আসক্তি #Mr_Arrogant_4,পর্ব_১০,১১

0
2556

#আসক্তি
#Mr_Arrogant_4,পর্ব_১০,১১
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
১০

?
গাড়ি চলছে। পাশাপাশি বসে আছে রওশন আর সুবহা। রওশনের সম্পুর্ন ধ্যান ওর ট্যাবে। এক সেকেন্ডের জন্যও যেন চোখ ফিরিয়ে এদিকে সেদিক তাকানোর ফুরসৎ নেই ওর।

অন্যদিকে সুবহা শান্ত হয়ে বসতে পারছে না। অদ্ভুত এক অস্থিরতা কাজ করছে ওর মাঝে। একটু আগের ঘটনা টা যেন মাথা থেকে নামছেই না। রওশনের উষ্ণ হাতের স্পর্শের কথা ভেবেই গাল লাল হয়ে যাচ্ছে ওর। হৃদস্পন্দন যেন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠছে বারবার। নিঃশ্বাস ঘন হচ্ছে।

আড়চোখে বারবার তাকাচ্ছে সুবহা রওশনের দিকে। কিন্তু ওকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কিছুই হয়নি। এতোটা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বসে আছে। রাগ লাগছে সুবহার। মনে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। ওকে এভাবে অস্থির করে দিয়ে নিজে কিভাবে এতোটা অনুভূতিহীন হয়ে থাকতে পারে রওশন ভেবে পাচ্ছে না ও।

গাড়ি থামলো ব্লু মুন রেস্টুরেন্টর সামনে। রওশন ট্যাবটা সাইডে রেখে নিজের কোট হাতে নিয়ে বেরিয়ে যায়। সুবহাও সাথে সাথে ফাইল গুলো গুছিয়ে নেমে পড়ে।

ডান হাতে কোটটা ঝুলিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে রওশন আর তার পিছু সুবহা।

ভিতরে ঢুকেই নিজের ক্লাইন্টদের পাশে গিয়ে বসে ও। রওশনের পাশেই সুবহা বসেছে।

রওশনঃ হ্যালো মিস্টার শেখ। ( হাত বাড়িয়ে )

রওশনের সাথে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন শেখ সাহেব।

>> হ্যালো মিস্টার রায়জাদা। অবশেষে আপনার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য হলো আমাদের।

রওশনঃ শুনে ভালো লাগলো। ও হচ্ছে সুবহা আমাদের কোম্পানির ডিজাইনিং হেড। এই প্রজেক্টের জুয়েলারি আর কস্টিউম ওরই ডিজাইন করা।

শেখ সাহেব মৃদু হেসে সুবহার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় , সুবহা মুচকি হেসে হাত মিলাতে নিলেই রওশন হুট করে শেখ সাহেবের হাতে ফাইল ধরিয়ে দেয়। হঠাৎ এমন কাজে হচকিয়ে যায় সুবহা। শেখ সাহেব কিছুটা বিব্রত বোধ করে রওশনের দিকে তাকাতেই রওশন কথা ঘুরিয়ে বলতে শুরু করে।

রওশনঃ শুধু শুধু সময় নষ্ট না করে আমি চাইছি আপনি আমাদের প্রজেক্টের ডিজাইন গুলো চেক করেন। আসলে আমার হাতে সময় কম এর থেকেও জরুরি একটা কাজে যেতে হবে আমায়।

রওশনের কথায় বেচারা লোকটা ইতস্তত বোধ করে ফাইল দেখতে শুরু করে।

রওশন টেবিল থেকে জুসের গ্লাস তুলে হেলান দিয়ে বসে জুসের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।

সুবহা চুপচাপ বসে আছে। রওশন নিজের মতো বসে আছে, ক্লাইন্টরা তাদের কাজে ব্যস্ত, এতগুলো লোকের মাঝে চুপচাপ বসে থাকা বিব্রতকর। এমনিতেই সুবহা বেশিক্ষণ চুপ থাকতে পারে না তাই আরো বেশি ইতস্তত বোধ হচ্ছে ওর।

রওশন কি সুন্দর হেলান দিয়ে বসে জুস খাচ্ছে যেন এখানেও সবার উপর বসগিরি করছে। কেউ বলবে না যে ও এখানে ডিল করতে এসেছে, বরং ওর ভাব এমন যেন ক্লাইন্টদের উপর উপকার করছে ও নিজের সাথে কাজ করতে দিয়ে। রওশনের এমন বেপরোয়াগিরি দেখে একটুও অবাক হচ্ছে না সুবহা। কারন এসব কিছুতেই অভ্যস্ত ও।

সব গুলো ডিজাইন চেক করে তৃপ্তির হাসি টেনে শেখ সাহেব বলতে শুরু করেন।

>> সত্যিই মিস্টার রওশন, আই’ম ইমপ্রেস’ড। সব গুলো ডিজাইন এতোটা নিখুঁত এতটা সুন্দর যে কি বলবো। আমরা অবশ্যই এই প্রজেক্টের অংশ হতে পেরে অনেক লাকি ফিল করছি।

রওশনঃ তা অবশ্য সত্য।

রওশন বিস্তারিত কথা বলছে প্রজেক্টের বিষয়ে। সুবহা বোর হয়ে এদিক সেদিক তাকাতেই দেখলো কয়েক টেবিলে এগিয়ে একটা টেবিলে দুজন ছেলে বসে আছে আর তাদের দৃষ্টি সুবহার উপরই।

অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে তারা ওর দিকে। সাথে সাথে সুবহা নিজের চোখ সরিয়ে নেয়। ছেলে দুটোর দিকে তাকাতেই একটা বিশ্রী ফিলিং আসছে ওর।

কথা বলা শেষ করেই শেখ সাহেব তার লোকেরা উঠে দাঁড়ায়। তাদের সাথে হ্যান্ডশেক করে তাদের বিদায় দিয়ে বলতে শুরু করে রওশন।

রওশনঃ সুবহা তুমি বসো আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি। এখান থেকে উঠবে না আর কোথাও যাবে না। ( স্ট্রিক্টলি বারন করে বলল )

সুবহা প্রতিউত্তরে শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল,,, রওশন চলে যায় ভেতরে। ও যেতেই সুবহা নিজের ফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

হঠাৎ সুবহা অনুভব করে কেউ ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ফোন থেকে চোখ সরিয়ে মাথা তুলে তাকাতেই সুবহা দেখে সামনের টেবিলের ছেলে দুটো দাঁড়িয়ে।

>> হ্যালো মিস! – সুবহার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল একজন।

সুবহা ছেলে দুটোকে ইগনোর করে উঠতে নিলেই তারা ওর পাশে বসে পরে‌। দুজন সুবহার দু পাশে বসেছে, সুবহা উঠতে গিয়েও উঠতে পারলো না। রেগে যায় সুবহা।

সুবহাঃ এটা কোন ধরনের অসভ্যতা?

সুবহার কথায় ছেলে দুটো হেসে দেয়। একজন টেবিল থেকে জুসের গ্লাস তুলে মুখে দিতে দিতে বলে,,,

>> আমরা তো শুধু পরিচিত হওয়ার জন্য এসেছিলাম। এখানে অসভ্যতার তো কিছুই এখনো করিনি মিস,,,

আশেপাশে সবাই নিজেদের কাজ ফেলে ওদের দেখছে। এমন পরিস্থিতি দেখে ম্যানেজার দ্রুত ওদের সামনে আসে তারপর ছেলে দুটোকে উদ্দেশ্য করে বলতে শুরু করে।

ম্যানেজারঃ স্যার প্লিজ সীন ক্রিয়েট করবেন না। এই ম্যাডাম কার সাথে এসেছেন আপনারা হয়তো জানেন না। খারাপ কিছু ঘটার আগেই প্লিজ উঠে পরুন।

ম্যানেজারের কথা শুনে দুজনই না জানার ভান করে বলতে শুরু করে।

>> কার সাথে এসেছে এই ম্যাডাম? আমরা তো চিনি না।

>> আরেহ ওইযে স্যুট ওয়ালা জেন্টেলম্যান এর কথা বলছে রে।

>> ওই স্যুট ওয়ালা? কে ও? কোনো এলাকার ডন? নাকি মাফিয়া? ( হাসতে হাসতে )

>> কি করবে ও আমাদের? উল্টো আমাদের এক বারিতেই লেজ গুটিয়ে পালাবে,,,

>> ওর মতো কত স্যুট ওয়ালাকে শায়েস্তা করেছি, ও কোথাকার এমপি?

ম্যানেজারঃ স্যার প্লিজ!( অনুনয় স্বরে )

এর মধ্যেই সুবহা উঠার চেষ্টা করতেই একজন ওর হাত ধরে ফেলে,,, সাথে সাথে বিকট একটা শব্দ হয়।
যে ছেলেটা সুবহার হাত ধরেছিল ফ্লোরে পরে যায় মুহুর্তেই। মাথা থেকে চুঁইয়ে রক্ত পরে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে। কপালে কয়েকটা কাঁচের টুকরো গেঁথে আছে আর ফ্লোরে ছিটিয়ে আছে বাকি গুলো।

হঠাৎ যেন চারপাশ নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। সব কিছু এতো দ্রুত ঘটে গেলো যে কেউ বুঝে উঠতে পারলো না।

সুবহা দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে আছে। অন্য ছেলেটি সাথে সাথে তার বন্ধুর পাশে চলে যায়। তাকে ডেকেও কোনো সাড়া পাচ্ছে না ও।

মুখ থেকে হাত সরিয়ে পেছনে তাকায় সুবহা‌। ওর পেছনে রওশন দাঁড়িয়ে। ডান হাতে কাঁচের ভাজ। রক্তিম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও ফ্লোরে পরে থাকা ছেলেটির দিকে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে রওশনের। ডান হাতে অর্ধেক ভাঙ্গা ভাজটা শক্ত করে ধরে আছে ও।

রওশনের এমন রুপ দেখে ভয়ে শরীর কাঁপতে শুরু করেছে সুবহার। ছেলে দুটোকেও এতোটা ভয় পায়নি ও যতটা ভয় এই মুহূর্তে রওশনকে দেখে পাচ্ছে ও।

রওশন নিজের দৃষ্টি ফ্লোরে পরে থাকা ছেলেটার থেকে সরিয়ে সুবহার দিকে দেয়। গলা শুকিয়ে আসছে সুবহার। ভয় পেয়ে পেছনে কদম নেওয়ার আগেই রওশন বাম হাত দিয়ে সুবহার হাত ধরে ওকে নিজের পাশে এনে দাঁড় করায়।

যে ছেলেটা এতক্ষন তার বন্ধুর পাশে বসে ওকে ডাকছিল সে রেগে রওশনের দিকে তাকায়। মনে হচ্ছে এখুনি হামলা করবে সে রওশনের উপর।

ছেলেটি উঠে একটা চেয়ার তুলে রওশনের উপর হামলা করার আগেই রওশন সুবহার হাত ছেড়ে ওকে সরিয়ে ছেলেটার বুক বরাবর স্বজোরে লাথি মারে। গড়িয়ে অন্য একটা টেবিলে গিয়ে বারি খায় ছেলেটি। দ্বিতীয় বার উঠে হামলা করার শক্তি টুকুও যেন শেষ হয়ে গেছে তার।

রওশন ছেলেটার দিকে এগিয়ে যায় তারপর এক হাঁটু
ভাঁজ করে তার সামনে বসে ধীর স্বরে বলতে শুরু করে ও।

রওশনঃ আমি কোনো ডন নই, আর না কোনো মাফিয়া, কিন্তু তবুও আমি এদের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর। একটা কথা সব সময় মনে রাখবে প্রত্যেক স্যুট পরিহিত মানুষ জেন্টালম্যান হয় না।

রওশন কথা গুলো এমন ভাবে বলেছে যে ছেলেটা ছাড়া অন্য কেউই শুনতে পায় নি।

বুকে হাত দিয়ে ছেলেটি এখনো কাঁপছে। নড়াচড়াও করতে পারছে না। যেন নড়াচড়ার সব শক্তি টুকু এক লাথি মেরেই শেষ করে দিয়েছে রওশন।

উঠে দাঁড়ায় রওশন তারপর এক হাত দিয়ে নিজের স্যুট ঝাড়তে ঝাড়তে সবার উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করে ও।

রওশনঃ ইউ গাইজ ক্যারি অন, শো টাইম শেষ। অ্যান্ড ট্রাস্ট মি, এখন থেকে আর কেউ এখানে এসে গুন্ডামি করার সাহসও পাবে না।

সবাই নিজেদের চোখ সরিয়ে নেয়। ম্যানেজার ভয়ে ভয়ে দ্রুত রওশনের সামনে এসে আমতা আমতা করে বলতে শুরু করে।

ম্যানেজারঃ স্যার আমি এদের বলেছিলাম কিন্তু এরা শোনেনি,,, আমি…

রওশনঃ ইট্স ওকে।( ম্যানেজারের কাঁধে হাত রেখে ) নাও ক্লিন দ্যা থ্র্যাশ, আমার নোংরা একদমই পছন্দ না। ( ছেলেটার দিকে তাকিয়ে )

ম্যানেজার সাথে সাথে স্টাফদের ইশারা করে ছেলে দুটোকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কয়েকজন ছেলে দুটোকে তুলছে আর বাকিরা জায়গা টেবিল পরিস্কার করছে।

রওশন পেছন ঘুরে সুবহার কাছে চলে আসে। সুবহা এখনো স্টিল দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে নড়ছেও না।

রওশনঃ ডোন্ট টেল মি তোমার কষ্ট হচ্ছে এই মোরন গুলোর জন্য? ( কপাল কুঁচকে )

রওশনের কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সুবহা ঘাবড়ে বলতে শুরু করে,,,

সুবহাঃ নাতো, কষ্ট হবে কেন? এরা এটাই ডিজার্ভ করে। ( জোর পূর্বক হাসার চেষ্টা করে )

রওশনঃ গুড গার্ল! চলো এখন, আমার এখানে দম বন্ধ হয়ে আসছে।

এক হাত দিয়ে সুবহার হাত ধরে অন্য হাতে চেয়ার থেকে সুবহার ব্যাগ নিয়ে হাঁটা ধরে রওশন রেস্টুরেন্টের বাইরে।

রওশন আর সুবহা চলে যেতেই ম্যানেজার বুকে হাত দিয়ে বসে পরে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে আর ঘামছে সে। তার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় তার উপর দিয়ে গেলো।

?

গ্ৰসারি শপ থেকে কেনাকাটা করছে আভি। কেনাকাটা বললে ভুল হবে শুধু ইন্সটেন্ট নুডুল্‌স, কাপ নুডুল্‌স আর ডিম নিচ্ছে ও।

এগুলো নেওয়া শেষ হতেই ও কাউন্টারে চলে যায় বিল দিতে। স্টাফ সব গুলো একটা বড় ব্যাগে ভরে দিয়ে আভির সামনে রাখে‌।

আভিঃ কত টাকা হয়েছে?( পকেট থেকে টাকা বের করতে করতে )

>> আপনার বিল পে হয়ে গেছে স্যার।

স্টাফের কথা শুনে অবাক হয় আভি কিন্তু তার চেয়েও বেশি খুশি হয় ও।

আভিঃ রিয়েলি?

>> জ্বি।

কিন্তু পরক্ষনেই কিছু একটা ভেবে বলতে শুরু করে আভি,,,

আভিঃ কিন্তু কে করেছে?

>> স্যরি স্যার কিন্তু আমার জানা নেই।

আভিঃ লুক আমি একজন পুলিশ অফিসার আমাকে মিথ্যা বললে কিন্তু – ভয় দেখিয়ে।

আভির কথায় ঢোক গিলল স্টাফটি তারপর আভির পেছনে তাকিয়ে বলে সে,,,

>> স্যার ওই ম্যাডাম দিয়েছে। ( আঙুল দিয়ে ইশারা করে )

সাথে সাথে পেছনে ফিরে আভি। একটা লাল জামা পরিহিত মেয়ে দ্রুত গতিতে বের হলো স্টোর থেকে।

আভিঃ হেই ইউ স্টপ….

ব্যাগটা হাতে নিয়েই মেয়েটার পিছু দৌড় দেয় ও। বাইরে বের হয়ে ডানে বামে তাকায় আভি।‌ বাম দিকে একটা সাদা রঙের গাড়িতে উঠেছে মেয়েটি। আভি নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে রইল।

গাড়িটি ঠিক ওর সামনে দিয়ে গেলো। জানালার গ্লাস লাগানো ছিল তাই ভিতরের মানুষটিকে দেখতে পেলো না ও। কিন্তু আভি গাড়ির নাম্বার নোট করতে ভুলল না। ওর ব্রেইন শার্প তাই এক দেখাতেই পুরো নাম্বার মুখস্থ করে নেয় ও।

আভিঃ জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ মিস হোয়াট’এভার। তোমার আইডি কার্ড তো আমি বের করছি।

To be continued……

#আসক্তি
#পর্ব_১১
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Mr_Arrogant_4
?
বাসায় আসতেই নীল রওশনকে ঘিরে ধরেছে। ওর একটাই কথা, একজন অসভ্য হিসুম্যান ওদের দেয়ালে হিসু করেছে। তাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।

রওশন প্রথম প্রথম ওর কথা গ্ৰাহ্য না করলেও পরে ওর জেদের কাছে হার মেনে লোকটাকে বের করবে বলে কথা দেয়।

এখন রওশনকে বসিয়ে রেখে গার্ডের কাছ থেকে সিসিটিভির ফুটেজ আনতে গিয়েছে নীল। ওকে দেখে মনে হচ্ছে, যে পর্যন্ত ও লোকটাকে না ধরবে শান্তিতে বসবে না।

সোফায় বসে নিজের কাজ করছে রওশন, এর মধ্যেই নীল দৌড়ে এসে ওর পাশে বসে।

নীলঃ এইযে ফুটেজ পেয়েছি।( একটা পেনড্রাইভ দেখিয়ে )

রওশনঃ এটা বাড়ির পেছনের ক্যামেরার ফুটেজ?

নীলঃ ইয়েস।( মাথা নাড়িয়ে ) তাড়াতাড়ি এটা এখন কানেক্ট করো। ফাস্ট ফাস্ট!( অধৈর্য্য হয়ে )

ওকে এভাবে অধৈর্য্য হতে দেখে হেঁসে দেয় রওশন, তারপর চিপটা ল্যাপটপে কানেক্ট করে ভিডিও অন করে।

ভিডিওটা অন হতেই চেঁচিয়ে উঠে নীল। তারপর আঙুল দিয়ে ইশারা করে রওশনকে দেখাতে দেখাতে বলে ও।

নীলঃ ওইযে ওইযে হিস্যুম্যান, সী! ও আমাদের দেয়ালে হিসু করছে। ডিসগাসটিং,,, ওর আম্মু আব্বু কি ওকে শিখায় নি যে, যেখানে সেখানে হিসু করা ব্যাড ম্যানার্স? ( গাল ফুলিয়ে ) ওহ হো হতে পারে ওদের বাসায় টয়লেটই নেই। হিসুম্যান কোথাকার।

রওশন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মানুষটিকে দেখার চেষ্টা করে। হুডি দিয়ে মাথা ঢাকা তার উপর আবার মাস্ক পরিহিত। মানুষটাকে চেনার কোনো স্কুপই নেই।

নীলঃ তুমি চিনতে পেরেছো একে?

রওশনঃ নাহ। হাত, পা, মুখ, চেহারা সব ঢাকা কিভাবে চিনবো।

নীলঃ উফ্ তুমি সত্যিই বোকা! শুধু বয়সে বড় হয়েছো বুদ্ধিতে না।( মুখ ফুলিয়ে )

নীলের কথায় রওশন চোখ বড় করে ওর দিকে তাকায়। কেউ রওশনের সাথে এভাবে কথা বলার সাহস করে না অথচ এই ছেলেটা ওকে মাঝেমধ্যে কত কিছুই না বলে ফেলে। একদম নিসংকোচে, নির্ভয়ে।

নীল রওশনের দিকে মাথা তুলে তাকাতেই দেখে রওশন ওর দিকে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে। নীল রওশনের এমন ভঙ্গি দেখে জোরে একটা হাঁফ ছাড়ল তারপর ডান হাত নিজের কপালে রেখে হতাশ ভাবে বলতে শুরু করলো।

নীলঃ উফফো রওশন ভাইয়া তুমি না একদম ছুঁইমুই। কিছুই বলা যায়না তোমাকে।

রওশনঃ হোয়াট ইজ ছুঁইমুই?( চোখ ছোট ছোট করে )

নীলঃ তুমি বুঝবে না। এখন আমাকে নিজের কাজে ফোকাস করতে দাও। ডোন্ট ডিসটার্ব মি! – রওশনের হাত থেকে ল্যাপটপ নিয়ে নিজের কোলে রেখে।

রওশন পুরাই থ। এতো টুকু পুঁচকে ছেলে ওকে ডিস্টার্ব করতে বারন করছে, ভাবা যায়।

রওশনঃ হুম ফোকাস অন ইউর ওয়ার্ক। আমিই উঠে যাই।

উঠে যায় রওশন। নীল ভিডিওটা কখনো জুম করছে, কখনো স্লো করছে, কখনো স্ক্রিনশট নিচ্ছে, এসব দেখে হালকা হেঁসে দেয় ও। ছেলেটা সত্যিই নিজের কাজের প্রতি খুবই ফোকাস্‌ড‌‌। নিঃসন্দেহে বড় হয়ে অনেক ভালো ডিকেন্টিভ হবে ও‌।

রওশনঃ তুমি একদম নিজের ভাইয়ের মতো নীল! – আনমনে কথাটা বলে চুপ হয়ে যায় রওশন।

অযাচিত কিছু ঘটনা‌ যেন স্মৃতির দেয়ালে কড়া নাড়তে শুরু করেছে। চোখে ভাসছে কারো চেহারা। কানে তার বলা কথা।

নীলের থেকে চোখ সরিয়ে দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রওশন। স্টাডি রুমে চলে আসে ও‌। চেয়ার টেনে ডেস্কে বসে পরলো। চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো ও। কানে কারো বলা কথা গুলো তীব্র ভাবে গুঞ্জন করছে।

চোখ দু’টো খুলে উঠে দাঁড়ায় ও। বুক শেলফের সামনে গিয়ে একটা বই বের করতেই সেটার পেছনে কত গুলো চিঠি দেখতে পায়‌। সেখান থেকে একটা চিঠি বের করে হাতে নেয় ও। চিঠির উপর লিখা
“ Happy 12th Birthday ”। আগামী সপ্তাহে নীলের বারোতম জন্মদিন। সেদিন এই চিঠিটা দিতে হবে ওকে।

ফ্ল্যাশব্যাক,,,

একটা ক্যাফেতে বসে আছে রওশন আর তার সামনে তার বন্ধু আয়ুশ। আয়ুশ পেশায় একজন ডিটেক্টিভ। কিছু মাস হলো ও ডিটেক্টিভের পেশায় নিয়োজিত হয়েছে। এ কাজে ঢুকেই ও রওশনের চাচা আদনান রায়জাদার সব অপকর্ম ফাঁস করার চেষ্টায় লেগে পরেছে।

কিন্তু রওশন! ওর চোখে যেন বিশ্বাসের পট্টি বাঁধা। হাজারবার বুঝানোর পরেও আয়ুশ ওকে নিজের কথায় বিশ্বাস করাতে পারে না‌। আজও সে বিষয়েই দু’জনের কথা হচ্ছে।

আয়ুশঃ রওশন তুই আমার কথায় কেন বিশ্বাস করছিস না? আমি তোর স্কুল জীবনের বন্ধু তোর ভাইয়ের মতো! আমি কখনো চাইবো না তুই নিজের জীবন এভাবে একজন খুনির পেছনে নষ্ট কর।

রওশনঃ আয়ুশ তুই কেন বারবার একই কথা বলিস? উনি চাচু হোন আমার কোনো খুনি নন‌।

আয়ুশঃ তুই আমার কথায় বিশ্বাস করবি না তাই তো? ঠিক আছে, এরপরে আমি প্রমান সহ তোর কাছে আসবো। তখন তুই নিজের ভুল বুঝতে পারবি।

উঠে চলে যায় আয়ুশ। রওশনের হাজারটা ডাকেও ও ফিরে তাকায় নি।

কিছুদিন পর,,,

হসপিটালের ওয়ার্ডে হাতে একটা চিঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রওশন। সামনেই সাদা কাপড়ে মোড়ানো দু’টো লা’শ। একটা ওর সবচেয়ে কাছের বন্ধুর আরেকটি তার স্ত্রীর।

হাতের চিঠিটা নিয়ে বসে পরে রওশন। বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব হচ্ছে। আফসোস, অপরাধবোধ, সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে হারানোর ব্যথা সব কিছু যেন ওকে ভয়ঙ্কর ভাবে কষ্ট দিচ্ছে।

কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটা খোলে রওশন। চোখ দু’টো পানিতে ঝাপসা হয়ে আছে। বাম হাত দিয়ে চোখ দুটো মুছে চিঠির লিখা গুলো পড়তে শুরু করে ও।

“ রওশন! আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, আমার ভাই। আমি জানি এই মুহূর্তে তুই কতটা কষ্ট পাচ্ছিস। নিজেকে দোষারোপ করছিস। নিজের ভেতরের কান্না দমিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছিস। তোর ভিতরের অবস্থা আমি অনুভব করতে পারছি ভাই।

আমি জানি আমার জীবনে তুই যতটা গুরুত্বপূর্ণ তেমনি তোর জীবনেও আমি ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। জানি খুব কষ্ট পাচ্ছিস তবুও বলবো, আমার সাথে যা হয়েছে তাতে তোর কোনো দোষ নেই। নিজেকে কোনো ভাবেই আমার জন্য দায়ী ভাবিস না।”

লিখা টুকু পড়েই ডুকরে উঠে রওশন। ভেতরটা যেন জ্বলে যাচ্ছে ওর। বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই বুঝি নিঃশ্বাসটা বন্ধ হয়ে যাবে। নিজেকে সামলে আবারো পড়তে শুরু করে রওশন।

“ আমি জানি আমার অপূর্ন কাজটা তুই পূর্ন করবি। আদনান রায়জাদাকে তার অপরাধের শাস্তি দিবি। তার কর্মের ফল সে অবশ্যই পাবে তা নিশ্চিত।

কিন্তু আমি তোকে এর চেয়েও বড় একটা দায়িত্ব দিতে চাই। যে দায়িত্বটা আমার ছিল‌ কিন্তু আমি পুরন করতে পারি নি। আমার বিশ্বাস তুই আমার এতটুকু আবদার রাখবি।

আমি আমার নীলের দায়িত্ব তোকে দিয়ে গেলাম। ওকে একজন ভালো মানুষ বানাবি একদম তোর মতো। আমি যেমন তোকে নিজের ভাই মানি তেমনি ওকেও নিজের ভাইয়ের মতো দেখিস।

কিন্তু রওশন ওকে কখনো এটা জানতে দিস না যে আমি নেই। ও সহ্য করতে পারবে না।

তুই অনেক স্ট্রং আমি জানি। নিজেকে সামলে নিতে পারবি। কিন্তু আমার নীল নিজেকে সামলাতে পারবে না। ওর হৃদয় অনেক দূর্বল। ছোট্ট বয়সেই হার্ট সার্জারির মতো বড় জখম সহ্য করতে হয়েছে ওকে। আমার নীল অন্যসব বাচ্চাদের মতো না রে। সবার থেকে ভিন্ন ও। একদম তোর মতো। ও কখনো কোনো কিছু নিয়ে তোকে জ্বালাবে না, আর না কখনো কোনো কিছুর আবদার করবে। আমার নীল অল্পতেই খুশি হওয়া মানুষদের মধ্যে একজন। ওর মধ্যে শুধু আদর আর ভালোবাসার চাহিদা। আমার নীল একদম পানির মতো, যে পাত্রে ঢালবি সে বর্নই ধারন করবে।

ওর জন্য কিছু চিঠি রেখে যাচ্ছি, প্রতি বছর ওর জন্মদিনে একটা করে চিঠি ওকে দিয়ে দিস। আর যদি কখনো ও আমার কথা জিজ্ঞেস করে, বলবি তোমার আয়ুশ ভাইয়া অনেক বড় একটা মিশনে গিয়েছে। ও বিশ্বাস করবে তোর কথা। আমার নীল অনেক মাসুম, খুব সহজে অন্যকে বিশ্বাস করে নেয়। ওর মনে মলিনতা নেই, এই ভাবনা নেই যে সামনের মানুষ ওকে মিথ্যাও বলতে পারে। ওকে দেখে রাখিস। আমি আমার ভাইটাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি রে, আর আমি জানি আমার অনুপস্থিতিতে তুইও ওকে আভির মতোই ভালোবাসবি। তোর উপর বিশ্বাস করি, তাই নিজের সবচেয়ে কাছের, সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে দামী জিনিসটা তোর দায়িত্বে রেখে গেলাম। ভালো থাকিস, তোর সবচেয়ে কাছের বন্ধু আয়ুশ ”

বর্তমানে,,,

একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে হাতের চিঠিটা ডেস্কের ড্রয়ারে রেখে দেয় রওশন। চিঠিটা এমন ভাবে নীলের কাছে পৌঁছাতে হবে যেন ও ভাবে সত্যিই ওর ভাই নিজের মিশনের জায়গা থেকে পাঠিয়েছে।

হঠাৎ নীলের আওয়াজ পায় রওশন। ভাইয়া ভাইয়া বলে এই দিকেই আসছে। নিজেকে গুছিয়ে পেছন ফিরে রওশন।

নীল এসেই রওশনের হাত ধরে বলতে শুরু করে,,,

নীলঃ আমার খিদে পেয়েছে চলো চলো নিচে যাই।

রওশনঃ ওকে চলো।

নীল রওশনের হাত ধরেই লাফাতে লাফাতে হাঁটছে। হঠাৎ ও হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে নিলেই রওশন ওকে ধরে ফেলে।

রওশনঃ সাবধানে নীল! পরে গিয়ে এখনি তো ব্যথা পেতে।

নীলঃ তুমি তো আমার হাত ধরে আছো তাহলে পরবো কিভাবে? আমি জানি তুমি কখনো আমাকে ব্যথা পেতে দিবে না।( হেঁসে )

রওশনঃ কারেক্ট! রওশন ভাইয়া কখনো নীলকে হার্ট হতে দিবে না। ( মৃদু হেঁসে )

পরের দিন,,,

রওশন আজ খুব সকাল সকাল অফিসে এসেছে। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে আজ বাসায় যেতে হবে। নীলকে প্রমিস করেছে রওশন যে, আজকে ওকে নিয়ে ফ্যান্টাসি পার্কে ঘুরতে যাবে।

খুব দ্রুততার সাথে কাজ গুলো শেষ করছে রওশন। শুধু নিজেই না বাকিদেরও কড়া ভাবে বলে দিয়েছে আজকে যেন মিটিং ডিলে না হয়। তাই ওর সাথে সাথে সব স্টাফরা নাকেমুখে কাজ করছে।

সকাল এগারোটা,,,

নিজের কাজ শেষ করে সে গুলো ফাইল করে রওশনকে দেখানোর জন্য ওর কেবিনের দিকে যাচ্ছে সুবহা।

যাওয়ার পথেই কয়েকজন লেডি স্টাফদের কথা শুনে থেমে যায় ও। তাদের কথোপকথন কিছুটা এমন,,,

>> আজকে নিশ্চয়ই কোনো বিশেষ দিন। এজন্যই স্যার তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে যেতে চাচ্ছেন।

>> আমার মনে হয় আজকে স্যারে গার্লফ্রেন্ডের বার্থডে,

>> স্যারের গার্লফ্রেন্ড আছে?( অবাক হয়ে )

>> অবশ্যই! রওশন স্যারের মতো ছেলে সিংগেল থাকবে তোর মনে হয়?

>> সেটাই তো। কিন্তু উনার গার্লফ্রেন্ডকে তো কখনো অফিসে আসতে দেখি নি।

>> হয়তো স্যার তার অফিস আর প্রাইভেট লাইফ আলাদা রাখতে চাচ্ছেন।

সুবহা কান খাঁড়া করে তাদের কথা গুলো শুনছে। রাগ লাগছে ওর। ইচ্ছে করছে সব গুলোকে পাশের পুকুরে নিয়ে নাকানিচোবানি খাওয়াতে।

সুবহাঃ কিসব আজেবাজে ফালতু কথা বলছে। এদের এমন গুজব রওশনের কানে গেলে টের পাবে। হাহ্, রওশনের কোনো গার্লফ্রেন্ড টার্লফ্রেন্ড নেই। উনার লাইফে তো কোনো মেয়েই….. হঠাৎ ডায়রির কথা গুলো মনে পরে যায় সুবহার। নিমিষেই যেন মুখে অন্ধকার ছেয়ে যায় ওর।

সুবহাঃ ওই ডায়রির মেয়েটা!( অবাক চোখে ) ওটা তাহলে কে? রওশন কি তাহলে ওই মেয়েটাকে…. তবে কি এদের কথা সত্য?

এইদিকে,,,

গাড়ি থেকে নেমেই দৌড়ে অফিসে ঢুকে পরলো নীল। নেভি ব্লু কালার জিন্স আর জ্যাকেট এর সাথে মাথায় ক্যাপ আর চোখে গোল ফ্রেমের চশমা। সব মিলিয়ে একদম ছোট খাটো একটা কিউট ডিটেক্টিভ লুক।

দৌড়ে ভিতরে আসছে নীল, ওকে দেখেই সবাই দাঁড়িয়ে যায় কারন কম বেশি সবাই জানে ও রওশনের ছোট ভাই। তাছাড়া এর আগে প্রায়ই নীল রওশনের সাথে অফিসে আসতো আর নিজের বসগিরি দেখাতো। সবাই নীলকে রওশনের টুইন বলতো কারন ওর ড্রেসের থেকে শুরু করে ওর বিহেভিয়ার ও রওশনের মতোই। পুরোনো স্টাফরা ওকে চিনলেও নতুনদের কাছে ও অপরিচিত। কারন প্রায় দেড় বছর ধরে নীল অফিসে আসে না। কিন্তু আজ দেড় বছর পর আবার এসেছে ও।

নীল দৌড়ে রওশনের কেবিনের দিকে যাচ্ছে। দরজার সামনেই সুবহা দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ সামনে তাকাতেই নীলকে এদিকে আসতে দেখে সুবহা।

হঠাৎ ওকে এখানে দেখে বড়সর শক খায় ও। নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস হচ্ছে না সুবহা।

সুবহাঃ ও এখানে?( অবাক হয়ে )

দৌড়ে এসে সুবহাকে সামনে দেখেই থেমে যায় নীল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ আবার দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে ও।

নীলঃ সারপ্রাইজ ক্যান্ডি সিস্টার,,, তুমি আমাকে আবার ভুলে যাওনি তো?( ভ্রু কুঁচকে )

সুবহাঃ তুমি এখানে কিভাবে?

রওশন হঠাৎ কেবিন থেকে বের হতেই নীলকে সুবহার সাথে দেখে চমকে যায়। চোখ দু’টো বড় বড় হয়ে গেছে ওর।

রওশনঃ নীল এখানে কি করছে? আর ও সুবহার সাথে কি কথা বলছে? নো নো নীল,,, এখন আমি সুবহাকে কিভাবে কি এক্সপ্লেইন করবো,,, শীট!!!

মাথা যেন ঘুরছে রওশনের। নিশ্চয়ই এ ছেলে কিছু একটা ভেবেই এসেছে। আজকে অনেক খারাপ ভাবে ফেসেছে রওশন তা ওর মুখের ভাব দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

To be continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here