ইস্ক_সুফিয়ানা #পর্ব – ০২

0
2643

#ইস্ক_সুফিয়ানা
#পর্ব – ০২
#লেখনীতে : #Aloñe_Asha (ছদ্ম নাম)
#Kazi_Meherin_Nesa

ভারাক্রান্ত মন আর একরাশ কষ্ট সাথে চোখের পানি নিয়ে মাথা অব্দি কম্বল মুড়ে শুয়ে আছি, শুধু শুধু নিজের চোখের পানি কারো সামনে ফেলতে চাইনা কারণ আমার কষ্ট তো আর কেউ বুঝবে না..দুপুরে খাইনি, আমার হবু শাশুড়ি গেছে পর এসে শুয়েছি আর উঠিনি, চাচী এসে ডেকে গেছে আমাকে খাওয়ার জন্য দুবার কিন্তু ঘুমের ভান ধরে পড়ে ছিলাম মটকা মেরে..কিছুক্ষণ বাদে আমার ক্লাস টেন পড়ুয়া চাচাতো বোন নয়না এলো, চাচী আমাকে যাই মনে করুক কিন্তু আমার চাচাতো ভাই বোনেরা আমাকে নিজের বড় বোনের মতোই ভালোবাসে..নয়না এসে আমাকে ডাকতে শুরু করলো…

“ঘুমাও নাকি আপু?”

“নাহ..! কিছু বলবি?”

“এই নাও, তোমার বিয়ের শাড়ি গয়না চুড়ি সবকিছু..আরো অনেককিছু আছে এর ভেতর..”

কথাটা বলেই নয়না বিছানায় উঠে বসলো, আমিও ওর কথার মানে বুঝতে না পেরে কম্বল সরিয়ে উঠে বসলাম আমি, দেখলাম একটা ছোটো সাইজের ট্রলি ব্যাগ আর তাতে অনেক জিনিস, বিয়ের তত্ত্বের মতো লাগছে কিন্তু বিয়ের তো এখনও সময় বাকি আছে..আমি দায়সারা ভাবে প্রশ্ন করলাম..

“এতো জিনিস? এগুলো কে দিলো নয়না?”

“ঐযে তোমার শাশুড়ি দিয়ে গেছেন, বিয়ের আগে ছেলের বাড়ি থেকে জিনিস দেয়না সেগুলো.. বিয়ের দিন এগুলো পড়েই সাজতে বলেছেন তোমাকে উনি..”

মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো আমার, কেনো যেনো মনে হচ্ছে মহিলাটি একটু বেশিই তাড়াহুড়ো করছেন বিয়েটা নিয়ে..দুদিন আগেই বিয়ের জিনিস পাঠিয়ে দিলেন? আমি আদুরে স্বরে নয়নাকে বললাম..

“ও বাড়ির মানুষ ভালো তাইনা? তোকে কতকিছু দিলো”

নয়নার কথায় মলিন একটা হাসি দিলাম আমি, মেয়েটা তো আর এতকিছু জানে না যে কেনো আমার জন্যে এত্তো আয়োজন হচ্ছে..

“এখানে তো দেখছি অনেক জিনিস কিন্তু আমার এতকিছু লাগবে না, তুই এক কাজ কর.. এখান থেকে নিজের পছন্দমত জিনিস বেছে নিয়ে যা”

নয়না আমার কথা শুনে খুশি হয়ে ব্যাগ থেকে কিছু নিতেই যাচ্ছিলো তখনই চাচী চলে আসে..

“একদম না, নয়না..ওগুলো রুহির জিনিস, একটাতেও হাত দিবি না..বাইরে যা তুই এখন”

নয়না চলে গেলো, চাচী আমার পাশে এসে বসে ব্যাগের জিনিসগুলো নাড়াচাড়া করে দেখতে দেখতে বললেন..

“চাচী নিতে দিলে না কেনো ওকে? ওর পছন্দ হয়েছিলো এগুলো”

” তাই বলে তোর জিনিস ওকে দিয়ে দিবি? এইসব তো শুধুমাত্র তোর জন্যে, তুই এইসব পড়ে বধূবেশে বিয়েতে বসবি”

“আমার এসবের কিছুই চাই না চাচী..কিন্তু ওনারা আমাকে এতকিছু কেনো দিচ্ছেন সেটাই তো বুঝত পারছি না”

“ওসব নিয়ে তোর এতো ভাবতে হবে না, ওনাদের তো ভালোই টাকা পয়সা আছে, দেখবি তোর জীবন আরাম আয়েশে ভরে যাবে আর আমাদেরও দরকার পড়লে সাহায্য করবেন”

আমি হতাশ হলাম চাচীর কথায়, উনি শুধু ওনাদের টাকা দেখছেন, আমার মনের অবস্থা বোঝার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করছেন না..

“চাচী, আমি শুধু তোমাদের কথা ভেবে এই বিয়েতে রাজি হয়েছি, ছেলেটাকে আমি চিনিনা অব্দি কিন্তু তুমি কি ওনাদের সাথে ঠিকমতো কথা বলেছো? সত্যিই বিয়েটা হয়ে গেলে এই বাড়িটা ছেড়ে দেবেন তো ওনারা? পরে আবার কোনো ঝামেলা…

” আরে না বাবা, কথা দিয়েছেন ওনারা আমাকে..তোর বদলে বাড়িটা ফিরিয়ে দেবে আমাদের..তার ওপর এই বিয়ের খরচের টাকাও বলেছেন ওনারাই দেবেন..তোকে ওনাদের ভারী পছন্দ হয়েছে কিনা”

এতক্ষণে বুঝলাম চাচীর এই গদগদ আনন্দের কারণ..ওনার এক টাকাও তো খরচ হচ্ছে না, পরের টাকায় বিদায় করতে পারছেন আমাকে..নিজেকে এমন এক দামী পণ্য মনে হচ্ছে যার বদলে এই বাড়িটা আমার চাচী আবার ফেরত পেয়ে যাবেন..উনি অত্যন্ত খুশি, হবেনাই বা কেনো? ওনার দু দুটো না না তিনটে সমস্যা দূর হচ্ছে..এক তো বাড়িটা বন্ধক থেকে ছাড়াতে পারছেন বিনা টাকায় আর দ্বিতীয়ত আমার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, তাও আবার ওনার কোনো খরচ ছাড়াই…আমি আর কিছু বলতে চাইনা এসব নিয়ে, নিজের মনকে বুঝিয়ে নিয়েছি যে ভাগ্যে যা আছে তাই হবে..ওদিকে আরমান আজকে বাড়িতেই ছিলো, বাইরে যায়নি..কিছুদিন আগে নিজের অনুরাগীদের কথা দিয়েছিল ফেসবুক লাইভ করবে, সেটাই করলো বিগত ১ ঘণ্টা যাবত.. লাইভ শেষ হতেই সিফাতকে ফোন করেছিলো, খবর পেলো এখনও পুরো খবর জানতে পারেনি, জানলেই এসে জানাবে ওকে..আরমান আর কথা বাড়ায়নি, ফোন কেটে দিয়ে স্টাডি রুম নিজের রুমে চলে যায়, ওয়ার্ডরোব থেকে কিছু বের করার ছিলো, কিন্তু তার বদলে অন্যকিছু নজরে পড়ে যায়..ড্রয়ারের ভেতর এক কোণে থাকা একটা ডাইরি আর হাতঘড়ির বক্সটা দেখে মুচকি হাসে আরমান, হুট করেই মনে পড়ে যায় লাস্ট ইয়ার জন্মদিনে রুহি ওকে এগুলো দিয়েছিলো..

ফ্ল্যাশব্যাক…


আরমানের জন্মদিনের দুদিন পর একটা ইন্টারভিউ ছিলো, দুপুরের পর সেখানে যাওয়ার জন্যে বেরোচ্ছিল ও তখনই রুহির আগমন ঘটেছিলো ওর বাড়িতে..

“আপনি ইন্টারভিউতে যাচ্ছেন?”

“ইয়াহ..! আপাতত তোমার কোনো কাজ নেই এখন, ইউ ক্যান গো..দরকার পড়লে ডেকে নেবো তোমাকে”

উনি কিছুটা তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলেন, যাওয়ার জন্যে পা বাড়াতেই আমি কিছুটা দ্বিধা দ্বন্দ নিয়ে বলে উঠলাম..

“এক মিনিট একটু দাড়াবেন? একটা কথা আই মিন একটা জিনিষ দেবার ছিলো”

থেমে গেলেন উনি, ভ্রু কুচকে ঘুরে তাকালেন আমার দিকে..আমি বামহাতে আমার সাইড ব্যাগের বেল্টটা শক্ত করে মুঠোয় পুরে নিলাম..

“কি দেবে?”

প্রথমে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছিলাম দেবো কি দেবো না? আবার এটাও মনে হয়েছিলো ওনার পছন্দ হবে তো? পরে এসব ভাবনা বাদ দিয়ে ব্যাগ থেকে একটা ছোটো বক্স আর একটা কালো রং এর ডায়রি বের করে ওনার হাতে দিলাম..উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে..আমি ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে বললাম..

“এগুলো আপনার জন্যে”

“আমার জন্যে..?”

“হুমম..! একটু খুলে দেখুন না পছন্দ হয় কিনা?”

উনি বক্সটা খুলে দেখলো সুন্দর একটা রিস্টওয়াচ, ডিপ কফি কালার ছিলো ঘড়ির বেল্টটা আর ওনার এই রংটা অনেক পছন্দের, আর ডায়রি টা তো এমনিই দিয়েছিলাম..জিনিসগুলো পছন্দ হয়েছিলো ওনার..উনি বাকা একটা হাসি দিয়ে বললেন..

“নাইস..! কিন্তু হঠাৎ এগুলো কেনো?”

আমি এবার কিছুটা বিচলিত বোধ করি, বলবো যে জন্মদিনের গিফট এনেছি তাও দুদিন পর তাহলে তো উনি হাসবেন..

“আরে তুমি চুপ করে থাকলে আমি জানবো কিভাবে যে এগুলো কেনো দেওয়া হলো আমাকে?”

এবার কিছুটা আমতা আমতা করে উত্তর দিয়েই দিলাম.. পরে উনি না হয় যা ভাবার ভাববেন..

“এগুলো আপনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার তরফ থেকে সামান্য কিছু উপহার”

কথাটা বলেই ওনার দিকে একটু তাকিয়ে দেখলাম, ওনার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে এখুনি হয়তো হেসে ফেলবেন..আমি এবার চোখ বন্ধ করে বলেই ফেললাম..

“শুভ জন্মদিন স্যার”

ব্যস..! আমার কথা শুনেই হো হো করে হেসে উঠলেন উনি..আমি চোখ খুলে ওনার হাসি দেখে চুপসে গেলাম তবে ওনার এই প্রাণখোলা হাসি দেখে ভালো লাগলো, সচারাচর তো ওনাকে হাসতে দেখার সৌভাগ্য হয় না আমার..অবশ্য আমার কোনো আফসোস নেই, দুদিন বাদে বার্থডে উইশ করছি..ওনার জায়গায় যে কেউ থাকলেই হাসতো..! কয়েক সেকেন্ড পর হাসি কিছুটা থামিয়ে উনি বললেন..

“রুহি, বার্থডে আরো দুদিন আগেই চলে গেছে আর তুমি আজকে আমাকে উইশ করছো, গিফট দিচ্ছো? সিরিয়াসলি?”

উত্তর দিলাম না আমি..উনি আবারও ব্যঙ্গাত্মক স্বরে বলে উঠলেন..

“তুমিই বোধহয় প্রথম যে কিনা বার্থডে বয়কে তার বার্থডে শেষ হবার ৪৮ ঘণ্টা বাদে উইশ করছো”

“আসলে সেদিন আপনাকে দেবার মতো কিছু ছিলো না আমার কাছে, হাতে টাকা ছিলো না, তাই শুভেচ্ছাও জানাইনি..আজকে সকালে সবে বেতন ট্রান্সফার হয়েছে আমার এক্যাউন্টে, দেরী না করে এগুলো কিনলাম..ভাবলাম আজকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে দেই”

কথাগুলো বলে ওনার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম, উনিও কিছু সময় চুপ থাকলেন..তারপর হাসি পুরোপুরি থামিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বললেন..

“ওয়েল, এগুলো দেবার কিন্তু খুব দরকার ছিলো না..এমনিতেই উইশ করলেই হতো”

আমি কিছুটা উত্তেজিত কণ্ঠে বললাম..

“তা কিভাবে হয়? আপনাকে আপনার ফ্যানরা কিছু না কিছু উপহার দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সেগুলো তো নিজের চোখেই দেখেছি.. সেখানে আমি কিভাবে খালি হাতেই শুভেচ্ছা জানাতাম?”

উনি চোখ দুটো ছোটো ছোটো করে দুষ্টু হেসে বললেন..

“ওহ, তারমানে তুমিও আমার ফ্যান..?”

এমন ধারার একটা প্রশ্ন করে বসলেন উনি যে আমি বিপদে পড়ে গেলাম, কি উত্তর দেবো এবার?

” না আসলে, আমার মডেলিং এর ব্যাপারে কোনো ইন্টারেস্ট নেই,”

আমার কথা শুনে উনি যেনো কিছুটা হতাশ হলেন, হয়তো আমার মুখ থেকে অন্য কিছু শুনতে চেয়েছিলেন..

“তাহলে প্রব্লেম কোথায়? আমাকে ওরা গিফট দিয়েছে দিক, তুমি তো আমার ফ্যান না যে গিফট দিয়ে উইশ করতে হবে”

“সে আপনার ফ্যান হই বা না হই, আমার মনে হলো আপনাকে উপহার দেওয়া উচিত তাই দিয়েছি, এমনিতেও দেখুন না আপনার স্ট্যান্ডার্ড এর উপহার আনতে পারিনি”

“স্ট্যান্ডার্ড এর সাথে গিফট এর সম্পর্ক আছে এটা তোমাকে কে বলেছে, কোত্থেকে এরকম কথা শুনেছ?”

কিছুটা ঝাঁঝালো স্বরেই কথাটা বললেন উনি যেটা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম..আসলে ওনার হুট করে এমন বলার কারণটা ঠিক ধরতে পারিনি..চুপ রইলাম আমি..উনি আবারও বললেন..

“গিফট জিনিসটা কি সেটা কি আদৌ তুমি জানো রুহি? যদি জানতে তাহলে এই কথাটা বলতে পারতে না..”

এবার আগেরবারের থেকে দ্বিগুণ ঝাঁঝালো স্বরে বললেন যেটা শুনে আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম, কি ভুল বললাম আমি আর উনিই বা রাগ কেনো করছেন? একটু বাদে ছোটো একটা নিঃশ্বাস ফেলে উনি আমাকে বললেন..

“তাকাও আমার দিকে..”

আমি তাকালাম ওনার দিকে, এবার উনি একদম নরম স্বরে বলতে শুরু করলেন..

“ভালোবেসে কেউ কাওকে যদি কিছু দেয় সেটাই গিফট, সেটা হতেও পারে একটা ১০ টাকার রেড রোজ বা ছোটো একটা লেটার অর অ্যা উইশ কার্ড..টাকাটা কিন্তু বড় নয়, গিফটের সাথে যে ভালোবাসা থাকে সেটা বড়..লাখ টাকা দিয়ে গিফট দিলেও তাতে যদি অ্যাফেকশন না থাকে, সেই গিফটের কিন্তু কোনো ভ্যালু নেই”

ওনার কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে গেলাম আমি, ওনার ভাবনা যে এমন, ওনার পছন্দ যে এতটা সাদামাটা আর ভাবনাগুলো এত গভীর কোনোদিন বুঝেই উঠতে পারিনি.. মনের মধ্যে কেমন এক ভালো লাগা শুরু হলো..

“আর তোমাকে কে বললো এগুলো আমার পছন্দ হয়নি? আমি কি একবারও বলেছি কিছু হুমম?”

কিছুটা শাসনের সুরে কথাটা বললেন উনি, আমি তখন প্রশ্ন করলাম..

“আপনার সত্যিই পছন্দ হয়েছে এগুলো?”

উনি মুখে মিষ্টি একটা হাসি ঝুলিয়ে বললেন..

“ইয়াহ, আই লাভ দিজ..! অবশ্য আমার ডায়েরি লেখার অভ্যাস নেই, তবে দিয়েছো যখন তোমার গিফট ওয়েস্ট হতে দেবো না”

“জ্বি..!”

“থ্যাংক ইউ সো মাচ, ইটস ভেরী প্রিসিয়াস ফর মি”

সস্তির হাসি হাসলাম আমি, মনটা আনন্দে ভরে উঠলো আমার কারণ ওনাকে খুশি করতে পেরেছি আমি


ফ্ল্যাশব্যাক শেষ…

পুরনো স্মৃতিচারণ করতেই নিজের অজান্তেই হেসে ফেললো আরমান..এরকম আরো ছোটো ছোটো অনেক মুহুর্ত আছে, যেগুলোর ভাবনায় আরমান তখন ডুবে থাকে যখন একা থাকে, কাজের চাপ থাকেনা..একরকম শান্তি লাগে ওর রুহির কথা ভাবলেই

“কিরে ভাইয়া, একা একা হাসছিস কেনো? কি ব্যাপার হুমম?”

ছোটো বোনের কথায় ঘোর ভেঙে যায় আরমানের, ছোটো একটা হাসি দিয়ে ফিরে তাকায় বোনের দিকে..ওর বোন ছুটে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে..আরমানের আদরের ছোটো বোন মিনাল শাহ্..সবে কলেজে উঠেছে আর আজকে ওর নবীনবরণ অনুষ্ঠান ছিলো কলেজে, মাকে সাথে নিয়ে গেছিলো..সেখান থেকেই ফিরলো

“তোর কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে কেমন এনজয় করলি?”

“খুব ভালো ছিলো রে ভাইয়া প্রোগ্রাম কিন্তু তোর এই মিটিমিটি হাসির কি রহস্য জলদি বল আমাকে”

“আসলে আজ সকালে স্বপ্ন দেখেছিলাম তোর বিয়ে দিয়ে তোকে বিদায় করছি আর তুই ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছিস, সেটা ভেবে হাসছিলাম”

কথাটা বলেই মিনালের গাল টেনে হেসে দেয় আরমান..মিনাল মুখ ভেংচিয়ে বলে…

“আমাকে তাড়ানোর খুব তাড়া তোর তাইনা? দেখবি তোর বিয়ের পরও যাবো না আমি কোথাও, শয়তান ননদ হয়ে তোকে আর তোর বউকে জ্বালাবো যেমন তুই অনেক জ্বালাস”

বোনের সাথে খুনসুটির এক পর্যায়ে বসার ঘর থেকে মিস্টার জুবায়ের শাহ্ মানে আরমানের বাবার ডাক পড়লো..আরমান জানে এখন ওকে লম্বা লেকচার শোনানোর জন্য ডাকছেন উনি..

“ভাইয়া, আজকেও বাবা তোর ক্লাশ নেবে মনে হচ্ছে.. অল দ্যা বেস্ট”

মিনালের কথায় উত্তর না দিয়ে আরমান বসার ঘরে আসে..এরপর শুরু হয় আরমানের বাবার লেকচার, আসলে উনি চান ওনার ছেলে ব্যবসা সামলাক, ছেলের এই মডেলিং এর একদম বিপক্ষে উনি কিন্তু ওনার কথায় আরমানের কোনো হেলদোল নেই..

“এতগুলো কথা যে বললাম তোকে, কি বুঝলি তুই? আমার কথা কি কানে তুলেছিস নাকি এক কানে ঢুকিয়ে আরেক কানে বের করে দিলি?”

“শুনেছি বাবা..”

“দেখ আরমান, আমার তোর কোনো কাজে বাধা দেবার ইচ্ছে নেই কিন্তু তোর এই মডেলিং এর প্রতি এতো প্যাষণ এর কারণ কিন্তু বুঝতে পারিনা আমি”

বাকা হাসে আরমান..

“বাবা তোমার যেমন ব্যবসা করতে ভালো লাগে, বিজনেস তোমার প্যাশন তেমনি আমারও মডেলিং ইস মাই প্যাশন..তাই এটাকেই আমার প্রফেশন হিসেবে নিয়েছি, এখানে দোষের কিছু তো নেই..নিজের ইচ্ছেমত কিছু করার মাঝে তো কোনো অন্যায় নেই আর যদি ব্যবসার কাজে হেলপের দরকার পড়ে তাহলে আমাকে বলো, অফ কোর্স আই উইল হেল্প ইউ”

আরমানের বাবা আর কিছু বললেন না, কারণ উনি জানেন উনি জানেন আরমান ভীষণ জেদি আর ওকে যাই বলা হোক নিজের যুক্তি দিয়ে বাবার সব যুক্তি কেটে দেবে..

চলবে….

[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন..!!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here