আড়ালে_ভালোবাসি,পর্ব_১৫
নন্দিনি_চৌধুরী
[গত পর্বে ভুল করে জুঁই এর যায়গায় জবা দিছিলাম। ভেবেছিলাম আর চ্যাঞ্জ করবোনা জবাই রাখি। পরে আবার ভাবলাম যে না এটাতো ভুল করছি আমি। তাই জুঁই দিলাম। সরি এই ভুলের জন্য।]
আজকে আকাশ আর জুঁই দেশে ফিরেছে।আরাফ রাতুল গেছে ওদের আনতে।জুনায়েদ ছুটি পায়নি তার আসতে পারেনি। কিন্তু সে পরে আসবে বলে জানিয়েছে।
আকাশের মা সকাল থেকে ছেলের জন্য সব পছন্দের রান্না করছে সাথে জুঁইয়ের মাও আছে।এত বছর পর ছেলেমেয়ে ঘরে আসছে তাদের আদরের যেনো কমতি না থাকে।স্নেহা আর রিতু মিলে আকাশ জুঁইয়ের রুম গুছিয়ে রেখেছে।
স্নেহা গুছগাছ করে রুমে এসে দেখে তুলতুল শুয়ে শুয়ে কান্না করছে।স্নেহা ওকে কোলে নিয়ে খাওয়ালো। তারপর মেয়েকে নিয়ে গোসল করে নিলো।
আকাশ আর জুঁইকে নিয়ে বাসায় আসলো আরাফ রাতুল।আকাশকে আসতে দেখে ওর মা ছূটে গেলেন ওর কাছে। জুঁই গেলো ওর মায়ের কাছে।
আকাশের মা:কেমন আছিস বাবা।কত গুলা বছর তোকে দেখিনা।এই মায়ের কথা কি একটুও মনে পরেনা।কিভাবে পারলি এতগুলা বছর দূরে থাকতে।আর যাস না বাবা এই মাকে ছেড়ে।
আকাশ:সরি মা। আমার তোমার কথা খুব মনে পরতো। কিন্তু অইযে অপরাধ বোধে আসতে পারতাম না।প্লিজ মা মন খারাপ করোনা।অনেকগুলা দিন তোমার কাছে থাকবো।
আকাশ মাকে ছেড়ে বাবার কাছে গিয়ে মোতালেভ হাসান কে জরিয়ে ধরলেন।বাবা ছেলে এতগুলা বছর পর দেখা হয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না।
জুঁইও ইকবাল হাসান আর ওর মায়ের সাথে অনেক সময় ধরে কান্না করলো।এরপর দুইজনেই মাফ চাইলো সবার কাছে না জানিয়ে চলে যাওয়ার জন্য, বিয়ে করে ফেলার জন্য।সবাই তাদের মাফ করে দিয়েছে বলে জানালো।
একটু পর স্নেহা তুলতুলকে নিয়ে নিচে নেমে এলো।আকাশ স্নেহাকে দেখে থমকে গেছে। এতোগুলা বছর পর আজ সে স্নেহাকে দেখলো। এক অজানা কষ্ট হচ্ছে তার।আবার ভালো লাগছে তার বাবুইটার এখন নিজের একটা বাবুই আছে।স্নেহাও আকাশকে দেখে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো।মনের ভিতর কেমন একটা খচখচ করছে।তবুও মুখে হাসি রেখে এগিয়ে গেলো সবার কাছে।তুলতুল আরাফকে দেখে ওর কোলে যাওয়ার জন্য কান্না করছে একদম বাবা পাগল মেয়েটা।আরাফ ও মেয়েকে যত্নসহ কোলে নিলো।স্নেহা এসে জুঁইয়ের সাথে কুশুলাদি বিনিময় করলো।তারপর আকাশের সাথে দুই একটা কথা বল্লো।অনেক দূর জার্নি করে এসেছে দেখে আকাশ জুঁইকে পাঠানো হলো ফ্রেশ হবার জন্য।আরাফ মেয়েকে স্নেহার কাছে দিয়ে গেলো ফ্রেশ হতে।স্নেহা মেয়েকে রিয়ানার সাথে খেলতে রেখে রান্না ঘরে গেলো মা কাকিদের সাহায্য করতে।
ফ্রেশ হয়ে সবাই খাবার টেবিলে খেতে বসলো।
আজ আকাশের জন্য ওর মা পোলাউ,মুরগির রেজালা,ডিমের কোরমা,চিংড়ি মাছের মালাই কাড়ি,গরুর মাংসের কালা ভুনা সাথে আকাশেএ প্রিয় পায়েস আর ছানার মিষ্টি।সবাই একসাথে খেতে বসেছে।আকাশ খাচ্ছে আর আরাফ তুলতুলের ভালোবাসা দেখছে।তুলতুল বাবার কোলে বোসে মুরগির মাংসে একটা হাড্ডি নিয়ে সেটা চেটে চেটে খাচ্ছে আর আরাফ একটু একটু করে ডিম খুটে খুটে ওকে খাওয়াচ্ছে।আকাশে এটা দেখে খুব ভালো লাগছে নিজের ও বাবা হবার ইচ্ছে করছে।কিন্তু তার আর জুঁইয়ের মধ্য তো এখনো কিছু নরমাল হয়নি।আকাশ জানেনা জুঁই এই রিলেশনে হ্যাপি কিনা।খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই যে যার রুমে গেলো।শুধু স্নেহা আর জুঁই লিভিং রুমে বসে গল্প করছে।দুই বোনে মিলে অনেক বছর পর আবার একসাথে এভাবে গল্প করছে।
জুঁই:তুলতুল তো দেখি বাবার সাথে একদম মিশে থাকে তোকে তো দরকারই পরেনা আপু।
স্নেহা:হ্যা খালি যখন খুদা লাগে তখন আমাকে লাগে ওর।
জুঁই:হিহিহি।
স্নেহা:হাসিস না। এভার বল তুই কি আকাশেএ সাথে হ্যাপি আছিস আই মিন আমি কি বলতে চাইছি তুই বুজতে পারছিস নিশ্চই।
জুঁই:হুম বুজতে পারছি তুই কি বলতে চাস।আমি হ্যাপি আছি আপু।আকাশ ভাইয়া আমাকে কোনোদিন এই বিয়ে নিয়ে কোনো কম্পল্যাইন করেনি।হ্যা যদিও আমরা নরমা সব হাজবেন্ড ওয়াইফের মতোনা।কিন্তু একদিন না একদিন আমরা সেরকম হয়ে যাবো।
স্নেহা:মিতুকে নিয়ে কোনো প্রব্লেম হয়নাতো?
জুঁই:নারে আপু আকাশ তো মাঝে মাঝে অনুসুচনা করে সে মিতুর সাথে অন্যায় করেছে।কিন্তু তার ইগোর জন্য তা প্রকাশ করেনা কিন্তু আমি বুঝি সে যে অনুতপ্ত।
স্নেহা:হুম যাই হয়েছে এভার সব ঠিকঠাক থাকলে হয়।
রাতে স্নেহা তুলতুলকে নিয়ে ছাঁদে এসেছে।তুলতুল কান্না করছে। আরাফ হাসপাতালে গেছে একটা এমার্জেন্সি আছে তাই।স্নেহা ওকে থামানোর চেষ্টা করছে।
“আমার কাছে দেও আমি থামাই।”
পিছন থেকে কথাটা শুনে তাকিয়ে দেখে আকাশ দাঁড়ানো।স্নেহা আকাশের কথা মতো তুলতুলকে আকাশের কোলে দিলো।কেন জানি বাধা দিলোনা।আকাশ তুলতুলকে কোলে নিয়ে আদর করছে আর কান্না থামাচ্ছে।একটু পর তুলতুল থেমে গেলো আর ঘুমিয়ে গেলো।আকাশ তুলতুলকে কোলে রেখেই স্নেহাকে জিজ্ঞেস করলো,
আকাশ:কেমন আছো?
স্নেহা:আলহামদুলিল্লাহ ভালো তুমি?
আকাশ:আলহামদুলিল্লাহ।তারপর মেয়ের মা হয়ে গেছো বুজাই যাচ্ছেনা এখনো বাচ্চা বাচ্চাই লাগছে।
স্নেহা:হেহেহে তুমিও না আকাশ।
আকাশ:হু তারপর দেখো তুলতুল কিন্তু তার ছোট বাবাইয়ের কোলে ঘুমালো তোমার কাছে ঘুমালোনা।ভাইয়ার পর তাহলে আমি ওকে সামলাতে পারি।
স্নেহা:হ্যা একই তো রক্ত পারবা না কেন বলো।আচ্ছা আকাশ একটা কথা বলি?
আকাশ:হ্যা অবশ্যই।
স্নেহা:জুঁইয়ের সাথে তুমি সব নরমাল করে নিতে পেরেছো?
আকাশ:উম আমি জানিতাম এই প্রশ্ন তুমি করবা তাই আমি ভেবে উত্তর দেবোনা।জুঁইয়ের সাথে প্রথমে বিয়েটা মানতে পারছিলাম না কারন মিতুর সাথে করা অন্যার আমাকে ভিতরে ভিতরে ঘায়েল করছিলো।আমি আজ ও জানিনা মিতু কোথায় ওর কাছে আমার ক্ষমা চাওয়া বাকি।ও যাই করেছিলো আমিতো তার থেকে বড় অপরাধ করেছি প্রথমে জেদ করে ওকে বিয়ে করলাম অত্যাচার করলাম শেষে ডিভোর্স দিয়ে দিলাম।জানিনা ও এখন কই আছে তবে যদি কোনোদিন দেখা হয় আমি ক্ষমা চাইবো ওর কাছে।জুঁইকে আমি আজো ও স্ত্রীর মর্যাদা দেইনি কিন্তু জু্ঁই আমার খুব ভালো বন্ধুর মতো আমার পাশে থেকে যাচ্ছে।কোনো অভিযোগ নেই কোনো রাগ নেই।আমি সম্পুর্ন চেষ্টা করছি ওর সাথে নরমাল হওয়ার।
স্নেহা:হুম মিতুর সাথে যা করেছো তার ফেরাবার না তবে মিতুর মতো প্লিজ জুঁইকে কষ্ট দিওনা।আমি জানি মেয়েটা তোমাকে ভালোবাসে অনেক তাইতো তোমার পাশে এভাবে আছে।
আকাশ:হুম আচ্ছা নেও তুলতুল ঘুমিয়ে গেছে ওর ঠান্ডা লেগে যাবে ওকে নিয়ে রুমে যাও।
স্নেহা:হুম
স্নেহা যাওয়ার পর আকাশ নিজে নিজে বলতে লাগে,
“আমাকে পারতে হবে স্নেহা।তোমাকে ভুকে জুঁইকে আপন করতে।তোমাকে পুরোপুরি ভুলা আমার পক্ষ্যে কোনোদিন সম্ভব না।তুমি আমার মনের কোনায় থাকবে তবে আমি আমার স্ত্রীকে সর্বোচ্চ ভালোবাসার চেষ্টা করবো।আমাকে পারতে হবে।”
চারদিনপর,
জাফর হাসান ডাক্তার দেখাতে গেছেন।ইকবাল গেছেন বাজারে মোতালেভ সাহেব কে নিয়ে।খাবার টেবিলে স্নেহা আরাফ,আকাশ জুঁই খাচ্ছে।
আরাফ:স্নেহা তুলতুলে কে খাইয়েছো?
স্নেহা:হুম ঘুমের মধ্য কান্না করছিলো তখন বুকের দুধ দিছি পুরা উঠলে আম্মু ওর জন্য খিচুরি রান্না করছে ওটা খাওয়াবো।
আরাফ:আচ্ছা শুন আকাশ আজকে আমরা চারজন বিকালে বেরোবো। তোদের একটা জায়গায় নিয়ে যাবো আমি।স্নেহা তুলতুলকে আম্মুর কাছে রেখে যেও।
আকাশ:কিন্তু কই নিয়ে যাবি তুই ভাইয়া?
আরাফ:আছে একটা জায়গায়।
বিকালে আরাফের কথা মতো স্নেহা তুলতুলকে ওর মায়ের কাছে রেখে ওরা বেরিয়ে গেলো।
আরাফ স্নেহা,আকাশ জুঁই একটা বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো।গাড়ি থেকে নেমে চারজনে ভিতরর গেলো।আরাফ গিয়ে বাহিরে লাগানো ইলেক্ট্রিক লোক বোর্ডে একটা কার্ড দেখালো সাথে সাথে দরজা ওপেন হলো।চারজনে ভিতরে গেলো।বাড়িটা দেখতে খুব সুন্দর।আকাশ,স্নেহা,জুঁই এখনো বুজতে পারছেনা এখানে কেন এসেছে ওরা।আরাফকে দেখে একটা আরাফদের বয়সি ছেলে এসে ওকে জরিয়ে ধরলো।আরাফ ও ওকে জরিয়ে ধরলো।দুজনের ভিতর ভাব বিমিময়ের পর আরাফ সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগ্লো।
আরাফ:লুক এ হচ্ছে আমার বেস্টফ্রেন্ড রোহান।আর রোহান এ হচ্ছে আমার ভাই আকাশ ওর মিসেস জুঁই আর তোর ভাবি স্নেহা।
রোহান:কেমন আছেন সবাই।ভাবি কেমন আছেন?
স্নেহা:জি ভালো আপনি?
আকাশ জুঁই:ভালো
রোহান:জি আমিও ভালো।
আরাফ:আচ্ছা রোহান অবস্থা কি সেটা বল?
রোহান:ভালো নারে আগের মতোই আজকাল আর ও বেশি বায়োলেন্ট হয়ে যাচ্ছে।
আরাফ:আচ্ছা চল দেখি।
রোহান:হুম কিন্তু সাবধানে কাছে যাবিনা।
রোহান ওদের নিয়ে একটা রুমে আসলো।রুমে দরজা খুলে সবাই ভিতরে গিয়ে চমকে গেলো।
কারন ওদের সামনে মিতু।মিতু আগের মিতু নেই চেহারার সেই লাবণ্যতা আর নেই। চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে শরিল জির্নশির্ন হয়ে গেছে।মিতু দেয়ালের সাথে ঘেষে বসে আছে আর কি জানি বিড়বিড় করছে একটু পর হাসছে আবার কাঁদছে।
স্নেহা:মিতু!মিতুর এই অবস্থা কেন?ওর এই অবস্থা হলো কিভাবে?
জুঁই:ও এমন করছে কেন ওর কি হয়েছে?
রোহান:ও মেন্টাল রোগি হয়েগেছে।ও একজন মানোসীক রোগি।
স্নেহা:কিন্তু এইসব?
আরাফ:আমি বলছি।
চার বছর আগে আকাশ যেদিন মিতুকে বাসা থেকে বের করে দেয়। সেদিন ও ওদের বাসায় যায়।বাসায় গিয়ে ওর বাবা ভাইকে সব জানালে তারা ওকে বাসা থেকে বের করে দেয় পরদিন সকালে।মিতুর কাছে আর কোনো রাস্তা ছিলোনা যাওয়ার। মিতু জানতো আকাশ ওকে আর মানবেনা। তাই মিতু আকাশের দেওয়া ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেয় আর ওর কাছে পাঠিয়ে দেয়।মিতু বুজতে পারছিলোনা ও কোথায় যাবে কার কাছে যাবে কি করবে।এসব ভাবতে ভাবতে রাস্তা দিয়ে আনমোনে হেটে যাওয়ার সময় একটা গাড়ির সাথে ওর ভয়াবহ এক্সিডেন্ট হয়।রাস্তার আশে পাশের লোকেরা মিলে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।হাসপাতালে মিতুর কেস এসে পরে আমার এক কলিগের হাতে এমার্জেন্সি অপারেশন করতে হয়।মিতুর মাথায় অনেক আঘাত লাগে অনেক রক্তক্ষরণ হয়।প্রথম অপারেশনে মিতুর অবস্থা বেশি ভালো হলোনা।আমার কলিগ আমাকে কল করলো আমি হাসপাতালে গিয়ে মিতুকে দেখে অনেক অবাক হলাম।তারপর আবার আরেকটা অপারেশন করতে হলো মিতুর।অনেক রিস্ক ছিলো হয়তো এই অপারেশনে মিতু মারা যেতে পারতো নয়ত ওর মেন্টাল অবস্থা খারাপ হতো।অপারেশনের পর যেই ভয় হচ্চিলো সেটাই হলো মিতুর জ্ঞান ফিরলেও সে চিরদিনের মতো পাগল হয়ে গেলো।মিতুর সব কিছু ভুলে গেলো।প্রথম প্রথম পাগলামি করত কিন্তু আসতে আসতে বাচ্চা দেখলে কোনো কাপল দেখলে অনেক বায়োলেন্ট হয়ে যেতো।মিতুর কেস্টা আমি রোহান কে দিলাম যে রোহান হয়ত পারবে ওকে সুস্থ করতে।মিতুর বাড়ির কেউ মিতুর খবর পেয়ে আসেনি তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলো মিতু নাকি তাদের জন্য মরে গেছে।ভেবেছিলাম আমাদের কাছে নিয়ে আসবো।কিন্তু বাড়ির সবাই ও মিতুর উপর রেগে ছিলো।তাই রোহান মিতুকে এই মেন্টাল এসাইলামে নিয়ে আসে।এখানে বিষেশ ভাবে কেয়ার করার জন্য।মিতুর অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হচ্চিলো।ওকে দিনের বেশির ভাগ সময় ঘুমের মেডিসিন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা লাগে কারন যেগে থাকলে ওর পাগলামি বেড়ে যায়। যাকে তাকে আঘাত করতে চায়।আমার কলিগের ওয়াইফ মিতুকে হাসপাতালে দেখে আমাকে জানায় মিতু নাকি তার কাছে এসেছিলো চেকাপের জন্য মিতুর রিপোর্ট নাকি ছিলো ও মা হতে পারবেনা কোনোদিন।এক সাথে এত্তধাক্কা মিতু নিতে পারেনি আকাশ কে হারানো,বাচ্চা না হবার অক্ষম্যতা,এক্সিডেন্ট সব মিলিয়ে মিতুর এই অবস্থা হয়।আমি ভেবেছিলাম আকাশকে আনলে হয়ত মিতু ঠিক হবে কিন্তু না তার আগেই আকাশ চলে যায়।আর সেই থেকেই মিতুর এই অবস্থা।কখনো কাদে কখনো হাসে কখনো নিজেই নিজেকে আঘাত করে।আবার চিৎকার করে বলে হারিয়ে গেছে সব হারিয়ে গেছে।এখনো ওর অবস্থা ভালো হচ্চেনা আর ও অবনতি হচ্ছে।
মিতুর অবস্থার কথা শুনে স্নেহা জুঁই এর চোখে পানি। আকাশ স্তব্দ হয়ে গেছে।সে অজান্তে একটা মেয়ের কত ক্ষতি করে ফেল্লো।
আকাশ আসতে করে মিতুর কাছে যেতে নিলে রোহান বলে উঠে,
রোহান:যেওনা ওর কাছে। ওর কাছে কেউ গেলে খুব বায়োলেন্ট হয়ে যায়।আঘাত করতে চায় তাকে।
আকাশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,
আকাশ:যেই আঘাত আমি করেছি ওকে। তার থেকে বেশি আঘাত ও আমায় করবেনা।
আকাশ আসতে করে মিতুর কাছে গেলো মিতু আকাশকে দেখেই বায়োলেন্স হয়ে গেলো। ওকে মারা জন্য এটা ওটা খুজতে গেলো। আর চিৎকার করতে লাগ্লো।
মিতু:যা যা অই যা কে তুই হ্যা কে যা এই যা।
আকাশ মিতুকে শান্ত করার জন্য ওকে ধরতে গেলে মিতু আকাশে দিকে পাশে থাকা টেবিলের গ্লাস্টা ছুড়ে মারে। আকাশ সরে গেলেও হাত কেটে যায় গ্লাস লেগে।
রোহান:ওর কাছে যেতে না করলাম না। দেখছো দাঁড়াও নার্সকে ডাকি ওকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিতে হবে।
রোহান সবাইকে বাহিরে নিয়ে এসে নার্সকে ডেকে মিতুকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিলো।
আকাশ,আরাফ,স্নেহা,জুঁই বসে আছে সোফায়।আকাশ একদম চুপ হয়ে গেছে।স্নেহা, জুঁই ও চুপ।
আরাফ:চলো রাত হয়ে আসছে বাসায় যেতে হবে।তুলতুল বাসায় একা মা কি ওকে এত্তক্ষন সামলাতে পারবে।
স্নেহা:হু
আরাফ:আকাশ চল
আকাশ:হু
তারপর চারজনে রোহানের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হলো।
বাসায় এসে সবাই ফ্রেশ হয়ে নিলো।সবাই এখনো চুপ আছে বাড়ির কাউকে কিছু বলেনি।স্নেহা মেয়েকে খাইয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
আকাশ নিজের রুমের বেলকনির ইজি চেয়ারে বসে আছে।এই রুমেই মিতুর সাথে ও অনেক অত্যাচার করেছে মেরেছে কত কিছু করেছে কিন্তু মেয়েটা সব মুখ বুজে সয্য করেছে।
আকাশে পাশে এসে দাঁড়ালো জুঁই আসার পর থেকে দেখছে আকাশ চুপচাপ।
জুঁই:আকাশ চলো খেতে চলো।আশা পর থেকে এভাবে এখানে বসে আছো।
আকাশ:ভালো লাগছেনা।খাবোনা।
জুঁই:জানি তুমি মিতুর জন্য কষ্ট পাচ্ছো কিন্তু কষ্ট পেওনা দেখো মিতু ভালো হয়ে যাবে।
আকাশ:অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি মিতুর সাথে।সব আমার জন্য হয়েছে সব কিছু।
আকাশ জুঁই কে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
#চলবে