আসক্ত, পর্ব-১৮+১৯

0
1351

টায়রার কাছে ওর মা বাবা এসে দাড়াতেই তাদের কে দেখে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো! তার পরক্ষণেই গিয়ে জরিয়ে ধরলো তাদের!
মুচকি হেসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো টায়রার মা!
টায়রা অবাক হয়ে তার বাবা মা কে জিগ্গেস করলো,
– তোমরা হঠাৎ? কেনো?
টায়রার প্রশ্নে পাশ থেকে রিমপি বলল,
– সে তো পরেই দেখতে পাবি! এখন একটু চুপ যা!
রিমপির দিকে সরু দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো টায়রা!

সাজিদা ওদের দিকে এগিয়ে এসে বলল,
– এবার তাহলে শুরু করা যাক! ওরা তো চলেই এসছে!
মোর্শেদা জবাব দিলো,
– হ্যা হ্যা যাও! গেস্টরা অনেকক্ষন থেকে অপেক্ষা করছে!
সাজিদা মুচকি হেসে হেটে সামনের দিকে চলে গেলো! সাথে বর্ষাও!

সব কিছু অবাক হয়ে দেখছে টায়রা! তার মাথায় কিছুই ঢুকছে না! কি হচ্ছে এসব?
কেনো এই সাজ সজ্জা? কেনো বা তাকে এভাবে সাজানো হয়েছে?

মিনিট দুয়েক পরেই বর্ষা একটা ট্রলি টেবিল নিয়ে এলো ঢেলতে ঢেলতে! টায়রা আর লাজুক বাদে বাকিরা শুর শুর করে গিয়ে দাড়ালো সেখানে! টায়রার অবাক চাহনি দেখে মিটমিটিয়ে হাসছে তিতলি রিমপি নিশু আর রিমি!

শাহেদ এগিয়ে গিয়ে সবার সমনে দাড়িয়ে বলতে লাগলো,
– লেডিস এন্ড জেন্টালমেন! আপনারা সবাই জানেন আজকের এই আওয়োজনের কারন! আমার ছেলে লাজুক! তার জীবনের সব থেকে বিশেষ দিন আজ!
[ অবাক হয়ে লাজুকের দিকে তাকালো টায়রা! কি এমন বিশেষ দিন আজ লাজুকের?]

শাহেদ আবার বলতে লাগলো,
– আমি খুব খুশি আজ এই কারনে, যে আমার ছেলের আসক্তি, তার পিচ্চিকে আজ তার হাতে তুলে দিতে পারছি!
ছোট বেলা থেকে ও যা চেয়েছে তাই দিয়েছি! কখনো এমন হয়নি যে ও ওর পছন্দের জিনিসটা পায়নি!
আজও তার ব্যাতিক্রম হবে না! ওর জীবনের সব থেকে বেষ্ট ইমপর্টেন্ট গিফ্ট আমি আজ দিবো!
আর সেই গিফ্ট হলো টায়রা!

চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো টায়রার ! সে কি ভুল শুনলো নাকি? আড় চোখে লাজুকের দিকে তাকাতেই দেখলো সে বাকা হেসে তাকিয়ে আছে তার দিকে!
এদিকে শাহেদ আবার বলতে শুরু করলো,
– টায়রা বয়সে বেশ ছোট এখনো তাই আজ ওদের শুধু এংগেজমেন্ট করিয়ে রাখছি! বিয়েটা হবে টায়রার HSC এক্সাম শেষ হলে!

টায়রা যেনো শূন্যে ভাসছে! সব অনুভূতি গুলো কেমন অগোছালো হয়ে আছে! এই মুহূর্তে তার কি করা উচিৎ বুঝতে পারছে না!
খুব খুশি লাগছে এই ভেবে যে এখন থেকে লাজুক শুধু তার! তার জমরাজ সারাজীবনের জন্য তার হয়ে যাবে!
চোখ থেকে টপটপ করে কয়েক ফোটা পানি গরিয়ে পরলো!

হঠাৎ হাতে কারোর স্পর্শ পেতেই সেদিকে তাকিয়ে দেখলো লাজুক! মুচকি হেসে সে টায়রার চোখের পানি গুলো আলতো করে মুছে দিলো!
লাজুকের চোখের সাথে চোখাচোখি হতেই কান্না জরানো মুখে মুচকি হেসে দিলো সে!
লাজুকও হালকা হেসে হাত ধরে সামনে এগিয়ে গেলো!

বর্ষা ওদের হাতে দুটো রিং দিয়ে দিতে, লাজুক টায়রার আঙুলে রিং পরিয়ে দিলো! তারপর নিজের হাত টায়রার দিকে বারিয়ে দিতেই টায়রা হেসে উঠে লাজুক কেও রিং পরিয়ে দিলো!.
হাত তালি দিয়ে উঠলো সবাই! পাশ থেকে চেচিয়ে উঠলো তিতলি রিমপি রিমি নিশু!

হঠাৎই টায়রা নিচের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলো! তার ছোট্ট মনটা যে বড্ড নাজুক! অনুভূতি গুলো আড়াল করতে এখনে শিখে ওঠেনি! বড়দের মত নিজের কষ্ট আনন্দ গুলোকে নিজের মাঝে রাখতে পারে না সে!
পাশে থেকে লাজুক টায়রাকে টেনে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো!
আর শান্ত কন্ঠ বলতে লাগলো..
– হুসস! কাদছো কেনো তুমি? [ টায়রার চোখের পানি মুছে দিয়ে ] হয়েছে এবার শান্ত হও! আর কাদে না! দেখ সবাই দেখছে, তুমি এভাবে কাদলে ভাববে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করে নিচ্ছি!

ঘাড় কাত করে চোখ গুলো ছোট ছোট করে তাকালো টায়রা লাজুকের দিকে! হেসে দিলো লাজুক টায়রার চাহনি দেখে! নাক টানতে টানতে লাজুকের থেকে সরে দাড়ালো টায়রা!
তাকিয়ে লাজুক টায়রার মুখের দিকে! ভেজা চোখ, লাল নাক, মুখটা ফুলিয়ে রেখেছে! কি কিউট লাগছে দেখতে! লাজুকের ইচ্ছে করছে টায়রাকে টাইট করে জরিয়ে ধরে আনলিমিটেড চুমু খেতে!
কিন্তু সেটা তো এতো লোকজনের মাঝে সম্ভব না! মানে সে চাইলেই এখন টায়রাকে চুমু খেতে পারে, কিন্তু তার পিচ্চি তো লজ্জায় গুটিসুটি মেরে যাবে তখন!
আপন মনেই হেসে উঠে লাজুক অন্য দিকে ফিরে গেলো!

টায়রার মা বাবা এসে জরিয়ে ধরলো মেয়েকে! রিমপি রিমি তিতলি নিশু তারাও এসে লাফিয়ে পরলো টায়রার উপর!
সবাই তাদের কান্ড দেখে হাসতে লাগলো!
______________________
সব আওয়োজন শেষ হতে বেশ রাত হয়ে গেলো! টায়রা ফ্রেশ হয়ে তার মা বাবার সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে নিজের রুমের দিকে চলে এলো ঘুমনোর জন্য! অলমোস্ট বাসার সবাই ঘুমিয়ে পরেছে! কারন রাত 2:30 a.m এখন!

লাজুকের রুমের সামনে থেকে যেতে গিয়ে থমকে দাড়ালো টায়রা! হঠাৎ মনে হলো একবার দেখা যাওয়া যাক! তার মিস্টার হ্যান্ডসাম কি করছে! মেবি ঘুমিয়ে আছে হবে!

ভাজানো দরজাটা আস্তে আস্তে একটু খুলে উকি দিতেই দেখলো, বড় লাইট অফ! ড্রিম লাইট জ্বলছে! সাধারনত ড্রিম লাইটের আলোতে আবছা সব কিছু দেখতে পাওয়ারই কথা!
কিন্তু টায়রা সদ্য এলেডির আলোর মধ্যে থেকে এই অন্ধকারে এসছে বলে সে কিছুই স্পস্ট দেখতে পারছে না!

দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখার চেষ্টা করতে লাগলো চারপাশটা!
হঠাৎ মনে হলো কেউ দরজা লক করেছে! টায়রা ভয় পেয়ে সে দিকে ঘুরতে গেলেই , অনুভব করলো কারোর উত্তাল নিশ্বাস তার মুখে এসে পরছে! খুব কাছেই কেউ দাড়িয়ে আছে তার!
মুহূর্তেই হার্ট বিট ছুটতে লাগলো! সে ধীরে ধীরে পিছিয়ে গিয়ে দেওয়ালের সাথে লেগে দাড়িয়ে পরলো!
হাতপা কাপছে তার! কিন্তু ভয়ে না, অন্য এক অনুভূতিতে! কারন সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটা কে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি তার!
ধীরে ধীরে অন্ধকারের মাঝে লাজুকের মুখটাও স্পষ্ট হয়ে গেলো! তার স্থির চাহনি টায়রার মুখের দিকে! আর টায়রার চোখ লাজুকের চোখে!

কোমড়ে লাজুকের হাতের স্পর্শ পেতেই চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো টায়রা! কোমড়ে রাখা লাজুকের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো!
নিশ্বাস ক্রমশ গাড়ো হচ্ছে টায়রার লাজুকের স্পর্শে !
টায়রার ঘাড়ে চুল গুলো সরিয়ে দিতেই কেপে উঠলো সে!
লাজুক টায়রার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
– এতো রাতে চোরের মত চুপি চুপি আমার ঘরে কি করতে এসেছো শুনি?

চোখ বন্ধ রাখা অবস্থাই কাপা কাপা আওয়াজে জবাব দিলো টায়রা!
– আ..আমি মো..মোটেও চোরে মত আশি..নি! আমি তো জাস্ট…
লাজুক মুখটা টায়রার ঘাড়ের কাছে আর একটু এগিয়ে নিয়ে ধীর কন্ঠে বলল,
– হ্যা বল, তুমি তো কি?
– আম..মি….

এবার আর কিছু বলতে পারলো না টায়রা! তার আগেই লাজুক মুখ ডুবিয়ে দিলো টায়রার ঘাড়ে! লাজুকের নাক ঠোট টায়রার ঘাড়ে স্পর্শ করতেই বরফের মত শক্ত হয়ে গেলো টায়রা! ঠকঠক করে কাপতে লাগলো সে!

লাজুকের নিশ্বাস গুলো ঘাড় গলাতে পরছে টায়রার! তাতে যেনো আরো স্পর্শকাত কাতর করে দিচ্ছে তাকে!
টায়রার ঘাড়ে গভীর করে কয়েকটা শব্দ করে চুমু খেয়ে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো লাজুক!

টায়রার ঘাড়ে মাথা নুইয়ে রেখে লাজুক বলতে লাগলো!
– আমাকে পাগল করে দিচ্ছে তোমার আসক্তি! নিজেকে কিছুতেই দূরে রাখতে পারছি না তোমার থেকে!
জ্বলে পুরে নিঃশ্বেস হয়ে যাচ্ছি যে! মাতাল হচ্ছি তোমার ভালোবাসার মাতলামো তে!

চোখ আরো বন্ধ করে নিয়ে, লাজুককে আরো শক্ত করে চেপে ধরলো টায়রা! এই মানুষটার মুখ থেকে ভালোবাসার কথা গুলো শুনলে যেনো নিজেকে স্বর্গে আবিষ্ককার করে সে!

To be continue….
shuchona zannat…
আসক্ত?
জান্নাত
পর্ব : ১৯

সকালে টায়রা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করার জন্য নিচে যাচ্ছিলো! যখনই লাজুকের রুম ক্রস করে সামনে পা বারালো! পিছন থেকে কেউ একজন হাত ধরে টেনে তাকে লাজুকের রুমে ঢুকিয়ে নিলো!
ভয়ে টায়রার বুকটা ধরাস ধরাস করছে! দুহাত বুকে চেপে ধরে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে সামনে তাকাতেই দেখলো লাজুক দু হাত পকেটে গুজে বাকা হেসে তার দিকে তাকিয়ে আছে!
টায়রা গাল ফুলিয়ে চোখ ছোট ছোট করে লাজুকের দিকে তাকিয়ে বলল,
— এভাবে কেউ টেনে আনে? জানেন কত ভয় পেয়েছি!
টায়রার কথায় জবাব না দিয়ে লাজুক দুপা এগিয়ে একদম টায়রার সাথে ঘেসে দাড়ালো!
টায়রা ভরকে গিয়ে পেছাতে গেলেই পেছনের দেওয়ালের সাথে আটকালো! পকেট থেকে হাত বের করে টায়রার দু পাশ থেকে দেওয়ালে ভর করে কিছুটা ঝুকে গেলো লাজুক টায়রার মুখের দিক!
বুক ধক ধক করছে টায়রার! লাজুকের হঠাৎ এমন কাছে আশায় যেনো তার পুরো শরীর শিরশিরিয়ে উঠছে!
মাথা নিচু করে থাকা টায়রা চোখ তুলে লাজুকের চোখের দিকে তাকাতেই দু সেকেন্ডের মাথায় চোখ নামিয়ে নিলো? কারন লাজুকের চাহনি যেনো মারাত্মক নেশা ছড়াচ্ছে! যার দিকে তাকিয়ে থাকার সামর্থ নেই ওর!
পলক হীন চাহনিতে দেখে যাচ্ছে লাজুক টায়রাকে,তবুও যেনো দেখার শেষ হচ্ছে না! মাথা নিচু করে দাড়িয়ে টায়রা! ক্ষানিক বাদে চোখ তুলে লাজুকের দিকে তাকাতেই হুট করেই সে টায়রার গালে চুমু খেয়ে বসলো!
হা করে চোখ গুলো বড় বড় করে তাকিয়ে টায়রা! কি হলো এটা? অটোমেটিক হাতটা তার ডান গালে চলে গেলো যেখানে লাজুক চুমু খেয়েছে!
মিটমিটিয়ে হাসছে লাজুক টায়রার রিয়াক্শন দেখে! পরক্ষনে আবার সে টায়রার বা গালেও চুমু খেলো!
এবার টায়রা অবাক হলো না লজ্জা পেয়ে মুচকি হেসে মাথা নুইয়ে নিলো!
চোখের সামনে এসে পরা চুল গুলো টায়রার দু হাতে দু দিকে সরিয়ে , গাল ধরে মুখটা উপরে তুললো লাজুক!
তারপর টায়রার কপালে একটা চুমু খেয়ে ওর থেকে দু পা সরে এসে পকেটে হাত দিয়ে দাড়ালো!
— কলেজ যাবে না?
মাথা নাড়ালো টায়রা,
— হুমম!
— এক্সাম কবে থেকে শুরু হচ্ছে ?
— পরশু!
— আজ আমার সাথে যাবে! অফিস যাওয়ার পথে কলেজে নামিয়ে দিয়ে যাবো!
লাজুকের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো টায়রা,
— ঠিক আছে!
— আচ্ছা এবার ব্রেকফাস্ট করতে চলো!
— হু!
টায়রার হাত ধরে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো লাজুক! নিচে নেমে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখে অলরেডি সবাই বসে গেছে খেতে!
লাজুক টায়রাকে একসাথে আসতে দেখে রিমপি মিটমিটিয়ে হাসতে হাসতে বলল,
— ওয়াহহ! কেয়্যা বাত হ্যে! সুইট কাপল একসাথে আজ!
— চেয়ারে বসতে বসতে লাজুক টুপ করে রিমপির মাথায় একটা বারি দিলো!
পাশ থেকে রিমি বলল,
— আরে একসাথে আসবে না তো কি? কিছুদিন বাদে এরা মিস্টার এন্ড মিসেস যে হয়ে যাবে! তাই এখন থেকে এভাবে দেখা অবভ্যাস করে নে!
রিমির কথা শুনে সবাই মুখ চেপে হেসে উঠলো!
লাজুক ব্রেড চিবতে চিবতে শান্ত কণ্ঠে বলল,
— আংকেল কে ফোন করছি, এই মান্থের মধ্যেই যেনো আমেরিকা নিয়ে যায় দুটো কে!
লাজুকের কথার সাথে সাথে রিমপি রিমি চেচিয়ে উঠলো,
— নো নো নো নোহহহহ!
— ভাই তুমি আমাদের সাথে এমন জুলুম করতে পারো না!
— আমি কি পারি, তাতে তোদের খুব ভালো আইডিয়া আছে!
রিমপি রিমি করুন মুখ করে বলল,
— সরি ভাই! আর বলবো না!
ব্রেডে বাটার লাগাতে লাগাতে হাসতে লাগলো টায়রা লাজুক আর ওদের কাহিনী দেখে!
খাবার শেষ হতে লাজুক টেবিল থেকে উঠতে উঠতে বলল,
— টায়রা রেডি হয়ে নেও কলেজ যাওয়ার জন্য! আর [ রিমপি রিমি তিতলি নিশু কে উদ্দেশ্য করে ] কলেজ যেতে হলে চারজন রেডি হয়ে এসো! হারিআপ!!
— পাচ জনই উঠে রুমে চলে গেলো রেডি হতে!
লাজুকও গিয়ে অফিসের জন্য তৈরী হয়ে নিয়ে গাড়িতে এসে বসলো! তার মিনিট দুয়েক পরে বাকিরাও চলে এলো!
টায়রা সামনে বসে, আর বাকি চারজন পিছনে বসে! গল্প করতে করতে কলেজ পৌছে গেলো!
রিমপি রিমি তিতলি নিশু আগে আগে চলে গেলো! টায়রা গাড়ি থেকে নেমে দাড়াতেই লাজুকও নামলো!
লাজুক কে বাই বলে চলে আসতে নিলেই হঠাৎ একটা ছেলে এসে,
— হাই টায়রা! কেমন আছিস?
বলেই টায়রাকে জরিয়ে ধরলো! ছেলেটা টায়রার ক্লাসমেট! টায়রা আড় চোখে লাজুকের দিকে তাকাতেই ঢোক গিললো তিন চারটা! চোখ মুখ লাল করে এদিকেই তাকিয়ে সে!
সামনে রিয়ানের দিকে তাকিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
— ভা..ভালো! তোর ব..বল?
— আমি তো মাস্ত আছি!
টায়রা হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে যেতে,
— চল চল ক্লাসে লেট হবে!
টায়রা আর কিছু বলার সুযোগ ই পেলো না! করন চোখে পিছনে লাজুকের দিকে তাকাতে তাকাতে রিয়ানের সাথে চলে গেলো!
টায়রার ভয়ে আত্মা লাফাচ্ছে! ভয়ংকর রেগে গেছে লাজুক! আজ তার কপালে দুঃখ আছে!
লাজুকও চুপচাপ গাড়িতে উঠে চলে গেলো নিজের গন্তব্যে!
_______________
মাথা নিচু করে দাড়িয়ে টায়রা লাজুকের সামনে! আর লাজুক তার দিকে ভ্রূ কুচকে তাকিয়ে!
— বারন করেছিলাম না কোনো ছেলে ফ্রেন্ডদের সাথে মিসতে?
ভীতু টায়রা কাপা কাপা গলায় জবাব দিলো,
— আ..আসলে রিয়ান নি..নিজে থেকেই এসে সব স..ময় কথা বলে! আ..আমি ওকে এরিয়ে যেতে চাইলেও এসে কথা বলে!
মুখের উপরে যদি আ..আমার সাথে কথা বলতে বারন করি তাহলে ও ক…কষ্ট পাবে!
চুপ করে তাকিয়ে লাজুক টায়রার মুখের দিকে! তা দেখে টায়রা আবার বলল,
— আ..আম সরি! আর রিয়ানের সাথে কথা বলবো না! কালই ওকে ব..বলে দেবো যেনো আমার সাথে আর কথা না বলে!
লাজুক বসা থেকে উঠে গিয়ে টায়রাকে জরিয়ে ধরলো নিজের সাথে! ওর কপালের পাশে চুমু খেয়ে বলতে লাগলো,
— ইট’স ওকে! এক্সুলি তোমাকে অন্য ছেলের সাথে দেখলে আমি সহ্য করতে পারি না! তোমাকে অন্য কারোর সাথে ভাবতে গেলোও মনে হয় কেউ কলিজা ছিড়ে নিচ্ছে! তাই তো এতো রেগে যাই! আম সরি, তোমার উপর রাগ দেখানো উচিৎ হয়নি আমার!
টায়রা চুপ করে লাজুকের বুকে মাথা রেখে দু হাতে শক্ত করে আগলে নিলো লাজুককে! ভালোবাসা সত্যিই মানুষকে বাচ্চা বানিয়ে দেয়! যেমন বাচ্চারা তার খেলনা কারোর সাথে ভাগ করে নিতে রাজি না! তেমনি এরাও তার ভালোবাসার মানুষকে কারোর সাথে ভাগ করতে নারাজ! এমনকি তার পাশেও কাউকে সহ্য করতে পারে না!

দু দিন পরেই টায়রার এক্সাম শুরু হয়ে গেলো! শুরু হলো তার ব্যাস্ত দিন! পড়াশুনায় দিন পার হয়ে যাচ্ছে! লাজুকের সাথেও খুব একটা কথা বলার সময় হয় না! রাতে যখন বাড়ি ফেরে তখন একটু আধটু কথা হয়!
এভাবেই এক্সামের এক মাস পেরিয়ে গেলো টায়রা! পড়া শুনার পাঠচুকিয়ে একটু ফ্রী হয়েছে সে!
সেদিনের পর থেকে রিয়ানের সাথে কথা বলা একদম বন্ধ করে দিয়েছিলো টায়রা! রিয়ান সেধে কথা বলতে চাইলেও কোনো না কোনো বাহানায় এরিয়ে যেতো টায়রা! সে চায় না লাজুক কষ্ট পাক তার কোনো বোকামিতে!
কিন্তু এক্সাম শেষ হওয়ার পর থেকেই রিয়ান টায়রার সাথে দেখা করার জন্য প্রচুর রিকয়েস্ট করতে লাগলো!
কিছুতেই পিছা ছোটাতে পারছিলো না টায়রা, অবশেষে তাকে রাজি হতেই হলো দেখা করার জন্য!

To be continue……
shuchona zannat…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here