ইস্ক_সুফিয়ানা #বোনাস_পর্ব

0
1212

#ইস্ক_সুফিয়ানা
#বোনাস_পর্ব
#লেখনীতে : #Aloñe_Asha (ছদ্ম নাম)
#Kazi_Meherin_Nesa

ওনার বলা তিনটে শব্দ শুনে নিজেকে কোনো এক রূপকথার রাজ্যের রাজকুমারী মনে হচ্ছিলো, আরমান স্যারের মাঝে যেনো আমি নিজের স্বপ্নের রাজকুমার এর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছিলাম! খুব আনন্দ হচ্ছিলো আমার, হবে নাই বা কেনো? আমিও যে ওনাকে খুব পছন্দ করি, হয়তো ভালোও বাসি! একটু একটু করে সেটাও এখন বুঝতে পারছি..আমি পলকহীন ভাবে ওনার দিকে তাকিয়ে দেখছি, ওনার চোখেমুখে তখন সীমাহীন আনন্দের ঘনঘটা! আলতো করে উনি দু গালে হাত রেখে নরম স্বরে বললেন

“আমি অতো ইনিয়ে মিনিয়ে কথা বলতে পারি না, মানুষটা বড্ড সোজাসাপ্টা কিনা! তাই সোজাসুজি বলছি যা বলার, বিয়ে করবে আমাকে রুহি? ট্রাস্ট মি, অনেক ভালো রাখবো তোমায়!”

চোখের কোণে পানি চলে এসেছে আমার, এতো খুশি যে শেষ কবে হয়েছিলাম জানা নেই, আমি ওনার হাতের ওপর হাত রাখলাম..চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে হ্যা আমিও ভালোবাসি আপনাকে, হয়তো বুঝতে দেরি হয়েছে তবে ভালোবাসি..উনি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছেন আমার উত্তর শোনার জন্যে, আমিও বলতেই যাচ্ছিলাম, কিন্তু হুট করেই থেমে গেলাম, মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো আমার! আমার গাল থেকে ওনার হাত সরিয়ে দিয়ে একটু সরে এসে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দাড়ালাম আমি..কি করতে যাচ্ছিলাম এটা আমি? উনি ভেবেছেন আমি হয়তো লজ্জা পেয়ে এমন করেছি

“ইটস ওকে রুহি! আমি জানি হুট করেই এগুলো বলে ফেললাম আমি, তুমি হয়তো তৈরি ছিলে না..এনিওয়ে টেক ইউর টাইম! কোনো চাপ নেই তোমার ওপর, দরকার পড়লে আরো সময় নাও! ভাবো কিন্তু শেষে উত্তরটা কিন্তু হ্যা হওয়া চাই”

আমি চুপ করে আছি, এতক্ষণ ঘোরের মধ্যে থাকলেও বাস্তবতা ভুলিনি আমি..বাস্তবতা তো এটাই যে সমানে সমানে মিল হয়, সেখানে ওনার আর আমার মধ্যে তো কোনো সাম্য নেই..না টাকার দিক থেকে, না ফ্যামিলি স্ট্যাটাসের দিক থেকে..তখন ওনার বাবার কথাও মনে পড়লো আমার.. উনিও তো আমাকে পছন্দ করেন না..সবদিক ভেবে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আমার, মন চাইছে ওনাকে বলে দেই আমার মনের কথাটা কিন্তু পারছি না..হাতে থাকা সাদা গোলাপ ফুলগুলো পিষে যাচ্ছে আমার মুঠোয় পড়ে..চোখ থেকে টপটপ পানি গড়িয়ে পড়ছে! নিজেই নিজেকে বলে উঠলাম

“এটা তুই কি করছিস রুহি? ওনার ডাকে কিভাবে সাড়া দেবো আমি! উনি কোথায় আর আমি কোথায়? উনি আমাকে ভালোবাসলেও ওনার পরিবার কি আমাকে মেনে নেবে? হয়তো না! ওনার বাবাও তো আমাকে পছন্দ করেন না..তাহলে এ সম্পর্ক কিভাবে সম্ভব?”

চোখের পানি মুছলাম আমি! অনেকক্ষণ চুপ দেখে উনি আমাকে নিজের দিকে ঘোরালেন! আমি চোখ নিচু করে আছি!

“কোনো উত্তর দেবে না তুমি?”

“ক..কি বলবো?”

উনি আমার কাঁধে দু হাত রেখে বললেন

“কেনো? তুমি জানো না কি বলতে হবে? আমি এতদিন পর সাহস করে তোমাকে নিজের মনের কথা জানালাম আর তুমি উত্তর না দিয়েই চলে যাবে?”

আমার মন চাইছে উত্তর দিতে কিন্তু মস্তিষ্ক বলছে তার উল্টো..কি করবো আমি? এই দোটানা ভালো লাগছে না আমার, মানুষটাকে কষ্ট দিতে চাইনা আমি কিন্তু হুট করে মাথায় এমন সব চিন্তা এসে ভর করলো যে আমার সব আনন্দে পানি ঢেলে দিলো! কান্না পাচ্ছে ভীষণ! অনেক কষ্টে নিজেকে আটকে রেখেছি, উনি আরো ব্যাকুল হয়ে বলে উঠলেন

“রুহি প্লিজ! প্রথমবার কাওকে এত্তো ইম্পর্ট্যান্ট কথা বললাম! তোমার মুখে রিপ্লাই না শুনে কিন্তু যাবো না!”

এবারও নিরব আমি!

“আই লাভ ইউ সো মাচ রুহি, দেখো আমি দু দুবার বললাম! এবার তো তোমার একবার রিপ্লাই এক্সপেক্ট করতেই পারি তাইনা?”

ওনার এতো আবেদন শুনে এত্তো কষ্ট লাগছে আমার! গলা থেকে কথা বের হচ্ছে না, এই বুঝি কান্না চলে এলো আমার! ওনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম আমি, থমথমে কণ্ঠে বলে উঠলাম

“সরি”

আমার কথাটা নিছক মজা মনে করে ছোট্ট একটা হাসি দিলেন উনি! এদিকে আমার যে কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে সেটা কিভাবে বোঝাই ওনাকে?

“সরি? এটা কিন্তু আমার “আই লাভ ইউ” এর রিপ্লাই হলো না রুহি”

“আপনার অনুভূতি বোঝা সত্বেও কোনো প্রতিউত্তর দিতে পারবো না আমি, তার জন্যে ক্ষমা করবেন”

মুহুর্তের মধ্যেই ওনার মুখের হাসি উবে গেলো, অবাক হলেন উনি

“হোয়াট ডু ইউ মিন বাই উত্তর দিতে পারবে না? কেনো পারবে না? কি আটকাচ্ছে তোমাকে?”

ইতিমধ্যেই আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে তারমধ্যে ওনার পাল্টা প্রশ্ন আমাকে আরো এলোমেলো করে দিচ্ছে..হালকা করে ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে উত্তর দিলাম আমি

“স্যার, আমি..আমি এই নিয়ে এখন কথা বলতে চাইনা, বেটার এটাই হবে এই বিষয়টা এখানেই শেষ..”

“আমি তোমাকে নিজের অনুভূতির কথাগুলো বলেছি নতুন করে সব শুরু করার জন্য, শেষ করার জন্যে নয়”

“আরমান স্যার আপনি..”

পুরো কথা শেষ করতে পারিনি আমি, ক্ষিপ্র গতিতে উনি দু হাতে আমার বাহু চেপে ধরলেন, রাগী কণ্ঠে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন

“তারমানে কি তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো তাই আমার ভালোবাসা অ্যাকসেপ্ট করবে না?”

“কি বলছেন এগুলো! আমি কাওকে ভালবাসি না আর না কোনোদিন বেসেছি”

“তাহলে আমাকে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায় তোমার? কেনো অ্যাকসেপ্ট করবে না? রিজন দেখাও আমাকে”

“কারণ..?”

“হ্যা কারণ বলতে হবে তোমায়! কেনো পারবে না? আমরা দুজনেই একে অপরের জন্যে পারফেক্ট তাহলে সমস্যা কোথায়?”

আমি অসহায় দৃষ্টিতে ওনার পানে দেখছি, এতক্ষণ যে মুখটায় হাসি ছিলো মুহূর্তেই সেই মুখটা হিংস্র হয়ে উঠেছে শুধুমাত্র আমার একটা কথায়! উনি যে সত্যিই আমাকে অনেকটা ভালোবাসেন সেটা বুঝতে বাকি নেই আমার, আমার অস্বীকারে ওনার যে রাগ দেখা যাচ্ছে সেটাই প্রমাণ করে অনেক ভালোবাসেন উনি আমায়

“আমি তোমাকেই চাই, যেভাবেই হোক চাই, আমার কথাগুলো কিন্তু হালকাভাবে নিও না..তুমি না করলেই আমি শুনছি না”

উনি আমার বাহুজোড়া আরো চেপে ধরেন বিধায় ব্যথা পেলাম আমি, সেটা বোঝার সঙ্গে সঙ্গে উনি ছেড়ে দেন আমায়! অস্থির হয়ে প্রশ্ন করেন

“আ..আমি তোমাকে হার্ট করতে চাইনি রুহি, কেনো রাগালে আমাকে বলোতো! আই অ্যাম সরি”

“আপনি বাড়ি যান প্লিজ! এখন এসব কথা বলার সময় না আর আমার মনে হয় না এসব কথা বলে কোনো লাভ..”

“কেনো লাভ থাকবে না? আমার ইমোশন, আমার ফিলিংস কিন্তু এতো ঠুনকো নয় রুহি! আর হ্যা আমিও জানি ইউ অলসো লাইক মি, তাহলে কোথায় প্রবলেম?”

আমি কিছুক্ষন চুপ রইলাম, পরে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেই ফেললাম

“আমরা দুজন বলতে গেলে আলাদা মেরুর মানুষ! আপনি নিজেকে দেখুন আমার আমাকে দেখুন, কত্তো অমিল আমাদের মধ্যে..আর সমাজের মতে সামঞ্জস্যতা না থাকলে যে আজকাল সম্পর্ক এর দাম নেই”

“আমি তোমার এত শক্ত কথার মানে বুঝতে পারছি না রুহি আর প্লিজ কিছু বুঝতে ও চাইনা”

“বুঝতে হবে আপনাকে! আপনার আর আমার ফ্যামিলি স্ট্যাটাস সম্পূর্ন আলাদা..আপনি আমাকে অ্যাকসেপ্ট করলেও আপনার পরিবার কি আমাকে মেনে নেবে? একটা অনাথ মেয়েকে তারা কি নিজের ছেলের পাশে মানবে! আপনি আমাকে নিজের জন্যে পারফেক্ট মনে করলেও তারা কি মনে করবে আমি পারফেক্ট?”

“এসব কি বলছো তুমি? রুহি আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর কি দরকার আছে? আর আমার ফ্যামিলি? আমার মা বোন দুজনেই তোমাকে পছন্দ করে”

“আর আপনার বাবা? উনি তো পরিবারের মুখ্য সদস্য! উনি মানবেন আমায়?”

“আমার বাবার মানা না মানায় কিছু যায় আসেনা রুহি, আমরা দুজন দুজনের জন্যেই যথেষ্ট..বাবার অমত থাকলে আমরা আলাদা থাকবো”

“নাহ স্যার! পরিবারের থেকে দূরে থেকে কেউ ভালো থাকতে পারে না! আমি চাইনা আমার জন্যে আপনি নিজের পরিবার থেকে দূরে যান! পরিবার না থাকার কি যন্ত্রণা সেটা আপনি বুঝবেন না..আর আপনার বাবা আপনাকে ভালোবাসেন সেটা ভুলে যাবেন না”

“তুমি আমার বাবার অপছন্দের কথা ভাবছো রুহি? আমার থেকে তোমার কাছে আমার পরিবার বড় হলো?”

“নাহ স্যার! আপনি ভুল বুঝছেন আমাকে! আমি চাইনা আপনার পরিবারে আমার জন্যে কোনো অশান্তি হোক! এমনিতেই আমি আমার চাচীর সংসারে অশান্তি হিসেবেই আছি! একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাইনা”

“আর যদি আমার বাবা রাজি হয় তাহলে তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবে তো?”

“মানে? আপনার বাবাকে কিভাবে..”

“সেটা আমার ওপর ছেড়ে দাও! তুমি বলো, যদি বাবা নিজে রাজি হয় আমাদের সম্পর্ক মেনে নিতে তাহলে রাজি হবে তুমি?

“আপনার বাবা রাজি হবেন না সেটা আপনিও জানেন তাহলে কেনো বাচ্চাদের মতো জেদ করছেন এসব কথা নিয়ে!”

আরমান স্যার নিশ্চুপ রইলেন! কারণ উনিও এটা ভালোভাবেই জানেন ওনার বাবা শুরু থেকেই আমাকে পছন্দ করেনা, শুরুর দিকে উনি তো আমাকে আরমান স্যারের ম্যানেজার হিসেবে রাখতে রাজিই ছিলেন না..আরমান স্যার জোর করে রেখেছিলেন আমাকে..কিছুক্ষণ চুপ থেকে উনি আমার হাতটা ধরে বললেন

“সেসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না, সব ঠিক করে দেবো আমি”

“সম্পর্ক শুরু করার পর সমস্যা এলে তখন কি হবে? আপনি যদি নিজের আপনজনদের সামাল না দিতে পারেন? তাছাড়া আমি চাইনা আমার জন্যে আপনার বা আপনার পরিবারের কারো সমস্যা হোক”

“তুমি শুধু এইগুলো দেখলে? সোসাইটি, ফ্যামিলি স্ট্যাটাস শুধু এইসবই দেখলে? আমার ভালোবাসার দাম নেই তোমার কাছে? তুমি ভালোবাসো না আমায়?”

“নাহ!”

“এভাবে বলো না রুহি! কষ্ট হচ্ছে আমার..প্লিজ সত্যিটা বলো..ভালো বাসো না?”

আমি শুধু একবার অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকালাম ওনার দিকে, উত্তর দিতে পারলাম না..আমার কেনো যেনো ভয় হচ্ছিলো, আমার জন্যে না উনি ওনার বাবার অপ্রিয় হয়ে যান! ছুটে চলে এলাম আমি ওখান থেকে..উনি আমাকে ডাকছেন কিন্তু আমি দাড়াইনি, তাহলে যে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারবো না

উবু হয়ে বিছানায় শুয়ে কান্না করছি আমি, রুমের দরজা আটকে দিয়েছি কারণ আমাকে কান্না করতে দেখলে প্রশ্ন করবে সবাই কিন্তু দেবার মতো উত্তর নেই আমার কাছে..আমি জানি আরমান স্যার অনেক কষ্ট পেয়েছেন আমার প্রত্যাখ্যানে..! কিন্তু কি করবো? আমি যা করেছি সে তো ভেবেই করেছি আর আমার মতে সেটা ভুল নয়! ওদিকে মানসিক ভাবে বিদ্ধস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে আরমান..প্রথম ভালোবাসায় যে এতোটা কষ্ট পাবে জানা ছিলো না ওর! রুহির বলা কথাগুলো এখনও কানে বাজছে ওর! সোজা রুমে চলে যায় ও..ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখা সব জিনিস নিচে ফেলে দেয় ও..এমনিতেই মাথা ঠিক নেই তার ওপর ড্রেসিং টেবিলের এক কর্নারে দেখলো ৪ টা মেয়ের ছবি রাখা..ওগুলো দেখেই আরো মাথা গরম হয়ে গেলো ওর! মিনালকে ডাকে ও! দুবার ডাকতেই মিনাল চলে আসে

“ভাইয়া, কি হয়েছে!”

ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে দেখলো আরমানের সব কসমেটিকস গুলো নিচে পড়ে আছে

“একি! এগুলো এভাবে পড়ে আছে কেনো? আর তোর কপালে কি হয়েছে! দেখি”

মিনাল কাছে এগোতে গেলেই আরমান ইশারায় না করে, হাতের ছবিগুলো দেখিয়ে প্রশ্ন করে বসে

“এগুলো আমার রুমে কে রেখেছে?”

আরমান মারাত্মক রেগে আছে, মিনাল সাহস পাচ্ছে না বলার! আরমান রাগান্বিত স্বরে আবারও প্রশ্ন করে ওঠে

“একটা কথা জিজ্ঞাসা করেছি তোকে মিনাল, উত্তর দে! এই ছবিগুলো কে রেখেছে আমার রুমে?”

“বা..বাবা রেখেছে”

মন খারাপ করে বসে আছি আমি, কিছু ভালো লাগছে না! চোখমুখ ধুয়ে এসেছি একটু আগেই! নয়না আমার জন্যে খাবার নিয়ে এসেছে কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছে যে নেই আমার! উনি কষ্ট পাচ্ছেন আমার জন্যে, সেখানে আমি কিভাবে খাবো? নয়না আমার সাথেই ছিলো, একটু বাদে চাচা এসে আমার পাশে বসলেন

“কি হয়েছে রুহি? মন খারাপ মনে হচ্ছে?”

“কিছুনা চাচা..ওই মা বাবার কথা একটু মনে পড়ছিলো আর কি তাই”

“কিন্তু তুই তো সবসময় বলিস ভাই আর ভাবীর কথা মনে করে চোখে পানি আনতে চাস না..সবসময় তোকে দেখেছি নিজের মা বাবার কথা বলার সময় মুখে হাসি রেখেছিস! তাহলে আজ চোখে পানি কেনো?”

আমি চোখ নিচু করে আছি, আবারও চোখদুটো জলে ভরে উঠলো আমার

“আপু! তোমার কি বন্ধুদের সাথে ঝগড়া হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে তোমায়?এসে থেকেই মন খারাপ করে আছো কিছুই খাচ্ছো না”

“দেখি নয়না, আমার কাছে দে! আমি ওকে আজ খাইয়ে দিচ্ছি!”

“আমি খাবো না চাচা! ভালো লাগছে না”

“একটু খাও না আপু! দেখো তোমার মুখ এইটুকু হয়ে গেছে! কোথায় ভাবলাম বন্ধুদের সাথে ঘুরে মন ভালো হবে, উল্টে মন খারাপ করে এলে তুমি!

চুপ করে আছি আমি! কি বলবো ওদের! কিভবে বোঝাবো আমার মন খারাপের কারণ? আমি যে আরেকজনকে কষ্ট দিয়ে এসেছি! চাচা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন

“দেখ রুহি! হয় তোকে খেতে হবে নাহলে বলতে হবে কেনো মন খারাপ করে আছিস! এত বছর ধরে আছিস আমার কাছে! আমিও তো তোর বাবার মতন তাইনা? বল না মা কি হয়েছে!”

আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, এই মুহূর্তে মনের সব চাপা কষ্টগুলো বলতে ইচ্ছে হচ্ছে আমার, তাহলে হয়তো ভেতরটা একটু হালকা হবে! চাচাকে ধরে কান্না করে বলে দিলাম সবকিছু! ওদিকে মিস্টার শাহ্ ফাইলস নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তখন আরমান প্রবেশ করে..ছবিগুলো মিস্টার শাহ্ এর সামনে রাখে ও

“এগুলো আমার রুমে রাখার মানে কি?”

ছেলের দিকে তাকান মিস্টার শাহ্! মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে প্রশ্ন করে বসেন

“তোর এই অবস্থা কেনো?”

“বাবা প্লিজ, আমি দ্বিতীয় কোনো কথা বলতে চাইনা! এগুলো কেনো রেখেছো আমার রুমে?”

“তোর দেখার জন্যে রেখেছিলাম! দেখে নিয়েছিস তো? তাহলে বল এর মধ্যে কাকে ভালো লাগে তোর! তার সাথেই আমি..”

“আমি একটা মেয়েকেই ভালোবাসি, তাই দ্বিতীয় কোনো মেয়ের ছবি দেখার ইচ্ছে আমার নেই”

ছেলের মুখোমুখি দাড়ান মিস্টার শাহ্!

“কিন্তু আমার এই মেয়েদের পছন্দ তোমার জন্য, এদের মধ্যে যেকোনো একজনকেই বিয়ে করতে হবে তোমায়”

“বাবা..আমি তাকেই বিয়ে করবো যাকে ভালোবাসি, অন্য কাউকে না, প্লিজ এইসব করা বন্ধ করো এবার!”

“আমি যদি খুব ভুল না করে থাকি ভালোবাসার মানুষটির নাম রুহি.. অ্যম আই রাইট?”

রুম থেকে বেরোনোর জন্য পা বাড়িয়েছিল আরমান, কিন্তু বাবার কথায় পা থেমে যায় ওর! অবাক হয়ে ঘুরে তাকায় বাবার দিকে!

“তুমি জানো আমি রুহিকে ভালোবাসি?”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here