষলো আবরার। চোয়াল শক্ত করে দীবার দিকে তাকালো। দুই হাত শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করে কোনো রকমে নিজেকে কন্ট্রোল করলো। নিশিতার দিকে তাকিয়ে যথাসম্ভব শান্ত গলায় বললো, ‘আম্মু দীবাকে এখান থেকে যেতে বলো। আদার ওয়াইজ আমি কিছু করে ফেলবো। ওকে এখান থেকে নিয়ে যাও।’
‘থাকতেও চাই না আপনার এখানে।’
কাটকাট গলায় কথাটা মুখের উপরে বলে দিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো দীবা। নিশিতা আবরারের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, ‘এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাধাস না। ঘুমিয়ে পর।’
চলে গেলো নিশিতা। টেবিলের উপরে থেকে একটা শো পিস হাতে নিয়ে রাগে ভেঙ্গে ফেললো আবরার। অতিরিক্ত রাগের কারণে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো।
____________________
গতকাল বিকেলের ঘটনার পর থেকেই একপ্রকার ভয়ে আছে রিমি। আতঙ্কদায়ক অনুভূতি ঘিরে রেখেছে তাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠার পরপর বিকেলের কথা মনে পরতেই চিন্তিত হয়ে পরলো আবারো। সাবিত আর আরব ভাই যদি একবার জানতে পারে তার রিলেশনের কথা? তখন কি তাকে ধমকাবে? ভাবতেই শুকনো ঢোক গিললো। কোনো রকমে ফ্রেশ হয়ে বেরুলো রুম থেকে নাস্তার উদ্দেশ্যে। নুরার কথা চিন্তা করতে করতে হাঁটছে রিমি। তখুনি পিছন থেকে হঠাৎ অভ্রের ডাক শুনে চমকে উঠলো সে। ভড়কে গিয়ে বুকে ফু দিয়ে বলে উঠলো, ‘এভাবে কেউ ডাকে?’
হতভম্ব হয়ে গেলো অভ্র। কপাল কুঁচকে বললো, ‘আস্তেই তো ডাক দিলাম। কি ভাবছিলে তুমি?’
অভ্রের দিকে আড় চোখে তাকালো রিমি। একবার আশেপাশে চোখ বুলিয়ে ফিশফিশ করে অভ্রকে বললো, ‘এখন থেকে রিমি নামে কাউকে তুমি চিনো না। আমাদের মধ্যে কোনো রিলেশন নেই। সব ভুলে যাও। আপন প্রাণ বাঁচাও।’
শেষের কথাটা কিছুটা অস্থির হয়ে বলেই দৌড় লাগালো নিচে যাবার জন্য। কিছুই বুঝতে না পেরে ফ্যালফ্যাল চোখে রিমির চলে যাওয়া দেখলো অভ্র। হঠাৎ আবার কি হলো এই মেয়ের? শব্দ করে একটা নিশ্বাস ফেলে নিজেও নাস্তা করার জন্য পা বাড়ালো।
_____________________
ঘড়ির কাটা প্রায় এগারোটার ঘরে। শুক্রবার হওয়ায় স্কুল কলেজ অফিস বন্ধ। তাই বাড়িতে সবাই উপস্থিত। ব্যস্ততা কাটিয়ে এই একটা দিনই ছুটি পায় সবাই। পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চায়। কিন্তু শান্তি নিবাস অন্যান্য দিনের মতো প্রাণোচ্ছল নেই। থমথমে হয়ে আছে চারপাশ। সকালে নাস্তার জন্য নুরাকে বারবার ডাকা হয়েছে। কিন্তু জেদি নুরা দরজা খুললো না। বেশ কয়েকবার ডাকার পর হাল ছেড়ে দিলো সবাই। শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে নিরবে।
ড্রয়িংরুমের সোফা বসে টিভি দেখছে আবরার, রোশান ও সাবিত। তখুনি সিঁড়িতে কারোর পায়ের শব্দ পেয়ে সেদিকে ফিরে তাকালো আবরার। নুরাকে নামতে দেখে বুক্র হাত গুঁজে সোফায় হেলান দিয়ে বসলো। ভ্রুঁ কুঁচকে তাকিয়ে রইলো নুরার দিকে। কারণ ড্রেসআপ দেখে বুঝা যাচ্ছে নুরা বাহিরে যাওয়ার জন্য বেরুচ্ছে। কিন্তু যাবে কোথায়? নুরাকে নিচে নামতে দেখে আয়েশা তড়িঘড়ি করে তার দিকে এগিয়ে এসে ব্যস্ত গলায় বলতে লাগলো, ‘আয় আমার সাথে। নাস্তা রেডি আছে। দেরি হয়েছে গেছে। তাড়াতাড়ি নাস্তা করে নে।’
এতোক্ষণে সকলের দৃষ্টি নুরার দিকে চলে গেছে। অস্বস্তি লাগলো নুরার। কিছুটা ইতস্তত করে বললো, ‘আম্মু আমি খাবো না।’
কথাটা বলে বেরিয়ে যেতে নিলে পিছু ডেকে উঠলো আবরার, ‘কোথায় যাচ্ছিস?’
দাঁড়ালো নুরা। স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিলো, ‘ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করতে।’
‘রিমি আর দীবা বাদে তোর এমন কোন ফ্রেন্ড আছে যাদের সাথে একা দেখা করতে যাচ্ছিস?’
আবরারের এই প্রশ্ন শুনে কিছুটা বিরক্ত হলো নুরা। অসন্তোষজনক কন্ঠে উত্তরে বললো, ‘কলেজে আরো অনেক ফ্রেন্ডই আছে ভাইয়া। দরকার আছে তাই যাচ্ছি।’
‘তুই কোথাও যাবি না এখন। চুপচাপ খেতে যা।’
‘আমি খাবো না।’
শক্ত গলায় মুখের উপর বলে উঠলো নুরা। একরোখা ভাবে দাঁড়িয়ে রইলো এক জায়গায়। তার এই নিরব উপেক্ষা ও একরোখা জবাব দেখে আবরারের রাগ আরো আকাশ সমান বাড়লো। আবারো উচ্চস্বরে ধমকে উঠলো,
‘আজ থেকে বাড়ির বাইরে পা রাখা নিষেধ তোর। ভিতরে যা এখুনি।’
ধমক শুনে ইষৎ কেঁপে উঠলো নুরা। এই প্রথম আবরার তাকে ধমক দিয়েছে। তার সাথে এমন ভাবে কথা বলেছে। কষ্ট পেলো নুরা। চোখে জমে এলো। কাধ থেকে ব্যাগটা ফ্লোরে ফেলে দিয়ে রাগে চেঁচিয়ে বলে উঠলো, ‘আশ্চর্য, এই বাড়িতে কি কেউ নিজের ইচ্ছায় কি করতে পারবে না? সব কিছুতেই কেন অন্যের আদেশ শুনতে হবে?’
কথাটা বলেই দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো নুরা। দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় বসে কাঁদতে লাগলো। আবরারের থেকে এমন কঠোর শাসন সে মেনে নিতে পারছে না। রাজের সঙ্গে এখনো এতো রাগ কেন তার? রাজ তো দীবাকে ভুলে গেছে। তার পরেও এতো কিসের শত্রুতা দুজনের?
______________________
‘এভাবে না বললেও পারতে। কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা।’
গম্ভীরস্বরে কথাটা বললো রোশান। আয়েশা দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিরবে। চুপচাপ শাড়ির আচল টেনে রান্নাঘরে চলে গেলো। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অসন্তোষজনক চোখে আবরারের দিকে তাকিয়ে আছে দীবা। গতকালকের চেয়েও আজ আবরারের প্রতি বেশি রাগ লাগছে। অন্যদের লাইফে ইন্টারফেয়ার করার কে উনি?
আবরার রোশানের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘তো কি করবো? বাড়ির সবাই খাওয়ার জন্য এতো করে ডেকেছে। রাতে খায়নি, এখনো মুখের উপরে বলছে খাবে না। বেয়াদবি শিখছে দিন দিন।’
রোশান কিছুক্ষণ চুপ রইলো। অতঃপর নিরবতা কাটিয়ে আড়ষ্টতার সঙ্গে বলে উঠলো, ‘রাগারাগি করার দরকার নেই। নুরাকে নুরার মতোই থাকতে দাও।’
ভ্রুঁ জোড়া কুঁচকালো আবরার। আশ্চর্যান্বিত হয়ে প্রশ্ন করলো, ‘মানে কি বুঝাতে চাইছো তুমি?’
রোশান দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত গলায় শুধাল, ‘দেখো আবরার। রাজ ছেলে হিসেবে খারাপ না। যথেষ্ট ভালো, সাবলীল আর নম্র। প্রথম থেকেই রাজ আমার পছন্দের। বিজনেসের খাতিরে তার সঙ্গে আমার পরিচয় আগে থেকেই। তাছাড়া ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে। আমার মনে হয় না তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া ঠিক হবে।’
কথাটা বলে থামলো রোশান। আবরারের তাকিয়ে আবারো বলতে লাগলো, ‘নুরা সুখে থাকুক আমরা সবাই চাই। সে যদি রাজের সঙ্গে ভালো থাকতে পারে তাহলে থাকুক। আমরা মেনে না নেওয়ার কে?’
নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরলো আবরার। লম্বা একটা নিশ্বাস ফেলে কিছুটা ক্রোধান্তিত গলায় বললো, ‘রাজের জায়গায় যদি অন্য কেউ হতো তাহলে কিছুই বলতাম না। কিন্তু সমস্যা টা হলো রাজ। রাজের সাথে কিছুতেই আমি নুরার বিয়ে দিবো না।’
সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে সব কথাই শুনছে দীবা। সহ্য হলো না আর। তাই আবরারের কথার প্রত্যুত্তরে বলে উঠলো, ‘আপনাদের পারসোনাল ম্যাটারে নুরাকে টানছেন কেন?’
নিশিতা দীবার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো। ইশারায় চুপ থাকতে বললো। চুপ হয়ে গেলো দীবা। বিরক্তিকর নিশ্বাস ফেলে বুকে হাত গুঁজে দাঁড়াল। আবরার দীবার দিকে কড়া চোখে তাকালো একবার। সব জায়গায় দীবার পাকনামো তার সহ্যের সীমা অতিক্রম করছে।
দীবার কথার সঙ্গে তাল নিলিয়ে রোশানও বলে উঠলো, ‘ঝামেলা যেহেতু তোমার আর রাজ মাঝে হয়েছে, সেহেতু এখানে নুরার প্রসঙ্গ উঠার কোনো প্রশ্নই আসে। তোমরা তোমাদের ঝামেলা মিটাও। নুরাকে রাজের সঙ্গে ভালো থাকতে দাও।’
হতাশ হলো আবরার। কিছুটা অস্থির গলায় বুঝানোর চেষ্টা করলো আবারো, ‘আব্বু? তোমরা কেউ বুঝতে পারছো না কেন? রাজ আমার উপর রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য নুরাকে ইউজ করছে। সে কখনোই নুরাকে ভালোবাসবে না। আরেহ দুইদিন আগেও যে একজন ভালোবাসে বলে চোখের পানি নাকের পানি এক করেছে সে কি করে এতো তাড়াতাড়ি আরেকজন কে ভালোবাসতে পারে? ননসেন্স। যতো যাই বলো। রাজের সঙ্গে নুরার বিয়ে আমি দিবো না।’
রোশান তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে রাগী গলায় বলে উঠলো, ‘ভুলে যেওনা এই বাড়িতে তোমার থেকেও বড় অনেকে আছে। সিদ্ধান্ত তুমি একা না। তারাও নিতে পারে।’
তাচ্ছিল্য হাসলো আবরার। বিদ্রূপমাখা কন্ঠে বললো, ‘তোমরা যে কতোটা যুক্তিহীন সিদ্ধান্ত নাও তা আমি ভালো করেই জানি।’
রোশান ক্ষুব্ধ হলো ছেলের উপর। কাটকাট গলায় বললো, ‘এযাবৎ তোমার জন্য যতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সব কি অযুক্তিক ছিল? খারাপ প্রভাব ফেলেছে তোমার উপর?’
‘অবশ্যই প্রভাব ফেলেছে। তোমার প্রত্যেকটা সিদ্ধান্তই আমার উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিলে। মানসিক ভাবে আতঙ্কে ছিলাম সবসময়।’
চলমান…
নোট : রিচেক দেই নাই। ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই। কার্টেসি ছাড়া কেউ কপি করবেন না। হ্যাপি রিডিং] 😑😑